Ajker Patrika

এডিপিতে নতুন ১৫৪ প্রকল্প, ব্যয় হবে চার লাখ কোটি

মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৫, ২১: ৪১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়ের সিংহভাগই আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

আইএমইডির প্রতিবেদনে ১০ খাতে ভাগ করা এই প্রকল্পগুলোর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে (১২৯টি প্রকল্পে) ৭৮ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার অর্থ আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘বিগত সময়ে ঋণ করে প্রকল্পের নামে বরাদ্দ দিয়ে জনগণের টাকা লোপাট হয়েছে। বিদেশেও সেই টাকা পাচার হয়েছে। আমরা প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, যৌক্তিক প্রকল্পগুলো এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তালিকা করেছি। দেশের অর্থনীতি ও জনকল্যাণে এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। তাই প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’

এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি স্বাস্থ্য খাতের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় নেওয়া এই প্রকল্পের নাম ‘৫ম জনস্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প বিগত সরকারের সময় নেওয়া। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের অধিকাংশ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, পুল ফান্ড এবং এমআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯। এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ভূমিকা রাখবে।

এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাওয়া আরেকটি বড় প্রকল্প হলো ‘ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (লাইন-৫) রুট সাউদার্ন’ প্রকল্প। দেশের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিগত সরকার এই প্রকল্প নিয়েছিল। তখন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে ব্যয় ৫ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের নতুন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭২১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে। প্রকল্পের অর্থায়ন করবে জাইকা।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের বড় ধরনের চাপে রয়েছে সরকার। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নির্ণয় করে দাতা সংস্থাগুলো আগের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থছাড় কমিয়ে দিয়েছে। নতুন করে প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় বৈদেশিক ঋণ নিয়ে আরও ১৫৪টি প্রকল্প নেওয়ার অর্থ হচ্ছে অর্থনীতিকে চাপে ফেলা। কারণ, দাতা সংস্থাগুলো বিগত অন্যান্য বছরের তুলনায় দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ কম দিচ্ছে। স্বল্প মেয়াদি ঋণ দিয়ে বেশি হারে সুদ নিচ্ছে।

অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, বিগত সরকারের সময় নেওয়া অনেক অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রত্যাশা অনুসারে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই প্রকল্পগুলোর ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে সরকারকে। নতুন করে এডিপি কিংবা আরএডিপি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত করার আগে এসব বিষয় চিন্তা করতে হবে। তা না হলে অর্থনীতির জন্য ভবিষ্যতে বড় বিপদ বয়ে আনবে।

আইএমইডির প্রতিবেদন অনুসারে, ব্যয়ের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়ের যে প্রকল্প এডিপিভুক্ত হচ্ছে, সেটি হলো ‘বে-টার্মিনালের নৌ-চলাচল অবকাঠামো এবং পশ্চাদ্‌ভূমি সংযোগ সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্প’। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালের জুন মাসে।

অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ‘হাটিকুমরুল-বনপাড়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প: বনপাড়া-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ অংশ’ প্রকল্পের ব্যয় ৯ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এতে ঋণ সহায়তা করবে এআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০৩১ সালে।

ব্যয়ের দিক থেকে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের ‘ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব সিভিল সার্ভিস প্রকল্প’। ৬ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাইকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৮ সালের জুন মাসে।

এত প্রকল্প এডিপিভুক্ত হতে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের চলমান প্রকল্পগুলো রিভিউ করেছে। প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে যে প্রকল্পগুলোর প্রয়োজন নেই, সেসব প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্পের অযৌক্তিক ব্যয় ছিল, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটা ভালো হয়েছে।

সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোয় সামাজিক সুরক্ষা খাতের পাশাপাশি কৃষি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেরও বরাদ্দ রয়েছে। এগুলো অর্থনৈতিক ও জনকল্যাণের ব্যবহৃত প্রকল্প বলে মনে করেন তিনি।

আইএমইডির প্রতিবেদনে এডিপির প্রকল্পগুলো ১০টি খাতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতকে। এই খাতে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ২৮টি প্রকল্প। এ ছাড়া কৃষিতে ১৫; বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ২৪; পরিবহন ও যোগাযোগে ১৮; শিক্ষায় ১৬; সাধারণ সরকারি সেবায় ১১; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১০; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদে ৯; শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬; তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫; ধর্ম ও বিনোদনে ৪; স্বাস্থ্যে ৩; জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ৩ এবং সামাজিক সুরক্ষা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুটি করে মোট ৪টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ খাতের চলমান কিছু প্রকল্প ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা ঠিক আছে বলে জানান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেল চলমান রয়েছে, রাজধানীতে মেট্রোরেলের আরেকটি অংশ যোগ হলে তা হবে জনবান্ধব এবং অর্থনীতির জন্য সুখবরের। এটি পরীক্ষিত।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইআরএফ ইনস্টিটিউটে ‘ডেটা জার্নালিজম’ প্রশিক্ষণ শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৫৯
আজ শনিবার ‘ডেটা জার্নালিজম’ নিয়ে আয়োজিত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শনিবার ‘ডেটা জার্নালিজম’ নিয়ে আয়োজিত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের অর্থনীতি-বিষয়ক সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) ‘ইআরএফ ইনস্টিটিউট’-এর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। আজ শনিবার ‘ডেটা জার্নালিজম’ নিয়ে আয়োজিত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হয়।

ট্রেনিং সেশনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইআরএফের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান, সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল, শারমিন রিনভী এবং সিনিয়র সদস্য মুনিমা সুলতানা।

অনুষ্ঠানে শহীদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম, দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র সংবাদপত্রে উঠে আসবে। এ জন্য সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে আমরা ইআরএফ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলাম। আজকে ইআরএফ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু করেছে। এটি আমাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে। এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা আরও অনেক দূরে এগিয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

দৌলত আকতার মালা বলেন, ‘আজকে আমাদের প্রথম কোর্স অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই কোর্সের মাধ্যমে আমরা “ডেটা জার্নালিজম” সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করব। আমরা ধারাবাহিকভাবে অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ট্রেনিংয়ের আয়োজন করব। আমাদের সহকর্মীদের অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সমাধানের পথ তৈরি করতে সহায়তা করবে ইআরএফ ইনস্টিটিউট।’

ট্রেনিংয়ের একটি সেশন পরিচালনা করেন ডেটা জার্নালিস্ট এবং শিক্ষাবিদ মোহাম্মদ ইমরান। অন্যটি পরিচালনা করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের ২৫ জন সংবাদকর্মী অংশগ্রহণ করেন। ইআরএফ সদস্যদের বাইরেও অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদেরও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইআরএফ কার্যালয়ে ইআরএফ ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার অর্থনীতিতে উৎপাদনশীল খাতের অবদান ৫৬ শতাংশ: ডিসিসিআই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক’ উপস্থাপন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক’ উপস্থাপন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রথমবারের মতো অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স সূচক (ইপিআই) প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই)। ইপিআই জরিপের দেখা যায়, ঢাকার অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে উৎপাদনশীল খাত (ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর)। ঢাকার অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান ৫৬ শতাংশ। এরপরই রয়েছে সেবা খাত, এ খাতের অবদান ৪৪ শতাংশ। জরিপের তথ্য অনুসারে দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশই হচ্ছে ঢাকার অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে।

আজ শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক’ প্রকাশের পর তার ওপর ফোকাস গ্রুপ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ সূচকে খাতভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন ও প্রবণতা নিয়ে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে জরিপ প্রকাশ করা হয়।

ডিসিসিআই জানিয়েছে, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি-প্রকৃতির বাস্তব চিত্র তুলে ধরা ও চলমান অবস্থার উন্নয়নে করণীয় নির্ধারণে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে ঢাকা চেম্বার এই সূচক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এর কার্যক্রম রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক হলেও পরবর্তীকালে ধাপে ধাপে সারা দেশে সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

জরিপের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ড. এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। এতে বলা হয়, উৎপাদনশীল খাত ঢাকার অর্থনীতিতে বড় ধরনের দাপট দেখিয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, পোশাক ও তৈরি পোশাক (রেডিমেড গার্মেন্টস) খাত সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে, যা উৎপাদনশীল খাতের মোটের ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ। এরপরই রয়েছে খাদ্যপণ্য খাত ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ, বস্ত্র খাত ৯ দশমিক ৩ শতাংশ এবং রাবার ও প্লাস্টিক পণ্য ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া মৌলিক ধাতু খাতের অংশ ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, ওষুধ ও রাসায়নিক খাত ২ দশমিক ৭ শতাংশ, চামড়া ও সংশ্লিষ্ট পণ্য ২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং অন্যান্য অধাতব খনিজ পণ্যের অংশ ২ দশমিক ২ শতাংশ।

এদিকে সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অংশীদারত্ব রয়েছে পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্যে, যা ৬০ দশমিক ২ শতাংশ। এরপর রয়েছে রিয়েল এস্টেট খাত ২০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং পরিবহন খাত ১৯ শতাংশ।

আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ সময়ে এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়। মোট ৬৫৪ জন উত্তরদাতার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে উৎপাদন খাত থেকে ৩৬৫ জন এবং সেবা খাত থেকে ২৮৯ জন। আটটি উৎপাদন শিল্প থেকে বাছাই করা হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে খাদ্যপণ্য, টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, ঔষধি রাসায়নিক ও উদ্ভিজ্জ পণ্য, রাবার ও প্লাস্টিক পণ্য, অন্যান্য অধাতব খনিজ এবং মৌলিক ধাতু। এ ছাড়া পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্য, স্থল পরিবহন এবং রিয়েল এস্টেট কার্যক্রমসহ তিনটি সেবা খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ডিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, জরিপ অনুসারে অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা পরিস্থিতির উন্নয়ন, শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ, আর্থিক খাত সুসংহতকরণ, ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও সুদের হার হ্রাস, বাণিজ্য সহায়ক অবকাঠামো সেবা নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি বিষয়গুলোর সরকারের সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন।

আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ পরিমাপের জন্য স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বেশ কিছু সূচকের কার্যক্রম রয়েছে, যদিও এসব সূচক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে এবং কেন পরিবর্তিত হচ্ছে তার প্রকৃত চিত্র স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে না, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ডিসিসিআইর এই উদ্যোগ।

তাসকীন আহমেদ বলেন, ত্রৈমাসিকভিত্তিকে প্রকাশিতব্য এ সূচকের মাধ্যমে বিশেষ করে শিল্প খাতে উৎপাদন, বিক্রয়, অর্ডার প্রবাহ, রপ্তানির প্রবণতা, কর্মসংস্থান, ব্যবসায়িক আস্থা এবং বিনিয়োগের প্রবৃত্তি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া পাবে।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘ঢাকার অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরতে ঢাকার সমস্যাগুলোও তুলে আনতে হবে। আমাদের প্রতিবছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন হচ্ছে সেই পুরোনো নিয়ম অনুসারে। আমরা ট্রেড লাইসেন্সের টাকা দিতে চাই, কিন্তু এটি ঘরে বসে যাতে করা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। প্রথাগত ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের হয়রানি থেকে আমাদের মুক্ত করতে হবে। সিটি করপোরেশন কর্তৃক ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টিতে ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা গেলে সময় ও হয়রানি দুটোই হ্রাস হবে বলে তিনি অভিমত জ্ঞাপন করেন।

আবুল কাসেম খান আরও বলেন, অর্থনীতির সব সূচকে বাংলাদেশের অবস্থা বেশ নাজুক, এর অন্যতম কারণ হলো সরকার প্রস্তাবিত সংস্কার কার্যক্রমগুলো ভালোভাবে মূল্যায়ন করছে না। পাশাপাশি দীর্ঘসূত্রতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থা মোকাবিলায় অর্থনৈতিক সংস্কার প্রস্তাবকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) মহাপরিচালক মো. নূরুল আলম বলেন, গবেষণা কার্যক্রমে তথ্য সংগ্রহে আরও সচেতন হতে হবে, যা প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়নে আরও সহায়ক হবে এবং শিল্প-সংশ্লিষ্ট সেবাপ্রাপ্তির বিষয়টি কী ধরনের প্রভাব ফেলে তা নির্ধারণের ওপর জোরারোপ করা আবশ্যক।

ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ এ গবেষণায় সংগৃহীত তথ্যের পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণে আরও মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি জরিপটির গবেষণা কার্যক্রমের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাপোর্ট টু সাসটেইন্যাবল গ্র্যাজুয়েশন প্রজেক্টের (এসএসজিপি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ নেসার আহমেদ বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের আগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিদ্যমান সুবিধার বেশির ভাগই বাংলাদেশ ব্যবহার করেছে, তাই এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে এ সুবিধাবঞ্চিত হওয়া পরিবেশ মোকাবিলায় আমাদের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’ এ ছাড়া তিনি গবেষণার প্রশ্নপত্র সংশোধনের প্রস্তাব করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি অধিশাখা) মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মুনতাসির মামুন বলেন, অর্থনীতি, শিল্প খাত, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার ওপর বিদেশি উদ্যোক্তাদের আস্থা থাকলেই, বিনিয়োগ প্রাপ্তির পাশাপাশি বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ সম্ভব। তিনি কৃষি খাতকে এ গবেষণায় অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান, যা দেশের অন্যমত বড় খাতের অবস্থা নির্ণয়ে সহায়ক হবে।

বিএফটিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সাইফ উদ্দিন আহমেদ দেশের বিভিন্ন সংস্থার তথ্যের সঙ্গে ঢাকা চেম্বারের গবেষণার তথ্যের সমন্বয়ের ওপর জোরারোপ করেন। সেই সঙ্গে এ গবেষণায় খাতভিত্তিক আরও বহুমুখী তথ্যের সংযোজনের সুযোগ রয়েছে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (এসএমইএসপিডি) নওশাদ মোস্তফা বলেন, এসএমইদের জন্য নীতিমালা ইতিমধ্যে বেশ সহজীকরণ করা হয়েছে, তবে ঋণপ্রাপ্তিতে কী ধরনের সমস্যা রয়েছে, উদ্যোক্তাদের থেকে এ ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সে অনুযায়ী উদ্যোগ গ্রহণ সহজতর হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠিত ফর্মুলা ব্যবহার করে এ গবেষণাটি পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে, সেই সঙ্গে প্রসিদ্ধ কোনো জার্নালে পরিচালিত গবেষণার সারসংক্ষেপ প্রকাশের উদ্যোগী হওয়া জরুরি।

র‍্যাপিডের গবেষণা পরিচালক ড. মো. দীন ইসলাম বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে পরিচালিত গবেষণার কার্যপদ্ধতি সংশোধন করা যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এলআর গ্লোবালের ছয় মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এলআর গ্লোবালের ছয় মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন স্থগিত

বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টকে ফান্ড ম্যানেজারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে প্রতিষ্ঠানটির অধীনে ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

স্থগিত ফান্ডগুলো হলো ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান এবং এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড-১। এগুলোর ট্রাস্টি বাংলাদেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি (বিজিআইসি)।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে জানানো হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিআইসি ফান্ডগুলোর ব্যাংক ও ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্ট থেকে সব ধরনের ডেবিট লেনদেন, অনলাইন ট্রান্সফার ও ট্রেডিং কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। ট্রাস্টি জানিয়েছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কারণ তাদের অর্থ ‘গুরুতর ঝুঁকিতে’ পড়েছে।

বিএসইসির তদন্তে দেখা গেছে, এলআর গ্লোবাল ৬৯ কোটি টাকার বেশি অর্থ অপব্যবহার করেছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে বন্ধ ও লোকসানে থাকা পদ্মা প্রিন্টার্সের ৫১ শতাংশ শেয়ার অস্বাভাবিক দামে কিনতে ২৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে, পরে কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড রাখে। এরপর নতুন শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে আরও ৪৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘটনা ধরা পড়ে। বিএসইসি জানিয়েছে, এসব ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বিনিয়োগ, যা বিনিয়োগকারীদের মূলধনের ক্ষতির সমান।

নির্দেশনা অনুযায়ী, এলআর গ্লোবালের সিইও রিয়াজ ইসলামকে আজীবনের জন্য বাজার কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোম্পানিকে ৩০ দিনের মধ্যে ছয়টি ফান্ডে সুদসহ প্রায় ৯০ কোটি টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে; নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দিলে রিয়াজ ইসলামকে ৯৮ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে। কোম্পানির পরিচালক জর্জ এম স্টক ৩ ও রেজাউর রহমান সোহাগ—প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান বিজিআইসিসহ আরও ছয়জনকে সম্মিলিতভাবে ৯ কোটি ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যানবাহনের গতিসীমা বিষয়ে প্রথমবারের মতো মাসমিডিয়া ক্যাম্পেইন উদ্বোধন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় যানবাহন চালকসহ সাধারণ মানুষকে মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪ সম্পর্কে জানাতে প্রথমবারের মতো মাসমিডিয়া ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সম্মেলনকক্ষে এ ক্যাম্পেইন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটির (বিআইজিআরএস) আওতায় জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ভাইটাল স্ট্র্যাটেজির কারিগরি সহায়তায় এই ক্যাম্পেইনের প্রচারণা উপকরণ নির্মাণ করা হয়েছে।

ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন। বিআইজিআরএসের ইনিশিয়েটিভ কো-অর্ডিনেটর ও অতিরিক্ত সচিব (অব.) মো. আবদুল ওয়াদুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মনিরুজ্জামান, বিআরটিসির মহাব্যবস্থাপক (পরিচালনা) মেজর মো. নিজাম উদ্দিন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) জ্যেষ্ঠ সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মো. মামুনুর রশিদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. জিয়াউর রহমান, ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম, রোড ট্রাফিক ভিকটিম ও রোড ক্র্যাশে নিহত প্রাক্তন ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলামের সহধর্মিণী রেবেকা সুলতানা নীলা, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজির কারিগরি পরামর্শক আমিনুল ইসলাম সুজন প্রমুখ।

এই ক্যাম্পেইনের মধ্যে রয়েছে ৩০ সেকেন্ড, ৪৫ সেকেন্ড, ১ মিনিট ও ৯০ সেকেন্ড ব্যাপ্তির ভিডিওচিত্র এবং এগুলো ওয়েবসাইট, ইউটিউব, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং সড়কে ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রচার বা প্রদর্শন করা হবে। ভিডিওচিত্রে রোড ক্র্যাশে নিহত তরুণ সংগঠক ও রাজনীতিক আরিফুল ইসলামের সহধর্মিণী রেবেকা সুলতানা নীলা অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি তাঁর ও তাঁদের সন্তানের প্রিয় মানুষকে হারানোর বিষয়টি ও পরবর্তী অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন এবং একই সঙ্গে তিনি সড়কে গতিসীমা মেনে গাড়ি চালানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এতে সড়কের পাশে সাইনেজ আকারে স্থাপনের জন্য দুটি ভিন্ন ডিজাইনের পোস্টার করা হয়েছে। এসব পোস্টারে গতিসীমা মেনে গাড়ি চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। এ প্রচারণা উপকরণ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ), ডিএমপি, ডিটিসিএর মাধ্যমেও প্রচার করা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটির সড়কসমূহকে নিরাপদ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি। এ কাজ আরও গতিশীল করা হবে।’

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা বাস্তবায়নে সরকার কাজ করছে। এই ক্যাম্পেইন গতিসীমা সম্পর্কে মানুষকে বিশেষত চালকদের সচেতন করবে।’ তিনি ডিএনসিসি, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্টদের গতিসীমা ক্যাম্পেইন আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ব্রি. জে. মো. মঈন উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকার সড়কে যারা মারা যায়, তাদের মধ্যে পথচারী, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল আরোহী বেশি। পথচারীদের নিরাপদ চলাচলের জন্য প্রশস্ত ফুটপাথ নির্মাণ, জেব্রা ক্রসিং অঙ্কন, অবকাঠামোগত উন্নতিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে মোটরযান গতিসীমা সম্পর্কে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হয়েছে। মানুষ যদি গতিসীমা মেনে গাড়ি চালায়, তাহলে সড়ক নিরাপদ হয়ে উঠবে।’ তিনি সবাইকে দায়িত্বের সঙ্গে গাড়ি চালানোর আহ্বান জানান।

মো. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ সড়ক পরিবহন আইনের আওতায় মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪ প্রণয়ন করে। এতে সড়ক ও যানবাহনের ধরন অনুযায়ী গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। শহরের অভ্যন্তরে জাতীয়/আঞ্চলিক মহাসড়কে সর্বোচ্চ ৪০ কিমি/ঘণ্টা এবং অন্যান্য অধিকাংশ সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ কিমি/ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান যেমন সিটি করপোরেশনকে যৌক্তিক গতিসীমা নির্ধারণের কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর রাত ১১টার পর ঢাকার সড়কে আরিফুল ইসলাম (৪২) ও তাঁর বন্ধু সৌভিক অর্জুন (৪৪) দ্রুতগতির ট্রাকের চাপায় অকালে মারা যান। প্রয়াত আরিফুল ইসলামের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা নীলা বলেন, ‘ট্রাকটির গতি যদি কম থাকত, তাহলে হয়তো আরিফ ও অর্জুন বেঁচে যেত। অতিরিক্ত গতির কারণে আমার শিশুসন্তান তার বাবাকে হারায়।’ তিনি বলেন, ‘সড়কে কোনো অকালমৃত্যুই কাম্য নয়। গতিসীমা বা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন বা সড়ক অব্যবস্থাপনার মতো ঘটনাগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। যেন আর কোনো সন্তানকে পিতৃহারা বা কোনো স্ত্রীকে স্বামীহারা বা কোনো মাকে সন্তানহারা হতে না হয়।’

ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মাহবুব আলম বলেন, ‘ঢাকায় রাত ৯টার পর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চলে এবং দিনের বেলায় যানজটে অস্থির যানচালকেরা ফাঁকা রাস্তা পেলে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালান, যা সড়ককে অনিরাপদ করে তোলে। এ জন্য গতিসীমা নির্দেশিকা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এই মাসমিডিয়া ক্যাম্পেইন সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

অনুষ্ঠানে বিআরটিএ, ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ, সিয়াম, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, ব্র্যাক, নিরাপদ সড়ক চাই, সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ-বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ বাংলাদেশ রোড সেফটি কোয়ালিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত