কামরুল হাসান

বয়স্ক লোকটি অনেকক্ষণ ধরে বসে ছিলেন। হাতে আ-ফোর সাইজের একটি কাগজের খাম। এক অফিস সহকারী এসে বললেন, ‘ভদ্রলোক আমার সঙ্গে ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।’ হাতে একটি জরুরি কাজ ছিল, তারপরও পীড়াপীড়ির কথা শুনে সেটা অসমাপ্ত রেখে চলে এলাম। এসে মনে হলো ভালোই হয়েছে, আর একটু দেরি করলে তিনি চলে যেতেন।
অভ্যর্থনাকক্ষের চেয়ারে ভদ্রলোককে দেখে ভালো লাগল। যৌবনে তিনি যে বেশ সুদর্শন ছিলেন, তা তখনো বোঝা যাচ্ছিল। তবে কথায় কিছুটা অবাঙালি টান, অনেকটা পাকিস্তানিদের মতো। আমাকে অনুরোধ করলেন, তিনি যা বলবেন, তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে। আমি রাজি হয়ে বললাম, বলুন। বললেন, ‘আমার নাম সৈয়দ মাহাবুব করিম। আমি তিন্নির হতভাগ্য বাবা। করাচিতে থাকি, কাল রাতে ঢাকায় এসেছি। আমার বোনের কাছে আপনার কথা শুনে দেখা করতে এলাম। আমার কিছু কষ্টের কথা আপনাকে বলব।’ আবারও তাঁকে বললাম, ঠিক আছে বলুন।
পাঠক, এবার খোলাসা করে বলি, এই ভদ্রলোক কোন তিন্নির বাবা। তিনি হলেন একসময়ের আলোচিত মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি, যিনি খুন হয়েছিলেন, তাঁর বাবা। তিনি কথা বলতে এসেছিলেন ২০০২ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি। আর তিন্নি খুন হয়েছিলেন ওই বছরের ১০ নভেম্বর রাতে। তাঁকে খুন করার পর মৃতদেহ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের কাছে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরিচয় না পাওয়ায় আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম জুরাইন কবরস্থানে লাশ দাফন করে। এরপর দৈনিক জনকণ্ঠে লাশের ছবি ছাপা হলে তিন্নির পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। সে সময় তিন্নির বাবা দেশে ছিলেন না। তাঁর চাচা সৈয়দ রেজাউল করিম বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মেয়ে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঢাকায় আসেন তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহাবুব করিম।
যত দূর মনে পড়ে, কেরানীগঞ্জ থানার এসআই কাইয়ুম আলী সরদার প্রথমে মামলাটি তদন্ত করছিলেন। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ ধরে নেয়, কোনো ক্ষোভের কারণে পিয়াল তাঁকে খুন করেন। তবে পুলিশ পিয়ালকে ধরলেও এ খুনের পেছনে যে আরও বড় কারও হাত ছিল, তা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু পরিষ্কার করে কেউ কিছুই বলতে পারছিলেন না। তিন্নির বাবা প্রথম সবকিছু খোলাসা করলেন। তিনি আমাকে বললেন, ‘আমি যা বলব আগে চুপ করে শুনবেন।’ আমি চুপ করে থাকলাম, তিনি বলতে থাকলেন।
মাহাবুব করিম বললেন, ১৯৭৬ সালে তিন্নির মা নাহিদ ফারজানাকে তিনি বিয়ে করেন। তিন্নির জন্ম হয় ১৯৭৭ সালের ২২ অক্টোবর। তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান ঈশিতার জন্ম হয় ১৯৮৫ সালে। এই কন্যা জন্মের ৪০ দিন পরে তিনি জীবিকার সন্ধানে পাকিস্তান হয়ে ইউরোপ পাড়ি দিতে দেশ ত্যাগ করেন। কিন্তু তখন ইরাক-ইরান যুদ্ধের কারণে ইউরোপ যেতে পারেননি। পাকিস্তানেই থেকে যান। তিন্নি তখন ঢাকায় কামরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। মেয়ের পড়াশোনার ক্ষতি হবে ভেবে মাহাবুব করিম তিন্নিকে ঢাকায় তাঁর দাদির কাছে রেখে স্ত্রী ও আরেক মেয়েকে নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। ১৯৯৩ সালে তিন্নি এসএসসিতে ভালো ফল করেন। পিতা-কন্যার মধ্যে তখন অবধি চিঠি বিনিময় হতো। ভালো ফল করার জন্য মেয়ের কাছে তিনি উপহারও পাঠিয়েছিলেন।
মাহাবুব করিম বলেন, ১৯৯৯ সালে তিনি তিন্নির একটি চিঠি পান। তিন্নি বাবাকে জানান, পিয়াল নামে বরিশালের এক ছেলেকে বিয়ে করেছেন। ছেলে পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার। তিন্নির মায়ের ওই বিয়েতে মত ছিল না। তিন্নির ফুফু তাঁর মাকে বলেছিলেন, সোমা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে ছেলেটার সম্পর্ক আছে। পরে তিন্নি তাঁর মাকে বলেছিলেন, হাতিরপুলের এক মেয়ের সঙ্গে পিয়ালের প্রেম ছিল, সেটা আর নেই।
তিন্নির বাবা সেদিন আমাকে বললেন, ‘বিয়ের পর থেকেই ছেলেটা তিন্নিকে সিনেমা-নাটকে অভিনয় করার জন্য চাপ দিতে থাকে। প্রথম দিকে তিন্নি তাতে রাজি হচ্ছিল না। তখন পিয়াল তাকে মারধর করে। একপর্যায়ে তিন্নি রাজি হলে জি এম সরকার নামের এক পরিচালক একদিন এসে বলেন, তিনি পোশাক কেনার জন্য তিন্নিকে ভারতে নিয়ে যাবেন। তিন্নি একা যেতে রাজি না হলে জি এম সরকার চলে যান। এরপর তাদের সংসারে একটি মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। সেই মেয়ের বয়স যখন দেড় বছর, তখন পিয়াল একদিন সাবেক এমপি গোলাম ফারুক অভিকে বাসায় নিয়ে আসে। অভিকে দেখেই চমকে ওঠে তিন্নি। সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে অভির সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল আগেই। প্রথম দেখায় অভি তাকে নানা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিন্নির সেটা ভালো লাগেনি। তিন্নি লক্ষ করে, তার স্বামী অভির কথায় ওঠবস করতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে তাদের বাসায় অভির আসা-যাওয়াও বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তিন্নির ওপরও খবরদারি করতে শুরু করে অভি। তিন্নি কী করবে, কোথায় যাবে–সবই নিয়ন্ত্রণ করে অভি। কথা না শুনলে তিন্নিকে ভয় দেখাতে থাকে।’
এভাবে বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিলেন মাহাবুব করিম, বেশ জোরে জোরে কথা বলছিলেন। আমি তাঁকে শান্ত করে শুনে যাচ্ছিলাম। একপর্যায়ে তিনি বললেন, কিছুদিনের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। সে সময় অভি একদিন তাঁকে ফোন করে পিয়ালের বাসায় যেতে বলেন। শুনে কিছুটা অবাক হন, তারপরও গিয়ে দেখেন তাঁর আগেই অভি সেখানে হাজির। একটু পর পিয়াল বাসায় আসেন। তাঁর সামনেই অভি পিয়ালকে উচ্চ স্বরে বকাঝকা করতে থাকেন। বলেন, ‘তোর বউ একটি বেশ্যা, তাকে তালাক দিয়ে দে। এই নে কাগজ।’ বলেই কয়েকটি কাগজ পিয়ালের হাতে ধরিয়ে দেন। এরপর অভি খুব উত্তেজিত হয়ে তিন্নিকে বলেন, ‘তুই তোর বাপকে বল কার কার সঙ্গে বিছানায় গেছিস।’ এরপর অভি তিন্নির বাবার সামনেই মেয়ের গায়ের কাপড় অর্ধেক খুলে আবার ছেড়ে দেন। তিন্নির মুখের কাছে পিস্তল ঠেকিয়ে বলেন, ‘দেখ, তোর সামনেই তোর বাবাকে উলঙ্গ করব।’ অভির কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পিয়াল বলে ওঠেন, ‘তিন্নির মা করাচিতে লিভ টুগেদার করে।’ অভি তখন তিন্নির বাবাকে বলেন, ‘এখনই চলে যাও, না হলে খরচ হয়ে যাবে।’ আর তিন্নিকে বলেন, ‘তুই আজ থেকে আমার কাছেই থাকবি। এক মাস পরে সব ফয়সালা করা হবে।’ অভি বলতে থাকেন, ‘আমি তোর পেছনে সময় আর টাকা ঢেলেছি।’ এসব কথা প্রকাশ করতে তিন্নির বাবাই আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। আমার তখনকার রিপোর্টেও তার উল্লেখ ছিল।
তিন্নি খুনের ঘটনা নিয়ে এর আগেও ‘আষাঢ়ে নয়’-এ লিখেছি। এই খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পরপরই গা ঢাকা দেন অভি। শুনেছিলাম, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী উলফার নেতা পরেশ বড়ুয়ার সাহায্য নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে কানাডায় থিতু হন। এখন সেখানেই আছেন বহাল তবিয়তে।
মাহাবুব করিম আমাকে বলেছিলেন, নিজে অপ্রস্তুত হওয়ার পরও মেয়েকে এভাবে ফেলে আসতে চাইছিলেন না তিনি, কিন্তু উপায়ও ছিল না। এর কয়েক দিন পরই তিন্নি খুন হন। এটুকু বলার পর মাহাবুব করিম আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। তিনি শিশুর মতো কাঁদতে থাকেন। সেই বৃদ্ধের কান্না আমাকেও সংক্রমিত করে। তাঁর সেই অসহায় মুখ অনেক দিন দৃষ্টি থেকে সরাতে পারিনি।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

বয়স্ক লোকটি অনেকক্ষণ ধরে বসে ছিলেন। হাতে আ-ফোর সাইজের একটি কাগজের খাম। এক অফিস সহকারী এসে বললেন, ‘ভদ্রলোক আমার সঙ্গে ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।’ হাতে একটি জরুরি কাজ ছিল, তারপরও পীড়াপীড়ির কথা শুনে সেটা অসমাপ্ত রেখে চলে এলাম। এসে মনে হলো ভালোই হয়েছে, আর একটু দেরি করলে তিনি চলে যেতেন।
অভ্যর্থনাকক্ষের চেয়ারে ভদ্রলোককে দেখে ভালো লাগল। যৌবনে তিনি যে বেশ সুদর্শন ছিলেন, তা তখনো বোঝা যাচ্ছিল। তবে কথায় কিছুটা অবাঙালি টান, অনেকটা পাকিস্তানিদের মতো। আমাকে অনুরোধ করলেন, তিনি যা বলবেন, তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে। আমি রাজি হয়ে বললাম, বলুন। বললেন, ‘আমার নাম সৈয়দ মাহাবুব করিম। আমি তিন্নির হতভাগ্য বাবা। করাচিতে থাকি, কাল রাতে ঢাকায় এসেছি। আমার বোনের কাছে আপনার কথা শুনে দেখা করতে এলাম। আমার কিছু কষ্টের কথা আপনাকে বলব।’ আবারও তাঁকে বললাম, ঠিক আছে বলুন।
পাঠক, এবার খোলাসা করে বলি, এই ভদ্রলোক কোন তিন্নির বাবা। তিনি হলেন একসময়ের আলোচিত মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি, যিনি খুন হয়েছিলেন, তাঁর বাবা। তিনি কথা বলতে এসেছিলেন ২০০২ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি। আর তিন্নি খুন হয়েছিলেন ওই বছরের ১০ নভেম্বর রাতে। তাঁকে খুন করার পর মৃতদেহ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের কাছে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরিচয় না পাওয়ায় আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম জুরাইন কবরস্থানে লাশ দাফন করে। এরপর দৈনিক জনকণ্ঠে লাশের ছবি ছাপা হলে তিন্নির পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। সে সময় তিন্নির বাবা দেশে ছিলেন না। তাঁর চাচা সৈয়দ রেজাউল করিম বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মেয়ে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঢাকায় আসেন তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহাবুব করিম।
যত দূর মনে পড়ে, কেরানীগঞ্জ থানার এসআই কাইয়ুম আলী সরদার প্রথমে মামলাটি তদন্ত করছিলেন। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ ধরে নেয়, কোনো ক্ষোভের কারণে পিয়াল তাঁকে খুন করেন। তবে পুলিশ পিয়ালকে ধরলেও এ খুনের পেছনে যে আরও বড় কারও হাত ছিল, তা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু পরিষ্কার করে কেউ কিছুই বলতে পারছিলেন না। তিন্নির বাবা প্রথম সবকিছু খোলাসা করলেন। তিনি আমাকে বললেন, ‘আমি যা বলব আগে চুপ করে শুনবেন।’ আমি চুপ করে থাকলাম, তিনি বলতে থাকলেন।
মাহাবুব করিম বললেন, ১৯৭৬ সালে তিন্নির মা নাহিদ ফারজানাকে তিনি বিয়ে করেন। তিন্নির জন্ম হয় ১৯৭৭ সালের ২২ অক্টোবর। তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান ঈশিতার জন্ম হয় ১৯৮৫ সালে। এই কন্যা জন্মের ৪০ দিন পরে তিনি জীবিকার সন্ধানে পাকিস্তান হয়ে ইউরোপ পাড়ি দিতে দেশ ত্যাগ করেন। কিন্তু তখন ইরাক-ইরান যুদ্ধের কারণে ইউরোপ যেতে পারেননি। পাকিস্তানেই থেকে যান। তিন্নি তখন ঢাকায় কামরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। মেয়ের পড়াশোনার ক্ষতি হবে ভেবে মাহাবুব করিম তিন্নিকে ঢাকায় তাঁর দাদির কাছে রেখে স্ত্রী ও আরেক মেয়েকে নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। ১৯৯৩ সালে তিন্নি এসএসসিতে ভালো ফল করেন। পিতা-কন্যার মধ্যে তখন অবধি চিঠি বিনিময় হতো। ভালো ফল করার জন্য মেয়ের কাছে তিনি উপহারও পাঠিয়েছিলেন।
মাহাবুব করিম বলেন, ১৯৯৯ সালে তিনি তিন্নির একটি চিঠি পান। তিন্নি বাবাকে জানান, পিয়াল নামে বরিশালের এক ছেলেকে বিয়ে করেছেন। ছেলে পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার। তিন্নির মায়ের ওই বিয়েতে মত ছিল না। তিন্নির ফুফু তাঁর মাকে বলেছিলেন, সোমা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে ছেলেটার সম্পর্ক আছে। পরে তিন্নি তাঁর মাকে বলেছিলেন, হাতিরপুলের এক মেয়ের সঙ্গে পিয়ালের প্রেম ছিল, সেটা আর নেই।
তিন্নির বাবা সেদিন আমাকে বললেন, ‘বিয়ের পর থেকেই ছেলেটা তিন্নিকে সিনেমা-নাটকে অভিনয় করার জন্য চাপ দিতে থাকে। প্রথম দিকে তিন্নি তাতে রাজি হচ্ছিল না। তখন পিয়াল তাকে মারধর করে। একপর্যায়ে তিন্নি রাজি হলে জি এম সরকার নামের এক পরিচালক একদিন এসে বলেন, তিনি পোশাক কেনার জন্য তিন্নিকে ভারতে নিয়ে যাবেন। তিন্নি একা যেতে রাজি না হলে জি এম সরকার চলে যান। এরপর তাদের সংসারে একটি মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। সেই মেয়ের বয়স যখন দেড় বছর, তখন পিয়াল একদিন সাবেক এমপি গোলাম ফারুক অভিকে বাসায় নিয়ে আসে। অভিকে দেখেই চমকে ওঠে তিন্নি। সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে অভির সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল আগেই। প্রথম দেখায় অভি তাকে নানা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিন্নির সেটা ভালো লাগেনি। তিন্নি লক্ষ করে, তার স্বামী অভির কথায় ওঠবস করতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে তাদের বাসায় অভির আসা-যাওয়াও বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তিন্নির ওপরও খবরদারি করতে শুরু করে অভি। তিন্নি কী করবে, কোথায় যাবে–সবই নিয়ন্ত্রণ করে অভি। কথা না শুনলে তিন্নিকে ভয় দেখাতে থাকে।’
এভাবে বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিলেন মাহাবুব করিম, বেশ জোরে জোরে কথা বলছিলেন। আমি তাঁকে শান্ত করে শুনে যাচ্ছিলাম। একপর্যায়ে তিনি বললেন, কিছুদিনের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। সে সময় অভি একদিন তাঁকে ফোন করে পিয়ালের বাসায় যেতে বলেন। শুনে কিছুটা অবাক হন, তারপরও গিয়ে দেখেন তাঁর আগেই অভি সেখানে হাজির। একটু পর পিয়াল বাসায় আসেন। তাঁর সামনেই অভি পিয়ালকে উচ্চ স্বরে বকাঝকা করতে থাকেন। বলেন, ‘তোর বউ একটি বেশ্যা, তাকে তালাক দিয়ে দে। এই নে কাগজ।’ বলেই কয়েকটি কাগজ পিয়ালের হাতে ধরিয়ে দেন। এরপর অভি খুব উত্তেজিত হয়ে তিন্নিকে বলেন, ‘তুই তোর বাপকে বল কার কার সঙ্গে বিছানায় গেছিস।’ এরপর অভি তিন্নির বাবার সামনেই মেয়ের গায়ের কাপড় অর্ধেক খুলে আবার ছেড়ে দেন। তিন্নির মুখের কাছে পিস্তল ঠেকিয়ে বলেন, ‘দেখ, তোর সামনেই তোর বাবাকে উলঙ্গ করব।’ অভির কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পিয়াল বলে ওঠেন, ‘তিন্নির মা করাচিতে লিভ টুগেদার করে।’ অভি তখন তিন্নির বাবাকে বলেন, ‘এখনই চলে যাও, না হলে খরচ হয়ে যাবে।’ আর তিন্নিকে বলেন, ‘তুই আজ থেকে আমার কাছেই থাকবি। এক মাস পরে সব ফয়সালা করা হবে।’ অভি বলতে থাকেন, ‘আমি তোর পেছনে সময় আর টাকা ঢেলেছি।’ এসব কথা প্রকাশ করতে তিন্নির বাবাই আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। আমার তখনকার রিপোর্টেও তার উল্লেখ ছিল।
তিন্নি খুনের ঘটনা নিয়ে এর আগেও ‘আষাঢ়ে নয়’-এ লিখেছি। এই খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পরপরই গা ঢাকা দেন অভি। শুনেছিলাম, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী উলফার নেতা পরেশ বড়ুয়ার সাহায্য নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে কানাডায় থিতু হন। এখন সেখানেই আছেন বহাল তবিয়তে।
মাহাবুব করিম আমাকে বলেছিলেন, নিজে অপ্রস্তুত হওয়ার পরও মেয়েকে এভাবে ফেলে আসতে চাইছিলেন না তিনি, কিন্তু উপায়ও ছিল না। এর কয়েক দিন পরই তিন্নি খুন হন। এটুকু বলার পর মাহাবুব করিম আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। তিনি শিশুর মতো কাঁদতে থাকেন। সেই বৃদ্ধের কান্না আমাকেও সংক্রমিত করে। তাঁর সেই অসহায় মুখ অনেক দিন দৃষ্টি থেকে সরাতে পারিনি।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

বয়স্ক লোকটি অনেকক্ষণ ধরে বসে ছিলেন। হাতে আ-ফোর সাইজের একটি কাগজের খাম। এক অফিস সহকারী এসে বললেন, ‘ভদ্রলোক আমার সঙ্গে ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।’ হাতে একটি জরুরি কাজ ছিল, তারপরও পীড়াপীড়ির কথা শুনে সেটা অসমাপ্ত রেখে চলে এলাম। এসে মনে হলো ভালোই হয়েছে, আর একটু দেরি করলে তিনি চলে যেতেন।
অভ্যর্থনাকক্ষের চেয়ারে ভদ্রলোককে দেখে ভালো লাগল। যৌবনে তিনি যে বেশ সুদর্শন ছিলেন, তা তখনো বোঝা যাচ্ছিল। তবে কথায় কিছুটা অবাঙালি টান, অনেকটা পাকিস্তানিদের মতো। আমাকে অনুরোধ করলেন, তিনি যা বলবেন, তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে। আমি রাজি হয়ে বললাম, বলুন। বললেন, ‘আমার নাম সৈয়দ মাহাবুব করিম। আমি তিন্নির হতভাগ্য বাবা। করাচিতে থাকি, কাল রাতে ঢাকায় এসেছি। আমার বোনের কাছে আপনার কথা শুনে দেখা করতে এলাম। আমার কিছু কষ্টের কথা আপনাকে বলব।’ আবারও তাঁকে বললাম, ঠিক আছে বলুন।
পাঠক, এবার খোলাসা করে বলি, এই ভদ্রলোক কোন তিন্নির বাবা। তিনি হলেন একসময়ের আলোচিত মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি, যিনি খুন হয়েছিলেন, তাঁর বাবা। তিনি কথা বলতে এসেছিলেন ২০০২ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি। আর তিন্নি খুন হয়েছিলেন ওই বছরের ১০ নভেম্বর রাতে। তাঁকে খুন করার পর মৃতদেহ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের কাছে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরিচয় না পাওয়ায় আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম জুরাইন কবরস্থানে লাশ দাফন করে। এরপর দৈনিক জনকণ্ঠে লাশের ছবি ছাপা হলে তিন্নির পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। সে সময় তিন্নির বাবা দেশে ছিলেন না। তাঁর চাচা সৈয়দ রেজাউল করিম বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মেয়ে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঢাকায় আসেন তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহাবুব করিম।
যত দূর মনে পড়ে, কেরানীগঞ্জ থানার এসআই কাইয়ুম আলী সরদার প্রথমে মামলাটি তদন্ত করছিলেন। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ ধরে নেয়, কোনো ক্ষোভের কারণে পিয়াল তাঁকে খুন করেন। তবে পুলিশ পিয়ালকে ধরলেও এ খুনের পেছনে যে আরও বড় কারও হাত ছিল, তা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু পরিষ্কার করে কেউ কিছুই বলতে পারছিলেন না। তিন্নির বাবা প্রথম সবকিছু খোলাসা করলেন। তিনি আমাকে বললেন, ‘আমি যা বলব আগে চুপ করে শুনবেন।’ আমি চুপ করে থাকলাম, তিনি বলতে থাকলেন।
মাহাবুব করিম বললেন, ১৯৭৬ সালে তিন্নির মা নাহিদ ফারজানাকে তিনি বিয়ে করেন। তিন্নির জন্ম হয় ১৯৭৭ সালের ২২ অক্টোবর। তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান ঈশিতার জন্ম হয় ১৯৮৫ সালে। এই কন্যা জন্মের ৪০ দিন পরে তিনি জীবিকার সন্ধানে পাকিস্তান হয়ে ইউরোপ পাড়ি দিতে দেশ ত্যাগ করেন। কিন্তু তখন ইরাক-ইরান যুদ্ধের কারণে ইউরোপ যেতে পারেননি। পাকিস্তানেই থেকে যান। তিন্নি তখন ঢাকায় কামরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। মেয়ের পড়াশোনার ক্ষতি হবে ভেবে মাহাবুব করিম তিন্নিকে ঢাকায় তাঁর দাদির কাছে রেখে স্ত্রী ও আরেক মেয়েকে নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। ১৯৯৩ সালে তিন্নি এসএসসিতে ভালো ফল করেন। পিতা-কন্যার মধ্যে তখন অবধি চিঠি বিনিময় হতো। ভালো ফল করার জন্য মেয়ের কাছে তিনি উপহারও পাঠিয়েছিলেন।
মাহাবুব করিম বলেন, ১৯৯৯ সালে তিনি তিন্নির একটি চিঠি পান। তিন্নি বাবাকে জানান, পিয়াল নামে বরিশালের এক ছেলেকে বিয়ে করেছেন। ছেলে পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার। তিন্নির মায়ের ওই বিয়েতে মত ছিল না। তিন্নির ফুফু তাঁর মাকে বলেছিলেন, সোমা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে ছেলেটার সম্পর্ক আছে। পরে তিন্নি তাঁর মাকে বলেছিলেন, হাতিরপুলের এক মেয়ের সঙ্গে পিয়ালের প্রেম ছিল, সেটা আর নেই।
তিন্নির বাবা সেদিন আমাকে বললেন, ‘বিয়ের পর থেকেই ছেলেটা তিন্নিকে সিনেমা-নাটকে অভিনয় করার জন্য চাপ দিতে থাকে। প্রথম দিকে তিন্নি তাতে রাজি হচ্ছিল না। তখন পিয়াল তাকে মারধর করে। একপর্যায়ে তিন্নি রাজি হলে জি এম সরকার নামের এক পরিচালক একদিন এসে বলেন, তিনি পোশাক কেনার জন্য তিন্নিকে ভারতে নিয়ে যাবেন। তিন্নি একা যেতে রাজি না হলে জি এম সরকার চলে যান। এরপর তাদের সংসারে একটি মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। সেই মেয়ের বয়স যখন দেড় বছর, তখন পিয়াল একদিন সাবেক এমপি গোলাম ফারুক অভিকে বাসায় নিয়ে আসে। অভিকে দেখেই চমকে ওঠে তিন্নি। সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে অভির সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল আগেই। প্রথম দেখায় অভি তাকে নানা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিন্নির সেটা ভালো লাগেনি। তিন্নি লক্ষ করে, তার স্বামী অভির কথায় ওঠবস করতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে তাদের বাসায় অভির আসা-যাওয়াও বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তিন্নির ওপরও খবরদারি করতে শুরু করে অভি। তিন্নি কী করবে, কোথায় যাবে–সবই নিয়ন্ত্রণ করে অভি। কথা না শুনলে তিন্নিকে ভয় দেখাতে থাকে।’
এভাবে বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিলেন মাহাবুব করিম, বেশ জোরে জোরে কথা বলছিলেন। আমি তাঁকে শান্ত করে শুনে যাচ্ছিলাম। একপর্যায়ে তিনি বললেন, কিছুদিনের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। সে সময় অভি একদিন তাঁকে ফোন করে পিয়ালের বাসায় যেতে বলেন। শুনে কিছুটা অবাক হন, তারপরও গিয়ে দেখেন তাঁর আগেই অভি সেখানে হাজির। একটু পর পিয়াল বাসায় আসেন। তাঁর সামনেই অভি পিয়ালকে উচ্চ স্বরে বকাঝকা করতে থাকেন। বলেন, ‘তোর বউ একটি বেশ্যা, তাকে তালাক দিয়ে দে। এই নে কাগজ।’ বলেই কয়েকটি কাগজ পিয়ালের হাতে ধরিয়ে দেন। এরপর অভি খুব উত্তেজিত হয়ে তিন্নিকে বলেন, ‘তুই তোর বাপকে বল কার কার সঙ্গে বিছানায় গেছিস।’ এরপর অভি তিন্নির বাবার সামনেই মেয়ের গায়ের কাপড় অর্ধেক খুলে আবার ছেড়ে দেন। তিন্নির মুখের কাছে পিস্তল ঠেকিয়ে বলেন, ‘দেখ, তোর সামনেই তোর বাবাকে উলঙ্গ করব।’ অভির কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পিয়াল বলে ওঠেন, ‘তিন্নির মা করাচিতে লিভ টুগেদার করে।’ অভি তখন তিন্নির বাবাকে বলেন, ‘এখনই চলে যাও, না হলে খরচ হয়ে যাবে।’ আর তিন্নিকে বলেন, ‘তুই আজ থেকে আমার কাছেই থাকবি। এক মাস পরে সব ফয়সালা করা হবে।’ অভি বলতে থাকেন, ‘আমি তোর পেছনে সময় আর টাকা ঢেলেছি।’ এসব কথা প্রকাশ করতে তিন্নির বাবাই আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। আমার তখনকার রিপোর্টেও তার উল্লেখ ছিল।
তিন্নি খুনের ঘটনা নিয়ে এর আগেও ‘আষাঢ়ে নয়’-এ লিখেছি। এই খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পরপরই গা ঢাকা দেন অভি। শুনেছিলাম, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী উলফার নেতা পরেশ বড়ুয়ার সাহায্য নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে কানাডায় থিতু হন। এখন সেখানেই আছেন বহাল তবিয়তে।
মাহাবুব করিম আমাকে বলেছিলেন, নিজে অপ্রস্তুত হওয়ার পরও মেয়েকে এভাবে ফেলে আসতে চাইছিলেন না তিনি, কিন্তু উপায়ও ছিল না। এর কয়েক দিন পরই তিন্নি খুন হন। এটুকু বলার পর মাহাবুব করিম আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। তিনি শিশুর মতো কাঁদতে থাকেন। সেই বৃদ্ধের কান্না আমাকেও সংক্রমিত করে। তাঁর সেই অসহায় মুখ অনেক দিন দৃষ্টি থেকে সরাতে পারিনি।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

বয়স্ক লোকটি অনেকক্ষণ ধরে বসে ছিলেন। হাতে আ-ফোর সাইজের একটি কাগজের খাম। এক অফিস সহকারী এসে বললেন, ‘ভদ্রলোক আমার সঙ্গে ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।’ হাতে একটি জরুরি কাজ ছিল, তারপরও পীড়াপীড়ির কথা শুনে সেটা অসমাপ্ত রেখে চলে এলাম। এসে মনে হলো ভালোই হয়েছে, আর একটু দেরি করলে তিনি চলে যেতেন।
অভ্যর্থনাকক্ষের চেয়ারে ভদ্রলোককে দেখে ভালো লাগল। যৌবনে তিনি যে বেশ সুদর্শন ছিলেন, তা তখনো বোঝা যাচ্ছিল। তবে কথায় কিছুটা অবাঙালি টান, অনেকটা পাকিস্তানিদের মতো। আমাকে অনুরোধ করলেন, তিনি যা বলবেন, তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে। আমি রাজি হয়ে বললাম, বলুন। বললেন, ‘আমার নাম সৈয়দ মাহাবুব করিম। আমি তিন্নির হতভাগ্য বাবা। করাচিতে থাকি, কাল রাতে ঢাকায় এসেছি। আমার বোনের কাছে আপনার কথা শুনে দেখা করতে এলাম। আমার কিছু কষ্টের কথা আপনাকে বলব।’ আবারও তাঁকে বললাম, ঠিক আছে বলুন।
পাঠক, এবার খোলাসা করে বলি, এই ভদ্রলোক কোন তিন্নির বাবা। তিনি হলেন একসময়ের আলোচিত মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি, যিনি খুন হয়েছিলেন, তাঁর বাবা। তিনি কথা বলতে এসেছিলেন ২০০২ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি। আর তিন্নি খুন হয়েছিলেন ওই বছরের ১০ নভেম্বর রাতে। তাঁকে খুন করার পর মৃতদেহ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের কাছে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরিচয় না পাওয়ায় আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম জুরাইন কবরস্থানে লাশ দাফন করে। এরপর দৈনিক জনকণ্ঠে লাশের ছবি ছাপা হলে তিন্নির পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। সে সময় তিন্নির বাবা দেশে ছিলেন না। তাঁর চাচা সৈয়দ রেজাউল করিম বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মেয়ে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঢাকায় আসেন তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহাবুব করিম।
যত দূর মনে পড়ে, কেরানীগঞ্জ থানার এসআই কাইয়ুম আলী সরদার প্রথমে মামলাটি তদন্ত করছিলেন। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ ধরে নেয়, কোনো ক্ষোভের কারণে পিয়াল তাঁকে খুন করেন। তবে পুলিশ পিয়ালকে ধরলেও এ খুনের পেছনে যে আরও বড় কারও হাত ছিল, তা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু পরিষ্কার করে কেউ কিছুই বলতে পারছিলেন না। তিন্নির বাবা প্রথম সবকিছু খোলাসা করলেন। তিনি আমাকে বললেন, ‘আমি যা বলব আগে চুপ করে শুনবেন।’ আমি চুপ করে থাকলাম, তিনি বলতে থাকলেন।
মাহাবুব করিম বললেন, ১৯৭৬ সালে তিন্নির মা নাহিদ ফারজানাকে তিনি বিয়ে করেন। তিন্নির জন্ম হয় ১৯৭৭ সালের ২২ অক্টোবর। তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান ঈশিতার জন্ম হয় ১৯৮৫ সালে। এই কন্যা জন্মের ৪০ দিন পরে তিনি জীবিকার সন্ধানে পাকিস্তান হয়ে ইউরোপ পাড়ি দিতে দেশ ত্যাগ করেন। কিন্তু তখন ইরাক-ইরান যুদ্ধের কারণে ইউরোপ যেতে পারেননি। পাকিস্তানেই থেকে যান। তিন্নি তখন ঢাকায় কামরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। মেয়ের পড়াশোনার ক্ষতি হবে ভেবে মাহাবুব করিম তিন্নিকে ঢাকায় তাঁর দাদির কাছে রেখে স্ত্রী ও আরেক মেয়েকে নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। ১৯৯৩ সালে তিন্নি এসএসসিতে ভালো ফল করেন। পিতা-কন্যার মধ্যে তখন অবধি চিঠি বিনিময় হতো। ভালো ফল করার জন্য মেয়ের কাছে তিনি উপহারও পাঠিয়েছিলেন।
মাহাবুব করিম বলেন, ১৯৯৯ সালে তিনি তিন্নির একটি চিঠি পান। তিন্নি বাবাকে জানান, পিয়াল নামে বরিশালের এক ছেলেকে বিয়ে করেছেন। ছেলে পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার। তিন্নির মায়ের ওই বিয়েতে মত ছিল না। তিন্নির ফুফু তাঁর মাকে বলেছিলেন, সোমা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে ছেলেটার সম্পর্ক আছে। পরে তিন্নি তাঁর মাকে বলেছিলেন, হাতিরপুলের এক মেয়ের সঙ্গে পিয়ালের প্রেম ছিল, সেটা আর নেই।
তিন্নির বাবা সেদিন আমাকে বললেন, ‘বিয়ের পর থেকেই ছেলেটা তিন্নিকে সিনেমা-নাটকে অভিনয় করার জন্য চাপ দিতে থাকে। প্রথম দিকে তিন্নি তাতে রাজি হচ্ছিল না। তখন পিয়াল তাকে মারধর করে। একপর্যায়ে তিন্নি রাজি হলে জি এম সরকার নামের এক পরিচালক একদিন এসে বলেন, তিনি পোশাক কেনার জন্য তিন্নিকে ভারতে নিয়ে যাবেন। তিন্নি একা যেতে রাজি না হলে জি এম সরকার চলে যান। এরপর তাদের সংসারে একটি মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। সেই মেয়ের বয়স যখন দেড় বছর, তখন পিয়াল একদিন সাবেক এমপি গোলাম ফারুক অভিকে বাসায় নিয়ে আসে। অভিকে দেখেই চমকে ওঠে তিন্নি। সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে অভির সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল আগেই। প্রথম দেখায় অভি তাকে নানা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিন্নির সেটা ভালো লাগেনি। তিন্নি লক্ষ করে, তার স্বামী অভির কথায় ওঠবস করতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে তাদের বাসায় অভির আসা-যাওয়াও বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তিন্নির ওপরও খবরদারি করতে শুরু করে অভি। তিন্নি কী করবে, কোথায় যাবে–সবই নিয়ন্ত্রণ করে অভি। কথা না শুনলে তিন্নিকে ভয় দেখাতে থাকে।’
এভাবে বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিলেন মাহাবুব করিম, বেশ জোরে জোরে কথা বলছিলেন। আমি তাঁকে শান্ত করে শুনে যাচ্ছিলাম। একপর্যায়ে তিনি বললেন, কিছুদিনের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। সে সময় অভি একদিন তাঁকে ফোন করে পিয়ালের বাসায় যেতে বলেন। শুনে কিছুটা অবাক হন, তারপরও গিয়ে দেখেন তাঁর আগেই অভি সেখানে হাজির। একটু পর পিয়াল বাসায় আসেন। তাঁর সামনেই অভি পিয়ালকে উচ্চ স্বরে বকাঝকা করতে থাকেন। বলেন, ‘তোর বউ একটি বেশ্যা, তাকে তালাক দিয়ে দে। এই নে কাগজ।’ বলেই কয়েকটি কাগজ পিয়ালের হাতে ধরিয়ে দেন। এরপর অভি খুব উত্তেজিত হয়ে তিন্নিকে বলেন, ‘তুই তোর বাপকে বল কার কার সঙ্গে বিছানায় গেছিস।’ এরপর অভি তিন্নির বাবার সামনেই মেয়ের গায়ের কাপড় অর্ধেক খুলে আবার ছেড়ে দেন। তিন্নির মুখের কাছে পিস্তল ঠেকিয়ে বলেন, ‘দেখ, তোর সামনেই তোর বাবাকে উলঙ্গ করব।’ অভির কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পিয়াল বলে ওঠেন, ‘তিন্নির মা করাচিতে লিভ টুগেদার করে।’ অভি তখন তিন্নির বাবাকে বলেন, ‘এখনই চলে যাও, না হলে খরচ হয়ে যাবে।’ আর তিন্নিকে বলেন, ‘তুই আজ থেকে আমার কাছেই থাকবি। এক মাস পরে সব ফয়সালা করা হবে।’ অভি বলতে থাকেন, ‘আমি তোর পেছনে সময় আর টাকা ঢেলেছি।’ এসব কথা প্রকাশ করতে তিন্নির বাবাই আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। আমার তখনকার রিপোর্টেও তার উল্লেখ ছিল।
তিন্নি খুনের ঘটনা নিয়ে এর আগেও ‘আষাঢ়ে নয়’-এ লিখেছি। এই খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পরপরই গা ঢাকা দেন অভি। শুনেছিলাম, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী উলফার নেতা পরেশ বড়ুয়ার সাহায্য নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে কানাডায় থিতু হন। এখন সেখানেই আছেন বহাল তবিয়তে।
মাহাবুব করিম আমাকে বলেছিলেন, নিজে অপ্রস্তুত হওয়ার পরও মেয়েকে এভাবে ফেলে আসতে চাইছিলেন না তিনি, কিন্তু উপায়ও ছিল না। এর কয়েক দিন পরই তিন্নি খুন হন। এটুকু বলার পর মাহাবুব করিম আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। তিনি শিশুর মতো কাঁদতে থাকেন। সেই বৃদ্ধের কান্না আমাকেও সংক্রমিত করে। তাঁর সেই অসহায় মুখ অনেক দিন দৃষ্টি থেকে সরাতে পারিনি।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

বয়স্ক লোকটি অনেকক্ষণ ধরে বসে ছিলেন। হাতে আ-ফোর সাইজের একটি কাগজের খাম। এক অফিস সহকারী এসে বললেন, ‘ভদ্রলোক আমার সঙ্গে ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।’ হাতে একটি জরুরি কাজ ছিল, তারপরও পীড়াপীড়ির কথা শুনে সেটা অসমাপ্ত রেখে চলে এলাম। এসে মনে হলো ভালোই হয়েছে, আর একটু দেরি করলে তিনি চলে যেতেন।
২৭ মে ২০২৩
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বয়স্ক লোকটি অনেকক্ষণ ধরে বসে ছিলেন। হাতে আ-ফোর সাইজের একটি কাগজের খাম। এক অফিস সহকারী এসে বললেন, ‘ভদ্রলোক আমার সঙ্গে ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।’ হাতে একটি জরুরি কাজ ছিল, তারপরও পীড়াপীড়ির কথা শুনে সেটা অসমাপ্ত রেখে চলে এলাম। এসে মনে হলো ভালোই হয়েছে, আর একটু দেরি করলে তিনি চলে যেতেন।
২৭ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

বয়স্ক লোকটি অনেকক্ষণ ধরে বসে ছিলেন। হাতে আ-ফোর সাইজের একটি কাগজের খাম। এক অফিস সহকারী এসে বললেন, ‘ভদ্রলোক আমার সঙ্গে ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।’ হাতে একটি জরুরি কাজ ছিল, তারপরও পীড়াপীড়ির কথা শুনে সেটা অসমাপ্ত রেখে চলে এলাম। এসে মনে হলো ভালোই হয়েছে, আর একটু দেরি করলে তিনি চলে যেতেন।
২৭ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

বয়স্ক লোকটি অনেকক্ষণ ধরে বসে ছিলেন। হাতে আ-ফোর সাইজের একটি কাগজের খাম। এক অফিস সহকারী এসে বললেন, ‘ভদ্রলোক আমার সঙ্গে ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।’ হাতে একটি জরুরি কাজ ছিল, তারপরও পীড়াপীড়ির কথা শুনে সেটা অসমাপ্ত রেখে চলে এলাম। এসে মনে হলো ভালোই হয়েছে, আর একটু দেরি করলে তিনি চলে যেতেন।
২৭ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে