কামরুল হাসান

কুমিল্লা শহরতলির নেউরা গ্রামের লোকজন খবরটি শুনে খুবই হতবাক হয়েছিলেন। তাঁরা কস্মিনকালেও জানতে পারেননি, তাঁদের গ্রামের ভালো মানুষটি ‘সাধু বেশে পাকা চোর অতিশয়’। তা-ও যেনতেন নয়, রীতিমতো ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত’ তকমা আঁটা সন্ত্রাসী। এত দিন যে লোকটি দুহাতে দান-খয়রাত করেছেন, মসজিদ-এতিমখানা বানিয়েছেন, বিপদগ্রস্ত মানুষের কান্ডারি হয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেই লোক কী করে সন্ত্রাসী হতে পারেন, তার হিসাব মেলাতে পারছিলেন না গ্রামবাসী।
সেদিন নেউরা গ্রামের মানুষের মতো আমরাও ধন্দে পড়েছিলাম। এমন একজন সন্ত্রাসী কী করে সরকারের অনুমোদিত সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে বিদেশে যাচ্ছিলেন, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি মকসুদে পৌঁছাতে পারেননি।
২০০২ সালের নভেম্বর মাস। সেনাবাহিনীর অপারেশন ক্লিন হার্ট সবে তিন সপ্তাহ পেরিয়েছে। অভিযানের ভয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীরা ডেরা ছেড়ে যে যেদিকে পারছিল পালাচ্ছিল। সে সময় বেশির ভাগ সন্ত্রাসীর গন্তব্য ছিল ভারতের কলকাতা। কয়েকজন ব্যাংকক, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরেও পাড়ি জমান। তবে ইউরোপ-আমেরিকায় কেউ যেতে পারেন, তা তখন পর্যন্ত শুনিনি। হঠাৎ সেই খবর এল বিমানবন্দর থেকে।
২০০২ সালের ৪ নভেম্বর ছিল সোমবার। সকালের দিকে এক পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা ফোন করে বললেন, বিদেশে পালানোর সময় এক শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন। লন্ডনগামী উড়োজাহাজ থেকে তাঁকে নামিয়ে আনা হয়েছে। আর একটু হলেই উড়াল দিত উড়োজাহাজটি। তিনি সেই সন্ত্রাসীর নাম জানেন না, অথবা বলতে চাইলেন না।
বিমানবন্দরের রাস্তা সেদিন ফাঁকাই ছিল। বন্দরে পৌঁছাতে খুব বেশি সময়ও লাগল না। ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা জানালেন, উড়োজাহাজ থেকে যাঁকে নামিয়ে আনা হয়েছে, তিনি এখন আর বিমানবন্দরের ভেতরে নেই। সেনা সদস্যরা তাঁকে নিয়ে গেছেন। কোথায় নিয়ে গেছেন, তা তাঁরা জানেন না।
বিমানবন্দর নামে তখনো কোনো থানা হয়নি। উত্তরা থানা এসব দেখভাল করত। মনে হলো, উত্তরা থানায় গেলে সন্ত্রাসীর হদিস পাওয়া যাবে। সেখানে গিয়ে দেখি এলাহি কাণ্ড! থানার সামনের রাস্তা সেনাবাহিনী আর পুলিশের গাড়িতে ঠাসা। ভেতরে বড় কর্মকর্তারা সেই ব্যক্তিকে জেরা করছেন। আমরা বেশ কয়েকজন সাংবাদিক থানার ভেতরে ঢুকে দেখি, ওসির চেয়ারে পুলিশের এক কর্মকর্তা বসা; তাঁর সামনে গোয়েন্দা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তা। তাঁরা খুব ছোট করে একটি ব্রিফ দিলেন।
এক কর্মকর্তা বললেন, যে লোকটি পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁর নাম আবদুর রশিদ, পিতার নাম তাজুল ইসলাম, মায়ের নাম রোজিয়া বেগম, বাড়ি কুমিল্লা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে, নেউরা গ্রামে। তিনি নোট দেখে দেখে বললেন, এই লোকটি সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে লন্ডন হয়ে ইউরোপ যাচ্ছিলেন।ফ্লাইটটির সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিমানবন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তিনি উড়োজাহাজে উঠে বসেছিলেন।
উড়োজাহাজটি ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন খবর পেয়ে তাঁকে নামিয়ে আনেন। আমাদের কেউ একজন জানতে চাইলেন, কীভাবে খবর পেলেন? ওই কর্মকর্তা বললেন, সেই সন্ত্রাসী এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছিলেন। উড়োজাহাজে সেই ব্যবসায়ীও ছিলেন। তিনি তাঁকে চিনতে পেরে পুলিশকে ফোন করে জানান। আমরা জানতে চাইলাম, তাঁর সঙ্গে আর কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন? এবার কর্মকর্তা একটু ভেবে বললেন, হ্যাঁ, আরও একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর নাম নজরুল কোরেশি। তিনি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের প্রোডাকশন ডিরেক্টর।
এতটুকু শুনে আমরা কিছুতেই ধরতে পারছিলাম না, আবদুর রশিদের সঙ্গে চ্যানেলের কর্মকর্তারই-বা কী সম্পর্ক। এর মধ্যে আমাদের এক সাংবাদিক বলে ওঠেন, তিনি কি সন্ত্রাসী কালা ফারুক? এবার সেই কর্মকর্তা মুখে কিছু না বলে মাথা নেড়ে হ্যাঁসূচক জবাব দিয়ে বলেন, ‘এবার আপনারা আসতে পারেন।’
কালা ফারুকের নাম শুনেই সাংবাদিকদের কেউ কেউ তাঁর ফিরিস্তি বলা শুরু করলেন। একজন বললেন, তিনি তো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভিপি রিয়াদ খুনের আসামি। আরেকজন বললেন, কিছুদিন আগে হা-মীম গ্রুপের যে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই হলো, সেই মামলায় কালা ফারুকের নাম ছিল। থানার ভেতরে তখনো জেরা চলছে। আমরা থানা থেকে বেরিয়ে এলাম।
বেশির ভাগ খবরের শুরুতে কোনো কিছু জানা না গেলেও একটা পর্যায়ে গিয়ে ডালপালা ছড়াতে থাকে, কালা ফারুকের ঘটনাও সেভাবে মোটাতাজা হতে শুরু করল। বিকেলের আগেই অনেক কিছু প্রকাশ হয়ে গেল। আমরা জানতে পারলাম, কালা ফারুক আসলে সুইডেনে যাচ্ছিলেন একটি সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে।
তাঁকে টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সুইডেনের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আমন্ত্রণে ১০ জন সাংস্কৃতিক কর্মীর একটি দলকে সেখানে পাঠানোর জন্য নির্ধারণ করেছিল শিল্পকলা একাডেমি। সেই দলের প্রধান ছিলেন গায়ক শুভ্র দেব। ওই দলে গায়িকা শাকিলা জাফর ও অভিনেত্রী আরিফা জামান মৌসুমীর যাওয়ার কথা ছিল। শিল্পকলা একাডেমির তালিকা অনুযায়ী সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁদের বিদেশে যাওয়ার ব্যাপার অনাপত্তি দেয়।
এরপরই তাঁরা ভিসা নেন। তবে সেদিন প্রথম দফায় যাচ্ছিলেন দলের মাত্র দুজন সদস্য। তাঁদের একজন কালা ফারুক, অন্যজন হলেন নজরুল কোরেশি। পরে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, কালা ফারুকের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র জোগাড়ের কাজ করে দিয়েছিলেন নজরুল কোরেশি। অবশ্য ধরা পড়ার দিন রাতে চ্যানেলটি থেকে বলা হয়েছিল, এটা নজরুল কোরেশির ব্যক্তিগত সফর। এর সঙ্গে চ্যানেলের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
সে সময় সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন সেলিমা রহমান। একদিন ফলোআপের সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন, একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কালা ফারুকের জন্য তদবির করেছিলেন। সেদিন তিনি আমাকে সেই ব্যবসায়ীর নামও বলেছিলেন ‘অব দ্য রেকর্ড’। আমি সেই নাম আর লিখতে পারিনি।
পরদিন সকালে চমকে ওঠার মতো খবর পেলাম। কালা ফারুক নিহত হয়েছেন রাতে। তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। কী হয়েছিল রাতে? উত্তরা থানার এক কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, কালা ফারুক ছিলেন কাফরুল থানার একটি অস্ত্র মামলার আসামি। তাঁকে নিয়ে অভিযানে বেরিয়েছিল পুলিশ। তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি এলাকায় অভিযানের সময় তাঁকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এতে পুলিশও গুলি চালায়।
সে সময় কালা ফারুক পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ গুলি করে। সেই গুলিতে ফারুক নিহত হন। কাফরুল থানার সেকেন্ড অফিসার মোস্তাছিন আহমেদ আমাকে বলেছিলেন, দারোগা হানিফ মাহমুদ বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা করেছেন। দুপুরের দিকে মর্গে গিয়ে পেলাম ফরেনসিকের প্রভাষক নুর হোসেনকে। ময়নাতদন্ত শেষে তিনি বললেন, গায়ে শটগানের অসংখ্য গুলি আছে। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে এটা বলতে আর কিছুই লাগবে না যে এটা ছিল ‘ক্রসফায়ার’ বা বন্দুকযুদ্ধের আদি সংস্করণ।
কালা ফারুকের লাশ দুই দিন মর্গে পড়ে ছিল। কেউ নিতে আসেনি। পরে তাঁর লাশ পাঠানো হয় গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। গতকাল কথা হলো কুমিল্লার সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয়ের সঙ্গে। তিনি বললেন, কুমিল্লা বিমানবন্দরের রাস্তায় যেতে কালা ফারুকের কবর দেখা যায়।
কালা ফারুক নিহত হওয়ার ১০-১২ দিন পর লালমাটিয়া থেকে আমার অফিসে এলেন কালা ফারুকের দ্বিতীয় স্ত্রী শুক্লা। তিনি ছিলেন কালা ফারুকের ব্যবসায়িক পার্টনারের স্ত্রী। পরে তাঁকে বিয়ে করেন ফারুক। কুমিল্লায় স্বপ্না নামে তাঁর প্রথম স্ত্রী থাকেন। সেই ঘরে দুটি সন্তান ছিল। শুক্লা আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বললেন, এক ব্যবসায়ী পুলিশকে টাকা দিয়ে তাঁর স্বামীকে খুন করিয়েছেন।
শুক্লার কথা শুনে আমার মনে পড়ে গেল প্রতিমন্ত্রী সেলিমা রহমানের কথা। তিনিও একই ব্যক্তির নাম বলেছিলেন। আমি জানি না, তাঁর সঙ্গে কালা ফারুকের কিসের বিরোধ ছিল। তবে এটুকু বুঝি, এসব প্রভাবশালী নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করেন, এরপর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে ছুড়ে ফেলেন। কালা ফারুকের ভাগ্যে হয়তো সেটাই জুটেছিল।
তবে প্রিয় পাঠক, এত দিন পরেও সেই প্রভাবশালীর নাম বলতে না পারার ব্যর্থতাকে নিশ্চয় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কারণ, নামটি যে অব দ্য রেকর্ড।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

কুমিল্লা শহরতলির নেউরা গ্রামের লোকজন খবরটি শুনে খুবই হতবাক হয়েছিলেন। তাঁরা কস্মিনকালেও জানতে পারেননি, তাঁদের গ্রামের ভালো মানুষটি ‘সাধু বেশে পাকা চোর অতিশয়’। তা-ও যেনতেন নয়, রীতিমতো ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত’ তকমা আঁটা সন্ত্রাসী। এত দিন যে লোকটি দুহাতে দান-খয়রাত করেছেন, মসজিদ-এতিমখানা বানিয়েছেন, বিপদগ্রস্ত মানুষের কান্ডারি হয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেই লোক কী করে সন্ত্রাসী হতে পারেন, তার হিসাব মেলাতে পারছিলেন না গ্রামবাসী।
সেদিন নেউরা গ্রামের মানুষের মতো আমরাও ধন্দে পড়েছিলাম। এমন একজন সন্ত্রাসী কী করে সরকারের অনুমোদিত সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে বিদেশে যাচ্ছিলেন, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি মকসুদে পৌঁছাতে পারেননি।
২০০২ সালের নভেম্বর মাস। সেনাবাহিনীর অপারেশন ক্লিন হার্ট সবে তিন সপ্তাহ পেরিয়েছে। অভিযানের ভয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীরা ডেরা ছেড়ে যে যেদিকে পারছিল পালাচ্ছিল। সে সময় বেশির ভাগ সন্ত্রাসীর গন্তব্য ছিল ভারতের কলকাতা। কয়েকজন ব্যাংকক, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরেও পাড়ি জমান। তবে ইউরোপ-আমেরিকায় কেউ যেতে পারেন, তা তখন পর্যন্ত শুনিনি। হঠাৎ সেই খবর এল বিমানবন্দর থেকে।
২০০২ সালের ৪ নভেম্বর ছিল সোমবার। সকালের দিকে এক পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা ফোন করে বললেন, বিদেশে পালানোর সময় এক শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন। লন্ডনগামী উড়োজাহাজ থেকে তাঁকে নামিয়ে আনা হয়েছে। আর একটু হলেই উড়াল দিত উড়োজাহাজটি। তিনি সেই সন্ত্রাসীর নাম জানেন না, অথবা বলতে চাইলেন না।
বিমানবন্দরের রাস্তা সেদিন ফাঁকাই ছিল। বন্দরে পৌঁছাতে খুব বেশি সময়ও লাগল না। ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা জানালেন, উড়োজাহাজ থেকে যাঁকে নামিয়ে আনা হয়েছে, তিনি এখন আর বিমানবন্দরের ভেতরে নেই। সেনা সদস্যরা তাঁকে নিয়ে গেছেন। কোথায় নিয়ে গেছেন, তা তাঁরা জানেন না।
বিমানবন্দর নামে তখনো কোনো থানা হয়নি। উত্তরা থানা এসব দেখভাল করত। মনে হলো, উত্তরা থানায় গেলে সন্ত্রাসীর হদিস পাওয়া যাবে। সেখানে গিয়ে দেখি এলাহি কাণ্ড! থানার সামনের রাস্তা সেনাবাহিনী আর পুলিশের গাড়িতে ঠাসা। ভেতরে বড় কর্মকর্তারা সেই ব্যক্তিকে জেরা করছেন। আমরা বেশ কয়েকজন সাংবাদিক থানার ভেতরে ঢুকে দেখি, ওসির চেয়ারে পুলিশের এক কর্মকর্তা বসা; তাঁর সামনে গোয়েন্দা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তা। তাঁরা খুব ছোট করে একটি ব্রিফ দিলেন।
এক কর্মকর্তা বললেন, যে লোকটি পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁর নাম আবদুর রশিদ, পিতার নাম তাজুল ইসলাম, মায়ের নাম রোজিয়া বেগম, বাড়ি কুমিল্লা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে, নেউরা গ্রামে। তিনি নোট দেখে দেখে বললেন, এই লোকটি সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে লন্ডন হয়ে ইউরোপ যাচ্ছিলেন।ফ্লাইটটির সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিমানবন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তিনি উড়োজাহাজে উঠে বসেছিলেন।
উড়োজাহাজটি ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন খবর পেয়ে তাঁকে নামিয়ে আনেন। আমাদের কেউ একজন জানতে চাইলেন, কীভাবে খবর পেলেন? ওই কর্মকর্তা বললেন, সেই সন্ত্রাসী এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছিলেন। উড়োজাহাজে সেই ব্যবসায়ীও ছিলেন। তিনি তাঁকে চিনতে পেরে পুলিশকে ফোন করে জানান। আমরা জানতে চাইলাম, তাঁর সঙ্গে আর কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন? এবার কর্মকর্তা একটু ভেবে বললেন, হ্যাঁ, আরও একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর নাম নজরুল কোরেশি। তিনি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের প্রোডাকশন ডিরেক্টর।
এতটুকু শুনে আমরা কিছুতেই ধরতে পারছিলাম না, আবদুর রশিদের সঙ্গে চ্যানেলের কর্মকর্তারই-বা কী সম্পর্ক। এর মধ্যে আমাদের এক সাংবাদিক বলে ওঠেন, তিনি কি সন্ত্রাসী কালা ফারুক? এবার সেই কর্মকর্তা মুখে কিছু না বলে মাথা নেড়ে হ্যাঁসূচক জবাব দিয়ে বলেন, ‘এবার আপনারা আসতে পারেন।’
কালা ফারুকের নাম শুনেই সাংবাদিকদের কেউ কেউ তাঁর ফিরিস্তি বলা শুরু করলেন। একজন বললেন, তিনি তো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভিপি রিয়াদ খুনের আসামি। আরেকজন বললেন, কিছুদিন আগে হা-মীম গ্রুপের যে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই হলো, সেই মামলায় কালা ফারুকের নাম ছিল। থানার ভেতরে তখনো জেরা চলছে। আমরা থানা থেকে বেরিয়ে এলাম।
বেশির ভাগ খবরের শুরুতে কোনো কিছু জানা না গেলেও একটা পর্যায়ে গিয়ে ডালপালা ছড়াতে থাকে, কালা ফারুকের ঘটনাও সেভাবে মোটাতাজা হতে শুরু করল। বিকেলের আগেই অনেক কিছু প্রকাশ হয়ে গেল। আমরা জানতে পারলাম, কালা ফারুক আসলে সুইডেনে যাচ্ছিলেন একটি সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে।
তাঁকে টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সুইডেনের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আমন্ত্রণে ১০ জন সাংস্কৃতিক কর্মীর একটি দলকে সেখানে পাঠানোর জন্য নির্ধারণ করেছিল শিল্পকলা একাডেমি। সেই দলের প্রধান ছিলেন গায়ক শুভ্র দেব। ওই দলে গায়িকা শাকিলা জাফর ও অভিনেত্রী আরিফা জামান মৌসুমীর যাওয়ার কথা ছিল। শিল্পকলা একাডেমির তালিকা অনুযায়ী সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁদের বিদেশে যাওয়ার ব্যাপার অনাপত্তি দেয়।
এরপরই তাঁরা ভিসা নেন। তবে সেদিন প্রথম দফায় যাচ্ছিলেন দলের মাত্র দুজন সদস্য। তাঁদের একজন কালা ফারুক, অন্যজন হলেন নজরুল কোরেশি। পরে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, কালা ফারুকের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র জোগাড়ের কাজ করে দিয়েছিলেন নজরুল কোরেশি। অবশ্য ধরা পড়ার দিন রাতে চ্যানেলটি থেকে বলা হয়েছিল, এটা নজরুল কোরেশির ব্যক্তিগত সফর। এর সঙ্গে চ্যানেলের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
সে সময় সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন সেলিমা রহমান। একদিন ফলোআপের সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন, একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কালা ফারুকের জন্য তদবির করেছিলেন। সেদিন তিনি আমাকে সেই ব্যবসায়ীর নামও বলেছিলেন ‘অব দ্য রেকর্ড’। আমি সেই নাম আর লিখতে পারিনি।
পরদিন সকালে চমকে ওঠার মতো খবর পেলাম। কালা ফারুক নিহত হয়েছেন রাতে। তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। কী হয়েছিল রাতে? উত্তরা থানার এক কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, কালা ফারুক ছিলেন কাফরুল থানার একটি অস্ত্র মামলার আসামি। তাঁকে নিয়ে অভিযানে বেরিয়েছিল পুলিশ। তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি এলাকায় অভিযানের সময় তাঁকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এতে পুলিশও গুলি চালায়।
সে সময় কালা ফারুক পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ গুলি করে। সেই গুলিতে ফারুক নিহত হন। কাফরুল থানার সেকেন্ড অফিসার মোস্তাছিন আহমেদ আমাকে বলেছিলেন, দারোগা হানিফ মাহমুদ বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা করেছেন। দুপুরের দিকে মর্গে গিয়ে পেলাম ফরেনসিকের প্রভাষক নুর হোসেনকে। ময়নাতদন্ত শেষে তিনি বললেন, গায়ে শটগানের অসংখ্য গুলি আছে। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে এটা বলতে আর কিছুই লাগবে না যে এটা ছিল ‘ক্রসফায়ার’ বা বন্দুকযুদ্ধের আদি সংস্করণ।
কালা ফারুকের লাশ দুই দিন মর্গে পড়ে ছিল। কেউ নিতে আসেনি। পরে তাঁর লাশ পাঠানো হয় গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। গতকাল কথা হলো কুমিল্লার সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয়ের সঙ্গে। তিনি বললেন, কুমিল্লা বিমানবন্দরের রাস্তায় যেতে কালা ফারুকের কবর দেখা যায়।
কালা ফারুক নিহত হওয়ার ১০-১২ দিন পর লালমাটিয়া থেকে আমার অফিসে এলেন কালা ফারুকের দ্বিতীয় স্ত্রী শুক্লা। তিনি ছিলেন কালা ফারুকের ব্যবসায়িক পার্টনারের স্ত্রী। পরে তাঁকে বিয়ে করেন ফারুক। কুমিল্লায় স্বপ্না নামে তাঁর প্রথম স্ত্রী থাকেন। সেই ঘরে দুটি সন্তান ছিল। শুক্লা আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বললেন, এক ব্যবসায়ী পুলিশকে টাকা দিয়ে তাঁর স্বামীকে খুন করিয়েছেন।
শুক্লার কথা শুনে আমার মনে পড়ে গেল প্রতিমন্ত্রী সেলিমা রহমানের কথা। তিনিও একই ব্যক্তির নাম বলেছিলেন। আমি জানি না, তাঁর সঙ্গে কালা ফারুকের কিসের বিরোধ ছিল। তবে এটুকু বুঝি, এসব প্রভাবশালী নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করেন, এরপর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে ছুড়ে ফেলেন। কালা ফারুকের ভাগ্যে হয়তো সেটাই জুটেছিল।
তবে প্রিয় পাঠক, এত দিন পরেও সেই প্রভাবশালীর নাম বলতে না পারার ব্যর্থতাকে নিশ্চয় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কারণ, নামটি যে অব দ্য রেকর্ড।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

কুমিল্লা শহরতলির নেউরা গ্রামের লোকজন খবরটি শুনে খুবই হতবাক হয়েছিলেন। তাঁরা কস্মিনকালেও জানতে পারেননি, তাঁদের গ্রামের ভালো মানুষটি ‘সাধু বেশে পাকা চোর অতিশয়’। তা-ও যেনতেন নয়, রীতিমতো ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত’ তকমা আঁটা সন্ত্রাসী। এত দিন যে লোকটি দুহাতে দান-খয়রাত করেছেন, মসজিদ-এতিমখানা বানিয়েছেন, বিপদগ্রস্ত মানুষের কান্ডারি হয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেই লোক কী করে সন্ত্রাসী হতে পারেন, তার হিসাব মেলাতে পারছিলেন না গ্রামবাসী।
সেদিন নেউরা গ্রামের মানুষের মতো আমরাও ধন্দে পড়েছিলাম। এমন একজন সন্ত্রাসী কী করে সরকারের অনুমোদিত সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে বিদেশে যাচ্ছিলেন, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি মকসুদে পৌঁছাতে পারেননি।
২০০২ সালের নভেম্বর মাস। সেনাবাহিনীর অপারেশন ক্লিন হার্ট সবে তিন সপ্তাহ পেরিয়েছে। অভিযানের ভয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীরা ডেরা ছেড়ে যে যেদিকে পারছিল পালাচ্ছিল। সে সময় বেশির ভাগ সন্ত্রাসীর গন্তব্য ছিল ভারতের কলকাতা। কয়েকজন ব্যাংকক, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরেও পাড়ি জমান। তবে ইউরোপ-আমেরিকায় কেউ যেতে পারেন, তা তখন পর্যন্ত শুনিনি। হঠাৎ সেই খবর এল বিমানবন্দর থেকে।
২০০২ সালের ৪ নভেম্বর ছিল সোমবার। সকালের দিকে এক পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা ফোন করে বললেন, বিদেশে পালানোর সময় এক শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন। লন্ডনগামী উড়োজাহাজ থেকে তাঁকে নামিয়ে আনা হয়েছে। আর একটু হলেই উড়াল দিত উড়োজাহাজটি। তিনি সেই সন্ত্রাসীর নাম জানেন না, অথবা বলতে চাইলেন না।
বিমানবন্দরের রাস্তা সেদিন ফাঁকাই ছিল। বন্দরে পৌঁছাতে খুব বেশি সময়ও লাগল না। ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা জানালেন, উড়োজাহাজ থেকে যাঁকে নামিয়ে আনা হয়েছে, তিনি এখন আর বিমানবন্দরের ভেতরে নেই। সেনা সদস্যরা তাঁকে নিয়ে গেছেন। কোথায় নিয়ে গেছেন, তা তাঁরা জানেন না।
বিমানবন্দর নামে তখনো কোনো থানা হয়নি। উত্তরা থানা এসব দেখভাল করত। মনে হলো, উত্তরা থানায় গেলে সন্ত্রাসীর হদিস পাওয়া যাবে। সেখানে গিয়ে দেখি এলাহি কাণ্ড! থানার সামনের রাস্তা সেনাবাহিনী আর পুলিশের গাড়িতে ঠাসা। ভেতরে বড় কর্মকর্তারা সেই ব্যক্তিকে জেরা করছেন। আমরা বেশ কয়েকজন সাংবাদিক থানার ভেতরে ঢুকে দেখি, ওসির চেয়ারে পুলিশের এক কর্মকর্তা বসা; তাঁর সামনে গোয়েন্দা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তা। তাঁরা খুব ছোট করে একটি ব্রিফ দিলেন।
এক কর্মকর্তা বললেন, যে লোকটি পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁর নাম আবদুর রশিদ, পিতার নাম তাজুল ইসলাম, মায়ের নাম রোজিয়া বেগম, বাড়ি কুমিল্লা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে, নেউরা গ্রামে। তিনি নোট দেখে দেখে বললেন, এই লোকটি সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে লন্ডন হয়ে ইউরোপ যাচ্ছিলেন।ফ্লাইটটির সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিমানবন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তিনি উড়োজাহাজে উঠে বসেছিলেন।
উড়োজাহাজটি ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন খবর পেয়ে তাঁকে নামিয়ে আনেন। আমাদের কেউ একজন জানতে চাইলেন, কীভাবে খবর পেলেন? ওই কর্মকর্তা বললেন, সেই সন্ত্রাসী এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছিলেন। উড়োজাহাজে সেই ব্যবসায়ীও ছিলেন। তিনি তাঁকে চিনতে পেরে পুলিশকে ফোন করে জানান। আমরা জানতে চাইলাম, তাঁর সঙ্গে আর কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন? এবার কর্মকর্তা একটু ভেবে বললেন, হ্যাঁ, আরও একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর নাম নজরুল কোরেশি। তিনি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের প্রোডাকশন ডিরেক্টর।
এতটুকু শুনে আমরা কিছুতেই ধরতে পারছিলাম না, আবদুর রশিদের সঙ্গে চ্যানেলের কর্মকর্তারই-বা কী সম্পর্ক। এর মধ্যে আমাদের এক সাংবাদিক বলে ওঠেন, তিনি কি সন্ত্রাসী কালা ফারুক? এবার সেই কর্মকর্তা মুখে কিছু না বলে মাথা নেড়ে হ্যাঁসূচক জবাব দিয়ে বলেন, ‘এবার আপনারা আসতে পারেন।’
কালা ফারুকের নাম শুনেই সাংবাদিকদের কেউ কেউ তাঁর ফিরিস্তি বলা শুরু করলেন। একজন বললেন, তিনি তো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভিপি রিয়াদ খুনের আসামি। আরেকজন বললেন, কিছুদিন আগে হা-মীম গ্রুপের যে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই হলো, সেই মামলায় কালা ফারুকের নাম ছিল। থানার ভেতরে তখনো জেরা চলছে। আমরা থানা থেকে বেরিয়ে এলাম।
বেশির ভাগ খবরের শুরুতে কোনো কিছু জানা না গেলেও একটা পর্যায়ে গিয়ে ডালপালা ছড়াতে থাকে, কালা ফারুকের ঘটনাও সেভাবে মোটাতাজা হতে শুরু করল। বিকেলের আগেই অনেক কিছু প্রকাশ হয়ে গেল। আমরা জানতে পারলাম, কালা ফারুক আসলে সুইডেনে যাচ্ছিলেন একটি সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে।
তাঁকে টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সুইডেনের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আমন্ত্রণে ১০ জন সাংস্কৃতিক কর্মীর একটি দলকে সেখানে পাঠানোর জন্য নির্ধারণ করেছিল শিল্পকলা একাডেমি। সেই দলের প্রধান ছিলেন গায়ক শুভ্র দেব। ওই দলে গায়িকা শাকিলা জাফর ও অভিনেত্রী আরিফা জামান মৌসুমীর যাওয়ার কথা ছিল। শিল্পকলা একাডেমির তালিকা অনুযায়ী সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁদের বিদেশে যাওয়ার ব্যাপার অনাপত্তি দেয়।
এরপরই তাঁরা ভিসা নেন। তবে সেদিন প্রথম দফায় যাচ্ছিলেন দলের মাত্র দুজন সদস্য। তাঁদের একজন কালা ফারুক, অন্যজন হলেন নজরুল কোরেশি। পরে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, কালা ফারুকের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র জোগাড়ের কাজ করে দিয়েছিলেন নজরুল কোরেশি। অবশ্য ধরা পড়ার দিন রাতে চ্যানেলটি থেকে বলা হয়েছিল, এটা নজরুল কোরেশির ব্যক্তিগত সফর। এর সঙ্গে চ্যানেলের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
সে সময় সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন সেলিমা রহমান। একদিন ফলোআপের সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন, একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কালা ফারুকের জন্য তদবির করেছিলেন। সেদিন তিনি আমাকে সেই ব্যবসায়ীর নামও বলেছিলেন ‘অব দ্য রেকর্ড’। আমি সেই নাম আর লিখতে পারিনি।
পরদিন সকালে চমকে ওঠার মতো খবর পেলাম। কালা ফারুক নিহত হয়েছেন রাতে। তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। কী হয়েছিল রাতে? উত্তরা থানার এক কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, কালা ফারুক ছিলেন কাফরুল থানার একটি অস্ত্র মামলার আসামি। তাঁকে নিয়ে অভিযানে বেরিয়েছিল পুলিশ। তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি এলাকায় অভিযানের সময় তাঁকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এতে পুলিশও গুলি চালায়।
সে সময় কালা ফারুক পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ গুলি করে। সেই গুলিতে ফারুক নিহত হন। কাফরুল থানার সেকেন্ড অফিসার মোস্তাছিন আহমেদ আমাকে বলেছিলেন, দারোগা হানিফ মাহমুদ বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা করেছেন। দুপুরের দিকে মর্গে গিয়ে পেলাম ফরেনসিকের প্রভাষক নুর হোসেনকে। ময়নাতদন্ত শেষে তিনি বললেন, গায়ে শটগানের অসংখ্য গুলি আছে। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে এটা বলতে আর কিছুই লাগবে না যে এটা ছিল ‘ক্রসফায়ার’ বা বন্দুকযুদ্ধের আদি সংস্করণ।
কালা ফারুকের লাশ দুই দিন মর্গে পড়ে ছিল। কেউ নিতে আসেনি। পরে তাঁর লাশ পাঠানো হয় গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। গতকাল কথা হলো কুমিল্লার সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয়ের সঙ্গে। তিনি বললেন, কুমিল্লা বিমানবন্দরের রাস্তায় যেতে কালা ফারুকের কবর দেখা যায়।
কালা ফারুক নিহত হওয়ার ১০-১২ দিন পর লালমাটিয়া থেকে আমার অফিসে এলেন কালা ফারুকের দ্বিতীয় স্ত্রী শুক্লা। তিনি ছিলেন কালা ফারুকের ব্যবসায়িক পার্টনারের স্ত্রী। পরে তাঁকে বিয়ে করেন ফারুক। কুমিল্লায় স্বপ্না নামে তাঁর প্রথম স্ত্রী থাকেন। সেই ঘরে দুটি সন্তান ছিল। শুক্লা আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বললেন, এক ব্যবসায়ী পুলিশকে টাকা দিয়ে তাঁর স্বামীকে খুন করিয়েছেন।
শুক্লার কথা শুনে আমার মনে পড়ে গেল প্রতিমন্ত্রী সেলিমা রহমানের কথা। তিনিও একই ব্যক্তির নাম বলেছিলেন। আমি জানি না, তাঁর সঙ্গে কালা ফারুকের কিসের বিরোধ ছিল। তবে এটুকু বুঝি, এসব প্রভাবশালী নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করেন, এরপর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে ছুড়ে ফেলেন। কালা ফারুকের ভাগ্যে হয়তো সেটাই জুটেছিল।
তবে প্রিয় পাঠক, এত দিন পরেও সেই প্রভাবশালীর নাম বলতে না পারার ব্যর্থতাকে নিশ্চয় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কারণ, নামটি যে অব দ্য রেকর্ড।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

কুমিল্লা শহরতলির নেউরা গ্রামের লোকজন খবরটি শুনে খুবই হতবাক হয়েছিলেন। তাঁরা কস্মিনকালেও জানতে পারেননি, তাঁদের গ্রামের ভালো মানুষটি ‘সাধু বেশে পাকা চোর অতিশয়’। তা-ও যেনতেন নয়, রীতিমতো ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত’ তকমা আঁটা সন্ত্রাসী। এত দিন যে লোকটি দুহাতে দান-খয়রাত করেছেন, মসজিদ-এতিমখানা বানিয়েছেন, বিপদগ্রস্ত মানুষের কান্ডারি হয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেই লোক কী করে সন্ত্রাসী হতে পারেন, তার হিসাব মেলাতে পারছিলেন না গ্রামবাসী।
সেদিন নেউরা গ্রামের মানুষের মতো আমরাও ধন্দে পড়েছিলাম। এমন একজন সন্ত্রাসী কী করে সরকারের অনুমোদিত সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে বিদেশে যাচ্ছিলেন, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি মকসুদে পৌঁছাতে পারেননি।
২০০২ সালের নভেম্বর মাস। সেনাবাহিনীর অপারেশন ক্লিন হার্ট সবে তিন সপ্তাহ পেরিয়েছে। অভিযানের ভয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীরা ডেরা ছেড়ে যে যেদিকে পারছিল পালাচ্ছিল। সে সময় বেশির ভাগ সন্ত্রাসীর গন্তব্য ছিল ভারতের কলকাতা। কয়েকজন ব্যাংকক, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরেও পাড়ি জমান। তবে ইউরোপ-আমেরিকায় কেউ যেতে পারেন, তা তখন পর্যন্ত শুনিনি। হঠাৎ সেই খবর এল বিমানবন্দর থেকে।
২০০২ সালের ৪ নভেম্বর ছিল সোমবার। সকালের দিকে এক পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা ফোন করে বললেন, বিদেশে পালানোর সময় এক শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন। লন্ডনগামী উড়োজাহাজ থেকে তাঁকে নামিয়ে আনা হয়েছে। আর একটু হলেই উড়াল দিত উড়োজাহাজটি। তিনি সেই সন্ত্রাসীর নাম জানেন না, অথবা বলতে চাইলেন না।
বিমানবন্দরের রাস্তা সেদিন ফাঁকাই ছিল। বন্দরে পৌঁছাতে খুব বেশি সময়ও লাগল না। ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা জানালেন, উড়োজাহাজ থেকে যাঁকে নামিয়ে আনা হয়েছে, তিনি এখন আর বিমানবন্দরের ভেতরে নেই। সেনা সদস্যরা তাঁকে নিয়ে গেছেন। কোথায় নিয়ে গেছেন, তা তাঁরা জানেন না।
বিমানবন্দর নামে তখনো কোনো থানা হয়নি। উত্তরা থানা এসব দেখভাল করত। মনে হলো, উত্তরা থানায় গেলে সন্ত্রাসীর হদিস পাওয়া যাবে। সেখানে গিয়ে দেখি এলাহি কাণ্ড! থানার সামনের রাস্তা সেনাবাহিনী আর পুলিশের গাড়িতে ঠাসা। ভেতরে বড় কর্মকর্তারা সেই ব্যক্তিকে জেরা করছেন। আমরা বেশ কয়েকজন সাংবাদিক থানার ভেতরে ঢুকে দেখি, ওসির চেয়ারে পুলিশের এক কর্মকর্তা বসা; তাঁর সামনে গোয়েন্দা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তা। তাঁরা খুব ছোট করে একটি ব্রিফ দিলেন।
এক কর্মকর্তা বললেন, যে লোকটি পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁর নাম আবদুর রশিদ, পিতার নাম তাজুল ইসলাম, মায়ের নাম রোজিয়া বেগম, বাড়ি কুমিল্লা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে, নেউরা গ্রামে। তিনি নোট দেখে দেখে বললেন, এই লোকটি সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে লন্ডন হয়ে ইউরোপ যাচ্ছিলেন।ফ্লাইটটির সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিমানবন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তিনি উড়োজাহাজে উঠে বসেছিলেন।
উড়োজাহাজটি ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন খবর পেয়ে তাঁকে নামিয়ে আনেন। আমাদের কেউ একজন জানতে চাইলেন, কীভাবে খবর পেলেন? ওই কর্মকর্তা বললেন, সেই সন্ত্রাসী এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছিলেন। উড়োজাহাজে সেই ব্যবসায়ীও ছিলেন। তিনি তাঁকে চিনতে পেরে পুলিশকে ফোন করে জানান। আমরা জানতে চাইলাম, তাঁর সঙ্গে আর কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন? এবার কর্মকর্তা একটু ভেবে বললেন, হ্যাঁ, আরও একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর নাম নজরুল কোরেশি। তিনি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের প্রোডাকশন ডিরেক্টর।
এতটুকু শুনে আমরা কিছুতেই ধরতে পারছিলাম না, আবদুর রশিদের সঙ্গে চ্যানেলের কর্মকর্তারই-বা কী সম্পর্ক। এর মধ্যে আমাদের এক সাংবাদিক বলে ওঠেন, তিনি কি সন্ত্রাসী কালা ফারুক? এবার সেই কর্মকর্তা মুখে কিছু না বলে মাথা নেড়ে হ্যাঁসূচক জবাব দিয়ে বলেন, ‘এবার আপনারা আসতে পারেন।’
কালা ফারুকের নাম শুনেই সাংবাদিকদের কেউ কেউ তাঁর ফিরিস্তি বলা শুরু করলেন। একজন বললেন, তিনি তো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভিপি রিয়াদ খুনের আসামি। আরেকজন বললেন, কিছুদিন আগে হা-মীম গ্রুপের যে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই হলো, সেই মামলায় কালা ফারুকের নাম ছিল। থানার ভেতরে তখনো জেরা চলছে। আমরা থানা থেকে বেরিয়ে এলাম।
বেশির ভাগ খবরের শুরুতে কোনো কিছু জানা না গেলেও একটা পর্যায়ে গিয়ে ডালপালা ছড়াতে থাকে, কালা ফারুকের ঘটনাও সেভাবে মোটাতাজা হতে শুরু করল। বিকেলের আগেই অনেক কিছু প্রকাশ হয়ে গেল। আমরা জানতে পারলাম, কালা ফারুক আসলে সুইডেনে যাচ্ছিলেন একটি সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে।
তাঁকে টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সুইডেনের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আমন্ত্রণে ১০ জন সাংস্কৃতিক কর্মীর একটি দলকে সেখানে পাঠানোর জন্য নির্ধারণ করেছিল শিল্পকলা একাডেমি। সেই দলের প্রধান ছিলেন গায়ক শুভ্র দেব। ওই দলে গায়িকা শাকিলা জাফর ও অভিনেত্রী আরিফা জামান মৌসুমীর যাওয়ার কথা ছিল। শিল্পকলা একাডেমির তালিকা অনুযায়ী সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁদের বিদেশে যাওয়ার ব্যাপার অনাপত্তি দেয়।
এরপরই তাঁরা ভিসা নেন। তবে সেদিন প্রথম দফায় যাচ্ছিলেন দলের মাত্র দুজন সদস্য। তাঁদের একজন কালা ফারুক, অন্যজন হলেন নজরুল কোরেশি। পরে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, কালা ফারুকের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র জোগাড়ের কাজ করে দিয়েছিলেন নজরুল কোরেশি। অবশ্য ধরা পড়ার দিন রাতে চ্যানেলটি থেকে বলা হয়েছিল, এটা নজরুল কোরেশির ব্যক্তিগত সফর। এর সঙ্গে চ্যানেলের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
সে সময় সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন সেলিমা রহমান। একদিন ফলোআপের সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন, একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কালা ফারুকের জন্য তদবির করেছিলেন। সেদিন তিনি আমাকে সেই ব্যবসায়ীর নামও বলেছিলেন ‘অব দ্য রেকর্ড’। আমি সেই নাম আর লিখতে পারিনি।
পরদিন সকালে চমকে ওঠার মতো খবর পেলাম। কালা ফারুক নিহত হয়েছেন রাতে। তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। কী হয়েছিল রাতে? উত্তরা থানার এক কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, কালা ফারুক ছিলেন কাফরুল থানার একটি অস্ত্র মামলার আসামি। তাঁকে নিয়ে অভিযানে বেরিয়েছিল পুলিশ। তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি এলাকায় অভিযানের সময় তাঁকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এতে পুলিশও গুলি চালায়।
সে সময় কালা ফারুক পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ গুলি করে। সেই গুলিতে ফারুক নিহত হন। কাফরুল থানার সেকেন্ড অফিসার মোস্তাছিন আহমেদ আমাকে বলেছিলেন, দারোগা হানিফ মাহমুদ বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা করেছেন। দুপুরের দিকে মর্গে গিয়ে পেলাম ফরেনসিকের প্রভাষক নুর হোসেনকে। ময়নাতদন্ত শেষে তিনি বললেন, গায়ে শটগানের অসংখ্য গুলি আছে। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে এটা বলতে আর কিছুই লাগবে না যে এটা ছিল ‘ক্রসফায়ার’ বা বন্দুকযুদ্ধের আদি সংস্করণ।
কালা ফারুকের লাশ দুই দিন মর্গে পড়ে ছিল। কেউ নিতে আসেনি। পরে তাঁর লাশ পাঠানো হয় গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। গতকাল কথা হলো কুমিল্লার সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয়ের সঙ্গে। তিনি বললেন, কুমিল্লা বিমানবন্দরের রাস্তায় যেতে কালা ফারুকের কবর দেখা যায়।
কালা ফারুক নিহত হওয়ার ১০-১২ দিন পর লালমাটিয়া থেকে আমার অফিসে এলেন কালা ফারুকের দ্বিতীয় স্ত্রী শুক্লা। তিনি ছিলেন কালা ফারুকের ব্যবসায়িক পার্টনারের স্ত্রী। পরে তাঁকে বিয়ে করেন ফারুক। কুমিল্লায় স্বপ্না নামে তাঁর প্রথম স্ত্রী থাকেন। সেই ঘরে দুটি সন্তান ছিল। শুক্লা আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বললেন, এক ব্যবসায়ী পুলিশকে টাকা দিয়ে তাঁর স্বামীকে খুন করিয়েছেন।
শুক্লার কথা শুনে আমার মনে পড়ে গেল প্রতিমন্ত্রী সেলিমা রহমানের কথা। তিনিও একই ব্যক্তির নাম বলেছিলেন। আমি জানি না, তাঁর সঙ্গে কালা ফারুকের কিসের বিরোধ ছিল। তবে এটুকু বুঝি, এসব প্রভাবশালী নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করেন, এরপর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে ছুড়ে ফেলেন। কালা ফারুকের ভাগ্যে হয়তো সেটাই জুটেছিল।
তবে প্রিয় পাঠক, এত দিন পরেও সেই প্রভাবশালীর নাম বলতে না পারার ব্যর্থতাকে নিশ্চয় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কারণ, নামটি যে অব দ্য রেকর্ড।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

কুমিল্লা শহরতলির নেউরা গ্রামের লোকজন খবরটি শুনে খুবই হতবাক হয়েছিলেন। তাঁরা কস্মিনকালেও জানতে পারেননি, তাঁদের গ্রামের ভালো মানুষটি ‘সাধু বেশে পাকা চোর অতিশয়’। তা-ও যেনতেন নয়, রীতিমতো ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত’ তকমা আঁটা সন্ত্রাসী। এত দিন যে লোকটি দুহাতে দান-খয়রাত করেছেন, মসজিদ-এতিমখানা বানিয়েছেন, বিপদগ্রস
২০ মে ২০২৩
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

কুমিল্লা শহরতলির নেউরা গ্রামের লোকজন খবরটি শুনে খুবই হতবাক হয়েছিলেন। তাঁরা কস্মিনকালেও জানতে পারেননি, তাঁদের গ্রামের ভালো মানুষটি ‘সাধু বেশে পাকা চোর অতিশয়’। তা-ও যেনতেন নয়, রীতিমতো ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত’ তকমা আঁটা সন্ত্রাসী। এত দিন যে লোকটি দুহাতে দান-খয়রাত করেছেন, মসজিদ-এতিমখানা বানিয়েছেন, বিপদগ্রস
২০ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

কুমিল্লা শহরতলির নেউরা গ্রামের লোকজন খবরটি শুনে খুবই হতবাক হয়েছিলেন। তাঁরা কস্মিনকালেও জানতে পারেননি, তাঁদের গ্রামের ভালো মানুষটি ‘সাধু বেশে পাকা চোর অতিশয়’। তা-ও যেনতেন নয়, রীতিমতো ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত’ তকমা আঁটা সন্ত্রাসী। এত দিন যে লোকটি দুহাতে দান-খয়রাত করেছেন, মসজিদ-এতিমখানা বানিয়েছেন, বিপদগ্রস
২০ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

কুমিল্লা শহরতলির নেউরা গ্রামের লোকজন খবরটি শুনে খুবই হতবাক হয়েছিলেন। তাঁরা কস্মিনকালেও জানতে পারেননি, তাঁদের গ্রামের ভালো মানুষটি ‘সাধু বেশে পাকা চোর অতিশয়’। তা-ও যেনতেন নয়, রীতিমতো ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত’ তকমা আঁটা সন্ত্রাসী। এত দিন যে লোকটি দুহাতে দান-খয়রাত করেছেন, মসজিদ-এতিমখানা বানিয়েছেন, বিপদগ্রস
২০ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে