তোয়াব খান

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ১৫ আগস্ট। তার আগে ১৪ আগস্ট দিনটি ছিল ইভেন্টফুল, মানে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল ওই দিন। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা জিনিস পরিষ্কার, যা আমি অনেকবার বলেছি বা লিখেছি। ১৫ আগস্ট এক দিনে ঘটেনি। এর পেছনে আরও ষড়যন্ত্র ছিল, সেটা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। এবং তাতে কারা কারা জড়িত আর সেটা কীভাবে হতে পারে, তা যাঁরা জেনেছেন, বলারও চেষ্টা করেছেন।
মুশকিল হচ্ছে, দেশের মানুষের ওপর বঙ্গবন্ধুর খুব বেশি আস্থা ছিল। তিনি মনে করতেন, জাতির পিতাকে কেন কেউ হত্যা করবে? ১৪ আগস্টে ঘটনাটা হচ্ছে এ রকম, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু যাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাতে সমাবর্তন বক্তৃতা করতে হবে। বঙ্গবন্ধু আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি এক্সটেম্পোর বক্তৃতা করব, তোমরা শুধু পয়েন্টগুলো লিখে দেবে। কার্ডে মোটা মোটা অক্ষরে লিখে দেবে, যেন আমার দেখতে সুবিধা হয়।’
সন্ধ্যায় গণভবনে এলেন মোকাম্মেল হক, তিনি তখন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা সচিব। তারপর এলেন ম্যাক স্যার, মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, তিনি তখন শিক্ষামন্ত্রী। পরদিন কী হবে না-হবে, তার বিবরণ একটার পর একটা লেখা হচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে আমার সঙ্গে ছিলেন মাহবুব তালুকদার। তিনি তখন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রেস সেক্রেটারি। তিনি আমার সহকারী ছিলেন। উনি বঙ্গভবনে আবু সাঈদ চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করতেন। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্রপতি হলেন, তখন তিনি এখানে চলে এলেন।
যা হোক, সবাই মিলে পয়েন্টগুলো লেখা হতে লাগল।
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু মাঝে আমাকে ডাকলেন, ‘আসো এখানে।’ আমিও তখন পয়েন্টগুলো তৈরি করতে নোট নিচ্ছিলাম। আমি মাহবুব তালুকদারকে বললাম, ‘তুমি নোটগুলো নাও, আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে আসি।’
ইতিমধ্যে একটা টেলিফোন এল। ভারতীয় একটা হেলিকপ্টার বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল, সেটা নোয়াখালীর রামগতির কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে। বাজারে গুজব যে নিচে থেকে গুলি করে হেলিকপ্টারটিকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা এবং কীভাবে এটাকে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে, সেটা ঠিক করা দরকার। এটা শুধু আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার না, এটা খোদ যিনি রাষ্ট্রপতি এবং জাতির পিতা, তাঁর অনুমোদন দরকার। আমি প্রথমে ঘটনা জানার চেষ্টা করলাম। তখনকার দিনের বিমানবাহিনীর উপপ্রধান খাদেমুল বাশার আমাদের স্কুলের বন্ধু। আমি বাশারকে টেলিফোন করলাম ঘটনাটা আসলে কী, তা জানতে। বাশার আমাকে জানাল, ‘ভারতীয় হেলিকপ্টার যাচ্ছিল। রামগতিতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে গেছে। হেলিকপ্টারে যারা ছিল, তাদের লাশ ভারতে হস্তান্তর করার কাজ চলছে।’
আমি এটা জেনে বঙ্গবন্ধুর কাছে গেলাম। বললাম, ‘স্যার এ রকম ঘটনা।’
তিনি বললেন, ‘আমি জেনেছি।’ তারপর বললেন, ‘আমরা কী করব নিউজটা নিয়ে?’
এ কথা জিজ্ঞেস করার কারণ হলো, তখন দেশে জরুরি অবস্থা জারি আছে। তাই এ রকম খবর দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন এবং কীভাবে যাবে, সেটাও ঠিক করা দরকার। আমি বললাম, ‘এই নিউজটা কি যাবে?’
এখানে বঙ্গবন্ধুর যে নির্দেশনা, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বললেন, ‘দেখো, ঘটনা চেপে যেও না। জানিয়ে দাও, যা ঘটেছে। এতে আমাদের তো কিছু করার নেই। দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা লাশ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করছি।’
আমি বঙ্গবন্ধুর ঘর থেকে চলে এসে নিজের জায়গায় বসেছি। লিখছি, এ সময় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে ফোন এল: ‘আপনারা নিউজটা দিচ্ছেন কি?’
বললাম, ‘আমরা দিচ্ছি।’
‘দিচ্ছেন? এ সিদ্ধান্তটা কোন পর্যায়ের?’
আমার তখন একটু মনে হলো, এভাবে তিনি প্রশ্ন করছেন কেন? বললাম, ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের।’
ভারতের উদ্বেগের কারণ ছিল। তাদের দেশেও তখন জরুরি অবস্থা চলছিল। এ রকমভাবে বাংলাদেশে তাদের একটা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে, তাতে এত সৈন্য মারা পড়েছে, এই কৈফিয়ত তাদের দিতে হবে তো।
যাই হোক, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুর টেলিফোন করেছিলেন নিউজটা কীভাবে যাচ্ছে জানার জন্য। আমি তাঁকে বললাম, ‘আপনার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটা হচ্ছে বিএসএস আরেকটা পিআইডি। দু জায়গায়ই বলে দেওয়া হয়েছে। আপনাকে জানাবে।’
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু এসে আবার বললেন, ‘তোমরা সমাবর্তনের পয়েন্টসগুলো লেখো। পয়েন্টগুলো লেখা হলে তুমি রাতে জানাবে।’
আমরা যখন ওটা তৈরি করেছি, ওই দিন আবার গণভবনে একটা ডিনার ছিল। তখনকার দিনে ডিনার-টিনার এখনকার মতো করা যেত না। আমরা ১০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে এই ডিনারের আয়োজন করেছিলাম মশিউর রহমান, ফরাসউদ্দিন আর মনোয়ার হোসেনের বিদেশযাত্রা উপলক্ষে। তাঁরা হার্ভার্ড আর এমআইটিতে যাচ্ছিলেন ডক্টরেট করার জন্য। তাঁদের বিদায় জানানোর জন্য এই ডিনার। আমাদের সচিব যিনি ছিলেন, একজন হলেন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আবদুস সাত্তার আরেকজন সচিব আবদুর রহিম। তাঁরা বললেন, ডিনারে থাকতে পারবেন না। তাঁদের গুলশানে এক বাড়িতে দাওয়াত আছে, সেখানে যেতে হবে।
আমি বললাম, ‘ঠিক আছে।’
এরপর বাড়িতে চলে এসেছি। হাতে লিখতে হচ্ছে, তাই সময় লাগছিল। বাসায় বসে পয়েন্টগুলো লিখছি কার্ডে মোটা মোটা অক্ষরে।
এর মধ্যে রাত ১২টার পর বঙ্গবন্ধু টেলিফোন করেছেন, ‘কাল সকালে তাড়াড়াড়ি এসো। আমি এস্কটেম্পোর বক্তৃতা দেব।’ বিভিন্ন সময়ে আগেও বলেছেন, সেদিন সন্ধ্যায়ও বলেছেন, রাত ১২টার দিকেও বললেন, ‘একসময় ঢাকা ইউনিভার্সিটি আমাকে বহিষ্কার করেছিল। এরপর আমি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাইনি।’
বললেন, ‘আমার অনেক রাজনীতির কথাও বলার আছে ওখানে।’ বঙ্গবন্ধুর পয়েন্টসগুলোর মধ্যে খুব ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার ছিল। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু ম্যাক স্যারকে বলে দিয়েছিলেন, ‘এই বাংলাদেশে লেখাপড়া হয় কিন্তু গবেষণা হয় না। গবেষণার জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দীর নামে।’
আমাকে বললেন, ‘পয়েন্টগুলো ভালোভাবে লিখছ তো?’
বললাম, ‘হ্যাঁ।’
বললেন, ‘কাল সকাল সকাল চলে আসবে। এগুলো একবার দেখব। তারপর ইউনিভার্সিটিতে যাব।’
সকালে যখন গোলাগুলির শব্দ শুনলাম, তখন প্রথমে ধারণা হয়েছিল, নকশালরা গোলমাল করছে কিংবা সিরাজ শিকদারের লোকজন গোলমাল শুরু করেছে। যখন রেডিওতে ঘোষণা হয়েছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সবাই ভেঙে পড়েছে।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাত ১২টার দিকে সেটাই ছিল আমার শেষ কথা।
পরে যখন অনেক সময় ভেবেছি, ঘটনাটা শুধু এভাবে ঘটল? কয়েকজন বহিষ্কৃত সেনাসদস্য কি তা ঘটাতে পারে? তা তো হতে পারে না। ঘটনার পেছনে কী কী ছিল?
কয়েকটা ঘটনা মনে পড়ল। একবার বঙ্গবন্ধু একটা ইংরেজিতে টাইপ করা চিঠি দিয়ে বললেন, ‘এটা নাও।’
নিলাম।
‘তোমার কাছে রাখো।’
আমি ওটা পড়তে গিয়ে দেখি, একটা ইয়ং অফিসার্স নামে টাইপ করা। তাতে সিনিয়র অফিসারদের কে কী চরিত্রের লোক, তার ব্যাখ্যা করা আছে। বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘আমি জানি। এদের প্রত্যেকের চরিত্র জানি। ওটা রেখে দাও।’
আমি এগুলো বাড়ি নিয়ে যাইনি। অফিসেই ছিল। ১৫ আগস্টের পর থেকে আমাদের গণভবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তাই কী হয়েছে সেই চিঠিটার, তা আর জানা হয়নি।
১৫ আগস্ট সকালে আমার মেয়েরা স্কুলে যাবে বলে তৈরি হচ্ছিল। ঘটনা শোনার পর আমি লাল টেলিফোনে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করলাম। যাঁরা বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা, নিরাপত্তার জন্য তথ্য সংগ্রহ করেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁদের টেলিফোন করেছি। এঁদের নাম এখন আর বলব না। তাঁরা মারা গেছেন।
প্রধম যাঁকে ফোন করলাম, তাঁদের একজন বললেন, ‘হ্যাঁ, তাই তো শুনছি। কিন্তু আমি তো কিছু বলতে পারব না।’
গোযেন্দা বিভাগের প্রধান বলেছেন, ‘শুনছি। দেখি।’
ফরাসউদ্দিন সে সময় বঙ্গবন্ধুর প্রাইভেট সেক্রেটারি-২ ছিল। ওকে ফোন করলাম। ফরাস প্রথম উৎসাহের সঙ্গে জানাল, ‘একদল লোক অভ্যুত্থান করার চেষ্টা করেছিল। জামিল ভাই (কর্নেল জামিল) ওদিকে চলে গেছেন। ৩২ নম্বরের দিকে। আমিও ওখানে যাচ্ছি।’
আমিও উৎসাহিত হলাম। ভাবলাম, অভ্যুত্থার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে।
কিন্তু পরে তো জানলাম, জামিল সাহেবকে ওখানেই সোবহানবাগ মসজিদের কাছে মেরে ফেলেছে। ফরাসকে পিটিয়েছে, তারপর বের করে দিয়েছে। আমি যখন ফরাসের কাছে পরে গেলাম, বুঝলাম, খুব ঝুঁকিপূর্ণভাবেই সে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিল। একজন বুরোক্র্যাট বা আমলা হিসেবে সে এতটা সাহসের পরিচয় দেবে, সেটা ভাবিনি।
সকালে ছোট ভাই বাচ্চুসহ বের হলাম। দেখতে চাইছিলাম, রাস্তায় লোকজন বের হয় কিনা। মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। মোদাব্বের সাহেবের রাড়ির কাছে গিয়ে শুনলাম বিহারিরা বলছে ‘এ লোগ ভাগ রাহা হায়।’ ওদের তাড়া করলাম। তখন দেখলাম, গাড়িতে কালো পোশাকের সৈন্য দল। বুঝলাম, আর বাইরে থাকা যায় না।
এর মধ্যে এসপি মাহবুবের একটা ফোন এল। লাল টেলিফোনে। তিনি আসলে ফোন করতে চেয়েছিলেন রক্ষীবাহিনীর সেকেন্ড ম্যান আর্মির কর্নেলকে। তিনিও মুক্তিযোদ্ধা। লাল টেলিফোন তাঁর কাছে যাওয়ার কথা। এসেছে আমার কাছে। মাহবুব বলছে, ‘আমি চেষ্টা করছি। দেখি কাকে কাকে অর্গানাইজ করতে পারি।’
এসপি মাহবুব তাঁর মতো করে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পেরে ওঠেননি।
বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ ফোন করেছিল। এনায়েতুল্লাহ খান খুব উৎসাহ নিয়ে ফোন করে বলেছে, ‘ইয়ং অফিসাররা দারুণ কাজ করে ফেলল। আপনার চিন্তা নেই, থাকেন।’
ফয়েজ আহমদ ফোন করে বললেন,‘ ঘটনা খুব গোলমেলে, সাবধানে থাকবেন।’
আর কেউ ফোন করেনি। আমি কিছু কিছু ফোন করেছি। যাঁদের জানার কথা, তাঁরা সবাই এমনভাবে কথাবার্তা বলেছেন যে মনে হয়েছে এঁরা প্যাসিভলি বা জেনেশুনে এই হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেছেন।
এখন কয়েকটি কথা মনে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর দিক থেকে কতগুলো জিনিস বলব। এ রকম ঘটনা তো জানার বা আলোচনা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু কেউ কেউ কি আগে থেকেই জানত?
১৫ আগস্টের ঘটনার আগে জুন মাসের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল। ৭ জুন বাকশালের একটা সরকারি ঘোষণা হলো। এখন যেখানে ডিএফপি অফিস, সেখানে আগে ছিল একটা অফিস, যেখানে আওয়ামী লীগ অফিস করল। বৃষ্টির মধ্যে সেখানে হাজারে হাজারে মানুষ দল বেঁধে বাকশালে জয়েন করতে এসেছিল। কাজ শেষ করে বঙ্গবন্ধু বাড়ি চলে এলেন। সঙ্গে এলাম আমি, হানিফ আর মহিউদ্দিন। বাড়িতে এসে বঙ্গবন্ধু তিনতলায় বসতেন। ওখানে বসে বারান্দামতো যে জায়গাটা আছে, সেখানে আলোচনা করতেন। আমি বঙ্গবন্ধুকে সেখানে রেখে নিচে এসে দেখি জিয়াউর রহমান বসে আছেন। বললাম, ‘আরে আপনি এখানে!’
জিয়াউর রহমান বললেন, ‘দেখেন তো তোয়াব সায়েব। বাকশালে আমার নাম নেই। এটা কী রকম কথা। আমি কেন বাকশালে থাকব না?’
বললাম, ‘দেখা করবেন?’
বললেন, ‘হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধুকে বলার জন্য এসেছি।’
বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়ে বললাম, ‘স্যার, জিয়াউর রহমান এসে বসে আছেন।’
বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘নিয়ে আস তারে।’
আমি জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর কাছে দিয়ে চলে এসেছি।
ব্যাপার হচ্ছে, পরবর্তীকালে বিভিন্ন ডকুমেন্ট আমি পড়েছি। তাদের মধ্যে একজনের কথা পড়েছি, যিনি ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে। চট্টগ্রামের একজন। জুলাই মাসের দিকে জিয়াউর রহমানকে জিডিআরের (তখনকার পূর্ব জার্মানি) অ্যামবাসেডর করে পাঠানোর কথা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান এক মাস সময় চেয়েছেন। বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়টা দেখেছি। এক মাস সময়। তখন জুন মাস। ঘটনাগুলো মেলালেই বোঝাই যায়।
১৫ আগস্ট-সংক্রান্ত দুটো বাক্য স্মরণীয় হয়ে থাকা উচিত। একটা হলো, একজন বঙ্গবন্ধুকে বলছেন ‘আপনি পালাতে পারেন নাকি দেখেন।’
বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বলা আরেকটা বাক্য, ‘সো হোয়াট? ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার।’
সব বাদ দিলাম। অসাংবিধানিকভাবে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে! সে কথাটাই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ১৫ আগস্ট। তার আগে ১৪ আগস্ট দিনটি ছিল ইভেন্টফুল, মানে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল ওই দিন। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা জিনিস পরিষ্কার, যা আমি অনেকবার বলেছি বা লিখেছি। ১৫ আগস্ট এক দিনে ঘটেনি। এর পেছনে আরও ষড়যন্ত্র ছিল, সেটা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। এবং তাতে কারা কারা জড়িত আর সেটা কীভাবে হতে পারে, তা যাঁরা জেনেছেন, বলারও চেষ্টা করেছেন।
মুশকিল হচ্ছে, দেশের মানুষের ওপর বঙ্গবন্ধুর খুব বেশি আস্থা ছিল। তিনি মনে করতেন, জাতির পিতাকে কেন কেউ হত্যা করবে? ১৪ আগস্টে ঘটনাটা হচ্ছে এ রকম, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু যাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাতে সমাবর্তন বক্তৃতা করতে হবে। বঙ্গবন্ধু আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি এক্সটেম্পোর বক্তৃতা করব, তোমরা শুধু পয়েন্টগুলো লিখে দেবে। কার্ডে মোটা মোটা অক্ষরে লিখে দেবে, যেন আমার দেখতে সুবিধা হয়।’
সন্ধ্যায় গণভবনে এলেন মোকাম্মেল হক, তিনি তখন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা সচিব। তারপর এলেন ম্যাক স্যার, মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, তিনি তখন শিক্ষামন্ত্রী। পরদিন কী হবে না-হবে, তার বিবরণ একটার পর একটা লেখা হচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে আমার সঙ্গে ছিলেন মাহবুব তালুকদার। তিনি তখন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রেস সেক্রেটারি। তিনি আমার সহকারী ছিলেন। উনি বঙ্গভবনে আবু সাঈদ চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করতেন। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্রপতি হলেন, তখন তিনি এখানে চলে এলেন।
যা হোক, সবাই মিলে পয়েন্টগুলো লেখা হতে লাগল।
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু মাঝে আমাকে ডাকলেন, ‘আসো এখানে।’ আমিও তখন পয়েন্টগুলো তৈরি করতে নোট নিচ্ছিলাম। আমি মাহবুব তালুকদারকে বললাম, ‘তুমি নোটগুলো নাও, আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে আসি।’
ইতিমধ্যে একটা টেলিফোন এল। ভারতীয় একটা হেলিকপ্টার বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল, সেটা নোয়াখালীর রামগতির কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে। বাজারে গুজব যে নিচে থেকে গুলি করে হেলিকপ্টারটিকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা এবং কীভাবে এটাকে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে, সেটা ঠিক করা দরকার। এটা শুধু আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার না, এটা খোদ যিনি রাষ্ট্রপতি এবং জাতির পিতা, তাঁর অনুমোদন দরকার। আমি প্রথমে ঘটনা জানার চেষ্টা করলাম। তখনকার দিনের বিমানবাহিনীর উপপ্রধান খাদেমুল বাশার আমাদের স্কুলের বন্ধু। আমি বাশারকে টেলিফোন করলাম ঘটনাটা আসলে কী, তা জানতে। বাশার আমাকে জানাল, ‘ভারতীয় হেলিকপ্টার যাচ্ছিল। রামগতিতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে গেছে। হেলিকপ্টারে যারা ছিল, তাদের লাশ ভারতে হস্তান্তর করার কাজ চলছে।’
আমি এটা জেনে বঙ্গবন্ধুর কাছে গেলাম। বললাম, ‘স্যার এ রকম ঘটনা।’
তিনি বললেন, ‘আমি জেনেছি।’ তারপর বললেন, ‘আমরা কী করব নিউজটা নিয়ে?’
এ কথা জিজ্ঞেস করার কারণ হলো, তখন দেশে জরুরি অবস্থা জারি আছে। তাই এ রকম খবর দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন এবং কীভাবে যাবে, সেটাও ঠিক করা দরকার। আমি বললাম, ‘এই নিউজটা কি যাবে?’
এখানে বঙ্গবন্ধুর যে নির্দেশনা, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বললেন, ‘দেখো, ঘটনা চেপে যেও না। জানিয়ে দাও, যা ঘটেছে। এতে আমাদের তো কিছু করার নেই। দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা লাশ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করছি।’
আমি বঙ্গবন্ধুর ঘর থেকে চলে এসে নিজের জায়গায় বসেছি। লিখছি, এ সময় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে ফোন এল: ‘আপনারা নিউজটা দিচ্ছেন কি?’
বললাম, ‘আমরা দিচ্ছি।’
‘দিচ্ছেন? এ সিদ্ধান্তটা কোন পর্যায়ের?’
আমার তখন একটু মনে হলো, এভাবে তিনি প্রশ্ন করছেন কেন? বললাম, ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের।’
ভারতের উদ্বেগের কারণ ছিল। তাদের দেশেও তখন জরুরি অবস্থা চলছিল। এ রকমভাবে বাংলাদেশে তাদের একটা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে, তাতে এত সৈন্য মারা পড়েছে, এই কৈফিয়ত তাদের দিতে হবে তো।
যাই হোক, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুর টেলিফোন করেছিলেন নিউজটা কীভাবে যাচ্ছে জানার জন্য। আমি তাঁকে বললাম, ‘আপনার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটা হচ্ছে বিএসএস আরেকটা পিআইডি। দু জায়গায়ই বলে দেওয়া হয়েছে। আপনাকে জানাবে।’
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু এসে আবার বললেন, ‘তোমরা সমাবর্তনের পয়েন্টসগুলো লেখো। পয়েন্টগুলো লেখা হলে তুমি রাতে জানাবে।’
আমরা যখন ওটা তৈরি করেছি, ওই দিন আবার গণভবনে একটা ডিনার ছিল। তখনকার দিনে ডিনার-টিনার এখনকার মতো করা যেত না। আমরা ১০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে এই ডিনারের আয়োজন করেছিলাম মশিউর রহমান, ফরাসউদ্দিন আর মনোয়ার হোসেনের বিদেশযাত্রা উপলক্ষে। তাঁরা হার্ভার্ড আর এমআইটিতে যাচ্ছিলেন ডক্টরেট করার জন্য। তাঁদের বিদায় জানানোর জন্য এই ডিনার। আমাদের সচিব যিনি ছিলেন, একজন হলেন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আবদুস সাত্তার আরেকজন সচিব আবদুর রহিম। তাঁরা বললেন, ডিনারে থাকতে পারবেন না। তাঁদের গুলশানে এক বাড়িতে দাওয়াত আছে, সেখানে যেতে হবে।
আমি বললাম, ‘ঠিক আছে।’
এরপর বাড়িতে চলে এসেছি। হাতে লিখতে হচ্ছে, তাই সময় লাগছিল। বাসায় বসে পয়েন্টগুলো লিখছি কার্ডে মোটা মোটা অক্ষরে।
এর মধ্যে রাত ১২টার পর বঙ্গবন্ধু টেলিফোন করেছেন, ‘কাল সকালে তাড়াড়াড়ি এসো। আমি এস্কটেম্পোর বক্তৃতা দেব।’ বিভিন্ন সময়ে আগেও বলেছেন, সেদিন সন্ধ্যায়ও বলেছেন, রাত ১২টার দিকেও বললেন, ‘একসময় ঢাকা ইউনিভার্সিটি আমাকে বহিষ্কার করেছিল। এরপর আমি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাইনি।’
বললেন, ‘আমার অনেক রাজনীতির কথাও বলার আছে ওখানে।’ বঙ্গবন্ধুর পয়েন্টসগুলোর মধ্যে খুব ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার ছিল। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু ম্যাক স্যারকে বলে দিয়েছিলেন, ‘এই বাংলাদেশে লেখাপড়া হয় কিন্তু গবেষণা হয় না। গবেষণার জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দীর নামে।’
আমাকে বললেন, ‘পয়েন্টগুলো ভালোভাবে লিখছ তো?’
বললাম, ‘হ্যাঁ।’
বললেন, ‘কাল সকাল সকাল চলে আসবে। এগুলো একবার দেখব। তারপর ইউনিভার্সিটিতে যাব।’
সকালে যখন গোলাগুলির শব্দ শুনলাম, তখন প্রথমে ধারণা হয়েছিল, নকশালরা গোলমাল করছে কিংবা সিরাজ শিকদারের লোকজন গোলমাল শুরু করেছে। যখন রেডিওতে ঘোষণা হয়েছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সবাই ভেঙে পড়েছে।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাত ১২টার দিকে সেটাই ছিল আমার শেষ কথা।
পরে যখন অনেক সময় ভেবেছি, ঘটনাটা শুধু এভাবে ঘটল? কয়েকজন বহিষ্কৃত সেনাসদস্য কি তা ঘটাতে পারে? তা তো হতে পারে না। ঘটনার পেছনে কী কী ছিল?
কয়েকটা ঘটনা মনে পড়ল। একবার বঙ্গবন্ধু একটা ইংরেজিতে টাইপ করা চিঠি দিয়ে বললেন, ‘এটা নাও।’
নিলাম।
‘তোমার কাছে রাখো।’
আমি ওটা পড়তে গিয়ে দেখি, একটা ইয়ং অফিসার্স নামে টাইপ করা। তাতে সিনিয়র অফিসারদের কে কী চরিত্রের লোক, তার ব্যাখ্যা করা আছে। বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘আমি জানি। এদের প্রত্যেকের চরিত্র জানি। ওটা রেখে দাও।’
আমি এগুলো বাড়ি নিয়ে যাইনি। অফিসেই ছিল। ১৫ আগস্টের পর থেকে আমাদের গণভবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তাই কী হয়েছে সেই চিঠিটার, তা আর জানা হয়নি।
১৫ আগস্ট সকালে আমার মেয়েরা স্কুলে যাবে বলে তৈরি হচ্ছিল। ঘটনা শোনার পর আমি লাল টেলিফোনে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করলাম। যাঁরা বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা, নিরাপত্তার জন্য তথ্য সংগ্রহ করেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁদের টেলিফোন করেছি। এঁদের নাম এখন আর বলব না। তাঁরা মারা গেছেন।
প্রধম যাঁকে ফোন করলাম, তাঁদের একজন বললেন, ‘হ্যাঁ, তাই তো শুনছি। কিন্তু আমি তো কিছু বলতে পারব না।’
গোযেন্দা বিভাগের প্রধান বলেছেন, ‘শুনছি। দেখি।’
ফরাসউদ্দিন সে সময় বঙ্গবন্ধুর প্রাইভেট সেক্রেটারি-২ ছিল। ওকে ফোন করলাম। ফরাস প্রথম উৎসাহের সঙ্গে জানাল, ‘একদল লোক অভ্যুত্থান করার চেষ্টা করেছিল। জামিল ভাই (কর্নেল জামিল) ওদিকে চলে গেছেন। ৩২ নম্বরের দিকে। আমিও ওখানে যাচ্ছি।’
আমিও উৎসাহিত হলাম। ভাবলাম, অভ্যুত্থার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে।
কিন্তু পরে তো জানলাম, জামিল সাহেবকে ওখানেই সোবহানবাগ মসজিদের কাছে মেরে ফেলেছে। ফরাসকে পিটিয়েছে, তারপর বের করে দিয়েছে। আমি যখন ফরাসের কাছে পরে গেলাম, বুঝলাম, খুব ঝুঁকিপূর্ণভাবেই সে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিল। একজন বুরোক্র্যাট বা আমলা হিসেবে সে এতটা সাহসের পরিচয় দেবে, সেটা ভাবিনি।
সকালে ছোট ভাই বাচ্চুসহ বের হলাম। দেখতে চাইছিলাম, রাস্তায় লোকজন বের হয় কিনা। মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। মোদাব্বের সাহেবের রাড়ির কাছে গিয়ে শুনলাম বিহারিরা বলছে ‘এ লোগ ভাগ রাহা হায়।’ ওদের তাড়া করলাম। তখন দেখলাম, গাড়িতে কালো পোশাকের সৈন্য দল। বুঝলাম, আর বাইরে থাকা যায় না।
এর মধ্যে এসপি মাহবুবের একটা ফোন এল। লাল টেলিফোনে। তিনি আসলে ফোন করতে চেয়েছিলেন রক্ষীবাহিনীর সেকেন্ড ম্যান আর্মির কর্নেলকে। তিনিও মুক্তিযোদ্ধা। লাল টেলিফোন তাঁর কাছে যাওয়ার কথা। এসেছে আমার কাছে। মাহবুব বলছে, ‘আমি চেষ্টা করছি। দেখি কাকে কাকে অর্গানাইজ করতে পারি।’
এসপি মাহবুব তাঁর মতো করে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পেরে ওঠেননি।
বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ ফোন করেছিল। এনায়েতুল্লাহ খান খুব উৎসাহ নিয়ে ফোন করে বলেছে, ‘ইয়ং অফিসাররা দারুণ কাজ করে ফেলল। আপনার চিন্তা নেই, থাকেন।’
ফয়েজ আহমদ ফোন করে বললেন,‘ ঘটনা খুব গোলমেলে, সাবধানে থাকবেন।’
আর কেউ ফোন করেনি। আমি কিছু কিছু ফোন করেছি। যাঁদের জানার কথা, তাঁরা সবাই এমনভাবে কথাবার্তা বলেছেন যে মনে হয়েছে এঁরা প্যাসিভলি বা জেনেশুনে এই হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেছেন।
এখন কয়েকটি কথা মনে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর দিক থেকে কতগুলো জিনিস বলব। এ রকম ঘটনা তো জানার বা আলোচনা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু কেউ কেউ কি আগে থেকেই জানত?
১৫ আগস্টের ঘটনার আগে জুন মাসের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল। ৭ জুন বাকশালের একটা সরকারি ঘোষণা হলো। এখন যেখানে ডিএফপি অফিস, সেখানে আগে ছিল একটা অফিস, যেখানে আওয়ামী লীগ অফিস করল। বৃষ্টির মধ্যে সেখানে হাজারে হাজারে মানুষ দল বেঁধে বাকশালে জয়েন করতে এসেছিল। কাজ শেষ করে বঙ্গবন্ধু বাড়ি চলে এলেন। সঙ্গে এলাম আমি, হানিফ আর মহিউদ্দিন। বাড়িতে এসে বঙ্গবন্ধু তিনতলায় বসতেন। ওখানে বসে বারান্দামতো যে জায়গাটা আছে, সেখানে আলোচনা করতেন। আমি বঙ্গবন্ধুকে সেখানে রেখে নিচে এসে দেখি জিয়াউর রহমান বসে আছেন। বললাম, ‘আরে আপনি এখানে!’
জিয়াউর রহমান বললেন, ‘দেখেন তো তোয়াব সায়েব। বাকশালে আমার নাম নেই। এটা কী রকম কথা। আমি কেন বাকশালে থাকব না?’
বললাম, ‘দেখা করবেন?’
বললেন, ‘হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধুকে বলার জন্য এসেছি।’
বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়ে বললাম, ‘স্যার, জিয়াউর রহমান এসে বসে আছেন।’
বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘নিয়ে আস তারে।’
আমি জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর কাছে দিয়ে চলে এসেছি।
ব্যাপার হচ্ছে, পরবর্তীকালে বিভিন্ন ডকুমেন্ট আমি পড়েছি। তাদের মধ্যে একজনের কথা পড়েছি, যিনি ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে। চট্টগ্রামের একজন। জুলাই মাসের দিকে জিয়াউর রহমানকে জিডিআরের (তখনকার পূর্ব জার্মানি) অ্যামবাসেডর করে পাঠানোর কথা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান এক মাস সময় চেয়েছেন। বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়টা দেখেছি। এক মাস সময়। তখন জুন মাস। ঘটনাগুলো মেলালেই বোঝাই যায়।
১৫ আগস্ট-সংক্রান্ত দুটো বাক্য স্মরণীয় হয়ে থাকা উচিত। একটা হলো, একজন বঙ্গবন্ধুকে বলছেন ‘আপনি পালাতে পারেন নাকি দেখেন।’
বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বলা আরেকটা বাক্য, ‘সো হোয়াট? ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার।’
সব বাদ দিলাম। অসাংবিধানিকভাবে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে! সে কথাটাই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তোয়াব খান

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ১৫ আগস্ট। তার আগে ১৪ আগস্ট দিনটি ছিল ইভেন্টফুল, মানে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল ওই দিন। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা জিনিস পরিষ্কার, যা আমি অনেকবার বলেছি বা লিখেছি। ১৫ আগস্ট এক দিনে ঘটেনি। এর পেছনে আরও ষড়যন্ত্র ছিল, সেটা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। এবং তাতে কারা কারা জড়িত আর সেটা কীভাবে হতে পারে, তা যাঁরা জেনেছেন, বলারও চেষ্টা করেছেন।
মুশকিল হচ্ছে, দেশের মানুষের ওপর বঙ্গবন্ধুর খুব বেশি আস্থা ছিল। তিনি মনে করতেন, জাতির পিতাকে কেন কেউ হত্যা করবে? ১৪ আগস্টে ঘটনাটা হচ্ছে এ রকম, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু যাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাতে সমাবর্তন বক্তৃতা করতে হবে। বঙ্গবন্ধু আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি এক্সটেম্পোর বক্তৃতা করব, তোমরা শুধু পয়েন্টগুলো লিখে দেবে। কার্ডে মোটা মোটা অক্ষরে লিখে দেবে, যেন আমার দেখতে সুবিধা হয়।’
সন্ধ্যায় গণভবনে এলেন মোকাম্মেল হক, তিনি তখন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা সচিব। তারপর এলেন ম্যাক স্যার, মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, তিনি তখন শিক্ষামন্ত্রী। পরদিন কী হবে না-হবে, তার বিবরণ একটার পর একটা লেখা হচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে আমার সঙ্গে ছিলেন মাহবুব তালুকদার। তিনি তখন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রেস সেক্রেটারি। তিনি আমার সহকারী ছিলেন। উনি বঙ্গভবনে আবু সাঈদ চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করতেন। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্রপতি হলেন, তখন তিনি এখানে চলে এলেন।
যা হোক, সবাই মিলে পয়েন্টগুলো লেখা হতে লাগল।
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু মাঝে আমাকে ডাকলেন, ‘আসো এখানে।’ আমিও তখন পয়েন্টগুলো তৈরি করতে নোট নিচ্ছিলাম। আমি মাহবুব তালুকদারকে বললাম, ‘তুমি নোটগুলো নাও, আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে আসি।’
ইতিমধ্যে একটা টেলিফোন এল। ভারতীয় একটা হেলিকপ্টার বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল, সেটা নোয়াখালীর রামগতির কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে। বাজারে গুজব যে নিচে থেকে গুলি করে হেলিকপ্টারটিকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা এবং কীভাবে এটাকে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে, সেটা ঠিক করা দরকার। এটা শুধু আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার না, এটা খোদ যিনি রাষ্ট্রপতি এবং জাতির পিতা, তাঁর অনুমোদন দরকার। আমি প্রথমে ঘটনা জানার চেষ্টা করলাম। তখনকার দিনের বিমানবাহিনীর উপপ্রধান খাদেমুল বাশার আমাদের স্কুলের বন্ধু। আমি বাশারকে টেলিফোন করলাম ঘটনাটা আসলে কী, তা জানতে। বাশার আমাকে জানাল, ‘ভারতীয় হেলিকপ্টার যাচ্ছিল। রামগতিতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে গেছে। হেলিকপ্টারে যারা ছিল, তাদের লাশ ভারতে হস্তান্তর করার কাজ চলছে।’
আমি এটা জেনে বঙ্গবন্ধুর কাছে গেলাম। বললাম, ‘স্যার এ রকম ঘটনা।’
তিনি বললেন, ‘আমি জেনেছি।’ তারপর বললেন, ‘আমরা কী করব নিউজটা নিয়ে?’
এ কথা জিজ্ঞেস করার কারণ হলো, তখন দেশে জরুরি অবস্থা জারি আছে। তাই এ রকম খবর দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন এবং কীভাবে যাবে, সেটাও ঠিক করা দরকার। আমি বললাম, ‘এই নিউজটা কি যাবে?’
এখানে বঙ্গবন্ধুর যে নির্দেশনা, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বললেন, ‘দেখো, ঘটনা চেপে যেও না। জানিয়ে দাও, যা ঘটেছে। এতে আমাদের তো কিছু করার নেই। দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা লাশ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করছি।’
আমি বঙ্গবন্ধুর ঘর থেকে চলে এসে নিজের জায়গায় বসেছি। লিখছি, এ সময় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে ফোন এল: ‘আপনারা নিউজটা দিচ্ছেন কি?’
বললাম, ‘আমরা দিচ্ছি।’
‘দিচ্ছেন? এ সিদ্ধান্তটা কোন পর্যায়ের?’
আমার তখন একটু মনে হলো, এভাবে তিনি প্রশ্ন করছেন কেন? বললাম, ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের।’
ভারতের উদ্বেগের কারণ ছিল। তাদের দেশেও তখন জরুরি অবস্থা চলছিল। এ রকমভাবে বাংলাদেশে তাদের একটা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে, তাতে এত সৈন্য মারা পড়েছে, এই কৈফিয়ত তাদের দিতে হবে তো।
যাই হোক, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুর টেলিফোন করেছিলেন নিউজটা কীভাবে যাচ্ছে জানার জন্য। আমি তাঁকে বললাম, ‘আপনার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটা হচ্ছে বিএসএস আরেকটা পিআইডি। দু জায়গায়ই বলে দেওয়া হয়েছে। আপনাকে জানাবে।’
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু এসে আবার বললেন, ‘তোমরা সমাবর্তনের পয়েন্টসগুলো লেখো। পয়েন্টগুলো লেখা হলে তুমি রাতে জানাবে।’
আমরা যখন ওটা তৈরি করেছি, ওই দিন আবার গণভবনে একটা ডিনার ছিল। তখনকার দিনে ডিনার-টিনার এখনকার মতো করা যেত না। আমরা ১০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে এই ডিনারের আয়োজন করেছিলাম মশিউর রহমান, ফরাসউদ্দিন আর মনোয়ার হোসেনের বিদেশযাত্রা উপলক্ষে। তাঁরা হার্ভার্ড আর এমআইটিতে যাচ্ছিলেন ডক্টরেট করার জন্য। তাঁদের বিদায় জানানোর জন্য এই ডিনার। আমাদের সচিব যিনি ছিলেন, একজন হলেন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আবদুস সাত্তার আরেকজন সচিব আবদুর রহিম। তাঁরা বললেন, ডিনারে থাকতে পারবেন না। তাঁদের গুলশানে এক বাড়িতে দাওয়াত আছে, সেখানে যেতে হবে।
আমি বললাম, ‘ঠিক আছে।’
এরপর বাড়িতে চলে এসেছি। হাতে লিখতে হচ্ছে, তাই সময় লাগছিল। বাসায় বসে পয়েন্টগুলো লিখছি কার্ডে মোটা মোটা অক্ষরে।
এর মধ্যে রাত ১২টার পর বঙ্গবন্ধু টেলিফোন করেছেন, ‘কাল সকালে তাড়াড়াড়ি এসো। আমি এস্কটেম্পোর বক্তৃতা দেব।’ বিভিন্ন সময়ে আগেও বলেছেন, সেদিন সন্ধ্যায়ও বলেছেন, রাত ১২টার দিকেও বললেন, ‘একসময় ঢাকা ইউনিভার্সিটি আমাকে বহিষ্কার করেছিল। এরপর আমি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাইনি।’
বললেন, ‘আমার অনেক রাজনীতির কথাও বলার আছে ওখানে।’ বঙ্গবন্ধুর পয়েন্টসগুলোর মধ্যে খুব ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার ছিল। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু ম্যাক স্যারকে বলে দিয়েছিলেন, ‘এই বাংলাদেশে লেখাপড়া হয় কিন্তু গবেষণা হয় না। গবেষণার জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দীর নামে।’
আমাকে বললেন, ‘পয়েন্টগুলো ভালোভাবে লিখছ তো?’
বললাম, ‘হ্যাঁ।’
বললেন, ‘কাল সকাল সকাল চলে আসবে। এগুলো একবার দেখব। তারপর ইউনিভার্সিটিতে যাব।’
সকালে যখন গোলাগুলির শব্দ শুনলাম, তখন প্রথমে ধারণা হয়েছিল, নকশালরা গোলমাল করছে কিংবা সিরাজ শিকদারের লোকজন গোলমাল শুরু করেছে। যখন রেডিওতে ঘোষণা হয়েছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সবাই ভেঙে পড়েছে।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাত ১২টার দিকে সেটাই ছিল আমার শেষ কথা।
পরে যখন অনেক সময় ভেবেছি, ঘটনাটা শুধু এভাবে ঘটল? কয়েকজন বহিষ্কৃত সেনাসদস্য কি তা ঘটাতে পারে? তা তো হতে পারে না। ঘটনার পেছনে কী কী ছিল?
কয়েকটা ঘটনা মনে পড়ল। একবার বঙ্গবন্ধু একটা ইংরেজিতে টাইপ করা চিঠি দিয়ে বললেন, ‘এটা নাও।’
নিলাম।
‘তোমার কাছে রাখো।’
আমি ওটা পড়তে গিয়ে দেখি, একটা ইয়ং অফিসার্স নামে টাইপ করা। তাতে সিনিয়র অফিসারদের কে কী চরিত্রের লোক, তার ব্যাখ্যা করা আছে। বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘আমি জানি। এদের প্রত্যেকের চরিত্র জানি। ওটা রেখে দাও।’
আমি এগুলো বাড়ি নিয়ে যাইনি। অফিসেই ছিল। ১৫ আগস্টের পর থেকে আমাদের গণভবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তাই কী হয়েছে সেই চিঠিটার, তা আর জানা হয়নি।
১৫ আগস্ট সকালে আমার মেয়েরা স্কুলে যাবে বলে তৈরি হচ্ছিল। ঘটনা শোনার পর আমি লাল টেলিফোনে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করলাম। যাঁরা বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা, নিরাপত্তার জন্য তথ্য সংগ্রহ করেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁদের টেলিফোন করেছি। এঁদের নাম এখন আর বলব না। তাঁরা মারা গেছেন।
প্রধম যাঁকে ফোন করলাম, তাঁদের একজন বললেন, ‘হ্যাঁ, তাই তো শুনছি। কিন্তু আমি তো কিছু বলতে পারব না।’
গোযেন্দা বিভাগের প্রধান বলেছেন, ‘শুনছি। দেখি।’
ফরাসউদ্দিন সে সময় বঙ্গবন্ধুর প্রাইভেট সেক্রেটারি-২ ছিল। ওকে ফোন করলাম। ফরাস প্রথম উৎসাহের সঙ্গে জানাল, ‘একদল লোক অভ্যুত্থান করার চেষ্টা করেছিল। জামিল ভাই (কর্নেল জামিল) ওদিকে চলে গেছেন। ৩২ নম্বরের দিকে। আমিও ওখানে যাচ্ছি।’
আমিও উৎসাহিত হলাম। ভাবলাম, অভ্যুত্থার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে।
কিন্তু পরে তো জানলাম, জামিল সাহেবকে ওখানেই সোবহানবাগ মসজিদের কাছে মেরে ফেলেছে। ফরাসকে পিটিয়েছে, তারপর বের করে দিয়েছে। আমি যখন ফরাসের কাছে পরে গেলাম, বুঝলাম, খুব ঝুঁকিপূর্ণভাবেই সে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিল। একজন বুরোক্র্যাট বা আমলা হিসেবে সে এতটা সাহসের পরিচয় দেবে, সেটা ভাবিনি।
সকালে ছোট ভাই বাচ্চুসহ বের হলাম। দেখতে চাইছিলাম, রাস্তায় লোকজন বের হয় কিনা। মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। মোদাব্বের সাহেবের রাড়ির কাছে গিয়ে শুনলাম বিহারিরা বলছে ‘এ লোগ ভাগ রাহা হায়।’ ওদের তাড়া করলাম। তখন দেখলাম, গাড়িতে কালো পোশাকের সৈন্য দল। বুঝলাম, আর বাইরে থাকা যায় না।
এর মধ্যে এসপি মাহবুবের একটা ফোন এল। লাল টেলিফোনে। তিনি আসলে ফোন করতে চেয়েছিলেন রক্ষীবাহিনীর সেকেন্ড ম্যান আর্মির কর্নেলকে। তিনিও মুক্তিযোদ্ধা। লাল টেলিফোন তাঁর কাছে যাওয়ার কথা। এসেছে আমার কাছে। মাহবুব বলছে, ‘আমি চেষ্টা করছি। দেখি কাকে কাকে অর্গানাইজ করতে পারি।’
এসপি মাহবুব তাঁর মতো করে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পেরে ওঠেননি।
বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ ফোন করেছিল। এনায়েতুল্লাহ খান খুব উৎসাহ নিয়ে ফোন করে বলেছে, ‘ইয়ং অফিসাররা দারুণ কাজ করে ফেলল। আপনার চিন্তা নেই, থাকেন।’
ফয়েজ আহমদ ফোন করে বললেন,‘ ঘটনা খুব গোলমেলে, সাবধানে থাকবেন।’
আর কেউ ফোন করেনি। আমি কিছু কিছু ফোন করেছি। যাঁদের জানার কথা, তাঁরা সবাই এমনভাবে কথাবার্তা বলেছেন যে মনে হয়েছে এঁরা প্যাসিভলি বা জেনেশুনে এই হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেছেন।
এখন কয়েকটি কথা মনে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর দিক থেকে কতগুলো জিনিস বলব। এ রকম ঘটনা তো জানার বা আলোচনা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু কেউ কেউ কি আগে থেকেই জানত?
১৫ আগস্টের ঘটনার আগে জুন মাসের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল। ৭ জুন বাকশালের একটা সরকারি ঘোষণা হলো। এখন যেখানে ডিএফপি অফিস, সেখানে আগে ছিল একটা অফিস, যেখানে আওয়ামী লীগ অফিস করল। বৃষ্টির মধ্যে সেখানে হাজারে হাজারে মানুষ দল বেঁধে বাকশালে জয়েন করতে এসেছিল। কাজ শেষ করে বঙ্গবন্ধু বাড়ি চলে এলেন। সঙ্গে এলাম আমি, হানিফ আর মহিউদ্দিন। বাড়িতে এসে বঙ্গবন্ধু তিনতলায় বসতেন। ওখানে বসে বারান্দামতো যে জায়গাটা আছে, সেখানে আলোচনা করতেন। আমি বঙ্গবন্ধুকে সেখানে রেখে নিচে এসে দেখি জিয়াউর রহমান বসে আছেন। বললাম, ‘আরে আপনি এখানে!’
জিয়াউর রহমান বললেন, ‘দেখেন তো তোয়াব সায়েব। বাকশালে আমার নাম নেই। এটা কী রকম কথা। আমি কেন বাকশালে থাকব না?’
বললাম, ‘দেখা করবেন?’
বললেন, ‘হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধুকে বলার জন্য এসেছি।’
বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়ে বললাম, ‘স্যার, জিয়াউর রহমান এসে বসে আছেন।’
বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘নিয়ে আস তারে।’
আমি জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর কাছে দিয়ে চলে এসেছি।
ব্যাপার হচ্ছে, পরবর্তীকালে বিভিন্ন ডকুমেন্ট আমি পড়েছি। তাদের মধ্যে একজনের কথা পড়েছি, যিনি ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে। চট্টগ্রামের একজন। জুলাই মাসের দিকে জিয়াউর রহমানকে জিডিআরের (তখনকার পূর্ব জার্মানি) অ্যামবাসেডর করে পাঠানোর কথা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান এক মাস সময় চেয়েছেন। বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়টা দেখেছি। এক মাস সময়। তখন জুন মাস। ঘটনাগুলো মেলালেই বোঝাই যায়।
১৫ আগস্ট-সংক্রান্ত দুটো বাক্য স্মরণীয় হয়ে থাকা উচিত। একটা হলো, একজন বঙ্গবন্ধুকে বলছেন ‘আপনি পালাতে পারেন নাকি দেখেন।’
বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বলা আরেকটা বাক্য, ‘সো হোয়াট? ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার।’
সব বাদ দিলাম। অসাংবিধানিকভাবে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে! সে কথাটাই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ১৫ আগস্ট। তার আগে ১৪ আগস্ট দিনটি ছিল ইভেন্টফুল, মানে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল ওই দিন। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা জিনিস পরিষ্কার, যা আমি অনেকবার বলেছি বা লিখেছি। ১৫ আগস্ট এক দিনে ঘটেনি। এর পেছনে আরও ষড়যন্ত্র ছিল, সেটা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। এবং তাতে কারা কারা জড়িত আর সেটা কীভাবে হতে পারে, তা যাঁরা জেনেছেন, বলারও চেষ্টা করেছেন।
মুশকিল হচ্ছে, দেশের মানুষের ওপর বঙ্গবন্ধুর খুব বেশি আস্থা ছিল। তিনি মনে করতেন, জাতির পিতাকে কেন কেউ হত্যা করবে? ১৪ আগস্টে ঘটনাটা হচ্ছে এ রকম, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু যাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাতে সমাবর্তন বক্তৃতা করতে হবে। বঙ্গবন্ধু আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি এক্সটেম্পোর বক্তৃতা করব, তোমরা শুধু পয়েন্টগুলো লিখে দেবে। কার্ডে মোটা মোটা অক্ষরে লিখে দেবে, যেন আমার দেখতে সুবিধা হয়।’
সন্ধ্যায় গণভবনে এলেন মোকাম্মেল হক, তিনি তখন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা সচিব। তারপর এলেন ম্যাক স্যার, মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, তিনি তখন শিক্ষামন্ত্রী। পরদিন কী হবে না-হবে, তার বিবরণ একটার পর একটা লেখা হচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে আমার সঙ্গে ছিলেন মাহবুব তালুকদার। তিনি তখন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রেস সেক্রেটারি। তিনি আমার সহকারী ছিলেন। উনি বঙ্গভবনে আবু সাঈদ চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করতেন। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্রপতি হলেন, তখন তিনি এখানে চলে এলেন।
যা হোক, সবাই মিলে পয়েন্টগুলো লেখা হতে লাগল।
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু মাঝে আমাকে ডাকলেন, ‘আসো এখানে।’ আমিও তখন পয়েন্টগুলো তৈরি করতে নোট নিচ্ছিলাম। আমি মাহবুব তালুকদারকে বললাম, ‘তুমি নোটগুলো নাও, আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে আসি।’
ইতিমধ্যে একটা টেলিফোন এল। ভারতীয় একটা হেলিকপ্টার বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল, সেটা নোয়াখালীর রামগতির কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে। বাজারে গুজব যে নিচে থেকে গুলি করে হেলিকপ্টারটিকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা এবং কীভাবে এটাকে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে, সেটা ঠিক করা দরকার। এটা শুধু আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার না, এটা খোদ যিনি রাষ্ট্রপতি এবং জাতির পিতা, তাঁর অনুমোদন দরকার। আমি প্রথমে ঘটনা জানার চেষ্টা করলাম। তখনকার দিনের বিমানবাহিনীর উপপ্রধান খাদেমুল বাশার আমাদের স্কুলের বন্ধু। আমি বাশারকে টেলিফোন করলাম ঘটনাটা আসলে কী, তা জানতে। বাশার আমাকে জানাল, ‘ভারতীয় হেলিকপ্টার যাচ্ছিল। রামগতিতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে গেছে। হেলিকপ্টারে যারা ছিল, তাদের লাশ ভারতে হস্তান্তর করার কাজ চলছে।’
আমি এটা জেনে বঙ্গবন্ধুর কাছে গেলাম। বললাম, ‘স্যার এ রকম ঘটনা।’
তিনি বললেন, ‘আমি জেনেছি।’ তারপর বললেন, ‘আমরা কী করব নিউজটা নিয়ে?’
এ কথা জিজ্ঞেস করার কারণ হলো, তখন দেশে জরুরি অবস্থা জারি আছে। তাই এ রকম খবর দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন এবং কীভাবে যাবে, সেটাও ঠিক করা দরকার। আমি বললাম, ‘এই নিউজটা কি যাবে?’
এখানে বঙ্গবন্ধুর যে নির্দেশনা, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বললেন, ‘দেখো, ঘটনা চেপে যেও না। জানিয়ে দাও, যা ঘটেছে। এতে আমাদের তো কিছু করার নেই। দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা লাশ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করছি।’
আমি বঙ্গবন্ধুর ঘর থেকে চলে এসে নিজের জায়গায় বসেছি। লিখছি, এ সময় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে ফোন এল: ‘আপনারা নিউজটা দিচ্ছেন কি?’
বললাম, ‘আমরা দিচ্ছি।’
‘দিচ্ছেন? এ সিদ্ধান্তটা কোন পর্যায়ের?’
আমার তখন একটু মনে হলো, এভাবে তিনি প্রশ্ন করছেন কেন? বললাম, ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের।’
ভারতের উদ্বেগের কারণ ছিল। তাদের দেশেও তখন জরুরি অবস্থা চলছিল। এ রকমভাবে বাংলাদেশে তাদের একটা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে, তাতে এত সৈন্য মারা পড়েছে, এই কৈফিয়ত তাদের দিতে হবে তো।
যাই হোক, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুর টেলিফোন করেছিলেন নিউজটা কীভাবে যাচ্ছে জানার জন্য। আমি তাঁকে বললাম, ‘আপনার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটা হচ্ছে বিএসএস আরেকটা পিআইডি। দু জায়গায়ই বলে দেওয়া হয়েছে। আপনাকে জানাবে।’
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু এসে আবার বললেন, ‘তোমরা সমাবর্তনের পয়েন্টসগুলো লেখো। পয়েন্টগুলো লেখা হলে তুমি রাতে জানাবে।’
আমরা যখন ওটা তৈরি করেছি, ওই দিন আবার গণভবনে একটা ডিনার ছিল। তখনকার দিনে ডিনার-টিনার এখনকার মতো করা যেত না। আমরা ১০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে এই ডিনারের আয়োজন করেছিলাম মশিউর রহমান, ফরাসউদ্দিন আর মনোয়ার হোসেনের বিদেশযাত্রা উপলক্ষে। তাঁরা হার্ভার্ড আর এমআইটিতে যাচ্ছিলেন ডক্টরেট করার জন্য। তাঁদের বিদায় জানানোর জন্য এই ডিনার। আমাদের সচিব যিনি ছিলেন, একজন হলেন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আবদুস সাত্তার আরেকজন সচিব আবদুর রহিম। তাঁরা বললেন, ডিনারে থাকতে পারবেন না। তাঁদের গুলশানে এক বাড়িতে দাওয়াত আছে, সেখানে যেতে হবে।
আমি বললাম, ‘ঠিক আছে।’
এরপর বাড়িতে চলে এসেছি। হাতে লিখতে হচ্ছে, তাই সময় লাগছিল। বাসায় বসে পয়েন্টগুলো লিখছি কার্ডে মোটা মোটা অক্ষরে।
এর মধ্যে রাত ১২টার পর বঙ্গবন্ধু টেলিফোন করেছেন, ‘কাল সকালে তাড়াড়াড়ি এসো। আমি এস্কটেম্পোর বক্তৃতা দেব।’ বিভিন্ন সময়ে আগেও বলেছেন, সেদিন সন্ধ্যায়ও বলেছেন, রাত ১২টার দিকেও বললেন, ‘একসময় ঢাকা ইউনিভার্সিটি আমাকে বহিষ্কার করেছিল। এরপর আমি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাইনি।’
বললেন, ‘আমার অনেক রাজনীতির কথাও বলার আছে ওখানে।’ বঙ্গবন্ধুর পয়েন্টসগুলোর মধ্যে খুব ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার ছিল। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু ম্যাক স্যারকে বলে দিয়েছিলেন, ‘এই বাংলাদেশে লেখাপড়া হয় কিন্তু গবেষণা হয় না। গবেষণার জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দীর নামে।’
আমাকে বললেন, ‘পয়েন্টগুলো ভালোভাবে লিখছ তো?’
বললাম, ‘হ্যাঁ।’
বললেন, ‘কাল সকাল সকাল চলে আসবে। এগুলো একবার দেখব। তারপর ইউনিভার্সিটিতে যাব।’
সকালে যখন গোলাগুলির শব্দ শুনলাম, তখন প্রথমে ধারণা হয়েছিল, নকশালরা গোলমাল করছে কিংবা সিরাজ শিকদারের লোকজন গোলমাল শুরু করেছে। যখন রেডিওতে ঘোষণা হয়েছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সবাই ভেঙে পড়েছে।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাত ১২টার দিকে সেটাই ছিল আমার শেষ কথা।
পরে যখন অনেক সময় ভেবেছি, ঘটনাটা শুধু এভাবে ঘটল? কয়েকজন বহিষ্কৃত সেনাসদস্য কি তা ঘটাতে পারে? তা তো হতে পারে না। ঘটনার পেছনে কী কী ছিল?
কয়েকটা ঘটনা মনে পড়ল। একবার বঙ্গবন্ধু একটা ইংরেজিতে টাইপ করা চিঠি দিয়ে বললেন, ‘এটা নাও।’
নিলাম।
‘তোমার কাছে রাখো।’
আমি ওটা পড়তে গিয়ে দেখি, একটা ইয়ং অফিসার্স নামে টাইপ করা। তাতে সিনিয়র অফিসারদের কে কী চরিত্রের লোক, তার ব্যাখ্যা করা আছে। বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘আমি জানি। এদের প্রত্যেকের চরিত্র জানি। ওটা রেখে দাও।’
আমি এগুলো বাড়ি নিয়ে যাইনি। অফিসেই ছিল। ১৫ আগস্টের পর থেকে আমাদের গণভবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তাই কী হয়েছে সেই চিঠিটার, তা আর জানা হয়নি।
১৫ আগস্ট সকালে আমার মেয়েরা স্কুলে যাবে বলে তৈরি হচ্ছিল। ঘটনা শোনার পর আমি লাল টেলিফোনে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করলাম। যাঁরা বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা, নিরাপত্তার জন্য তথ্য সংগ্রহ করেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁদের টেলিফোন করেছি। এঁদের নাম এখন আর বলব না। তাঁরা মারা গেছেন।
প্রধম যাঁকে ফোন করলাম, তাঁদের একজন বললেন, ‘হ্যাঁ, তাই তো শুনছি। কিন্তু আমি তো কিছু বলতে পারব না।’
গোযেন্দা বিভাগের প্রধান বলেছেন, ‘শুনছি। দেখি।’
ফরাসউদ্দিন সে সময় বঙ্গবন্ধুর প্রাইভেট সেক্রেটারি-২ ছিল। ওকে ফোন করলাম। ফরাস প্রথম উৎসাহের সঙ্গে জানাল, ‘একদল লোক অভ্যুত্থান করার চেষ্টা করেছিল। জামিল ভাই (কর্নেল জামিল) ওদিকে চলে গেছেন। ৩২ নম্বরের দিকে। আমিও ওখানে যাচ্ছি।’
আমিও উৎসাহিত হলাম। ভাবলাম, অভ্যুত্থার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে।
কিন্তু পরে তো জানলাম, জামিল সাহেবকে ওখানেই সোবহানবাগ মসজিদের কাছে মেরে ফেলেছে। ফরাসকে পিটিয়েছে, তারপর বের করে দিয়েছে। আমি যখন ফরাসের কাছে পরে গেলাম, বুঝলাম, খুব ঝুঁকিপূর্ণভাবেই সে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিল। একজন বুরোক্র্যাট বা আমলা হিসেবে সে এতটা সাহসের পরিচয় দেবে, সেটা ভাবিনি।
সকালে ছোট ভাই বাচ্চুসহ বের হলাম। দেখতে চাইছিলাম, রাস্তায় লোকজন বের হয় কিনা। মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। মোদাব্বের সাহেবের রাড়ির কাছে গিয়ে শুনলাম বিহারিরা বলছে ‘এ লোগ ভাগ রাহা হায়।’ ওদের তাড়া করলাম। তখন দেখলাম, গাড়িতে কালো পোশাকের সৈন্য দল। বুঝলাম, আর বাইরে থাকা যায় না।
এর মধ্যে এসপি মাহবুবের একটা ফোন এল। লাল টেলিফোনে। তিনি আসলে ফোন করতে চেয়েছিলেন রক্ষীবাহিনীর সেকেন্ড ম্যান আর্মির কর্নেলকে। তিনিও মুক্তিযোদ্ধা। লাল টেলিফোন তাঁর কাছে যাওয়ার কথা। এসেছে আমার কাছে। মাহবুব বলছে, ‘আমি চেষ্টা করছি। দেখি কাকে কাকে অর্গানাইজ করতে পারি।’
এসপি মাহবুব তাঁর মতো করে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পেরে ওঠেননি।
বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ ফোন করেছিল। এনায়েতুল্লাহ খান খুব উৎসাহ নিয়ে ফোন করে বলেছে, ‘ইয়ং অফিসাররা দারুণ কাজ করে ফেলল। আপনার চিন্তা নেই, থাকেন।’
ফয়েজ আহমদ ফোন করে বললেন,‘ ঘটনা খুব গোলমেলে, সাবধানে থাকবেন।’
আর কেউ ফোন করেনি। আমি কিছু কিছু ফোন করেছি। যাঁদের জানার কথা, তাঁরা সবাই এমনভাবে কথাবার্তা বলেছেন যে মনে হয়েছে এঁরা প্যাসিভলি বা জেনেশুনে এই হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেছেন।
এখন কয়েকটি কথা মনে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর দিক থেকে কতগুলো জিনিস বলব। এ রকম ঘটনা তো জানার বা আলোচনা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু কেউ কেউ কি আগে থেকেই জানত?
১৫ আগস্টের ঘটনার আগে জুন মাসের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল। ৭ জুন বাকশালের একটা সরকারি ঘোষণা হলো। এখন যেখানে ডিএফপি অফিস, সেখানে আগে ছিল একটা অফিস, যেখানে আওয়ামী লীগ অফিস করল। বৃষ্টির মধ্যে সেখানে হাজারে হাজারে মানুষ দল বেঁধে বাকশালে জয়েন করতে এসেছিল। কাজ শেষ করে বঙ্গবন্ধু বাড়ি চলে এলেন। সঙ্গে এলাম আমি, হানিফ আর মহিউদ্দিন। বাড়িতে এসে বঙ্গবন্ধু তিনতলায় বসতেন। ওখানে বসে বারান্দামতো যে জায়গাটা আছে, সেখানে আলোচনা করতেন। আমি বঙ্গবন্ধুকে সেখানে রেখে নিচে এসে দেখি জিয়াউর রহমান বসে আছেন। বললাম, ‘আরে আপনি এখানে!’
জিয়াউর রহমান বললেন, ‘দেখেন তো তোয়াব সায়েব। বাকশালে আমার নাম নেই। এটা কী রকম কথা। আমি কেন বাকশালে থাকব না?’
বললাম, ‘দেখা করবেন?’
বললেন, ‘হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধুকে বলার জন্য এসেছি।’
বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়ে বললাম, ‘স্যার, জিয়াউর রহমান এসে বসে আছেন।’
বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘নিয়ে আস তারে।’
আমি জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর কাছে দিয়ে চলে এসেছি।
ব্যাপার হচ্ছে, পরবর্তীকালে বিভিন্ন ডকুমেন্ট আমি পড়েছি। তাদের মধ্যে একজনের কথা পড়েছি, যিনি ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে। চট্টগ্রামের একজন। জুলাই মাসের দিকে জিয়াউর রহমানকে জিডিআরের (তখনকার পূর্ব জার্মানি) অ্যামবাসেডর করে পাঠানোর কথা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান এক মাস সময় চেয়েছেন। বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়টা দেখেছি। এক মাস সময়। তখন জুন মাস। ঘটনাগুলো মেলালেই বোঝাই যায়।
১৫ আগস্ট-সংক্রান্ত দুটো বাক্য স্মরণীয় হয়ে থাকা উচিত। একটা হলো, একজন বঙ্গবন্ধুকে বলছেন ‘আপনি পালাতে পারেন নাকি দেখেন।’
বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বলা আরেকটা বাক্য, ‘সো হোয়াট? ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার।’
সব বাদ দিলাম। অসাংবিধানিকভাবে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে! সে কথাটাই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ১৫ আগস্ট। তার আগে ১৪ আগস্ট দিনটি ছিল ইভেন্টফুল, মানে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল ওই দিন। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা জিনিস পরিষ্কার, যা আমি অনেকবার বলেছি বা লিখেছি। ১৫ আগস্ট এক দিনে ঘটেনি।
১৫ আগস্ট ২০২১
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ১৫ আগস্ট। তার আগে ১৪ আগস্ট দিনটি ছিল ইভেন্টফুল, মানে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল ওই দিন। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা জিনিস পরিষ্কার, যা আমি অনেকবার বলেছি বা লিখেছি। ১৫ আগস্ট এক দিনে ঘটেনি।
১৫ আগস্ট ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ১৫ আগস্ট। তার আগে ১৪ আগস্ট দিনটি ছিল ইভেন্টফুল, মানে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল ওই দিন। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা জিনিস পরিষ্কার, যা আমি অনেকবার বলেছি বা লিখেছি। ১৫ আগস্ট এক দিনে ঘটেনি।
১৫ আগস্ট ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ১৫ আগস্ট। তার আগে ১৪ আগস্ট দিনটি ছিল ইভেন্টফুল, মানে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল ওই দিন। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা জিনিস পরিষ্কার, যা আমি অনেকবার বলেছি বা লিখেছি। ১৫ আগস্ট এক দিনে ঘটেনি।
১৫ আগস্ট ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫