Ajker Patrika

ব্যবসাকে রাজনীতিকীকরণ করা চলবে না: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
সিলেট বিজনেস ডায়ালগ-২০২৫’ অনুষ্ঠানে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেট বিজনেস ডায়ালগ-২০২৫’ অনুষ্ঠানে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক ব্যাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ব্যবসাকে রাজনীতিকীকরণ করা চলবে না। এটা পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট না, এটা বিএনপির সিদ্ধান্ত। যেসব ব্যবসা সংগঠন রয়েছে, রাজনীতিকীকরণ করা চলবে না। তবে ফ্যাসিস্টদের দোসরমুক্ত করতে হবে। ফ্যাসিস্টদের রেখে আগামী দিনে কোনো সংগঠন চালানো যাবে না। এরপরে কে নেতা হবেন, সেটা ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত, এখানে কোনো দলীয়করণের সুযোগ নেই।’

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট নগরের মেন্দিবাগ এলাকার জালালাবাদ গ্যাস অডিটোরিয়ামে ‘সিলেট বিজনেস ডায়ালগ-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু এসব কথা বলেন। সিলেট ও জাতীয় অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সম্মিলিত অগ্রগতির রূপরেখা নিয়ে বিভাগের চার জেলার ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে এ মতবিনিময় সভা হয়।

সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মানুষের কর্মসংস্থান কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কারণ হচ্ছে, আমরা ব্যবসায়ীদের সমর্থন করি। বিএনপি হচ্ছে ব্যবসায়ী-সমর্থক একটি দল। যখন ব্যবসায়ীকে আপনি সমর্থন করবেন, তখন সে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার তো ব্যবসায়ী ছাড়া আর কেউ নেই। এটা তো বুঝতে হবে। আগামী দিনের সরকার শুধু ব্যবসায়ীবান্ধব নয়, সরকার ব্যবসায়ের সার্বক্ষণিক সংযোগ রেখে কাজ করবে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলে সরকার বিচ্ছিন্ন হয়, যেটা আমরা গত ১৬ বছরে দেখেছি। সুতরাং এগুলোকে মাথায় রেখে আমরা আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়তে চাই।’

বিএনপি ক্ষমতায় এলে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হবে—সেসবের ফিরিস্তি তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। ন্যূনতম এসএসসি পাস তরুণ-যুবকদের আইটি খাতে চাকরি দেওয়া হবে।’ অনুষ্ঠানে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্য বলেন, ‘শিক্ষার কারিকুলাম বদলাতে হবে। বর্তমান শিক্ষার কারিকুলাম দিয়ে আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেতে পারব না। আমরা আইটি সেক্টরকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছি। আমরা চাই, গার্মেন্টস সেক্টরের পরে আইটি সেক্টরে মানুষজন বেশি কাজ করবে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি। আগের মতো রাজনীতি হবে না। এখন মানুষের মন-মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে, প্রত্যাশার পরিবর্তন হয়েছে, আকাঙ্ক্ষার পরিবর্তন হয়েছে। আমরা যারা রাজনীতি করি, এটার সঙ্গে যদি চলতে না পারি, আমি পরিষ্কারভাবে আপনাদের বলতে চাই, তাদের কোনো রাজনীতি বাংলাদেশে থাকবে না। ওই রাজনীতিবিদেরা থাকবে না, তাদের দলেরাও থাকবে না। আমরা এটাকে অনুধাবন করে, আমরা এটাকে ধারণ করে, এখন থেকে কাজ শুরু করেছি, যাতে আমাদের সময় নষ্ট না হয়।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ব্যারিস্টার রিয়াসদ আজিম ও কোষাধ্যক্ষ এনামুল কুদ্দুস চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজেএমই) সাবেক সভাপতি এস এম ফজলুল হক। এ ছাড়া সভায় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বক্তব্য দেন। সভায় সিলেট বিভাগের চার জেলার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি স্থানীয় বিএনপি নেতারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী ও মিজানুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, নাসিম হোসাইন, বদরুজ্জামান সেলিম, ফয়সল আহমদ চৌধুরী, মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকেরা ‘দুটি কারণে জাতীয় সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত’ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক ব্যাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো দলেরই গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে নির্বাচন নিয়ে কথা বলার। এটা নিয়ে আমি কথা বলতেছি না। নির্বাচন কমিশন নিজেরাই প্রস্তুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য। তারাই বলেছে, তারা নির্বাচন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। জাতীয় নির্বাচনের জন্য তারা প্রস্তুত। বিএনপি হচ্ছে জনগণের দল, জনগণকে নিয়েই দল গঠন করে। সুতরাং আমরা জনগণের সঙ্গে সব সময় থাকি। বিএনপি জনগণকে নিয়েই নির্বাচন চায়। একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতির কাম্য। এটার জন্য দেশের মানুষ অপেক্ষা করছে। যত দ্রুত আমরা দেশকে গণতান্ত্রিক পথে নিয়ে যেতে পারি, বাংলাদেশের মানুষের সাংবিধানিক, রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারি, দেশবাসীর আকাঙ্ক্ষা, আমাদের সবার আকাঙ্ক্ষা, একটি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি ভালো, বিগেনিংভাবে স্টার্ট করতে পারি, সেটাই চাওয়া।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা: নান্দাইলে সাবেক এমপি-মন্ত্রীকন্যার বিরুদ্ধে মামলা

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত