তামান্না-ই-জাহান

মনে করেন, বেড়াতে গেছেন বিশ্ব বিনোদনের রাজধানী খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে। সেখানকার কোনো স্টেশনে বসে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ একজন আপনার কাছে এসে বলল, ‘কুহসডাক বালু য়া!’ আপনি হতবাক হয়ে ভাবলেন, এ আবার কোন এলিয়েন! কিন্তু না, ভীনগ্রহের নয়, এমন ভাষার অস্তিত্ব পৃথিবীতেই রয়েছে। আর এই শব্দগুচ্ছের নির্দিষ্ট অর্থও আছে। যেমন, ‘quSDaq ba’lu’’a’ অর্থ হলো—‘এই আসন কি খালি আছে?’
গল্পের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা এই ভাষার নাম ক্লিনগন। যা শিখতে শিক্ষক ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এমনকি হয়েছে বর্ণান্তকরণ এবং অনুবাদও। সাহিত্য এবং সিনেমার প্রয়োজনে নির্মিত এমন কয়েকটি কৃত্রিম ভাষা নিয়ে চলুন জানা যাক—
ক্লিনগন: স্টার ট্রেক
শুরুতেই উল্লেখ করা এই ফিকশনাল ভাষাটি কৃত্রিম ভাষার জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় বলে ধরা হয়। ভাষাবিজ্ঞানী মার্ক ওকরান্ড বিখ্যাত টেলিভিশন সিরিজ স্টার ট্রেক–এ ‘ক্লিনগন’ জাতির বিশেষ ধরনের ভাষাকে সামনে আনেন। ভক্তরা পরবর্তীতে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা এবং গান লেখাতে এই ভাষার ব্যবহার করতে শুরু করেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, শেক্সপিয়ারের নাটক হ্যামলেট পর্যন্ত অনুদিত হয় ক্লিনগনে। প্রায়ই ভাষাটি ইংরেজিতে বর্ণান্তকরণ ও অনুবাদ করে লেখা হয়। এই ভাষায় বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ হলো—‘bortaS bIr jablu'DI' reH QaQqu' nay. ’—‘প্রতিশোধ এমন একটি খাবারের পদ, যা ঠান্ডা পরিবেশন উত্তম।’
নিউজপিক: ১৯৮৪
জর্জ অরওয়েলের ‘১৯৮৪’ উপন্যাসের মূল চরিত্র উইনস্টন স্মিথ, একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সদস্য। সমস্যা হলো, পার্টির প্রধান ‘বিগ ব্রাদার’ সব সময় তাঁর ওপর নজর রাখেন। রাজনৈতিক বিদ্রোহকে দমন করতে যোগাযোগে গোপনীয়তার জন্য একটি ভাষা তৈরি করেন স্মিথ। গল্পের প্রয়োজনেই ‘নিউজপিক’ নামের ভাষাটি তখন সৃষ্টি করেন জর্জ অরওয়েল। তবে তিনি হয়তো তখন ভাবেননি যে পরবর্তীতে এই উপন্যাস থেকে সিনেমা হবে এবং ‘নিউজপিক’ ভাষাটিও কাজে লাগবে।
নিউজপিক মূলত ইংরেজিরই একটি রূপ, যার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এটিকে একটি ভাষা হিসেবে যথেষ্ট সহজ শোনালেও এটি তৈরিতে অরওয়েলকে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে। একবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এটি তৈরি করা অনেকটা জটিল ছিল। একজন পাঠক কিংবা দর্শকের জন্য যাতে জটিল না হয় তা মাথায় রাখতে হয়েছিল।’
না’ভি: অ্যাভাটার
অস্কারজয়ী নির্মাতা জেমস ক্যামেরনের সৃষ্টিশীলতার গল্প আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। টাইটানিকের পর এই চলচ্চিত্র পরিচালক ২০০৯ সালে ‘অ্যাভাটার’ দিয়ে সাড়া ফেলেছিলেন। সিনেমাটিতে প্যান্ডোরা গ্রহের বাসিন্দা না’ভি জাতিগোষ্ঠীকে যথেষ্ট বাস্তব করে ফুটিয়ে তুলতে একটি স্বতন্ত্র ভাষার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এতে তাঁকে সাহায্য করেন ভাষাবিজ্ঞানী বন্ধু পল ফ্রমার। তিনি বিস্তৃত শব্দভান্ডার, আর ব্যাকরণের মধ্য দিয়ে উদ্ভাবন করেন নতুন এক প্রকাশভঙ্গির। দর্শকেরাও দারুণভাবে এটি গ্রহণ করেছেন।
অ্যাভাটারের সিক্যুয়েল ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমা বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর। এই সিনেমাও বিপুল সাড়া ফেলেছে। ২০০ কোটি ডলারের বেশি আয় করে সর্বকালের সেরা ব্যবসাসফল সিনেমার তকমা জিতে নিয়েছে এটি। অ্যাভাটারে ব্যবহৃত না’ভি ভাষার উদাহরণ হিসেবে বলা যায়—‘Oel ngati kameie. ’—‘আমি তোমাকে দেখছি।’
নাদসাত: অ্যা ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ
অ্যান্থনি বার্গেসের উপন্যাস ‘অ্যা ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ’ অবলম্বনে সিনেমা বানিয়েছেন প্রখ্যাত নির্মাতা স্ট্যানলি কুব্রিক। এই ছবিতে ‘নাদসাত’ ভাষার সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করান নির্মাতা। ‘নাদসাত’ মূলত রুশ-প্রভাবিত ইংরেজি ভাষা, নামটিও রুশ ভাষার উপসর্গ থেকে নেওয়া। এটিতে কিছু রুশ শব্দ এবং বাক্যাংশ রয়েছে। এ ছাড়া কিছু ইংরেজি স্ল্যাং যেমন, ‘সড অফ’ (ভাগো বা দূর হও) এবং শিশুদের মতো করে উচ্চারিত শব্দ রয়েছে—‘অ্যাপি পোলি লজি’ অর্থাৎ অ্যাপোলজি। বার্গেস নিজেই উপন্যাসটি লেখার সময় এটি তৈরি করেছিলেন, কারণ তিনি একজন ভাষাবিদও।
নাদসাত ভাষার উদাহরণ: ‘black toast dipped in jammiwam and eggiweg’। এর অর্থ দাঁড়ায়—‘জ্যাম ও ডিমে চুবানো কালো টোস্ট।’
ডথরাকি: গেম অব থ্রোনস
জর্জ আর আর মার্টিনের বেস্টসেলার ‘অ্যা সং অব আইস অ্যান্ড ফায়ারস’ উপন্যাসে অশ্বারোহী যাযাবর গোষ্ঠী ডথরাকির বিবরণ রয়েছে। এতে ডথরাকিদের ব্যবহৃত ভাষার অল্প কিছু শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। পরে টেলিভিশন সিরিজ ‘গেম অব থ্রোনস’-এ ডেভিড পিটারসন কয়েকটি শব্দ থেকে একটি স্বতন্ত্র ভাষা নির্মাণ করেন। সিরিজটিতে অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের উচ্চারণ ছিল প্রশংসনীয়। আর এ কারণেই দর্শক-ভক্তদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ভাষা। ‘গেম অব থ্রোনস’ ভক্তরা শিখে ফেলেন—‘YER SHEKH MA SHIERAKI ANNI’ বা ‘তুমি আমার সূর্য-তারা।’ কিংবা ‘YER JALAN ATTHIRARI ANNI’—‘তুমি আমার জীবনের চন্দ্র।’
পার্সেলটাং: হ্যারি পটার
বিখ্যাত ‘হ্যারি পটার’ সিরিজে অনেকগুলো চিত্তাকর্ষক কৃত্রিম ভাষা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ‘পার্সেলটাং’ সবচেয়ে আলাদা। গল্পে সাপেদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ‘পার্সেলটাং’ ভাষা ব্যবহৃত হয়। এই ভাষা আবার সবার বোঝার ক্ষমতা নেই। কিছু প্রতিভাধর জাদুকরই কেবল এটি বুঝতে পারেন। আর ‘হ্যারি পটার’ সিরিজে তাঁদের পরিচিতি পার্সেলমাউথ হিসেবে।
পার্সেলটাং ভাষা প্রথম শোনা যায়, ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অব সিক্রেটস’ সিনেমায়। সিরিজের শেষ সিনেমা ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোস: পার্ট টু’তে কেন্দ্রীয় চরিত্র হ্যারির এই ভাষা বোঝার ক্ষমতা থাকে। ‘পার্সেলটাং’ যখন উচ্চারিত হয়, সাপের মতো হিস হিস শব্দ হয়। যেমন, এই ভাষায় হ্যালো–এর অনুবাদ হলো—‘সীতাআ-সসে-হাতেহহ-হাতেহহ-আয়াইহ’।
হাটিজ: স্টার ওয়ারস
স্টার ওয়ারস সাউন্ড ডিজাইনার বেন বার্ট ১৯৮৩ সালে ‘রিটার্ন অব দ্য জেডাই’-এর জন্য হাটিজ ভাষা তৈরি করেন। আন্দিজ পবর্তমালায় পেরু এলাকায় প্রচলিত কুয়েচুয়া নামক একটি প্রাচীন উপভাষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ভাষাটি তৈরি করেন তিনি। এটি একটি কাল্পনিক ভাষা, যা মূলত স্টার ওয়ার্সের ফিকশনাল চরিত্র ‘জাব্বা দ্য হাট’ ও তার প্রজাতি তাতুইনের ভাষা। তবে পরবর্তীতে অন্যান্য অনেক চরিত্রকেও হাটিজ ভাষায় কথা বলতে দেখা যায়। এই ভাষা এতই জনপ্রিয়তা পায় যে, তা শেখার জন্য ইউটিউবে টিউটোরিয়াল পর্যন্ত রয়েছে। উদাহরণ: ‘Hi chuba na daga?’ —‘তুমি কী চাও?’
মিনিয়নিজ: ডেসপিকেবল মি
অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘ডেসপিকেবল মি’-এর সহনির্মাতা পিয়েরে কফিন ছবির প্রয়োজনে মিনিয়নিজ তৈরি করেন। যদিও ভাষাটির কোনো অর্থ নেই, শুনতে অনেকটা শিশুর অর্থহীন বোলের মতো জড়ানো শব্দ। পিয়েরে কফিন স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, জাপানিজ, কোরিয়ান, ইংরেজিসহ কয়েকটি ভাষা থেকে মিনিয়নিজ ধার নিয়েছেন। এসব ভাষার এমন সংমিশ্রণ পিয়েরে করেছেন, যার কোনো অর্থ প্রকাশ করে না। উদাহরণ: ‘Le jori e’ tu’—‘ভালো কিংবা খারাপের জন্য।’
রাতে শহিদ মিনারে ধাক্কাধাক্কি, দুপুরে মারামারি করে দুই মহিলা লীগ নেত্রী হাসপাতালে
এলভিশ: হবিট এবং লর্ড অব দ্য রিংস
উপন্যাসিক জে আর আর টলকিন ছিলেন বিচক্ষণ ভাষাতাত্ত্বিক। কোনো বিখ্যাত লেখা শুরুর আগেই তিনি একটি ভাষা সৃষ্টির প্রাণান্ত চেষ্টা চালাতেন। ‘হবিট’ এবং ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ রচনার সময় ব্যবহৃত হয় নতুন এক ভাষা; পরিচিতি পায় এলভিশ নামে। এটি পরে পিটার জ্যাকসন পরিচালিত চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়। ভক্তদের কাছে এই ভাষা দুটি গঠনের কারণেই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। প্রথমত, কুয়েনইয়া, আর দ্বিতীয়ত সিনডারিন। উভয় ভাষাই গড়ে উঠেছে ফিনিশ এবং ওয়েলশের ভাষার ওপর ভিত্তি করে। সেই সঙ্গে রয়েছে কিছুটা গ্রিক ও লাতিনের সংমিশ্রণ। উদাহরণ: ‘Êl síla erin lû e-govaned vîn. ’—‘আমাদের মিলন মুহূর্তে আলো দেয় একটি নক্ষত্র।’
আটলান্টিন: আটলান্টিস: দ্য লস্ট এম্পায়ার
ডিজনির সিনেমা বর্তমান বিশ্বকে কিছু স্মরণীয় নতুন ভাষা উপহার দিয়েছে। তবে ডিজনির এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা আটলান্টিন। ‘আটলান্টিস: দ্য লস্ট এম্পায়ার’ সিনেমায় ব্যবহৃত হয় এই কৃত্রিম ভাষা। এটি প্রাচীন ব্যাবিলনীয়দের ভাষার ওপর ভিত্তি করে এবং বাইবেলের হিব্রু, লাতিন, গ্রিক ও চীনা ভাষার সংমিশ্রণ।
ডিজনি ভাষা তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল মার্ক ওকরান্ডকে। তিনি ক্লিনগন ভাষা তৈরিতে অবদান রেখেছিলেন। ডিজনি পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে সিনেমাটি যখন নির্মিত হয়, তখন আটলান্টিনকে শুধু ধ্বনিগতভাবে লেখা হয়েছিল। ২০০১ সালে সিনেমা মুক্তির আগ পর্যন্ত এর লেখ্যরীতি অর্থাৎ বর্ণমালা ছিল না।
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দখলে যাচ্ছে। আসন্ন সময়কে ধরা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বর্ণযুগ হিসেবে। এর মধ্যে নতুন যোগ হয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি’ নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবট। ‘চ্যাটজিপিটি’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে প্রোগ্রামিং কোড লেখার পাশাপাশি কয়েক সেকেন্ডে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। এমনকি নিজ থেকে বিভিন্ন বার্তা, নিবন্ধ বা কবিতাও লিখতে পারে। প্রযুক্তি নির্ভর এই সময়ে তাই সিনেমা-সিরিজে গুরুত্ব পাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ফলে ভবিষ্যতে পর্দায় কৃত্রিম ভাষার ব্যবহারও যে বাড়বে তা অনুমেয়। এখন দেখার বিষয়, অদূর ভবিষ্যতে মানুষের জীবনযাত্রায় কৃত্রিম ভাষা ঠিক কতখানি প্রভাব ফেলে।

মনে করেন, বেড়াতে গেছেন বিশ্ব বিনোদনের রাজধানী খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে। সেখানকার কোনো স্টেশনে বসে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ একজন আপনার কাছে এসে বলল, ‘কুহসডাক বালু য়া!’ আপনি হতবাক হয়ে ভাবলেন, এ আবার কোন এলিয়েন! কিন্তু না, ভীনগ্রহের নয়, এমন ভাষার অস্তিত্ব পৃথিবীতেই রয়েছে। আর এই শব্দগুচ্ছের নির্দিষ্ট অর্থও আছে। যেমন, ‘quSDaq ba’lu’’a’ অর্থ হলো—‘এই আসন কি খালি আছে?’
গল্পের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা এই ভাষার নাম ক্লিনগন। যা শিখতে শিক্ষক ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এমনকি হয়েছে বর্ণান্তকরণ এবং অনুবাদও। সাহিত্য এবং সিনেমার প্রয়োজনে নির্মিত এমন কয়েকটি কৃত্রিম ভাষা নিয়ে চলুন জানা যাক—
ক্লিনগন: স্টার ট্রেক
শুরুতেই উল্লেখ করা এই ফিকশনাল ভাষাটি কৃত্রিম ভাষার জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় বলে ধরা হয়। ভাষাবিজ্ঞানী মার্ক ওকরান্ড বিখ্যাত টেলিভিশন সিরিজ স্টার ট্রেক–এ ‘ক্লিনগন’ জাতির বিশেষ ধরনের ভাষাকে সামনে আনেন। ভক্তরা পরবর্তীতে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা এবং গান লেখাতে এই ভাষার ব্যবহার করতে শুরু করেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, শেক্সপিয়ারের নাটক হ্যামলেট পর্যন্ত অনুদিত হয় ক্লিনগনে। প্রায়ই ভাষাটি ইংরেজিতে বর্ণান্তকরণ ও অনুবাদ করে লেখা হয়। এই ভাষায় বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ হলো—‘bortaS bIr jablu'DI' reH QaQqu' nay. ’—‘প্রতিশোধ এমন একটি খাবারের পদ, যা ঠান্ডা পরিবেশন উত্তম।’
নিউজপিক: ১৯৮৪
জর্জ অরওয়েলের ‘১৯৮৪’ উপন্যাসের মূল চরিত্র উইনস্টন স্মিথ, একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সদস্য। সমস্যা হলো, পার্টির প্রধান ‘বিগ ব্রাদার’ সব সময় তাঁর ওপর নজর রাখেন। রাজনৈতিক বিদ্রোহকে দমন করতে যোগাযোগে গোপনীয়তার জন্য একটি ভাষা তৈরি করেন স্মিথ। গল্পের প্রয়োজনেই ‘নিউজপিক’ নামের ভাষাটি তখন সৃষ্টি করেন জর্জ অরওয়েল। তবে তিনি হয়তো তখন ভাবেননি যে পরবর্তীতে এই উপন্যাস থেকে সিনেমা হবে এবং ‘নিউজপিক’ ভাষাটিও কাজে লাগবে।
নিউজপিক মূলত ইংরেজিরই একটি রূপ, যার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এটিকে একটি ভাষা হিসেবে যথেষ্ট সহজ শোনালেও এটি তৈরিতে অরওয়েলকে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে। একবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এটি তৈরি করা অনেকটা জটিল ছিল। একজন পাঠক কিংবা দর্শকের জন্য যাতে জটিল না হয় তা মাথায় রাখতে হয়েছিল।’
না’ভি: অ্যাভাটার
অস্কারজয়ী নির্মাতা জেমস ক্যামেরনের সৃষ্টিশীলতার গল্প আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। টাইটানিকের পর এই চলচ্চিত্র পরিচালক ২০০৯ সালে ‘অ্যাভাটার’ দিয়ে সাড়া ফেলেছিলেন। সিনেমাটিতে প্যান্ডোরা গ্রহের বাসিন্দা না’ভি জাতিগোষ্ঠীকে যথেষ্ট বাস্তব করে ফুটিয়ে তুলতে একটি স্বতন্ত্র ভাষার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এতে তাঁকে সাহায্য করেন ভাষাবিজ্ঞানী বন্ধু পল ফ্রমার। তিনি বিস্তৃত শব্দভান্ডার, আর ব্যাকরণের মধ্য দিয়ে উদ্ভাবন করেন নতুন এক প্রকাশভঙ্গির। দর্শকেরাও দারুণভাবে এটি গ্রহণ করেছেন।
অ্যাভাটারের সিক্যুয়েল ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমা বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর। এই সিনেমাও বিপুল সাড়া ফেলেছে। ২০০ কোটি ডলারের বেশি আয় করে সর্বকালের সেরা ব্যবসাসফল সিনেমার তকমা জিতে নিয়েছে এটি। অ্যাভাটারে ব্যবহৃত না’ভি ভাষার উদাহরণ হিসেবে বলা যায়—‘Oel ngati kameie. ’—‘আমি তোমাকে দেখছি।’
নাদসাত: অ্যা ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ
অ্যান্থনি বার্গেসের উপন্যাস ‘অ্যা ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ’ অবলম্বনে সিনেমা বানিয়েছেন প্রখ্যাত নির্মাতা স্ট্যানলি কুব্রিক। এই ছবিতে ‘নাদসাত’ ভাষার সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করান নির্মাতা। ‘নাদসাত’ মূলত রুশ-প্রভাবিত ইংরেজি ভাষা, নামটিও রুশ ভাষার উপসর্গ থেকে নেওয়া। এটিতে কিছু রুশ শব্দ এবং বাক্যাংশ রয়েছে। এ ছাড়া কিছু ইংরেজি স্ল্যাং যেমন, ‘সড অফ’ (ভাগো বা দূর হও) এবং শিশুদের মতো করে উচ্চারিত শব্দ রয়েছে—‘অ্যাপি পোলি লজি’ অর্থাৎ অ্যাপোলজি। বার্গেস নিজেই উপন্যাসটি লেখার সময় এটি তৈরি করেছিলেন, কারণ তিনি একজন ভাষাবিদও।
নাদসাত ভাষার উদাহরণ: ‘black toast dipped in jammiwam and eggiweg’। এর অর্থ দাঁড়ায়—‘জ্যাম ও ডিমে চুবানো কালো টোস্ট।’
ডথরাকি: গেম অব থ্রোনস
জর্জ আর আর মার্টিনের বেস্টসেলার ‘অ্যা সং অব আইস অ্যান্ড ফায়ারস’ উপন্যাসে অশ্বারোহী যাযাবর গোষ্ঠী ডথরাকির বিবরণ রয়েছে। এতে ডথরাকিদের ব্যবহৃত ভাষার অল্প কিছু শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। পরে টেলিভিশন সিরিজ ‘গেম অব থ্রোনস’-এ ডেভিড পিটারসন কয়েকটি শব্দ থেকে একটি স্বতন্ত্র ভাষা নির্মাণ করেন। সিরিজটিতে অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের উচ্চারণ ছিল প্রশংসনীয়। আর এ কারণেই দর্শক-ভক্তদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ভাষা। ‘গেম অব থ্রোনস’ ভক্তরা শিখে ফেলেন—‘YER SHEKH MA SHIERAKI ANNI’ বা ‘তুমি আমার সূর্য-তারা।’ কিংবা ‘YER JALAN ATTHIRARI ANNI’—‘তুমি আমার জীবনের চন্দ্র।’
পার্সেলটাং: হ্যারি পটার
বিখ্যাত ‘হ্যারি পটার’ সিরিজে অনেকগুলো চিত্তাকর্ষক কৃত্রিম ভাষা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ‘পার্সেলটাং’ সবচেয়ে আলাদা। গল্পে সাপেদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ‘পার্সেলটাং’ ভাষা ব্যবহৃত হয়। এই ভাষা আবার সবার বোঝার ক্ষমতা নেই। কিছু প্রতিভাধর জাদুকরই কেবল এটি বুঝতে পারেন। আর ‘হ্যারি পটার’ সিরিজে তাঁদের পরিচিতি পার্সেলমাউথ হিসেবে।
পার্সেলটাং ভাষা প্রথম শোনা যায়, ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অব সিক্রেটস’ সিনেমায়। সিরিজের শেষ সিনেমা ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোস: পার্ট টু’তে কেন্দ্রীয় চরিত্র হ্যারির এই ভাষা বোঝার ক্ষমতা থাকে। ‘পার্সেলটাং’ যখন উচ্চারিত হয়, সাপের মতো হিস হিস শব্দ হয়। যেমন, এই ভাষায় হ্যালো–এর অনুবাদ হলো—‘সীতাআ-সসে-হাতেহহ-হাতেহহ-আয়াইহ’।
হাটিজ: স্টার ওয়ারস
স্টার ওয়ারস সাউন্ড ডিজাইনার বেন বার্ট ১৯৮৩ সালে ‘রিটার্ন অব দ্য জেডাই’-এর জন্য হাটিজ ভাষা তৈরি করেন। আন্দিজ পবর্তমালায় পেরু এলাকায় প্রচলিত কুয়েচুয়া নামক একটি প্রাচীন উপভাষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ভাষাটি তৈরি করেন তিনি। এটি একটি কাল্পনিক ভাষা, যা মূলত স্টার ওয়ার্সের ফিকশনাল চরিত্র ‘জাব্বা দ্য হাট’ ও তার প্রজাতি তাতুইনের ভাষা। তবে পরবর্তীতে অন্যান্য অনেক চরিত্রকেও হাটিজ ভাষায় কথা বলতে দেখা যায়। এই ভাষা এতই জনপ্রিয়তা পায় যে, তা শেখার জন্য ইউটিউবে টিউটোরিয়াল পর্যন্ত রয়েছে। উদাহরণ: ‘Hi chuba na daga?’ —‘তুমি কী চাও?’
মিনিয়নিজ: ডেসপিকেবল মি
অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘ডেসপিকেবল মি’-এর সহনির্মাতা পিয়েরে কফিন ছবির প্রয়োজনে মিনিয়নিজ তৈরি করেন। যদিও ভাষাটির কোনো অর্থ নেই, শুনতে অনেকটা শিশুর অর্থহীন বোলের মতো জড়ানো শব্দ। পিয়েরে কফিন স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, জাপানিজ, কোরিয়ান, ইংরেজিসহ কয়েকটি ভাষা থেকে মিনিয়নিজ ধার নিয়েছেন। এসব ভাষার এমন সংমিশ্রণ পিয়েরে করেছেন, যার কোনো অর্থ প্রকাশ করে না। উদাহরণ: ‘Le jori e’ tu’—‘ভালো কিংবা খারাপের জন্য।’
রাতে শহিদ মিনারে ধাক্কাধাক্কি, দুপুরে মারামারি করে দুই মহিলা লীগ নেত্রী হাসপাতালে
এলভিশ: হবিট এবং লর্ড অব দ্য রিংস
উপন্যাসিক জে আর আর টলকিন ছিলেন বিচক্ষণ ভাষাতাত্ত্বিক। কোনো বিখ্যাত লেখা শুরুর আগেই তিনি একটি ভাষা সৃষ্টির প্রাণান্ত চেষ্টা চালাতেন। ‘হবিট’ এবং ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ রচনার সময় ব্যবহৃত হয় নতুন এক ভাষা; পরিচিতি পায় এলভিশ নামে। এটি পরে পিটার জ্যাকসন পরিচালিত চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়। ভক্তদের কাছে এই ভাষা দুটি গঠনের কারণেই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। প্রথমত, কুয়েনইয়া, আর দ্বিতীয়ত সিনডারিন। উভয় ভাষাই গড়ে উঠেছে ফিনিশ এবং ওয়েলশের ভাষার ওপর ভিত্তি করে। সেই সঙ্গে রয়েছে কিছুটা গ্রিক ও লাতিনের সংমিশ্রণ। উদাহরণ: ‘Êl síla erin lû e-govaned vîn. ’—‘আমাদের মিলন মুহূর্তে আলো দেয় একটি নক্ষত্র।’
আটলান্টিন: আটলান্টিস: দ্য লস্ট এম্পায়ার
ডিজনির সিনেমা বর্তমান বিশ্বকে কিছু স্মরণীয় নতুন ভাষা উপহার দিয়েছে। তবে ডিজনির এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা আটলান্টিন। ‘আটলান্টিস: দ্য লস্ট এম্পায়ার’ সিনেমায় ব্যবহৃত হয় এই কৃত্রিম ভাষা। এটি প্রাচীন ব্যাবিলনীয়দের ভাষার ওপর ভিত্তি করে এবং বাইবেলের হিব্রু, লাতিন, গ্রিক ও চীনা ভাষার সংমিশ্রণ।
ডিজনি ভাষা তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল মার্ক ওকরান্ডকে। তিনি ক্লিনগন ভাষা তৈরিতে অবদান রেখেছিলেন। ডিজনি পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে সিনেমাটি যখন নির্মিত হয়, তখন আটলান্টিনকে শুধু ধ্বনিগতভাবে লেখা হয়েছিল। ২০০১ সালে সিনেমা মুক্তির আগ পর্যন্ত এর লেখ্যরীতি অর্থাৎ বর্ণমালা ছিল না।
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দখলে যাচ্ছে। আসন্ন সময়কে ধরা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বর্ণযুগ হিসেবে। এর মধ্যে নতুন যোগ হয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি’ নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবট। ‘চ্যাটজিপিটি’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে প্রোগ্রামিং কোড লেখার পাশাপাশি কয়েক সেকেন্ডে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। এমনকি নিজ থেকে বিভিন্ন বার্তা, নিবন্ধ বা কবিতাও লিখতে পারে। প্রযুক্তি নির্ভর এই সময়ে তাই সিনেমা-সিরিজে গুরুত্ব পাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ফলে ভবিষ্যতে পর্দায় কৃত্রিম ভাষার ব্যবহারও যে বাড়বে তা অনুমেয়। এখন দেখার বিষয়, অদূর ভবিষ্যতে মানুষের জীবনযাত্রায় কৃত্রিম ভাষা ঠিক কতখানি প্রভাব ফেলে।
তামান্না-ই-জাহান

মনে করেন, বেড়াতে গেছেন বিশ্ব বিনোদনের রাজধানী খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে। সেখানকার কোনো স্টেশনে বসে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ একজন আপনার কাছে এসে বলল, ‘কুহসডাক বালু য়া!’ আপনি হতবাক হয়ে ভাবলেন, এ আবার কোন এলিয়েন! কিন্তু না, ভীনগ্রহের নয়, এমন ভাষার অস্তিত্ব পৃথিবীতেই রয়েছে। আর এই শব্দগুচ্ছের নির্দিষ্ট অর্থও আছে। যেমন, ‘quSDaq ba’lu’’a’ অর্থ হলো—‘এই আসন কি খালি আছে?’
গল্পের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা এই ভাষার নাম ক্লিনগন। যা শিখতে শিক্ষক ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এমনকি হয়েছে বর্ণান্তকরণ এবং অনুবাদও। সাহিত্য এবং সিনেমার প্রয়োজনে নির্মিত এমন কয়েকটি কৃত্রিম ভাষা নিয়ে চলুন জানা যাক—
ক্লিনগন: স্টার ট্রেক
শুরুতেই উল্লেখ করা এই ফিকশনাল ভাষাটি কৃত্রিম ভাষার জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় বলে ধরা হয়। ভাষাবিজ্ঞানী মার্ক ওকরান্ড বিখ্যাত টেলিভিশন সিরিজ স্টার ট্রেক–এ ‘ক্লিনগন’ জাতির বিশেষ ধরনের ভাষাকে সামনে আনেন। ভক্তরা পরবর্তীতে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা এবং গান লেখাতে এই ভাষার ব্যবহার করতে শুরু করেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, শেক্সপিয়ারের নাটক হ্যামলেট পর্যন্ত অনুদিত হয় ক্লিনগনে। প্রায়ই ভাষাটি ইংরেজিতে বর্ণান্তকরণ ও অনুবাদ করে লেখা হয়। এই ভাষায় বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ হলো—‘bortaS bIr jablu'DI' reH QaQqu' nay. ’—‘প্রতিশোধ এমন একটি খাবারের পদ, যা ঠান্ডা পরিবেশন উত্তম।’
নিউজপিক: ১৯৮৪
জর্জ অরওয়েলের ‘১৯৮৪’ উপন্যাসের মূল চরিত্র উইনস্টন স্মিথ, একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সদস্য। সমস্যা হলো, পার্টির প্রধান ‘বিগ ব্রাদার’ সব সময় তাঁর ওপর নজর রাখেন। রাজনৈতিক বিদ্রোহকে দমন করতে যোগাযোগে গোপনীয়তার জন্য একটি ভাষা তৈরি করেন স্মিথ। গল্পের প্রয়োজনেই ‘নিউজপিক’ নামের ভাষাটি তখন সৃষ্টি করেন জর্জ অরওয়েল। তবে তিনি হয়তো তখন ভাবেননি যে পরবর্তীতে এই উপন্যাস থেকে সিনেমা হবে এবং ‘নিউজপিক’ ভাষাটিও কাজে লাগবে।
নিউজপিক মূলত ইংরেজিরই একটি রূপ, যার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এটিকে একটি ভাষা হিসেবে যথেষ্ট সহজ শোনালেও এটি তৈরিতে অরওয়েলকে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে। একবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এটি তৈরি করা অনেকটা জটিল ছিল। একজন পাঠক কিংবা দর্শকের জন্য যাতে জটিল না হয় তা মাথায় রাখতে হয়েছিল।’
না’ভি: অ্যাভাটার
অস্কারজয়ী নির্মাতা জেমস ক্যামেরনের সৃষ্টিশীলতার গল্প আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। টাইটানিকের পর এই চলচ্চিত্র পরিচালক ২০০৯ সালে ‘অ্যাভাটার’ দিয়ে সাড়া ফেলেছিলেন। সিনেমাটিতে প্যান্ডোরা গ্রহের বাসিন্দা না’ভি জাতিগোষ্ঠীকে যথেষ্ট বাস্তব করে ফুটিয়ে তুলতে একটি স্বতন্ত্র ভাষার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এতে তাঁকে সাহায্য করেন ভাষাবিজ্ঞানী বন্ধু পল ফ্রমার। তিনি বিস্তৃত শব্দভান্ডার, আর ব্যাকরণের মধ্য দিয়ে উদ্ভাবন করেন নতুন এক প্রকাশভঙ্গির। দর্শকেরাও দারুণভাবে এটি গ্রহণ করেছেন।
অ্যাভাটারের সিক্যুয়েল ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমা বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর। এই সিনেমাও বিপুল সাড়া ফেলেছে। ২০০ কোটি ডলারের বেশি আয় করে সর্বকালের সেরা ব্যবসাসফল সিনেমার তকমা জিতে নিয়েছে এটি। অ্যাভাটারে ব্যবহৃত না’ভি ভাষার উদাহরণ হিসেবে বলা যায়—‘Oel ngati kameie. ’—‘আমি তোমাকে দেখছি।’
নাদসাত: অ্যা ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ
অ্যান্থনি বার্গেসের উপন্যাস ‘অ্যা ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ’ অবলম্বনে সিনেমা বানিয়েছেন প্রখ্যাত নির্মাতা স্ট্যানলি কুব্রিক। এই ছবিতে ‘নাদসাত’ ভাষার সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করান নির্মাতা। ‘নাদসাত’ মূলত রুশ-প্রভাবিত ইংরেজি ভাষা, নামটিও রুশ ভাষার উপসর্গ থেকে নেওয়া। এটিতে কিছু রুশ শব্দ এবং বাক্যাংশ রয়েছে। এ ছাড়া কিছু ইংরেজি স্ল্যাং যেমন, ‘সড অফ’ (ভাগো বা দূর হও) এবং শিশুদের মতো করে উচ্চারিত শব্দ রয়েছে—‘অ্যাপি পোলি লজি’ অর্থাৎ অ্যাপোলজি। বার্গেস নিজেই উপন্যাসটি লেখার সময় এটি তৈরি করেছিলেন, কারণ তিনি একজন ভাষাবিদও।
নাদসাত ভাষার উদাহরণ: ‘black toast dipped in jammiwam and eggiweg’। এর অর্থ দাঁড়ায়—‘জ্যাম ও ডিমে চুবানো কালো টোস্ট।’
ডথরাকি: গেম অব থ্রোনস
জর্জ আর আর মার্টিনের বেস্টসেলার ‘অ্যা সং অব আইস অ্যান্ড ফায়ারস’ উপন্যাসে অশ্বারোহী যাযাবর গোষ্ঠী ডথরাকির বিবরণ রয়েছে। এতে ডথরাকিদের ব্যবহৃত ভাষার অল্প কিছু শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। পরে টেলিভিশন সিরিজ ‘গেম অব থ্রোনস’-এ ডেভিড পিটারসন কয়েকটি শব্দ থেকে একটি স্বতন্ত্র ভাষা নির্মাণ করেন। সিরিজটিতে অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের উচ্চারণ ছিল প্রশংসনীয়। আর এ কারণেই দর্শক-ভক্তদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ভাষা। ‘গেম অব থ্রোনস’ ভক্তরা শিখে ফেলেন—‘YER SHEKH MA SHIERAKI ANNI’ বা ‘তুমি আমার সূর্য-তারা।’ কিংবা ‘YER JALAN ATTHIRARI ANNI’—‘তুমি আমার জীবনের চন্দ্র।’
পার্সেলটাং: হ্যারি পটার
বিখ্যাত ‘হ্যারি পটার’ সিরিজে অনেকগুলো চিত্তাকর্ষক কৃত্রিম ভাষা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ‘পার্সেলটাং’ সবচেয়ে আলাদা। গল্পে সাপেদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ‘পার্সেলটাং’ ভাষা ব্যবহৃত হয়। এই ভাষা আবার সবার বোঝার ক্ষমতা নেই। কিছু প্রতিভাধর জাদুকরই কেবল এটি বুঝতে পারেন। আর ‘হ্যারি পটার’ সিরিজে তাঁদের পরিচিতি পার্সেলমাউথ হিসেবে।
পার্সেলটাং ভাষা প্রথম শোনা যায়, ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অব সিক্রেটস’ সিনেমায়। সিরিজের শেষ সিনেমা ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোস: পার্ট টু’তে কেন্দ্রীয় চরিত্র হ্যারির এই ভাষা বোঝার ক্ষমতা থাকে। ‘পার্সেলটাং’ যখন উচ্চারিত হয়, সাপের মতো হিস হিস শব্দ হয়। যেমন, এই ভাষায় হ্যালো–এর অনুবাদ হলো—‘সীতাআ-সসে-হাতেহহ-হাতেহহ-আয়াইহ’।
হাটিজ: স্টার ওয়ারস
স্টার ওয়ারস সাউন্ড ডিজাইনার বেন বার্ট ১৯৮৩ সালে ‘রিটার্ন অব দ্য জেডাই’-এর জন্য হাটিজ ভাষা তৈরি করেন। আন্দিজ পবর্তমালায় পেরু এলাকায় প্রচলিত কুয়েচুয়া নামক একটি প্রাচীন উপভাষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ভাষাটি তৈরি করেন তিনি। এটি একটি কাল্পনিক ভাষা, যা মূলত স্টার ওয়ার্সের ফিকশনাল চরিত্র ‘জাব্বা দ্য হাট’ ও তার প্রজাতি তাতুইনের ভাষা। তবে পরবর্তীতে অন্যান্য অনেক চরিত্রকেও হাটিজ ভাষায় কথা বলতে দেখা যায়। এই ভাষা এতই জনপ্রিয়তা পায় যে, তা শেখার জন্য ইউটিউবে টিউটোরিয়াল পর্যন্ত রয়েছে। উদাহরণ: ‘Hi chuba na daga?’ —‘তুমি কী চাও?’
মিনিয়নিজ: ডেসপিকেবল মি
অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘ডেসপিকেবল মি’-এর সহনির্মাতা পিয়েরে কফিন ছবির প্রয়োজনে মিনিয়নিজ তৈরি করেন। যদিও ভাষাটির কোনো অর্থ নেই, শুনতে অনেকটা শিশুর অর্থহীন বোলের মতো জড়ানো শব্দ। পিয়েরে কফিন স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, জাপানিজ, কোরিয়ান, ইংরেজিসহ কয়েকটি ভাষা থেকে মিনিয়নিজ ধার নিয়েছেন। এসব ভাষার এমন সংমিশ্রণ পিয়েরে করেছেন, যার কোনো অর্থ প্রকাশ করে না। উদাহরণ: ‘Le jori e’ tu’—‘ভালো কিংবা খারাপের জন্য।’
রাতে শহিদ মিনারে ধাক্কাধাক্কি, দুপুরে মারামারি করে দুই মহিলা লীগ নেত্রী হাসপাতালে
এলভিশ: হবিট এবং লর্ড অব দ্য রিংস
উপন্যাসিক জে আর আর টলকিন ছিলেন বিচক্ষণ ভাষাতাত্ত্বিক। কোনো বিখ্যাত লেখা শুরুর আগেই তিনি একটি ভাষা সৃষ্টির প্রাণান্ত চেষ্টা চালাতেন। ‘হবিট’ এবং ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ রচনার সময় ব্যবহৃত হয় নতুন এক ভাষা; পরিচিতি পায় এলভিশ নামে। এটি পরে পিটার জ্যাকসন পরিচালিত চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়। ভক্তদের কাছে এই ভাষা দুটি গঠনের কারণেই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। প্রথমত, কুয়েনইয়া, আর দ্বিতীয়ত সিনডারিন। উভয় ভাষাই গড়ে উঠেছে ফিনিশ এবং ওয়েলশের ভাষার ওপর ভিত্তি করে। সেই সঙ্গে রয়েছে কিছুটা গ্রিক ও লাতিনের সংমিশ্রণ। উদাহরণ: ‘Êl síla erin lû e-govaned vîn. ’—‘আমাদের মিলন মুহূর্তে আলো দেয় একটি নক্ষত্র।’
আটলান্টিন: আটলান্টিস: দ্য লস্ট এম্পায়ার
ডিজনির সিনেমা বর্তমান বিশ্বকে কিছু স্মরণীয় নতুন ভাষা উপহার দিয়েছে। তবে ডিজনির এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা আটলান্টিন। ‘আটলান্টিস: দ্য লস্ট এম্পায়ার’ সিনেমায় ব্যবহৃত হয় এই কৃত্রিম ভাষা। এটি প্রাচীন ব্যাবিলনীয়দের ভাষার ওপর ভিত্তি করে এবং বাইবেলের হিব্রু, লাতিন, গ্রিক ও চীনা ভাষার সংমিশ্রণ।
ডিজনি ভাষা তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল মার্ক ওকরান্ডকে। তিনি ক্লিনগন ভাষা তৈরিতে অবদান রেখেছিলেন। ডিজনি পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে সিনেমাটি যখন নির্মিত হয়, তখন আটলান্টিনকে শুধু ধ্বনিগতভাবে লেখা হয়েছিল। ২০০১ সালে সিনেমা মুক্তির আগ পর্যন্ত এর লেখ্যরীতি অর্থাৎ বর্ণমালা ছিল না।
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দখলে যাচ্ছে। আসন্ন সময়কে ধরা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বর্ণযুগ হিসেবে। এর মধ্যে নতুন যোগ হয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি’ নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবট। ‘চ্যাটজিপিটি’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে প্রোগ্রামিং কোড লেখার পাশাপাশি কয়েক সেকেন্ডে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। এমনকি নিজ থেকে বিভিন্ন বার্তা, নিবন্ধ বা কবিতাও লিখতে পারে। প্রযুক্তি নির্ভর এই সময়ে তাই সিনেমা-সিরিজে গুরুত্ব পাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ফলে ভবিষ্যতে পর্দায় কৃত্রিম ভাষার ব্যবহারও যে বাড়বে তা অনুমেয়। এখন দেখার বিষয়, অদূর ভবিষ্যতে মানুষের জীবনযাত্রায় কৃত্রিম ভাষা ঠিক কতখানি প্রভাব ফেলে।

মনে করেন, বেড়াতে গেছেন বিশ্ব বিনোদনের রাজধানী খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে। সেখানকার কোনো স্টেশনে বসে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ একজন আপনার কাছে এসে বলল, ‘কুহসডাক বালু য়া!’ আপনি হতবাক হয়ে ভাবলেন, এ আবার কোন এলিয়েন! কিন্তু না, ভীনগ্রহের নয়, এমন ভাষার অস্তিত্ব পৃথিবীতেই রয়েছে। আর এই শব্দগুচ্ছের নির্দিষ্ট অর্থও আছে। যেমন, ‘quSDaq ba’lu’’a’ অর্থ হলো—‘এই আসন কি খালি আছে?’
গল্পের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা এই ভাষার নাম ক্লিনগন। যা শিখতে শিক্ষক ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এমনকি হয়েছে বর্ণান্তকরণ এবং অনুবাদও। সাহিত্য এবং সিনেমার প্রয়োজনে নির্মিত এমন কয়েকটি কৃত্রিম ভাষা নিয়ে চলুন জানা যাক—
ক্লিনগন: স্টার ট্রেক
শুরুতেই উল্লেখ করা এই ফিকশনাল ভাষাটি কৃত্রিম ভাষার জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় বলে ধরা হয়। ভাষাবিজ্ঞানী মার্ক ওকরান্ড বিখ্যাত টেলিভিশন সিরিজ স্টার ট্রেক–এ ‘ক্লিনগন’ জাতির বিশেষ ধরনের ভাষাকে সামনে আনেন। ভক্তরা পরবর্তীতে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা এবং গান লেখাতে এই ভাষার ব্যবহার করতে শুরু করেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, শেক্সপিয়ারের নাটক হ্যামলেট পর্যন্ত অনুদিত হয় ক্লিনগনে। প্রায়ই ভাষাটি ইংরেজিতে বর্ণান্তকরণ ও অনুবাদ করে লেখা হয়। এই ভাষায় বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ হলো—‘bortaS bIr jablu'DI' reH QaQqu' nay. ’—‘প্রতিশোধ এমন একটি খাবারের পদ, যা ঠান্ডা পরিবেশন উত্তম।’
নিউজপিক: ১৯৮৪
জর্জ অরওয়েলের ‘১৯৮৪’ উপন্যাসের মূল চরিত্র উইনস্টন স্মিথ, একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সদস্য। সমস্যা হলো, পার্টির প্রধান ‘বিগ ব্রাদার’ সব সময় তাঁর ওপর নজর রাখেন। রাজনৈতিক বিদ্রোহকে দমন করতে যোগাযোগে গোপনীয়তার জন্য একটি ভাষা তৈরি করেন স্মিথ। গল্পের প্রয়োজনেই ‘নিউজপিক’ নামের ভাষাটি তখন সৃষ্টি করেন জর্জ অরওয়েল। তবে তিনি হয়তো তখন ভাবেননি যে পরবর্তীতে এই উপন্যাস থেকে সিনেমা হবে এবং ‘নিউজপিক’ ভাষাটিও কাজে লাগবে।
নিউজপিক মূলত ইংরেজিরই একটি রূপ, যার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এটিকে একটি ভাষা হিসেবে যথেষ্ট সহজ শোনালেও এটি তৈরিতে অরওয়েলকে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে। একবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এটি তৈরি করা অনেকটা জটিল ছিল। একজন পাঠক কিংবা দর্শকের জন্য যাতে জটিল না হয় তা মাথায় রাখতে হয়েছিল।’
না’ভি: অ্যাভাটার
অস্কারজয়ী নির্মাতা জেমস ক্যামেরনের সৃষ্টিশীলতার গল্প আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। টাইটানিকের পর এই চলচ্চিত্র পরিচালক ২০০৯ সালে ‘অ্যাভাটার’ দিয়ে সাড়া ফেলেছিলেন। সিনেমাটিতে প্যান্ডোরা গ্রহের বাসিন্দা না’ভি জাতিগোষ্ঠীকে যথেষ্ট বাস্তব করে ফুটিয়ে তুলতে একটি স্বতন্ত্র ভাষার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এতে তাঁকে সাহায্য করেন ভাষাবিজ্ঞানী বন্ধু পল ফ্রমার। তিনি বিস্তৃত শব্দভান্ডার, আর ব্যাকরণের মধ্য দিয়ে উদ্ভাবন করেন নতুন এক প্রকাশভঙ্গির। দর্শকেরাও দারুণভাবে এটি গ্রহণ করেছেন।
অ্যাভাটারের সিক্যুয়েল ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমা বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর। এই সিনেমাও বিপুল সাড়া ফেলেছে। ২০০ কোটি ডলারের বেশি আয় করে সর্বকালের সেরা ব্যবসাসফল সিনেমার তকমা জিতে নিয়েছে এটি। অ্যাভাটারে ব্যবহৃত না’ভি ভাষার উদাহরণ হিসেবে বলা যায়—‘Oel ngati kameie. ’—‘আমি তোমাকে দেখছি।’
নাদসাত: অ্যা ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ
অ্যান্থনি বার্গেসের উপন্যাস ‘অ্যা ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ’ অবলম্বনে সিনেমা বানিয়েছেন প্রখ্যাত নির্মাতা স্ট্যানলি কুব্রিক। এই ছবিতে ‘নাদসাত’ ভাষার সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করান নির্মাতা। ‘নাদসাত’ মূলত রুশ-প্রভাবিত ইংরেজি ভাষা, নামটিও রুশ ভাষার উপসর্গ থেকে নেওয়া। এটিতে কিছু রুশ শব্দ এবং বাক্যাংশ রয়েছে। এ ছাড়া কিছু ইংরেজি স্ল্যাং যেমন, ‘সড অফ’ (ভাগো বা দূর হও) এবং শিশুদের মতো করে উচ্চারিত শব্দ রয়েছে—‘অ্যাপি পোলি লজি’ অর্থাৎ অ্যাপোলজি। বার্গেস নিজেই উপন্যাসটি লেখার সময় এটি তৈরি করেছিলেন, কারণ তিনি একজন ভাষাবিদও।
নাদসাত ভাষার উদাহরণ: ‘black toast dipped in jammiwam and eggiweg’। এর অর্থ দাঁড়ায়—‘জ্যাম ও ডিমে চুবানো কালো টোস্ট।’
ডথরাকি: গেম অব থ্রোনস
জর্জ আর আর মার্টিনের বেস্টসেলার ‘অ্যা সং অব আইস অ্যান্ড ফায়ারস’ উপন্যাসে অশ্বারোহী যাযাবর গোষ্ঠী ডথরাকির বিবরণ রয়েছে। এতে ডথরাকিদের ব্যবহৃত ভাষার অল্প কিছু শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। পরে টেলিভিশন সিরিজ ‘গেম অব থ্রোনস’-এ ডেভিড পিটারসন কয়েকটি শব্দ থেকে একটি স্বতন্ত্র ভাষা নির্মাণ করেন। সিরিজটিতে অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের উচ্চারণ ছিল প্রশংসনীয়। আর এ কারণেই দর্শক-ভক্তদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ভাষা। ‘গেম অব থ্রোনস’ ভক্তরা শিখে ফেলেন—‘YER SHEKH MA SHIERAKI ANNI’ বা ‘তুমি আমার সূর্য-তারা।’ কিংবা ‘YER JALAN ATTHIRARI ANNI’—‘তুমি আমার জীবনের চন্দ্র।’
পার্সেলটাং: হ্যারি পটার
বিখ্যাত ‘হ্যারি পটার’ সিরিজে অনেকগুলো চিত্তাকর্ষক কৃত্রিম ভাষা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ‘পার্সেলটাং’ সবচেয়ে আলাদা। গল্পে সাপেদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ‘পার্সেলটাং’ ভাষা ব্যবহৃত হয়। এই ভাষা আবার সবার বোঝার ক্ষমতা নেই। কিছু প্রতিভাধর জাদুকরই কেবল এটি বুঝতে পারেন। আর ‘হ্যারি পটার’ সিরিজে তাঁদের পরিচিতি পার্সেলমাউথ হিসেবে।
পার্সেলটাং ভাষা প্রথম শোনা যায়, ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অব সিক্রেটস’ সিনেমায়। সিরিজের শেষ সিনেমা ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোস: পার্ট টু’তে কেন্দ্রীয় চরিত্র হ্যারির এই ভাষা বোঝার ক্ষমতা থাকে। ‘পার্সেলটাং’ যখন উচ্চারিত হয়, সাপের মতো হিস হিস শব্দ হয়। যেমন, এই ভাষায় হ্যালো–এর অনুবাদ হলো—‘সীতাআ-সসে-হাতেহহ-হাতেহহ-আয়াইহ’।
হাটিজ: স্টার ওয়ারস
স্টার ওয়ারস সাউন্ড ডিজাইনার বেন বার্ট ১৯৮৩ সালে ‘রিটার্ন অব দ্য জেডাই’-এর জন্য হাটিজ ভাষা তৈরি করেন। আন্দিজ পবর্তমালায় পেরু এলাকায় প্রচলিত কুয়েচুয়া নামক একটি প্রাচীন উপভাষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ভাষাটি তৈরি করেন তিনি। এটি একটি কাল্পনিক ভাষা, যা মূলত স্টার ওয়ার্সের ফিকশনাল চরিত্র ‘জাব্বা দ্য হাট’ ও তার প্রজাতি তাতুইনের ভাষা। তবে পরবর্তীতে অন্যান্য অনেক চরিত্রকেও হাটিজ ভাষায় কথা বলতে দেখা যায়। এই ভাষা এতই জনপ্রিয়তা পায় যে, তা শেখার জন্য ইউটিউবে টিউটোরিয়াল পর্যন্ত রয়েছে। উদাহরণ: ‘Hi chuba na daga?’ —‘তুমি কী চাও?’
মিনিয়নিজ: ডেসপিকেবল মি
অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘ডেসপিকেবল মি’-এর সহনির্মাতা পিয়েরে কফিন ছবির প্রয়োজনে মিনিয়নিজ তৈরি করেন। যদিও ভাষাটির কোনো অর্থ নেই, শুনতে অনেকটা শিশুর অর্থহীন বোলের মতো জড়ানো শব্দ। পিয়েরে কফিন স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, জাপানিজ, কোরিয়ান, ইংরেজিসহ কয়েকটি ভাষা থেকে মিনিয়নিজ ধার নিয়েছেন। এসব ভাষার এমন সংমিশ্রণ পিয়েরে করেছেন, যার কোনো অর্থ প্রকাশ করে না। উদাহরণ: ‘Le jori e’ tu’—‘ভালো কিংবা খারাপের জন্য।’
রাতে শহিদ মিনারে ধাক্কাধাক্কি, দুপুরে মারামারি করে দুই মহিলা লীগ নেত্রী হাসপাতালে
এলভিশ: হবিট এবং লর্ড অব দ্য রিংস
উপন্যাসিক জে আর আর টলকিন ছিলেন বিচক্ষণ ভাষাতাত্ত্বিক। কোনো বিখ্যাত লেখা শুরুর আগেই তিনি একটি ভাষা সৃষ্টির প্রাণান্ত চেষ্টা চালাতেন। ‘হবিট’ এবং ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ রচনার সময় ব্যবহৃত হয় নতুন এক ভাষা; পরিচিতি পায় এলভিশ নামে। এটি পরে পিটার জ্যাকসন পরিচালিত চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়। ভক্তদের কাছে এই ভাষা দুটি গঠনের কারণেই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। প্রথমত, কুয়েনইয়া, আর দ্বিতীয়ত সিনডারিন। উভয় ভাষাই গড়ে উঠেছে ফিনিশ এবং ওয়েলশের ভাষার ওপর ভিত্তি করে। সেই সঙ্গে রয়েছে কিছুটা গ্রিক ও লাতিনের সংমিশ্রণ। উদাহরণ: ‘Êl síla erin lû e-govaned vîn. ’—‘আমাদের মিলন মুহূর্তে আলো দেয় একটি নক্ষত্র।’
আটলান্টিন: আটলান্টিস: দ্য লস্ট এম্পায়ার
ডিজনির সিনেমা বর্তমান বিশ্বকে কিছু স্মরণীয় নতুন ভাষা উপহার দিয়েছে। তবে ডিজনির এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা আটলান্টিন। ‘আটলান্টিস: দ্য লস্ট এম্পায়ার’ সিনেমায় ব্যবহৃত হয় এই কৃত্রিম ভাষা। এটি প্রাচীন ব্যাবিলনীয়দের ভাষার ওপর ভিত্তি করে এবং বাইবেলের হিব্রু, লাতিন, গ্রিক ও চীনা ভাষার সংমিশ্রণ।
ডিজনি ভাষা তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল মার্ক ওকরান্ডকে। তিনি ক্লিনগন ভাষা তৈরিতে অবদান রেখেছিলেন। ডিজনি পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে সিনেমাটি যখন নির্মিত হয়, তখন আটলান্টিনকে শুধু ধ্বনিগতভাবে লেখা হয়েছিল। ২০০১ সালে সিনেমা মুক্তির আগ পর্যন্ত এর লেখ্যরীতি অর্থাৎ বর্ণমালা ছিল না।
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দখলে যাচ্ছে। আসন্ন সময়কে ধরা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বর্ণযুগ হিসেবে। এর মধ্যে নতুন যোগ হয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি’ নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবট। ‘চ্যাটজিপিটি’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে প্রোগ্রামিং কোড লেখার পাশাপাশি কয়েক সেকেন্ডে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। এমনকি নিজ থেকে বিভিন্ন বার্তা, নিবন্ধ বা কবিতাও লিখতে পারে। প্রযুক্তি নির্ভর এই সময়ে তাই সিনেমা-সিরিজে গুরুত্ব পাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ফলে ভবিষ্যতে পর্দায় কৃত্রিম ভাষার ব্যবহারও যে বাড়বে তা অনুমেয়। এখন দেখার বিষয়, অদূর ভবিষ্যতে মানুষের জীবনযাত্রায় কৃত্রিম ভাষা ঠিক কতখানি প্রভাব ফেলে।

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

গল্পের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা এই ভাষার নাম ক্লিনগন। যা শিখতে শিক্ষক ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এমনকি হয়েছে বর্ণান্তকরণ এবং অনুবাদও। সাহিত্য এবং সিনেমার প্রয়োজনে নির্মিত এমন কয়েকটি কৃত্রিম ভাষা নিয়ে চলুন জানা যাক—
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

গল্পের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা এই ভাষার নাম ক্লিনগন। যা শিখতে শিক্ষক ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এমনকি হয়েছে বর্ণান্তকরণ এবং অনুবাদও। সাহিত্য এবং সিনেমার প্রয়োজনে নির্মিত এমন কয়েকটি কৃত্রিম ভাষা নিয়ে চলুন জানা যাক—
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

গল্পের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা এই ভাষার নাম ক্লিনগন। যা শিখতে শিক্ষক ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এমনকি হয়েছে বর্ণান্তকরণ এবং অনুবাদও। সাহিত্য এবং সিনেমার প্রয়োজনে নির্মিত এমন কয়েকটি কৃত্রিম ভাষা নিয়ে চলুন জানা যাক—
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

গল্পের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা এই ভাষার নাম ক্লিনগন। যা শিখতে শিক্ষক ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এমনকি হয়েছে বর্ণান্তকরণ এবং অনুবাদও। সাহিত্য এবং সিনেমার প্রয়োজনে নির্মিত এমন কয়েকটি কৃত্রিম ভাষা নিয়ে চলুন জানা যাক—
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫