Ajker Patrika

ইলন মাস্কের মাদক সেবন নিয়ে উদ্বেগে টেসলা–স্পেস এক্সের কর্মকর্তারা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ২১: ৫৯
Thumbnail image

ইলন মাস্কের স্রোতের বিপরীতে গিয়ে কথা বলা, রাখঢাক না রেখে বক্তব্য ও উসকানিমূলক আচরণের জন্য তাঁর সমর্থকেরা অনেক অজুহাতই দিয়ে থাকেন। বলা হয়, এ কাজগুলো তাঁর সৃজনশীলতারই বহিঃপ্রকাশ বা তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জের ফল। কেউবা বলেন দুশ্চিন্তা বা অনিদ্রার কারণে তিনি এমনটি করে থাকেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাঁর কোম্পানির কয়েকজন নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও কর্মকর্তা এবং তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা শীর্ষ এ ধনী ব্যক্তিকে নিয়ে ভিন্ন এক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তাঁদের বিশ্বাস, মাস্কের এমন লাগামহীন আচরণের জন্য দায়ী মাদক! 

মাস্কের পরিচিত মানুষ ও তাঁর কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষের বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে বলে, ইলন মাস্কের আচরণের কারণে টেসলার শেয়ার দর কমে যাচ্ছে। স্পেস এক্সপ্রধানের মাদকাসক্তি শুধু তাঁর স্বাস্থ্যের ওপরই প্রভাব ফেলবে তা-ই নয়, তাঁর সঙ্গে যুক্ত ছয়টি কোম্পানি ও শত শত কোটি ডলারের সম্পত্তিও হুমকির মুখে পড়বে।

বিশ্বের শীর্ষ এ ধনী ব্যক্তি তাঁর ব্যক্তিগত সব পার্টিতেই এলএসডি, কোকেন, একস্ট্যাসি (মলি) ও সাইকেডেলিক মাশরুমের মতো মাদক সেবন করেছেন। যাঁরা তাঁকে মাদক সেবন করতে দেখেছেন বা এ বিষয়ে জানেন তাঁরা বলছেন, এ ধরনের পার্টিতে যাঁরা যান তাঁরা সবাই গোপনীয়তা রক্ষার চুক্তি স্বাক্ষর করে যান বা পার্টিতে প্রবেশের আগে মোবাইল ফোন রেখে যান। এর আগে পডকাস্টে গিয়ে প্রকাশ্যেই মারিজুয়ানা সেবন করেছেন মাস্ক এবং কেটামাইনের মতো মাদকও কাছে রাখার কথা স্বীকার করেছেন। 

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে এক পার্টির আয়োজন করেন মাস্ক। ওই পার্টিতে প্রকাশ্যেই তিনি বেশ কয়েকটি ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন। এর পরের বছর মেক্সিকোতে এক অনুষ্ঠানে তিনি ম্যাজিক মাশরুম নামের সাইকেডেলিক মাশরুম মাদক সেবন করেন। ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী মেলা আর্ট বাসেলের সময় মায়ামি বাড়িতে পার্টি করার সময় ভাই কিম্বাল মাস্কের সঙ্গে কেটামাইন সেবন করেন। এ ছাড়া স্পেস এক্স ও সাবেক টেসলা বোর্ড পরিষদের সদস্য স্টিভ জুরভেটসনের সঙ্গে অবৈধ মাদক সেবন করেছেন মাস্ক। 

৫২ বছর বয়সী মাস্কের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, মাস্ক এখনো লাগামহীনভাবে মাদক সেবন চালিয়ে যাচ্ছেন, বিশেষ করে কেটামাইন। মাদক সেবনের কারণে মাস্কের স্বাস্থ্যগত জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে উদ্বিগ্ন তাঁরা। মাদকের ব্যবহার তাঁর স্বাস্থ্যের ক্ষতি না করলেও তাঁর ব্যবসার ক্ষতি করবেই বলে মনে করছেন তাঁরা। 

অবৈধ মাদকের ব্যবহার মার্কিন ফেডারেল নীতির লঙ্ঘন হতে পারে এবং এর কারণে সরকারের সঙ্গে স্পেস এক্সের শতকোটি ডলারের চুক্তি হুমকির মুখে পড়তে পারে। মাস্ক তাঁর কোম্পানির শেয়ার দরের বিষয়ে উদাসীন। এতে বিনিয়োগকারীদের এক লাখ কোটি ডলার, লাখ লাখ কর্মসংস্থান ও মার্কিন স্পেস প্রোগ্রামের বড় একটা অংশ হুমকির মুখে পড়তে পারে। 

স্পেস এক্স একমাত্র মার্কিন প্রতিষ্ঠান, যেটি মহাকাশচারীদের আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে আনা-নেওয়ার বিষয়ে নাসার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে স্পেস এক্সের রকেটে করে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ বাড়িয়েছে পেন্টাগন। এ ছাড়া কোম্পানিটি জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোতে স্যাটেলাইট সেবা বিক্রির বৃহৎ বাণিজ্য গড়ে তোলার কথা চিন্তা করছে। 

টেসলার সাবেক পরিচালক লিন্ডা জনসন রাইস মাস্কের অস্থির আচরণের জন্য এতটাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন এবং তাঁর মাদক সেবনের বিষয়ে এতটাই উদ্বিগ্ন ছিলেন, ২০১৯ সালে তিনি বৈদ্যুতিক গাড়ির বোর্ড পরিষদের নির্বাচনে থাকতে আর দ্বিতীয়বার লড়াই করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত