Ajker Patrika

২০ বার কোপ দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীকে হত্যা, ৪ ঘণ্টা আগেই অভিযোগ করেন মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ২১: ০৪
২০ বার কোপ দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীকে হত্যা, ৪ ঘণ্টা আগেই অভিযোগ করেন মা

আহত ছেলের চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিলেন মা আঁখি বেগম। মামলা দায়েরের প্রায় চার ঘণ্টা পরই তাঁর ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ আহমদকে (১৯) কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

ফরেনসিক চিকিৎসক বলছেন, আরিফের শরীরে মোট ২৩টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২০টি ধারালো অস্ত্রের জখম। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

আরিফের মা আঁখি বেগমের দাবি, মামলা করার কারণেই সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপু ও তাঁর লোকজন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরীর বালুচরের টিভি গেট এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। নিহত ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ নগরের টিভি গেট এলাকার আঁখি বেগম ও ফটিক মিয়া দম্পতির ছেলে। তিনি সিলেট স্টেট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। আরিফ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি নাজমুল ইসলাম গ্রুপের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার আসরের নামাজের পর নগরের টিভি গেট জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে মানিকপীরের টিলায় তাঁকে দাফন করা হয়।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শামসুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিহত আরিফের শরীরে মোট ২৩টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২০টি ধারালো অস্ত্রের বাকি তিনটি নীলাফোলা জখম। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’

আরিফের মা আঁখি বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খুনের প্রায় ৪ ঘণ্টা আগে পূর্বের হামলার জন্য ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমার ছেলেকে একই আসামিরা খুন করেছে। শাহপরান থানার ওসির গাফিলতির কারণেই আমার ছেলে খুন হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি চাই।’

সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) শাহপরান (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়েরের ব্যবহৃত সরকারি নম্বর বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে আরিফের মা আঁখি বেগমের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে এসএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহা. সোহেল রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ১৫ তারিখ নিহত আরিফের ওপর হামলার ঘটনায় সোমবার রাত ৯-১০টার দিকে আঁখি বেগম একটি অভিযোগ থানায় দিয়েছেন। এর চার ঘণ্টা পর হত্যাকাণ্ড ঘটে। পুলিশের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। তা না করে মঙ্গলবার সকালে রেকর্ড করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের স্থান বিমানবন্দর থানাধীন এলাকা হওয়ায় ওই থানায় মামলা হবে। বাকি সবই শাহপরান থানা এলাকায়।’ 

পুলিশের গাফিলতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব। পুলিশের কারও বিরুদ্ধে গাফিলতি প্রমাণিত হলে বিভাগীয় বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে জানিয়েছে পুলিশ। এসএমপির উপকমিশনার (উত্তর-গণমাধ্যম) আজবাহার আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে জানান, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। যারাই এই খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। 

মঙ্গলবার সকালে বালুচর এলাকার স্থানীয়রা জানান, গত ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দেওয়া নিয়ে নগরের বালুচরে ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি হিরন মাহমুদ নিপুর গ্রুপের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছে। কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও অস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনাও ঘটে। এর জেরে সর্বশেষ গত ১৫ নভেম্বর উত্তর বালুচর এলাকায় মসজিদের সামনে নিপু গ্রুপের জুনেদ, আনাছ, কুদরত, রনি, তোফায়েল, হৃদয়, কালা মামুন, শরিফ, হেলাল ও সবুজ মিয়াসহ ১০-১২ জন আরিফের ওপর হামলা চালায়। এতে আরিফের হাতের একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ি কোপে আহত হন আরিফ। 

ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে গত সোমবার বাড়ি ফেরেন আরিফ। আরিফের মা বাদী হয়ে সেই হামলার অভিযোগে রাত ৯টার দিকে এসএমপির শাহপরান (রহ.) থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন আঁখি বেগম। অভিযোগ দিয়ে বাড়ি ফেরার ৪ ঘণ্টার মাথায় রাত ১২টার দিকে আরিফকে টিভি গেট এলাকায় গোয়ালীছড়া ওয়াকওয়েতে ধরে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে আরিফের মাসহ স্বজনেরা তাঁকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরিফ। 

নিহত আরিফের বালুচরের বাসায় গিয়ে দেখা যায় এক হৃদয় বিদারক চিত্র। মা আঁখি বেগম বিলাপ করছেন, পুলিশ রাতেই ব্যবস্থা নিলে তাঁর ছেলে খুন হতো না। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আরিফকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন সে তাঁর হামলার জন্য হিরন মাহমুদ নিপুর কথা বলেছে।’ 

এ সময় তিনি দাবি করেন, নিপুর নেতৃত্বেই তাঁর ছেলের ওপর হামলা হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দলবলসহ নিপুকে দেখেছেন। 

এ ঘটনার পর সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত একাধিক বার হিরন মাহমুদ নিপুর মোবাইল ফোনে কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। 

এদিকে নিহত আরিফকে দেখতে রাতে হাসপাতালে ছুটে যান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি কিশওয়ার জাহান সৌরভ ও সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ। 

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হিরন মাহমুদ নিপু ভাইয়ের সঙ্গে নির্বাচনকেন্দ্রিক আমার কোনো বিরোধ নেই। আমি তো নির্বাচনও করিনি। বালুচর এলাকার যাঁরা ওনার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন, বর্তমানে তাঁরা খুবই অসহায়। ধারাবাহিকভাবে মারধর ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। তাঁরা জেলা ছাত্রলীগের কর্মী। নিহত আরিফও ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। চার-পাঁচ দিন আগেও আরিফের ওপর হামলা করেছিল এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী। আরিফের ওপর হামলার ঘটনায় গত রাতে তাঁর মা শাহপরান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে করে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে রাতেই হামলা চালায়।’ 

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের একজন কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। ভাই হারানোর বেদনা বলে বোঝানো যাবে না। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মী আরিফের পরিবারের পাশে আছি। আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক, এবার সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নথি পাঠানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এবার স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষা বোর্ডে নথি পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একটি সভার রেজল্যুশনে তিনি এই জালিয়াতি করেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে জমা হওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে ১৯ অক্টোবর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার এই নির্দেশনার বিষয়টি জানা যায়।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (উন্নয়ন) মো. রিদুয়ানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক গত বছরের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভার কার্যবিবরণীর প্রথম ও শেষ পাতা ঠিক রেখে দ্বিতীয় পাতায় আলোচ্যসূচি ৩-এ ‘এমপিওভুক্ত কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও শিটে নাম, বয়স, জন্মতারিখ, ব্যাংক হিসাব নম্বর, পদবি ও বিষয় সংশোধন প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত’ শিরোনামে ভুয়া কার্যবিবরণী তৈরি করা হয়।

এই ভুয়া কার্যবিবরণীতে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (হিসাব ও নেজারত) মোহাম্মদ শাহজাহানের স্বাক্ষর জাল করা হয়। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি সেই জাল কার্যবিবরণী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলে পাঠানো হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম নিজেই বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে দোষ স্বীকার করেছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক, শাস্তির সুপারিশ বোর্ডের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ড থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এখনো চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাঁদের দাবি, এই ধরনের মুখোশধারী অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওমানের সড়কে ঝরে গেল বাংলাদেশি যুবকের জীবন

ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
নিহত শেখ মো. কামরুল। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শেখ মো. কামরুল। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার শেখ মো. কামরুল (৩৬) ওমানের রাস্তায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। ১৫ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে মার্কেটে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শেখ মো. কামরুল উপজেলার মাধবপুর গ্রামের শেখ বাড়ির মৃত কামাল হোসেনের ছেলে। তিনি ২৫ বছর ধরে ওমানে বসবাস করছিলেন এবং সিলাল মার্কেটে ব্যবসা করতেন।

কামরুলের চাচাতো ভাই শেখ মো. সজিব জানান, কোরবানির ঈদ শেষে কামরুলসহ পাঁচজন একসঙ্গে ছুটি কাটিয়ে ১০ অক্টোবর ওমানে ফিরে যান। ফেরার মাত্র ছয় দিন পরই ঘটে এই দুর্ঘটনা।

স্বজনদের ভাষ্যমতে, ১৫ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে সিলাল মার্কেটে যাওয়ার পথে একজন তানজানিয়ান চালকের প্রস্তাবে কামরুল একটি বাসে ওঠেন। নতুন সিলাল মার্কেটের গেটের সামনে পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা একটি মাটি কাটার গাড়ির (জেসিবি) সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান কামরুল। বর্তমানে তাঁর মরদেহ রুস্তাক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার রাতে কামরুলের মরদেহ দেশে পৌঁছানোর কথা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর তাঁর নিজ এলাকা মাধবপুরে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।

তাঁর দুই শিশুপুত্র রয়েছে; একজনের বয়স চার বছর এবং অন্যজনের মাত্র পাঁচ মাস। কামরুল ১২ বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব নিতে প্রবাসে পাড়ি জমান। তাঁর অকালমৃত্যুতে পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা ও ওমানপ্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উল্টো পথে বাস, চাপা পড়ে প্রাণ গেল ইজিবাইকচালকের

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা বাসে দুর্ঘটনা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা বাসে দুর্ঘটনা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা একটি বাসের চাপায় মোতালেব হোসেন (৩৫) নামের এক ইজিবাইকচালক নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের ইকরচালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মোতালেব নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এই ঘটনায় গুরুতর আহত একজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা সৈয়দপুরগামী ‘ভাই ভাই মুরাদ ক্লাসিক’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ইকরচালী বাসস্ট্যান্ডে এসে হঠাৎ উল্টো পথে ঢুকে পড়ে। এ সময় মহাসড়কের বিপরীত দিক থেকে আসা ইজিবাইকটিকে চাপা দিয়ে সড়কের পাশে থাকা দোকানে গিয়ে সামনে থাকা পিলারে আটকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকচালক মোতালেব হোসেন মারা যান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসটি বাঁ দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও ডান দিকে সড়কের ধারে রাখা পিলারে আটকর আছে। উৎসুক লোকজন ও স্কুলশিক্ষার্থীরা বাসটি ঘিরে রেখেছে। এতে সড়কের একাংশ সংকুচিত হওয়ায় আবারও দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সেখানে কোনো পুলিশ দেখা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ভাতের দোকানদার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমার দোকানের সামনেই ঘটনা। সকালে দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি বাসটা বাঁ থেকে ডান দিকের লেনে হাইস্পিডে ঢুকে যায়। এ সময় ডান দিক থেকে আসা অটোগাড়ির নিচে চাপা পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে একজন মারা যায়।’

পাশের আরেক দোকানের মালিক জিয়াউর প্রামাণিক বলেন, ‘আজ নয়; প্রায় গাড়ি ফাঁকা দেখে উল্টো পাশ দিয়ে ওভারটেক করে এই স্ট্যান্ডে। এর আগেও এমন দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অনেক মানুষের। কিন্তু এগুলো বন্ধ করার উপায় নাই।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইজিবাইকচালক মোতালেব হোসেনের লাশ উদ্ধার করি। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা ও মুরাদ পরিবহনের বাসটি জব্দ করা হয়েছে। বাসটি সড়ক থেকে সরিয়ে নিতে হবে। বাসচালক পালিয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তাল বুয়েট: ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ২২
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট

‎বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ডিএমপির চকবাজার থানায় এই মামলা করে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকবাজার থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক।

আজ বুধবার সকালে আজকের পত্রিকাকে এসআই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে এই মামলা করেছে। গতকাল রাতেই আটক থাকা ওই শিক্ষার্থীকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

‎এর আগে মঙ্গলবার রাতে বুয়েটের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এতে রাতেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত এই অবস্থা চলে। বিক্ষোভকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই অভিযুক্ত সেই শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত