Ajker Patrika

জ্বালানি নীতি সংস্কার-সংলাপ: ২০৩১ সালে বড় সংকটের শঙ্কা

  • স্থিতিশীল বিদ্যুতের দাম প্রয়োজন।
  • হাতিয়ার হতে পারে শিল্প ছাদে সৌরবিদ্যুৎ।
  • নীতি প্রণয়নে বেসরকারি খাতকে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় আনতে হবে
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গতকালের সেমিনারে অতিথিরা। 	ছবি: আজকের পত্রিকা
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গতকালের সেমিনারে অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে এখনই নীতির বড় ধরনের সংস্কার ও বিনিয়োগ না হলে ২০৩১ সালেই দেশ গুরুতর সরবরাহ সংকটে পড়বে, এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, অতিরিক্ত ব্যয়, নীতিগত অনিশ্চয়তা, গ্যাসের ঘাটতি এবং বিনিয়োগ স্থবিরতার কারণে শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক স্থিতি এখন ঝুঁকিতে। এ বাস্তবতায় আগামী নির্বাচিত সরকারের জন্য জ্বালানি সরবরাহ হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানে অর্থনৈতিক সাংবাদিক ফোরাম (ইআরএফ) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের আয়োজিত বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগ পরিবেশবিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা এসব মত দেন। এতে খাত বিশেষজ্ঞ, শিল্প উদ্যোক্তা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

মূল প্রবন্ধে ইএমএ পাওয়ার ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক আবু চৌধুরী বলেন, ২০২৯ সালে বিদ্যুৎ চাহিদা ৩৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়াবে। এখনই নতুন বিনিয়োগ না হলে ২০৩১ সালেই বড় সংকট দেখা দেবে। তিনি বলেন, ইনস্টলড ক্ষমতা বেশি হলেও প্রকৃত ঝুঁকি রয়েছে—গ্যাসের কমতি, জ্বালানি উৎসের বৈচিত্র্যহীনতা, প্রকল্প অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা এবং আর্থিক অনিশ্চয়তা। তাঁর মতে, বিদ্যমান উৎপাদন সক্ষমতার ৪৮ শতাংশ বেসরকারি খাতের হাতে, তাই নীতি প্রণয়নে বেসরকারি খাতকে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় আনতে হবে।

বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, বিশ্ব নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে এগিয়ে যাওয়ার পরও বাংলাদেশ ১৯৯৬ সালের নীতিতে চলছে। উৎপাদনে জোর থাকলেও ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনে কম বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব ঘটাচ্ছে। চার হাজার পোশাক কারখানা যদি ছাদে ৫-১০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করে, তবে ২০-৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করা সম্ভব।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন বলেন, বিপুল বিনিয়োগ সত্ত্বেও জ্বালানি, গ্যাস ও পানির ঘাটতিতে শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অতীতের প্রকল্পে দুর্নীতি ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি খাতটিকে অকার্যকর করেছে। ভবিষ্যৎ নীতি হতে হবে টেকসই, প্রভাবমুক্ত ও বেসরকারি খাতের নেতৃত্বাধীন।

জামায়াতের শুরা সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, তাঁদের দল ক্ষমতায় গেলে বিশেষজ্ঞদের সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে জ্বালানি খাত পুনর্গঠন করা হবে।

এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, অন্তত ৪ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসা উচিত। ভূমি সংকট বড় বাধা হওয়ায় ভূমি ব্যবহার নীতি সংস্কারও জরুরি।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, জ্বালানি অর্থনীতির ভিত্তি; তাই এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বিদ্যুতের অস্থিতিশীল মূল্যে শিল্প টেকে না; তাই পাঁচ বছরের স্থির ট্যারিফ অপরিহার্য।

বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান জ্বালানি খাতকে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন আখ্যা দিয়ে জাইকার বিগ-বি উদ্যোগের মতো দীর্ঘমেয়াদি নীতি গ্রহণের আহ্বান জানান।

আইইউবির উপাচার্য এম তামিম বলেন, নীতি-ফ্রেমওয়ার্কের অভাবই খাতটির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। উচ্চমূল্যের জ্বালানি ২০২৯ সাল পর্যন্ত শিল্প প্রতিযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মলা, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুল হক, বিডা মহাপরিচালক মো. আরিফুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক আহমেদ জুবায়ের মাহমুদ ও কনফিডেন্স পাওয়ার রংপুর লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইমরান করিম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও দুই মিত্র হারালেন মাদুরো, লাতিনে ভেনেজুয়েলার পাশে এখন কারা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ