কামরুল হাসান

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন, কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো খুবই স্বাভাবিক, চন্দ্র-সূর্যের মতো।
কিন্তু ওই মোড়ে দাঁড়িয়ে কেউ যদি ভালোবেসে চুমু খায় আলগোছে, তাহলে? সবাই বলবে, ছি ছি, একি নোংরামি! সবার সামনে ঘুষ খাওয়া যায়, কিন্তু ভালোবাসা প্রকাশ করা যায় না।
ভালোবাসা যে এ দেশে অন্ত্যজ, তা বেনজীর নামের মেয়েটিও জানতেন। তার পরও কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ভালোবাসার মানুষকে চুমু খেলেন, তা-ও থানার ভেতরে পুলিশের নাকের ডগায়। মুহূর্তে হইচই পড়ে গেল। ওসি দৌড়ে এসে বললেন, ‘এসব কী হচ্ছে?’ বেনজীর তখন প্রাচীরের মতো সুদৃঢ়, বললেন, ‘ভালোবাসার প্রমাণ দিলাম।’
যে লোকটির জন্য কিশোরী মেয়েটি ‘উজাড় যমুনা’, মনে হলো তাঁকে একটু দেখে আসি। তিনি হাজতের দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছেন। গরাদের শিকের ওপারের দেয়ালে তাঁর ঝাঁকড়া চুলের আলোকছটা। থানার বাইরে তখন তুমুল চিৎকার—গুরু গুরু। জনতা তাদের ‘গুরু’ ফারুক মাহফুজ আনাম জেমসকে ছাড়িয়ে নিতে এসেছে। জেমস তখন হার্টথ্রব রকস্টার।
বেনজীরকে প্রথম দেখায় আমার কিশোরী বলে ভুল হয়েছিল। হালকা-পাতলা গড়নের মেয়েটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, স্কুলের গণ্ডিই হয়তো পেরোয়নি। তবে আমি ভুল করলেও ভুল করেননি তাঁর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বাবা ইকবাল সাজ্জাদ। তিনি ঠিকই অপহরণ মামলা ঠুকে দেন উত্তরা থানায়। এরপর জেমস আর বেনজীর আমেরিকা থেকে ঢাকায় এলে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাঁদের পাকড়াও করে নিয়ে আসে।
খবর পেয়ে উত্তরা থানায় যেতে যেতে আমার একটু দেরি হয়ে যায়। গিয়ে দেখি, গেটের সামনে শত শত লোকের ভিড়। পুলিশ থানার ফটক বন্ধ করে দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশও আনা হয়েছে। নিজের পরিচয় দিয়ে কোনোভাবে ভেতরে ঢুকেই দেখি, সব পুলিশের মুখে সেই চুম্বনের গল্প। জেমসের খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, তাঁকে হাজতে রাখা হয়েছে। আর বেনজীর থানার বিভিন্ন রুমে ঘুরছেন, কিন্তু থানা থেকে বেরোতে পারছেন না। বেনজীরের বাবার লোকেরা থানার ভেতরে বেশ তৎপর। মনে হলো, পুলিশ তাঁদের সহযোগিতা করছে।
ডিউটি অফিসারের সামনের টেবিলে এফআইআরের মোটা খাতা। দুজন সাংবাদিক খুব মনোযোগসহকারে সেই খাতা থেকে এফআইআরের বিবরণ টুকে নিচ্ছেন। খাতাটা হাতে নিয়ে দেখি, মামলা হয়েছে ২৩ অক্টোবর (২০০২)। জেমস ছাড়াও আসামি করা হয়েছে গীতিকার বিশু শিকদার এবং জেমসের বাসার গৃহকর্মী কামরুল ইসলামকে। ইকবাল সাজ্জাদ নিজেই মামলাটি করেছেন। বলেছেন, তাঁর ও লেভেল পড়ুয়া মেয়ে বেনজীর সাজ্জাদ একাকে অপহরণ করা হয়েছে। ২০০২ সালের ২৮ জুন সন্ধ্যায় মেয়েটি কোচিং থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথে উত্তরা হাইস্কুলের পাশ থেকে জেমস, তাঁর বন্ধু বিশু ও গৃহকর্মী মিলে তাঁকে অপহরণ করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে আমেরিকায় চলে যান। তিনি বিদেশে থাকায় তখন মামলা করতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন ইকবাল।
ডিউটি অফিসার আমাকে বললেন, জেমস ও বেনজীর ২৪ অক্টোবর (২০০২) ঢাকায় ফিরবেন, সে কথা জানতেন ইকবাল সাজ্জাদ। সেভাবেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে আসে।
থানার ভেতরে বেনজীর খুবই অস্থির, কোথাও দুদণ্ড থামছেন না। তাঁর সঙ্গে কোনো কথাও বলা যাচ্ছে না। একবার বাগে পেয়ে জানতে চাইলাম, জেমসের সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে? বললেন, ২০০০ সালে পরিচয়, এরপর আমেরিকায় গিয়ে বিয়ে করেন। জেমস বিবাহিত, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান আছে, সে কথা জানেন কি না, জিজ্ঞাসা করতেই বেনজীর বললেন, আমাকে বিয়ে করার আগে আমেরিকা থেকে আগের বউকে সে ডিভোর্স দেয় পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে। বেনজীর বারবার অনুরোধ করলেন তাঁর পক্ষে থাকতে, যেন তাঁর বাবা তাঁকে থানা থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে না পারেন।
বেলা বাড়তে শুরু করেছে। চারদিকে খবর রটে গেছে, গায়ক জেমসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উত্তরা থানার সামনে ভিড়ও বাড়ছে। আদালত থেকে ইতিমধ্যে গাড়ি এসে গেছে আসামি নেওয়ার জন্য। পুলিশ জেমসকে বেশিক্ষণ আর রাখতে চাইছে না। এরপর দুজনকেই পাঠানো হয় আদালতে। জেমসকে নিয়ে আদালতের গাড়ি যখন থানা ছাড়ল, তখন বাইরে দাঁড়ানো অসংখ্য ভক্তের চোখ ছিল সিক্ত।
আদালতে গিয়েও বেনজীর তাঁর বাবার সঙ্গে বাসায় যেতে অস্বীকৃতি জানালেন। বিচারক জেমসকে কারাগারে আর বেনজীরকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর আদেশ দিলেন।
থানা থেকে জেমসকে যখন আদালতে নেওয়া হচ্ছিল, তখন জনতার সারিতে ছিলেন জেমসের আগের স্ত্রী কানিজ রাবেয়া রথির ভাইও। অনেক অনুনয় করার পর তিনি কথা বলতে রাজি হলেন। বললেন, তাঁর বোন রথির সঙ্গে জেমসের পরিচয় শাহীন কলেজের কনসার্টে, ১৯৯১ সালে। জেমসের তখন অত নামডাক হয়নি। রথি আনন্দ বিচিত্রার ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতার রানারআপ। সবার অমতে তাঁদের বিয়ে হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। কিন্তু মেয়েটিকে জেমস কখনো কোলে নিতেন না। বলতেন, মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই। ২০০০ সালের দিকে জেমস মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। ওই সময় বেনজীরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। বেনজীর ফোন করে রথিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। এরপর একদিন ডাকযোগে ডিভোর্সের চিঠি পান রথি। তার আগেই দুই সন্তান নিয়ে তিনি উত্তরায় বাবার বাসায় চলে আসেন।
গ্রেপ্তারের পর সাত দিন কারাবাস করেন জেমস। বেনজীরও এই কদিন নিরাপত্তা হেফাজতে থাকেন। ৩০ এপ্রিল তাঁদের আদালতে আনা হয়। বেনজীরের বাবা মেয়েকে নেওয়ার জন্য এমন কোনো চেষ্টা নেই যে করেননি। কিন্তু বেনজীর অনড়। তিনি বাবার সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানান। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর জবানবন্দি শোনেন, বিয়ের কাগজপত্র দেখেন। আদালতে নিজ জিম্মায় বেনজীরকে চলে যেতে আদেশ দেন। আর জেমসকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। আদালত যখন এই আদেশ দিচ্ছিলেন, তখন দেশের সংগীতশিল্পীতে ঠাসা সেখানে। এসেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু, এন্ড্রু কিশোর, তপন চৌধুরী, সঞ্জীব চৌধুরী, হাসান, বাপ্পা মজুমদার, বেবী নাজনীনসহ অনেকে। আদালত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁরা ওঠেন উত্তরার বাসায়। পরে বেনজীরের একটি কন্যাসন্তান হয়।
অনেক দিন পর বেনজীরের খোঁজ নিতে কয়েকজন তারকা সাংবাদিককে ফোন দিলাম। বেনজীরের ব্যক্তিগত নম্বরেও ফোন দিলাম, ধরলেন না। সাংবাদিকেরা বললেন, বেনজীরের সঙ্গে জেমসের কোনো সম্পর্ক নেই। বেনজীর তাঁর মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় চলে গেছেন। সেখানেই থিতু হয়েছেন।
আমার চোখের সামনে ভাসছিল তখন আদালত প্রাঙ্গণে বেনজীরের সেই আকুলতা। ভর মজলিসে বারবার বলছিলেন, আমি জেমসকে ছাড়া বাঁচব না, আমি জেমসকে ভালোবাসি। অথচ বেনজীর আজ অনেক দূরে, তবু ঠিকই বেঁচে আছেন। মানুষ আসলে এভাবেই বাঁচে। কিন্তু বেনজীরকে ছেড়ে জেমস কি ভালো আছেন? সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেমস বলেছিলেন, ‘আমার জীবন কখনো মসৃণ ছিল না। জীবনের যে লড়াই, সংগ্রাম; হয়তো সেটাই আমার গানে ফুটে ওঠে।...এসো বুকের গহীনে, বাড়ীর শিথানে/ এসো পথভোলা সেই নদীর কিনারে…সিনায় সিনায় লাগে টান।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন, কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো খুবই স্বাভাবিক, চন্দ্র-সূর্যের মতো।
কিন্তু ওই মোড়ে দাঁড়িয়ে কেউ যদি ভালোবেসে চুমু খায় আলগোছে, তাহলে? সবাই বলবে, ছি ছি, একি নোংরামি! সবার সামনে ঘুষ খাওয়া যায়, কিন্তু ভালোবাসা প্রকাশ করা যায় না।
ভালোবাসা যে এ দেশে অন্ত্যজ, তা বেনজীর নামের মেয়েটিও জানতেন। তার পরও কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ভালোবাসার মানুষকে চুমু খেলেন, তা-ও থানার ভেতরে পুলিশের নাকের ডগায়। মুহূর্তে হইচই পড়ে গেল। ওসি দৌড়ে এসে বললেন, ‘এসব কী হচ্ছে?’ বেনজীর তখন প্রাচীরের মতো সুদৃঢ়, বললেন, ‘ভালোবাসার প্রমাণ দিলাম।’
যে লোকটির জন্য কিশোরী মেয়েটি ‘উজাড় যমুনা’, মনে হলো তাঁকে একটু দেখে আসি। তিনি হাজতের দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছেন। গরাদের শিকের ওপারের দেয়ালে তাঁর ঝাঁকড়া চুলের আলোকছটা। থানার বাইরে তখন তুমুল চিৎকার—গুরু গুরু। জনতা তাদের ‘গুরু’ ফারুক মাহফুজ আনাম জেমসকে ছাড়িয়ে নিতে এসেছে। জেমস তখন হার্টথ্রব রকস্টার।
বেনজীরকে প্রথম দেখায় আমার কিশোরী বলে ভুল হয়েছিল। হালকা-পাতলা গড়নের মেয়েটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, স্কুলের গণ্ডিই হয়তো পেরোয়নি। তবে আমি ভুল করলেও ভুল করেননি তাঁর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বাবা ইকবাল সাজ্জাদ। তিনি ঠিকই অপহরণ মামলা ঠুকে দেন উত্তরা থানায়। এরপর জেমস আর বেনজীর আমেরিকা থেকে ঢাকায় এলে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাঁদের পাকড়াও করে নিয়ে আসে।
খবর পেয়ে উত্তরা থানায় যেতে যেতে আমার একটু দেরি হয়ে যায়। গিয়ে দেখি, গেটের সামনে শত শত লোকের ভিড়। পুলিশ থানার ফটক বন্ধ করে দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশও আনা হয়েছে। নিজের পরিচয় দিয়ে কোনোভাবে ভেতরে ঢুকেই দেখি, সব পুলিশের মুখে সেই চুম্বনের গল্প। জেমসের খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, তাঁকে হাজতে রাখা হয়েছে। আর বেনজীর থানার বিভিন্ন রুমে ঘুরছেন, কিন্তু থানা থেকে বেরোতে পারছেন না। বেনজীরের বাবার লোকেরা থানার ভেতরে বেশ তৎপর। মনে হলো, পুলিশ তাঁদের সহযোগিতা করছে।
ডিউটি অফিসারের সামনের টেবিলে এফআইআরের মোটা খাতা। দুজন সাংবাদিক খুব মনোযোগসহকারে সেই খাতা থেকে এফআইআরের বিবরণ টুকে নিচ্ছেন। খাতাটা হাতে নিয়ে দেখি, মামলা হয়েছে ২৩ অক্টোবর (২০০২)। জেমস ছাড়াও আসামি করা হয়েছে গীতিকার বিশু শিকদার এবং জেমসের বাসার গৃহকর্মী কামরুল ইসলামকে। ইকবাল সাজ্জাদ নিজেই মামলাটি করেছেন। বলেছেন, তাঁর ও লেভেল পড়ুয়া মেয়ে বেনজীর সাজ্জাদ একাকে অপহরণ করা হয়েছে। ২০০২ সালের ২৮ জুন সন্ধ্যায় মেয়েটি কোচিং থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথে উত্তরা হাইস্কুলের পাশ থেকে জেমস, তাঁর বন্ধু বিশু ও গৃহকর্মী মিলে তাঁকে অপহরণ করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে আমেরিকায় চলে যান। তিনি বিদেশে থাকায় তখন মামলা করতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন ইকবাল।
ডিউটি অফিসার আমাকে বললেন, জেমস ও বেনজীর ২৪ অক্টোবর (২০০২) ঢাকায় ফিরবেন, সে কথা জানতেন ইকবাল সাজ্জাদ। সেভাবেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে আসে।
থানার ভেতরে বেনজীর খুবই অস্থির, কোথাও দুদণ্ড থামছেন না। তাঁর সঙ্গে কোনো কথাও বলা যাচ্ছে না। একবার বাগে পেয়ে জানতে চাইলাম, জেমসের সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে? বললেন, ২০০০ সালে পরিচয়, এরপর আমেরিকায় গিয়ে বিয়ে করেন। জেমস বিবাহিত, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান আছে, সে কথা জানেন কি না, জিজ্ঞাসা করতেই বেনজীর বললেন, আমাকে বিয়ে করার আগে আমেরিকা থেকে আগের বউকে সে ডিভোর্স দেয় পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে। বেনজীর বারবার অনুরোধ করলেন তাঁর পক্ষে থাকতে, যেন তাঁর বাবা তাঁকে থানা থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে না পারেন।
বেলা বাড়তে শুরু করেছে। চারদিকে খবর রটে গেছে, গায়ক জেমসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উত্তরা থানার সামনে ভিড়ও বাড়ছে। আদালত থেকে ইতিমধ্যে গাড়ি এসে গেছে আসামি নেওয়ার জন্য। পুলিশ জেমসকে বেশিক্ষণ আর রাখতে চাইছে না। এরপর দুজনকেই পাঠানো হয় আদালতে। জেমসকে নিয়ে আদালতের গাড়ি যখন থানা ছাড়ল, তখন বাইরে দাঁড়ানো অসংখ্য ভক্তের চোখ ছিল সিক্ত।
আদালতে গিয়েও বেনজীর তাঁর বাবার সঙ্গে বাসায় যেতে অস্বীকৃতি জানালেন। বিচারক জেমসকে কারাগারে আর বেনজীরকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর আদেশ দিলেন।
থানা থেকে জেমসকে যখন আদালতে নেওয়া হচ্ছিল, তখন জনতার সারিতে ছিলেন জেমসের আগের স্ত্রী কানিজ রাবেয়া রথির ভাইও। অনেক অনুনয় করার পর তিনি কথা বলতে রাজি হলেন। বললেন, তাঁর বোন রথির সঙ্গে জেমসের পরিচয় শাহীন কলেজের কনসার্টে, ১৯৯১ সালে। জেমসের তখন অত নামডাক হয়নি। রথি আনন্দ বিচিত্রার ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতার রানারআপ। সবার অমতে তাঁদের বিয়ে হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। কিন্তু মেয়েটিকে জেমস কখনো কোলে নিতেন না। বলতেন, মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই। ২০০০ সালের দিকে জেমস মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। ওই সময় বেনজীরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। বেনজীর ফোন করে রথিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। এরপর একদিন ডাকযোগে ডিভোর্সের চিঠি পান রথি। তার আগেই দুই সন্তান নিয়ে তিনি উত্তরায় বাবার বাসায় চলে আসেন।
গ্রেপ্তারের পর সাত দিন কারাবাস করেন জেমস। বেনজীরও এই কদিন নিরাপত্তা হেফাজতে থাকেন। ৩০ এপ্রিল তাঁদের আদালতে আনা হয়। বেনজীরের বাবা মেয়েকে নেওয়ার জন্য এমন কোনো চেষ্টা নেই যে করেননি। কিন্তু বেনজীর অনড়। তিনি বাবার সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানান। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর জবানবন্দি শোনেন, বিয়ের কাগজপত্র দেখেন। আদালতে নিজ জিম্মায় বেনজীরকে চলে যেতে আদেশ দেন। আর জেমসকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। আদালত যখন এই আদেশ দিচ্ছিলেন, তখন দেশের সংগীতশিল্পীতে ঠাসা সেখানে। এসেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু, এন্ড্রু কিশোর, তপন চৌধুরী, সঞ্জীব চৌধুরী, হাসান, বাপ্পা মজুমদার, বেবী নাজনীনসহ অনেকে। আদালত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁরা ওঠেন উত্তরার বাসায়। পরে বেনজীরের একটি কন্যাসন্তান হয়।
অনেক দিন পর বেনজীরের খোঁজ নিতে কয়েকজন তারকা সাংবাদিককে ফোন দিলাম। বেনজীরের ব্যক্তিগত নম্বরেও ফোন দিলাম, ধরলেন না। সাংবাদিকেরা বললেন, বেনজীরের সঙ্গে জেমসের কোনো সম্পর্ক নেই। বেনজীর তাঁর মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় চলে গেছেন। সেখানেই থিতু হয়েছেন।
আমার চোখের সামনে ভাসছিল তখন আদালত প্রাঙ্গণে বেনজীরের সেই আকুলতা। ভর মজলিসে বারবার বলছিলেন, আমি জেমসকে ছাড়া বাঁচব না, আমি জেমসকে ভালোবাসি। অথচ বেনজীর আজ অনেক দূরে, তবু ঠিকই বেঁচে আছেন। মানুষ আসলে এভাবেই বাঁচে। কিন্তু বেনজীরকে ছেড়ে জেমস কি ভালো আছেন? সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেমস বলেছিলেন, ‘আমার জীবন কখনো মসৃণ ছিল না। জীবনের যে লড়াই, সংগ্রাম; হয়তো সেটাই আমার গানে ফুটে ওঠে।...এসো বুকের গহীনে, বাড়ীর শিথানে/ এসো পথভোলা সেই নদীর কিনারে…সিনায় সিনায় লাগে টান।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় এই ব্যক্তি জড়িত বলে তার সহযোদ্ধাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে এই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তাঁকে বার বার মাস্ক খুলতে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণ আসলে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
এই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় কী, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে হাদির পাশে মাস্ক পরা ওই ব্যক্তিকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলছেন অনেকেই। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আলোচিত ফয়সাল করিম কে?
পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় এই ব্যক্তি জড়িত বলে তার সহযোদ্ধাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে এই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তাঁকে বার বার মাস্ক খুলতে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণ আসলে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
এই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় কী, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে হাদির পাশে মাস্ক পরা ওই ব্যক্তিকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলছেন অনেকেই। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আলোচিত ফয়সাল করিম কে?
পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো
০৬ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো
০৬ মে ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো
০৬ মে ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো
০৬ মে ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে