আমিনুল ইসলাম নাবিল
আজকাল নাটকে ‘ঢাকাইয়া ভাষার’ বেশ ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্য আঞ্চলিক ভাষার মতো এ ভাষাকেও হাস্যরস ও কৌতুকের অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এমন নানা কারণে ভাষা হিসেবে তথাকথিত ঢাকাইয়া ভাষা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা হারাতে বসেছে। ফলত নিজেদের ভাষার প্রতি অনীহা তৈরি হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
ঢাকার আদি ভাষা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, ঢাকাইয়া ভাষায় মূলত দুটি উপভাষা রয়েছে— ‘কুট্টি’ ও ‘সোব্বাসী’। একটা সময় পুরান ঢাকার পরিবারগুলোতে উভয় উপভাষারই প্রচলন ছিল। তবে তরুণ প্রজন্ম এখন ক্রমশ রাজধানীতে চলতি মিশ্র বাংলার দিকে ঝুঁকছে।
ঢাকাইয়া ভাষার ব্যবহার কমে আসার আরেকটি বড় কারণ— আদি ঢাকাইয়াদের অনেকেই এখন আর জন্মস্থানে থাকেন না। নানা কারণে তাঁরা বসত গড়েছেন অন্য কোথাও। আবার পুরান ঢাকাতেও আগমন ঘটেছে নানা অঞ্চলের মানুষের। তার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় ভাষায়। পরিবারগুলোও এখন সন্তানদের ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলতে নিরুৎসাহিত করে।
পোলা (ছেলে), মাইয়া (মেয়ে), পোলাপাইন (ছেলে-মেয়ে), হাছা (সত্যি), ক্যালা (কেন), কেমতে (কীভাবে), হুন (শোন), খাইয়া (খেয়ে), থন (থেকে), কল্লা (গলা), কদু (লাউ), মাগার (কিন্তু), আমি বি (আমিও), দেহি (দেখি), যাইয়া (গিয়ে), যাইতাছি (যাচ্ছি), করমু (করব)— এগুলো ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার শব্দ। এখন আর আদতে এগুলোর ব্যবহার নেই বললেই চলে। নাটক কিংবা সিনেমায় বিনোদনের খোরাক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কুট্টি ভাষা। এর ফলে একরকম বিকৃতিই হচ্ছে এ উপভাষার।
অন্যদিকে ‘চাদনীঘাট’ থেকে ‘চান্নিঘাট’, ‘রায় সাহেব বাজার’ থেকে ‘রাসাবাজার’, ‘শেখ সাহেব বাজার’ থেকে ‘সিক্সাবাজার’ বা মুন্ডা ভাষার শব্দ ‘বইনটি’ (বটি) থেকে সোব্বাসী ‘বায়ঠি’, ফারসি ‘তখ্ত’ সোব্বাসীতে ‘তাক্তা’ হয়ে গেছে, সেভাবেই সুখবাস থেকে হয়েছে সোব্বাস।
ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার বদলে তরুণ প্রজন্ম কেন প্রমিত ভাষার দিকে ঝুঁকছে জানতে চাইলে ঢাকাইয়া সংস্কৃতি কর্মী ও বাচিক শিল্পী আরিফা আলম সোনিয়া বলেন, ‘ঢাকাইয়া ভাষা দুই ধরনের। একটি. সোব্বাসী আর দ্বিতীয়টি. কুট্টি। দুটোই ঢাকার ভাষা। ভাষা দুটোই এখন বিলুপ্তির পথে। আগে পরিবারগুলোতে দুই ধরনের ভাষারই প্রচলন ছিল। এখনো চর্চা অব্যাহত রাখা উচিত। ভাষা আমাদের শিকড়। নিজেদের ভাষার শিকড়কে আঁকড়ে ধরতে না পারলে ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণই হুমকির মুখে পরবে। ভাষা মানেই আমাদের মায়ের ভাষা, মাকে ভালোবাসি মায়ের মুখের বুলিও ভালোবাসি।’
এ বিষয়ে পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা, মিল্লাত উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কলামিস্ট আরাফাতুর রহমান শাওনের সঙ্গে কথা হয়। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আধুনিকতার ছোঁয়ায় তরুণ প্রজন্ম ঢাকাইয়া ভাষা চর্চায় অনীহা দেখাচ্ছে। এছাড়া এলাকায় স্থানীয় মানুষ কমে যাচ্ছে, তাঁরা অনেকেই পুরান ঢাকা থেকে বেরিয়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছে। ফলে ভাষার যে সম্প্রসারণ সেটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভাষা হলো যোগাযোগের মাধ্যম, কেউ কথা বললেতো সেটির প্রত্যুত্তর পেতে হবে। তা যদি না হয়, তাহলেতো ভাষার ব্যবহার কমবেই।’
নাটক-সিনেমায় ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে এই কলামিস্ট বলেন, ‘ভাষাটিকে বর্তমানে হাস্যরস হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। এটির নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এটি তরুণ প্রজন্মের মাঝে ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা চর্চায় অনীহা তৈরি করছে। অন্যদিকে শিক্ষার প্রসারে প্রমিত ভাষার চর্চা বাড়ছে। সামাজিকভাবে ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার চেয়ে প্রমিত উচ্চারণে কথা বলতে পারলে সেটিকে বেশি স্মার্টনেস হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এখন আর তেমন ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা শোনাই যায় না। আমার দূর ধারণা, অচিরেই ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা হারিয়ে যাবে।’
ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার শব্দ ভান্ডার আমাদের মূল্যবান সম্পদ। এর রক্ষণাবেক্ষণ হওয়া দরকার। তবে সবচেয়ে জরুরি চর্চা অব্যাহত রাখা বলে মত দেন তরুণ এই শিক্ষক।
উর্দুর সঙ্গে এক ধরনের সংমিশ্রণ থাকায় ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারে অনীহা চলে আসছে কিনা জানতে চাইলে পুরান ঢাকার স্থানীয় একাধিক মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটি (সোব্বাসী) শুনতে অনেকটা উর্দুর মতো শোনালেও এটি উর্দু নয়। বরং সোব্বাসী স্বতন্ত্র একটি উপভাষা। বর্তমানে এ উপভাষার ব্যবহার একরকম নেই বললেই চলে। তবে পরিবার কিংবা বন্ধুমহলে সীমিত পরিসরে এখনো এ উপভাষার প্রচলন আছে। যেভাবে এ উপভাষার প্রচলন কমে আসছে এতে করে কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলেই আশঙ্কা তাঁদের।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, বাংলার সুবাদার ইসলাম খাঁ চিশতী ১৬১০ সালে যখন ঢাকায় পদার্পণ করেন, তখন তাঁর সঙ্গে অসংখ্য উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ভারতীয়, আফগান, ইরান-আরবি তথা বহিরাগত মুসলমান ও হিন্দু ঢাকায় এসেছিল এবং এই আগমন পরবর্তী আরও প্রায় ২৫০ বছর ধরে চলমান ছিল। এই ব্যাপক জনগোষ্ঠী বর্তমান পুরোনো ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বসতি স্থাপন করেছিল এবং এদের বংশধররাই বর্তমানে পুরোনো ঢাকার আদি অধিবাসী।
১৬১০ সাল থেকেই ঢাকায় বসবাসকারী সব উচ্চপদস্থ-নিম্নপদস্থ পরিবারগুলোর মধ্যে আরবি, ইংরেজি, গুজরাটি, তুর্কি, পালি, পর্তুগিজ, ফরাসি, ফারসি, মুণ্ডা, সংস্কৃত, বাংলা, হিন্দুস্তানি (উর্দু, হিন্দি) ভাষার মিশ্রণে নতুন এক মিশ্র কথ্য ভাষার প্রচলন শুরু হয়; যা এখনো ঢাকার আদি অধিবাসীদের মুখের ভাষা। পুরোনো ঢাকার আদি অধিবাসীরা এই ভাষায় পরিবারে, সমাজে, হাট-বাজারে, সামাজিক অনুষ্ঠানে কথাবার্তা বলতেন। তবে ঠিক কতসংখ্যক মানুষ এই ভাষা ব্যবহার করতেন এর হিসাব কখনো করা হয়নি; হয়তো কেউ এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেননি। এই মিশ্রিত ঢাকাইয়া ভাষাকে বর্তমানে আদি ঢাকাইয়ারা ‘সোব্বাসী’ ভাষা বলেন এবং নিজেদের ‘সোব্বাস/সোব্বাসী’ বলে পরিচয় দেন।
সোব্বাসী উপভাষা রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহাবুদ্দিন সাবু। তিনি সাভার সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। ‘বাংলা-ঢাকাইয়া সোব্বাসী ডিকশনারি’ নামে একটি অভিধান প্রণয়ন করেছেন। এটিই সোব্বাসী ভাষার একমাত্র অভিধান বলে দাবি করা হয়।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘উর্দু এবং সোব্বাসী সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাষা। আমরা যারা সোব্বাসী আছি, তাঁরা ইসলাম খাঁ চিশতীর সময়, ১৬-১৭ শতকের দিকে ঢাকায় এসেছি। অন্যদিকে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পাটনা, ঊড়িষ্যা, বিহার থেকে অসংখ্য মানুষ প্রবেশ করে। তাঁদের ভাষা ছিল উর্দু। ফলে অনেকেই উর্দু আর সোব্বাসীর পার্থক্য করতে পারে না। উর্দুর সঙ্গে সোব্বাসীকে মিলিয়ে ফেলে। তবে আমরা যারা সোব্বাসী আছি, আমরা ঠিকই পার্থক্যটা বুঝতে পারি।’
সোব্বাসী ভাষার ব্যবহার কমে আসার বিষয়ে শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘মানুষজন উর্দু আর সোব্বাসীকে এক মনে করায় ঢাকাইয়া পরিবারগুলো বিশেষ করে ১৯৭১ সালের পরে সোব্বাসী ব্যবহার থেকে অনেকটাই সরে আসে। তবে নিজ নিজ পরিবারে এখনো সোব্বাসী ভাষায় কথা বলার প্রচলন আছে।’
মুক্তিযুদ্ধে উর্দুভাষী বিহারি জনগোষ্ঠীর ভূমিকার কারণে একাত্তর পরবর্তী পরিস্থিতিতে সোব্বাসী ভাষাভাষিরা নিজেদের গুটিয়ে নেন। ভুল করে কেউ যাতে তাঁদের বিহারি হিসেবে চিহ্নিত না করেন— সে জন্য ঘরের বাইরে সোব্বাসী ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে শুরু করেন, সন্তানদেরও বাংলা বলতে উৎসাহিত করেন।
তবে এখনো ৬ থেকে ৭ লাখ মানুষ সোব্বাসীতে কথা বলেন বলে দাবি করেন মো. শাহাবুদ্দিন। তবে স্বীকৃতি না থাকায় ও মানুষেরা এটিকে উর্দু মনে করায় এ উপভাষা এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।
এদিকে ‘ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার অভিধান’ বই থেকে জানা যায়, ১৬০৮ সালে মতান্তরে ১৬১০ সালের জুলাই মাসের কোনো এক সময় দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের মনোনীত বাংলার সুবেদার ইসলাম খাঁ চিশতী ঢাকার বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী সবচেয়ে উঁচু ভূমি চাদনীঘাটে তাঁর নৌবহর নোঙর করেন। তিনি সুবা বাংলার রাজধানী হিসেবে শহর ঢাকার পত্তন করেন। তিনি এ অঞ্চলকে ‘জাহাঙ্গীরনগর’ নামকরণ করলেও পূর্বকালের ধারাবাহিকতায় এ জনপথের মানুষ ‘ঢাকা’ নামটিকে স্থায়ীভাবে ধারণ করেন। ঢাকার আশপাশ থেকে অসংখ্য মানুষ কাজের সন্ধানে এ অঞ্চলে আসেন।
বহু অঞ্চলের মানুষের সংমিশ্রণে ঢাকার প্রাচীন জনপদ ঘিরে নতুন একটি ভাষার উদ্ভব ঘটে। এই ভাষার নামই ‘কুট্টি’। আদি ঢাকার মানুষের কেউ কেউ এখনো কুট্টি ভাষায় কথা বলেন। বাংলা, উর্দু, হিন্দি, ফারসি ভাষার সংমিশ্রণে এই ভাষার উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে।
কুট্টি ভাষাকে অনেকে ঢাকার আদি ভাষা বলে মনে করেন। কিন্তু কুট্টি ভাষা ঢাকার আদি অধিবাসীদের ভাষা নয়। কুট্টি ভাষার সৃষ্টি হয়েছে ঢাকার বাইরে থেকে আসা একদল মানুষের নিজস্ব সৃজন কারুকাজের ধারাবাহিকতায়। মোশাররফ হোসেন ভূঞা তাঁর ‘ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার অভিধান’ বইয়ে এমনটিই লিখেছেন।
কুট্টি নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বইটিতে বলা হয়েছে, মোগল আমল মূলত কুট্টি সম্প্রদায় ও কুট্টি ভাষার উৎপত্তির কাল। ১৮ শতকের মধ্য ভাগ থেকে পূর্ববঙ্গে চাল একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য ছিল। চাল রপ্তানিকারকেরা ছিলেন মাড়োয়ারি ও মধ্য ভারতের মানুষ। তাঁরা পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান সংগ্রহ করতেন। সংগৃহীত ধান ঢেঁকিতে ভানতে বা কুটতে হতো। এসব ধান কুটতে ঢাকার আশপাশ এলাকা থেকে শ্রমিক আসত। শ্রমিক-ব্যবসায়ী ও দিল্লির সৈন্যদের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে একটি ভাষার উদ্ভব ঘটে। সেটিই কালের পরিক্রমায় ‘কুট্টি’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
সোব্বাসী ও কুট্টি ভাষার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। দুটিই ঢাকার নগর উপভাষা হলেও ভিন্নতা আছে। যেমন—১. বাংলা: বসতে দিলে ঘুমাতে চায়। সোব্বাসী: বায়েটনে দেনেসে শোনে মাঙতা। কুট্টি: বইবার দিলে হুইবার চায়। ২. বাংলা: কুকুরের পেটে ঘি হজম হয় না। সোব্বাসী: কোত্তাকা পেটমে ঘি হাজাম হোতানি। কুট্টি: কুত্তার প্যাটে গি অজম অহে না। ৩. বাংলা: কুঁজোর আবার চিত হয়ে ঘুমানোর শখ। সোব্বাসী: কুজাকা ফের চেত হোকে শোনেকা শাওখ। কুট্টি: গুজার বি আবার চিত অয়া হুইবার সক।
কুট্টি নাকি সোব্বাসী কোনটি বেশি পুরোনো— এ প্রশ্নে শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘সোব্বাসী বেশি পুরোনো। তবে দুটোকেই প্রাচীন বলা যায়। ১৭৭০-এর পর কুট্টি ভাষার আবির্ভাব। অন্যদিকে সোব্বাসীর আবির্ভাব ১৬১০-এর দিকে। সোব্বাসী পুরোনো হলেও স্বীকৃতিতে এগিয়ে কুট্টি। কেননা ঢাকাইয়া ভাষা বলতে এখন মানুষ কুট্টি ভাষাকেই বোঝে। নাটক-সিনেমাতেও কুট্টি ভাষার ব্যবহার রয়েছে। যেহেতু এটি ডকুমেন্টেড হয়ে যাচ্ছে ফলে কুট্টি ভাষা আরও কিছুদিন টিকে থাকবে। তবে সোব্বাসী বিলুপ্ত হতে সময় লাগবে না।’
নাটক-সিনেমাতে অবশ্য কুট্টি ভাষার ৭০ ভাগও ঠিকমতো ব্যবহার করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয় বলে মনে করেন শাহাবুদ্দিন।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্য কাওয়ালি সোব্বাসী ভাষার কি না জানতে চাইলে শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘কাওয়ালি উর্দু ভাষার। সেগুলো সোব্বাসী নয়। “ঢাকাইয়া উর্দু” নামে যেটাকে বলা হয়ে থাকে সেটি মূলত সোব্বাসী। সোব্বাসীকে ঢাকাইয়া উর্দু নামে চালানোর শুরুটা মূলত ১৯৭১ সালের পরে। গ্রাম থেকে যখন মানুষ ঢাকায় এল তখন তাঁরা সোব্বাসীকেই ঢাকাইয়া উর্দু নামে ডাকতে শুরু করে। সোব্বাসীকেই ঢাকাইয়া উর্দু নামে চালানো হয়।’
আজকাল নাটকে ‘ঢাকাইয়া ভাষার’ বেশ ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্য আঞ্চলিক ভাষার মতো এ ভাষাকেও হাস্যরস ও কৌতুকের অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এমন নানা কারণে ভাষা হিসেবে তথাকথিত ঢাকাইয়া ভাষা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা হারাতে বসেছে। ফলত নিজেদের ভাষার প্রতি অনীহা তৈরি হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
ঢাকার আদি ভাষা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, ঢাকাইয়া ভাষায় মূলত দুটি উপভাষা রয়েছে— ‘কুট্টি’ ও ‘সোব্বাসী’। একটা সময় পুরান ঢাকার পরিবারগুলোতে উভয় উপভাষারই প্রচলন ছিল। তবে তরুণ প্রজন্ম এখন ক্রমশ রাজধানীতে চলতি মিশ্র বাংলার দিকে ঝুঁকছে।
ঢাকাইয়া ভাষার ব্যবহার কমে আসার আরেকটি বড় কারণ— আদি ঢাকাইয়াদের অনেকেই এখন আর জন্মস্থানে থাকেন না। নানা কারণে তাঁরা বসত গড়েছেন অন্য কোথাও। আবার পুরান ঢাকাতেও আগমন ঘটেছে নানা অঞ্চলের মানুষের। তার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় ভাষায়। পরিবারগুলোও এখন সন্তানদের ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলতে নিরুৎসাহিত করে।
পোলা (ছেলে), মাইয়া (মেয়ে), পোলাপাইন (ছেলে-মেয়ে), হাছা (সত্যি), ক্যালা (কেন), কেমতে (কীভাবে), হুন (শোন), খাইয়া (খেয়ে), থন (থেকে), কল্লা (গলা), কদু (লাউ), মাগার (কিন্তু), আমি বি (আমিও), দেহি (দেখি), যাইয়া (গিয়ে), যাইতাছি (যাচ্ছি), করমু (করব)— এগুলো ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার শব্দ। এখন আর আদতে এগুলোর ব্যবহার নেই বললেই চলে। নাটক কিংবা সিনেমায় বিনোদনের খোরাক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কুট্টি ভাষা। এর ফলে একরকম বিকৃতিই হচ্ছে এ উপভাষার।
অন্যদিকে ‘চাদনীঘাট’ থেকে ‘চান্নিঘাট’, ‘রায় সাহেব বাজার’ থেকে ‘রাসাবাজার’, ‘শেখ সাহেব বাজার’ থেকে ‘সিক্সাবাজার’ বা মুন্ডা ভাষার শব্দ ‘বইনটি’ (বটি) থেকে সোব্বাসী ‘বায়ঠি’, ফারসি ‘তখ্ত’ সোব্বাসীতে ‘তাক্তা’ হয়ে গেছে, সেভাবেই সুখবাস থেকে হয়েছে সোব্বাস।
ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার বদলে তরুণ প্রজন্ম কেন প্রমিত ভাষার দিকে ঝুঁকছে জানতে চাইলে ঢাকাইয়া সংস্কৃতি কর্মী ও বাচিক শিল্পী আরিফা আলম সোনিয়া বলেন, ‘ঢাকাইয়া ভাষা দুই ধরনের। একটি. সোব্বাসী আর দ্বিতীয়টি. কুট্টি। দুটোই ঢাকার ভাষা। ভাষা দুটোই এখন বিলুপ্তির পথে। আগে পরিবারগুলোতে দুই ধরনের ভাষারই প্রচলন ছিল। এখনো চর্চা অব্যাহত রাখা উচিত। ভাষা আমাদের শিকড়। নিজেদের ভাষার শিকড়কে আঁকড়ে ধরতে না পারলে ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণই হুমকির মুখে পরবে। ভাষা মানেই আমাদের মায়ের ভাষা, মাকে ভালোবাসি মায়ের মুখের বুলিও ভালোবাসি।’
এ বিষয়ে পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা, মিল্লাত উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কলামিস্ট আরাফাতুর রহমান শাওনের সঙ্গে কথা হয়। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আধুনিকতার ছোঁয়ায় তরুণ প্রজন্ম ঢাকাইয়া ভাষা চর্চায় অনীহা দেখাচ্ছে। এছাড়া এলাকায় স্থানীয় মানুষ কমে যাচ্ছে, তাঁরা অনেকেই পুরান ঢাকা থেকে বেরিয়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছে। ফলে ভাষার যে সম্প্রসারণ সেটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভাষা হলো যোগাযোগের মাধ্যম, কেউ কথা বললেতো সেটির প্রত্যুত্তর পেতে হবে। তা যদি না হয়, তাহলেতো ভাষার ব্যবহার কমবেই।’
নাটক-সিনেমায় ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে এই কলামিস্ট বলেন, ‘ভাষাটিকে বর্তমানে হাস্যরস হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। এটির নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এটি তরুণ প্রজন্মের মাঝে ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা চর্চায় অনীহা তৈরি করছে। অন্যদিকে শিক্ষার প্রসারে প্রমিত ভাষার চর্চা বাড়ছে। সামাজিকভাবে ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার চেয়ে প্রমিত উচ্চারণে কথা বলতে পারলে সেটিকে বেশি স্মার্টনেস হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এখন আর তেমন ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা শোনাই যায় না। আমার দূর ধারণা, অচিরেই ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা হারিয়ে যাবে।’
ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার শব্দ ভান্ডার আমাদের মূল্যবান সম্পদ। এর রক্ষণাবেক্ষণ হওয়া দরকার। তবে সবচেয়ে জরুরি চর্চা অব্যাহত রাখা বলে মত দেন তরুণ এই শিক্ষক।
উর্দুর সঙ্গে এক ধরনের সংমিশ্রণ থাকায় ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারে অনীহা চলে আসছে কিনা জানতে চাইলে পুরান ঢাকার স্থানীয় একাধিক মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটি (সোব্বাসী) শুনতে অনেকটা উর্দুর মতো শোনালেও এটি উর্দু নয়। বরং সোব্বাসী স্বতন্ত্র একটি উপভাষা। বর্তমানে এ উপভাষার ব্যবহার একরকম নেই বললেই চলে। তবে পরিবার কিংবা বন্ধুমহলে সীমিত পরিসরে এখনো এ উপভাষার প্রচলন আছে। যেভাবে এ উপভাষার প্রচলন কমে আসছে এতে করে কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলেই আশঙ্কা তাঁদের।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, বাংলার সুবাদার ইসলাম খাঁ চিশতী ১৬১০ সালে যখন ঢাকায় পদার্পণ করেন, তখন তাঁর সঙ্গে অসংখ্য উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ভারতীয়, আফগান, ইরান-আরবি তথা বহিরাগত মুসলমান ও হিন্দু ঢাকায় এসেছিল এবং এই আগমন পরবর্তী আরও প্রায় ২৫০ বছর ধরে চলমান ছিল। এই ব্যাপক জনগোষ্ঠী বর্তমান পুরোনো ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বসতি স্থাপন করেছিল এবং এদের বংশধররাই বর্তমানে পুরোনো ঢাকার আদি অধিবাসী।
১৬১০ সাল থেকেই ঢাকায় বসবাসকারী সব উচ্চপদস্থ-নিম্নপদস্থ পরিবারগুলোর মধ্যে আরবি, ইংরেজি, গুজরাটি, তুর্কি, পালি, পর্তুগিজ, ফরাসি, ফারসি, মুণ্ডা, সংস্কৃত, বাংলা, হিন্দুস্তানি (উর্দু, হিন্দি) ভাষার মিশ্রণে নতুন এক মিশ্র কথ্য ভাষার প্রচলন শুরু হয়; যা এখনো ঢাকার আদি অধিবাসীদের মুখের ভাষা। পুরোনো ঢাকার আদি অধিবাসীরা এই ভাষায় পরিবারে, সমাজে, হাট-বাজারে, সামাজিক অনুষ্ঠানে কথাবার্তা বলতেন। তবে ঠিক কতসংখ্যক মানুষ এই ভাষা ব্যবহার করতেন এর হিসাব কখনো করা হয়নি; হয়তো কেউ এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেননি। এই মিশ্রিত ঢাকাইয়া ভাষাকে বর্তমানে আদি ঢাকাইয়ারা ‘সোব্বাসী’ ভাষা বলেন এবং নিজেদের ‘সোব্বাস/সোব্বাসী’ বলে পরিচয় দেন।
সোব্বাসী উপভাষা রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহাবুদ্দিন সাবু। তিনি সাভার সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। ‘বাংলা-ঢাকাইয়া সোব্বাসী ডিকশনারি’ নামে একটি অভিধান প্রণয়ন করেছেন। এটিই সোব্বাসী ভাষার একমাত্র অভিধান বলে দাবি করা হয়।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘উর্দু এবং সোব্বাসী সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাষা। আমরা যারা সোব্বাসী আছি, তাঁরা ইসলাম খাঁ চিশতীর সময়, ১৬-১৭ শতকের দিকে ঢাকায় এসেছি। অন্যদিকে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পাটনা, ঊড়িষ্যা, বিহার থেকে অসংখ্য মানুষ প্রবেশ করে। তাঁদের ভাষা ছিল উর্দু। ফলে অনেকেই উর্দু আর সোব্বাসীর পার্থক্য করতে পারে না। উর্দুর সঙ্গে সোব্বাসীকে মিলিয়ে ফেলে। তবে আমরা যারা সোব্বাসী আছি, আমরা ঠিকই পার্থক্যটা বুঝতে পারি।’
সোব্বাসী ভাষার ব্যবহার কমে আসার বিষয়ে শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘মানুষজন উর্দু আর সোব্বাসীকে এক মনে করায় ঢাকাইয়া পরিবারগুলো বিশেষ করে ১৯৭১ সালের পরে সোব্বাসী ব্যবহার থেকে অনেকটাই সরে আসে। তবে নিজ নিজ পরিবারে এখনো সোব্বাসী ভাষায় কথা বলার প্রচলন আছে।’
মুক্তিযুদ্ধে উর্দুভাষী বিহারি জনগোষ্ঠীর ভূমিকার কারণে একাত্তর পরবর্তী পরিস্থিতিতে সোব্বাসী ভাষাভাষিরা নিজেদের গুটিয়ে নেন। ভুল করে কেউ যাতে তাঁদের বিহারি হিসেবে চিহ্নিত না করেন— সে জন্য ঘরের বাইরে সোব্বাসী ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে শুরু করেন, সন্তানদেরও বাংলা বলতে উৎসাহিত করেন।
তবে এখনো ৬ থেকে ৭ লাখ মানুষ সোব্বাসীতে কথা বলেন বলে দাবি করেন মো. শাহাবুদ্দিন। তবে স্বীকৃতি না থাকায় ও মানুষেরা এটিকে উর্দু মনে করায় এ উপভাষা এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।
এদিকে ‘ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার অভিধান’ বই থেকে জানা যায়, ১৬০৮ সালে মতান্তরে ১৬১০ সালের জুলাই মাসের কোনো এক সময় দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের মনোনীত বাংলার সুবেদার ইসলাম খাঁ চিশতী ঢাকার বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী সবচেয়ে উঁচু ভূমি চাদনীঘাটে তাঁর নৌবহর নোঙর করেন। তিনি সুবা বাংলার রাজধানী হিসেবে শহর ঢাকার পত্তন করেন। তিনি এ অঞ্চলকে ‘জাহাঙ্গীরনগর’ নামকরণ করলেও পূর্বকালের ধারাবাহিকতায় এ জনপথের মানুষ ‘ঢাকা’ নামটিকে স্থায়ীভাবে ধারণ করেন। ঢাকার আশপাশ থেকে অসংখ্য মানুষ কাজের সন্ধানে এ অঞ্চলে আসেন।
বহু অঞ্চলের মানুষের সংমিশ্রণে ঢাকার প্রাচীন জনপদ ঘিরে নতুন একটি ভাষার উদ্ভব ঘটে। এই ভাষার নামই ‘কুট্টি’। আদি ঢাকার মানুষের কেউ কেউ এখনো কুট্টি ভাষায় কথা বলেন। বাংলা, উর্দু, হিন্দি, ফারসি ভাষার সংমিশ্রণে এই ভাষার উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে।
কুট্টি ভাষাকে অনেকে ঢাকার আদি ভাষা বলে মনে করেন। কিন্তু কুট্টি ভাষা ঢাকার আদি অধিবাসীদের ভাষা নয়। কুট্টি ভাষার সৃষ্টি হয়েছে ঢাকার বাইরে থেকে আসা একদল মানুষের নিজস্ব সৃজন কারুকাজের ধারাবাহিকতায়। মোশাররফ হোসেন ভূঞা তাঁর ‘ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার অভিধান’ বইয়ে এমনটিই লিখেছেন।
কুট্টি নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বইটিতে বলা হয়েছে, মোগল আমল মূলত কুট্টি সম্প্রদায় ও কুট্টি ভাষার উৎপত্তির কাল। ১৮ শতকের মধ্য ভাগ থেকে পূর্ববঙ্গে চাল একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য ছিল। চাল রপ্তানিকারকেরা ছিলেন মাড়োয়ারি ও মধ্য ভারতের মানুষ। তাঁরা পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান সংগ্রহ করতেন। সংগৃহীত ধান ঢেঁকিতে ভানতে বা কুটতে হতো। এসব ধান কুটতে ঢাকার আশপাশ এলাকা থেকে শ্রমিক আসত। শ্রমিক-ব্যবসায়ী ও দিল্লির সৈন্যদের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে একটি ভাষার উদ্ভব ঘটে। সেটিই কালের পরিক্রমায় ‘কুট্টি’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
সোব্বাসী ও কুট্টি ভাষার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। দুটিই ঢাকার নগর উপভাষা হলেও ভিন্নতা আছে। যেমন—১. বাংলা: বসতে দিলে ঘুমাতে চায়। সোব্বাসী: বায়েটনে দেনেসে শোনে মাঙতা। কুট্টি: বইবার দিলে হুইবার চায়। ২. বাংলা: কুকুরের পেটে ঘি হজম হয় না। সোব্বাসী: কোত্তাকা পেটমে ঘি হাজাম হোতানি। কুট্টি: কুত্তার প্যাটে গি অজম অহে না। ৩. বাংলা: কুঁজোর আবার চিত হয়ে ঘুমানোর শখ। সোব্বাসী: কুজাকা ফের চেত হোকে শোনেকা শাওখ। কুট্টি: গুজার বি আবার চিত অয়া হুইবার সক।
কুট্টি নাকি সোব্বাসী কোনটি বেশি পুরোনো— এ প্রশ্নে শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘সোব্বাসী বেশি পুরোনো। তবে দুটোকেই প্রাচীন বলা যায়। ১৭৭০-এর পর কুট্টি ভাষার আবির্ভাব। অন্যদিকে সোব্বাসীর আবির্ভাব ১৬১০-এর দিকে। সোব্বাসী পুরোনো হলেও স্বীকৃতিতে এগিয়ে কুট্টি। কেননা ঢাকাইয়া ভাষা বলতে এখন মানুষ কুট্টি ভাষাকেই বোঝে। নাটক-সিনেমাতেও কুট্টি ভাষার ব্যবহার রয়েছে। যেহেতু এটি ডকুমেন্টেড হয়ে যাচ্ছে ফলে কুট্টি ভাষা আরও কিছুদিন টিকে থাকবে। তবে সোব্বাসী বিলুপ্ত হতে সময় লাগবে না।’
নাটক-সিনেমাতে অবশ্য কুট্টি ভাষার ৭০ ভাগও ঠিকমতো ব্যবহার করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয় বলে মনে করেন শাহাবুদ্দিন।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্য কাওয়ালি সোব্বাসী ভাষার কি না জানতে চাইলে শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘কাওয়ালি উর্দু ভাষার। সেগুলো সোব্বাসী নয়। “ঢাকাইয়া উর্দু” নামে যেটাকে বলা হয়ে থাকে সেটি মূলত সোব্বাসী। সোব্বাসীকে ঢাকাইয়া উর্দু নামে চালানোর শুরুটা মূলত ১৯৭১ সালের পরে। গ্রাম থেকে যখন মানুষ ঢাকায় এল তখন তাঁরা সোব্বাসীকেই ঢাকাইয়া উর্দু নামে ডাকতে শুরু করে। সোব্বাসীকেই ঢাকাইয়া উর্দু নামে চালানো হয়।’
আমিনুল ইসলাম নাবিল
আজকাল নাটকে ‘ঢাকাইয়া ভাষার’ বেশ ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্য আঞ্চলিক ভাষার মতো এ ভাষাকেও হাস্যরস ও কৌতুকের অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এমন নানা কারণে ভাষা হিসেবে তথাকথিত ঢাকাইয়া ভাষা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা হারাতে বসেছে। ফলত নিজেদের ভাষার প্রতি অনীহা তৈরি হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
ঢাকার আদি ভাষা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, ঢাকাইয়া ভাষায় মূলত দুটি উপভাষা রয়েছে— ‘কুট্টি’ ও ‘সোব্বাসী’। একটা সময় পুরান ঢাকার পরিবারগুলোতে উভয় উপভাষারই প্রচলন ছিল। তবে তরুণ প্রজন্ম এখন ক্রমশ রাজধানীতে চলতি মিশ্র বাংলার দিকে ঝুঁকছে।
ঢাকাইয়া ভাষার ব্যবহার কমে আসার আরেকটি বড় কারণ— আদি ঢাকাইয়াদের অনেকেই এখন আর জন্মস্থানে থাকেন না। নানা কারণে তাঁরা বসত গড়েছেন অন্য কোথাও। আবার পুরান ঢাকাতেও আগমন ঘটেছে নানা অঞ্চলের মানুষের। তার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় ভাষায়। পরিবারগুলোও এখন সন্তানদের ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলতে নিরুৎসাহিত করে।
পোলা (ছেলে), মাইয়া (মেয়ে), পোলাপাইন (ছেলে-মেয়ে), হাছা (সত্যি), ক্যালা (কেন), কেমতে (কীভাবে), হুন (শোন), খাইয়া (খেয়ে), থন (থেকে), কল্লা (গলা), কদু (লাউ), মাগার (কিন্তু), আমি বি (আমিও), দেহি (দেখি), যাইয়া (গিয়ে), যাইতাছি (যাচ্ছি), করমু (করব)— এগুলো ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার শব্দ। এখন আর আদতে এগুলোর ব্যবহার নেই বললেই চলে। নাটক কিংবা সিনেমায় বিনোদনের খোরাক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কুট্টি ভাষা। এর ফলে একরকম বিকৃতিই হচ্ছে এ উপভাষার।
অন্যদিকে ‘চাদনীঘাট’ থেকে ‘চান্নিঘাট’, ‘রায় সাহেব বাজার’ থেকে ‘রাসাবাজার’, ‘শেখ সাহেব বাজার’ থেকে ‘সিক্সাবাজার’ বা মুন্ডা ভাষার শব্দ ‘বইনটি’ (বটি) থেকে সোব্বাসী ‘বায়ঠি’, ফারসি ‘তখ্ত’ সোব্বাসীতে ‘তাক্তা’ হয়ে গেছে, সেভাবেই সুখবাস থেকে হয়েছে সোব্বাস।
ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার বদলে তরুণ প্রজন্ম কেন প্রমিত ভাষার দিকে ঝুঁকছে জানতে চাইলে ঢাকাইয়া সংস্কৃতি কর্মী ও বাচিক শিল্পী আরিফা আলম সোনিয়া বলেন, ‘ঢাকাইয়া ভাষা দুই ধরনের। একটি. সোব্বাসী আর দ্বিতীয়টি. কুট্টি। দুটোই ঢাকার ভাষা। ভাষা দুটোই এখন বিলুপ্তির পথে। আগে পরিবারগুলোতে দুই ধরনের ভাষারই প্রচলন ছিল। এখনো চর্চা অব্যাহত রাখা উচিত। ভাষা আমাদের শিকড়। নিজেদের ভাষার শিকড়কে আঁকড়ে ধরতে না পারলে ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণই হুমকির মুখে পরবে। ভাষা মানেই আমাদের মায়ের ভাষা, মাকে ভালোবাসি মায়ের মুখের বুলিও ভালোবাসি।’
এ বিষয়ে পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা, মিল্লাত উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কলামিস্ট আরাফাতুর রহমান শাওনের সঙ্গে কথা হয়। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আধুনিকতার ছোঁয়ায় তরুণ প্রজন্ম ঢাকাইয়া ভাষা চর্চায় অনীহা দেখাচ্ছে। এছাড়া এলাকায় স্থানীয় মানুষ কমে যাচ্ছে, তাঁরা অনেকেই পুরান ঢাকা থেকে বেরিয়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছে। ফলে ভাষার যে সম্প্রসারণ সেটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভাষা হলো যোগাযোগের মাধ্যম, কেউ কথা বললেতো সেটির প্রত্যুত্তর পেতে হবে। তা যদি না হয়, তাহলেতো ভাষার ব্যবহার কমবেই।’
নাটক-সিনেমায় ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে এই কলামিস্ট বলেন, ‘ভাষাটিকে বর্তমানে হাস্যরস হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। এটির নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এটি তরুণ প্রজন্মের মাঝে ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা চর্চায় অনীহা তৈরি করছে। অন্যদিকে শিক্ষার প্রসারে প্রমিত ভাষার চর্চা বাড়ছে। সামাজিকভাবে ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার চেয়ে প্রমিত উচ্চারণে কথা বলতে পারলে সেটিকে বেশি স্মার্টনেস হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এখন আর তেমন ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা শোনাই যায় না। আমার দূর ধারণা, অচিরেই ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা হারিয়ে যাবে।’
ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার শব্দ ভান্ডার আমাদের মূল্যবান সম্পদ। এর রক্ষণাবেক্ষণ হওয়া দরকার। তবে সবচেয়ে জরুরি চর্চা অব্যাহত রাখা বলে মত দেন তরুণ এই শিক্ষক।
উর্দুর সঙ্গে এক ধরনের সংমিশ্রণ থাকায় ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারে অনীহা চলে আসছে কিনা জানতে চাইলে পুরান ঢাকার স্থানীয় একাধিক মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটি (সোব্বাসী) শুনতে অনেকটা উর্দুর মতো শোনালেও এটি উর্দু নয়। বরং সোব্বাসী স্বতন্ত্র একটি উপভাষা। বর্তমানে এ উপভাষার ব্যবহার একরকম নেই বললেই চলে। তবে পরিবার কিংবা বন্ধুমহলে সীমিত পরিসরে এখনো এ উপভাষার প্রচলন আছে। যেভাবে এ উপভাষার প্রচলন কমে আসছে এতে করে কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলেই আশঙ্কা তাঁদের।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, বাংলার সুবাদার ইসলাম খাঁ চিশতী ১৬১০ সালে যখন ঢাকায় পদার্পণ করেন, তখন তাঁর সঙ্গে অসংখ্য উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ভারতীয়, আফগান, ইরান-আরবি তথা বহিরাগত মুসলমান ও হিন্দু ঢাকায় এসেছিল এবং এই আগমন পরবর্তী আরও প্রায় ২৫০ বছর ধরে চলমান ছিল। এই ব্যাপক জনগোষ্ঠী বর্তমান পুরোনো ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বসতি স্থাপন করেছিল এবং এদের বংশধররাই বর্তমানে পুরোনো ঢাকার আদি অধিবাসী।
১৬১০ সাল থেকেই ঢাকায় বসবাসকারী সব উচ্চপদস্থ-নিম্নপদস্থ পরিবারগুলোর মধ্যে আরবি, ইংরেজি, গুজরাটি, তুর্কি, পালি, পর্তুগিজ, ফরাসি, ফারসি, মুণ্ডা, সংস্কৃত, বাংলা, হিন্দুস্তানি (উর্দু, হিন্দি) ভাষার মিশ্রণে নতুন এক মিশ্র কথ্য ভাষার প্রচলন শুরু হয়; যা এখনো ঢাকার আদি অধিবাসীদের মুখের ভাষা। পুরোনো ঢাকার আদি অধিবাসীরা এই ভাষায় পরিবারে, সমাজে, হাট-বাজারে, সামাজিক অনুষ্ঠানে কথাবার্তা বলতেন। তবে ঠিক কতসংখ্যক মানুষ এই ভাষা ব্যবহার করতেন এর হিসাব কখনো করা হয়নি; হয়তো কেউ এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেননি। এই মিশ্রিত ঢাকাইয়া ভাষাকে বর্তমানে আদি ঢাকাইয়ারা ‘সোব্বাসী’ ভাষা বলেন এবং নিজেদের ‘সোব্বাস/সোব্বাসী’ বলে পরিচয় দেন।
সোব্বাসী উপভাষা রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহাবুদ্দিন সাবু। তিনি সাভার সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। ‘বাংলা-ঢাকাইয়া সোব্বাসী ডিকশনারি’ নামে একটি অভিধান প্রণয়ন করেছেন। এটিই সোব্বাসী ভাষার একমাত্র অভিধান বলে দাবি করা হয়।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘উর্দু এবং সোব্বাসী সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাষা। আমরা যারা সোব্বাসী আছি, তাঁরা ইসলাম খাঁ চিশতীর সময়, ১৬-১৭ শতকের দিকে ঢাকায় এসেছি। অন্যদিকে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পাটনা, ঊড়িষ্যা, বিহার থেকে অসংখ্য মানুষ প্রবেশ করে। তাঁদের ভাষা ছিল উর্দু। ফলে অনেকেই উর্দু আর সোব্বাসীর পার্থক্য করতে পারে না। উর্দুর সঙ্গে সোব্বাসীকে মিলিয়ে ফেলে। তবে আমরা যারা সোব্বাসী আছি, আমরা ঠিকই পার্থক্যটা বুঝতে পারি।’
সোব্বাসী ভাষার ব্যবহার কমে আসার বিষয়ে শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘মানুষজন উর্দু আর সোব্বাসীকে এক মনে করায় ঢাকাইয়া পরিবারগুলো বিশেষ করে ১৯৭১ সালের পরে সোব্বাসী ব্যবহার থেকে অনেকটাই সরে আসে। তবে নিজ নিজ পরিবারে এখনো সোব্বাসী ভাষায় কথা বলার প্রচলন আছে।’
মুক্তিযুদ্ধে উর্দুভাষী বিহারি জনগোষ্ঠীর ভূমিকার কারণে একাত্তর পরবর্তী পরিস্থিতিতে সোব্বাসী ভাষাভাষিরা নিজেদের গুটিয়ে নেন। ভুল করে কেউ যাতে তাঁদের বিহারি হিসেবে চিহ্নিত না করেন— সে জন্য ঘরের বাইরে সোব্বাসী ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে শুরু করেন, সন্তানদেরও বাংলা বলতে উৎসাহিত করেন।
তবে এখনো ৬ থেকে ৭ লাখ মানুষ সোব্বাসীতে কথা বলেন বলে দাবি করেন মো. শাহাবুদ্দিন। তবে স্বীকৃতি না থাকায় ও মানুষেরা এটিকে উর্দু মনে করায় এ উপভাষা এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।
এদিকে ‘ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার অভিধান’ বই থেকে জানা যায়, ১৬০৮ সালে মতান্তরে ১৬১০ সালের জুলাই মাসের কোনো এক সময় দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের মনোনীত বাংলার সুবেদার ইসলাম খাঁ চিশতী ঢাকার বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী সবচেয়ে উঁচু ভূমি চাদনীঘাটে তাঁর নৌবহর নোঙর করেন। তিনি সুবা বাংলার রাজধানী হিসেবে শহর ঢাকার পত্তন করেন। তিনি এ অঞ্চলকে ‘জাহাঙ্গীরনগর’ নামকরণ করলেও পূর্বকালের ধারাবাহিকতায় এ জনপথের মানুষ ‘ঢাকা’ নামটিকে স্থায়ীভাবে ধারণ করেন। ঢাকার আশপাশ থেকে অসংখ্য মানুষ কাজের সন্ধানে এ অঞ্চলে আসেন।
বহু অঞ্চলের মানুষের সংমিশ্রণে ঢাকার প্রাচীন জনপদ ঘিরে নতুন একটি ভাষার উদ্ভব ঘটে। এই ভাষার নামই ‘কুট্টি’। আদি ঢাকার মানুষের কেউ কেউ এখনো কুট্টি ভাষায় কথা বলেন। বাংলা, উর্দু, হিন্দি, ফারসি ভাষার সংমিশ্রণে এই ভাষার উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে।
কুট্টি ভাষাকে অনেকে ঢাকার আদি ভাষা বলে মনে করেন। কিন্তু কুট্টি ভাষা ঢাকার আদি অধিবাসীদের ভাষা নয়। কুট্টি ভাষার সৃষ্টি হয়েছে ঢাকার বাইরে থেকে আসা একদল মানুষের নিজস্ব সৃজন কারুকাজের ধারাবাহিকতায়। মোশাররফ হোসেন ভূঞা তাঁর ‘ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার অভিধান’ বইয়ে এমনটিই লিখেছেন।
কুট্টি নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বইটিতে বলা হয়েছে, মোগল আমল মূলত কুট্টি সম্প্রদায় ও কুট্টি ভাষার উৎপত্তির কাল। ১৮ শতকের মধ্য ভাগ থেকে পূর্ববঙ্গে চাল একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য ছিল। চাল রপ্তানিকারকেরা ছিলেন মাড়োয়ারি ও মধ্য ভারতের মানুষ। তাঁরা পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান সংগ্রহ করতেন। সংগৃহীত ধান ঢেঁকিতে ভানতে বা কুটতে হতো। এসব ধান কুটতে ঢাকার আশপাশ এলাকা থেকে শ্রমিক আসত। শ্রমিক-ব্যবসায়ী ও দিল্লির সৈন্যদের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে একটি ভাষার উদ্ভব ঘটে। সেটিই কালের পরিক্রমায় ‘কুট্টি’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
সোব্বাসী ও কুট্টি ভাষার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। দুটিই ঢাকার নগর উপভাষা হলেও ভিন্নতা আছে। যেমন—১. বাংলা: বসতে দিলে ঘুমাতে চায়। সোব্বাসী: বায়েটনে দেনেসে শোনে মাঙতা। কুট্টি: বইবার দিলে হুইবার চায়। ২. বাংলা: কুকুরের পেটে ঘি হজম হয় না। সোব্বাসী: কোত্তাকা পেটমে ঘি হাজাম হোতানি। কুট্টি: কুত্তার প্যাটে গি অজম অহে না। ৩. বাংলা: কুঁজোর আবার চিত হয়ে ঘুমানোর শখ। সোব্বাসী: কুজাকা ফের চেত হোকে শোনেকা শাওখ। কুট্টি: গুজার বি আবার চিত অয়া হুইবার সক।
কুট্টি নাকি সোব্বাসী কোনটি বেশি পুরোনো— এ প্রশ্নে শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘সোব্বাসী বেশি পুরোনো। তবে দুটোকেই প্রাচীন বলা যায়। ১৭৭০-এর পর কুট্টি ভাষার আবির্ভাব। অন্যদিকে সোব্বাসীর আবির্ভাব ১৬১০-এর দিকে। সোব্বাসী পুরোনো হলেও স্বীকৃতিতে এগিয়ে কুট্টি। কেননা ঢাকাইয়া ভাষা বলতে এখন মানুষ কুট্টি ভাষাকেই বোঝে। নাটক-সিনেমাতেও কুট্টি ভাষার ব্যবহার রয়েছে। যেহেতু এটি ডকুমেন্টেড হয়ে যাচ্ছে ফলে কুট্টি ভাষা আরও কিছুদিন টিকে থাকবে। তবে সোব্বাসী বিলুপ্ত হতে সময় লাগবে না।’
নাটক-সিনেমাতে অবশ্য কুট্টি ভাষার ৭০ ভাগও ঠিকমতো ব্যবহার করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয় বলে মনে করেন শাহাবুদ্দিন।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্য কাওয়ালি সোব্বাসী ভাষার কি না জানতে চাইলে শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘কাওয়ালি উর্দু ভাষার। সেগুলো সোব্বাসী নয়। “ঢাকাইয়া উর্দু” নামে যেটাকে বলা হয়ে থাকে সেটি মূলত সোব্বাসী। সোব্বাসীকে ঢাকাইয়া উর্দু নামে চালানোর শুরুটা মূলত ১৯৭১ সালের পরে। গ্রাম থেকে যখন মানুষ ঢাকায় এল তখন তাঁরা সোব্বাসীকেই ঢাকাইয়া উর্দু নামে ডাকতে শুরু করে। সোব্বাসীকেই ঢাকাইয়া উর্দু নামে চালানো হয়।’
আজকাল নাটকে ‘ঢাকাইয়া ভাষার’ বেশ ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্য আঞ্চলিক ভাষার মতো এ ভাষাকেও হাস্যরস ও কৌতুকের অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এমন নানা কারণে ভাষা হিসেবে তথাকথিত ঢাকাইয়া ভাষা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা হারাতে বসেছে। ফলত নিজেদের ভাষার প্রতি অনীহা তৈরি হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
ঢাকার আদি ভাষা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, ঢাকাইয়া ভাষায় মূলত দুটি উপভাষা রয়েছে— ‘কুট্টি’ ও ‘সোব্বাসী’। একটা সময় পুরান ঢাকার পরিবারগুলোতে উভয় উপভাষারই প্রচলন ছিল। তবে তরুণ প্রজন্ম এখন ক্রমশ রাজধানীতে চলতি মিশ্র বাংলার দিকে ঝুঁকছে।
ঢাকাইয়া ভাষার ব্যবহার কমে আসার আরেকটি বড় কারণ— আদি ঢাকাইয়াদের অনেকেই এখন আর জন্মস্থানে থাকেন না। নানা কারণে তাঁরা বসত গড়েছেন অন্য কোথাও। আবার পুরান ঢাকাতেও আগমন ঘটেছে নানা অঞ্চলের মানুষের। তার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় ভাষায়। পরিবারগুলোও এখন সন্তানদের ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলতে নিরুৎসাহিত করে।
পোলা (ছেলে), মাইয়া (মেয়ে), পোলাপাইন (ছেলে-মেয়ে), হাছা (সত্যি), ক্যালা (কেন), কেমতে (কীভাবে), হুন (শোন), খাইয়া (খেয়ে), থন (থেকে), কল্লা (গলা), কদু (লাউ), মাগার (কিন্তু), আমি বি (আমিও), দেহি (দেখি), যাইয়া (গিয়ে), যাইতাছি (যাচ্ছি), করমু (করব)— এগুলো ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার শব্দ। এখন আর আদতে এগুলোর ব্যবহার নেই বললেই চলে। নাটক কিংবা সিনেমায় বিনোদনের খোরাক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কুট্টি ভাষা। এর ফলে একরকম বিকৃতিই হচ্ছে এ উপভাষার।
অন্যদিকে ‘চাদনীঘাট’ থেকে ‘চান্নিঘাট’, ‘রায় সাহেব বাজার’ থেকে ‘রাসাবাজার’, ‘শেখ সাহেব বাজার’ থেকে ‘সিক্সাবাজার’ বা মুন্ডা ভাষার শব্দ ‘বইনটি’ (বটি) থেকে সোব্বাসী ‘বায়ঠি’, ফারসি ‘তখ্ত’ সোব্বাসীতে ‘তাক্তা’ হয়ে গেছে, সেভাবেই সুখবাস থেকে হয়েছে সোব্বাস।
ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার বদলে তরুণ প্রজন্ম কেন প্রমিত ভাষার দিকে ঝুঁকছে জানতে চাইলে ঢাকাইয়া সংস্কৃতি কর্মী ও বাচিক শিল্পী আরিফা আলম সোনিয়া বলেন, ‘ঢাকাইয়া ভাষা দুই ধরনের। একটি. সোব্বাসী আর দ্বিতীয়টি. কুট্টি। দুটোই ঢাকার ভাষা। ভাষা দুটোই এখন বিলুপ্তির পথে। আগে পরিবারগুলোতে দুই ধরনের ভাষারই প্রচলন ছিল। এখনো চর্চা অব্যাহত রাখা উচিত। ভাষা আমাদের শিকড়। নিজেদের ভাষার শিকড়কে আঁকড়ে ধরতে না পারলে ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণই হুমকির মুখে পরবে। ভাষা মানেই আমাদের মায়ের ভাষা, মাকে ভালোবাসি মায়ের মুখের বুলিও ভালোবাসি।’
এ বিষয়ে পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা, মিল্লাত উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কলামিস্ট আরাফাতুর রহমান শাওনের সঙ্গে কথা হয়। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আধুনিকতার ছোঁয়ায় তরুণ প্রজন্ম ঢাকাইয়া ভাষা চর্চায় অনীহা দেখাচ্ছে। এছাড়া এলাকায় স্থানীয় মানুষ কমে যাচ্ছে, তাঁরা অনেকেই পুরান ঢাকা থেকে বেরিয়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছে। ফলে ভাষার যে সম্প্রসারণ সেটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভাষা হলো যোগাযোগের মাধ্যম, কেউ কথা বললেতো সেটির প্রত্যুত্তর পেতে হবে। তা যদি না হয়, তাহলেতো ভাষার ব্যবহার কমবেই।’
নাটক-সিনেমায় ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে এই কলামিস্ট বলেন, ‘ভাষাটিকে বর্তমানে হাস্যরস হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। এটির নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এটি তরুণ প্রজন্মের মাঝে ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা চর্চায় অনীহা তৈরি করছে। অন্যদিকে শিক্ষার প্রসারে প্রমিত ভাষার চর্চা বাড়ছে। সামাজিকভাবে ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার চেয়ে প্রমিত উচ্চারণে কথা বলতে পারলে সেটিকে বেশি স্মার্টনেস হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এখন আর তেমন ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা শোনাই যায় না। আমার দূর ধারণা, অচিরেই ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা হারিয়ে যাবে।’
ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষার শব্দ ভান্ডার আমাদের মূল্যবান সম্পদ। এর রক্ষণাবেক্ষণ হওয়া দরকার। তবে সবচেয়ে জরুরি চর্চা অব্যাহত রাখা বলে মত দেন তরুণ এই শিক্ষক।
উর্দুর সঙ্গে এক ধরনের সংমিশ্রণ থাকায় ঢাকাইয়া আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারে অনীহা চলে আসছে কিনা জানতে চাইলে পুরান ঢাকার স্থানীয় একাধিক মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটি (সোব্বাসী) শুনতে অনেকটা উর্দুর মতো শোনালেও এটি উর্দু নয়। বরং সোব্বাসী স্বতন্ত্র একটি উপভাষা। বর্তমানে এ উপভাষার ব্যবহার একরকম নেই বললেই চলে। তবে পরিবার কিংবা বন্ধুমহলে সীমিত পরিসরে এখনো এ উপভাষার প্রচলন আছে। যেভাবে এ উপভাষার প্রচলন কমে আসছে এতে করে কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলেই আশঙ্কা তাঁদের।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, বাংলার সুবাদার ইসলাম খাঁ চিশতী ১৬১০ সালে যখন ঢাকায় পদার্পণ করেন, তখন তাঁর সঙ্গে অসংখ্য উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ভারতীয়, আফগান, ইরান-আরবি তথা বহিরাগত মুসলমান ও হিন্দু ঢাকায় এসেছিল এবং এই আগমন পরবর্তী আরও প্রায় ২৫০ বছর ধরে চলমান ছিল। এই ব্যাপক জনগোষ্ঠী বর্তমান পুরোনো ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বসতি স্থাপন করেছিল এবং এদের বংশধররাই বর্তমানে পুরোনো ঢাকার আদি অধিবাসী।
১৬১০ সাল থেকেই ঢাকায় বসবাসকারী সব উচ্চপদস্থ-নিম্নপদস্থ পরিবারগুলোর মধ্যে আরবি, ইংরেজি, গুজরাটি, তুর্কি, পালি, পর্তুগিজ, ফরাসি, ফারসি, মুণ্ডা, সংস্কৃত, বাংলা, হিন্দুস্তানি (উর্দু, হিন্দি) ভাষার মিশ্রণে নতুন এক মিশ্র কথ্য ভাষার প্রচলন শুরু হয়; যা এখনো ঢাকার আদি অধিবাসীদের মুখের ভাষা। পুরোনো ঢাকার আদি অধিবাসীরা এই ভাষায় পরিবারে, সমাজে, হাট-বাজারে, সামাজিক অনুষ্ঠানে কথাবার্তা বলতেন। তবে ঠিক কতসংখ্যক মানুষ এই ভাষা ব্যবহার করতেন এর হিসাব কখনো করা হয়নি; হয়তো কেউ এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেননি। এই মিশ্রিত ঢাকাইয়া ভাষাকে বর্তমানে আদি ঢাকাইয়ারা ‘সোব্বাসী’ ভাষা বলেন এবং নিজেদের ‘সোব্বাস/সোব্বাসী’ বলে পরিচয় দেন।
সোব্বাসী উপভাষা রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহাবুদ্দিন সাবু। তিনি সাভার সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। ‘বাংলা-ঢাকাইয়া সোব্বাসী ডিকশনারি’ নামে একটি অভিধান প্রণয়ন করেছেন। এটিই সোব্বাসী ভাষার একমাত্র অভিধান বলে দাবি করা হয়।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘উর্দু এবং সোব্বাসী সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাষা। আমরা যারা সোব্বাসী আছি, তাঁরা ইসলাম খাঁ চিশতীর সময়, ১৬-১৭ শতকের দিকে ঢাকায় এসেছি। অন্যদিকে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পাটনা, ঊড়িষ্যা, বিহার থেকে অসংখ্য মানুষ প্রবেশ করে। তাঁদের ভাষা ছিল উর্দু। ফলে অনেকেই উর্দু আর সোব্বাসীর পার্থক্য করতে পারে না। উর্দুর সঙ্গে সোব্বাসীকে মিলিয়ে ফেলে। তবে আমরা যারা সোব্বাসী আছি, আমরা ঠিকই পার্থক্যটা বুঝতে পারি।’
সোব্বাসী ভাষার ব্যবহার কমে আসার বিষয়ে শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘মানুষজন উর্দু আর সোব্বাসীকে এক মনে করায় ঢাকাইয়া পরিবারগুলো বিশেষ করে ১৯৭১ সালের পরে সোব্বাসী ব্যবহার থেকে অনেকটাই সরে আসে। তবে নিজ নিজ পরিবারে এখনো সোব্বাসী ভাষায় কথা বলার প্রচলন আছে।’
মুক্তিযুদ্ধে উর্দুভাষী বিহারি জনগোষ্ঠীর ভূমিকার কারণে একাত্তর পরবর্তী পরিস্থিতিতে সোব্বাসী ভাষাভাষিরা নিজেদের গুটিয়ে নেন। ভুল করে কেউ যাতে তাঁদের বিহারি হিসেবে চিহ্নিত না করেন— সে জন্য ঘরের বাইরে সোব্বাসী ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে শুরু করেন, সন্তানদেরও বাংলা বলতে উৎসাহিত করেন।
তবে এখনো ৬ থেকে ৭ লাখ মানুষ সোব্বাসীতে কথা বলেন বলে দাবি করেন মো. শাহাবুদ্দিন। তবে স্বীকৃতি না থাকায় ও মানুষেরা এটিকে উর্দু মনে করায় এ উপভাষা এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।
এদিকে ‘ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার অভিধান’ বই থেকে জানা যায়, ১৬০৮ সালে মতান্তরে ১৬১০ সালের জুলাই মাসের কোনো এক সময় দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের মনোনীত বাংলার সুবেদার ইসলাম খাঁ চিশতী ঢাকার বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী সবচেয়ে উঁচু ভূমি চাদনীঘাটে তাঁর নৌবহর নোঙর করেন। তিনি সুবা বাংলার রাজধানী হিসেবে শহর ঢাকার পত্তন করেন। তিনি এ অঞ্চলকে ‘জাহাঙ্গীরনগর’ নামকরণ করলেও পূর্বকালের ধারাবাহিকতায় এ জনপথের মানুষ ‘ঢাকা’ নামটিকে স্থায়ীভাবে ধারণ করেন। ঢাকার আশপাশ থেকে অসংখ্য মানুষ কাজের সন্ধানে এ অঞ্চলে আসেন।
বহু অঞ্চলের মানুষের সংমিশ্রণে ঢাকার প্রাচীন জনপদ ঘিরে নতুন একটি ভাষার উদ্ভব ঘটে। এই ভাষার নামই ‘কুট্টি’। আদি ঢাকার মানুষের কেউ কেউ এখনো কুট্টি ভাষায় কথা বলেন। বাংলা, উর্দু, হিন্দি, ফারসি ভাষার সংমিশ্রণে এই ভাষার উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে।
কুট্টি ভাষাকে অনেকে ঢাকার আদি ভাষা বলে মনে করেন। কিন্তু কুট্টি ভাষা ঢাকার আদি অধিবাসীদের ভাষা নয়। কুট্টি ভাষার সৃষ্টি হয়েছে ঢাকার বাইরে থেকে আসা একদল মানুষের নিজস্ব সৃজন কারুকাজের ধারাবাহিকতায়। মোশাররফ হোসেন ভূঞা তাঁর ‘ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার অভিধান’ বইয়ে এমনটিই লিখেছেন।
কুট্টি নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বইটিতে বলা হয়েছে, মোগল আমল মূলত কুট্টি সম্প্রদায় ও কুট্টি ভাষার উৎপত্তির কাল। ১৮ শতকের মধ্য ভাগ থেকে পূর্ববঙ্গে চাল একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য ছিল। চাল রপ্তানিকারকেরা ছিলেন মাড়োয়ারি ও মধ্য ভারতের মানুষ। তাঁরা পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান সংগ্রহ করতেন। সংগৃহীত ধান ঢেঁকিতে ভানতে বা কুটতে হতো। এসব ধান কুটতে ঢাকার আশপাশ এলাকা থেকে শ্রমিক আসত। শ্রমিক-ব্যবসায়ী ও দিল্লির সৈন্যদের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে একটি ভাষার উদ্ভব ঘটে। সেটিই কালের পরিক্রমায় ‘কুট্টি’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
সোব্বাসী ও কুট্টি ভাষার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। দুটিই ঢাকার নগর উপভাষা হলেও ভিন্নতা আছে। যেমন—১. বাংলা: বসতে দিলে ঘুমাতে চায়। সোব্বাসী: বায়েটনে দেনেসে শোনে মাঙতা। কুট্টি: বইবার দিলে হুইবার চায়। ২. বাংলা: কুকুরের পেটে ঘি হজম হয় না। সোব্বাসী: কোত্তাকা পেটমে ঘি হাজাম হোতানি। কুট্টি: কুত্তার প্যাটে গি অজম অহে না। ৩. বাংলা: কুঁজোর আবার চিত হয়ে ঘুমানোর শখ। সোব্বাসী: কুজাকা ফের চেত হোকে শোনেকা শাওখ। কুট্টি: গুজার বি আবার চিত অয়া হুইবার সক।
কুট্টি নাকি সোব্বাসী কোনটি বেশি পুরোনো— এ প্রশ্নে শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘সোব্বাসী বেশি পুরোনো। তবে দুটোকেই প্রাচীন বলা যায়। ১৭৭০-এর পর কুট্টি ভাষার আবির্ভাব। অন্যদিকে সোব্বাসীর আবির্ভাব ১৬১০-এর দিকে। সোব্বাসী পুরোনো হলেও স্বীকৃতিতে এগিয়ে কুট্টি। কেননা ঢাকাইয়া ভাষা বলতে এখন মানুষ কুট্টি ভাষাকেই বোঝে। নাটক-সিনেমাতেও কুট্টি ভাষার ব্যবহার রয়েছে। যেহেতু এটি ডকুমেন্টেড হয়ে যাচ্ছে ফলে কুট্টি ভাষা আরও কিছুদিন টিকে থাকবে। তবে সোব্বাসী বিলুপ্ত হতে সময় লাগবে না।’
নাটক-সিনেমাতে অবশ্য কুট্টি ভাষার ৭০ ভাগও ঠিকমতো ব্যবহার করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয় বলে মনে করেন শাহাবুদ্দিন।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্য কাওয়ালি সোব্বাসী ভাষার কি না জানতে চাইলে শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘কাওয়ালি উর্দু ভাষার। সেগুলো সোব্বাসী নয়। “ঢাকাইয়া উর্দু” নামে যেটাকে বলা হয়ে থাকে সেটি মূলত সোব্বাসী। সোব্বাসীকে ঢাকাইয়া উর্দু নামে চালানোর শুরুটা মূলত ১৯৭১ সালের পরে। গ্রাম থেকে যখন মানুষ ঢাকায় এল তখন তাঁরা সোব্বাসীকেই ঢাকাইয়া উর্দু নামে ডাকতে শুরু করে। সোব্বাসীকেই ঢাকাইয়া উর্দু নামে চালানো হয়।’
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ
দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:
দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:
ঢাকার আদি ভাষা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, ঢাকাইয়া ভাষায় মূলত দুটি উপভাষা রয়েছে— ‘কুট্টি’ ও ‘সোব্বাসী’। একটা সময় পুরান ঢাকার পরিবারগুলোতে উভয় উপভাষারই প্রচলন ছিল। তবে তরুণ প্রজন্ম এখন ক্রমশ রাজধানীতে চলতি মিশ্র বাংলার দিকে ঝুঁকছে।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর
সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:
সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:
ঢাকার আদি ভাষা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, ঢাকাইয়া ভাষায় মূলত দুটি উপভাষা রয়েছে— ‘কুট্টি’ ও ‘সোব্বাসী’। একটা সময় পুরান ঢাকার পরিবারগুলোতে উভয় উপভাষারই প্রচলন ছিল। তবে তরুণ প্রজন্ম এখন ক্রমশ রাজধানীতে চলতি মিশ্র বাংলার দিকে ঝুঁকছে।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।
যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।
যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:
ঢাকার আদি ভাষা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, ঢাকাইয়া ভাষায় মূলত দুটি উপভাষা রয়েছে— ‘কুট্টি’ ও ‘সোব্বাসী’। একটা সময় পুরান ঢাকার পরিবারগুলোতে উভয় উপভাষারই প্রচলন ছিল। তবে তরুণ প্রজন্ম এখন ক্রমশ রাজধানীতে চলতি মিশ্র বাংলার দিকে ঝুঁকছে।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:
মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:
ঢাকার আদি ভাষা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাঁরা বলছেন, ঢাকাইয়া ভাষায় মূলত দুটি উপভাষা রয়েছে— ‘কুট্টি’ ও ‘সোব্বাসী’। একটা সময় পুরান ঢাকার পরিবারগুলোতে উভয় উপভাষারই প্রচলন ছিল। তবে তরুণ প্রজন্ম এখন ক্রমশ রাজধানীতে চলতি মিশ্র বাংলার দিকে ঝুঁকছে।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫