মাহবুব কামাল

যমুনা সেতুর (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু) নির্মাণকাজ যখন চলছিল, তখন এই সেতুর স্বপ্ন কে দেখেছিলেন, তা নিয়ে একেকজন একেকজনের নাম বলেছিলেন। কেউ বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুই সেতুটির স্বপ্নদ্রষ্টা, কেউ ভাসানীর নাম করেছিলেন, কেউবা বলেছিলেন আইয়ুব খান ইত্যাদি। প্রকৃত প্রস্তাবে তাঁদের কেউই সঠিক ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করতে পারেননি। আসলে এই সেতুর স্বপ্ন প্রথম কে দেখেছিলেন, তাঁকে আমরা চিনি না। হতে পারে সেটা হাজার বছর আগের কথা। এক মাঝি পাড়ি দিচ্ছিলেন যমুনা, মাঝনদীতে উঠেছিল ঝড়, উথাল-পাতাল ঢেউ, প্রাণপণ সংগ্রামে তিনি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন প্রিয় জীবন ও ততোধিক প্রিয় তাঁর জীবিকার অবলম্বন নৌকা এবং ঝড়ের তাণ্ডব শেষ হওয়ার পর মনে মনে বলেছিলেন, আহা, এই নদীর ওপর যদি একটি পুল (সেতু) থাকত!
গণতন্ত্রের বয়স কত আমরা জানি, কম-বেশি দুই হাজার বছর। মতবাদটির বিবর্তন ও পরিশীলন-প্রক্রিয়া চলেছে শতাব্দীর পর শতাব্দী এবং আজ, এই মুহূর্তে এথেন্সের সেই গণতন্ত্র খোল-নলচেই পাল্টে ফেলেছে। তো যমুনা সেতুর প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টার মতো গণতন্ত্রের স্বপ্ন প্রথম দেখেছিলেন কে? তিনিও নিশ্চয়ই অতি প্রাচীন এক ব্যক্তি। হতে পারে তিনি আদিম সাম্যবাদী যুগের এক বাসিন্দা। সবাই মিলে পশু শিকার করার পর যখন দেখেছিলেন শক্তিমান দু-একজনই খেয়ে চলেছে সব আর তাঁর ও তাঁর মতো অনেকের ভাগে কিছুই নেই, থাকলেও তা উচ্ছিষ্ট—তিনি তখন হয়তো ভেবেছিলেন, ইশ্, কে কতটা খাবে সেই সিদ্ধান্তের জন্য যদি সবার মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কাজ করেও এভাবে না খেয়ে থাকতে হতো না তাঁকে।
হ্যাঁ, গণতন্ত্র এক অতি প্রাচীন ধারণা। আমলাতন্ত্র অবশ্য এর চেয়েও প্রাচীন। তবে চরিত্রগতভাবে আমলাতন্ত্র এখনো অবিকল থাকলেও এর চেয়ে কম বয়সী গণতন্ত্রের গায়ে মরিচা ধরেছে। যে মর্মকথার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল গণতন্ত্র, মতবাদটির চর্চা হচ্ছে পৃথিবীর যেসব দেশে, সেগুলোর কোনোটাতেই তা সর্বাংশে প্রতিফলিত হচ্ছে না। হয়তো মতবাদটির প্রয়োগ পদ্ধতিতেই থেকে যাচ্ছে কোনো গলদ, যার কারণে দুধের আশায় এর বাঁট টানছি যখন, বের হচ্ছে গরল।
বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক। নব্বইয়ে তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী গণতন্ত্রচর্চা করব বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলাম সবাই; কিন্তু ৩৩ বছর পর ফাইনাল ব্যালান্সশিটে কী দেখছি? ছোট করে বললে, পেয়েছি হাজারের হিসাবে মৃত্যু, আরও পেয়েছি এমপি হিসেবে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে, দেখেছি ব্যারাক থেকে বেরিয়ে এসে সেনাবাহিনী ছুটেছে বঙ্গভবনের দিকে। বস্তুত আমরা যাকে এখন গণতন্ত্র নামে ডাকছি, তার আসল নাম উচ্ছৃঙ্খলতা। গণতন্ত্রের মর্মবস্তুতে নিশ্চয়ই কোনো গলদ কিংবা বিচ্যুতি নেই, অতঃপর নিঃসন্দেহে সিদ্ধান্ত টানা চলে যে প্রয়োগের দোষেই দেশে দেশে মরিচা ধরছে এর গায়ে।
অবশ্য গণতন্ত্রের মর্মবস্তুতে যে কোনো গলদ নেই, এটা বলার সময় ‘নিশ্চয়ই’ বলাটা ভুল হলো। কিছু ধাঁধা তো আছেই। যেমন দুর্নীতিপরায়ণ অথচ যোগ্য এমন মানুষদের নিয়োগব্যবস্থা ভালো, নাকি অযোগ্যদের নির্বাচনব্যবস্থা—এটা এক বিতর্ক বৈকি। আরও একটি প্যারাডক্স এমন যে যখন বলি গণতন্ত্রটা বড় বেশি গণতান্ত্রিক, তখন অপশক্তিকে দমন করার উদ্যোগ নেওয়ার সময় মনে হতেই পারে গণতন্ত্রের ক্ষতি হয়ে যাবে তাতে। অথচ অপশক্তিকে দমন না করলে সুশাসন নিশ্চিত করা যায় না। আবার এমনও বলা যেতে পারে, পৃথিবীর কেউই এতটা জ্ঞানী বা সৎ নয়, যতটা জ্ঞান বা সততা থাকলে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে তাকে ভোট দিয়ে বিশ্বাস করা চলে। যেসব কারণে মানুষের চরিত্রে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে, তার একটি রাষ্ট্রক্ষমতার সঙ্গলাভ। ভোট তো রাষ্ট্রক্ষমতার সঙ্গে বিজয়ীর এই সঙ্গলাভেরই মিডিয়েটর। এটাও বা বলতে ছাড়ছি কেন, গণতন্ত্রের শত্রু শুধু স্বৈরতন্ত্র নয়, এই শত্রু আসলে বল্গাহীন স্বাধীনতাও।
আমরা এখন অধিক গণতন্ত্র, না স্বল্প—এই বিতর্কে ঢুকব না। আমরা বলব উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের কথা। পাঠক যেন সন্দেহ না করেন যে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্র বলতে মাহাথির-লি কুয়ানের মডেলকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। আমাদের এই উপমহাদেশে মাহাথির-লি কুয়ানের সীমিত গণতন্ত্র যে খাটে না, এ কথা অমর্ত্য সেন অনেক আগেই নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলা-ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশের মানুষ চরিত্রগতভাবে আর্গুমেন্টেটিভ, অর্থাৎ তর্কপ্রিয়। পেট অভুক্ত থাকলেও কথা চালিয়ে যেতে তারা স্বচ্ছন্দবোধ করে। উপজেলা, এমনকি গ্রামপর্যায়েও দেখা যাবে, এক কাপ চায়ের বেশি কিছু না খেয়েই স্টলে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাজনীতি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করে যাচ্ছে মানুষ, অন্য কাস্টমারকে বসার সুযোগ করে দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন দোকানি, শুনছে না কেউ। সীমিত গণতন্ত্র এই মানুষদের স্বভাবের সঙ্গে যায় না।
আমরা আগেই বলেছি, বর্তমানে যে গণতন্ত্র চালু রেখেছি আমরা, তা ফলদায়ক হচ্ছে না। তবে কি প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর), অর্থাৎ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের গণতন্ত্রে শিফট করা উচিত? সত্য বৈকি, এখনকার ওয়েস্টমিনস্টার-টাইপ গণতন্ত্রে অনেক শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে, পিআর সিস্টেমে তা নেই। সেই ফাঁকিটা ধরিয়ে দেওয়া যাক। গণতন্ত্রের মূল কথাই হলো শাসনটা হতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই। আরও সুন্দর করে বললে, সংখ্যালঘিষ্ঠের মর্মবস্তু ধারণ করা সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনের নামই গণতন্ত্র। তো ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রে সরকারটি সংখ্যাগরিষ্ঠের পছন্দানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত না-ও হতে পারে। থিওরিটিক্যালি কথাটা প্রতিষ্ঠা করা যাক। ৩০০ আসনের আমাদের পার্লামেন্টের ১৫১টিতে একটি দলের প্রার্থীদের সবাই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে মাত্র এক ভোট বেশি পাওয়ার পর যদি বাকি ১৪৯টিতে দলটি একটি ভোটও না পায়, সে ক্ষেত্রেও সেই দল সরকার গঠন করার যোগ্যতা অর্জন করবে। অতঃপর সরকারটি কি জনমতের ভিত্তিতে গঠিত হলো?
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রায় সমান ভোট পেয়েও (৪১ দশমিক ৪০ ও ৪০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ) বিএনপির আসন ১৯৩, আওয়ামী লীগের মাত্র ৬২। আবার দেখুন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পেল ২৭টি, অথচ বিএনপি ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে পেল জাতীয় পার্টির চেয়ে মাত্র ৩টি আসন বেশি।
বলতে অসুবিধা কোথায়, বর্তমান সিস্টেমে পরাজিতের ভোট পচে যায়, তার হিসাব কেউ রাখে না, আর পিআর পদ্ধতিতে সব ভোটেরই গুরুত্ব থাকে। বামপন্থীরা এ দেশে এককভাবে (নৌকা অথবা ধানের শীষের সাহায্য ছাড়া) ভোট করলে কোনো আসন পায় না। কিন্তু তারা কি সারা দেশে ১ শতাংশ ভোটও পায় না? যদি পায়, তাহলে তো পিআর সিস্টেমে তাদের আসনসংখ্যা দাঁড়াবে ৩। এই সিস্টেমে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নিশ্চিত হয় বলেই তার চর্চা হচ্ছে কন্টিনেন্টাল ইউরোপে। ইংল্যান্ডেও লেবার ও কনজারভেটিভরা পালা করে ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করছে বলে তৃতীয় ধারার লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা দাবি করছে পিআর সিস্টেমে শিফট করার। কারণ তারা ভোট পায়, আসন পায় না। ইউরোপে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নিশ্চিত করতেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুয়ের অধিক প্রার্থী থাকলে বিজয়ী হতে হলে যেকোনো একজনকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয়। তা না হলে বেশি ভোটপ্রাপ্ত প্রথম দুজনকে আবারও লড়তে হয়। বলা নিষ্প্রয়োজন, দ্বিতীয় দফায় দুজনের যেকোনো একজন অর্ধেকের বেশি ভোট পাবেনই কি পাবেন। কূটতার্কিকেরা অবশ্য বলতে পারেন, প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা যদি ইভেন অর্থাৎ জোড় হয়, সে ক্ষেত্রে তো টাই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে!
আমরা বলছি না, পিআর সিস্টেমকেই অবলম্বন করতে হবে। তবে এই গণতন্ত্রের সুফলটা একটু দেখুন। এই সিস্টেমে কোয়ালিশন সরকারের সম্ভাবনা বেশি থাকে, যা বাংলাদেশে কয়েক টার্ম চালু থাকলে রাজনীতিকদের কর্তৃত্বপরায়ণ মানসিকতার পরিবর্তন ঘটতে পারে। দ্বিতীয়ত, ১৫১ আসনকে মাথায় রেখে নির্বাচন করার প্রবণতা হ্রাস পাবে এতে, রাজনৈতিক দলগুলো সে ক্ষেত্রে গোটা বাংলাদেশকেই মাথায় রাখতে বাধ্য হবে। বগুড়া আমার, গোপালগঞ্জ তোমার—এভাবে হিসাব করলে সর্ববাংলাদেশি চিন্তার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। তৃতীয়ত, সারা দেশেই ভোটে এগিয়ে থাকতে হবে—এমন বাধ্যবাধকতা থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আসতে বাধ্য। রাজনীতিটাও তখন করতে হবে ঠিকঠাক। পাঠক লক্ষ করুন, শহীদ চান্দু নামের আধুনিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি বগুড়ায় স্থাপিত বলে ২০০৮ সালের পর থেকে সেখানে একটিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব হয়তো ভাবেন, বগুড়ায় তো ভোট অ্যামনেও পাব না, ত্যামনেও পাব না—ওখানে এত আয়োজনের দরকার কী! পিআর সিস্টেমে যদি বগুড়ায় ১০০ ভোটও পাওয়া যায়, সেটাও কি চূড়ান্ত ফলাফলশিটে যুক্ত হবে না?
আমরা এতক্ষণ গণতন্ত্রের একটি প্রতিষ্ঠিত মডেল নিয়ে কথা বললাম। অন্য প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতিগুলো নিয়েও কথা হতে পারে; নতুন কোনো পদ্ধতি উদ্ভাবন করা যায় কি না, সেটাও ভাবা যেতে পারে। আমরা বাঙালি অথবা তাম্রবর্ণের বলে সভ্যতাকে দেওয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই কি নেই আমাদের? সাদাদের ওপর কতকাল আর নির্ভরতা? তো আমাদের জন্য উৎকৃষ্ট গণতন্ত্র কোনটা, সেটা পণ্ডিতজনেরা ভাবুন, রাজনীতিকদের মাথায় এই ঘিলু আছে বলে মনে হয় না। অথবা ঘিলু থাকলেও বোঁচকা নিয়ে টানাটানি করতেই সেটা প্রয়োগ করার সময় শেষ হয়ে যায়।
উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সত্যিকার রূপটি কী হওয়া উচিত, সেটা যেহেতু স্কলারদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো, সেহেতু আমরা গণতন্ত্র নিয়েই অন্য রকম কিছু কথা বলে শেষ করব। প্রথমত, নির্বাচন কিন্তু লক্ষ্য নয়, এটা উপায় আর লক্ষ্য হচ্ছে ভালো থাকা। নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে আমরা সেই লক্ষ্যেই পৌঁছাতে চাই। কিন্তু এ দেশের মানুষের মগজ কায়দা করে এমনভাবে ধোলাই করা হয়েছে যে মনে হয় নির্বাচনটাই বুঝি লক্ষ্য। খেয়াল করুন, ভালো থাকার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দেশে অনেক সাংবিধানিক সংস্থা রয়েছে; কিন্তু সেগুলোর মাত্র একটি—নির্বাচন কমিশন নিয়েই বিরোধী রাজনীতিকদের যত তত্ত্বকথা। এখন আবার চলছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি বাদ দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন। যা-ই হোক, নির্বাচন হলো গণতন্ত্রচর্চার একমাত্র পদ্ধতি, অথচ রাজনীতিকেরা গণতন্ত্রকে নির্বাচনসর্বস্ব করে ফেলেছেন। ঘরের বউকে কড়া শাসনে রেখে অথবা বিনা কারণে কাউকে অপদস্থ করার পর বক্তৃতার মঞ্চে গণতন্ত্রের জয়গান করতে তাই কোনোই অসুবিধা হয় না এ দেশে। দীর্ঘদিনের মগজ ধোলাই-প্রক্রিয়া শেষে সাধারণ মানুষও এখন মনে করে ভোট দিতে না পারলেই গণতন্ত্রের ইজ্জত যায়, অন্য কোনোভাবে নয়। আর তাই তাদের কাছে ভোটাধিকার হরণ মানে সতীত্ব হরণের মতোই লজ্জাকর। তারা বলতে পারছে না, মেয়ের নাকের জায়গায় নাক নেই, ঠোঁটের জায়গায় নেই ঠোঁট, সেই মেয়েকে মা সুন্দর বলতে চাইলে বলুক, পাড়া-পড়শি আমরা কেন বলতে যাব? এই গণতন্ত্র মোটেও সুন্দর নয়।
দেখুন, আমাদের অভিজ্ঞতা পরিপূর্ণ হয়েছে যে নব্বইয়ের পর থেকে নতুন সরকার মানে নতুন উপদ্রব। তারপরও ভোট দিতেই হবে এবং সেটা ইমিডিয়েট পাস্ট সরকারি দলের বিরুদ্ধেই। তা না হলে আমি যে একটা দামি ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, তা প্রমাণ হয় না! বরিশালের লোকেরা বলে থাকেন, এমপি সাহেব কী করতে আছে করুক, ইলেকশন আহুক, এইবার আর টাকামু না। ‘টাকামু না’ মানে এমপি সাহেবের মার্কায় সিল মারবেন না।
শেষ কথা, বুদ্ধিমানেরা সরকারের ধরন নিয়ে মাথা ঘামায়, আঁতেলরা মনে করে যে সরকার যত কম শাসন করে সেই সরকার ততো ভালো, আর সাধারণ মানুষ চায় সেই সরকার, যেটা সুশাসন দিতে পারে। গ্রামের মানুষ কী করে? দুধ দোহানোর সময় যদি গাভি শান্ত থাকে, তাহলে তাকে আরও বেশি করে ভালোবাসে আর যদি দু-চারটা লাথি-টাথি মারে, সে ক্ষেত্রেও মাইন্ড করে না, কারণ লাথির বদলে সে পাচ্ছে দুধ। এখানে গাভি মানে সরকার, শান্ত থাকার অর্থ পূর্ণ গণতন্ত্র আর দুধ হলো সুশাসন।
লেখক: সাংবাদিক

যমুনা সেতুর (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু) নির্মাণকাজ যখন চলছিল, তখন এই সেতুর স্বপ্ন কে দেখেছিলেন, তা নিয়ে একেকজন একেকজনের নাম বলেছিলেন। কেউ বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুই সেতুটির স্বপ্নদ্রষ্টা, কেউ ভাসানীর নাম করেছিলেন, কেউবা বলেছিলেন আইয়ুব খান ইত্যাদি। প্রকৃত প্রস্তাবে তাঁদের কেউই সঠিক ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করতে পারেননি। আসলে এই সেতুর স্বপ্ন প্রথম কে দেখেছিলেন, তাঁকে আমরা চিনি না। হতে পারে সেটা হাজার বছর আগের কথা। এক মাঝি পাড়ি দিচ্ছিলেন যমুনা, মাঝনদীতে উঠেছিল ঝড়, উথাল-পাতাল ঢেউ, প্রাণপণ সংগ্রামে তিনি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন প্রিয় জীবন ও ততোধিক প্রিয় তাঁর জীবিকার অবলম্বন নৌকা এবং ঝড়ের তাণ্ডব শেষ হওয়ার পর মনে মনে বলেছিলেন, আহা, এই নদীর ওপর যদি একটি পুল (সেতু) থাকত!
গণতন্ত্রের বয়স কত আমরা জানি, কম-বেশি দুই হাজার বছর। মতবাদটির বিবর্তন ও পরিশীলন-প্রক্রিয়া চলেছে শতাব্দীর পর শতাব্দী এবং আজ, এই মুহূর্তে এথেন্সের সেই গণতন্ত্র খোল-নলচেই পাল্টে ফেলেছে। তো যমুনা সেতুর প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টার মতো গণতন্ত্রের স্বপ্ন প্রথম দেখেছিলেন কে? তিনিও নিশ্চয়ই অতি প্রাচীন এক ব্যক্তি। হতে পারে তিনি আদিম সাম্যবাদী যুগের এক বাসিন্দা। সবাই মিলে পশু শিকার করার পর যখন দেখেছিলেন শক্তিমান দু-একজনই খেয়ে চলেছে সব আর তাঁর ও তাঁর মতো অনেকের ভাগে কিছুই নেই, থাকলেও তা উচ্ছিষ্ট—তিনি তখন হয়তো ভেবেছিলেন, ইশ্, কে কতটা খাবে সেই সিদ্ধান্তের জন্য যদি সবার মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কাজ করেও এভাবে না খেয়ে থাকতে হতো না তাঁকে।
হ্যাঁ, গণতন্ত্র এক অতি প্রাচীন ধারণা। আমলাতন্ত্র অবশ্য এর চেয়েও প্রাচীন। তবে চরিত্রগতভাবে আমলাতন্ত্র এখনো অবিকল থাকলেও এর চেয়ে কম বয়সী গণতন্ত্রের গায়ে মরিচা ধরেছে। যে মর্মকথার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল গণতন্ত্র, মতবাদটির চর্চা হচ্ছে পৃথিবীর যেসব দেশে, সেগুলোর কোনোটাতেই তা সর্বাংশে প্রতিফলিত হচ্ছে না। হয়তো মতবাদটির প্রয়োগ পদ্ধতিতেই থেকে যাচ্ছে কোনো গলদ, যার কারণে দুধের আশায় এর বাঁট টানছি যখন, বের হচ্ছে গরল।
বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক। নব্বইয়ে তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী গণতন্ত্রচর্চা করব বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলাম সবাই; কিন্তু ৩৩ বছর পর ফাইনাল ব্যালান্সশিটে কী দেখছি? ছোট করে বললে, পেয়েছি হাজারের হিসাবে মৃত্যু, আরও পেয়েছি এমপি হিসেবে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে, দেখেছি ব্যারাক থেকে বেরিয়ে এসে সেনাবাহিনী ছুটেছে বঙ্গভবনের দিকে। বস্তুত আমরা যাকে এখন গণতন্ত্র নামে ডাকছি, তার আসল নাম উচ্ছৃঙ্খলতা। গণতন্ত্রের মর্মবস্তুতে নিশ্চয়ই কোনো গলদ কিংবা বিচ্যুতি নেই, অতঃপর নিঃসন্দেহে সিদ্ধান্ত টানা চলে যে প্রয়োগের দোষেই দেশে দেশে মরিচা ধরছে এর গায়ে।
অবশ্য গণতন্ত্রের মর্মবস্তুতে যে কোনো গলদ নেই, এটা বলার সময় ‘নিশ্চয়ই’ বলাটা ভুল হলো। কিছু ধাঁধা তো আছেই। যেমন দুর্নীতিপরায়ণ অথচ যোগ্য এমন মানুষদের নিয়োগব্যবস্থা ভালো, নাকি অযোগ্যদের নির্বাচনব্যবস্থা—এটা এক বিতর্ক বৈকি। আরও একটি প্যারাডক্স এমন যে যখন বলি গণতন্ত্রটা বড় বেশি গণতান্ত্রিক, তখন অপশক্তিকে দমন করার উদ্যোগ নেওয়ার সময় মনে হতেই পারে গণতন্ত্রের ক্ষতি হয়ে যাবে তাতে। অথচ অপশক্তিকে দমন না করলে সুশাসন নিশ্চিত করা যায় না। আবার এমনও বলা যেতে পারে, পৃথিবীর কেউই এতটা জ্ঞানী বা সৎ নয়, যতটা জ্ঞান বা সততা থাকলে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে তাকে ভোট দিয়ে বিশ্বাস করা চলে। যেসব কারণে মানুষের চরিত্রে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে, তার একটি রাষ্ট্রক্ষমতার সঙ্গলাভ। ভোট তো রাষ্ট্রক্ষমতার সঙ্গে বিজয়ীর এই সঙ্গলাভেরই মিডিয়েটর। এটাও বা বলতে ছাড়ছি কেন, গণতন্ত্রের শত্রু শুধু স্বৈরতন্ত্র নয়, এই শত্রু আসলে বল্গাহীন স্বাধীনতাও।
আমরা এখন অধিক গণতন্ত্র, না স্বল্প—এই বিতর্কে ঢুকব না। আমরা বলব উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের কথা। পাঠক যেন সন্দেহ না করেন যে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্র বলতে মাহাথির-লি কুয়ানের মডেলকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। আমাদের এই উপমহাদেশে মাহাথির-লি কুয়ানের সীমিত গণতন্ত্র যে খাটে না, এ কথা অমর্ত্য সেন অনেক আগেই নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলা-ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশের মানুষ চরিত্রগতভাবে আর্গুমেন্টেটিভ, অর্থাৎ তর্কপ্রিয়। পেট অভুক্ত থাকলেও কথা চালিয়ে যেতে তারা স্বচ্ছন্দবোধ করে। উপজেলা, এমনকি গ্রামপর্যায়েও দেখা যাবে, এক কাপ চায়ের বেশি কিছু না খেয়েই স্টলে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাজনীতি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করে যাচ্ছে মানুষ, অন্য কাস্টমারকে বসার সুযোগ করে দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন দোকানি, শুনছে না কেউ। সীমিত গণতন্ত্র এই মানুষদের স্বভাবের সঙ্গে যায় না।
আমরা আগেই বলেছি, বর্তমানে যে গণতন্ত্র চালু রেখেছি আমরা, তা ফলদায়ক হচ্ছে না। তবে কি প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর), অর্থাৎ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের গণতন্ত্রে শিফট করা উচিত? সত্য বৈকি, এখনকার ওয়েস্টমিনস্টার-টাইপ গণতন্ত্রে অনেক শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে, পিআর সিস্টেমে তা নেই। সেই ফাঁকিটা ধরিয়ে দেওয়া যাক। গণতন্ত্রের মূল কথাই হলো শাসনটা হতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই। আরও সুন্দর করে বললে, সংখ্যালঘিষ্ঠের মর্মবস্তু ধারণ করা সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনের নামই গণতন্ত্র। তো ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রে সরকারটি সংখ্যাগরিষ্ঠের পছন্দানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত না-ও হতে পারে। থিওরিটিক্যালি কথাটা প্রতিষ্ঠা করা যাক। ৩০০ আসনের আমাদের পার্লামেন্টের ১৫১টিতে একটি দলের প্রার্থীদের সবাই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে মাত্র এক ভোট বেশি পাওয়ার পর যদি বাকি ১৪৯টিতে দলটি একটি ভোটও না পায়, সে ক্ষেত্রেও সেই দল সরকার গঠন করার যোগ্যতা অর্জন করবে। অতঃপর সরকারটি কি জনমতের ভিত্তিতে গঠিত হলো?
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রায় সমান ভোট পেয়েও (৪১ দশমিক ৪০ ও ৪০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ) বিএনপির আসন ১৯৩, আওয়ামী লীগের মাত্র ৬২। আবার দেখুন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পেল ২৭টি, অথচ বিএনপি ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে পেল জাতীয় পার্টির চেয়ে মাত্র ৩টি আসন বেশি।
বলতে অসুবিধা কোথায়, বর্তমান সিস্টেমে পরাজিতের ভোট পচে যায়, তার হিসাব কেউ রাখে না, আর পিআর পদ্ধতিতে সব ভোটেরই গুরুত্ব থাকে। বামপন্থীরা এ দেশে এককভাবে (নৌকা অথবা ধানের শীষের সাহায্য ছাড়া) ভোট করলে কোনো আসন পায় না। কিন্তু তারা কি সারা দেশে ১ শতাংশ ভোটও পায় না? যদি পায়, তাহলে তো পিআর সিস্টেমে তাদের আসনসংখ্যা দাঁড়াবে ৩। এই সিস্টেমে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নিশ্চিত হয় বলেই তার চর্চা হচ্ছে কন্টিনেন্টাল ইউরোপে। ইংল্যান্ডেও লেবার ও কনজারভেটিভরা পালা করে ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করছে বলে তৃতীয় ধারার লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা দাবি করছে পিআর সিস্টেমে শিফট করার। কারণ তারা ভোট পায়, আসন পায় না। ইউরোপে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নিশ্চিত করতেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুয়ের অধিক প্রার্থী থাকলে বিজয়ী হতে হলে যেকোনো একজনকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয়। তা না হলে বেশি ভোটপ্রাপ্ত প্রথম দুজনকে আবারও লড়তে হয়। বলা নিষ্প্রয়োজন, দ্বিতীয় দফায় দুজনের যেকোনো একজন অর্ধেকের বেশি ভোট পাবেনই কি পাবেন। কূটতার্কিকেরা অবশ্য বলতে পারেন, প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা যদি ইভেন অর্থাৎ জোড় হয়, সে ক্ষেত্রে তো টাই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে!
আমরা বলছি না, পিআর সিস্টেমকেই অবলম্বন করতে হবে। তবে এই গণতন্ত্রের সুফলটা একটু দেখুন। এই সিস্টেমে কোয়ালিশন সরকারের সম্ভাবনা বেশি থাকে, যা বাংলাদেশে কয়েক টার্ম চালু থাকলে রাজনীতিকদের কর্তৃত্বপরায়ণ মানসিকতার পরিবর্তন ঘটতে পারে। দ্বিতীয়ত, ১৫১ আসনকে মাথায় রেখে নির্বাচন করার প্রবণতা হ্রাস পাবে এতে, রাজনৈতিক দলগুলো সে ক্ষেত্রে গোটা বাংলাদেশকেই মাথায় রাখতে বাধ্য হবে। বগুড়া আমার, গোপালগঞ্জ তোমার—এভাবে হিসাব করলে সর্ববাংলাদেশি চিন্তার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। তৃতীয়ত, সারা দেশেই ভোটে এগিয়ে থাকতে হবে—এমন বাধ্যবাধকতা থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আসতে বাধ্য। রাজনীতিটাও তখন করতে হবে ঠিকঠাক। পাঠক লক্ষ করুন, শহীদ চান্দু নামের আধুনিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি বগুড়ায় স্থাপিত বলে ২০০৮ সালের পর থেকে সেখানে একটিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব হয়তো ভাবেন, বগুড়ায় তো ভোট অ্যামনেও পাব না, ত্যামনেও পাব না—ওখানে এত আয়োজনের দরকার কী! পিআর সিস্টেমে যদি বগুড়ায় ১০০ ভোটও পাওয়া যায়, সেটাও কি চূড়ান্ত ফলাফলশিটে যুক্ত হবে না?
আমরা এতক্ষণ গণতন্ত্রের একটি প্রতিষ্ঠিত মডেল নিয়ে কথা বললাম। অন্য প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতিগুলো নিয়েও কথা হতে পারে; নতুন কোনো পদ্ধতি উদ্ভাবন করা যায় কি না, সেটাও ভাবা যেতে পারে। আমরা বাঙালি অথবা তাম্রবর্ণের বলে সভ্যতাকে দেওয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই কি নেই আমাদের? সাদাদের ওপর কতকাল আর নির্ভরতা? তো আমাদের জন্য উৎকৃষ্ট গণতন্ত্র কোনটা, সেটা পণ্ডিতজনেরা ভাবুন, রাজনীতিকদের মাথায় এই ঘিলু আছে বলে মনে হয় না। অথবা ঘিলু থাকলেও বোঁচকা নিয়ে টানাটানি করতেই সেটা প্রয়োগ করার সময় শেষ হয়ে যায়।
উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সত্যিকার রূপটি কী হওয়া উচিত, সেটা যেহেতু স্কলারদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো, সেহেতু আমরা গণতন্ত্র নিয়েই অন্য রকম কিছু কথা বলে শেষ করব। প্রথমত, নির্বাচন কিন্তু লক্ষ্য নয়, এটা উপায় আর লক্ষ্য হচ্ছে ভালো থাকা। নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে আমরা সেই লক্ষ্যেই পৌঁছাতে চাই। কিন্তু এ দেশের মানুষের মগজ কায়দা করে এমনভাবে ধোলাই করা হয়েছে যে মনে হয় নির্বাচনটাই বুঝি লক্ষ্য। খেয়াল করুন, ভালো থাকার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দেশে অনেক সাংবিধানিক সংস্থা রয়েছে; কিন্তু সেগুলোর মাত্র একটি—নির্বাচন কমিশন নিয়েই বিরোধী রাজনীতিকদের যত তত্ত্বকথা। এখন আবার চলছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি বাদ দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন। যা-ই হোক, নির্বাচন হলো গণতন্ত্রচর্চার একমাত্র পদ্ধতি, অথচ রাজনীতিকেরা গণতন্ত্রকে নির্বাচনসর্বস্ব করে ফেলেছেন। ঘরের বউকে কড়া শাসনে রেখে অথবা বিনা কারণে কাউকে অপদস্থ করার পর বক্তৃতার মঞ্চে গণতন্ত্রের জয়গান করতে তাই কোনোই অসুবিধা হয় না এ দেশে। দীর্ঘদিনের মগজ ধোলাই-প্রক্রিয়া শেষে সাধারণ মানুষও এখন মনে করে ভোট দিতে না পারলেই গণতন্ত্রের ইজ্জত যায়, অন্য কোনোভাবে নয়। আর তাই তাদের কাছে ভোটাধিকার হরণ মানে সতীত্ব হরণের মতোই লজ্জাকর। তারা বলতে পারছে না, মেয়ের নাকের জায়গায় নাক নেই, ঠোঁটের জায়গায় নেই ঠোঁট, সেই মেয়েকে মা সুন্দর বলতে চাইলে বলুক, পাড়া-পড়শি আমরা কেন বলতে যাব? এই গণতন্ত্র মোটেও সুন্দর নয়।
দেখুন, আমাদের অভিজ্ঞতা পরিপূর্ণ হয়েছে যে নব্বইয়ের পর থেকে নতুন সরকার মানে নতুন উপদ্রব। তারপরও ভোট দিতেই হবে এবং সেটা ইমিডিয়েট পাস্ট সরকারি দলের বিরুদ্ধেই। তা না হলে আমি যে একটা দামি ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, তা প্রমাণ হয় না! বরিশালের লোকেরা বলে থাকেন, এমপি সাহেব কী করতে আছে করুক, ইলেকশন আহুক, এইবার আর টাকামু না। ‘টাকামু না’ মানে এমপি সাহেবের মার্কায় সিল মারবেন না।
শেষ কথা, বুদ্ধিমানেরা সরকারের ধরন নিয়ে মাথা ঘামায়, আঁতেলরা মনে করে যে সরকার যত কম শাসন করে সেই সরকার ততো ভালো, আর সাধারণ মানুষ চায় সেই সরকার, যেটা সুশাসন দিতে পারে। গ্রামের মানুষ কী করে? দুধ দোহানোর সময় যদি গাভি শান্ত থাকে, তাহলে তাকে আরও বেশি করে ভালোবাসে আর যদি দু-চারটা লাথি-টাথি মারে, সে ক্ষেত্রেও মাইন্ড করে না, কারণ লাথির বদলে সে পাচ্ছে দুধ। এখানে গাভি মানে সরকার, শান্ত থাকার অর্থ পূর্ণ গণতন্ত্র আর দুধ হলো সুশাসন।
লেখক: সাংবাদিক
মাহবুব কামাল

যমুনা সেতুর (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু) নির্মাণকাজ যখন চলছিল, তখন এই সেতুর স্বপ্ন কে দেখেছিলেন, তা নিয়ে একেকজন একেকজনের নাম বলেছিলেন। কেউ বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুই সেতুটির স্বপ্নদ্রষ্টা, কেউ ভাসানীর নাম করেছিলেন, কেউবা বলেছিলেন আইয়ুব খান ইত্যাদি। প্রকৃত প্রস্তাবে তাঁদের কেউই সঠিক ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করতে পারেননি। আসলে এই সেতুর স্বপ্ন প্রথম কে দেখেছিলেন, তাঁকে আমরা চিনি না। হতে পারে সেটা হাজার বছর আগের কথা। এক মাঝি পাড়ি দিচ্ছিলেন যমুনা, মাঝনদীতে উঠেছিল ঝড়, উথাল-পাতাল ঢেউ, প্রাণপণ সংগ্রামে তিনি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন প্রিয় জীবন ও ততোধিক প্রিয় তাঁর জীবিকার অবলম্বন নৌকা এবং ঝড়ের তাণ্ডব শেষ হওয়ার পর মনে মনে বলেছিলেন, আহা, এই নদীর ওপর যদি একটি পুল (সেতু) থাকত!
গণতন্ত্রের বয়স কত আমরা জানি, কম-বেশি দুই হাজার বছর। মতবাদটির বিবর্তন ও পরিশীলন-প্রক্রিয়া চলেছে শতাব্দীর পর শতাব্দী এবং আজ, এই মুহূর্তে এথেন্সের সেই গণতন্ত্র খোল-নলচেই পাল্টে ফেলেছে। তো যমুনা সেতুর প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টার মতো গণতন্ত্রের স্বপ্ন প্রথম দেখেছিলেন কে? তিনিও নিশ্চয়ই অতি প্রাচীন এক ব্যক্তি। হতে পারে তিনি আদিম সাম্যবাদী যুগের এক বাসিন্দা। সবাই মিলে পশু শিকার করার পর যখন দেখেছিলেন শক্তিমান দু-একজনই খেয়ে চলেছে সব আর তাঁর ও তাঁর মতো অনেকের ভাগে কিছুই নেই, থাকলেও তা উচ্ছিষ্ট—তিনি তখন হয়তো ভেবেছিলেন, ইশ্, কে কতটা খাবে সেই সিদ্ধান্তের জন্য যদি সবার মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কাজ করেও এভাবে না খেয়ে থাকতে হতো না তাঁকে।
হ্যাঁ, গণতন্ত্র এক অতি প্রাচীন ধারণা। আমলাতন্ত্র অবশ্য এর চেয়েও প্রাচীন। তবে চরিত্রগতভাবে আমলাতন্ত্র এখনো অবিকল থাকলেও এর চেয়ে কম বয়সী গণতন্ত্রের গায়ে মরিচা ধরেছে। যে মর্মকথার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল গণতন্ত্র, মতবাদটির চর্চা হচ্ছে পৃথিবীর যেসব দেশে, সেগুলোর কোনোটাতেই তা সর্বাংশে প্রতিফলিত হচ্ছে না। হয়তো মতবাদটির প্রয়োগ পদ্ধতিতেই থেকে যাচ্ছে কোনো গলদ, যার কারণে দুধের আশায় এর বাঁট টানছি যখন, বের হচ্ছে গরল।
বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক। নব্বইয়ে তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী গণতন্ত্রচর্চা করব বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলাম সবাই; কিন্তু ৩৩ বছর পর ফাইনাল ব্যালান্সশিটে কী দেখছি? ছোট করে বললে, পেয়েছি হাজারের হিসাবে মৃত্যু, আরও পেয়েছি এমপি হিসেবে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে, দেখেছি ব্যারাক থেকে বেরিয়ে এসে সেনাবাহিনী ছুটেছে বঙ্গভবনের দিকে। বস্তুত আমরা যাকে এখন গণতন্ত্র নামে ডাকছি, তার আসল নাম উচ্ছৃঙ্খলতা। গণতন্ত্রের মর্মবস্তুতে নিশ্চয়ই কোনো গলদ কিংবা বিচ্যুতি নেই, অতঃপর নিঃসন্দেহে সিদ্ধান্ত টানা চলে যে প্রয়োগের দোষেই দেশে দেশে মরিচা ধরছে এর গায়ে।
অবশ্য গণতন্ত্রের মর্মবস্তুতে যে কোনো গলদ নেই, এটা বলার সময় ‘নিশ্চয়ই’ বলাটা ভুল হলো। কিছু ধাঁধা তো আছেই। যেমন দুর্নীতিপরায়ণ অথচ যোগ্য এমন মানুষদের নিয়োগব্যবস্থা ভালো, নাকি অযোগ্যদের নির্বাচনব্যবস্থা—এটা এক বিতর্ক বৈকি। আরও একটি প্যারাডক্স এমন যে যখন বলি গণতন্ত্রটা বড় বেশি গণতান্ত্রিক, তখন অপশক্তিকে দমন করার উদ্যোগ নেওয়ার সময় মনে হতেই পারে গণতন্ত্রের ক্ষতি হয়ে যাবে তাতে। অথচ অপশক্তিকে দমন না করলে সুশাসন নিশ্চিত করা যায় না। আবার এমনও বলা যেতে পারে, পৃথিবীর কেউই এতটা জ্ঞানী বা সৎ নয়, যতটা জ্ঞান বা সততা থাকলে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে তাকে ভোট দিয়ে বিশ্বাস করা চলে। যেসব কারণে মানুষের চরিত্রে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে, তার একটি রাষ্ট্রক্ষমতার সঙ্গলাভ। ভোট তো রাষ্ট্রক্ষমতার সঙ্গে বিজয়ীর এই সঙ্গলাভেরই মিডিয়েটর। এটাও বা বলতে ছাড়ছি কেন, গণতন্ত্রের শত্রু শুধু স্বৈরতন্ত্র নয়, এই শত্রু আসলে বল্গাহীন স্বাধীনতাও।
আমরা এখন অধিক গণতন্ত্র, না স্বল্প—এই বিতর্কে ঢুকব না। আমরা বলব উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের কথা। পাঠক যেন সন্দেহ না করেন যে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্র বলতে মাহাথির-লি কুয়ানের মডেলকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। আমাদের এই উপমহাদেশে মাহাথির-লি কুয়ানের সীমিত গণতন্ত্র যে খাটে না, এ কথা অমর্ত্য সেন অনেক আগেই নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলা-ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশের মানুষ চরিত্রগতভাবে আর্গুমেন্টেটিভ, অর্থাৎ তর্কপ্রিয়। পেট অভুক্ত থাকলেও কথা চালিয়ে যেতে তারা স্বচ্ছন্দবোধ করে। উপজেলা, এমনকি গ্রামপর্যায়েও দেখা যাবে, এক কাপ চায়ের বেশি কিছু না খেয়েই স্টলে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাজনীতি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করে যাচ্ছে মানুষ, অন্য কাস্টমারকে বসার সুযোগ করে দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন দোকানি, শুনছে না কেউ। সীমিত গণতন্ত্র এই মানুষদের স্বভাবের সঙ্গে যায় না।
আমরা আগেই বলেছি, বর্তমানে যে গণতন্ত্র চালু রেখেছি আমরা, তা ফলদায়ক হচ্ছে না। তবে কি প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর), অর্থাৎ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের গণতন্ত্রে শিফট করা উচিত? সত্য বৈকি, এখনকার ওয়েস্টমিনস্টার-টাইপ গণতন্ত্রে অনেক শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে, পিআর সিস্টেমে তা নেই। সেই ফাঁকিটা ধরিয়ে দেওয়া যাক। গণতন্ত্রের মূল কথাই হলো শাসনটা হতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই। আরও সুন্দর করে বললে, সংখ্যালঘিষ্ঠের মর্মবস্তু ধারণ করা সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনের নামই গণতন্ত্র। তো ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রে সরকারটি সংখ্যাগরিষ্ঠের পছন্দানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত না-ও হতে পারে। থিওরিটিক্যালি কথাটা প্রতিষ্ঠা করা যাক। ৩০০ আসনের আমাদের পার্লামেন্টের ১৫১টিতে একটি দলের প্রার্থীদের সবাই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে মাত্র এক ভোট বেশি পাওয়ার পর যদি বাকি ১৪৯টিতে দলটি একটি ভোটও না পায়, সে ক্ষেত্রেও সেই দল সরকার গঠন করার যোগ্যতা অর্জন করবে। অতঃপর সরকারটি কি জনমতের ভিত্তিতে গঠিত হলো?
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রায় সমান ভোট পেয়েও (৪১ দশমিক ৪০ ও ৪০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ) বিএনপির আসন ১৯৩, আওয়ামী লীগের মাত্র ৬২। আবার দেখুন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পেল ২৭টি, অথচ বিএনপি ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে পেল জাতীয় পার্টির চেয়ে মাত্র ৩টি আসন বেশি।
বলতে অসুবিধা কোথায়, বর্তমান সিস্টেমে পরাজিতের ভোট পচে যায়, তার হিসাব কেউ রাখে না, আর পিআর পদ্ধতিতে সব ভোটেরই গুরুত্ব থাকে। বামপন্থীরা এ দেশে এককভাবে (নৌকা অথবা ধানের শীষের সাহায্য ছাড়া) ভোট করলে কোনো আসন পায় না। কিন্তু তারা কি সারা দেশে ১ শতাংশ ভোটও পায় না? যদি পায়, তাহলে তো পিআর সিস্টেমে তাদের আসনসংখ্যা দাঁড়াবে ৩। এই সিস্টেমে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নিশ্চিত হয় বলেই তার চর্চা হচ্ছে কন্টিনেন্টাল ইউরোপে। ইংল্যান্ডেও লেবার ও কনজারভেটিভরা পালা করে ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করছে বলে তৃতীয় ধারার লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা দাবি করছে পিআর সিস্টেমে শিফট করার। কারণ তারা ভোট পায়, আসন পায় না। ইউরোপে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নিশ্চিত করতেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুয়ের অধিক প্রার্থী থাকলে বিজয়ী হতে হলে যেকোনো একজনকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয়। তা না হলে বেশি ভোটপ্রাপ্ত প্রথম দুজনকে আবারও লড়তে হয়। বলা নিষ্প্রয়োজন, দ্বিতীয় দফায় দুজনের যেকোনো একজন অর্ধেকের বেশি ভোট পাবেনই কি পাবেন। কূটতার্কিকেরা অবশ্য বলতে পারেন, প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা যদি ইভেন অর্থাৎ জোড় হয়, সে ক্ষেত্রে তো টাই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে!
আমরা বলছি না, পিআর সিস্টেমকেই অবলম্বন করতে হবে। তবে এই গণতন্ত্রের সুফলটা একটু দেখুন। এই সিস্টেমে কোয়ালিশন সরকারের সম্ভাবনা বেশি থাকে, যা বাংলাদেশে কয়েক টার্ম চালু থাকলে রাজনীতিকদের কর্তৃত্বপরায়ণ মানসিকতার পরিবর্তন ঘটতে পারে। দ্বিতীয়ত, ১৫১ আসনকে মাথায় রেখে নির্বাচন করার প্রবণতা হ্রাস পাবে এতে, রাজনৈতিক দলগুলো সে ক্ষেত্রে গোটা বাংলাদেশকেই মাথায় রাখতে বাধ্য হবে। বগুড়া আমার, গোপালগঞ্জ তোমার—এভাবে হিসাব করলে সর্ববাংলাদেশি চিন্তার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। তৃতীয়ত, সারা দেশেই ভোটে এগিয়ে থাকতে হবে—এমন বাধ্যবাধকতা থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আসতে বাধ্য। রাজনীতিটাও তখন করতে হবে ঠিকঠাক। পাঠক লক্ষ করুন, শহীদ চান্দু নামের আধুনিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি বগুড়ায় স্থাপিত বলে ২০০৮ সালের পর থেকে সেখানে একটিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব হয়তো ভাবেন, বগুড়ায় তো ভোট অ্যামনেও পাব না, ত্যামনেও পাব না—ওখানে এত আয়োজনের দরকার কী! পিআর সিস্টেমে যদি বগুড়ায় ১০০ ভোটও পাওয়া যায়, সেটাও কি চূড়ান্ত ফলাফলশিটে যুক্ত হবে না?
আমরা এতক্ষণ গণতন্ত্রের একটি প্রতিষ্ঠিত মডেল নিয়ে কথা বললাম। অন্য প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতিগুলো নিয়েও কথা হতে পারে; নতুন কোনো পদ্ধতি উদ্ভাবন করা যায় কি না, সেটাও ভাবা যেতে পারে। আমরা বাঙালি অথবা তাম্রবর্ণের বলে সভ্যতাকে দেওয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই কি নেই আমাদের? সাদাদের ওপর কতকাল আর নির্ভরতা? তো আমাদের জন্য উৎকৃষ্ট গণতন্ত্র কোনটা, সেটা পণ্ডিতজনেরা ভাবুন, রাজনীতিকদের মাথায় এই ঘিলু আছে বলে মনে হয় না। অথবা ঘিলু থাকলেও বোঁচকা নিয়ে টানাটানি করতেই সেটা প্রয়োগ করার সময় শেষ হয়ে যায়।
উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সত্যিকার রূপটি কী হওয়া উচিত, সেটা যেহেতু স্কলারদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো, সেহেতু আমরা গণতন্ত্র নিয়েই অন্য রকম কিছু কথা বলে শেষ করব। প্রথমত, নির্বাচন কিন্তু লক্ষ্য নয়, এটা উপায় আর লক্ষ্য হচ্ছে ভালো থাকা। নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে আমরা সেই লক্ষ্যেই পৌঁছাতে চাই। কিন্তু এ দেশের মানুষের মগজ কায়দা করে এমনভাবে ধোলাই করা হয়েছে যে মনে হয় নির্বাচনটাই বুঝি লক্ষ্য। খেয়াল করুন, ভালো থাকার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দেশে অনেক সাংবিধানিক সংস্থা রয়েছে; কিন্তু সেগুলোর মাত্র একটি—নির্বাচন কমিশন নিয়েই বিরোধী রাজনীতিকদের যত তত্ত্বকথা। এখন আবার চলছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি বাদ দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন। যা-ই হোক, নির্বাচন হলো গণতন্ত্রচর্চার একমাত্র পদ্ধতি, অথচ রাজনীতিকেরা গণতন্ত্রকে নির্বাচনসর্বস্ব করে ফেলেছেন। ঘরের বউকে কড়া শাসনে রেখে অথবা বিনা কারণে কাউকে অপদস্থ করার পর বক্তৃতার মঞ্চে গণতন্ত্রের জয়গান করতে তাই কোনোই অসুবিধা হয় না এ দেশে। দীর্ঘদিনের মগজ ধোলাই-প্রক্রিয়া শেষে সাধারণ মানুষও এখন মনে করে ভোট দিতে না পারলেই গণতন্ত্রের ইজ্জত যায়, অন্য কোনোভাবে নয়। আর তাই তাদের কাছে ভোটাধিকার হরণ মানে সতীত্ব হরণের মতোই লজ্জাকর। তারা বলতে পারছে না, মেয়ের নাকের জায়গায় নাক নেই, ঠোঁটের জায়গায় নেই ঠোঁট, সেই মেয়েকে মা সুন্দর বলতে চাইলে বলুক, পাড়া-পড়শি আমরা কেন বলতে যাব? এই গণতন্ত্র মোটেও সুন্দর নয়।
দেখুন, আমাদের অভিজ্ঞতা পরিপূর্ণ হয়েছে যে নব্বইয়ের পর থেকে নতুন সরকার মানে নতুন উপদ্রব। তারপরও ভোট দিতেই হবে এবং সেটা ইমিডিয়েট পাস্ট সরকারি দলের বিরুদ্ধেই। তা না হলে আমি যে একটা দামি ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, তা প্রমাণ হয় না! বরিশালের লোকেরা বলে থাকেন, এমপি সাহেব কী করতে আছে করুক, ইলেকশন আহুক, এইবার আর টাকামু না। ‘টাকামু না’ মানে এমপি সাহেবের মার্কায় সিল মারবেন না।
শেষ কথা, বুদ্ধিমানেরা সরকারের ধরন নিয়ে মাথা ঘামায়, আঁতেলরা মনে করে যে সরকার যত কম শাসন করে সেই সরকার ততো ভালো, আর সাধারণ মানুষ চায় সেই সরকার, যেটা সুশাসন দিতে পারে। গ্রামের মানুষ কী করে? দুধ দোহানোর সময় যদি গাভি শান্ত থাকে, তাহলে তাকে আরও বেশি করে ভালোবাসে আর যদি দু-চারটা লাথি-টাথি মারে, সে ক্ষেত্রেও মাইন্ড করে না, কারণ লাথির বদলে সে পাচ্ছে দুধ। এখানে গাভি মানে সরকার, শান্ত থাকার অর্থ পূর্ণ গণতন্ত্র আর দুধ হলো সুশাসন।
লেখক: সাংবাদিক

যমুনা সেতুর (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু) নির্মাণকাজ যখন চলছিল, তখন এই সেতুর স্বপ্ন কে দেখেছিলেন, তা নিয়ে একেকজন একেকজনের নাম বলেছিলেন। কেউ বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুই সেতুটির স্বপ্নদ্রষ্টা, কেউ ভাসানীর নাম করেছিলেন, কেউবা বলেছিলেন আইয়ুব খান ইত্যাদি। প্রকৃত প্রস্তাবে তাঁদের কেউই সঠিক ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করতে পারেননি। আসলে এই সেতুর স্বপ্ন প্রথম কে দেখেছিলেন, তাঁকে আমরা চিনি না। হতে পারে সেটা হাজার বছর আগের কথা। এক মাঝি পাড়ি দিচ্ছিলেন যমুনা, মাঝনদীতে উঠেছিল ঝড়, উথাল-পাতাল ঢেউ, প্রাণপণ সংগ্রামে তিনি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন প্রিয় জীবন ও ততোধিক প্রিয় তাঁর জীবিকার অবলম্বন নৌকা এবং ঝড়ের তাণ্ডব শেষ হওয়ার পর মনে মনে বলেছিলেন, আহা, এই নদীর ওপর যদি একটি পুল (সেতু) থাকত!
গণতন্ত্রের বয়স কত আমরা জানি, কম-বেশি দুই হাজার বছর। মতবাদটির বিবর্তন ও পরিশীলন-প্রক্রিয়া চলেছে শতাব্দীর পর শতাব্দী এবং আজ, এই মুহূর্তে এথেন্সের সেই গণতন্ত্র খোল-নলচেই পাল্টে ফেলেছে। তো যমুনা সেতুর প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টার মতো গণতন্ত্রের স্বপ্ন প্রথম দেখেছিলেন কে? তিনিও নিশ্চয়ই অতি প্রাচীন এক ব্যক্তি। হতে পারে তিনি আদিম সাম্যবাদী যুগের এক বাসিন্দা। সবাই মিলে পশু শিকার করার পর যখন দেখেছিলেন শক্তিমান দু-একজনই খেয়ে চলেছে সব আর তাঁর ও তাঁর মতো অনেকের ভাগে কিছুই নেই, থাকলেও তা উচ্ছিষ্ট—তিনি তখন হয়তো ভেবেছিলেন, ইশ্, কে কতটা খাবে সেই সিদ্ধান্তের জন্য যদি সবার মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কাজ করেও এভাবে না খেয়ে থাকতে হতো না তাঁকে।
হ্যাঁ, গণতন্ত্র এক অতি প্রাচীন ধারণা। আমলাতন্ত্র অবশ্য এর চেয়েও প্রাচীন। তবে চরিত্রগতভাবে আমলাতন্ত্র এখনো অবিকল থাকলেও এর চেয়ে কম বয়সী গণতন্ত্রের গায়ে মরিচা ধরেছে। যে মর্মকথার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল গণতন্ত্র, মতবাদটির চর্চা হচ্ছে পৃথিবীর যেসব দেশে, সেগুলোর কোনোটাতেই তা সর্বাংশে প্রতিফলিত হচ্ছে না। হয়তো মতবাদটির প্রয়োগ পদ্ধতিতেই থেকে যাচ্ছে কোনো গলদ, যার কারণে দুধের আশায় এর বাঁট টানছি যখন, বের হচ্ছে গরল।
বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক। নব্বইয়ে তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী গণতন্ত্রচর্চা করব বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলাম সবাই; কিন্তু ৩৩ বছর পর ফাইনাল ব্যালান্সশিটে কী দেখছি? ছোট করে বললে, পেয়েছি হাজারের হিসাবে মৃত্যু, আরও পেয়েছি এমপি হিসেবে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে, দেখেছি ব্যারাক থেকে বেরিয়ে এসে সেনাবাহিনী ছুটেছে বঙ্গভবনের দিকে। বস্তুত আমরা যাকে এখন গণতন্ত্র নামে ডাকছি, তার আসল নাম উচ্ছৃঙ্খলতা। গণতন্ত্রের মর্মবস্তুতে নিশ্চয়ই কোনো গলদ কিংবা বিচ্যুতি নেই, অতঃপর নিঃসন্দেহে সিদ্ধান্ত টানা চলে যে প্রয়োগের দোষেই দেশে দেশে মরিচা ধরছে এর গায়ে।
অবশ্য গণতন্ত্রের মর্মবস্তুতে যে কোনো গলদ নেই, এটা বলার সময় ‘নিশ্চয়ই’ বলাটা ভুল হলো। কিছু ধাঁধা তো আছেই। যেমন দুর্নীতিপরায়ণ অথচ যোগ্য এমন মানুষদের নিয়োগব্যবস্থা ভালো, নাকি অযোগ্যদের নির্বাচনব্যবস্থা—এটা এক বিতর্ক বৈকি। আরও একটি প্যারাডক্স এমন যে যখন বলি গণতন্ত্রটা বড় বেশি গণতান্ত্রিক, তখন অপশক্তিকে দমন করার উদ্যোগ নেওয়ার সময় মনে হতেই পারে গণতন্ত্রের ক্ষতি হয়ে যাবে তাতে। অথচ অপশক্তিকে দমন না করলে সুশাসন নিশ্চিত করা যায় না। আবার এমনও বলা যেতে পারে, পৃথিবীর কেউই এতটা জ্ঞানী বা সৎ নয়, যতটা জ্ঞান বা সততা থাকলে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে তাকে ভোট দিয়ে বিশ্বাস করা চলে। যেসব কারণে মানুষের চরিত্রে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে, তার একটি রাষ্ট্রক্ষমতার সঙ্গলাভ। ভোট তো রাষ্ট্রক্ষমতার সঙ্গে বিজয়ীর এই সঙ্গলাভেরই মিডিয়েটর। এটাও বা বলতে ছাড়ছি কেন, গণতন্ত্রের শত্রু শুধু স্বৈরতন্ত্র নয়, এই শত্রু আসলে বল্গাহীন স্বাধীনতাও।
আমরা এখন অধিক গণতন্ত্র, না স্বল্প—এই বিতর্কে ঢুকব না। আমরা বলব উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের কথা। পাঠক যেন সন্দেহ না করেন যে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্র বলতে মাহাথির-লি কুয়ানের মডেলকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। আমাদের এই উপমহাদেশে মাহাথির-লি কুয়ানের সীমিত গণতন্ত্র যে খাটে না, এ কথা অমর্ত্য সেন অনেক আগেই নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলা-ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশের মানুষ চরিত্রগতভাবে আর্গুমেন্টেটিভ, অর্থাৎ তর্কপ্রিয়। পেট অভুক্ত থাকলেও কথা চালিয়ে যেতে তারা স্বচ্ছন্দবোধ করে। উপজেলা, এমনকি গ্রামপর্যায়েও দেখা যাবে, এক কাপ চায়ের বেশি কিছু না খেয়েই স্টলে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাজনীতি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করে যাচ্ছে মানুষ, অন্য কাস্টমারকে বসার সুযোগ করে দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন দোকানি, শুনছে না কেউ। সীমিত গণতন্ত্র এই মানুষদের স্বভাবের সঙ্গে যায় না।
আমরা আগেই বলেছি, বর্তমানে যে গণতন্ত্র চালু রেখেছি আমরা, তা ফলদায়ক হচ্ছে না। তবে কি প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর), অর্থাৎ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের গণতন্ত্রে শিফট করা উচিত? সত্য বৈকি, এখনকার ওয়েস্টমিনস্টার-টাইপ গণতন্ত্রে অনেক শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে, পিআর সিস্টেমে তা নেই। সেই ফাঁকিটা ধরিয়ে দেওয়া যাক। গণতন্ত্রের মূল কথাই হলো শাসনটা হতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই। আরও সুন্দর করে বললে, সংখ্যালঘিষ্ঠের মর্মবস্তু ধারণ করা সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনের নামই গণতন্ত্র। তো ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রে সরকারটি সংখ্যাগরিষ্ঠের পছন্দানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত না-ও হতে পারে। থিওরিটিক্যালি কথাটা প্রতিষ্ঠা করা যাক। ৩০০ আসনের আমাদের পার্লামেন্টের ১৫১টিতে একটি দলের প্রার্থীদের সবাই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে মাত্র এক ভোট বেশি পাওয়ার পর যদি বাকি ১৪৯টিতে দলটি একটি ভোটও না পায়, সে ক্ষেত্রেও সেই দল সরকার গঠন করার যোগ্যতা অর্জন করবে। অতঃপর সরকারটি কি জনমতের ভিত্তিতে গঠিত হলো?
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রায় সমান ভোট পেয়েও (৪১ দশমিক ৪০ ও ৪০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ) বিএনপির আসন ১৯৩, আওয়ামী লীগের মাত্র ৬২। আবার দেখুন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পেল ২৭টি, অথচ বিএনপি ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে পেল জাতীয় পার্টির চেয়ে মাত্র ৩টি আসন বেশি।
বলতে অসুবিধা কোথায়, বর্তমান সিস্টেমে পরাজিতের ভোট পচে যায়, তার হিসাব কেউ রাখে না, আর পিআর পদ্ধতিতে সব ভোটেরই গুরুত্ব থাকে। বামপন্থীরা এ দেশে এককভাবে (নৌকা অথবা ধানের শীষের সাহায্য ছাড়া) ভোট করলে কোনো আসন পায় না। কিন্তু তারা কি সারা দেশে ১ শতাংশ ভোটও পায় না? যদি পায়, তাহলে তো পিআর সিস্টেমে তাদের আসনসংখ্যা দাঁড়াবে ৩। এই সিস্টেমে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নিশ্চিত হয় বলেই তার চর্চা হচ্ছে কন্টিনেন্টাল ইউরোপে। ইংল্যান্ডেও লেবার ও কনজারভেটিভরা পালা করে ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করছে বলে তৃতীয় ধারার লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা দাবি করছে পিআর সিস্টেমে শিফট করার। কারণ তারা ভোট পায়, আসন পায় না। ইউরোপে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নিশ্চিত করতেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুয়ের অধিক প্রার্থী থাকলে বিজয়ী হতে হলে যেকোনো একজনকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয়। তা না হলে বেশি ভোটপ্রাপ্ত প্রথম দুজনকে আবারও লড়তে হয়। বলা নিষ্প্রয়োজন, দ্বিতীয় দফায় দুজনের যেকোনো একজন অর্ধেকের বেশি ভোট পাবেনই কি পাবেন। কূটতার্কিকেরা অবশ্য বলতে পারেন, প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা যদি ইভেন অর্থাৎ জোড় হয়, সে ক্ষেত্রে তো টাই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে!
আমরা বলছি না, পিআর সিস্টেমকেই অবলম্বন করতে হবে। তবে এই গণতন্ত্রের সুফলটা একটু দেখুন। এই সিস্টেমে কোয়ালিশন সরকারের সম্ভাবনা বেশি থাকে, যা বাংলাদেশে কয়েক টার্ম চালু থাকলে রাজনীতিকদের কর্তৃত্বপরায়ণ মানসিকতার পরিবর্তন ঘটতে পারে। দ্বিতীয়ত, ১৫১ আসনকে মাথায় রেখে নির্বাচন করার প্রবণতা হ্রাস পাবে এতে, রাজনৈতিক দলগুলো সে ক্ষেত্রে গোটা বাংলাদেশকেই মাথায় রাখতে বাধ্য হবে। বগুড়া আমার, গোপালগঞ্জ তোমার—এভাবে হিসাব করলে সর্ববাংলাদেশি চিন্তার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। তৃতীয়ত, সারা দেশেই ভোটে এগিয়ে থাকতে হবে—এমন বাধ্যবাধকতা থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আসতে বাধ্য। রাজনীতিটাও তখন করতে হবে ঠিকঠাক। পাঠক লক্ষ করুন, শহীদ চান্দু নামের আধুনিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি বগুড়ায় স্থাপিত বলে ২০০৮ সালের পর থেকে সেখানে একটিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব হয়তো ভাবেন, বগুড়ায় তো ভোট অ্যামনেও পাব না, ত্যামনেও পাব না—ওখানে এত আয়োজনের দরকার কী! পিআর সিস্টেমে যদি বগুড়ায় ১০০ ভোটও পাওয়া যায়, সেটাও কি চূড়ান্ত ফলাফলশিটে যুক্ত হবে না?
আমরা এতক্ষণ গণতন্ত্রের একটি প্রতিষ্ঠিত মডেল নিয়ে কথা বললাম। অন্য প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতিগুলো নিয়েও কথা হতে পারে; নতুন কোনো পদ্ধতি উদ্ভাবন করা যায় কি না, সেটাও ভাবা যেতে পারে। আমরা বাঙালি অথবা তাম্রবর্ণের বলে সভ্যতাকে দেওয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই কি নেই আমাদের? সাদাদের ওপর কতকাল আর নির্ভরতা? তো আমাদের জন্য উৎকৃষ্ট গণতন্ত্র কোনটা, সেটা পণ্ডিতজনেরা ভাবুন, রাজনীতিকদের মাথায় এই ঘিলু আছে বলে মনে হয় না। অথবা ঘিলু থাকলেও বোঁচকা নিয়ে টানাটানি করতেই সেটা প্রয়োগ করার সময় শেষ হয়ে যায়।
উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সত্যিকার রূপটি কী হওয়া উচিত, সেটা যেহেতু স্কলারদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো, সেহেতু আমরা গণতন্ত্র নিয়েই অন্য রকম কিছু কথা বলে শেষ করব। প্রথমত, নির্বাচন কিন্তু লক্ষ্য নয়, এটা উপায় আর লক্ষ্য হচ্ছে ভালো থাকা। নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে আমরা সেই লক্ষ্যেই পৌঁছাতে চাই। কিন্তু এ দেশের মানুষের মগজ কায়দা করে এমনভাবে ধোলাই করা হয়েছে যে মনে হয় নির্বাচনটাই বুঝি লক্ষ্য। খেয়াল করুন, ভালো থাকার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দেশে অনেক সাংবিধানিক সংস্থা রয়েছে; কিন্তু সেগুলোর মাত্র একটি—নির্বাচন কমিশন নিয়েই বিরোধী রাজনীতিকদের যত তত্ত্বকথা। এখন আবার চলছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি বাদ দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন। যা-ই হোক, নির্বাচন হলো গণতন্ত্রচর্চার একমাত্র পদ্ধতি, অথচ রাজনীতিকেরা গণতন্ত্রকে নির্বাচনসর্বস্ব করে ফেলেছেন। ঘরের বউকে কড়া শাসনে রেখে অথবা বিনা কারণে কাউকে অপদস্থ করার পর বক্তৃতার মঞ্চে গণতন্ত্রের জয়গান করতে তাই কোনোই অসুবিধা হয় না এ দেশে। দীর্ঘদিনের মগজ ধোলাই-প্রক্রিয়া শেষে সাধারণ মানুষও এখন মনে করে ভোট দিতে না পারলেই গণতন্ত্রের ইজ্জত যায়, অন্য কোনোভাবে নয়। আর তাই তাদের কাছে ভোটাধিকার হরণ মানে সতীত্ব হরণের মতোই লজ্জাকর। তারা বলতে পারছে না, মেয়ের নাকের জায়গায় নাক নেই, ঠোঁটের জায়গায় নেই ঠোঁট, সেই মেয়েকে মা সুন্দর বলতে চাইলে বলুক, পাড়া-পড়শি আমরা কেন বলতে যাব? এই গণতন্ত্র মোটেও সুন্দর নয়।
দেখুন, আমাদের অভিজ্ঞতা পরিপূর্ণ হয়েছে যে নব্বইয়ের পর থেকে নতুন সরকার মানে নতুন উপদ্রব। তারপরও ভোট দিতেই হবে এবং সেটা ইমিডিয়েট পাস্ট সরকারি দলের বিরুদ্ধেই। তা না হলে আমি যে একটা দামি ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, তা প্রমাণ হয় না! বরিশালের লোকেরা বলে থাকেন, এমপি সাহেব কী করতে আছে করুক, ইলেকশন আহুক, এইবার আর টাকামু না। ‘টাকামু না’ মানে এমপি সাহেবের মার্কায় সিল মারবেন না।
শেষ কথা, বুদ্ধিমানেরা সরকারের ধরন নিয়ে মাথা ঘামায়, আঁতেলরা মনে করে যে সরকার যত কম শাসন করে সেই সরকার ততো ভালো, আর সাধারণ মানুষ চায় সেই সরকার, যেটা সুশাসন দিতে পারে। গ্রামের মানুষ কী করে? দুধ দোহানোর সময় যদি গাভি শান্ত থাকে, তাহলে তাকে আরও বেশি করে ভালোবাসে আর যদি দু-চারটা লাথি-টাথি মারে, সে ক্ষেত্রেও মাইন্ড করে না, কারণ লাথির বদলে সে পাচ্ছে দুধ। এখানে গাভি মানে সরকার, শান্ত থাকার অর্থ পূর্ণ গণতন্ত্র আর দুধ হলো সুশাসন।
লেখক: সাংবাদিক

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

যমুনা সেতুর (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু) নির্মাণকাজ যখন চলছিল, তখন এই সেতুর স্বপ্ন কে দেখেছিলেন, তা নিয়ে একেকজন একেকজনের নাম বলেছিলেন। কেউ বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুই সেতুটির স্বপ্নদ্রষ্টা, কেউ ভাসানীর নাম করেছিলেন, কেউবা বলেছিলেন আইয়ুব খান ইত্যাদি। প্রকৃত প্রস্তাবে তাঁদের কেউই সঠিক ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করতে পা
২৮ জুলাই ২০২৩
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

যমুনা সেতুর (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু) নির্মাণকাজ যখন চলছিল, তখন এই সেতুর স্বপ্ন কে দেখেছিলেন, তা নিয়ে একেকজন একেকজনের নাম বলেছিলেন। কেউ বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুই সেতুটির স্বপ্নদ্রষ্টা, কেউ ভাসানীর নাম করেছিলেন, কেউবা বলেছিলেন আইয়ুব খান ইত্যাদি। প্রকৃত প্রস্তাবে তাঁদের কেউই সঠিক ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করতে পা
২৮ জুলাই ২০২৩
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

যমুনা সেতুর (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু) নির্মাণকাজ যখন চলছিল, তখন এই সেতুর স্বপ্ন কে দেখেছিলেন, তা নিয়ে একেকজন একেকজনের নাম বলেছিলেন। কেউ বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুই সেতুটির স্বপ্নদ্রষ্টা, কেউ ভাসানীর নাম করেছিলেন, কেউবা বলেছিলেন আইয়ুব খান ইত্যাদি। প্রকৃত প্রস্তাবে তাঁদের কেউই সঠিক ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করতে পা
২৮ জুলাই ২০২৩
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

যমুনা সেতুর (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু) নির্মাণকাজ যখন চলছিল, তখন এই সেতুর স্বপ্ন কে দেখেছিলেন, তা নিয়ে একেকজন একেকজনের নাম বলেছিলেন। কেউ বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুই সেতুটির স্বপ্নদ্রষ্টা, কেউ ভাসানীর নাম করেছিলেন, কেউবা বলেছিলেন আইয়ুব খান ইত্যাদি। প্রকৃত প্রস্তাবে তাঁদের কেউই সঠিক ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করতে পা
২৮ জুলাই ২০২৩
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫