Ajker Patrika

আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্রুত পদক্ষেপ চান ব্যবসায়ীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজ শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক বাণিজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
আজ শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক বাণিজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাস, শিল্প-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন অব্যাহত রাখা, সুশাসন, রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অটোমেশন ও সংস্কার এবং সহায়ক বাণিজ্য নীতি সহায়তার প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বৃহৎ শিল্প উদ্যোক্তারা। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা উন্নতি ও জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

আজ শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক বাণিজ্য সম্মেলনে তাঁরা এই দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, শিল্পখাত অনেক কঠিন সময় পার করছে। সরকার বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের চেষ্টা করছে। কিন্তু যথেষ্ট উন্নতি হয়নি। এ ক্ষেত্রে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলা যায়। আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন না হলে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে দেশে আর কোনো বিনিয়োগ হবে না। শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিতে সমস্যা সমাধানে আমাদের একটা রোডম্যাপ করতে হবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিয়ে শিল্পখাতে আরও বেশি হারে গ্যাস সরবরাহ করার প্রস্তাব দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৫ বছরে অর্থনৈতিক খাতে যে ধরনের দুর্নীতি হয়েছে, তা অকল্পনীয়। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। একটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ৫–১০ কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে। বিশ্বে এমন দৃষ্টান্ত বিরল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এগুলো উত্তরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে। ১৫ বছরের অনিয়ম-দুর্নীতি তিন–চার মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। তবে ক্ষয় হয়ে যেতে শুরু করা অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করেছে এবং আরও ক্ষয় হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ। গত চার মাসে আইএমএফ ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ৩০ টির মতো বৈঠক করেছি। তাদের কাছে অর্থ চাওয়া হয়েছে, তারা দিতে রাজিও হয়েছে। এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল হয়েছে। মূল্যস্ফীতি একটা বড় চ্যালেঞ্জ, রিজার্ভ স্থিতিশীলতা ও সুদের হার সন্তোষজনক পর্যায়ে আনার মাধ্যমে এ অবস্থারও উত্তরণ হবে।

তিনি আরও বলেন, এনবিআর নিয়ে বেসরকারি খাতের অভিযোগ রয়েছে। এনবিআরের কার্যক্রমে অটোমেশন করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ট্যাক্স পলিসি ও ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে আলাদা করা হবে, প্রক্রিয়া চলমান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বশিরউদ্দিন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের সমন্বয় আবশ্যক এবং বিদ্যমান অবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে বলে আশা করছি। শুধু এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ের প্রস্তুতির জন্য নয় আন্তর্জাতিক বাজারে বাণিজ্য সম্প্রসারণেও নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। তবে কবে নাগাদ গ্র্যাজুয়েশন করা যৌক্তিক হবে সে বিষয়ে আরও ডায়ালগ করার প্রয়োজন। কেননা এলডিসি পরবর্তী সময়ে আমরা বেশ কিছু অগ্রাধিকার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হব।’

একই পণ্যের একাধিক বাণিজ্য সংগঠন থাকা উচিত নয় জানিয়ে এগুলো একে অপরের সঙ্গে মার্জ করার পরামর্শ দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগামী বছরের শুরুতেই নীতি সুদ হার ক্রমান্বয়ে কমানোর পাশাপাশি সরকারি ব্যয় হ্রাস, বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় চাঁদাবাজি রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। কেননা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি; আছে জ্বালানি সমস্যা। এতে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়াই কঠিন।

সম্মেলনে প্যানেল আলোচক ছিলেন, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিএবির সভাপতি আব্দুল হাই সরকার, বিটিএমএ শওকত আজিজ রাসেল, ফিকির সভাপতি জাভেদ আখতার, এবিবির সভাপতি সেলিম আর এফ হোসেন, প্রাণ আরএফএর গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী ও ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান আব্দুল মোক্তাদির।

আব্দুল মোক্তাদির বলেন, বাংলাদেশ কঠিন সময় পার করছে। শিল্প-কারখানায় অস্থিরতা কোনোভাবেই কাম্য নয়, তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট সময় সীমাসহ রোডম্যাপ থাকতে হবে। বিভিন্ন পণ্যের উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, ছোট ব্যবসায়ীরা কঠিন পরিস্থিতি পার করছে। আমাদের বেশ কয়েকটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে, তাই কয়লার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিলেই শিল্প খাতে আরও বেশি হারে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে। তবে কিছু ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যার সুফল আসবে।

আহসান খান চৌধুরী বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন না হলে ব্যবসা করা কঠিন। এ খাতে উন্নয়ন হলে ব্যবসার উন্নয়ন আসবে। এ ছাড়া এলসি সমস্যাও রয়েছে। ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনের নিরিখে এলসি খুলতে না পারলে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান দুটোই ব্যাহত হয়। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি খাতের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি পার্শিয়াল বন্ড ইস্যু করা যেতে পারে। এ ছাড়া বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ঋণের সুদের হার হ্রাস প্রদান করা প্রয়োজন।

সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, দ্রুতই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের পক্ষ হতে এখনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। প্রতিটি খাতে অনিয়ম–দুর্নীতি ছেয়ে গেছে এগুলো থামাতে হবে। সব খাতেই আরও স্বচ্ছতা আনতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে শুধুমাত্র সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিই যথেষ্ট নয়, বরং পণ্যের সাপ্লাই চেইনে চাঁদাবাজি বন্ধ সহ বাজার ব্যবস্থাপনায় কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। আর্থিক খাতের মামলাজট নিরসনে আরও বেশি হারে আদালত ও বিচারপতি নিয়োগ করতে হবে। অর্থনৈতিক খাতে সরকার বেশ ভালো করেছে।

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। ২০২৬ এ আমাদের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন স্থগিত করা উচিত। কারণ আমরা এখন বেঁচে থাকার প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছি। তা ছাড়া এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছিল বেশ কিছু ভুল তথ্যের ভিত্তিতে। আমাদের আমদানি ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে, পাশাপাশি কমেছে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন। গ্যাস সংকটে আমরা ফেব্রিকস তৈরি করতে পারছি না, ফলে এ ধরনের পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে।

জাভেদ আখতার বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা, ধারাবাহিকতা ও সক্ষমতা একান্ত অপরিহার্য। এলডিসি উত্তরণের বিষয়ে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি নিজেদের সক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

আব্দুল হাই সরকার বলেন, জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত ছাড়া শিল্প উন্নয়ন সম্ভব নয়, এ অবস্থার উন্নয়ন জরুরি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দেশকে স্বাভাবিক পর্যায়ের নিয়ে আসতে সকলকে সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে হবে।

শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা বেশ পিছিয়ে রয়েছি এ ক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাসে বিশেষকরে দুর্নীতি কমানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন না করায় আমাদের উচ্চ মূল্যের গ্যাস দিয়ে শিল্পকারখানা পরিচালিত হচ্ছে, ফলে আমাদের সক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।’

ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, প্রাক্তন সভাপতিবৃন্দ সহ বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইআরএফ ইনস্টিটিউটে ‘ডেটা জার্নালিজম’ প্রশিক্ষণ শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৫৯
আজ শনিবার ‘ডেটা জার্নালিজম’ নিয়ে আয়োজিত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শনিবার ‘ডেটা জার্নালিজম’ নিয়ে আয়োজিত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের অর্থনীতি-বিষয়ক সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) ‘ইআরএফ ইনস্টিটিউট’-এর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। আজ শনিবার ‘ডেটা জার্নালিজম’ নিয়ে আয়োজিত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হয়।

ট্রেনিং সেশনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইআরএফের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান, সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল, শারমিন রিনভী এবং সিনিয়র সদস্য মুনিমা সুলতানা।

অনুষ্ঠানে শহীদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম, দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র সংবাদপত্রে উঠে আসবে। এ জন্য সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে আমরা ইআরএফ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলাম। আজকে ইআরএফ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু করেছে। এটি আমাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে। এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা আরও অনেক দূরে এগিয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

দৌলত আকতার মালা বলেন, ‘আজকে আমাদের প্রথম কোর্স অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই কোর্সের মাধ্যমে আমরা “ডেটা জার্নালিজম” সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করব। আমরা ধারাবাহিকভাবে অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ট্রেনিংয়ের আয়োজন করব। আমাদের সহকর্মীদের অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সমাধানের পথ তৈরি করতে সহায়তা করবে ইআরএফ ইনস্টিটিউট।’

ট্রেনিংয়ের একটি সেশন পরিচালনা করেন ডেটা জার্নালিস্ট এবং শিক্ষাবিদ মোহাম্মদ ইমরান। অন্যটি পরিচালনা করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের ২৫ জন সংবাদকর্মী অংশগ্রহণ করেন। ইআরএফ সদস্যদের বাইরেও অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদেরও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইআরএফ কার্যালয়ে ইআরএফ ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার অর্থনীতিতে উৎপাদনশীল খাতের অবদান ৫৬ শতাংশ: ডিসিসিআই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক’ উপস্থাপন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক’ উপস্থাপন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রথমবারের মতো অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স সূচক (ইপিআই) প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই)। ইপিআই জরিপের দেখা যায়, ঢাকার অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে উৎপাদনশীল খাত (ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর)। ঢাকার অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান ৫৬ শতাংশ। এরপরই রয়েছে সেবা খাত, এ খাতের অবদান ৪৪ শতাংশ। জরিপের তথ্য অনুসারে দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশই হচ্ছে ঢাকার অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে।

আজ শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক’ প্রকাশের পর তার ওপর ফোকাস গ্রুপ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ সূচকে খাতভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন ও প্রবণতা নিয়ে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে জরিপ প্রকাশ করা হয়।

ডিসিসিআই জানিয়েছে, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি-প্রকৃতির বাস্তব চিত্র তুলে ধরা ও চলমান অবস্থার উন্নয়নে করণীয় নির্ধারণে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে ঢাকা চেম্বার এই সূচক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এর কার্যক্রম রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক হলেও পরবর্তীকালে ধাপে ধাপে সারা দেশে সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

জরিপের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ড. এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। এতে বলা হয়, উৎপাদনশীল খাত ঢাকার অর্থনীতিতে বড় ধরনের দাপট দেখিয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, পোশাক ও তৈরি পোশাক (রেডিমেড গার্মেন্টস) খাত সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে, যা উৎপাদনশীল খাতের মোটের ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ। এরপরই রয়েছে খাদ্যপণ্য খাত ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ, বস্ত্র খাত ৯ দশমিক ৩ শতাংশ এবং রাবার ও প্লাস্টিক পণ্য ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া মৌলিক ধাতু খাতের অংশ ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, ওষুধ ও রাসায়নিক খাত ২ দশমিক ৭ শতাংশ, চামড়া ও সংশ্লিষ্ট পণ্য ২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং অন্যান্য অধাতব খনিজ পণ্যের অংশ ২ দশমিক ২ শতাংশ।

এদিকে সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অংশীদারত্ব রয়েছে পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্যে, যা ৬০ দশমিক ২ শতাংশ। এরপর রয়েছে রিয়েল এস্টেট খাত ২০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং পরিবহন খাত ১৯ শতাংশ।

আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ সময়ে এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়। মোট ৬৫৪ জন উত্তরদাতার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে উৎপাদন খাত থেকে ৩৬৫ জন এবং সেবা খাত থেকে ২৮৯ জন। আটটি উৎপাদন শিল্প থেকে বাছাই করা হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে খাদ্যপণ্য, টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, ঔষধি রাসায়নিক ও উদ্ভিজ্জ পণ্য, রাবার ও প্লাস্টিক পণ্য, অন্যান্য অধাতব খনিজ এবং মৌলিক ধাতু। এ ছাড়া পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্য, স্থল পরিবহন এবং রিয়েল এস্টেট কার্যক্রমসহ তিনটি সেবা খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ডিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, জরিপ অনুসারে অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা পরিস্থিতির উন্নয়ন, শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ, আর্থিক খাত সুসংহতকরণ, ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও সুদের হার হ্রাস, বাণিজ্য সহায়ক অবকাঠামো সেবা নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি বিষয়গুলোর সরকারের সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন।

আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ পরিমাপের জন্য স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বেশ কিছু সূচকের কার্যক্রম রয়েছে, যদিও এসব সূচক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে এবং কেন পরিবর্তিত হচ্ছে তার প্রকৃত চিত্র স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে না, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ডিসিসিআইর এই উদ্যোগ।

তাসকীন আহমেদ বলেন, ত্রৈমাসিকভিত্তিকে প্রকাশিতব্য এ সূচকের মাধ্যমে বিশেষ করে শিল্প খাতে উৎপাদন, বিক্রয়, অর্ডার প্রবাহ, রপ্তানির প্রবণতা, কর্মসংস্থান, ব্যবসায়িক আস্থা এবং বিনিয়োগের প্রবৃত্তি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া পাবে।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘ঢাকার অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরতে ঢাকার সমস্যাগুলোও তুলে আনতে হবে। আমাদের প্রতিবছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন হচ্ছে সেই পুরোনো নিয়ম অনুসারে। আমরা ট্রেড লাইসেন্সের টাকা দিতে চাই, কিন্তু এটি ঘরে বসে যাতে করা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। প্রথাগত ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের হয়রানি থেকে আমাদের মুক্ত করতে হবে। সিটি করপোরেশন কর্তৃক ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টিতে ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা গেলে সময় ও হয়রানি দুটোই হ্রাস হবে বলে তিনি অভিমত জ্ঞাপন করেন।

আবুল কাসেম খান আরও বলেন, অর্থনীতির সব সূচকে বাংলাদেশের অবস্থা বেশ নাজুক, এর অন্যতম কারণ হলো সরকার প্রস্তাবিত সংস্কার কার্যক্রমগুলো ভালোভাবে মূল্যায়ন করছে না। পাশাপাশি দীর্ঘসূত্রতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থা মোকাবিলায় অর্থনৈতিক সংস্কার প্রস্তাবকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) মহাপরিচালক মো. নূরুল আলম বলেন, গবেষণা কার্যক্রমে তথ্য সংগ্রহে আরও সচেতন হতে হবে, যা প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়নে আরও সহায়ক হবে এবং শিল্প-সংশ্লিষ্ট সেবাপ্রাপ্তির বিষয়টি কী ধরনের প্রভাব ফেলে তা নির্ধারণের ওপর জোরারোপ করা আবশ্যক।

ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ এ গবেষণায় সংগৃহীত তথ্যের পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণে আরও মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি জরিপটির গবেষণা কার্যক্রমের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাপোর্ট টু সাসটেইন্যাবল গ্র্যাজুয়েশন প্রজেক্টের (এসএসজিপি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ নেসার আহমেদ বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের আগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিদ্যমান সুবিধার বেশির ভাগই বাংলাদেশ ব্যবহার করেছে, তাই এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে এ সুবিধাবঞ্চিত হওয়া পরিবেশ মোকাবিলায় আমাদের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’ এ ছাড়া তিনি গবেষণার প্রশ্নপত্র সংশোধনের প্রস্তাব করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি অধিশাখা) মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মুনতাসির মামুন বলেন, অর্থনীতি, শিল্প খাত, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার ওপর বিদেশি উদ্যোক্তাদের আস্থা থাকলেই, বিনিয়োগ প্রাপ্তির পাশাপাশি বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ সম্ভব। তিনি কৃষি খাতকে এ গবেষণায় অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান, যা দেশের অন্যমত বড় খাতের অবস্থা নির্ণয়ে সহায়ক হবে।

বিএফটিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সাইফ উদ্দিন আহমেদ দেশের বিভিন্ন সংস্থার তথ্যের সঙ্গে ঢাকা চেম্বারের গবেষণার তথ্যের সমন্বয়ের ওপর জোরারোপ করেন। সেই সঙ্গে এ গবেষণায় খাতভিত্তিক আরও বহুমুখী তথ্যের সংযোজনের সুযোগ রয়েছে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (এসএমইএসপিডি) নওশাদ মোস্তফা বলেন, এসএমইদের জন্য নীতিমালা ইতিমধ্যে বেশ সহজীকরণ করা হয়েছে, তবে ঋণপ্রাপ্তিতে কী ধরনের সমস্যা রয়েছে, উদ্যোক্তাদের থেকে এ ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সে অনুযায়ী উদ্যোগ গ্রহণ সহজতর হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠিত ফর্মুলা ব্যবহার করে এ গবেষণাটি পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে, সেই সঙ্গে প্রসিদ্ধ কোনো জার্নালে পরিচালিত গবেষণার সারসংক্ষেপ প্রকাশের উদ্যোগী হওয়া জরুরি।

র‍্যাপিডের গবেষণা পরিচালক ড. মো. দীন ইসলাম বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে পরিচালিত গবেষণার কার্যপদ্ধতি সংশোধন করা যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এলআর গ্লোবালের ছয় মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এলআর গ্লোবালের ছয় মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন স্থগিত

বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টকে ফান্ড ম্যানেজারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে প্রতিষ্ঠানটির অধীনে ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

স্থগিত ফান্ডগুলো হলো ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান এবং এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড-১। এগুলোর ট্রাস্টি বাংলাদেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি (বিজিআইসি)।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে জানানো হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিআইসি ফান্ডগুলোর ব্যাংক ও ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্ট থেকে সব ধরনের ডেবিট লেনদেন, অনলাইন ট্রান্সফার ও ট্রেডিং কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। ট্রাস্টি জানিয়েছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কারণ তাদের অর্থ ‘গুরুতর ঝুঁকিতে’ পড়েছে।

বিএসইসির তদন্তে দেখা গেছে, এলআর গ্লোবাল ৬৯ কোটি টাকার বেশি অর্থ অপব্যবহার করেছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে বন্ধ ও লোকসানে থাকা পদ্মা প্রিন্টার্সের ৫১ শতাংশ শেয়ার অস্বাভাবিক দামে কিনতে ২৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে, পরে কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড রাখে। এরপর নতুন শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে আরও ৪৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘটনা ধরা পড়ে। বিএসইসি জানিয়েছে, এসব ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বিনিয়োগ, যা বিনিয়োগকারীদের মূলধনের ক্ষতির সমান।

নির্দেশনা অনুযায়ী, এলআর গ্লোবালের সিইও রিয়াজ ইসলামকে আজীবনের জন্য বাজার কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোম্পানিকে ৩০ দিনের মধ্যে ছয়টি ফান্ডে সুদসহ প্রায় ৯০ কোটি টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে; নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দিলে রিয়াজ ইসলামকে ৯৮ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে। কোম্পানির পরিচালক জর্জ এম স্টক ৩ ও রেজাউর রহমান সোহাগ—প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান বিজিআইসিসহ আরও ছয়জনকে সম্মিলিতভাবে ৯ কোটি ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যানবাহনের গতিসীমা বিষয়ে প্রথমবারের মতো মাসমিডিয়া ক্যাম্পেইন উদ্বোধন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় যানবাহন চালকসহ সাধারণ মানুষকে মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪ সম্পর্কে জানাতে প্রথমবারের মতো মাসমিডিয়া ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সম্মেলনকক্ষে এ ক্যাম্পেইন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটির (বিআইজিআরএস) আওতায় জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ভাইটাল স্ট্র্যাটেজির কারিগরি সহায়তায় এই ক্যাম্পেইনের প্রচারণা উপকরণ নির্মাণ করা হয়েছে।

ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন। বিআইজিআরএসের ইনিশিয়েটিভ কো-অর্ডিনেটর ও অতিরিক্ত সচিব (অব.) মো. আবদুল ওয়াদুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মনিরুজ্জামান, বিআরটিসির মহাব্যবস্থাপক (পরিচালনা) মেজর মো. নিজাম উদ্দিন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) জ্যেষ্ঠ সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মো. মামুনুর রশিদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. জিয়াউর রহমান, ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম, রোড ট্রাফিক ভিকটিম ও রোড ক্র্যাশে নিহত প্রাক্তন ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলামের সহধর্মিণী রেবেকা সুলতানা নীলা, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজির কারিগরি পরামর্শক আমিনুল ইসলাম সুজন প্রমুখ।

এই ক্যাম্পেইনের মধ্যে রয়েছে ৩০ সেকেন্ড, ৪৫ সেকেন্ড, ১ মিনিট ও ৯০ সেকেন্ড ব্যাপ্তির ভিডিওচিত্র এবং এগুলো ওয়েবসাইট, ইউটিউব, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং সড়কে ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রচার বা প্রদর্শন করা হবে। ভিডিওচিত্রে রোড ক্র্যাশে নিহত তরুণ সংগঠক ও রাজনীতিক আরিফুল ইসলামের সহধর্মিণী রেবেকা সুলতানা নীলা অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি তাঁর ও তাঁদের সন্তানের প্রিয় মানুষকে হারানোর বিষয়টি ও পরবর্তী অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন এবং একই সঙ্গে তিনি সড়কে গতিসীমা মেনে গাড়ি চালানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এতে সড়কের পাশে সাইনেজ আকারে স্থাপনের জন্য দুটি ভিন্ন ডিজাইনের পোস্টার করা হয়েছে। এসব পোস্টারে গতিসীমা মেনে গাড়ি চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। এ প্রচারণা উপকরণ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ), ডিএমপি, ডিটিসিএর মাধ্যমেও প্রচার করা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটির সড়কসমূহকে নিরাপদ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি। এ কাজ আরও গতিশীল করা হবে।’

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা বাস্তবায়নে সরকার কাজ করছে। এই ক্যাম্পেইন গতিসীমা সম্পর্কে মানুষকে বিশেষত চালকদের সচেতন করবে।’ তিনি ডিএনসিসি, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্টদের গতিসীমা ক্যাম্পেইন আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ব্রি. জে. মো. মঈন উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকার সড়কে যারা মারা যায়, তাদের মধ্যে পথচারী, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল আরোহী বেশি। পথচারীদের নিরাপদ চলাচলের জন্য প্রশস্ত ফুটপাথ নির্মাণ, জেব্রা ক্রসিং অঙ্কন, অবকাঠামোগত উন্নতিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে মোটরযান গতিসীমা সম্পর্কে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হয়েছে। মানুষ যদি গতিসীমা মেনে গাড়ি চালায়, তাহলে সড়ক নিরাপদ হয়ে উঠবে।’ তিনি সবাইকে দায়িত্বের সঙ্গে গাড়ি চালানোর আহ্বান জানান।

মো. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ সড়ক পরিবহন আইনের আওতায় মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪ প্রণয়ন করে। এতে সড়ক ও যানবাহনের ধরন অনুযায়ী গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। শহরের অভ্যন্তরে জাতীয়/আঞ্চলিক মহাসড়কে সর্বোচ্চ ৪০ কিমি/ঘণ্টা এবং অন্যান্য অধিকাংশ সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ কিমি/ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান যেমন সিটি করপোরেশনকে যৌক্তিক গতিসীমা নির্ধারণের কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর রাত ১১টার পর ঢাকার সড়কে আরিফুল ইসলাম (৪২) ও তাঁর বন্ধু সৌভিক অর্জুন (৪৪) দ্রুতগতির ট্রাকের চাপায় অকালে মারা যান। প্রয়াত আরিফুল ইসলামের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা নীলা বলেন, ‘ট্রাকটির গতি যদি কম থাকত, তাহলে হয়তো আরিফ ও অর্জুন বেঁচে যেত। অতিরিক্ত গতির কারণে আমার শিশুসন্তান তার বাবাকে হারায়।’ তিনি বলেন, ‘সড়কে কোনো অকালমৃত্যুই কাম্য নয়। গতিসীমা বা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন বা সড়ক অব্যবস্থাপনার মতো ঘটনাগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। যেন আর কোনো সন্তানকে পিতৃহারা বা কোনো স্ত্রীকে স্বামীহারা বা কোনো মাকে সন্তানহারা হতে না হয়।’

ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মাহবুব আলম বলেন, ‘ঢাকায় রাত ৯টার পর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চলে এবং দিনের বেলায় যানজটে অস্থির যানচালকেরা ফাঁকা রাস্তা পেলে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালান, যা সড়ককে অনিরাপদ করে তোলে। এ জন্য গতিসীমা নির্দেশিকা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এই মাসমিডিয়া ক্যাম্পেইন সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

অনুষ্ঠানে বিআরটিএ, ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ, সিয়াম, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, ব্র্যাক, নিরাপদ সড়ক চাই, সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ-বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ বাংলাদেশ রোড সেফটি কোয়ালিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত