Ajker Patrika

আদানিকে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে ভারতীয় ব্যাংকগুলো ঝুঁকি পুনর্বিবেচনা করছে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২: ৫৭
ঘুষের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টি আদানিকে বাংলাদেশেও চাপে ফেলতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
ঘুষের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টি আদানিকে বাংলাদেশেও চাপে ফেলতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় ব্যাংকগুলো আদানি গ্রুপের সঙ্গে তাদের ঋণ এবং প্রকল্পগুলো পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেছে। আটজন ব্যাংকার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদানি গ্রুপের সঙ্গে তাঁদের ঝুঁকি পর্যালোচনা করছেন।

আদানি গ্রুপের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম প্রথম ধাক্কাতেই ৩৪ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত কমে গেছে। তবে কিছু অংশীদার ও বিনিয়োগকারীর সমর্থনে পরে কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে।

স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই) জানিয়েছে, চলমান এবং সম্পন্ন হওয়ার পথে থাকা প্রকল্পগুলোতে তারা অর্থায়ন বন্ধ করবে না। তবে নতুন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকটি আরও সাবধান হবে। ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঋণ দেওয়ার আগে সমস্ত শর্ত পূরণ নিশ্চিত করা হবে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, ইউনিয়ন ব্যাংক, আইসিআইসিআই ব্যাংক, ক্যানারা ব্যাংক, আইডিবিআই ব্যাংক এবং আরবিএল ব্যাংক তারাও একই রকম মূল্যায়ন করছে। এই ব্যাংকগুলোর আদানি গ্রুপের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে কম সম্পর্ক রয়েছে।

এদিকে একজন নিয়ন্ত্রক সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ব্যাংকিং ব্যবস্থার দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো ব্যাংক আদানি গ্রুপে অতিরিক্ত ঝুঁকি নেয়নি এবং এটি উদ্বেগের কারণ নয়।

ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, তারা আদানি গ্রুপের বিনিয়োগ অব্যাহত রাখতে চায়। ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রেউভেন আজার জানিয়েছেন, মার্কিন অভিযোগ ইসরায়েলের দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো সমস্যা নয়।

আদানি গ্রুপ ইসরায়েলের হাইফা বন্দরের ৭০ শতাংশের অংশীদার এবং ড্রোন ও সেমিকন্ডাক্টর তৈরির প্রকল্পে ইসরায়েলি সংস্থাগুলোর সঙ্গে তারা কাজ করছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, গৌতম আদানি এবং আরও সাত ব্যক্তি ভারতে সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি পাওয়ার জন্য ঘুষ দিয়েছেন। আদানি গ্রুপ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আদানি নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংস্থা আদানি গ্রিন জানিয়েছে, মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) আদানির বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন করাপ্ট প্র্যাকটিসেস অ্যাক্টের (এফসিপিএ) অধীনে অভিযোগ করা হয়নি।

ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা এবং ইসরায়েল সরকার আদানি পাশে থাকলেও এরই মধ্যে অংশীদারদের কাছ থেকে বেশ চাপে পড়েছে আদানি গ্রুপ।

ফ্রান্সের তেল কোম্পানি টোটালএনার্জিস ঘোষণা দিয়েছে, তারা আদানি গ্রুপে নতুন কোনো বিনিয়োগ করবে না যতক্ষণ পর্যন্ত অভিযোগের বিষয়ে স্পষ্টতা না আসে। আদানি গ্রিনে টোটালের ২০ শতাংশ অংশীদারত্ব রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত হওয়ার পরপরই কেনিয়া সরকার আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের দুটি চুক্তি বাতিল করেছে। এই চুক্তির আওতায় আদানি কেনিয়ার প্রধান বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ পেত। সেখানেও আদানি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল।

একইভাবে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ আদানি সম্পর্কিত প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনা করছে।

এই পরিস্থিতিতে আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলোর মোট ক্ষতি ১৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য আদানি গ্রিন ও আদানি এনার্জির শেয়ারের দাম কিছুটা বেড়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। সংসদে এ বিষয়ে বিরোধীরা বিতর্কের দাবি জানালেও পরপর তিন দিন তা নাকচ করা হয়েছে। এ নিয়ে সংসদে হট্টগোলে স্পিকার তিন দিনই অধিবেশন স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন। বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করেছে, মোদি সরকার আদানি গ্রুপকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে এবং তদন্তে বাধা দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

সৈয়দ জামিলের অভিযোগের জবাবে যা লিখলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

বগুড়ায় ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত