কামরুল হাসান

‘বিচারের বাণী কাঁদে’, শুনতে একটু ক্লিশে লাগে না? এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হতেই পারে, এভাবে বলা কিছুটা গতানুগতিক। তবু এই শিরোনামে আমার একটি সিরিজ রিপোর্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছিল বিচারবঞ্চিত মানুষের হাহাকার।
তার আগে একটু বলি, যেকোনো প্রতিবেদন করার ক্ষেত্রে আমি সব সময় সেই ঘটনাকে নিরাপদ দূরত্ব থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। এটা অনেকটা দুটি বিদ্যুৎ সুপরিবাহী তার যতটা নিরাপদ দূরত্বে থাকে, ততটুকু। এতে সুবিধা আছে, ঘটনার সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে যে তা-ই হবে, তেমন কোনো কথা নেই। অনেক ঘটনা টেনে নিয়ে যেতে হয় অনেক দূর অবধি। আজ সে রকম একটা ঘটনা বলি।
২০০৫ সালের ২৪ জুন, শুক্রবার। সকালের দিকে তেমন কোনো কাজ ছিল না। বিকেলে একটু দেরি করে অফিসে যাওয়ার ইচ্ছে। কিন্তু জুমার নামাজ শেষ হতে না হতেই একের পর এক ফোন। শুনলাম, ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ছগির আহমেদ ছগির (৪২) খুন হয়েছেন। কিসের আরাম-বিরাম! বাইক নিয়ে দিলাম ছুট।
ঢাকা জজকোর্টের উল্টো দিকের গলি ধরে কয়েক পা গেলেই রঘুনাথ দাস লেনের সোনা মিয়া আল ফালাহ জামে মসজিদ। সেই মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে এসেছিলেন সে সময়ের নামকরা সন্ত্রাসী ও যুবদল নেতা ছগির। মসজিদের অদূরে নাসির উদ্দিন সরকার লেনের গলির ভেতরে তাঁর পাঁচতলা বাড়ি। এদিন তাঁর মায়ের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। নামাজ পড়ে খাবার বিতরণের কথা বলে তিনি মসজিদে আসেন। সঙ্গে শিশুসন্তান তৌসিফ এবং তারই সমবয়সী গৃহকর্মী জালাল।
জালাল আমাকে বলেছিল, মসজিদ থেকে বের হয়ে ছগিরের ছেলে তৌসিফ ও সে একসঙ্গে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। তৌসিফ ছিল তার পেছনে। রায়সাহেব বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গলিতে তিন যুবক দাঁড়িয়ে। ছগিরকে দেখেই তারা এগিয়ে আসে। এরপর কোনো কথা না বলে সোজা গুলি করে। গুলির শব্দে দুজনেই দেখতে পায়, ছগির রাস্তায় পড়ে যাচ্ছেন। তারা দৌড়ে গিয়ে বাসায় খবর দেয়। ছুটে আসেন ছগিরের স্ত্রী নাসিমা আক্তার রুবী। এ ঘটনার পর সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়। তারা সন্ত্রাসীদের পালাতে দেখে ধাওয়া করে। সে সময় টহল পুলিশের হাবিলদার রফিক একজনকে জাপটে ধরেন। ছেলেটার নাম শাওন। পরে সে র্যাবের হাতে প্রাণ হারায়। তখন শোনা যায়, এই শাওন বিএনপির তৎকালীন এমপি প্রয়াত নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুর ছোট ভাই মনিরের ঘনিষ্ঠ। শাওনের মৃত্যু নিয়েও নানা আলোচনা হয়।
দুপুরের পর ছগিরের লাশ নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে। সেখানে গিয়ে দেখি, ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী আমানুল্লাহ আমান, গণপূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস, সংসদ সদস্য মোসাদ্দেক আলী ফালু, সংসদ সদস্য নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুসহ শত শত নেতা-কর্মী জড়ো হয়েছেন।
অপরাধ রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে নিহত ব্যক্তির বায়োগ্রাফিটা সব সময় খুব জরুরি। এতে পাঠক সেই ব্যক্তি সম্পর্কে একটি ধারণা করতে পারেন। খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, ছগিরের পিতার নাম হাজি আফতাব উদ্দিন। তাঁরা সূত্রাপুরের নাসির উদ্দিন সরদার লেনের স্থায়ী বাসিন্দা। চার ভাই, এক বোনের মধ্যে ছগির দ্বিতীয়। তাঁদের পারিবারিক ব্যবসা ছিল। ১০ বছর আগে তিনি বিয়ে করেন নাসিমা আক্তারকে। ছগিরের দুই সন্তান—তৌসিফ ও রামিশা। এদের একজনের বয়স পাঁচ বছর, আরেকজনের তিন।
ছগির নিহত হন বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে। সে সময় জগন্নাথ কলেজের ছাত্রদলের কমিটি এবং একটি ভবন দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। ছগিরের মত উপেক্ষা করে কমিটি করা হয়। এ নিয়ে সেদিন সকালে তিনি ঢাকার মেয়রের সঙ্গে বৈঠকও করেন। সেই বৈঠক শেষ করে বাসায় ফিরে আসার পর খুন হন ছগির। ছগিরের বিরুদ্ধে সে সময় সার্জেন্ট ফরহাদ হত্যাসহ ১২টি মামলা চলছিল। পুরান ঢাকায় ছগিরের পরিচিতি ছিল ত্রাস হিসেবে।
২৫ জুন বেলা ১১টার দিকে ছগিরের লাশ নেওয়া হয় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে তাঁর কফিন দলীয় পতাকা দিয়ে মোড়ানো হয়। এ সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপির প্রায় সব মন্ত্রী ও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ছগিরের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
ছগিরের মতো সন্ত্রাসীর মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়া দেখে জনকণ্ঠে প্রকাশিত আমার সেই ‘বিচারের বাণী কাঁদে’ সিরিজের কথা মনে পড়ে যায়। সেই সিরিজের ১৯৯৯ সালের ৩১ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ছিল সার্জেন্ট ফরহাদ হত্যা নিয়ে। ফরহাদ খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ছগির আহমেদ। ফরহাদ ছিলেন কোতোয়ালি থানার এসআই। তখন জগন্নাথ কলেজ ছাত্রদলে ছগির ও কাজলের দুটি গ্রুপ ছিল, যাদের মধ্যে প্রায়ই গোলাগুলি হতো। কাজলের বাসা ছিল কলেজের দক্ষিণে বুড়িগঙ্গার তীরে, আর ছগিরের বাসা আদালত ভবনের কাছে। ১৯৯৪ সালের ১৫ মার্চের সকালে দুই পক্ষের গোলাগুলির সময় সেখানে পুলিশ নিয়ে যান এসআই ফরহাদ। তিনি ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করেন ছগির।
এ ঘটনা নিয়ে কোতোয়ালির ওসি মুজিবুল হক ছগির, কাজলসহ ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তাঁদের মধ্যে ছগির ও কাজল ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন পর ফিরে এসে জামিন নেন। জামিন পেয়ে আবার বিদেশে পালিয়ে যান কাজল। সেই থেকে তিনি বিদেশেই আছেন। ছগির মূল দলে মিশে রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেন। অবশ্য বিএনপি ক্ষমতায় থাকতেই ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু এ মামলার অভিযোগপত্র দেন। যথারীতি জজ আদালতে মামলা শুরু হয়। মামলার ৩০ সাক্ষীর ২১ জনই ছিলেন পুলিশ সদস্য। বাকি ৯ জন জব্দ তালিকার। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের কেউই তাঁদের সহকর্মী খুনের বিচারের জন্য আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। সাক্ষ্য না দেওয়ায় অতলে তলিয়ে যায় মামলাটি।
আমার মনে আছে, এই মামলার ফলোআপ করার সময় ফরহাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার যোগাযোগ করতেন। স্বামীর মৃত্যুর পর পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে রাজারবাগ স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তিনি রাজারবাগ কোয়ার্টারেই থাকতেন।
ছগির খুনের পরের দিন রাজারবাগ স্কুলে গেলাম শারমিনকে খুঁজতে। শুনি তাঁর চাকরি নেই। তাঁকে কোয়ার্টার থেকেও বের করে দেওয়া হয়। এক সহকর্মী আমাকে শারমিনের বাসার ঠিকানা দিলেন। ২০০৫ সালের ২৭ জুন সকালে গেলাম শারমিনের চামেলীবাগের বাসায়।
ফরহাদ যেদিন খুন হন, পরের দিন তাঁর ছোট ছেলে সিয়ামের জন্ম হয়েছিল। আমি যখন তাদের বাসায় গেলাম, তখন সিয়াম মতিঝিল আইডিয়ালে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। শারমিনের বড় ছেলে সানি পড়ত ঢাকা সিটি কলেজে। শারমিন বললেন, ‘ফরহাদ মারা যাওয়ার চার বছর পর নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি বিয়ে করি। বিয়ে করার অপরাধে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মতিউর রহমান আমাকে চাকরিচ্যুত করেন। চাকরির অব্যাহতিপত্রে লেখেন, দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হলো। চাকরির সঙ্গে বাসাও ছাড়তে হলো। এমনকি পুলিশ কল্যাণ তহবিলের টাকাও বন্ধ হয়ে গেল।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছগিরের মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য সেদিন বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হয়েছিল। শারমিনের পরিবারের সবাই তা দেখেছেন। বললেন, টিভির খবরে ছগিরের মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য দেখেছে সানি। এরপর সারা দিন কারও সঙ্গে কথা বলেনি, কিছু মুখেও দেয়নি। বাবার খুনিকে সরকারের বড় বড় নেতার সম্মান দেখানোর দৃশ্য কোনো সন্তান কি মেনে নিতে পারে ভাই? যে সন্ত্রাসী আমার জীবন তছনছ করেছে, দুই সন্তানসহ আমাকে পথে বসিয়েছে, সে কী করে এত মর্যাদা পায়! তার জন্য দেশের মন্ত্রীদের এত মায়া কেন?’
সানি এতক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে কথা শুনছিল। হঠাৎ বলে উঠল, সন্ত্রাসীর হাতে বাবার মৃত্যুর কথা শুনে আমার মা খুব কেঁদেছিলেন, কাল আবার কাঁদলেন তাঁর স্বামীর খুনির মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য দেখে। শুধু মা নন, আমরাও কেঁদেছি। ছেলের কথা শুনে আমি শারমিনের দিকে তাকাই, তিনিও কাঁদছেন। মায়ের কান্না দেখে পাশে থাকা ছোট ছেলেটাও কেঁদে ওঠে।
এ মুহূর্তে শারমিন যেন আমার স্বজন হয়ে যান। মা আর সন্তানদের ভেজা চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি, আমারও গলা ধরে আসে। কিছুই বলতে পারি না। যে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রের, রাষ্ট্রের কর্তাদের, তা আমার মতো নিতান্ত ছাপোষা সংবাদকর্মী দেবে কীভাবে?
আরও পড়ুন:

‘বিচারের বাণী কাঁদে’, শুনতে একটু ক্লিশে লাগে না? এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হতেই পারে, এভাবে বলা কিছুটা গতানুগতিক। তবু এই শিরোনামে আমার একটি সিরিজ রিপোর্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছিল বিচারবঞ্চিত মানুষের হাহাকার।
তার আগে একটু বলি, যেকোনো প্রতিবেদন করার ক্ষেত্রে আমি সব সময় সেই ঘটনাকে নিরাপদ দূরত্ব থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। এটা অনেকটা দুটি বিদ্যুৎ সুপরিবাহী তার যতটা নিরাপদ দূরত্বে থাকে, ততটুকু। এতে সুবিধা আছে, ঘটনার সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে যে তা-ই হবে, তেমন কোনো কথা নেই। অনেক ঘটনা টেনে নিয়ে যেতে হয় অনেক দূর অবধি। আজ সে রকম একটা ঘটনা বলি।
২০০৫ সালের ২৪ জুন, শুক্রবার। সকালের দিকে তেমন কোনো কাজ ছিল না। বিকেলে একটু দেরি করে অফিসে যাওয়ার ইচ্ছে। কিন্তু জুমার নামাজ শেষ হতে না হতেই একের পর এক ফোন। শুনলাম, ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ছগির আহমেদ ছগির (৪২) খুন হয়েছেন। কিসের আরাম-বিরাম! বাইক নিয়ে দিলাম ছুট।
ঢাকা জজকোর্টের উল্টো দিকের গলি ধরে কয়েক পা গেলেই রঘুনাথ দাস লেনের সোনা মিয়া আল ফালাহ জামে মসজিদ। সেই মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে এসেছিলেন সে সময়ের নামকরা সন্ত্রাসী ও যুবদল নেতা ছগির। মসজিদের অদূরে নাসির উদ্দিন সরকার লেনের গলির ভেতরে তাঁর পাঁচতলা বাড়ি। এদিন তাঁর মায়ের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। নামাজ পড়ে খাবার বিতরণের কথা বলে তিনি মসজিদে আসেন। সঙ্গে শিশুসন্তান তৌসিফ এবং তারই সমবয়সী গৃহকর্মী জালাল।
জালাল আমাকে বলেছিল, মসজিদ থেকে বের হয়ে ছগিরের ছেলে তৌসিফ ও সে একসঙ্গে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। তৌসিফ ছিল তার পেছনে। রায়সাহেব বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গলিতে তিন যুবক দাঁড়িয়ে। ছগিরকে দেখেই তারা এগিয়ে আসে। এরপর কোনো কথা না বলে সোজা গুলি করে। গুলির শব্দে দুজনেই দেখতে পায়, ছগির রাস্তায় পড়ে যাচ্ছেন। তারা দৌড়ে গিয়ে বাসায় খবর দেয়। ছুটে আসেন ছগিরের স্ত্রী নাসিমা আক্তার রুবী। এ ঘটনার পর সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়। তারা সন্ত্রাসীদের পালাতে দেখে ধাওয়া করে। সে সময় টহল পুলিশের হাবিলদার রফিক একজনকে জাপটে ধরেন। ছেলেটার নাম শাওন। পরে সে র্যাবের হাতে প্রাণ হারায়। তখন শোনা যায়, এই শাওন বিএনপির তৎকালীন এমপি প্রয়াত নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুর ছোট ভাই মনিরের ঘনিষ্ঠ। শাওনের মৃত্যু নিয়েও নানা আলোচনা হয়।
দুপুরের পর ছগিরের লাশ নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে। সেখানে গিয়ে দেখি, ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী আমানুল্লাহ আমান, গণপূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস, সংসদ সদস্য মোসাদ্দেক আলী ফালু, সংসদ সদস্য নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুসহ শত শত নেতা-কর্মী জড়ো হয়েছেন।
অপরাধ রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে নিহত ব্যক্তির বায়োগ্রাফিটা সব সময় খুব জরুরি। এতে পাঠক সেই ব্যক্তি সম্পর্কে একটি ধারণা করতে পারেন। খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, ছগিরের পিতার নাম হাজি আফতাব উদ্দিন। তাঁরা সূত্রাপুরের নাসির উদ্দিন সরদার লেনের স্থায়ী বাসিন্দা। চার ভাই, এক বোনের মধ্যে ছগির দ্বিতীয়। তাঁদের পারিবারিক ব্যবসা ছিল। ১০ বছর আগে তিনি বিয়ে করেন নাসিমা আক্তারকে। ছগিরের দুই সন্তান—তৌসিফ ও রামিশা। এদের একজনের বয়স পাঁচ বছর, আরেকজনের তিন।
ছগির নিহত হন বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে। সে সময় জগন্নাথ কলেজের ছাত্রদলের কমিটি এবং একটি ভবন দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। ছগিরের মত উপেক্ষা করে কমিটি করা হয়। এ নিয়ে সেদিন সকালে তিনি ঢাকার মেয়রের সঙ্গে বৈঠকও করেন। সেই বৈঠক শেষ করে বাসায় ফিরে আসার পর খুন হন ছগির। ছগিরের বিরুদ্ধে সে সময় সার্জেন্ট ফরহাদ হত্যাসহ ১২টি মামলা চলছিল। পুরান ঢাকায় ছগিরের পরিচিতি ছিল ত্রাস হিসেবে।
২৫ জুন বেলা ১১টার দিকে ছগিরের লাশ নেওয়া হয় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে তাঁর কফিন দলীয় পতাকা দিয়ে মোড়ানো হয়। এ সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপির প্রায় সব মন্ত্রী ও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ছগিরের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
ছগিরের মতো সন্ত্রাসীর মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়া দেখে জনকণ্ঠে প্রকাশিত আমার সেই ‘বিচারের বাণী কাঁদে’ সিরিজের কথা মনে পড়ে যায়। সেই সিরিজের ১৯৯৯ সালের ৩১ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ছিল সার্জেন্ট ফরহাদ হত্যা নিয়ে। ফরহাদ খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ছগির আহমেদ। ফরহাদ ছিলেন কোতোয়ালি থানার এসআই। তখন জগন্নাথ কলেজ ছাত্রদলে ছগির ও কাজলের দুটি গ্রুপ ছিল, যাদের মধ্যে প্রায়ই গোলাগুলি হতো। কাজলের বাসা ছিল কলেজের দক্ষিণে বুড়িগঙ্গার তীরে, আর ছগিরের বাসা আদালত ভবনের কাছে। ১৯৯৪ সালের ১৫ মার্চের সকালে দুই পক্ষের গোলাগুলির সময় সেখানে পুলিশ নিয়ে যান এসআই ফরহাদ। তিনি ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করেন ছগির।
এ ঘটনা নিয়ে কোতোয়ালির ওসি মুজিবুল হক ছগির, কাজলসহ ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তাঁদের মধ্যে ছগির ও কাজল ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন পর ফিরে এসে জামিন নেন। জামিন পেয়ে আবার বিদেশে পালিয়ে যান কাজল। সেই থেকে তিনি বিদেশেই আছেন। ছগির মূল দলে মিশে রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেন। অবশ্য বিএনপি ক্ষমতায় থাকতেই ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু এ মামলার অভিযোগপত্র দেন। যথারীতি জজ আদালতে মামলা শুরু হয়। মামলার ৩০ সাক্ষীর ২১ জনই ছিলেন পুলিশ সদস্য। বাকি ৯ জন জব্দ তালিকার। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের কেউই তাঁদের সহকর্মী খুনের বিচারের জন্য আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। সাক্ষ্য না দেওয়ায় অতলে তলিয়ে যায় মামলাটি।
আমার মনে আছে, এই মামলার ফলোআপ করার সময় ফরহাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার যোগাযোগ করতেন। স্বামীর মৃত্যুর পর পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে রাজারবাগ স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তিনি রাজারবাগ কোয়ার্টারেই থাকতেন।
ছগির খুনের পরের দিন রাজারবাগ স্কুলে গেলাম শারমিনকে খুঁজতে। শুনি তাঁর চাকরি নেই। তাঁকে কোয়ার্টার থেকেও বের করে দেওয়া হয়। এক সহকর্মী আমাকে শারমিনের বাসার ঠিকানা দিলেন। ২০০৫ সালের ২৭ জুন সকালে গেলাম শারমিনের চামেলীবাগের বাসায়।
ফরহাদ যেদিন খুন হন, পরের দিন তাঁর ছোট ছেলে সিয়ামের জন্ম হয়েছিল। আমি যখন তাদের বাসায় গেলাম, তখন সিয়াম মতিঝিল আইডিয়ালে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। শারমিনের বড় ছেলে সানি পড়ত ঢাকা সিটি কলেজে। শারমিন বললেন, ‘ফরহাদ মারা যাওয়ার চার বছর পর নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি বিয়ে করি। বিয়ে করার অপরাধে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মতিউর রহমান আমাকে চাকরিচ্যুত করেন। চাকরির অব্যাহতিপত্রে লেখেন, দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হলো। চাকরির সঙ্গে বাসাও ছাড়তে হলো। এমনকি পুলিশ কল্যাণ তহবিলের টাকাও বন্ধ হয়ে গেল।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছগিরের মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য সেদিন বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হয়েছিল। শারমিনের পরিবারের সবাই তা দেখেছেন। বললেন, টিভির খবরে ছগিরের মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য দেখেছে সানি। এরপর সারা দিন কারও সঙ্গে কথা বলেনি, কিছু মুখেও দেয়নি। বাবার খুনিকে সরকারের বড় বড় নেতার সম্মান দেখানোর দৃশ্য কোনো সন্তান কি মেনে নিতে পারে ভাই? যে সন্ত্রাসী আমার জীবন তছনছ করেছে, দুই সন্তানসহ আমাকে পথে বসিয়েছে, সে কী করে এত মর্যাদা পায়! তার জন্য দেশের মন্ত্রীদের এত মায়া কেন?’
সানি এতক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে কথা শুনছিল। হঠাৎ বলে উঠল, সন্ত্রাসীর হাতে বাবার মৃত্যুর কথা শুনে আমার মা খুব কেঁদেছিলেন, কাল আবার কাঁদলেন তাঁর স্বামীর খুনির মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য দেখে। শুধু মা নন, আমরাও কেঁদেছি। ছেলের কথা শুনে আমি শারমিনের দিকে তাকাই, তিনিও কাঁদছেন। মায়ের কান্না দেখে পাশে থাকা ছোট ছেলেটাও কেঁদে ওঠে।
এ মুহূর্তে শারমিন যেন আমার স্বজন হয়ে যান। মা আর সন্তানদের ভেজা চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি, আমারও গলা ধরে আসে। কিছুই বলতে পারি না। যে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রের, রাষ্ট্রের কর্তাদের, তা আমার মতো নিতান্ত ছাপোষা সংবাদকর্মী দেবে কীভাবে?
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

‘বিচারের বাণী কাঁদে’, শুনতে একটু ক্লিশে লাগে না? এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হতেই পারে, এভাবে বলা কিছুটা গতানুগতিক। তবু এই শিরোনামে আমার একটি সিরিজ রিপোর্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছিল বিচারবঞ্চিত মানুষের হাহাকার।
তার আগে একটু বলি, যেকোনো প্রতিবেদন করার ক্ষেত্রে আমি সব সময় সেই ঘটনাকে নিরাপদ দূরত্ব থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। এটা অনেকটা দুটি বিদ্যুৎ সুপরিবাহী তার যতটা নিরাপদ দূরত্বে থাকে, ততটুকু। এতে সুবিধা আছে, ঘটনার সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে যে তা-ই হবে, তেমন কোনো কথা নেই। অনেক ঘটনা টেনে নিয়ে যেতে হয় অনেক দূর অবধি। আজ সে রকম একটা ঘটনা বলি।
২০০৫ সালের ২৪ জুন, শুক্রবার। সকালের দিকে তেমন কোনো কাজ ছিল না। বিকেলে একটু দেরি করে অফিসে যাওয়ার ইচ্ছে। কিন্তু জুমার নামাজ শেষ হতে না হতেই একের পর এক ফোন। শুনলাম, ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ছগির আহমেদ ছগির (৪২) খুন হয়েছেন। কিসের আরাম-বিরাম! বাইক নিয়ে দিলাম ছুট।
ঢাকা জজকোর্টের উল্টো দিকের গলি ধরে কয়েক পা গেলেই রঘুনাথ দাস লেনের সোনা মিয়া আল ফালাহ জামে মসজিদ। সেই মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে এসেছিলেন সে সময়ের নামকরা সন্ত্রাসী ও যুবদল নেতা ছগির। মসজিদের অদূরে নাসির উদ্দিন সরকার লেনের গলির ভেতরে তাঁর পাঁচতলা বাড়ি। এদিন তাঁর মায়ের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। নামাজ পড়ে খাবার বিতরণের কথা বলে তিনি মসজিদে আসেন। সঙ্গে শিশুসন্তান তৌসিফ এবং তারই সমবয়সী গৃহকর্মী জালাল।
জালাল আমাকে বলেছিল, মসজিদ থেকে বের হয়ে ছগিরের ছেলে তৌসিফ ও সে একসঙ্গে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। তৌসিফ ছিল তার পেছনে। রায়সাহেব বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গলিতে তিন যুবক দাঁড়িয়ে। ছগিরকে দেখেই তারা এগিয়ে আসে। এরপর কোনো কথা না বলে সোজা গুলি করে। গুলির শব্দে দুজনেই দেখতে পায়, ছগির রাস্তায় পড়ে যাচ্ছেন। তারা দৌড়ে গিয়ে বাসায় খবর দেয়। ছুটে আসেন ছগিরের স্ত্রী নাসিমা আক্তার রুবী। এ ঘটনার পর সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়। তারা সন্ত্রাসীদের পালাতে দেখে ধাওয়া করে। সে সময় টহল পুলিশের হাবিলদার রফিক একজনকে জাপটে ধরেন। ছেলেটার নাম শাওন। পরে সে র্যাবের হাতে প্রাণ হারায়। তখন শোনা যায়, এই শাওন বিএনপির তৎকালীন এমপি প্রয়াত নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুর ছোট ভাই মনিরের ঘনিষ্ঠ। শাওনের মৃত্যু নিয়েও নানা আলোচনা হয়।
দুপুরের পর ছগিরের লাশ নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে। সেখানে গিয়ে দেখি, ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী আমানুল্লাহ আমান, গণপূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস, সংসদ সদস্য মোসাদ্দেক আলী ফালু, সংসদ সদস্য নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুসহ শত শত নেতা-কর্মী জড়ো হয়েছেন।
অপরাধ রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে নিহত ব্যক্তির বায়োগ্রাফিটা সব সময় খুব জরুরি। এতে পাঠক সেই ব্যক্তি সম্পর্কে একটি ধারণা করতে পারেন। খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, ছগিরের পিতার নাম হাজি আফতাব উদ্দিন। তাঁরা সূত্রাপুরের নাসির উদ্দিন সরদার লেনের স্থায়ী বাসিন্দা। চার ভাই, এক বোনের মধ্যে ছগির দ্বিতীয়। তাঁদের পারিবারিক ব্যবসা ছিল। ১০ বছর আগে তিনি বিয়ে করেন নাসিমা আক্তারকে। ছগিরের দুই সন্তান—তৌসিফ ও রামিশা। এদের একজনের বয়স পাঁচ বছর, আরেকজনের তিন।
ছগির নিহত হন বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে। সে সময় জগন্নাথ কলেজের ছাত্রদলের কমিটি এবং একটি ভবন দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। ছগিরের মত উপেক্ষা করে কমিটি করা হয়। এ নিয়ে সেদিন সকালে তিনি ঢাকার মেয়রের সঙ্গে বৈঠকও করেন। সেই বৈঠক শেষ করে বাসায় ফিরে আসার পর খুন হন ছগির। ছগিরের বিরুদ্ধে সে সময় সার্জেন্ট ফরহাদ হত্যাসহ ১২টি মামলা চলছিল। পুরান ঢাকায় ছগিরের পরিচিতি ছিল ত্রাস হিসেবে।
২৫ জুন বেলা ১১টার দিকে ছগিরের লাশ নেওয়া হয় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে তাঁর কফিন দলীয় পতাকা দিয়ে মোড়ানো হয়। এ সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপির প্রায় সব মন্ত্রী ও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ছগিরের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
ছগিরের মতো সন্ত্রাসীর মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়া দেখে জনকণ্ঠে প্রকাশিত আমার সেই ‘বিচারের বাণী কাঁদে’ সিরিজের কথা মনে পড়ে যায়। সেই সিরিজের ১৯৯৯ সালের ৩১ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ছিল সার্জেন্ট ফরহাদ হত্যা নিয়ে। ফরহাদ খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ছগির আহমেদ। ফরহাদ ছিলেন কোতোয়ালি থানার এসআই। তখন জগন্নাথ কলেজ ছাত্রদলে ছগির ও কাজলের দুটি গ্রুপ ছিল, যাদের মধ্যে প্রায়ই গোলাগুলি হতো। কাজলের বাসা ছিল কলেজের দক্ষিণে বুড়িগঙ্গার তীরে, আর ছগিরের বাসা আদালত ভবনের কাছে। ১৯৯৪ সালের ১৫ মার্চের সকালে দুই পক্ষের গোলাগুলির সময় সেখানে পুলিশ নিয়ে যান এসআই ফরহাদ। তিনি ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করেন ছগির।
এ ঘটনা নিয়ে কোতোয়ালির ওসি মুজিবুল হক ছগির, কাজলসহ ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তাঁদের মধ্যে ছগির ও কাজল ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন পর ফিরে এসে জামিন নেন। জামিন পেয়ে আবার বিদেশে পালিয়ে যান কাজল। সেই থেকে তিনি বিদেশেই আছেন। ছগির মূল দলে মিশে রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেন। অবশ্য বিএনপি ক্ষমতায় থাকতেই ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু এ মামলার অভিযোগপত্র দেন। যথারীতি জজ আদালতে মামলা শুরু হয়। মামলার ৩০ সাক্ষীর ২১ জনই ছিলেন পুলিশ সদস্য। বাকি ৯ জন জব্দ তালিকার। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের কেউই তাঁদের সহকর্মী খুনের বিচারের জন্য আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। সাক্ষ্য না দেওয়ায় অতলে তলিয়ে যায় মামলাটি।
আমার মনে আছে, এই মামলার ফলোআপ করার সময় ফরহাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার যোগাযোগ করতেন। স্বামীর মৃত্যুর পর পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে রাজারবাগ স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তিনি রাজারবাগ কোয়ার্টারেই থাকতেন।
ছগির খুনের পরের দিন রাজারবাগ স্কুলে গেলাম শারমিনকে খুঁজতে। শুনি তাঁর চাকরি নেই। তাঁকে কোয়ার্টার থেকেও বের করে দেওয়া হয়। এক সহকর্মী আমাকে শারমিনের বাসার ঠিকানা দিলেন। ২০০৫ সালের ২৭ জুন সকালে গেলাম শারমিনের চামেলীবাগের বাসায়।
ফরহাদ যেদিন খুন হন, পরের দিন তাঁর ছোট ছেলে সিয়ামের জন্ম হয়েছিল। আমি যখন তাদের বাসায় গেলাম, তখন সিয়াম মতিঝিল আইডিয়ালে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। শারমিনের বড় ছেলে সানি পড়ত ঢাকা সিটি কলেজে। শারমিন বললেন, ‘ফরহাদ মারা যাওয়ার চার বছর পর নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি বিয়ে করি। বিয়ে করার অপরাধে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মতিউর রহমান আমাকে চাকরিচ্যুত করেন। চাকরির অব্যাহতিপত্রে লেখেন, দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হলো। চাকরির সঙ্গে বাসাও ছাড়তে হলো। এমনকি পুলিশ কল্যাণ তহবিলের টাকাও বন্ধ হয়ে গেল।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছগিরের মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য সেদিন বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হয়েছিল। শারমিনের পরিবারের সবাই তা দেখেছেন। বললেন, টিভির খবরে ছগিরের মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য দেখেছে সানি। এরপর সারা দিন কারও সঙ্গে কথা বলেনি, কিছু মুখেও দেয়নি। বাবার খুনিকে সরকারের বড় বড় নেতার সম্মান দেখানোর দৃশ্য কোনো সন্তান কি মেনে নিতে পারে ভাই? যে সন্ত্রাসী আমার জীবন তছনছ করেছে, দুই সন্তানসহ আমাকে পথে বসিয়েছে, সে কী করে এত মর্যাদা পায়! তার জন্য দেশের মন্ত্রীদের এত মায়া কেন?’
সানি এতক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে কথা শুনছিল। হঠাৎ বলে উঠল, সন্ত্রাসীর হাতে বাবার মৃত্যুর কথা শুনে আমার মা খুব কেঁদেছিলেন, কাল আবার কাঁদলেন তাঁর স্বামীর খুনির মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য দেখে। শুধু মা নন, আমরাও কেঁদেছি। ছেলের কথা শুনে আমি শারমিনের দিকে তাকাই, তিনিও কাঁদছেন। মায়ের কান্না দেখে পাশে থাকা ছোট ছেলেটাও কেঁদে ওঠে।
এ মুহূর্তে শারমিন যেন আমার স্বজন হয়ে যান। মা আর সন্তানদের ভেজা চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি, আমারও গলা ধরে আসে। কিছুই বলতে পারি না। যে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রের, রাষ্ট্রের কর্তাদের, তা আমার মতো নিতান্ত ছাপোষা সংবাদকর্মী দেবে কীভাবে?
আরও পড়ুন:

‘বিচারের বাণী কাঁদে’, শুনতে একটু ক্লিশে লাগে না? এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হতেই পারে, এভাবে বলা কিছুটা গতানুগতিক। তবু এই শিরোনামে আমার একটি সিরিজ রিপোর্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছিল বিচারবঞ্চিত মানুষের হাহাকার।
তার আগে একটু বলি, যেকোনো প্রতিবেদন করার ক্ষেত্রে আমি সব সময় সেই ঘটনাকে নিরাপদ দূরত্ব থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। এটা অনেকটা দুটি বিদ্যুৎ সুপরিবাহী তার যতটা নিরাপদ দূরত্বে থাকে, ততটুকু। এতে সুবিধা আছে, ঘটনার সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে যে তা-ই হবে, তেমন কোনো কথা নেই। অনেক ঘটনা টেনে নিয়ে যেতে হয় অনেক দূর অবধি। আজ সে রকম একটা ঘটনা বলি।
২০০৫ সালের ২৪ জুন, শুক্রবার। সকালের দিকে তেমন কোনো কাজ ছিল না। বিকেলে একটু দেরি করে অফিসে যাওয়ার ইচ্ছে। কিন্তু জুমার নামাজ শেষ হতে না হতেই একের পর এক ফোন। শুনলাম, ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ছগির আহমেদ ছগির (৪২) খুন হয়েছেন। কিসের আরাম-বিরাম! বাইক নিয়ে দিলাম ছুট।
ঢাকা জজকোর্টের উল্টো দিকের গলি ধরে কয়েক পা গেলেই রঘুনাথ দাস লেনের সোনা মিয়া আল ফালাহ জামে মসজিদ। সেই মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে এসেছিলেন সে সময়ের নামকরা সন্ত্রাসী ও যুবদল নেতা ছগির। মসজিদের অদূরে নাসির উদ্দিন সরকার লেনের গলির ভেতরে তাঁর পাঁচতলা বাড়ি। এদিন তাঁর মায়ের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। নামাজ পড়ে খাবার বিতরণের কথা বলে তিনি মসজিদে আসেন। সঙ্গে শিশুসন্তান তৌসিফ এবং তারই সমবয়সী গৃহকর্মী জালাল।
জালাল আমাকে বলেছিল, মসজিদ থেকে বের হয়ে ছগিরের ছেলে তৌসিফ ও সে একসঙ্গে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। তৌসিফ ছিল তার পেছনে। রায়সাহেব বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গলিতে তিন যুবক দাঁড়িয়ে। ছগিরকে দেখেই তারা এগিয়ে আসে। এরপর কোনো কথা না বলে সোজা গুলি করে। গুলির শব্দে দুজনেই দেখতে পায়, ছগির রাস্তায় পড়ে যাচ্ছেন। তারা দৌড়ে গিয়ে বাসায় খবর দেয়। ছুটে আসেন ছগিরের স্ত্রী নাসিমা আক্তার রুবী। এ ঘটনার পর সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়। তারা সন্ত্রাসীদের পালাতে দেখে ধাওয়া করে। সে সময় টহল পুলিশের হাবিলদার রফিক একজনকে জাপটে ধরেন। ছেলেটার নাম শাওন। পরে সে র্যাবের হাতে প্রাণ হারায়। তখন শোনা যায়, এই শাওন বিএনপির তৎকালীন এমপি প্রয়াত নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুর ছোট ভাই মনিরের ঘনিষ্ঠ। শাওনের মৃত্যু নিয়েও নানা আলোচনা হয়।
দুপুরের পর ছগিরের লাশ নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে। সেখানে গিয়ে দেখি, ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী আমানুল্লাহ আমান, গণপূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস, সংসদ সদস্য মোসাদ্দেক আলী ফালু, সংসদ সদস্য নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুসহ শত শত নেতা-কর্মী জড়ো হয়েছেন।
অপরাধ রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে নিহত ব্যক্তির বায়োগ্রাফিটা সব সময় খুব জরুরি। এতে পাঠক সেই ব্যক্তি সম্পর্কে একটি ধারণা করতে পারেন। খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, ছগিরের পিতার নাম হাজি আফতাব উদ্দিন। তাঁরা সূত্রাপুরের নাসির উদ্দিন সরদার লেনের স্থায়ী বাসিন্দা। চার ভাই, এক বোনের মধ্যে ছগির দ্বিতীয়। তাঁদের পারিবারিক ব্যবসা ছিল। ১০ বছর আগে তিনি বিয়ে করেন নাসিমা আক্তারকে। ছগিরের দুই সন্তান—তৌসিফ ও রামিশা। এদের একজনের বয়স পাঁচ বছর, আরেকজনের তিন।
ছগির নিহত হন বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে। সে সময় জগন্নাথ কলেজের ছাত্রদলের কমিটি এবং একটি ভবন দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। ছগিরের মত উপেক্ষা করে কমিটি করা হয়। এ নিয়ে সেদিন সকালে তিনি ঢাকার মেয়রের সঙ্গে বৈঠকও করেন। সেই বৈঠক শেষ করে বাসায় ফিরে আসার পর খুন হন ছগির। ছগিরের বিরুদ্ধে সে সময় সার্জেন্ট ফরহাদ হত্যাসহ ১২টি মামলা চলছিল। পুরান ঢাকায় ছগিরের পরিচিতি ছিল ত্রাস হিসেবে।
২৫ জুন বেলা ১১টার দিকে ছগিরের লাশ নেওয়া হয় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে তাঁর কফিন দলীয় পতাকা দিয়ে মোড়ানো হয়। এ সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপির প্রায় সব মন্ত্রী ও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ছগিরের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
ছগিরের মতো সন্ত্রাসীর মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়া দেখে জনকণ্ঠে প্রকাশিত আমার সেই ‘বিচারের বাণী কাঁদে’ সিরিজের কথা মনে পড়ে যায়। সেই সিরিজের ১৯৯৯ সালের ৩১ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ছিল সার্জেন্ট ফরহাদ হত্যা নিয়ে। ফরহাদ খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ছগির আহমেদ। ফরহাদ ছিলেন কোতোয়ালি থানার এসআই। তখন জগন্নাথ কলেজ ছাত্রদলে ছগির ও কাজলের দুটি গ্রুপ ছিল, যাদের মধ্যে প্রায়ই গোলাগুলি হতো। কাজলের বাসা ছিল কলেজের দক্ষিণে বুড়িগঙ্গার তীরে, আর ছগিরের বাসা আদালত ভবনের কাছে। ১৯৯৪ সালের ১৫ মার্চের সকালে দুই পক্ষের গোলাগুলির সময় সেখানে পুলিশ নিয়ে যান এসআই ফরহাদ। তিনি ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করেন ছগির।
এ ঘটনা নিয়ে কোতোয়ালির ওসি মুজিবুল হক ছগির, কাজলসহ ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তাঁদের মধ্যে ছগির ও কাজল ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন পর ফিরে এসে জামিন নেন। জামিন পেয়ে আবার বিদেশে পালিয়ে যান কাজল। সেই থেকে তিনি বিদেশেই আছেন। ছগির মূল দলে মিশে রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেন। অবশ্য বিএনপি ক্ষমতায় থাকতেই ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু এ মামলার অভিযোগপত্র দেন। যথারীতি জজ আদালতে মামলা শুরু হয়। মামলার ৩০ সাক্ষীর ২১ জনই ছিলেন পুলিশ সদস্য। বাকি ৯ জন জব্দ তালিকার। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের কেউই তাঁদের সহকর্মী খুনের বিচারের জন্য আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। সাক্ষ্য না দেওয়ায় অতলে তলিয়ে যায় মামলাটি।
আমার মনে আছে, এই মামলার ফলোআপ করার সময় ফরহাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার যোগাযোগ করতেন। স্বামীর মৃত্যুর পর পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে রাজারবাগ স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তিনি রাজারবাগ কোয়ার্টারেই থাকতেন।
ছগির খুনের পরের দিন রাজারবাগ স্কুলে গেলাম শারমিনকে খুঁজতে। শুনি তাঁর চাকরি নেই। তাঁকে কোয়ার্টার থেকেও বের করে দেওয়া হয়। এক সহকর্মী আমাকে শারমিনের বাসার ঠিকানা দিলেন। ২০০৫ সালের ২৭ জুন সকালে গেলাম শারমিনের চামেলীবাগের বাসায়।
ফরহাদ যেদিন খুন হন, পরের দিন তাঁর ছোট ছেলে সিয়ামের জন্ম হয়েছিল। আমি যখন তাদের বাসায় গেলাম, তখন সিয়াম মতিঝিল আইডিয়ালে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। শারমিনের বড় ছেলে সানি পড়ত ঢাকা সিটি কলেজে। শারমিন বললেন, ‘ফরহাদ মারা যাওয়ার চার বছর পর নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি বিয়ে করি। বিয়ে করার অপরাধে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মতিউর রহমান আমাকে চাকরিচ্যুত করেন। চাকরির অব্যাহতিপত্রে লেখেন, দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হলো। চাকরির সঙ্গে বাসাও ছাড়তে হলো। এমনকি পুলিশ কল্যাণ তহবিলের টাকাও বন্ধ হয়ে গেল।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছগিরের মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য সেদিন বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হয়েছিল। শারমিনের পরিবারের সবাই তা দেখেছেন। বললেন, টিভির খবরে ছগিরের মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য দেখেছে সানি। এরপর সারা দিন কারও সঙ্গে কথা বলেনি, কিছু মুখেও দেয়নি। বাবার খুনিকে সরকারের বড় বড় নেতার সম্মান দেখানোর দৃশ্য কোনো সন্তান কি মেনে নিতে পারে ভাই? যে সন্ত্রাসী আমার জীবন তছনছ করেছে, দুই সন্তানসহ আমাকে পথে বসিয়েছে, সে কী করে এত মর্যাদা পায়! তার জন্য দেশের মন্ত্রীদের এত মায়া কেন?’
সানি এতক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে কথা শুনছিল। হঠাৎ বলে উঠল, সন্ত্রাসীর হাতে বাবার মৃত্যুর কথা শুনে আমার মা খুব কেঁদেছিলেন, কাল আবার কাঁদলেন তাঁর স্বামীর খুনির মরদেহে প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার দৃশ্য দেখে। শুধু মা নন, আমরাও কেঁদেছি। ছেলের কথা শুনে আমি শারমিনের দিকে তাকাই, তিনিও কাঁদছেন। মায়ের কান্না দেখে পাশে থাকা ছোট ছেলেটাও কেঁদে ওঠে।
এ মুহূর্তে শারমিন যেন আমার স্বজন হয়ে যান। মা আর সন্তানদের ভেজা চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি, আমারও গলা ধরে আসে। কিছুই বলতে পারি না। যে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রের, রাষ্ট্রের কর্তাদের, তা আমার মতো নিতান্ত ছাপোষা সংবাদকর্মী দেবে কীভাবে?
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

‘বিচারের বাণী কাঁদে’, শুনতে একটু ক্লিশে লাগে না? এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হতেই পারে, এভাবে বলা কিছুটা গতানুগতিক। তবু এই শিরোনামে আমার একটি সিরিজ রিপোর্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছিল বিচারবঞ্চিত মানুষের হাহাকার।
০৪ জুন ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

‘বিচারের বাণী কাঁদে’, শুনতে একটু ক্লিশে লাগে না? এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হতেই পারে, এভাবে বলা কিছুটা গতানুগতিক। তবু এই শিরোনামে আমার একটি সিরিজ রিপোর্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছিল বিচারবঞ্চিত মানুষের হাহাকার।
০৪ জুন ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

‘বিচারের বাণী কাঁদে’, শুনতে একটু ক্লিশে লাগে না? এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হতেই পারে, এভাবে বলা কিছুটা গতানুগতিক। তবু এই শিরোনামে আমার একটি সিরিজ রিপোর্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছিল বিচারবঞ্চিত মানুষের হাহাকার।
০৪ জুন ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

‘বিচারের বাণী কাঁদে’, শুনতে একটু ক্লিশে লাগে না? এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হতেই পারে, এভাবে বলা কিছুটা গতানুগতিক। তবু এই শিরোনামে আমার একটি সিরিজ রিপোর্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছিল বিচারবঞ্চিত মানুষের হাহাকার।
০৪ জুন ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে