Ajker Patrika

যে উপজেলায় প্রতিদিন একজনকে সাপে কাটে

  • উপজেলায় সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা জেলার প্রায় অর্ধেক।
  • ৮ মাসে ২৪০ সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছে।
  • ১৫ দিন ধরে অ্যান্টিভেনম না থাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ১৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই অ্যান্টিভেনম। অথচ সেখানে প্রতি মাসে গড়ে ৩০ জন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। গত ৮ মাসে (জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত) ২৪০ জন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছে। এদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের দাবি, মৃত্যুর সংখ্যাটি প্রকৃতপক্ষে আরও বেশি। তবে সাপে কাটা রোগীর মৃত্যুর কোনো তথ্য নেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সব মিলিয়ে, অ্যান্টিভেনম না থাকার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে উপজেলাবাসীকে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্যানুযায়ী, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন নিলুফা বেগম (৩০), সাদ্দাম হোসেন (২৩), কাজলী বেগম (৬০), সিয়াম হোসেন (১১)। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সখীপুর উপজেলায় সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা পুরো জেলার প্রায় অর্ধেক।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমতল ও পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় টাঙ্গাইলের সখীপুরে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক মানুষ সাপের দংশনের শিকার হন। ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত পরিমাণে সাপের অ্যান্টিভেনম রাখার দাবি করে আসছে স্থানীয়রা। মাস দুয়েক আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের কাছে পর্যাপ্তসংখ্যক সাপের ভ্যাকসিন রয়েছে। এই তথ্য দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সখীপুরসহ আশপাশের উপজেলার সাপে কাটা রোগীরাও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসে। এতে দ্রুত শেষ হয়ে যায় অ্যান্টিভেনমের মজুত। গত ১৫ দিন অ্যান্টিভেনম না থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

স্থানীয় স্কুলশিক্ষক বুলবুল হাসান জানান, ৫ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে আমার ভাগনে রাকিবকে (৩০) সাপে কাটে। সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন না পেয়ে আমরা সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যাই। সারা রাত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থেকে সকালে ফিরেছি। আল্লাহর রহমতে রোগী সুস্থ হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেহেনা পারভীন রুমি বলেন, গত ৮ মাসে হাসপাতালে ২৪০ জন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছে। সখীপুরে সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা বেশি। কিন্তু বর্তমানে অ্যান্টিভেনম মজুত নেই। আগে ডিজি হেলথ থেকে যে ভ্যাকসিন বরাদ্দ দেওয়া হতো, তা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। সারা দেশে একই অবস্থা। সাপে কাটা একজন রোগীকে ১০ ভায়াল ভ্যাকসিন দিতে হয়, যার মূল্য ১৫ হাজার টাকা। এত খরচ দিয়ে হাসপাতালের অর্থায়নে তো ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব নয়। তারপরও বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন অফিস ও কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

সাপে কাটা রোগীর মৃত্যুর তথ্য জানতে চাইলে রেহেনা পারভীন বলেন, ‘এ তথ্য আমাদের কাছে নেই।’

সিভিল সার্জন ফরাজী মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম মঞ্জু বলেন, ‘সরকারিভাবে আমাদের যে অ্যান্টিভেনম বরাদ্দ ছিল, এখন সেটা বন্ধ। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন অথবা সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে কিছু অ্যান্টিভেনমের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল রনি বলেন, ‘আমাদের কাছে ভ্যাকসিনের জন্য কোনো বরাদ্দ থাকে না। এ বিষয়ে গত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায়ও আলোচনা হয়েছে। এরপরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন যেসব প্রশ্ন তুলল, সর্বশেষ যা জানা গেল

রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’

হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেন জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত