Ajker Patrika

উচ্চ খেলাপি ঋণে আস্থা হারাচ্ছে ব্যাংক, সংকুচিত হচ্ছে ব্যবসার পরিবেশ: ডিসিসিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, ২০: ৩৯
ডিসিসিআই আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ: ঋণ গ্রহীতার প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত। ছবি: বাসস
ডিসিসিআই আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ: ঋণ গ্রহীতার প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত। ছবি: বাসস

উচ্চ খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংক খাতের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। ফলে খেলাপিরা দিন দিন দেশে ব্যবসার পরিবেশকেও সংকুচিত করছে। তাই দেশের আর্থিক খাতে আমূল সংস্কার ছাড়া শিল্পায়ন ও টেকসই প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়।

আজ শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ: ঋণ গ্রহীতার প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, দেশের আর্থিক খাতে আমূল সংস্কার ছাড়া শিল্পায়ন ও টেকসই প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়। চলতি বছরে দেশের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২ লাখ কোটি টাকা, যা মোট অনাদায়ী ঋণের ২৪ শতাংশেরও বেশি। এমন পরিস্থিতি ব্যাংক খাতের দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনের অভাবকেই সামনে নিয়ে এসেছে।

তিনি বলেন, বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ৭ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে অবস্থান করছে—যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য চাপ সৃষ্টিকারী। এই অবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি দায় এবং সাত বছরের কিস্তিতে সুদ পরিশোধ করার সুযোগ হিসেবে ঋণের মেয়াদে এক বছরের অতিরিক্ত গ্রেস পিরিয়ড ও শ্রেণিকরণে ছয় মাস বাড়ানোর আহ্বান জানান। ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত খেলাপির মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ে প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করা এবং ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অভিঘাতকে বিবেচনায় নেওয়া আহ্বান জানান তাসকীন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (মুদ্রানীতি বিভাগ) ড. মো. ইজাজুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে ঋণদাতা ও গ্রহীতা উভয়কে দায়িত্বশীল হতে হবে। আমাদের অবশ্যই আনুষ্ঠানিক খাতকে রক্ষা করতে হবে, তা না হলে অনানুষ্ঠানিক খাতের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।’ তিনি ব্যাংক খাতের কাঠামোগত সংস্কারে জোর দিয়ে বলেন, ভালো অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলো সুদের হার কমিয়ে উদ্যোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ইজাজুল ইসলাম বলেন, অতীতে কিছু পরিবার আর্থিক খাতকে কবজা করে রেখেছিল, যার ফল ভুগছে সার্বিক অর্থনীতি। তিনি জানান, জুলাই-আগস্টের পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের স্থিতিশীলতা ও মুদ্রাবিনিময় হার বাজারভিত্তিক করায় উদ্যোক্তাদের আস্থা ফিরছে, রিজার্ভ স্থিতিশীল এবং বিনিময় হার বাজার নির্ভর হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিমধ্যে ৪২ হাজার কোটি টাকা বেসরকারি খাতে সরবরাহ করেছে।

ইজাজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতেও বেশ কিছু ব্যাংক বেশ ভালোভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে, যদিও তাদের ঋণের সুদের হার অনেক বেশি এবং ব্যাংকগুলো চাইলে তা কমাতে পারে, ফলে উদ্যোক্তারা আরও স্বস্তিতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন।

মূল প্রবন্ধে ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হলে ব্যবসার পরিবেশ আরও সংকুচিত হবে। চলতি বছরের ঋণের গড় সুদহার ৯ থেকে ১৪ শতাংশে উন্নীত হওয়ায় বেসরকারি খাতে ১.৩৯ ট্রিলিয়ন টাকা অতিরিক্ত সুদ দিতে হচ্ছে জানিয়ে আশরাফ আহমেদ বলেন, খেলাপি ঋণের কারণে শিল্প খাতে ঋণপ্রবাহ সংকুচিত হয়, বিনিয়োগ কমছে, তাতে বেসরকারি খাত দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে। দেশের ১৪টি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ৪০ শতাংশ, অন্যদিকে ভালো ব্যাংকগুলোতে তা মাত্র ৫-৭ শতাংশ। তাই ব্যাংক প্রশাসনে কাঠামোগত সংস্কার এবং ঋণের পুনঃতফসিলের সুযোগ প্রসারিত করার প্রস্তাব দেন আশরাফ আহমেদ।

আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি হোসেন খালেদ আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, ‘এসএমইরা আমাদের মূল চালিকাশক্তি। এসএমই খাত বৃহৎ শিল্পের সাপ্লাই চেইনের অংশ। তাই বড় শিল্পে সংকট হলে এসএমইরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

হোসেন খালেদ বলেন, খোলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমশই বাড়ছে, যা অব্যাহত থাকলে আগামীতে কারখানা চালুর রাখাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। একই সঙ্গে বেসরকারি খাতে নেতিবাচক ঋণপ্রবাহের কারণে অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে আসবে বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার বলেন, আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ থাকলেও বেসরকারি খাতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ততটা সুদৃঢ় নয়, ফলে অনেক ক্ষেত্রে তারা ব্যবসা ও বিনিয়োগের প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকেন না।

আব্দুল হাই সরকার বলেন, অর্থঋণ আদালতের দীর্ঘসূত্রতা এবং দুর্বল নীতির কারণে খেলাপি ঋণ আদায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি বহির্বিশ্বে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন করতে পারে।

বিকেএমইয়ের নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, খেলাপিদের কারণে ভালো ঋণ গ্রহীতারা আর্থিক খাত হতে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এ ছাড়া ডলারের দাম বাড়লেও ব্যাংক ঋণ না পাওয়ায় এসএমই উদ্যোক্তারা বিপাকে পড়েছেন।

র‍্যাংকস মোটরস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহানা রউফ চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীদের সমস্যার অন্ত নেই এবং উৎপাদন খাতে এত বেশি সুদ হার দিয়ে টিকে থাকাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংক ঋণের পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোর ওপর তিনি জোরোপ করেন। সেই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে যারা বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে আগ্রহীদের জন্য স্বল্পসুদের তহবিল গঠন জরুরি।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউল হাসান বলেন, খেলাপির কারণে এখন ব্যাংক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এর প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক অর্থনীতিতে। খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। গ্যাস সরবরাহের ঘাটতির কারণেই অনেক শিল্প বন্ধ হওয়ার পথে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এ ছাড়া ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি রাজীব এইচ চৌধুরী, সহসভাপতি মো. সালিম সোলায়মানসহ পর্ষদ সদস্য ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও কর্মীদের সাফল্য উদ্‌যাপনে আবুল খায়ের স্টিলের ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইস্পাত উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের স্টিল (একেএস) ৬ ডিসেম্বর তাদের সব কর্মীকে নিয়ে ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। দিনব্যাপী এই উৎসবমুখর ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেশের প্রতিটি স্থান থেকে আবুল খায়ের স্টিলের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। নামাজ ও খাবারের বিরতির পর একেএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবার উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যে কোম্পানির সাম্প্রতিক অর্জন ও মাইলফলকগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রড একেএস টিএমটি বি৭০০ সি-আরের সফল উৎপাদন। বিশ্বের দ্রুততম রোলিং মিল স্থাপন। একেএস এবং কাউ ব্র্যান্ড কালার কোটেড স্টিলের মর্যাদাপূর্ণ সুপারব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন।

এই আলোচনায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং কর্মীদের সম্মিলিত সাফল্যের প্রতিচ্ছবিও উঠে আসে।

সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র পর্বটি উদ্‌যাপনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কিংবদন্তি শিল্পী জেমসের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ও লেজার শো উপস্থিত সবাইকে মাতিয়ে রাখে।

সমাপনী ভাষণে একেএস পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান হয়। এরপর নৈশভোজ ও ডিজে সেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (৮ ডসিম্বের) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন, শরী’আহ সুপারভাইজরি কাউন্সলিরে সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যাংকের নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

কর ও সঞ্চিতি সংরক্ষণের পর নিট মুনাফা অর্জন না করলে কোনো ব্যাংকই আর উৎসাহ বোনাস দিতে পারবে না। পাশাপাশি মূলধন সংরক্ষণ ঘাটতি, প্রভিশন ঘাটতি বা পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকেই বোনাস দেওয়ার পথও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে আনরিয়েলাইজড বা নগদায়ন না করা আয়ের ভিত্তিতে বোনাস দেওয়া আর্থিক শৃঙ্খলা ও সুশাসনের পরিপন্থী। তাই এখন থেকে শুধু নির্ধারিত নিট মুনাফা অর্জন করতে পারলেই উৎসাহ বোনাস দেওয়ার অনুমতি পাবে ব্যাংকগুলো।

আরও বলা হয়, পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে কোনো ধরনের উৎসাহ বোনাস দেওয়া যাবে না। রেগুলেটরি মূলধন বা প্রভিশনের ঘাটতি থাকলে বোনাস দেওয়া নিষিদ্ধ। প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় পাওয়া ব্যাংকগুলোও সেই সময়কাল মুনাফা হিসাবের ক্ষেত্রে দেখাতে পারবে না। বোনাস প্রদানে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন কর্মসূচির উন্নতি ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে দৃশ্যমান সাফল্য বিবেচনায় নিতে হবে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে, যেখানে নিট মুনাফা ছাড়া বোনাস না দেওয়ার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। তবে কোনো ব্যাংক নির্দিষ্ট সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশেষ বোনাসের জন্য আবেদন করতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এক ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৩
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভ্যাটব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটাল ও সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক নতুন পর্যায়ে এগোচ্ছে। মাত্র একটি ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধের সুযোগ ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এবং বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহারও শুরু করেছে।

এনবিআর জানিয়েছে, শিগগির এ পদ্ধতি সারা দেশে চালু করা হবে, যাতে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাটের আওতায় আসে এবং নিবন্ধন ছাড়া আর কেউ ব্যবসা চালাতে না পারে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

মো. আবদুর রহমান বলেন, দেশের বড় একটি অংশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনো ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে। আগামী বছর এমন একটি মেকানিজম চালু করা হবে, যার মাধ্যমে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসার সুযোগ থাকবে না। বর্তমানে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠান ৬ লাখ ৪৪ হাজার; লক্ষ্য আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে তা ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা। শুধু চলতি মাসেই ১ লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য—‘সময়মতো নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’—ধরে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে ভ্যাট দিবস পালিত হবে। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর চলবে ভ্যাট সপ্তাহ। তবে নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এ বছরও স্থগিত থাকছে ভ্যাট পুরস্কার।

রিটার্ন জমাদানেও বড় পরিবর্তন আসছে বলে জানান মো. আবদুর রহমান খান। গত অর্থবছরে ১৭ লাখ ই-রিটার্ন জমা পড়লেও চলতি অর্থবছরে তা ৪০ লাখে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জমা পড়েছে ২২ লাখ রিটার্ন। ভ্যাট আদায়েও গতি এসেছে—গত অর্থবছরে মোট রাজস্বের ৩৮ শতাংশ এসেছে ভ্যাট থেকে আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই ভ্যাট আদায় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২২ শতাংশ।

করদাতাদের ঝামেলা কমাতে ই-রিটার্নে ব্যবহৃত ব্যাংকসংক্রান্ত চারটি তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান আবদুর রহমান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করদাতারা মনে করেন, রাজস্ব কর্মকর্তারা এসব তথ্য দেখতে পারবেন—এটি ভুল ধারণা।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে কেন—এ প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বাস্তব প্রয়োজন থেকেই এ লক্ষ্য নির্ধারণ। তবে কারও ওপর হয়রানি বা অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হবে না; মূলত যাঁরা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই কঠোরতা বাড়ানো হবে।

আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত; এককভাবে এনবিআর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত