ড. নূরুন নবী, মুক্তিযোদ্ধা

আসলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যারা যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষ ছিল। একটা ছিল জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যাওয়া। আরেকটা ছিল, পরিস্থিতির শিকার হয়ে। আরেকটা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য। আমি ছিলাম প্রথম ক্যাটাগরিতে—জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলাম। ব্যাখ্যা করে বলি, যখন বেড়ে উঠছিলাম তখন আমাদের চারপাশে অর্থনৈতিক অবনতি দৃশ্যমান হচ্ছিল গ্রাম-শহরে মানুষের জীবনে। আমার মনে প্রশ্ন ছিল, পশ্চিম পাকিস্তান সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, আমরা কেন পেছনে যাচ্ছি?
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার শুরুতেই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন, পাকিস্তানের কাঠামোয় বাঙালিদের ভাগ্যের কোনো উন্নতি হবে না। কারণ, অর্থনৈতিক বৈষম্য, রাজনৈতিক বৈষম্য দুই প্রদেশের মধ্যে বেড়েই চলছিল। পূর্ব বাংলার বাঙালি নাগরিকেরা পাকিস্তানের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বাঙালিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক সমাধানে ছয় দফা, তথা স্বায়ত্ত-শাসনের দাবি উত্থাপন করেন। ৬ দফায় যে দফাগুলো ছিল, সেগুলো বাস্তবায়িত হলে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অস্তিত্ব দুর্বল হয়ে যেত এবং যেকোনো সময় পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারত।
এ বিষয়টি বঙ্গবন্ধু যেমন বুঝতেন, পাকিস্তানি শাসকেরাও বুঝতেন। কাজেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ছয় দফাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন মেনে নিতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু জানতেন, আন্দোলন করে বাঙালিদের স্বাধিকার আদায় করতে হবে। এ লক্ষ্যেই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এ লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু ভাষা-আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা ছয় দফাকে নস্যাৎ করার জন্য এবং আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।
আমি সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রলীগের কর্মী। আমরা ছাত্রসমাজ ১১ দফা আন্দোলনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করতে সরকারকে বাধ্য করি, আইয়ুব শাহির বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়, আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন, ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়া হয়। আইয়ুব খান পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন আরেক সেনাপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে। ইয়াহিয়া খান জনগণের চাপে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন।
নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ছয় দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনা করার ম্যান্ডেট পান এবং তিনিই যে পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী, সেটাও প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ইয়াহিয়া খান এবং নির্বাচনে সংখ্যালঘিষ্ঠ দলনেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার জন্য ষড়যন্ত্র করেন। ৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন একতরফাভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধু স্পষ্ট বুঝতে পারেন, তাঁর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। বাঙালি জাতি সেই ডাকে সাড়া দেয়। ইয়াহিয়া খান আলোচনার নামে ঢাকায় এসে সময়ক্ষেপণ করেন এবং গোপনে গভীর রাতে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র ও সৈন্য আনতে শুরু করেন। ২৬ মার্চ রাতে পূর্ব বাংলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সামরিক আক্রমণ চালান। শুরু হয় বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের গণহত্যা। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
আমরা যাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে যে তিনটি বিষয় উল্লেখ করেছিলেন, তা হৃদয়ে ধারণ করেছিলাম। তার একটি হলো, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তিনি আরও বলেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’; ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশা আল্লাহ।’ জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা যখন এই বাক্যগুলো উচ্চারণ করেন, আমরা যাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, তাঁদের কাছে এটাই ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। যুদ্ধে যাওয়া ও ত্যাগ স্বীকারের ঘোষণা। ২৬ মার্চের সামরিক অভিযানের পরই বাঙালিরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক, রাজনৈতিক কর্মী এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালি সৈন্যরা যুদ্ধে যোগ দেন। গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী।
নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে এবং ভারতীয় বাহিনীর সহযোগিতায় আমরা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করি। যদিও নয় মাসের যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ছিলেন, তাঁর আহ্বানেই আমরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিই এবং স্বাধীনতা অর্জন করি।
স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বনেতাদের চাপে বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং বাংলাদেশে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করেন। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশকে একটি আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেমন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশন, শাসনতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুনর্গঠন, বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি লাভ এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের দেশে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য যখন তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন, দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখনই দেশ-বিদেশের পরাজিত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি দুজন মেজরের নেতৃত্বে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। তাঁর দুই কন্যা বিদেশে অবস্থান করায় বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে একটি মিনি পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত যে চারটি স্তম্ভ, সেগুলো পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সেটি মেনে নেয়নি। আন্দোলনের মাধ্যমে পঁচাত্তর-পরবর্তী সামরিক সরকার ও বিএনপি সরকারকে পরাজিত করে বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে পুনর্গঠনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির প্রাণের দাবি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়ে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট গ্রহণ করেন। অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশে বিরাজ করছে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের যে অন্যতম স্তম্ভ, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা গঠনের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সম্প্রতি কুমিল্লাসহ বেশ কিছু এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে, এটা তারই উদাহরণ।
মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িকতার যে অঙ্গীকার করা হয়েছিল, তা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না। এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
গত ৫০ বছরে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। আরও অনেক কিছু অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। যেমন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং সব মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির ব্যবস্থা করা আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষ ৫৪ হাজার বর্গমাইল এলাকায় বাস করে। এ রকম একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে অনেক সমস্যা আছে, সমাধান করা খুবই কঠিন। জটিল সমস্যাগুলো সমাধানের কোনো সহজ উপায় নেই। কিন্তু আমরা যদি বদ্ধপরিকর হই, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার মনে রাখি, তাহলে আমরা এর সমাধান করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে যেসব বিষয় ছিল, তার একটি হলো দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। দুর্নীতি এবং আইনের শাসন একসঙ্গে চলতে পারে না। দুর্নীতির ব্যাপারে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে কথাটি বলেন, জিরো টলারেন্স, সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ, শান্তিপূর্ণ, উন্নয়নশীল ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত হলো দুর্নীতিমুক্ত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাদের স্বাধীনতার জন্য বাঙালি জাতির যে ত্যাগ আমি স্বচক্ষে দেখেছি, ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখের বেশি মা-বোনের নির্যাতন এবং স্বাধীনতার জন্য জনগণের যে ত্যাগ-তিতিক্ষা, সেটা পৃথিবীর স্বাধীনতার ইতিহাসে বিরল। আমরা যদি এই বিপুল বিশাল ত্যাগের কথা নতুন প্রজন্মকে না জানাতে পারি, তাহলে তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে না। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনের জন্য সোনার ছেলে দরকার। মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা আত্মস্থ না করলে সোনার ছেলে গড়ে উঠবে না। সে জন্য আমি মনে করি এবং ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার।
ড. নূরুন নবী, মুক্তিযোদ্ধা, সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

আসলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যারা যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষ ছিল। একটা ছিল জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যাওয়া। আরেকটা ছিল, পরিস্থিতির শিকার হয়ে। আরেকটা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য। আমি ছিলাম প্রথম ক্যাটাগরিতে—জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলাম। ব্যাখ্যা করে বলি, যখন বেড়ে উঠছিলাম তখন আমাদের চারপাশে অর্থনৈতিক অবনতি দৃশ্যমান হচ্ছিল গ্রাম-শহরে মানুষের জীবনে। আমার মনে প্রশ্ন ছিল, পশ্চিম পাকিস্তান সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, আমরা কেন পেছনে যাচ্ছি?
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার শুরুতেই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন, পাকিস্তানের কাঠামোয় বাঙালিদের ভাগ্যের কোনো উন্নতি হবে না। কারণ, অর্থনৈতিক বৈষম্য, রাজনৈতিক বৈষম্য দুই প্রদেশের মধ্যে বেড়েই চলছিল। পূর্ব বাংলার বাঙালি নাগরিকেরা পাকিস্তানের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বাঙালিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক সমাধানে ছয় দফা, তথা স্বায়ত্ত-শাসনের দাবি উত্থাপন করেন। ৬ দফায় যে দফাগুলো ছিল, সেগুলো বাস্তবায়িত হলে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অস্তিত্ব দুর্বল হয়ে যেত এবং যেকোনো সময় পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারত।
এ বিষয়টি বঙ্গবন্ধু যেমন বুঝতেন, পাকিস্তানি শাসকেরাও বুঝতেন। কাজেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ছয় দফাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন মেনে নিতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু জানতেন, আন্দোলন করে বাঙালিদের স্বাধিকার আদায় করতে হবে। এ লক্ষ্যেই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এ লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু ভাষা-আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা ছয় দফাকে নস্যাৎ করার জন্য এবং আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।
আমি সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রলীগের কর্মী। আমরা ছাত্রসমাজ ১১ দফা আন্দোলনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করতে সরকারকে বাধ্য করি, আইয়ুব শাহির বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়, আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন, ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়া হয়। আইয়ুব খান পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন আরেক সেনাপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে। ইয়াহিয়া খান জনগণের চাপে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন।
নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ছয় দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনা করার ম্যান্ডেট পান এবং তিনিই যে পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী, সেটাও প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ইয়াহিয়া খান এবং নির্বাচনে সংখ্যালঘিষ্ঠ দলনেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার জন্য ষড়যন্ত্র করেন। ৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন একতরফাভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধু স্পষ্ট বুঝতে পারেন, তাঁর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। বাঙালি জাতি সেই ডাকে সাড়া দেয়। ইয়াহিয়া খান আলোচনার নামে ঢাকায় এসে সময়ক্ষেপণ করেন এবং গোপনে গভীর রাতে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র ও সৈন্য আনতে শুরু করেন। ২৬ মার্চ রাতে পূর্ব বাংলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সামরিক আক্রমণ চালান। শুরু হয় বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের গণহত্যা। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
আমরা যাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে যে তিনটি বিষয় উল্লেখ করেছিলেন, তা হৃদয়ে ধারণ করেছিলাম। তার একটি হলো, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তিনি আরও বলেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’; ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশা আল্লাহ।’ জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা যখন এই বাক্যগুলো উচ্চারণ করেন, আমরা যাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, তাঁদের কাছে এটাই ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। যুদ্ধে যাওয়া ও ত্যাগ স্বীকারের ঘোষণা। ২৬ মার্চের সামরিক অভিযানের পরই বাঙালিরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক, রাজনৈতিক কর্মী এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালি সৈন্যরা যুদ্ধে যোগ দেন। গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী।
নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে এবং ভারতীয় বাহিনীর সহযোগিতায় আমরা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করি। যদিও নয় মাসের যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ছিলেন, তাঁর আহ্বানেই আমরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিই এবং স্বাধীনতা অর্জন করি।
স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বনেতাদের চাপে বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং বাংলাদেশে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করেন। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশকে একটি আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেমন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশন, শাসনতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুনর্গঠন, বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি লাভ এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের দেশে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য যখন তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন, দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখনই দেশ-বিদেশের পরাজিত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি দুজন মেজরের নেতৃত্বে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। তাঁর দুই কন্যা বিদেশে অবস্থান করায় বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে একটি মিনি পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত যে চারটি স্তম্ভ, সেগুলো পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সেটি মেনে নেয়নি। আন্দোলনের মাধ্যমে পঁচাত্তর-পরবর্তী সামরিক সরকার ও বিএনপি সরকারকে পরাজিত করে বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে পুনর্গঠনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির প্রাণের দাবি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়ে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট গ্রহণ করেন। অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশে বিরাজ করছে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের যে অন্যতম স্তম্ভ, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা গঠনের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সম্প্রতি কুমিল্লাসহ বেশ কিছু এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে, এটা তারই উদাহরণ।
মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িকতার যে অঙ্গীকার করা হয়েছিল, তা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না। এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
গত ৫০ বছরে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। আরও অনেক কিছু অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। যেমন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং সব মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির ব্যবস্থা করা আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষ ৫৪ হাজার বর্গমাইল এলাকায় বাস করে। এ রকম একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে অনেক সমস্যা আছে, সমাধান করা খুবই কঠিন। জটিল সমস্যাগুলো সমাধানের কোনো সহজ উপায় নেই। কিন্তু আমরা যদি বদ্ধপরিকর হই, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার মনে রাখি, তাহলে আমরা এর সমাধান করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে যেসব বিষয় ছিল, তার একটি হলো দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। দুর্নীতি এবং আইনের শাসন একসঙ্গে চলতে পারে না। দুর্নীতির ব্যাপারে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে কথাটি বলেন, জিরো টলারেন্স, সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ, শান্তিপূর্ণ, উন্নয়নশীল ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত হলো দুর্নীতিমুক্ত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাদের স্বাধীনতার জন্য বাঙালি জাতির যে ত্যাগ আমি স্বচক্ষে দেখেছি, ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখের বেশি মা-বোনের নির্যাতন এবং স্বাধীনতার জন্য জনগণের যে ত্যাগ-তিতিক্ষা, সেটা পৃথিবীর স্বাধীনতার ইতিহাসে বিরল। আমরা যদি এই বিপুল বিশাল ত্যাগের কথা নতুন প্রজন্মকে না জানাতে পারি, তাহলে তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে না। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনের জন্য সোনার ছেলে দরকার। মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা আত্মস্থ না করলে সোনার ছেলে গড়ে উঠবে না। সে জন্য আমি মনে করি এবং ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার।
ড. নূরুন নবী, মুক্তিযোদ্ধা, সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
ড. নূরুন নবী, মুক্তিযোদ্ধা

আসলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যারা যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষ ছিল। একটা ছিল জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যাওয়া। আরেকটা ছিল, পরিস্থিতির শিকার হয়ে। আরেকটা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য। আমি ছিলাম প্রথম ক্যাটাগরিতে—জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলাম। ব্যাখ্যা করে বলি, যখন বেড়ে উঠছিলাম তখন আমাদের চারপাশে অর্থনৈতিক অবনতি দৃশ্যমান হচ্ছিল গ্রাম-শহরে মানুষের জীবনে। আমার মনে প্রশ্ন ছিল, পশ্চিম পাকিস্তান সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, আমরা কেন পেছনে যাচ্ছি?
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার শুরুতেই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন, পাকিস্তানের কাঠামোয় বাঙালিদের ভাগ্যের কোনো উন্নতি হবে না। কারণ, অর্থনৈতিক বৈষম্য, রাজনৈতিক বৈষম্য দুই প্রদেশের মধ্যে বেড়েই চলছিল। পূর্ব বাংলার বাঙালি নাগরিকেরা পাকিস্তানের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বাঙালিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক সমাধানে ছয় দফা, তথা স্বায়ত্ত-শাসনের দাবি উত্থাপন করেন। ৬ দফায় যে দফাগুলো ছিল, সেগুলো বাস্তবায়িত হলে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অস্তিত্ব দুর্বল হয়ে যেত এবং যেকোনো সময় পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারত।
এ বিষয়টি বঙ্গবন্ধু যেমন বুঝতেন, পাকিস্তানি শাসকেরাও বুঝতেন। কাজেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ছয় দফাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন মেনে নিতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু জানতেন, আন্দোলন করে বাঙালিদের স্বাধিকার আদায় করতে হবে। এ লক্ষ্যেই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এ লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু ভাষা-আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা ছয় দফাকে নস্যাৎ করার জন্য এবং আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।
আমি সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রলীগের কর্মী। আমরা ছাত্রসমাজ ১১ দফা আন্দোলনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করতে সরকারকে বাধ্য করি, আইয়ুব শাহির বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়, আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন, ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়া হয়। আইয়ুব খান পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন আরেক সেনাপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে। ইয়াহিয়া খান জনগণের চাপে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন।
নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ছয় দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনা করার ম্যান্ডেট পান এবং তিনিই যে পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী, সেটাও প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ইয়াহিয়া খান এবং নির্বাচনে সংখ্যালঘিষ্ঠ দলনেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার জন্য ষড়যন্ত্র করেন। ৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন একতরফাভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধু স্পষ্ট বুঝতে পারেন, তাঁর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। বাঙালি জাতি সেই ডাকে সাড়া দেয়। ইয়াহিয়া খান আলোচনার নামে ঢাকায় এসে সময়ক্ষেপণ করেন এবং গোপনে গভীর রাতে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র ও সৈন্য আনতে শুরু করেন। ২৬ মার্চ রাতে পূর্ব বাংলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সামরিক আক্রমণ চালান। শুরু হয় বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের গণহত্যা। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
আমরা যাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে যে তিনটি বিষয় উল্লেখ করেছিলেন, তা হৃদয়ে ধারণ করেছিলাম। তার একটি হলো, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তিনি আরও বলেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’; ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশা আল্লাহ।’ জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা যখন এই বাক্যগুলো উচ্চারণ করেন, আমরা যাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, তাঁদের কাছে এটাই ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। যুদ্ধে যাওয়া ও ত্যাগ স্বীকারের ঘোষণা। ২৬ মার্চের সামরিক অভিযানের পরই বাঙালিরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক, রাজনৈতিক কর্মী এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালি সৈন্যরা যুদ্ধে যোগ দেন। গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী।
নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে এবং ভারতীয় বাহিনীর সহযোগিতায় আমরা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করি। যদিও নয় মাসের যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ছিলেন, তাঁর আহ্বানেই আমরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিই এবং স্বাধীনতা অর্জন করি।
স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বনেতাদের চাপে বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং বাংলাদেশে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করেন। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশকে একটি আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেমন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশন, শাসনতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুনর্গঠন, বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি লাভ এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের দেশে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য যখন তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন, দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখনই দেশ-বিদেশের পরাজিত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি দুজন মেজরের নেতৃত্বে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। তাঁর দুই কন্যা বিদেশে অবস্থান করায় বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে একটি মিনি পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত যে চারটি স্তম্ভ, সেগুলো পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সেটি মেনে নেয়নি। আন্দোলনের মাধ্যমে পঁচাত্তর-পরবর্তী সামরিক সরকার ও বিএনপি সরকারকে পরাজিত করে বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে পুনর্গঠনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির প্রাণের দাবি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়ে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট গ্রহণ করেন। অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশে বিরাজ করছে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের যে অন্যতম স্তম্ভ, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা গঠনের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সম্প্রতি কুমিল্লাসহ বেশ কিছু এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে, এটা তারই উদাহরণ।
মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িকতার যে অঙ্গীকার করা হয়েছিল, তা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না। এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
গত ৫০ বছরে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। আরও অনেক কিছু অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। যেমন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং সব মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির ব্যবস্থা করা আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষ ৫৪ হাজার বর্গমাইল এলাকায় বাস করে। এ রকম একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে অনেক সমস্যা আছে, সমাধান করা খুবই কঠিন। জটিল সমস্যাগুলো সমাধানের কোনো সহজ উপায় নেই। কিন্তু আমরা যদি বদ্ধপরিকর হই, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার মনে রাখি, তাহলে আমরা এর সমাধান করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে যেসব বিষয় ছিল, তার একটি হলো দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। দুর্নীতি এবং আইনের শাসন একসঙ্গে চলতে পারে না। দুর্নীতির ব্যাপারে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে কথাটি বলেন, জিরো টলারেন্স, সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ, শান্তিপূর্ণ, উন্নয়নশীল ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত হলো দুর্নীতিমুক্ত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাদের স্বাধীনতার জন্য বাঙালি জাতির যে ত্যাগ আমি স্বচক্ষে দেখেছি, ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখের বেশি মা-বোনের নির্যাতন এবং স্বাধীনতার জন্য জনগণের যে ত্যাগ-তিতিক্ষা, সেটা পৃথিবীর স্বাধীনতার ইতিহাসে বিরল। আমরা যদি এই বিপুল বিশাল ত্যাগের কথা নতুন প্রজন্মকে না জানাতে পারি, তাহলে তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে না। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনের জন্য সোনার ছেলে দরকার। মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা আত্মস্থ না করলে সোনার ছেলে গড়ে উঠবে না। সে জন্য আমি মনে করি এবং ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার।
ড. নূরুন নবী, মুক্তিযোদ্ধা, সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

আসলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যারা যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষ ছিল। একটা ছিল জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যাওয়া। আরেকটা ছিল, পরিস্থিতির শিকার হয়ে। আরেকটা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য। আমি ছিলাম প্রথম ক্যাটাগরিতে—জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলাম। ব্যাখ্যা করে বলি, যখন বেড়ে উঠছিলাম তখন আমাদের চারপাশে অর্থনৈতিক অবনতি দৃশ্যমান হচ্ছিল গ্রাম-শহরে মানুষের জীবনে। আমার মনে প্রশ্ন ছিল, পশ্চিম পাকিস্তান সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, আমরা কেন পেছনে যাচ্ছি?
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার শুরুতেই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন, পাকিস্তানের কাঠামোয় বাঙালিদের ভাগ্যের কোনো উন্নতি হবে না। কারণ, অর্থনৈতিক বৈষম্য, রাজনৈতিক বৈষম্য দুই প্রদেশের মধ্যে বেড়েই চলছিল। পূর্ব বাংলার বাঙালি নাগরিকেরা পাকিস্তানের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বাঙালিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক সমাধানে ছয় দফা, তথা স্বায়ত্ত-শাসনের দাবি উত্থাপন করেন। ৬ দফায় যে দফাগুলো ছিল, সেগুলো বাস্তবায়িত হলে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অস্তিত্ব দুর্বল হয়ে যেত এবং যেকোনো সময় পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারত।
এ বিষয়টি বঙ্গবন্ধু যেমন বুঝতেন, পাকিস্তানি শাসকেরাও বুঝতেন। কাজেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ছয় দফাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন মেনে নিতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু জানতেন, আন্দোলন করে বাঙালিদের স্বাধিকার আদায় করতে হবে। এ লক্ষ্যেই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এ লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু ভাষা-আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা ছয় দফাকে নস্যাৎ করার জন্য এবং আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।
আমি সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রলীগের কর্মী। আমরা ছাত্রসমাজ ১১ দফা আন্দোলনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করতে সরকারকে বাধ্য করি, আইয়ুব শাহির বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়, আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন, ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়া হয়। আইয়ুব খান পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন আরেক সেনাপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে। ইয়াহিয়া খান জনগণের চাপে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন।
নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ছয় দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনা করার ম্যান্ডেট পান এবং তিনিই যে পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী, সেটাও প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ইয়াহিয়া খান এবং নির্বাচনে সংখ্যালঘিষ্ঠ দলনেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার জন্য ষড়যন্ত্র করেন। ৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন একতরফাভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধু স্পষ্ট বুঝতে পারেন, তাঁর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। বাঙালি জাতি সেই ডাকে সাড়া দেয়। ইয়াহিয়া খান আলোচনার নামে ঢাকায় এসে সময়ক্ষেপণ করেন এবং গোপনে গভীর রাতে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র ও সৈন্য আনতে শুরু করেন। ২৬ মার্চ রাতে পূর্ব বাংলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সামরিক আক্রমণ চালান। শুরু হয় বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের গণহত্যা। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
আমরা যাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে যে তিনটি বিষয় উল্লেখ করেছিলেন, তা হৃদয়ে ধারণ করেছিলাম। তার একটি হলো, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তিনি আরও বলেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’; ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশা আল্লাহ।’ জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা যখন এই বাক্যগুলো উচ্চারণ করেন, আমরা যাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, তাঁদের কাছে এটাই ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। যুদ্ধে যাওয়া ও ত্যাগ স্বীকারের ঘোষণা। ২৬ মার্চের সামরিক অভিযানের পরই বাঙালিরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক, রাজনৈতিক কর্মী এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালি সৈন্যরা যুদ্ধে যোগ দেন। গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী।
নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে এবং ভারতীয় বাহিনীর সহযোগিতায় আমরা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করি। যদিও নয় মাসের যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ছিলেন, তাঁর আহ্বানেই আমরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিই এবং স্বাধীনতা অর্জন করি।
স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বনেতাদের চাপে বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং বাংলাদেশে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করেন। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশকে একটি আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেমন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশন, শাসনতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুনর্গঠন, বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি লাভ এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের দেশে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য যখন তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন, দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখনই দেশ-বিদেশের পরাজিত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি দুজন মেজরের নেতৃত্বে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। তাঁর দুই কন্যা বিদেশে অবস্থান করায় বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে একটি মিনি পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত যে চারটি স্তম্ভ, সেগুলো পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সেটি মেনে নেয়নি। আন্দোলনের মাধ্যমে পঁচাত্তর-পরবর্তী সামরিক সরকার ও বিএনপি সরকারকে পরাজিত করে বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে পুনর্গঠনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির প্রাণের দাবি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়ে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট গ্রহণ করেন। অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশে বিরাজ করছে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের যে অন্যতম স্তম্ভ, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা গঠনের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সম্প্রতি কুমিল্লাসহ বেশ কিছু এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে, এটা তারই উদাহরণ।
মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িকতার যে অঙ্গীকার করা হয়েছিল, তা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না। এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
গত ৫০ বছরে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। আরও অনেক কিছু অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। যেমন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং সব মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির ব্যবস্থা করা আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষ ৫৪ হাজার বর্গমাইল এলাকায় বাস করে। এ রকম একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে অনেক সমস্যা আছে, সমাধান করা খুবই কঠিন। জটিল সমস্যাগুলো সমাধানের কোনো সহজ উপায় নেই। কিন্তু আমরা যদি বদ্ধপরিকর হই, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার মনে রাখি, তাহলে আমরা এর সমাধান করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে যেসব বিষয় ছিল, তার একটি হলো দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। দুর্নীতি এবং আইনের শাসন একসঙ্গে চলতে পারে না। দুর্নীতির ব্যাপারে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে কথাটি বলেন, জিরো টলারেন্স, সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ, শান্তিপূর্ণ, উন্নয়নশীল ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত হলো দুর্নীতিমুক্ত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাদের স্বাধীনতার জন্য বাঙালি জাতির যে ত্যাগ আমি স্বচক্ষে দেখেছি, ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখের বেশি মা-বোনের নির্যাতন এবং স্বাধীনতার জন্য জনগণের যে ত্যাগ-তিতিক্ষা, সেটা পৃথিবীর স্বাধীনতার ইতিহাসে বিরল। আমরা যদি এই বিপুল বিশাল ত্যাগের কথা নতুন প্রজন্মকে না জানাতে পারি, তাহলে তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে না। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনের জন্য সোনার ছেলে দরকার। মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা আত্মস্থ না করলে সোনার ছেলে গড়ে উঠবে না। সে জন্য আমি মনে করি এবং ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার।
ড. নূরুন নবী, মুক্তিযোদ্ধা, সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

আসলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যারা যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষ ছিল। একটা ছিল জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যাওয়া। আরেকটা ছিল, পরিস্থিতির শিকার হয়ে। আরেকটা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য। আমি ছিলাম
১৬ ডিসেম্বর ২০২১
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

আসলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যারা যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষ ছিল। একটা ছিল জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যাওয়া। আরেকটা ছিল, পরিস্থিতির শিকার হয়ে। আরেকটা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য। আমি ছিলাম
১৬ ডিসেম্বর ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

আসলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যারা যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষ ছিল। একটা ছিল জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যাওয়া। আরেকটা ছিল, পরিস্থিতির শিকার হয়ে। আরেকটা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য। আমি ছিলাম
১৬ ডিসেম্বর ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

আসলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যারা যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষ ছিল। একটা ছিল জেনে-শুনে-বুঝে যুদ্ধে যাওয়া। আরেকটা ছিল, পরিস্থিতির শিকার হয়ে। আরেকটা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য। আমি ছিলাম
১৬ ডিসেম্বর ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫