Ajker Patrika

১১ বছরেও চালু করা যায়নি আইসিইউ

  • হাসপাতালে ৫৮২ পদের বিপরীতে আছেন ২৪৮ জন
  • সরঞ্জাম কেনা হলেও জনবলসংকটে চালু করা যাচ্ছে না
  • শৌচাগারের দুর্গন্ধে রোগী ও স্বজনদের থাকা দুষ্কর
  • ২৪ ঘণ্টা সেবা নিশ্চিতের দাবি জেলাবাসীর
আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল 
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮: ৫৯
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

জনবলসংকটে পুরোপুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়নি টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। ২০১৪ সালে হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত চালু করা যায়নি নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ), অর্থোপেডিক বিভাগ, ডায়ালাইসিস, ক্যাথল্যাব, স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ন ইউনিট (স্ক্যানু)। যদিও এসব সেবা চালুর জন্য কেনা হয়েছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। তবে নেই পর্যাপ্ত লোকবল। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীসহ ৩ শতাধিক জনবল নিয়োগ করা হলে হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলবে।

জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক চালু হওয়ার পর টাঙ্গাইল ‘দুর্ঘটনাপ্রবণ’ জেলা হয়ে ওঠে। দুর্ঘটনাকবলিতদের সেবার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে নির্মিত হয় ট্রমা সেন্টার। ওই সেন্টারেই ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি চালু করা হয় টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

গণপূর্ত বিভাগ জানায়, টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। হাসপাতাল ভবনসহ ২৭টি ভবন নির্মাণে ব্যয় হয় ২৮৪ কোটি টাকা। ১০৮ কোটি টাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি কেনা হয়। বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

হাসপাতাল সূত্র বলেছে, ২০২২ সালের ২২ মার্চ হাসপাতাল ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয় গণপূর্ত বিভাগ। এরপর ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যসেবা সচল করার কাজ শুরু হয়। বর্তমানে হাসপাতালের বহির্বিভাগে মেডিসিন, গাইনি, সার্জারি, শিশু, চর্ম, নাক-কান-গলা, চক্ষু বিভাগ, দন্ত বিভাগ, ফিজিওথেরাপি, শিশু বিকাশকেন্দ্র ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা চালু রয়েছে।

আন্তবিভাগে অপারেশন, সিজারিয়ান অপারেশন ও স্বাভাবিক প্রসবসেবা চালু রয়েছে। এ ছাড়া রক্তসহ সব ধরনের পরীক্ষা, এক্স-রে, সিটিস্ক্যান, এমআরআই, ম্যামোগ্রাফি, ইসিজি, ইকো কার্ডিওগ্রাফি, আলট্রাসনোগ্রাফি ও ডোপ টেস্ট চালু রয়েছে। এসব বিভাগেও জনবলের চরম সংকট রয়েছে।

হাসপাতালের দেওয়া তথ্যমতে, ৫৫ জন সার্জনের জায়গায় আছেন ৫০ জন। চারজন অ্যানেসথেসিওলজিস্টের একজনও নেই। ফার্মাসিস্ট, বায়োকেমিস্ট, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নার্সিং সুপারভাইজরও নেই। ১৬৫ জন নার্স প্রয়োজন, ১০১ জনই নেই। ৭৮ জন কর্মচারীর মধ্যে ৩৭টি পদই শূন্য। ২৬২ জন আউটসোর্সিং কর্মীর মধ্যে আছেন ৯০ জন। সব মিলিয়ে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫৮২ পদের বিপরীতে আছেন ২৪৮ জন। ৩৩৪ পদই শূন্য। ফলে রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বহির্বিভাগে রোগীদের লম্বা লাইন। তাঁরা টিকিট সংগ্রহ করছেন। বিভিন্ন বিভাগে চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সেবা চলমান। মেডিসিন, গাইনি বিভাগে নির্ধারিত শয্যার দ্বিগুণ রোগী অবস্থান করছেন। রোগীরা বিছানা ও মেঝেতে অবস্থান নিয়েই চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। হাসপাতালের ৮০টি কেবিন বন্ধ রয়েছে। জনবল ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন ইউনিট চালু না থাকায় আইসিইউ এবং অর্থোপেডিক বিভাগ পুরোপুরি বন্ধ। কিডনি বিভাগ চালু হলেও ডায়ালাইসিস চালু নেই। এ ছাড়া ক্যাথল্যাব, স্ক্যানু এখনো চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ক্লিনিক্যাল অনকোলজি ক্যানসার বিভাগ পুরোপুরি বন্ধ। ব্যবহার না হওয়ায় মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেশ কয়েকটি লিফট অচল হয়ে পড়ে রয়েছে।

ঘাটাইলের ছনোটিয়া গ্রামের বকুল মিয়াকে ডা. ফরিদ আহমেদের চেম্বারের স্লিপ দেওয়া হয়। চিকিৎসক না থাকায় অন্য চেম্বারের কর্মীদের সহযোগিতা নেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। তাঁর মতো অনেকেই ধরনা দিচ্ছেন অন্যজনের কাছে।

বকুল মিয়া বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নেওয়ার আশায় মেডিকেলে আসি। চিকিৎসকই যদি না থাকেন, তাহলে সেবা পাব কীভাবে?’

মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন হুগরা এলাকার হাসমত আলীর মতো অনেকেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালে করাতে পেরে খুশি। কিন্তু দুপুর ১২টা পেরোলেই রোগীর মধ্যে হতাশা নেমে আসে। ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তখন রোগীদের ক্লিনিকের দিতে ছুটতে দেখা যায়।

বাসাইলের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রোগী নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে নিতে সোয়া ১২টা বেজে যায়। ১২টার সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার টাকা জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ায় ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা সেবা নিশ্চিত করলে টাঙ্গাইলবাসীর অনেক উপকার হতো।’

এদিকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে হাসপাতাল গেটে সারি সারি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স দেখা যায়। জানা গেছে, বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট রয়েছে। অধিকাংশ সময় নোংরা থাকে হাসপাতাল। শৌচাগারের দুর্গন্ধ বাইরেও বিরক্তির সৃষ্টি করছে।

হাসপাতালের পরিচালক মো. আব্দুল কদ্দুছ বলেন, ‘জনবলসংকটের কারণে অর্থোপেডিক বিভাগ, আইসিইউ, কেবিনসহ অনেক কিছুই চালু করতে পারিনি। বরাদ্দ ও উপকরণ সংকটের কারণে অনেক সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার সেবাও ব্যাহত হয়। তবে আমরা স্বল্প বরাদ্দ, স্বল্প জনবল দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জনবলসংকটসহ সব সমস্যা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে নিখোঁজ যুবকের হাত-পা ও মুখ বাঁধা লাশ উদ্ধার

সিলেট প্রতিনিধি
ইমন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
ইমন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের বিয়ানীবাজারে ইমন আহমদ (২২) নামের এক যুবকের হাত-পা ও মুখ বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের কোনা শালেস্বর গ্রামের একটি মৎস্য আড়তের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত ইমন আহমদ কুড়ারবাজার ইউনিয়নের খশির নামনগর গ্রামের মুতলিব মিয়ার ছেলে।

এর আগে গত রোববার ইমন আহমদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ আশরাফুল (২৩) নামের এক যুবককে আটক করে।

পুলিশ জানায়, গত রোববার ওই যুবক নিখোঁজ হন। পরদিন পরিবার থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। আর গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ আশরাফুলকে সন্দেহজনক হিসেবে আটক করে।

তাঁর দেওয়া তথ্যমতে আজ বুধবার দুপুরে ওই আড়তের পাশ থেকে ইমনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ইমন আহমদ একটি আইফোন ব্যবহার করতেন। ওই ফোনের প্রতি দুর্বলতা ছিল আশরাফুলের। মূলত ফোন ছিনতাই নিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, আশরাফুলের দেওয়া তথ্যমতে ইমনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।

তবে ওই আইফোন উদ্ধার করা যায়নি এখনো। ময়নাতদন্তের জন্য ইমনের লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ইমনের পরিবারের লোকজন থানায় এসেছেন। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুষ্ঠু নির্বাচন করার সক্ষমতার শঙ্কা দূর হচ্ছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগে আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগে আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, সুষ্ঠু একটি নির্বাচন করার জন্য সক্ষমতার ব্যাপারে যে শঙ্কা, সেই শঙ্কা দূর হচ্ছে না। সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে এই শঙ্কা দূর করে মানুষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অবশ্যই আয়োজন করতে হবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন তিনি করে দেখাবেন। আমরা তার অপেক্ষায় আছি।’

আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে এক হোটেলে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগ ‘আঞ্চলিক পরামর্শ সভা’ শেষে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় বলেন, ‘আমার কাছে এমন কোনো সার্ভে (জরিপ) নেই, যার ভিত্তিতে আমি বলতে পারব—মানুষ মনে করে নির্বাচন হবে। আমি এর আগেও বলেছি, নির্বাচনটি ক্রমান্বয়ে একটা অবধারিত বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। নির্বাচনের পক্ষের শক্তি অনেক বেশি। কারণ, দেশের নাগরিক, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্তর্বর্তী সরকারও নির্বাচন চায়।’

দেবপ্রিয় বলেন, ‘একদিকে অসম্ভব একটা পরিবর্তন সম্ভাবনার চিন্তা, অন্যদিকে একটা আস্থার সংকটও একই সঙ্গে আছে। এই দুটোর মধ্যেই আমরা বসবাস করছি। জনগণের ভূমিকা নিয়ে এই ফাঁকা আমাদের মেলাতে হবে। রাজনীতিবিদদের আয়-ব্যয়ের হিসাবগুলো আরও স্বচ্ছতার সঙ্গে কীভাবে সামনে আনা যায়, পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের, আত্মীয়স্বজনদেরও সহায়-সম্পত্তির বিষয়টিও সামনে আসছে।’

দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে কী প্রত্যাশা, তা জানতে আমরা সপ্তমবারের মতো স্থানীয় পর্যায়ে নাগরিকদের কাছে এসেছি। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রদের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা হয়েছে। যে বিষয়টি লক্ষণীয়, তা হলো—এখন আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আলোচনা করে কতগুলো সাধারণ একই রকম অভিন্ন সুর খুঁজে পাচ্ছি। সবাই সুশাসনের জন্য, জবাবদিহির জন্য, আইনের শাসনের জন্য, নিরাপত্তার জন্য, অধিকারের জন্য ইত্যাদি বিষয়গুলোকে সাধারণভাবে সামনে নিয়ে আসছেন। সবার প্রত্যাশা একটি দক্ষ প্রশাসন, একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, একটি নিরপেক্ষ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইত্যাদির বিষয়ে সাধারণ ধারণা সকলের মধ্যে আছে। এই বিষয়গুলো রাজনীতিবিদেরা তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারের ভেতরে কীভাবে স্থান করে দেবেন, এটি জানার অপেক্ষায় আছেন সবাই।’

গণতন্ত্র বিশ্লেষক দেবপ্রিয় বলেন, বিগত সরকারের মতো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও ঘোষণা দিয়েছিল, তারা তাদের মন্ত্রিপরিষদের বা সরকারপ্রধানের সম্পত্তির হিসাব দেবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মানুষের অনেক বড় হতাশা রয়েছে যে, আগের মতোই এবারও সরকার সেটা পালন করল না। ফলে আগামী সরকারকে একই কাজ না করার ক্ষেত্রে একটা উৎসাহ দিয়ে গেল কি না, তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।

দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে, নাগরিক প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে এ লক্ষ্যে আমরা দুটো কাজ করছি। এক, যেসব প্রতিশ্রুতি ও সংস্কারের কথা হচ্ছে, তা একটা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে গিয়ে আমরা রিফর্ম ওয়াচ তৈরি করেছি। সেটা ১৪ ডিসেম্বর আমরা উদ্বোধন করব। একইভাবে দেশব্যাপী যে আলোচনাগুলো হলো, এটার নাগরিক প্রত্যাশাগুলোকে একত্র করে একটি নির্বাচনী নাগরিক ইশতেহার তৈরি করে ২০ ডিসেম্বর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হাতে আমরা তুলে দেব। এটাকে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী অবস্থায় আমরা যাতে মনোযোগে রাখি, সেটার চেষ্টাও আমরা করব।’

এর আগে, পরামর্শ সভায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নবীগঞ্জে ইটভাটার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
ইটভাটায় অভিযান।  ছবি: আজকের পত্রিকা
ইটভাটায় অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় কৃষিজমি নষ্ট ও পরিবেশ আইন লঙ্ঘনের দায়ে শিরিন ব্রিকস নামের একটি ইটভাটার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাশেম ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই জরিমানা করেন।

জানা গেছে, বিকেলে আউশকান্দি ইউনিয়নের জালালপুর এলাকায় অবস্থিত শিরিন ব্রিকসে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাশেম।

অভিযানকালে ইটভাটাটিতে কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার, ইট পোড়ানোর কাজে কাঠ ব্যবহার, কৃষিজমির ভেতরে ইটভাটা স্থাপন এবং ইট পোড়ানোর লাইসেন্স নবায়ন না করার মতো বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া যায়।

এসব অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ইটভাটার মালিক সানুর মিয়াকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জ কার্যালয়ের প্রসিকিউটর ইন্সপেক্টর হরিপদ দাস সহযোগিতা করেন।

নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাশেম মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে বহিরাগতকে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা, রামদা নিয়ে কলেজশিক্ষকদের হুমকি

ফরিদপুর প্রতিনিধি
অস্ত্র হাতে যুবক।  ছবি: সংগৃহীত
অস্ত্র হাতে যুবক। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আল সাদ নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। কলেজটিতে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালে জোরপূর্বক কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ওই যুবক এমন কাণ্ড ঘটায় বলে কলেজ সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া কলেজটির সিসি ক্যামেরায় সম্পূর্ণ দৃশ্য ধরা পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মোটরসাইকেলে দুই যুবক কলেজে প্রবেশ করে। পেছনে বসা আল সাদের হাতে বড় আকৃতির দেশীয় অস্ত্র, রামদা। এ সময় অনেকে দৌড়ে সরে যায়। এরপর কলেজের মূল ভবনে প্রবেশ করে তারা। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যায়।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার আলফডাঙ্গা পৌরসভার কামারগ্রামে অবস্থিত আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় বিএনপির নেতারা কলেজে এসে অধ্যক্ষের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই যুবক পৌরসভার কুসুমদি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। পূর্বে ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। বর্তমানে ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক এবং তাঁর মামা মো. আমিরুল ইসলাম পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর সঙ্গে থাকা অপর যুবকের নাম সাদি (২৫)। সে পৌরসভার শ্রীরামপুর এলাকার গফুর খাঁর ছেলে।

বিষয়টি নিয়ে আজ বুধবার রাত ৮টার দিকে কথা হয় কলেজের অধ্যক্ষ এম এম মজিবুর রহমান মুজিবের সঙ্গে। তিনি জানান, ওই যুবকের স্ত্রী ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে পরীক্ষা চলাকালে গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তখন কলেজের পিয়ন নাজমুল বাধা দিলেও তা না মেনে কেন্দ্রের ভেতরে আসার চেষ্টা করেন।

অধ্যক্ষ মজিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন্দ্রে প্রবেশের সময় আমি তাকে বের হওয়ার অনুরোধ করি। তখন সে বলে, আমার স্ত্রী কোথায় বসেছে দেখব এবং উত্তেজিত হয়ে ওঠে। আমাকে হাত উঁচু করে বলতে থাকে, আমাকে চেনেন, আমি দেখে নেব, থানা পুলিশ দেখতেছি। তখন পরিসংখ্যানের শিক্ষক সমীর কুমার বিশ্বাস তার হাত ধরে বাধা দিলে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তখন সেখান থেকে বের হয়ে গিয়ে ২০ মিনিট পর একটি মোটরসাইকেলে রামদা নিয়ে কলেজের ভেতরে ঢুকে ত্রাস সৃষ্টি করে। তখন আমিসহ অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে ইউএনও, ওসিকে ফোন করে বিষয়টি জানালে পুলিশ আসে। এর আগেই সে চলে যায়।’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নেতারা এসে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন। তাঁদের মাধ্যমে ওই যুবক মুচলেকা দিয়েছেন।’

জানা গেছে, এ ঘটনায় আল সাদের পক্ষে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে মৌখিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খসরু। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।’

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসনাত বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে কলেজটিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। ওই যুবককে গিয়ে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত