Ajker Patrika

বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের শ্রীলঙ্কায় ওষুধ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের শ্রীলঙ্কায় ওষুধ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

শ্রীলঙ্কায় ওষুধ খাতে বিনিয়োগে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অব শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা। এ সময় দুই দেশের ব্যবসায়ীরাই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার প্রতি জোর দেন।

আজ বুধবার ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্প্রসারণে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন’ শীর্ষক বিজনেস প্ল্যানারি সেশনে ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধিদলকে এই আহ্বান জানানো হয়।

শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের হাইকমিশনের সার্বিক সহযোগিতায় এই বিজনেস প্ল্যানারি অনুষ্ঠানটি হয় বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার।

অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ৭০টি শ্রীলঙ্কান ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির মধ্যে ১৫০টি বিটুবি ম্যাচ-মেকিং অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দুদেশের উদ্যোক্তারা নিজেদের ব্যবসা ও বিনিয়োগবিষয়ক তথ্য আদান-প্রদানের সুযোগ পান, যা ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অব শ্রীলঙ্কার সভাপতি আনুরা ওয়ারনাকুলাসুরিয়া বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস জরুরি এবং দুদেশের বেসরকারি খাতের মধ্যকার এ ধরনের সমন্বয় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বিগত কয়েক দশকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেশ স্থিতিশীল ছিল। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্য, ইলেকট্রনিকস ও হালকা প্রকৌশল এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রভৃতি খাত এ অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

তাসকীন আহমেদ জানান, শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তারা এরই মধ্যে বাংলাদেশে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক, জ্বালানি, অবকাঠামো প্রভৃতি খাতে ৪৩৮.১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে আরও বেশি হারে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের অধিকতর উন্নয়নে প্রায় ৩ দশক আগে স্বাক্ষরিত ‘ডাবল ট্যাক্সেশন এভয়ডেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট’ যুগোপযোগীকরণের ওপর জোরারোপ করেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি।

শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ বিজনেস কো-অপারেশন কাউন্সিলের সভাপতি আন্দ্রে ফার্নান্দো তাঁর দেশের ওষুধশিল্পের উন্নয়ন ও বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

শ্রীলঙ্কা এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান মানগালা ওয়াইজেসিঙ্গহি জানান, শ্রীলঙ্কার জিডিপিতে রপ্তানি খাতের অবদান ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে মোট রপ্তানি ছিল ১৬.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা তার রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ ও পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর অধিক হারে প্রাধান্য দিচ্ছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, তৈরি পোশাক, ফ্যাব্রিকস ও কেমিক্যাল প্রভৃতি পণ্য আমদানি করা হয়েছে।

এ ছাড়া সুতা ও টেক্সটাইল, ফ্যাব্রিকস, মসলা, পশুখাদ্য, প্লাস্টিকপণ্য, বাদাম ও কৃষিপণ্য প্রভৃতি খাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে বলে মত দেন তিনি।

শ্রীলঙ্কার ওষুধ, প্যাকেজিং, লজিস্টিক ও রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান মানগালা ওয়াইজেসিঙ্গহি।

বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট অব শ্রীলঙ্কা রেনুকা এম ওয়াইরাকুনে বলেন, দুদেশের মধ্যকার এফটিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অনেকাংশে বৃদ্ধির পাশাপাশি শুল্কবিষয়ক প্রতিবন্ধকতাও নিরসন হবে।

অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে অতি দ্রুত এফটিএ স্বাক্ষর জরুরি।

ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়াতে এফটিএ স্বাক্ষরে দুদেশের সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত