মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়ের সিংহভাগই আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আইএমইডির প্রতিবেদনে ১০ খাতে ভাগ করা এই প্রকল্পগুলোর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে (১২৯টি প্রকল্পে) ৭৮ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার অর্থ আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিগত সময়ে ঋণ করে প্রকল্পের নামে বরাদ্দ দিয়ে জনগণের টাকা লোপাট হয়েছে। বিদেশেও সেই টাকা পাচার হয়েছে। আমরা প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, যৌক্তিক প্রকল্পগুলো এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তালিকা করেছি। দেশের অর্থনীতি ও জনকল্যাণে এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। তাই প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি স্বাস্থ্য খাতের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় নেওয়া এই প্রকল্পের নাম ‘৫ম জনস্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প বিগত সরকারের সময় নেওয়া। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের অধিকাংশ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, পুল ফান্ড এবং এমআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯। এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাওয়া আরেকটি বড় প্রকল্প হলো ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (লাইন-৫) রুট সাউদার্ন’ প্রকল্প। দেশের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিগত সরকার এই প্রকল্প নিয়েছিল। তখন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে ব্যয় ৫ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের নতুন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭২১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে। প্রকল্পের অর্থায়ন করবে জাইকা।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের বড় ধরনের চাপে রয়েছে সরকার। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নির্ণয় করে দাতা সংস্থাগুলো আগের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থছাড় কমিয়ে দিয়েছে। নতুন করে প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় বৈদেশিক ঋণ নিয়ে আরও ১৫৪টি প্রকল্প নেওয়ার অর্থ হচ্ছে অর্থনীতিকে চাপে ফেলা। কারণ, দাতা সংস্থাগুলো বিগত অন্যান্য বছরের তুলনায় দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ কম দিচ্ছে। স্বল্প মেয়াদি ঋণ দিয়ে বেশি হারে সুদ নিচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, বিগত সরকারের সময় নেওয়া অনেক অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রত্যাশা অনুসারে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই প্রকল্পগুলোর ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে সরকারকে। নতুন করে এডিপি কিংবা আরএডিপি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত করার আগে এসব বিষয় চিন্তা করতে হবে। তা না হলে অর্থনীতির জন্য ভবিষ্যতে বড় বিপদ বয়ে আনবে।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুসারে, ব্যয়ের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়ের যে প্রকল্প এডিপিভুক্ত হচ্ছে, সেটি হলো ‘বে-টার্মিনালের নৌ-চলাচল অবকাঠামো এবং পশ্চাদ্ভূমি সংযোগ সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্প’। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালের জুন মাসে।
অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ‘হাটিকুমরুল-বনপাড়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প: বনপাড়া-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ অংশ’ প্রকল্পের ব্যয় ৯ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এতে ঋণ সহায়তা করবে এআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০৩১ সালে।
ব্যয়ের দিক থেকে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের ‘ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব সিভিল সার্ভিস প্রকল্প’। ৬ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাইকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৮ সালের জুন মাসে।
এত প্রকল্প এডিপিভুক্ত হতে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের চলমান প্রকল্পগুলো রিভিউ করেছে। প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে যে প্রকল্পগুলোর প্রয়োজন নেই, সেসব প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্পের অযৌক্তিক ব্যয় ছিল, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটা ভালো হয়েছে।
সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোয় সামাজিক সুরক্ষা খাতের পাশাপাশি কৃষি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেরও বরাদ্দ রয়েছে। এগুলো অর্থনৈতিক ও জনকল্যাণের ব্যবহৃত প্রকল্প বলে মনে করেন তিনি।
আইএমইডির প্রতিবেদনে এডিপির প্রকল্পগুলো ১০টি খাতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতকে। এই খাতে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ২৮টি প্রকল্প। এ ছাড়া কৃষিতে ১৫; বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ২৪; পরিবহন ও যোগাযোগে ১৮; শিক্ষায় ১৬; সাধারণ সরকারি সেবায় ১১; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১০; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদে ৯; শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬; তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫; ধর্ম ও বিনোদনে ৪; স্বাস্থ্যে ৩; জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ৩ এবং সামাজিক সুরক্ষা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুটি করে মোট ৪টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ খাতের চলমান কিছু প্রকল্প ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা ঠিক আছে বলে জানান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেল চলমান রয়েছে, রাজধানীতে মেট্রোরেলের আরেকটি অংশ যোগ হলে তা হবে জনবান্ধব এবং অর্থনীতির জন্য সুখবরের। এটি পরীক্ষিত।
দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়ের সিংহভাগই আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আইএমইডির প্রতিবেদনে ১০ খাতে ভাগ করা এই প্রকল্পগুলোর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে (১২৯টি প্রকল্পে) ৭৮ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার অর্থ আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিগত সময়ে ঋণ করে প্রকল্পের নামে বরাদ্দ দিয়ে জনগণের টাকা লোপাট হয়েছে। বিদেশেও সেই টাকা পাচার হয়েছে। আমরা প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, যৌক্তিক প্রকল্পগুলো এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তালিকা করেছি। দেশের অর্থনীতি ও জনকল্যাণে এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। তাই প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি স্বাস্থ্য খাতের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় নেওয়া এই প্রকল্পের নাম ‘৫ম জনস্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প বিগত সরকারের সময় নেওয়া। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের অধিকাংশ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, পুল ফান্ড এবং এমআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯। এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাওয়া আরেকটি বড় প্রকল্প হলো ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (লাইন-৫) রুট সাউদার্ন’ প্রকল্প। দেশের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিগত সরকার এই প্রকল্প নিয়েছিল। তখন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে ব্যয় ৫ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের নতুন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭২১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে। প্রকল্পের অর্থায়ন করবে জাইকা।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের বড় ধরনের চাপে রয়েছে সরকার। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নির্ণয় করে দাতা সংস্থাগুলো আগের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থছাড় কমিয়ে দিয়েছে। নতুন করে প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় বৈদেশিক ঋণ নিয়ে আরও ১৫৪টি প্রকল্প নেওয়ার অর্থ হচ্ছে অর্থনীতিকে চাপে ফেলা। কারণ, দাতা সংস্থাগুলো বিগত অন্যান্য বছরের তুলনায় দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ কম দিচ্ছে। স্বল্প মেয়াদি ঋণ দিয়ে বেশি হারে সুদ নিচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, বিগত সরকারের সময় নেওয়া অনেক অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রত্যাশা অনুসারে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই প্রকল্পগুলোর ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে সরকারকে। নতুন করে এডিপি কিংবা আরএডিপি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত করার আগে এসব বিষয় চিন্তা করতে হবে। তা না হলে অর্থনীতির জন্য ভবিষ্যতে বড় বিপদ বয়ে আনবে।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুসারে, ব্যয়ের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়ের যে প্রকল্প এডিপিভুক্ত হচ্ছে, সেটি হলো ‘বে-টার্মিনালের নৌ-চলাচল অবকাঠামো এবং পশ্চাদ্ভূমি সংযোগ সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্প’। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালের জুন মাসে।
অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ‘হাটিকুমরুল-বনপাড়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প: বনপাড়া-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ অংশ’ প্রকল্পের ব্যয় ৯ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এতে ঋণ সহায়তা করবে এআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০৩১ সালে।
ব্যয়ের দিক থেকে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের ‘ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব সিভিল সার্ভিস প্রকল্প’। ৬ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাইকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৮ সালের জুন মাসে।
এত প্রকল্প এডিপিভুক্ত হতে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের চলমান প্রকল্পগুলো রিভিউ করেছে। প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে যে প্রকল্পগুলোর প্রয়োজন নেই, সেসব প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্পের অযৌক্তিক ব্যয় ছিল, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটা ভালো হয়েছে।
সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোয় সামাজিক সুরক্ষা খাতের পাশাপাশি কৃষি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেরও বরাদ্দ রয়েছে। এগুলো অর্থনৈতিক ও জনকল্যাণের ব্যবহৃত প্রকল্প বলে মনে করেন তিনি।
আইএমইডির প্রতিবেদনে এডিপির প্রকল্পগুলো ১০টি খাতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতকে। এই খাতে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ২৮টি প্রকল্প। এ ছাড়া কৃষিতে ১৫; বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ২৪; পরিবহন ও যোগাযোগে ১৮; শিক্ষায় ১৬; সাধারণ সরকারি সেবায় ১১; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১০; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদে ৯; শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬; তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫; ধর্ম ও বিনোদনে ৪; স্বাস্থ্যে ৩; জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ৩ এবং সামাজিক সুরক্ষা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুটি করে মোট ৪টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ খাতের চলমান কিছু প্রকল্প ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা ঠিক আছে বলে জানান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেল চলমান রয়েছে, রাজধানীতে মেট্রোরেলের আরেকটি অংশ যোগ হলে তা হবে জনবান্ধব এবং অর্থনীতির জন্য সুখবরের। এটি পরীক্ষিত।
শিম চাষের স্বর্ণভূমি হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এবার শিমের উৎপাদন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। জমির আল, খালের পাড়সহ শিম চাষ বাদ যায়নি বেড়িবাঁধ আর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশও। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ১৫০ কোটি টাকার শিম উৎপাদিত হলেও এবার তা বেড়ে হয়েছে ২১০ কোটি টাকা। স্থানীয় চাহি
৪ ঘণ্টা আগেদেশের পুঁজিবাজার ও ব্যাংক খাত এখন খাদের কিনারায় আর বিমা খাত খাদের ভেতরে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। তাঁর মতে, বিমা খাতের এই দুরবস্থার মূল কারণ মালিকদের অনিয়ম ও গ্রাহকদের আস্থার অভাব।
৫ ঘণ্টা আগেব্লকচেইন প্রযুক্তিতে বাংলাদেশে তৈরি ‘গ্রিন এলসি’ প্ল্যাটফর্মের প্রুফ অব কনসেপ্ট (পিওসি) সফলভাবে সম্পন্ন করেছে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। গ্রিন এলসি সিস্টেমটি বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে তৈরি প্রথম ডিজিটাল ট্রেড প্ল্যাটফর্ম, যেটির মাধ্যমে প্রথম অভ্যন্তরীণ এলসি ইস্যু করেছে প্রাইম ব্যাংক। বাংলাদেশের ট্রেড...
৫ ঘণ্টা আগেঅনেক বছর ধরে এই দিনের জন্যই তো অপেক্ষা করে ছিলেন আবুল হোসাইন। খুব আয়োজন করে ছেলের বিয়ে দেবেন। অবশেষে সেই দিনটি এল। তাই তিনি চাচ্ছিলেন, বাড়িটা রং করাবেন। কিন্তু রং করানো তো আর সহজ কথা নয়। ব্যাপক প্রস্তুতির ব্যাপার, অন্তত কয়েকবার তো কোটিং করাতেই হবে। আর হাতে বেশি সময়ও নেই, খরচাপাতিও অনেক...
৫ ঘণ্টা আগে