Ajker Patrika

এক কাবিখা প্রকল্পে দুর্নীতির তিন মামলা, এবার আসামি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৬ জন

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
এক কাবিখা প্রকল্পে দুর্নীতির তিন মামলা, এবার আসামি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৬ জন

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচি প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এই নিয়ে তৃতীয় মামলা দায়ের হয়েছে। আজ মঙ্গলবার হবিগঞ্জ স্পেশাল জজ ও দায়রা আদালতে মামলাটি করেন লাখাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম। 

তৃতীয় দফার এই মামলায় লাখাই উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিউল আলম আজাদসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

মামলার বাকি আসামিরা হলেন— সাবেক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আলী নূর, তেঘরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. নোমান সারওয়ার জনি, বামৈ ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাদ হোসেন ফুরুক, করাব ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কদ্দুছ ও বুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান খোকন চন্দ্র গোপ। 

মামলার বাদীর আইনজীবী এম. এ. এ. এম গাউছ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলা আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন হবিগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালককে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, লাখাই উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিউল আলম আজাদ ও সাবেক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আলী নূরের সুপারিশে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৮ প্রকল্পে ৫৪০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়। যার মূল্য ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আসামিরা প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদন, বরাদ্দ গ্রহণ ও প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। বাস্তবে ওই প্রকল্পগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই। 

মামলার বাদী লাখাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিভিন্ন সংবাদপত্রে লাখাই উপজেলার কাবিখা প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বোঝা যায়, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্য আসামিরা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। দেশের সম্পদ এভাবে লুট হতে দেওয়া যায় না। তাই একজন সচেতন মানুষ হিসেবে এই মামলা দায়ের করেছি।’

লাখাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের আমার প্রতি অসন্তুষ্ট করতে মামলাটি করা হয়েছে। প্রত্যেক নাগরিকের মামলা করার অধিকার আছে। এই প্রকল্পের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।’

মুশফিউল আলম আজাদ আরও বলেন, ‘যে প্রকল্পের কথা বলা হচ্ছে, তা উপজেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত প্রকল্প নয়। এটা একটা বিশেষ প্রকল্প। সবকিছু ইউএনও দেখে থাকেন। আমি শুধু কমিটির অনুমোদন দিয়েছি। অথচ মামলায় ইউএনওকে আসামি করা হয়নি। আমার নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এই মামলা দায়ের হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, লাখাই উপজেলার এই প্রকল্প নিয়ে এর আগে দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। গত ২১ মার্চ উপজেলার বামৈ ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাদ হোসেন ফারুক ও সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আলী নূরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রথম মামলা দায়ের হয়। এরপর করাব ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কদ্দুছ, বুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান খোকন চন্দ্র গোপ ও সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আলী নূরকে আসামি করে আদালতে আরেকটি মামলা হয়। এই প্রকল্প নিয়ে তৃতীয় মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিউল আলম আজাদকে আসামি করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সারসংকট নিরসনসহ ৫ দফা কৃষক খেতমজুর সমিতির, যশোর ডিসি অফিস ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

­যশোর প্রতিনিধি
যশোরে আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরে সারসংকট, অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতি। আজ সোমবার দুপুরে জেলা শহরের ভোলা ট্যাংক সড়কে সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এই দাবি জানান।

দাবি মানা না হলে ৩১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের (ডিসি) সামনে ‘ঘেরাও’ কর্মসূচি করা হবে বলে হুঁশিয়ারি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু।

পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে কৃষি কার্যালয়ের মাধ্যমে বোরো মৌসুমে সরাসরি কৃষকের হাতে প্রয়োজনীয় সার সরবরাহ; সারের বরাদ্দ ও ডিলারদের নাম; বরাদ্দের পরিমাণ জনসম্মুখে প্রকাশ; বহিরাগত ও ভুয়া ডিলারশিপ বাতিল; ভেজাল সার, বীজ ও কীটনাশক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা; অবৈধ ঘের অপসারণ; ঘের নীতিমালা বাস্তবায়ন এবং কৃষিজমি আবাসন খাতে না দেওয়া।

জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারগুলোর মতোই কৃষকবিরোধী নীতি অনুসরণ করে চলেছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে গঠিত এই সরকার আগের মতোই কৃষিব্যবস্থা, উৎপাদন ও কৃষিপণ্যের মূল্যের ক্ষেত্রে কৃষকবিরোধী নীতি অনুসরণ করছে। সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকটের ফলে কৃষক দিশেহারা। সারের মূল্যবৃদ্ধির অপচেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষি উৎপাদন বিপন্ন হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভেজাল সার ও কীটনাশক বিক্রেতাদের দৌরাত্ম্যে কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং কৃষক প্রতারিত হচ্ছেন। সংবাদপত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিএডিসিতে বীজ আসার সঙ্গে সঙ্গে কর্মকর্তাদের পছন্দমতো নির্দিষ্ট লোকের হাতে চলে যায়। যত্রতত্র ঘের করায় জলাবদ্ধতা ও ফসলি জমি চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। আবাসনের নামে কৃষিজমি কমানো হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে কৃষিজমি রক্ষা করা দরকার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তসলিম-উর-রহমান, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল বিশ্বাস প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জ শহরের সুগন্ধা প্লাস রেস্তোরাঁয় বাসি খাবার, লাখ টাকা জরিমানা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জ শহরের সুগন্ধা প্লাস রেস্তোরাঁকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। 

আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে এই অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হৃদয় রঞ্জন বণিক। উপস্থিত ছিলেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার কর্মকর্তাসহ জেলা পুলিশের একটি দল।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হৃদয় রঞ্জন জানান, নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শহরের চাষাঢ়ায় অবস্থিত সুগন্ধা প্লাস রেস্তোরাঁয় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বাসি গ্রিল, টিকা, কাবাব রাখা ও কয়েক দিনের বাসি খাবার ফ্রিজ করে সংরক্ষণের দায়ে সুগন্ধা প্লাস রেস্তোরাঁকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়দা দিয়ে তৈরি হতো ওষুধ, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
অভিযান চালিয়ে ময়দা দিয়ে তৈরি নকল ওষুধ জব্দ করে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযান চালিয়ে ময়দা দিয়ে তৈরি নকল ওষুধ জব্দ করে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ময়দা দিয়ে নকল ওষুধ তৈরি করার দায়ে রব্বানী ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আজ সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বড় বাজেডুমরিয়া এলাকার সরকারপাড়ায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে এ জরিমানা করা হয়। অভিযানে সহযোগিতা করে আনসার ব্যাটালিয়নের একটি দল।

ভোক্তা-অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রব্বানী ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নিজ বাড়িতে ময়দা দিয়ে বিভিন্ন নামী-দামি কোম্পানির নামে নকল ওষুধ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত মেশিন ও সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ সময় প্রায় ৫ লাখ টাকার নকল ওষুধ ও অনিরাপদ খাদ্য পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।

জেলা জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সামসুল হক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ময়দা দিয়ে তৈরি নকল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা অনিরাপদ খাদ্য এবং ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভোক্তা-অধিকার আইনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা ঔষধ প্রশাসনের ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক মিতা রায় বলেন, রব্বানী ইসলাম তাঁর বাড়িতে ময়দা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের নকল ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করতেন। অভিযানে এসব নকল ওষুধ ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কর্ণফুলীতে আগুনে পুড়ল তিনটি ঘর

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আগুনে পুড়ল ঘর। ছবি: সংগৃহীত
আগুনে পুড়ল ঘর। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে চরপাথরঘাটা গ্রামে আগুনে তিনটি ঘর পুড়ে গেছে। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার চরপাথরঘাটা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মনির গোষ্ঠীর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, সকালে ক্ষতিগ্রস্ত জসিম উদ্দিনের টিনশেড ঘরে বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

ক্ষতিগ্রস্ত মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আগুনে আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’

কর্ণফুলী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইদুজ্জামান বলেন, বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দমকল বাহিনীর ১টি ইউনিট গিয়ে এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত