কামরুল হাসান

থাইএয়ারের উড়োজাহাজে আসা দুই বিদেশিকে নিয়ে গাড়িটা সোজা চলে গেল ঢাকা বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের ভেতরে। দুই যাত্রীর একজন অ্যান্থনি সকার, আরেকজন বার্নার্ড রুডিগার। একজন ব্রিটিশ, অন্যজন জার্মান। দুজনই বিজনেস ক্লাসের যাত্রী, তাঁদের হাতে চামড়ার তৈরি চোখধাঁধানো স্যুটকেস।
ভিআইপি যাত্রীরা যেভাবে বিমানবন্দর অতিক্রম করেন, তাঁরাও সেভাবে কোনো কিছু ডিক্লারেশন না দিয়েই চলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দুজনের গতিবিধি দেখে সন্দেহ করে কাস্টমস। তল্লাশির পর দুজনের স্যুটকেস থেকে পাওয়া যায় ৩৮ কেজি সোনার বার।
শুরু হয় হইচই। গণমাধ্যমকর্মীরা খবর পেয়ে পৌঁছে যান বিমানবন্দরে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই ছিল প্রথম ধরা পড়া সবচেয়ে বড় সোনার চালান।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তখন ক্ষমতায়। সবকিছু এমনভাবে রটতে শুরু করে যে সবাই ধরে নেয়, এই সোনা পাচারের সঙ্গে এরশাদ ও তাঁর স্ত্রী রওশনের হাত আছে। কম করে হলেও ১০ বছর ধরে সংবাদপত্রে এ খবরের ফলোআপ ছাপা হয়। তবে মূল ঘটনা কাভার করার সৌভাগ্য আমার হয়নি। আমি সাংবাদিকতায় এসে ফলোআপ করতে শুরু করি। কারণ, এ ঘটনার শুরুটা ছিল ১৯৯০ সালের ২৪ জুলাই।
এটুকু পর্যন্ত পড়ে মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, এত পুরোনা ঘটনার কথা শুনে লাভ কী? লাভ একটা আছে। সেটা হলো, সোনা চোরাচালানের মতো একটি ঘটনার সঙ্গে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রব্যবস্থা, প্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী এবং রাজনীতি কীভাবে জড়িয়ে যায়, এ ঘটনা তার অন্যতম বড় প্রমাণ। আবার একটি ঘটনা থেকে রাজনীতিকেরা কীভাবে ফায়দা লুটে নেন, এ ঘটনা তারও বড় উদাহরণ। তবে এটাও বলে রাখি, এই গল্পের অনেক উপাদান বিভিন্ন নথিপত্র আর সাবেক পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা সফিক উল্লাহর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’ থেকে নেওয়া।
গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শকমাত্রই জানেন, বিমানবন্দর দিয়ে সোনা পাচারের ঘটনা নতুন নয়। পাচারের সময় ধরাও পড়ছে হরহামেশা। মাদক পাচার নিয়ে ইউএনওডিসির একটি ‘মেথড’ আছে, যত পাচার হয়, ধরা পড়ে তার মাত্র ১০ শতাংশ। অর্থাৎ মোট হিসাবের ৯০ শতাংশই পাচার হয়ে যায়। সোনার ক্ষেত্রে যদি সেই হিসাব কষা হয়, তাহলে মাথা ভনভন করে ঘুরবে।
যাক এসব, এবার আসল গল্পে ফিরি।
তো সেই দুই বিদেশিকে গ্রেপ্তার করে তুলে দেওয়া হয় ডিবির হাতে। মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই বেরিয়ে পড়ে বিষধর সাপ। দুজনেই স্বীকার করেন, ঢাকা বিমানবন্দরের সিকিউরিটি অফিসার তাহের নিজের গাড়িতে করে তাঁদের উড়োজাহাজ থেকে ভিআইপি লাউঞ্জে নিয়ে আসেন। তাহেরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর তাহের স্বীকার করেন, এয়ারপোর্ট ম্যানেজার মেজর সেকান্দার তাঁকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বলা হয়েছিল, দুই বিদেশিকে তিনি ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে পার করে দেবেন। ঢাকা কাস্টমসে তখন কমিশনার ছিলেন মঞ্জুর মান্নান।
পানি নিচের দিকে না গড়িয়ে ওপরের দিকে উঠতে থাকে। আটক করা হয় এয়ারপোর্ট ম্যানেজার মেজর সেকান্দারকে। তিনি স্বীকার করেন, সিভিল এভিয়েশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর মইনুল ইসলাম তাঁকে এ কাজে লাগিয়েছিলেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশ তিনি তাহেরকে বলেন। কালে কালে ঘটনা বড় হতে থাকে।
ডিবি হেফাজতে দুই বিদেশি জানান, সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী হাজি ইয়াকুব এই সোনার মালিক। ইয়াকুবের প্রতিনিধি হয়ে তাঁরা বিভিন্ন দেশে সোনা পাচার করেন। তবে তাঁরা জানেন না, এই সোনার আসল মালিক কে। হাজি ইয়াকুব সময়মতো টেলিফোনে তাঁদের সংকেত দেন। সেই সংকেত অনুসারে তাঁরা কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির কাছে সোনা পৌঁছে দেন। এবার কথা ছিল, কালো রঙের একটি মার্সিডিজ বিমানবন্দর থেকে তাঁদের সোনারগাঁও হোটেলে নিয়ে যাবে।
মামলটির প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসি আবদুল বাতেন। এদিকে মার্সিডিজের কথা শুনেই পুলিশের দল সেই গাড়ির খোঁজে নেমে পড়ে। তারা ধরে নিয়েছিল, এ গাড়িতেই মামলার ক্লু আছে। সে সময় কালো মার্সিডিজ ছিল শিল্পপতি আজিজ মোহাম্মদ ভাই এবং চিত্রনায়িকা রোজিনার স্বামী ফজলুর রশীদ ঢালির। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গাড়িটি ডিবিতে আনা হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেটা মাত্র দেড় মাস আগে কুয়েত দূতাবাস থেকে কেনা। সন্দেহ এবার চলে যায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু ভিডিও কানেকশনের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের দিকে। তিনি ছিলেন সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান কমোডর মইনুলের ঘনিষ্ঠ। বান্টির বনানীর বাড়ি তল্লাশি হয়। গাড়ি না মিললেও সেখানে পাওয়া যায় সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং তাঁদের স্ত্রী ও বান্ধবীদের আপত্তিকর ছবি।
বান্টির বাড়িতে একটি আনরেজিস্টার্ড ফোর্ড গাড়ি ছিল। বান্টির বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলায় প্রথম জেলে গেলেন বান্টি ইসলাম।
এদিকে সোনা চোরাচালানের ঘটনা নিয়ে পত্রপত্রিকা গরম হয়ে ওঠে। তখনকার উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি এই ঘটনায় জড়িত বলে খবর প্রকাশিত হয়। কেউ কেউ লেখেন, ফার্স্ট লেডি রওশন এরশাদও জড়িত। কেউ আরও একধাপ এগিয়ে এরশাদকেও দুষতে থাকেন। দিন দিন এ প্রচার বাড়তেই থাকে। এরশাদ এতে খুবই বিব্রত হন। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসানকে ডেকে দ্রুত তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দিতে বলেন।
তখন সিআইডির ডিআইজি ছিলেন এ এস এম শাহজাহান (পরে তিনি আইজিপি হন)। তিনি ডিবির তদন্ত প্রতিবেদন পরীক্ষা করে চার্জশিট দিতে বলেন।
কিন্তু ডিবি দাবি করে, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান মইনুলকে গ্রেপ্তার করা না গেলে তদন্ত শেষ করা যাবে না। এ সময় স্বরাষ্ট্রসচিব ছিলেন আজিম উদ্দিন, তিনি সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ। তিনি এ গ্রেপ্তারের বিপক্ষে মত দেন। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলেন। তখন পত্রিকায় রিপোর্ট হতে থাকে, তদন্ত ধামাচাপা দিচ্ছেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি এরশাদ। অবস্থা বেগতিক দেখে এরশাদ সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দেন।
সিদ্ধান্ত হয়, মইনুল ইসলামকে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে ওএসডি করে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করার পরই গ্রেপ্তার করা হবে। মইনুল ইসলামের কাছে সে খবর আগেই চলে যায়। ওএসডি হওয়ার পরপরই তিনি পালিয়ে যান। ডিবি মামলাটি তদন্ত করে বার্নার্ড রুডিগার্ড, অ্যান্থনি সকার, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর মইনুল ইসলাম, তাঁর পিএস, এয়ারপোর্ট ম্যানেজার মেজর সেকান্দার ও সিকিউরিটি অফিসার আবু তাহেরকে আসামি করে চার্জশিট দেয়।
এই চার্জশিটের কিছুদিন পর এরশাদ সরকারের পতন হয়। দেশে তখন বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সোনা নিয়ে আবার লেখালেখি শুরু হয়। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ একদিন তদন্তকারী দলকে ডেকে পাঠান। তখনকার আইজিপি তৈয়ব উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে পুলিশের দলটি তাঁকে ব্রিফ করেন। এবার তিনি দ্রুত বিচার শেষ করতে বলেন।
ক্ষমতার আবার পালাবদল হয়। এবার আসে বিএনপি। বিএনপির এমপিরা প্রথম অধিবেশনেই সোনা চোরাচালান মামলার প্রসঙ্গ তোলেন। সংসদে তাঁরা বলেন, সোনা চোরাচালানের সঙ্গে এরশাদ, রওশন ও মওদুদ জড়িত। বলা হয়, এয়ার কমোডর মইনুল ইসলামকে রাজসাক্ষী করা হলে সব বেরিয়ে আসবে। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বর্ধিত তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন। আবার তদন্ত শুরু হয়। মইনুল শেষ পর্যন্ত আর রাজসাক্ষী হননি। কারণ, রাজসাক্ষী হতে হলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করতে হয়। মইনুল বুদ্ধিমান, তিনি সেটা করতে চাননি।
সিআইডিতে আসার পর গোলাম মোস্তফা মামলাটি তদন্ত করেন। তিনি এরশাদ ও রওশনের নাম যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। পরে নিম্ন আদালত রওশন এরশাদকে খালাস দিয়ে এরশাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেন। এরশাদ হাইকোর্টে গেলে মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। তখনই শোনা যাচ্ছিল, কমোডর মইনুল ছিলেন তৎকালীন বিএনপি সরকারের কৃষিমন্ত্রী মাজেদুল হকের আত্মীয়। তাঁদের আরেক আত্মীয় ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্নেল মুস্তাফিজুর রহমান।
তাঁরাই সোনা চোরাচালানের মামলায় এরশাদকে ফাঁসানোর চেষ্টায় উৎসাহী ছিলেন। তবে অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলতে থাকে। বিচারে শুধু দুই বিদেশির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। তা ছাড়া সেকেন্দারের ১০ বছর এবং তাহেরের ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়।
কথায় আছে, রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। ২০০০ সালে এরশাদের বিরুদ্ধে আবার এ মামলা চালু হয়। শেষ পর্যন্ত এবারেও এরশাদ খালাস পান।
এবার ভাবুন, একটি ঘটনার জাল কত দূর বিস্তৃত হতে পারে। দেশে এখনো সোনা পাচার হচ্ছে, ধরাও পড়ছে বটে। কিন্তু তদন্ত আগের মতোই, তল আর পায় না।
কোথায় গিয়ে সবকিছু যেন আটকে যায়। কেন আটকে যায়, প্রিয় পাঠক, তা কি আর চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর দরকার আছে?
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

থাইএয়ারের উড়োজাহাজে আসা দুই বিদেশিকে নিয়ে গাড়িটা সোজা চলে গেল ঢাকা বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের ভেতরে। দুই যাত্রীর একজন অ্যান্থনি সকার, আরেকজন বার্নার্ড রুডিগার। একজন ব্রিটিশ, অন্যজন জার্মান। দুজনই বিজনেস ক্লাসের যাত্রী, তাঁদের হাতে চামড়ার তৈরি চোখধাঁধানো স্যুটকেস।
ভিআইপি যাত্রীরা যেভাবে বিমানবন্দর অতিক্রম করেন, তাঁরাও সেভাবে কোনো কিছু ডিক্লারেশন না দিয়েই চলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দুজনের গতিবিধি দেখে সন্দেহ করে কাস্টমস। তল্লাশির পর দুজনের স্যুটকেস থেকে পাওয়া যায় ৩৮ কেজি সোনার বার।
শুরু হয় হইচই। গণমাধ্যমকর্মীরা খবর পেয়ে পৌঁছে যান বিমানবন্দরে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই ছিল প্রথম ধরা পড়া সবচেয়ে বড় সোনার চালান।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তখন ক্ষমতায়। সবকিছু এমনভাবে রটতে শুরু করে যে সবাই ধরে নেয়, এই সোনা পাচারের সঙ্গে এরশাদ ও তাঁর স্ত্রী রওশনের হাত আছে। কম করে হলেও ১০ বছর ধরে সংবাদপত্রে এ খবরের ফলোআপ ছাপা হয়। তবে মূল ঘটনা কাভার করার সৌভাগ্য আমার হয়নি। আমি সাংবাদিকতায় এসে ফলোআপ করতে শুরু করি। কারণ, এ ঘটনার শুরুটা ছিল ১৯৯০ সালের ২৪ জুলাই।
এটুকু পর্যন্ত পড়ে মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, এত পুরোনা ঘটনার কথা শুনে লাভ কী? লাভ একটা আছে। সেটা হলো, সোনা চোরাচালানের মতো একটি ঘটনার সঙ্গে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রব্যবস্থা, প্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী এবং রাজনীতি কীভাবে জড়িয়ে যায়, এ ঘটনা তার অন্যতম বড় প্রমাণ। আবার একটি ঘটনা থেকে রাজনীতিকেরা কীভাবে ফায়দা লুটে নেন, এ ঘটনা তারও বড় উদাহরণ। তবে এটাও বলে রাখি, এই গল্পের অনেক উপাদান বিভিন্ন নথিপত্র আর সাবেক পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা সফিক উল্লাহর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’ থেকে নেওয়া।
গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শকমাত্রই জানেন, বিমানবন্দর দিয়ে সোনা পাচারের ঘটনা নতুন নয়। পাচারের সময় ধরাও পড়ছে হরহামেশা। মাদক পাচার নিয়ে ইউএনওডিসির একটি ‘মেথড’ আছে, যত পাচার হয়, ধরা পড়ে তার মাত্র ১০ শতাংশ। অর্থাৎ মোট হিসাবের ৯০ শতাংশই পাচার হয়ে যায়। সোনার ক্ষেত্রে যদি সেই হিসাব কষা হয়, তাহলে মাথা ভনভন করে ঘুরবে।
যাক এসব, এবার আসল গল্পে ফিরি।
তো সেই দুই বিদেশিকে গ্রেপ্তার করে তুলে দেওয়া হয় ডিবির হাতে। মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই বেরিয়ে পড়ে বিষধর সাপ। দুজনেই স্বীকার করেন, ঢাকা বিমানবন্দরের সিকিউরিটি অফিসার তাহের নিজের গাড়িতে করে তাঁদের উড়োজাহাজ থেকে ভিআইপি লাউঞ্জে নিয়ে আসেন। তাহেরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর তাহের স্বীকার করেন, এয়ারপোর্ট ম্যানেজার মেজর সেকান্দার তাঁকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বলা হয়েছিল, দুই বিদেশিকে তিনি ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে পার করে দেবেন। ঢাকা কাস্টমসে তখন কমিশনার ছিলেন মঞ্জুর মান্নান।
পানি নিচের দিকে না গড়িয়ে ওপরের দিকে উঠতে থাকে। আটক করা হয় এয়ারপোর্ট ম্যানেজার মেজর সেকান্দারকে। তিনি স্বীকার করেন, সিভিল এভিয়েশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর মইনুল ইসলাম তাঁকে এ কাজে লাগিয়েছিলেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশ তিনি তাহেরকে বলেন। কালে কালে ঘটনা বড় হতে থাকে।
ডিবি হেফাজতে দুই বিদেশি জানান, সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী হাজি ইয়াকুব এই সোনার মালিক। ইয়াকুবের প্রতিনিধি হয়ে তাঁরা বিভিন্ন দেশে সোনা পাচার করেন। তবে তাঁরা জানেন না, এই সোনার আসল মালিক কে। হাজি ইয়াকুব সময়মতো টেলিফোনে তাঁদের সংকেত দেন। সেই সংকেত অনুসারে তাঁরা কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির কাছে সোনা পৌঁছে দেন। এবার কথা ছিল, কালো রঙের একটি মার্সিডিজ বিমানবন্দর থেকে তাঁদের সোনারগাঁও হোটেলে নিয়ে যাবে।
মামলটির প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসি আবদুল বাতেন। এদিকে মার্সিডিজের কথা শুনেই পুলিশের দল সেই গাড়ির খোঁজে নেমে পড়ে। তারা ধরে নিয়েছিল, এ গাড়িতেই মামলার ক্লু আছে। সে সময় কালো মার্সিডিজ ছিল শিল্পপতি আজিজ মোহাম্মদ ভাই এবং চিত্রনায়িকা রোজিনার স্বামী ফজলুর রশীদ ঢালির। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গাড়িটি ডিবিতে আনা হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেটা মাত্র দেড় মাস আগে কুয়েত দূতাবাস থেকে কেনা। সন্দেহ এবার চলে যায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু ভিডিও কানেকশনের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের দিকে। তিনি ছিলেন সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান কমোডর মইনুলের ঘনিষ্ঠ। বান্টির বনানীর বাড়ি তল্লাশি হয়। গাড়ি না মিললেও সেখানে পাওয়া যায় সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং তাঁদের স্ত্রী ও বান্ধবীদের আপত্তিকর ছবি।
বান্টির বাড়িতে একটি আনরেজিস্টার্ড ফোর্ড গাড়ি ছিল। বান্টির বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলায় প্রথম জেলে গেলেন বান্টি ইসলাম।
এদিকে সোনা চোরাচালানের ঘটনা নিয়ে পত্রপত্রিকা গরম হয়ে ওঠে। তখনকার উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি এই ঘটনায় জড়িত বলে খবর প্রকাশিত হয়। কেউ কেউ লেখেন, ফার্স্ট লেডি রওশন এরশাদও জড়িত। কেউ আরও একধাপ এগিয়ে এরশাদকেও দুষতে থাকেন। দিন দিন এ প্রচার বাড়তেই থাকে। এরশাদ এতে খুবই বিব্রত হন। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসানকে ডেকে দ্রুত তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দিতে বলেন।
তখন সিআইডির ডিআইজি ছিলেন এ এস এম শাহজাহান (পরে তিনি আইজিপি হন)। তিনি ডিবির তদন্ত প্রতিবেদন পরীক্ষা করে চার্জশিট দিতে বলেন।
কিন্তু ডিবি দাবি করে, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান মইনুলকে গ্রেপ্তার করা না গেলে তদন্ত শেষ করা যাবে না। এ সময় স্বরাষ্ট্রসচিব ছিলেন আজিম উদ্দিন, তিনি সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ। তিনি এ গ্রেপ্তারের বিপক্ষে মত দেন। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলেন। তখন পত্রিকায় রিপোর্ট হতে থাকে, তদন্ত ধামাচাপা দিচ্ছেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি এরশাদ। অবস্থা বেগতিক দেখে এরশাদ সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দেন।
সিদ্ধান্ত হয়, মইনুল ইসলামকে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে ওএসডি করে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করার পরই গ্রেপ্তার করা হবে। মইনুল ইসলামের কাছে সে খবর আগেই চলে যায়। ওএসডি হওয়ার পরপরই তিনি পালিয়ে যান। ডিবি মামলাটি তদন্ত করে বার্নার্ড রুডিগার্ড, অ্যান্থনি সকার, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর মইনুল ইসলাম, তাঁর পিএস, এয়ারপোর্ট ম্যানেজার মেজর সেকান্দার ও সিকিউরিটি অফিসার আবু তাহেরকে আসামি করে চার্জশিট দেয়।
এই চার্জশিটের কিছুদিন পর এরশাদ সরকারের পতন হয়। দেশে তখন বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সোনা নিয়ে আবার লেখালেখি শুরু হয়। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ একদিন তদন্তকারী দলকে ডেকে পাঠান। তখনকার আইজিপি তৈয়ব উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে পুলিশের দলটি তাঁকে ব্রিফ করেন। এবার তিনি দ্রুত বিচার শেষ করতে বলেন।
ক্ষমতার আবার পালাবদল হয়। এবার আসে বিএনপি। বিএনপির এমপিরা প্রথম অধিবেশনেই সোনা চোরাচালান মামলার প্রসঙ্গ তোলেন। সংসদে তাঁরা বলেন, সোনা চোরাচালানের সঙ্গে এরশাদ, রওশন ও মওদুদ জড়িত। বলা হয়, এয়ার কমোডর মইনুল ইসলামকে রাজসাক্ষী করা হলে সব বেরিয়ে আসবে। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বর্ধিত তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন। আবার তদন্ত শুরু হয়। মইনুল শেষ পর্যন্ত আর রাজসাক্ষী হননি। কারণ, রাজসাক্ষী হতে হলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করতে হয়। মইনুল বুদ্ধিমান, তিনি সেটা করতে চাননি।
সিআইডিতে আসার পর গোলাম মোস্তফা মামলাটি তদন্ত করেন। তিনি এরশাদ ও রওশনের নাম যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। পরে নিম্ন আদালত রওশন এরশাদকে খালাস দিয়ে এরশাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেন। এরশাদ হাইকোর্টে গেলে মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। তখনই শোনা যাচ্ছিল, কমোডর মইনুল ছিলেন তৎকালীন বিএনপি সরকারের কৃষিমন্ত্রী মাজেদুল হকের আত্মীয়। তাঁদের আরেক আত্মীয় ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্নেল মুস্তাফিজুর রহমান।
তাঁরাই সোনা চোরাচালানের মামলায় এরশাদকে ফাঁসানোর চেষ্টায় উৎসাহী ছিলেন। তবে অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলতে থাকে। বিচারে শুধু দুই বিদেশির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। তা ছাড়া সেকেন্দারের ১০ বছর এবং তাহেরের ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়।
কথায় আছে, রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। ২০০০ সালে এরশাদের বিরুদ্ধে আবার এ মামলা চালু হয়। শেষ পর্যন্ত এবারেও এরশাদ খালাস পান।
এবার ভাবুন, একটি ঘটনার জাল কত দূর বিস্তৃত হতে পারে। দেশে এখনো সোনা পাচার হচ্ছে, ধরাও পড়ছে বটে। কিন্তু তদন্ত আগের মতোই, তল আর পায় না।
কোথায় গিয়ে সবকিছু যেন আটকে যায়। কেন আটকে যায়, প্রিয় পাঠক, তা কি আর চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর দরকার আছে?
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় এই ব্যক্তি জড়িত বলে তার সহযোদ্ধাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে এই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তাঁকে বার বার মাস্ক খুলতে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণ আসলে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
এই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় কী, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে হাদির পাশে মাস্ক পরা ওই ব্যক্তিকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলছেন অনেকেই। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আলোচিত ফয়সাল করিম কে?
পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় এই ব্যক্তি জড়িত বলে তার সহযোদ্ধাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে এই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তাঁকে বার বার মাস্ক খুলতে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণ আসলে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
এই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় কী, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে হাদির পাশে মাস্ক পরা ওই ব্যক্তিকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলছেন অনেকেই। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আলোচিত ফয়সাল করিম কে?
পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

থাইএয়ারের উড়োজাহাজে আসা দুই বিদেশিকে নিয়ে গাড়িটা সোজা চলে গেল ঢাকা বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের ভেতরে। দুই যাত্রীর একজন অ্যান্থনি সকার, আরেকজন বার্নার্ড রুডিগার। একজন ব্রিটিশ, অন্যজন জার্মান। দুজনই বিজনেস ক্লাসের যাত্রী, তাঁদের হাতে চামড়ার তৈরি
০১ এপ্রিল ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

থাইএয়ারের উড়োজাহাজে আসা দুই বিদেশিকে নিয়ে গাড়িটা সোজা চলে গেল ঢাকা বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের ভেতরে। দুই যাত্রীর একজন অ্যান্থনি সকার, আরেকজন বার্নার্ড রুডিগার। একজন ব্রিটিশ, অন্যজন জার্মান। দুজনই বিজনেস ক্লাসের যাত্রী, তাঁদের হাতে চামড়ার তৈরি
০১ এপ্রিল ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ মিনিট আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

থাইএয়ারের উড়োজাহাজে আসা দুই বিদেশিকে নিয়ে গাড়িটা সোজা চলে গেল ঢাকা বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের ভেতরে। দুই যাত্রীর একজন অ্যান্থনি সকার, আরেকজন বার্নার্ড রুডিগার। একজন ব্রিটিশ, অন্যজন জার্মান। দুজনই বিজনেস ক্লাসের যাত্রী, তাঁদের হাতে চামড়ার তৈরি
০১ এপ্রিল ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

থাইএয়ারের উড়োজাহাজে আসা দুই বিদেশিকে নিয়ে গাড়িটা সোজা চলে গেল ঢাকা বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের ভেতরে। দুই যাত্রীর একজন অ্যান্থনি সকার, আরেকজন বার্নার্ড রুডিগার। একজন ব্রিটিশ, অন্যজন জার্মান। দুজনই বিজনেস ক্লাসের যাত্রী, তাঁদের হাতে চামড়ার তৈরি
০১ এপ্রিল ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে