কামরুল হাসান

সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে পৌঁছাতে বড়জোর ১৫ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে টেলিফোন অপারেটর লিজার দুবার ফোন। এক যুবকের তাড়ায় লিজার তর সইছিল না। সেই যুবক আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষায় আছেন।
অফিসে ঢুকতেই দেখি, অভ্যর্থনা-কক্ষের সোফায় আধশোয়া এক সুদর্শন যুবক। পোশাক-আশাক ততটা পরিপাটি নয়, কিছুটা অগোছালো। নির্ঘুম ঢুলুঢুলু লাল চোখ। আমাকে দেখে এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে বললেন, ‘আমার নাম রিপন, আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।’ আমি হাত বাড়িয়ে বললাম, ধন্যবাদ। এরপর যুবকটি যা বললেন, তা শোনার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। এ রকম পরিস্থিতির জন্য কারও প্রস্তুত থাকার কথাও নয়। রিপন শান্তভাবে বললেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে খুন করে এসেছি।’
আমি তো থ! কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। মুখের ভাষা যেন হারিয়ে গেছে। একবার ভাবছিলাম, যুবকটি ঠিক বলছেন তো! আবার মনে হচ্ছিল, শুধু শুধু মশকরা করার জন্য কেউ সাতসকালে পত্রিকা অফিসেই-বা আসবেন কেন। রিপন আর কিছুই বললেন না। আমার মুখের দিকে হাঁ করে চেয়ে ছিলেন উত্তরের অপেক্ষায়।
রিপনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে এর দুই মাস আগে টাইম ম্যাগাজিনে পড়া একটি কভারস্টোরির কথা মনে পড়ে গেল। জনকণ্ঠের জ্যেষ্ঠ সহকর্মী আলী হাবিব এটা পড়তে দিয়েছিলেন। ‘জোডিয়াক কিলার’ নামের এক খুনিকে নিয়ে লেখা। ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় এই ব্যক্তি ৩৭ জনকে খুন করেছিলেন। প্রতিটি খুনের পর পুলিশ ও সংবাদপত্র অফিসে খুনের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে চিঠি পাঠাতেন, কিন্তু কেউ তাঁকে ধরতে পারেনি। জোডিয়াক কিলারের সঙ্গে তো এই যুবকের কোনো মিল নেই! তবে কেন নিজেই এসে ধরা দিতে চাইছেন? আমার ঘোর কাটছিল না কিছুতেই।
জনকণ্ঠ ভবনের যে তলায় রিপোর্টিং বিভাগ, সেখানে অতিথিদের বসার জন্য দুটি ছোট রুম ছিল। তার একটিতে যুবককে নিয়ে বসিয়ে জানতে চাইলাম, কিছু খাবেন? তিনি না সূচক মাথা নাড়লেন। আবার বললাম, নাশতা-টাশতা হয়েছে? তিনি জানালেন, না, কিছুই খাননি। অফিসের পিয়ন মেহেদী নাশতা আনতে গেল।
দেখেশুনে মনে হচ্ছিল, যুবকটি খুবই উদ্বিগ্ন। বারবার দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছিলেন। এই অবস্থায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা কতটা নিরাপদ ভাবতে ভাবতে মনে হলো, যুবকটি নাশতা খেয়ে নিলে তারপর কথা বলা যাবে। নাশতা এল। মনে হলো, তিনি খুবই ক্ষুধার্ত ছিলেন। খেয়ে বেশ তৃপ্ত হলেন। পানি খেলেন দুই গ্লাস। এবার তাঁর সামনে বসে জানতে চাইলাম কী ঘটেছিল।
এতক্ষণ আমার কর্মকাণ্ড দেখে যুবকের সন্দেহ, আমি তাঁর কথা বিশ্বাস করিনি। তিনি আবারও বললেন, ‘আমি সত্যি সত্যিই স্ত্রীকে খুন করে এসেছি।’ আমি মাথা নেড়ে তাঁর কথায় সম্মতি দিয়ে জানতে চাইলাম, লাশ কোথায়? তিনি বললেন, ‘খিলক্ষেতের বাসায়। তালা দিয়ে এসেছি।’ বললাম, কেন খুন করলেন?
ধীরে ধীরে নিজেকে খুলে দিলেন রিপন। বললেন, তাঁর স্ত্রীর নাম সালমা আক্তার। দুজনেরই বাড়ি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে। প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। দুজনেই স্নাতক অব্দি পড়েছেন। কিন্তু তাঁদের বিয়ে পরিবারের কেউ মেনে নেননি। এরপর জীবনের লড়াই চালাতে ঢাকায় চলে আসেন। অল্প বেতনে স্বামী-স্ত্রী কাজ নেন ছোট একটি এনজিওতে। সবকিছু ভালোই চলছিল। একদিন হঠাৎ রিপনের মনে হলো, স্ত্রী সালমা তাঁর বসের প্রতি অনুরক্ত। তাঁর কথায় ওঠাবসা করেন। বসের সঙ্গে বিভিন্ন জেলা সফরে যাওয়ার পর সন্দেহটা গভীর হলো। রিপন মনে করছিলেন, স্ত্রীর সব ভাবনা এখন বসকে নিয়ে। তাঁর দিকে স্ত্রীর কোনো মনোযোগ নেই। এসব নিয়ে প্রথম দিকে কিছু ঝগড়া হলো, কিন্তু কাজ হলো না। সবকিছু অস্বীকার করে উল্টো রিপনকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিলেন সালমা।
আমি বললাম, সবই তো সন্দেহ থেকে বললেন, কোনো কিছুর প্রমাণ নেই? রিপন বললেন, ‘ওই যে কথায় আছে, কৌশল, জোরজবরদস্তি আর ভালোবাসায় পৃথিবীর সব তালা খোলা যায়। কাল রাতে এ নিয়ে অনেক কথা-কাটাকাটি হলো। সালমার মনের তালাও খুলে গেল। একপর্যায়ে সবই স্বীকার করল। এরপর সে ঘুমিয়ে পড়তেই আমার মাথায় খুন চেপে গেল। ঘুমের মধ্যে তার মুখে বালিশ চাপা দিলাম।’ আমি বললাম, বাধা দেয়নি? যুবক বললেন, ‘চরকার মাকুর মতো দুই হাত ছুড়ে বাঁচার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমার শক্তির কাছে পারেনি।’
বিস্মিত হয়ে বললাম, তারপর? রিপন বললেন, ‘বালিশ সরিয়ে একবার নাকের কাছে হাত নিয়ে দেখলাম, নিশ্বাস পড়ছে কি না। এরপর সারা রাত সেই মৃতদেহের পাশে শুয়ে ছিলাম। সকাল হওয়ার পর ঘরে তালা দিয়ে পথে বেরিয়ে পড়ি। কোথায় যাব স্থির করতে পারছিলাম না। পরে সিদ্ধান্ত নিই, পত্রিকা অফিসে গিয়ে ক্রাইম রিপোর্টারের কাছে সব বলে সাহায্য চাইব।’ খিলক্ষেত থেকে তিনি হাঁটতে হাঁটতে ইস্কাটনে এসেছেন। এটুকু বলে আমার কাছে জানতে চাইলেন, ‘এই অবস্থায় আমার কী করা উচিত?’
আমি তাঁকে বললাম, আপনি চাইলে এখান থেকে চলে যেতে পারেন। তবে আমার পরামর্শ হলো পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার। সেটাই ভালো হবে। রিপন বললেন, ‘দুটি কারণে আমার ভয়। একটি হলো, পুলিশের কাছে গেলেই তারা আমাকে মারধর করবে; অন্যটি হলো, তারা আমার দরিদ্র পরিবারকে জড়িয়ে সর্বস্বান্ত করবে।’
আমি বললাম, আপনি চাইলে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারি। তার আগে আপনি আরও কিছুক্ষণ ভাবতে পারেন। রিপন কোনো সময় না নিয়ে বললেন, ‘আমি সালমাকে অনেক ভালোবাসি বলেই খুন করেছি। এখন আর পালিয়ে যাব না। আপনি ব্যবস্থা করুন।’
রমনা থানার ওসি ছিলেন রফিকুল ইসলাম। তাঁকে ফোন করতেই কয়েকজন পুলিশসহ তিনি এসে হাজির হলেন। যুবকের কথা শুনে ওসিও বেশ অবাক। আমি যুবকের দুটি শর্তের কথা ওসিকে বলতেই তিনিও রাজি হয়ে গেলেন। যুবককে নিয়ে ওসি থানায় গেলেন।
ঘণ্টা দুয়েক পরে ওসি রফিকুল ইসলামের ফোন। বললেন, সেই যুবককে নিয়ে যাবেন তাঁর বাসায়। আমি চাইলে তাঁর সঙ্গে যেতে পারি। পুলিশের দলের সঙ্গে আমিও গেলাম রিপনের বাসায়। রিপন যেভাবে বর্ণনা করেছিলেন, সবকিছুই মিলে গেল। লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হলো, আর রিপনকে গ্রেপ্তার করে রাখা হলো হাজতে। পরদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন রিপন।
বছর দুয়েক পরে বিপ্লব নামের এক ছেলে আমার সঙ্গে দেখা করতে এল। সে নিজেকে সালমার ভাই পরিচয় দিয়ে বলল, খিলক্ষেত থানার সেই খুনের মামলার প্রধান সাক্ষী আমি। তাঁর বোনের খুনের মামলা আটকে আছে আমি সাক্ষ্য না দেওয়ায়। ছেলেটি আমাকে আদালতে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করল। আমি তাকে সাফ জানিয়ে দিলাম, আমি সাক্ষ্য দেব না, এটা আমার কাজ নয়। এর কিছুদিন পর এল সাক্ষী পরোয়ানা। রমনা থানার এক দারোগা একদিন এসে বললেন, ‘সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালত আপনাকে ধরে নিয়ে যেতে আদেশ দিয়েছেন।’ নানা কায়দা করে সেটাও এড়ালাম। কিছুদিন পর ফোন করলেন সেই মামলার পিপি। তিনি খুব অনুরোধ করে বললেন, ‘এই মামলার আপনিই একমাত্র প্রত্যক্ষ সাক্ষী। সাক্ষ্য না দিলে আসামি বেকসুর খালাস পেয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত পিপির অনুরোধে সাক্ষ্য দিলাম।
আরও বছরখানেক পর মামলার রায় হলো। ১২ বছরের সাজা হলো রিপনের। এর মধ্যে আমার কর্মস্থল বদল হলো। একদিন কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনের দোতলায় অফিসে কাজ করছি। অভ্যর্থনা থেকে কে যেন জানালেন, একজন লোক আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। গিয়ে দেখি সেই রিপন। খুনের মামলায় সাজা খেটে বেরিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। হঠাৎ তাঁকে দেখে আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। মনে হলো, সে আমার কোনো ক্ষতি করতে এসেছে। সব মিলিয়ে এক অজানা শঙ্কা গ্রাস করল। আমি এমন ভাব করলাম যেন তাঁকে চিনতেই পারিনি। দু-একটি কথা বলে নিরাশ হয়ে চলে গেলেন রিপন।
অফিসের ভেতরে গিয়ে সিটে বসেছি, কিন্তু মন খুবই অস্থির। কিছুতেই কাজে মনোযোগ দিতে পারছি না। একটু পরে দোতলার সিঁড়ির কাছে এলাম। জানালা দিয়ে দেখি, রাস্তার ওপারে সিএ ভবনের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে রিপন। কিছুক্ষণ দেখার পর রিপনের প্রতি খুব মায়া হলো। কী যেন মনে করে রাস্তায় গিয়ে গলা চড়িয়ে ডাকলাম, রি...প...ন...। মনে হলো, তিনি অপেক্ষায়ই ছিলেন। আমার ডাক শুনে প্রাণপণে দৌড়ে রাস্তা পেরিয়ে এপারে এলেন। এরপর আমাকে ধরে কাঁদতে লাগলেন শিশুর মতো। জড়িয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ, অনেকক্ষণ, অনন্তকাল...। তাঁকে কোনোমতে থামিয়ে জানতে চাইলাম, কিছু খাবেন? রিপন বললেন, ‘না স্যার, আজ যাই। অনেক দূর যেতে হবে। নতুন করে বাঁচব বলে আপনার দোয়া নিতে এসেছি।’ আমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফার্মগেটের দিকে হেঁটে চলে গেলেন রিপন।
আমি তাঁর পথের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। হালকা উত্তুরে হাওয়া গায়ে লাগছিল। মনে হচ্ছিল, বুকের পাথরটা ধীরে ধীরে সরে গেল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে পৌঁছাতে বড়জোর ১৫ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে টেলিফোন অপারেটর লিজার দুবার ফোন। এক যুবকের তাড়ায় লিজার তর সইছিল না। সেই যুবক আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষায় আছেন।
অফিসে ঢুকতেই দেখি, অভ্যর্থনা-কক্ষের সোফায় আধশোয়া এক সুদর্শন যুবক। পোশাক-আশাক ততটা পরিপাটি নয়, কিছুটা অগোছালো। নির্ঘুম ঢুলুঢুলু লাল চোখ। আমাকে দেখে এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে বললেন, ‘আমার নাম রিপন, আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।’ আমি হাত বাড়িয়ে বললাম, ধন্যবাদ। এরপর যুবকটি যা বললেন, তা শোনার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। এ রকম পরিস্থিতির জন্য কারও প্রস্তুত থাকার কথাও নয়। রিপন শান্তভাবে বললেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে খুন করে এসেছি।’
আমি তো থ! কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। মুখের ভাষা যেন হারিয়ে গেছে। একবার ভাবছিলাম, যুবকটি ঠিক বলছেন তো! আবার মনে হচ্ছিল, শুধু শুধু মশকরা করার জন্য কেউ সাতসকালে পত্রিকা অফিসেই-বা আসবেন কেন। রিপন আর কিছুই বললেন না। আমার মুখের দিকে হাঁ করে চেয়ে ছিলেন উত্তরের অপেক্ষায়।
রিপনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে এর দুই মাস আগে টাইম ম্যাগাজিনে পড়া একটি কভারস্টোরির কথা মনে পড়ে গেল। জনকণ্ঠের জ্যেষ্ঠ সহকর্মী আলী হাবিব এটা পড়তে দিয়েছিলেন। ‘জোডিয়াক কিলার’ নামের এক খুনিকে নিয়ে লেখা। ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় এই ব্যক্তি ৩৭ জনকে খুন করেছিলেন। প্রতিটি খুনের পর পুলিশ ও সংবাদপত্র অফিসে খুনের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে চিঠি পাঠাতেন, কিন্তু কেউ তাঁকে ধরতে পারেনি। জোডিয়াক কিলারের সঙ্গে তো এই যুবকের কোনো মিল নেই! তবে কেন নিজেই এসে ধরা দিতে চাইছেন? আমার ঘোর কাটছিল না কিছুতেই।
জনকণ্ঠ ভবনের যে তলায় রিপোর্টিং বিভাগ, সেখানে অতিথিদের বসার জন্য দুটি ছোট রুম ছিল। তার একটিতে যুবককে নিয়ে বসিয়ে জানতে চাইলাম, কিছু খাবেন? তিনি না সূচক মাথা নাড়লেন। আবার বললাম, নাশতা-টাশতা হয়েছে? তিনি জানালেন, না, কিছুই খাননি। অফিসের পিয়ন মেহেদী নাশতা আনতে গেল।
দেখেশুনে মনে হচ্ছিল, যুবকটি খুবই উদ্বিগ্ন। বারবার দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছিলেন। এই অবস্থায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা কতটা নিরাপদ ভাবতে ভাবতে মনে হলো, যুবকটি নাশতা খেয়ে নিলে তারপর কথা বলা যাবে। নাশতা এল। মনে হলো, তিনি খুবই ক্ষুধার্ত ছিলেন। খেয়ে বেশ তৃপ্ত হলেন। পানি খেলেন দুই গ্লাস। এবার তাঁর সামনে বসে জানতে চাইলাম কী ঘটেছিল।
এতক্ষণ আমার কর্মকাণ্ড দেখে যুবকের সন্দেহ, আমি তাঁর কথা বিশ্বাস করিনি। তিনি আবারও বললেন, ‘আমি সত্যি সত্যিই স্ত্রীকে খুন করে এসেছি।’ আমি মাথা নেড়ে তাঁর কথায় সম্মতি দিয়ে জানতে চাইলাম, লাশ কোথায়? তিনি বললেন, ‘খিলক্ষেতের বাসায়। তালা দিয়ে এসেছি।’ বললাম, কেন খুন করলেন?
ধীরে ধীরে নিজেকে খুলে দিলেন রিপন। বললেন, তাঁর স্ত্রীর নাম সালমা আক্তার। দুজনেরই বাড়ি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে। প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। দুজনেই স্নাতক অব্দি পড়েছেন। কিন্তু তাঁদের বিয়ে পরিবারের কেউ মেনে নেননি। এরপর জীবনের লড়াই চালাতে ঢাকায় চলে আসেন। অল্প বেতনে স্বামী-স্ত্রী কাজ নেন ছোট একটি এনজিওতে। সবকিছু ভালোই চলছিল। একদিন হঠাৎ রিপনের মনে হলো, স্ত্রী সালমা তাঁর বসের প্রতি অনুরক্ত। তাঁর কথায় ওঠাবসা করেন। বসের সঙ্গে বিভিন্ন জেলা সফরে যাওয়ার পর সন্দেহটা গভীর হলো। রিপন মনে করছিলেন, স্ত্রীর সব ভাবনা এখন বসকে নিয়ে। তাঁর দিকে স্ত্রীর কোনো মনোযোগ নেই। এসব নিয়ে প্রথম দিকে কিছু ঝগড়া হলো, কিন্তু কাজ হলো না। সবকিছু অস্বীকার করে উল্টো রিপনকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিলেন সালমা।
আমি বললাম, সবই তো সন্দেহ থেকে বললেন, কোনো কিছুর প্রমাণ নেই? রিপন বললেন, ‘ওই যে কথায় আছে, কৌশল, জোরজবরদস্তি আর ভালোবাসায় পৃথিবীর সব তালা খোলা যায়। কাল রাতে এ নিয়ে অনেক কথা-কাটাকাটি হলো। সালমার মনের তালাও খুলে গেল। একপর্যায়ে সবই স্বীকার করল। এরপর সে ঘুমিয়ে পড়তেই আমার মাথায় খুন চেপে গেল। ঘুমের মধ্যে তার মুখে বালিশ চাপা দিলাম।’ আমি বললাম, বাধা দেয়নি? যুবক বললেন, ‘চরকার মাকুর মতো দুই হাত ছুড়ে বাঁচার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমার শক্তির কাছে পারেনি।’
বিস্মিত হয়ে বললাম, তারপর? রিপন বললেন, ‘বালিশ সরিয়ে একবার নাকের কাছে হাত নিয়ে দেখলাম, নিশ্বাস পড়ছে কি না। এরপর সারা রাত সেই মৃতদেহের পাশে শুয়ে ছিলাম। সকাল হওয়ার পর ঘরে তালা দিয়ে পথে বেরিয়ে পড়ি। কোথায় যাব স্থির করতে পারছিলাম না। পরে সিদ্ধান্ত নিই, পত্রিকা অফিসে গিয়ে ক্রাইম রিপোর্টারের কাছে সব বলে সাহায্য চাইব।’ খিলক্ষেত থেকে তিনি হাঁটতে হাঁটতে ইস্কাটনে এসেছেন। এটুকু বলে আমার কাছে জানতে চাইলেন, ‘এই অবস্থায় আমার কী করা উচিত?’
আমি তাঁকে বললাম, আপনি চাইলে এখান থেকে চলে যেতে পারেন। তবে আমার পরামর্শ হলো পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার। সেটাই ভালো হবে। রিপন বললেন, ‘দুটি কারণে আমার ভয়। একটি হলো, পুলিশের কাছে গেলেই তারা আমাকে মারধর করবে; অন্যটি হলো, তারা আমার দরিদ্র পরিবারকে জড়িয়ে সর্বস্বান্ত করবে।’
আমি বললাম, আপনি চাইলে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারি। তার আগে আপনি আরও কিছুক্ষণ ভাবতে পারেন। রিপন কোনো সময় না নিয়ে বললেন, ‘আমি সালমাকে অনেক ভালোবাসি বলেই খুন করেছি। এখন আর পালিয়ে যাব না। আপনি ব্যবস্থা করুন।’
রমনা থানার ওসি ছিলেন রফিকুল ইসলাম। তাঁকে ফোন করতেই কয়েকজন পুলিশসহ তিনি এসে হাজির হলেন। যুবকের কথা শুনে ওসিও বেশ অবাক। আমি যুবকের দুটি শর্তের কথা ওসিকে বলতেই তিনিও রাজি হয়ে গেলেন। যুবককে নিয়ে ওসি থানায় গেলেন।
ঘণ্টা দুয়েক পরে ওসি রফিকুল ইসলামের ফোন। বললেন, সেই যুবককে নিয়ে যাবেন তাঁর বাসায়। আমি চাইলে তাঁর সঙ্গে যেতে পারি। পুলিশের দলের সঙ্গে আমিও গেলাম রিপনের বাসায়। রিপন যেভাবে বর্ণনা করেছিলেন, সবকিছুই মিলে গেল। লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হলো, আর রিপনকে গ্রেপ্তার করে রাখা হলো হাজতে। পরদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন রিপন।
বছর দুয়েক পরে বিপ্লব নামের এক ছেলে আমার সঙ্গে দেখা করতে এল। সে নিজেকে সালমার ভাই পরিচয় দিয়ে বলল, খিলক্ষেত থানার সেই খুনের মামলার প্রধান সাক্ষী আমি। তাঁর বোনের খুনের মামলা আটকে আছে আমি সাক্ষ্য না দেওয়ায়। ছেলেটি আমাকে আদালতে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করল। আমি তাকে সাফ জানিয়ে দিলাম, আমি সাক্ষ্য দেব না, এটা আমার কাজ নয়। এর কিছুদিন পর এল সাক্ষী পরোয়ানা। রমনা থানার এক দারোগা একদিন এসে বললেন, ‘সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালত আপনাকে ধরে নিয়ে যেতে আদেশ দিয়েছেন।’ নানা কায়দা করে সেটাও এড়ালাম। কিছুদিন পর ফোন করলেন সেই মামলার পিপি। তিনি খুব অনুরোধ করে বললেন, ‘এই মামলার আপনিই একমাত্র প্রত্যক্ষ সাক্ষী। সাক্ষ্য না দিলে আসামি বেকসুর খালাস পেয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত পিপির অনুরোধে সাক্ষ্য দিলাম।
আরও বছরখানেক পর মামলার রায় হলো। ১২ বছরের সাজা হলো রিপনের। এর মধ্যে আমার কর্মস্থল বদল হলো। একদিন কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনের দোতলায় অফিসে কাজ করছি। অভ্যর্থনা থেকে কে যেন জানালেন, একজন লোক আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। গিয়ে দেখি সেই রিপন। খুনের মামলায় সাজা খেটে বেরিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। হঠাৎ তাঁকে দেখে আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। মনে হলো, সে আমার কোনো ক্ষতি করতে এসেছে। সব মিলিয়ে এক অজানা শঙ্কা গ্রাস করল। আমি এমন ভাব করলাম যেন তাঁকে চিনতেই পারিনি। দু-একটি কথা বলে নিরাশ হয়ে চলে গেলেন রিপন।
অফিসের ভেতরে গিয়ে সিটে বসেছি, কিন্তু মন খুবই অস্থির। কিছুতেই কাজে মনোযোগ দিতে পারছি না। একটু পরে দোতলার সিঁড়ির কাছে এলাম। জানালা দিয়ে দেখি, রাস্তার ওপারে সিএ ভবনের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে রিপন। কিছুক্ষণ দেখার পর রিপনের প্রতি খুব মায়া হলো। কী যেন মনে করে রাস্তায় গিয়ে গলা চড়িয়ে ডাকলাম, রি...প...ন...। মনে হলো, তিনি অপেক্ষায়ই ছিলেন। আমার ডাক শুনে প্রাণপণে দৌড়ে রাস্তা পেরিয়ে এপারে এলেন। এরপর আমাকে ধরে কাঁদতে লাগলেন শিশুর মতো। জড়িয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ, অনেকক্ষণ, অনন্তকাল...। তাঁকে কোনোমতে থামিয়ে জানতে চাইলাম, কিছু খাবেন? রিপন বললেন, ‘না স্যার, আজ যাই। অনেক দূর যেতে হবে। নতুন করে বাঁচব বলে আপনার দোয়া নিতে এসেছি।’ আমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফার্মগেটের দিকে হেঁটে চলে গেলেন রিপন।
আমি তাঁর পথের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। হালকা উত্তুরে হাওয়া গায়ে লাগছিল। মনে হচ্ছিল, বুকের পাথরটা ধীরে ধীরে সরে গেল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় এই ব্যক্তি জড়িত বলে তার সহযোদ্ধাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে এই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তাঁকে বার বার মাস্ক খুলতে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণ আসলে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
এই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় কী, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে হাদির পাশে মাস্ক পরা ওই ব্যক্তিকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলছেন অনেকেই। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আলোচিত ফয়সাল করিম কে?
পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় এই ব্যক্তি জড়িত বলে তার সহযোদ্ধাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে এই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তাঁকে বার বার মাস্ক খুলতে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণ আসলে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
এই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় কী, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে হাদির পাশে মাস্ক পরা ওই ব্যক্তিকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলছেন অনেকেই। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আলোচিত ফয়সাল করিম কে?
পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে পৌঁছাতে বড়জোর ১৫ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে টেলিফোন অপারেটর লিজার দুবার ফোন। এক যুবকের তাড়ায় লিজার তর সইছিল না। সেই যুবক আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষায় আছেন।
১৫ জুলাই ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে পৌঁছাতে বড়জোর ১৫ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে টেলিফোন অপারেটর লিজার দুবার ফোন। এক যুবকের তাড়ায় লিজার তর সইছিল না। সেই যুবক আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষায় আছেন।
১৫ জুলাই ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে পৌঁছাতে বড়জোর ১৫ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে টেলিফোন অপারেটর লিজার দুবার ফোন। এক যুবকের তাড়ায় লিজার তর সইছিল না। সেই যুবক আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষায় আছেন।
১৫ জুলাই ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে পৌঁছাতে বড়জোর ১৫ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে টেলিফোন অপারেটর লিজার দুবার ফোন। এক যুবকের তাড়ায় লিজার তর সইছিল না। সেই যুবক আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষায় আছেন।
১৫ জুলাই ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে