কামরুল হাসান
ভালো একটা নিউজ হাতে পাওয়া একজন সংবাদকর্মীর কাছে লটারি জেতার মতো। ভাগ্য ভালো থাকলে মিলবে, না হলে নয়। একবার কুষ্টিয়ায় গিয়ে তেমনই সংকটে পড়তে হলো আমাকে। দিনকয়েক ঘুরেফিরে ভালো কোনো নিউজ মিলল না, যা পেলাম তাতে মন ভরে না। অনেকটা মন খারাপ করে একদিন বিকেলে গেলাম পাশের জেলা মেহেরপুরে।
মেহেরপুর শহরটা আগে থেকেই পছন্দের। ছোট শহরটায় যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাট, তেমনি মানুষের পরিশীলিত আচার-আচরণ। তা ছাড়া একাত্তরের বিজয়ের স্মৃতি তো আছেই।
মেহেরপুর পৌর ভবনের ওপর তলায় একটি সাজানো-গোছানো বিশ্রামাগার আছে। ভাড়ার বিনিময়ে সেখানে রাত্রিবাস করা যায়। সেই বিশ্রামাগারেই আমার থাকার বন্দোবস্ত করে দিলেন সাংবাদিক তুহিন আরণ্য। পৌর ভবনের পাশেই তাঁর বাড়ি। সঙ্গে তিনি আবদার করলেন, রাতে তাঁর বাসাতেই আহার সারতে হবে।
তুহিনের আবদারে আমার কিছুটা অসম্মতি থাকলেও ধোপে টিকল না। অবশ্য সেই খাবার টেবিলে আলোচনায় মিলে গেল একটি মজার নিউজের খোঁজ। কথায় কথায় তাঁদের পরিবারের কে একজন বললেন, মেহেরপুরে একজন রাজনীতিক আছেন, যিনি সবাইকে মেরে বেড়ান। চোখের সামনে কেউ কিছু অনিয়ম করলে, অবাধ্য হলে বা কারও কোনো ত্রুটি ধরা পড়লে তিনি কোনো অভিযোগ করেন না। শুধু মারধর করেন। শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ব্যাংক কর্মকর্তা—কেউই তাঁর মার খাওয়ার তালিকা থেকে বাদ নেই।
তুহিনের বাড়ির মজাদার খাবার খাচ্ছি আর মজা করে গল্প শুনছি। মনে হলো, রাতের ভালো খাবারের সঙ্গে ভালো নিউজের ক্ষুধাটাও মিটে গেল। ফুরফুরে মনে ফিরে এলাম বিশ্রামাগারে।
সকাল থেকেই শুরু হলো সেই নিউজের খোঁজখবর। যে ব্যক্তিকে নিয়ে এত আলোচনা, তাঁর নাম আহম্মদ আলী। তিনি তখন মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার মেয়র। একসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি কতজনকে মেরেছেন, তার একটি তালিকা জোগাড় করতে গিয়ে দেখি, মাত্র এক মাসেই তিনি ১৫ জন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মেরেছেন। মারধরের কারণগুলোও অদ্ভুত।
খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলাম, সর্বশেষ মার খেয়েছেন কৃষি ব্যাংকের গাংনী উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপক ইমারত হোসেন। তিনি জানালেন, একদিন ঋণ নেওয়ার জন্য এক লোককে তাঁর কাছে পাঠিয়েছিলেন মেয়র। কিন্তু সেই লোকের জমির দাগ ও খতিয়ান নম্বর ঠিক ছিল না। তিনি তাঁকে ঋণ না দিয়ে ফিরিয়ে দেন। এ খবর পেয়ে মেয়র এসে তাঁকে কষে চড় মারেন।
মার খাওয়া আরেকজন ছিলেন গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আবদুস সালাম। তিনি বললেন, ‘আমি রোগী দেখছি না, এমন অভিযোগ পেয়ে মেয়র এসে প্রথমে আমাকে মারলেন, তারপর মারলেন আমার নার্সকে। অবশ্য এর প্রতিবাদে চিকিৎসকেরা পরে মানববন্ধন করেছিলেন।’পৌরসভার প্রকৌশলী কাওসার আলী বললেন, ‘সময়মতো কাজ হয়নি বলে মেয়র একদিন অফিস কক্ষের জানালা-দরজা বন্ধ করে আমাকে লাঠি দিয়ে পেটান। এরপর আমি মেহেরপুর ছেড়ে চলে যাই।’
আরও শুনলাম পৌরসভার ক্যাশিয়ার আবুল কালাম আজাদ, ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট নাসির উদ্দিন, টিকাদানকারী আবু তাহেরও কয়েক দফা মার খেয়েছেন। তো বিস্তারিত শুনতে গেলাম আবু তাহেরের কাছে। তিনি আমার পরিচয় পেয়ে বললেন, ‘আপনার কি মাথা খারাপ, এটা বললে তো আমি আবার মার খাব।’
এ রকম আরেকটি মারধরের ঘটনা ছিল গাংনী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে। একদিন বিদ্যুৎ চলে গেলে বিদ্যুতের কন্ট্রোল রুমে ফোন করেন মেয়র। এ সময় কেউ তাঁর ফোন ধরেননি। এরপর তিনি বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ অফিসে এসে সামনে যাঁকে পেয়েছেন, তাঁকেই মেরেছেন। এ রকম আরও বেশ কয়েকজনের কাহিনি শুনলাম। সবার কথা শুনে মনে হলো, মারধর ছাড়া যেন আর কিছুই জানেন না আহম্মদ আলী।
ভালো করে খোঁজ নিয়ে জানলাম, আহম্মদ আলীর এই মারধর নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বিভক্ত। এক পক্ষ তাঁর মারধর করাকে সমর্থন করে, আরেক পক্ষের রয়েছে বিরোধিতা। সে সময় মেয়রের পক্ষে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন। তিনি আমাকে বললেন, এ দেশের আইনি ব্যবস্থা সব অন্যায়ের তাৎক্ষণিক সাজা দিতে পারে না। সে কারণে মেয়রের এমন আচরণ দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে ভূমিকা রাখতে পারে। আবার মেয়রের বিরুদ্ধে ছিলেন গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক। তিনি বললেন, মেয়রের হাতে এভাবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরীহ নাগরিকদের মার খাওয়াটা খুবই নিন্দনীয়। তিনি আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না।
সবার কথা শেষ করে এবার এলাম মেয়র আহম্মদ আলীর কাছে। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, মারেন কেন? তাঁর সাফ জবাব, ‘খারাপ কিছু দেখলেই প্রতিবাদ করি। এটাই আমার কাজ। মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এটা আমি করেই যাব।’ উল্টো আমার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বললেন, ‘আমি ওদের মুরব্বি, আমি কি শাসন করতে পারব না?’
শেষ পর্যন্ত আহম্মদ আলীকে নিয়ে রিপোর্টটি ব্যাপক সাড়া পেল। প্রথম আলোয় সেটা ছাপা হয়েছিল ‘তিনি শুধুই মারেন’ শিরোনামে। ২০১১ সালের ১২ আগস্ট সেই রিপোর্ট প্রকাশের পর বেশ হইচই পড়ে গেল। দুপুরের দিকে আহম্মদ আলী আমাকে ফোন করলেন। তাঁকে বেশ রাগান্বিত মনে হলো। তাঁর কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল, হাতের কাছে পেলে হয়তো আমিও রক্ষা পেতাম না। এরপর অনেক দিন আর আহম্মদ আলীর কোনো খোঁজখবর করা হয়নি।
মেহেরপুরের কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশীদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। কথায় কথায় এল আহম্মদ আলীর প্রসঙ্গ। আহম্মদ আলী আবারও মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। রফিকুর রশীদ বললেন, আহম্মদ আলী একেবারে চুপ হয়ে গেছেন। রীতিমতো বদলে যাওয়া মানুষ। এখন আর কোনো অধিকার আদায়ে তিনি সরব নন।
রফিকুর রশীদের ফোন রাখতেই ১১ বছর আগের আহম্মদ আলীকে মনে পড়ে গেল। নম্বর জোগাড় করে তাঁকে ফোন দিলাম। তিনি আমাকে ঠিকই চিনতে পারলেন। বাঘের মতো সাহসী লোকটার কাছে জানতে চাইলাম, হঠাৎ কেন নীরব হয়ে গেলেন? মেহেরপুরে কি আর কোনো অন্যায় নেই?
আমার প্রশ্ন শুনে অনেকক্ষণ হো হো করে হাসলেন আহম্মদ আলী। বললেন, ‘এখন সরব প্রতিবাদের দিন শেষ হয়ে গেছে। মানুষ এখন আর কোনো প্রতিবাদ নিতে পারে না, সবাই কেমন যেন হয়ে গেছে। এ বয়সে এসে এত সব করে কী হবে? তার চেয়ে নীরবই থেকে যাই। তাই নীরব হয়ে আছি।’
এরপর থেকে বারবার মনে হচ্ছে, আহম্মদ আলী বললেন ঠিকই, আসলেই কি প্রতিবাদের দিন শেষ হয়ে গেছে?
আরও পড়ুন:
ভালো একটা নিউজ হাতে পাওয়া একজন সংবাদকর্মীর কাছে লটারি জেতার মতো। ভাগ্য ভালো থাকলে মিলবে, না হলে নয়। একবার কুষ্টিয়ায় গিয়ে তেমনই সংকটে পড়তে হলো আমাকে। দিনকয়েক ঘুরেফিরে ভালো কোনো নিউজ মিলল না, যা পেলাম তাতে মন ভরে না। অনেকটা মন খারাপ করে একদিন বিকেলে গেলাম পাশের জেলা মেহেরপুরে।
মেহেরপুর শহরটা আগে থেকেই পছন্দের। ছোট শহরটায় যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাট, তেমনি মানুষের পরিশীলিত আচার-আচরণ। তা ছাড়া একাত্তরের বিজয়ের স্মৃতি তো আছেই।
মেহেরপুর পৌর ভবনের ওপর তলায় একটি সাজানো-গোছানো বিশ্রামাগার আছে। ভাড়ার বিনিময়ে সেখানে রাত্রিবাস করা যায়। সেই বিশ্রামাগারেই আমার থাকার বন্দোবস্ত করে দিলেন সাংবাদিক তুহিন আরণ্য। পৌর ভবনের পাশেই তাঁর বাড়ি। সঙ্গে তিনি আবদার করলেন, রাতে তাঁর বাসাতেই আহার সারতে হবে।
তুহিনের আবদারে আমার কিছুটা অসম্মতি থাকলেও ধোপে টিকল না। অবশ্য সেই খাবার টেবিলে আলোচনায় মিলে গেল একটি মজার নিউজের খোঁজ। কথায় কথায় তাঁদের পরিবারের কে একজন বললেন, মেহেরপুরে একজন রাজনীতিক আছেন, যিনি সবাইকে মেরে বেড়ান। চোখের সামনে কেউ কিছু অনিয়ম করলে, অবাধ্য হলে বা কারও কোনো ত্রুটি ধরা পড়লে তিনি কোনো অভিযোগ করেন না। শুধু মারধর করেন। শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ব্যাংক কর্মকর্তা—কেউই তাঁর মার খাওয়ার তালিকা থেকে বাদ নেই।
তুহিনের বাড়ির মজাদার খাবার খাচ্ছি আর মজা করে গল্প শুনছি। মনে হলো, রাতের ভালো খাবারের সঙ্গে ভালো নিউজের ক্ষুধাটাও মিটে গেল। ফুরফুরে মনে ফিরে এলাম বিশ্রামাগারে।
সকাল থেকেই শুরু হলো সেই নিউজের খোঁজখবর। যে ব্যক্তিকে নিয়ে এত আলোচনা, তাঁর নাম আহম্মদ আলী। তিনি তখন মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার মেয়র। একসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি কতজনকে মেরেছেন, তার একটি তালিকা জোগাড় করতে গিয়ে দেখি, মাত্র এক মাসেই তিনি ১৫ জন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মেরেছেন। মারধরের কারণগুলোও অদ্ভুত।
খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলাম, সর্বশেষ মার খেয়েছেন কৃষি ব্যাংকের গাংনী উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপক ইমারত হোসেন। তিনি জানালেন, একদিন ঋণ নেওয়ার জন্য এক লোককে তাঁর কাছে পাঠিয়েছিলেন মেয়র। কিন্তু সেই লোকের জমির দাগ ও খতিয়ান নম্বর ঠিক ছিল না। তিনি তাঁকে ঋণ না দিয়ে ফিরিয়ে দেন। এ খবর পেয়ে মেয়র এসে তাঁকে কষে চড় মারেন।
মার খাওয়া আরেকজন ছিলেন গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আবদুস সালাম। তিনি বললেন, ‘আমি রোগী দেখছি না, এমন অভিযোগ পেয়ে মেয়র এসে প্রথমে আমাকে মারলেন, তারপর মারলেন আমার নার্সকে। অবশ্য এর প্রতিবাদে চিকিৎসকেরা পরে মানববন্ধন করেছিলেন।’পৌরসভার প্রকৌশলী কাওসার আলী বললেন, ‘সময়মতো কাজ হয়নি বলে মেয়র একদিন অফিস কক্ষের জানালা-দরজা বন্ধ করে আমাকে লাঠি দিয়ে পেটান। এরপর আমি মেহেরপুর ছেড়ে চলে যাই।’
আরও শুনলাম পৌরসভার ক্যাশিয়ার আবুল কালাম আজাদ, ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট নাসির উদ্দিন, টিকাদানকারী আবু তাহেরও কয়েক দফা মার খেয়েছেন। তো বিস্তারিত শুনতে গেলাম আবু তাহেরের কাছে। তিনি আমার পরিচয় পেয়ে বললেন, ‘আপনার কি মাথা খারাপ, এটা বললে তো আমি আবার মার খাব।’
এ রকম আরেকটি মারধরের ঘটনা ছিল গাংনী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে। একদিন বিদ্যুৎ চলে গেলে বিদ্যুতের কন্ট্রোল রুমে ফোন করেন মেয়র। এ সময় কেউ তাঁর ফোন ধরেননি। এরপর তিনি বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ অফিসে এসে সামনে যাঁকে পেয়েছেন, তাঁকেই মেরেছেন। এ রকম আরও বেশ কয়েকজনের কাহিনি শুনলাম। সবার কথা শুনে মনে হলো, মারধর ছাড়া যেন আর কিছুই জানেন না আহম্মদ আলী।
ভালো করে খোঁজ নিয়ে জানলাম, আহম্মদ আলীর এই মারধর নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বিভক্ত। এক পক্ষ তাঁর মারধর করাকে সমর্থন করে, আরেক পক্ষের রয়েছে বিরোধিতা। সে সময় মেয়রের পক্ষে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন। তিনি আমাকে বললেন, এ দেশের আইনি ব্যবস্থা সব অন্যায়ের তাৎক্ষণিক সাজা দিতে পারে না। সে কারণে মেয়রের এমন আচরণ দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে ভূমিকা রাখতে পারে। আবার মেয়রের বিরুদ্ধে ছিলেন গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক। তিনি বললেন, মেয়রের হাতে এভাবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরীহ নাগরিকদের মার খাওয়াটা খুবই নিন্দনীয়। তিনি আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না।
সবার কথা শেষ করে এবার এলাম মেয়র আহম্মদ আলীর কাছে। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, মারেন কেন? তাঁর সাফ জবাব, ‘খারাপ কিছু দেখলেই প্রতিবাদ করি। এটাই আমার কাজ। মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এটা আমি করেই যাব।’ উল্টো আমার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বললেন, ‘আমি ওদের মুরব্বি, আমি কি শাসন করতে পারব না?’
শেষ পর্যন্ত আহম্মদ আলীকে নিয়ে রিপোর্টটি ব্যাপক সাড়া পেল। প্রথম আলোয় সেটা ছাপা হয়েছিল ‘তিনি শুধুই মারেন’ শিরোনামে। ২০১১ সালের ১২ আগস্ট সেই রিপোর্ট প্রকাশের পর বেশ হইচই পড়ে গেল। দুপুরের দিকে আহম্মদ আলী আমাকে ফোন করলেন। তাঁকে বেশ রাগান্বিত মনে হলো। তাঁর কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল, হাতের কাছে পেলে হয়তো আমিও রক্ষা পেতাম না। এরপর অনেক দিন আর আহম্মদ আলীর কোনো খোঁজখবর করা হয়নি।
মেহেরপুরের কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশীদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। কথায় কথায় এল আহম্মদ আলীর প্রসঙ্গ। আহম্মদ আলী আবারও মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। রফিকুর রশীদ বললেন, আহম্মদ আলী একেবারে চুপ হয়ে গেছেন। রীতিমতো বদলে যাওয়া মানুষ। এখন আর কোনো অধিকার আদায়ে তিনি সরব নন।
রফিকুর রশীদের ফোন রাখতেই ১১ বছর আগের আহম্মদ আলীকে মনে পড়ে গেল। নম্বর জোগাড় করে তাঁকে ফোন দিলাম। তিনি আমাকে ঠিকই চিনতে পারলেন। বাঘের মতো সাহসী লোকটার কাছে জানতে চাইলাম, হঠাৎ কেন নীরব হয়ে গেলেন? মেহেরপুরে কি আর কোনো অন্যায় নেই?
আমার প্রশ্ন শুনে অনেকক্ষণ হো হো করে হাসলেন আহম্মদ আলী। বললেন, ‘এখন সরব প্রতিবাদের দিন শেষ হয়ে গেছে। মানুষ এখন আর কোনো প্রতিবাদ নিতে পারে না, সবাই কেমন যেন হয়ে গেছে। এ বয়সে এসে এত সব করে কী হবে? তার চেয়ে নীরবই থেকে যাই। তাই নীরব হয়ে আছি।’
এরপর থেকে বারবার মনে হচ্ছে, আহম্মদ আলী বললেন ঠিকই, আসলেই কি প্রতিবাদের দিন শেষ হয়ে গেছে?
আরও পড়ুন:
চাঁদপুর-মুন্সিগঞ্জ নৌ সীমানার মোহনপুর এলাকায় মেঘনা নদীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে দুই জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও একজন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মুন্সিগঞ্জ ও চাঁদপুর মতলব উত্তর মোহনপুরের চড় আব্দুল্লাহপুর নাছিরার চরে নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
১ দিন আগেরাজধানীর মোহাম্মদপুরে আবারও অস্ত্রের মুখে একটি পরিবারকে জিম্মি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে মোহাম্মদপুরের বছিলাসংলগ্ন লাউতলা এলাকার ৮ নম্বর সড়কের ১০ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তত্ত্বাবধায়ক নাসিমা বেগম মোহাম্মদপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
২৮ নভেম্বর ২০২৪রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
০৮ নভেম্বর ২০২৪পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
০৭ নভেম্বর ২০২৪