লবীব আহমদ, সিলেট

‘যদি না পারে বেতন কড়ি দিতে, তে আমরারে কইয়ে দেউক যে আমরা দিতে পারতাম না। তোমরার বাগান যে বন্ধ আছে, বাগান তোমরার বন্ধই থাকুক। তোমরা যাও গিয়া। নাইলে আমরারে গুন্ডি দিয়া মারিয়া শেষ করিদেও। তেও আমরা শান্তিতে থাকমু। যদি মারিদেয় আমরারে, তেও শান্তি এনে থাকব সরকারে। আর আমরাও শান্তিয়ে মরিজাইমু। এ রকম দুখিয়া দুখিয়া আমরা মরতে চাই না।’
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির সিলেটের লাক্কাতুড়া চা-বাগানের চা-শ্রমিক কুলবতী লোহাল বেতন না পেয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাগানে কাজ করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু তিন মাস ধরে বেতন-রেশন পাচ্ছেন না। যে কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে তাঁর।
কুলবতী লোহাল বলেন, ‘আমরা তো আমাদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়া শান্তি-শৃঙ্খলায় থাকতে চাই, শান্তি-শৃঙ্খলায় খাইতে চাই, বাচ্চাকাচ্চারে লেখাপড়া শিখাইতে পারি, একমুঠা ভাত দিতে পারি এগুলোই চাই। তারা পেটের ক্ষুধায় ছটফট করে, চারটা লাকড়ি নিয়া, আমরা কচুশাক নিয়া এই বাচ্চাগুলোরে খাওয়াই। এই অবস্থা কেনে আমাদের?’
এই চা শ্রমিক আরও বলেন, ‘আগে যেগুলো ঘটেনি, এখন এইগুলা ঘটিয়া যায়। কেনে যায় ঘটিয়া যায়?’

কুলবতীর লোহালের মতোই দিন কাটছে ওই বাগানসহ সিলেটের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তিনটি বাগানের চা-শ্রমিকদের। বেতন-ভাতা ও রেশন না পেয়ে অনেকটা দিশেহারা হয়ে আছেন তাঁরা। ওই বাগানের আরেক শ্রমিক কৃষ্ণ গোয়ালা বলেন, ‘সাত সপ্তাহ ধরে আমরা বেতনভাতা পাচ্ছি না। যার কারণে আমাদের কাজকর্ম বন্ধ করে এখন আন্দোলন করতে হচ্ছে। আমরা কীভাবে চলছি, এটা ওপরওয়ালা ছাড়া আর কেউ জানে না। আমাদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের জন্য এখন আন্দোলন করছি। এই ন্যায্য পারিশ্রমিকের জন্য যদি আমাদের জীবনও দিতে হয়, তাহলে আমরা সেটা দিতেও রাজি।’
শুধু এই তিনটি বাগানের চা-শ্রমিকেরা নয়, সিলেটের অন্যান্য বাগানের শ্রমিকরাও এ রকমভাবে দিনাতিপাত করছেন। ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না, পাচ্ছেন না রেশনও। বাগানে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুবই করুণ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন চা-শ্রমিকেরা।
সিলেটের ব্যক্তি মালিকানাধীন তারাপুর চা-বাগানে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন চা-শ্রমিকের সঙ্গে। তিন ছেলের মা কল্পনা ভূমিদ জানান, টাকাপয়সার অভাবে তিন ছেলের কাউকে লেখাপড়া করাতে পারেননি। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই তিনি বেতন পান না। এমনিতেই যে বেতন পান, সেই বেতনে পরিবার চলে না। তিনি বলেন, ‘সারা দিনে ২২ কেজি তুললে হয় হাজিরা। তাতে পাই ১৭০ টাকা। সংসার চলে কোনোমতে। এই কষ্ট করে চলতে হয়। কী করমু, আমরার তো অভাব। আমার ছেলে তিনটা। বড়টা সর্দারি করে আর বাকিগুলো বাড়িতে থাকে। বেতন নাই, বাচ্চাদের পড়াইতে পারি না। চলতে পারমু কেম্নে? নিজেই খাইতে পারি না। চালের দাম বেশি। সবজির দাম বেশি। বাগানে ঘরবাড়ি নাই। ঘর দিছে না, একেবারে ভাঙা ঘর। বেতন নিয়মিত দেয় না। ৩-৪ সাপ্তা বাদে একটা বেতন দেয়। সারা বকেয়া রইছে ৷ বকেয়া দেয় না। ২ সাপ্তা রইছে। রেশন যা দেয়, সেটায় হয় না।’
চা-শিল্প এমন হয়েছে যে, আগের মতো আর অতিরিক্ত কাজ করতে পারেন না শ্রমিকেরা। এতে করে সংসারে জনসংখ্যা ও জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও বেতন আর বাড়ে না। এ বিষয়ে প্রতিমা ভূমিদ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন চা-পাতা তুলি ২২ কেজি। ২২ কেজি নিরিক দিলে আমাদের দেয় ১৬৮ টাকা রোজ। যদি ভালো চা-পাতা হয় বাগানে, তাহলে আমরা প্রতিদিন জনে ৫০ থেকে ৬০ কেজি করে তুলতে পারি। আগে এক্সট্রা তুললে ৫ টাকা করে কেজি পাওয়া যেত। এখন এটাও পাইতেছি না। এখন আমাদের দুই সপ্তাহ বকেয়া রইছে। আমরা ঠিকমতো বেতন পাইতাছি না। আমাদের এই অল্প আয়ে চলতে পারি না, সংসার চালাতে পারি না। আমাদের বাচ্চাকাচ্চাকে ঠিকমতো খাবার দিতে পারি না, পড়ালেখা করাইতে পারি না। আমাদের নানারকম সমস্যা আছে। আমাদের পরিশ্রম প্রচুর হয়, কিন্তু রুজিটা সেরকম হয় না।’

চা-শ্রমিকেরা বছরে দুর্গাপূজাতেই বোনাস পেয়ে থাকেন। তাতে তাদের ঘরে উৎসবের আমেজ আসে বছরে একবারই। এবারের দুর্গাপূজা করতে পারেননি বলেই কান্নাভেজা কণ্ঠে ওই বাগানের সুবর্ণা ভূমিদ বলেন, ‘এই যে দুর্গাপূজা গেছে, আমরা বাচ্চাকাচ্চারে ভালোটিকে পোশাক পরাইতে পারছি না, ভালো টিকে খাওয়াইতে পারছি না, বাচ্চাগুলো আনন্দ করতে পারছে না, পূজা করতে পারছে না, আমাদের ভেতর এটাই কষ্ট। আমাদের কোনোদিকে সাহায্যেও আসে না। আমরা কোনোদিকে সাহায্যও পাই না।’
সাধারণ মানুষদের মতো চা-শ্রমিকদের শরীরেও রোগ বাসা বাঁধে, তারা অসুস্থ হন। তাদের যে আয়, সেটা দিয়ে পরিবারই চলে না আর কীভাবে চিকিৎসা করাবে। অসুস্থ হলে নাপা ট্যাবলেট ছাড়া আর কিছু মেলে না জানিয়ে অন্তরা ভূমিদ বলেন, ‘আমরা অসুস্থ হলে বাগানের অফিসে যাই। ওইখানে গেলেও অনেক অসুবিধা। আমরা প্রয়োজনমতো ওষুধ পাইতাছি না। অসুস্থ হলে পার্মেন্টদের ছুটি দেয় তিন দিন চার দিন। আর দেয় না। সেবার জন্যেও কোনো কিছু দেয় না। অসুস্থ হইলে ছোট বাচ্চাদেরকেও নাপা দেয়, বড় বাচ্চাদেরকেও নাপা দেয়, বড় মানুষদেরও। আর প্রেশারি যারা, উনাদের তো প্রেশারের ওষুধ দেয়। আর তেমন কিছু না। এছাড়া তো আমাদের আর কোনো পথ নাই। আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধাই পাই না। অসুস্থ হলে ক্যাপসুল দিয়াই সুস্থ হই, আর কিছু না।’
চা-শ্রমিকদের যে মজুরি, সেটা দিয়ে যেখানে একজন মানুষের চলাই দায়, সেখানে এই মজুরি দিয়ে একটি পরিবার চলে। অন্তরা ভূমিদ বলেন, ‘আমার পাঁচ সদস্যের পরিবার চলে। বাবা অনেক আগেই মারা গেছে। মা আর আমি কাজ করি। বাগানের বেতন দিয়ে চলে না। অনেক সময় কষ্ট হয়। বাগানের বেতন দিয়া তো অতটা করা সম্ভব নায়। অনেক কষ্ট হয় আরকি। যে সময় বেতন দেয় না, এক সপ্তাহ আটকাইয়া বাদের সপ্তাহে দেয়, ওই সময় বেশি কষ্ট হয়। আর এখন তো অনেক সমস্যা, অভাব। অভাব তো লেগেই থাকে। বাগানে কাজ করে তো সব অভাব মেটানো সম্ভব না। ১৭০ টাকা দিয়া হয় না। অনেক সময় কষ্টে পার করা লাগে। এখন তো আরও বেতন বন্ধ। আরও অনেক সমস্যা।’

‘যদি না পারে বেতন কড়ি দিতে, তে আমরারে কইয়ে দেউক যে আমরা দিতে পারতাম না। তোমরার বাগান যে বন্ধ আছে, বাগান তোমরার বন্ধই থাকুক। তোমরা যাও গিয়া। নাইলে আমরারে গুন্ডি দিয়া মারিয়া শেষ করিদেও। তেও আমরা শান্তিতে থাকমু। যদি মারিদেয় আমরারে, তেও শান্তি এনে থাকব সরকারে। আর আমরাও শান্তিয়ে মরিজাইমু। এ রকম দুখিয়া দুখিয়া আমরা মরতে চাই না।’
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির সিলেটের লাক্কাতুড়া চা-বাগানের চা-শ্রমিক কুলবতী লোহাল বেতন না পেয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাগানে কাজ করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু তিন মাস ধরে বেতন-রেশন পাচ্ছেন না। যে কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে তাঁর।
কুলবতী লোহাল বলেন, ‘আমরা তো আমাদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়া শান্তি-শৃঙ্খলায় থাকতে চাই, শান্তি-শৃঙ্খলায় খাইতে চাই, বাচ্চাকাচ্চারে লেখাপড়া শিখাইতে পারি, একমুঠা ভাত দিতে পারি এগুলোই চাই। তারা পেটের ক্ষুধায় ছটফট করে, চারটা লাকড়ি নিয়া, আমরা কচুশাক নিয়া এই বাচ্চাগুলোরে খাওয়াই। এই অবস্থা কেনে আমাদের?’
এই চা শ্রমিক আরও বলেন, ‘আগে যেগুলো ঘটেনি, এখন এইগুলা ঘটিয়া যায়। কেনে যায় ঘটিয়া যায়?’

কুলবতীর লোহালের মতোই দিন কাটছে ওই বাগানসহ সিলেটের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তিনটি বাগানের চা-শ্রমিকদের। বেতন-ভাতা ও রেশন না পেয়ে অনেকটা দিশেহারা হয়ে আছেন তাঁরা। ওই বাগানের আরেক শ্রমিক কৃষ্ণ গোয়ালা বলেন, ‘সাত সপ্তাহ ধরে আমরা বেতনভাতা পাচ্ছি না। যার কারণে আমাদের কাজকর্ম বন্ধ করে এখন আন্দোলন করতে হচ্ছে। আমরা কীভাবে চলছি, এটা ওপরওয়ালা ছাড়া আর কেউ জানে না। আমাদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের জন্য এখন আন্দোলন করছি। এই ন্যায্য পারিশ্রমিকের জন্য যদি আমাদের জীবনও দিতে হয়, তাহলে আমরা সেটা দিতেও রাজি।’
শুধু এই তিনটি বাগানের চা-শ্রমিকেরা নয়, সিলেটের অন্যান্য বাগানের শ্রমিকরাও এ রকমভাবে দিনাতিপাত করছেন। ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না, পাচ্ছেন না রেশনও। বাগানে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুবই করুণ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন চা-শ্রমিকেরা।
সিলেটের ব্যক্তি মালিকানাধীন তারাপুর চা-বাগানে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন চা-শ্রমিকের সঙ্গে। তিন ছেলের মা কল্পনা ভূমিদ জানান, টাকাপয়সার অভাবে তিন ছেলের কাউকে লেখাপড়া করাতে পারেননি। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই তিনি বেতন পান না। এমনিতেই যে বেতন পান, সেই বেতনে পরিবার চলে না। তিনি বলেন, ‘সারা দিনে ২২ কেজি তুললে হয় হাজিরা। তাতে পাই ১৭০ টাকা। সংসার চলে কোনোমতে। এই কষ্ট করে চলতে হয়। কী করমু, আমরার তো অভাব। আমার ছেলে তিনটা। বড়টা সর্দারি করে আর বাকিগুলো বাড়িতে থাকে। বেতন নাই, বাচ্চাদের পড়াইতে পারি না। চলতে পারমু কেম্নে? নিজেই খাইতে পারি না। চালের দাম বেশি। সবজির দাম বেশি। বাগানে ঘরবাড়ি নাই। ঘর দিছে না, একেবারে ভাঙা ঘর। বেতন নিয়মিত দেয় না। ৩-৪ সাপ্তা বাদে একটা বেতন দেয়। সারা বকেয়া রইছে ৷ বকেয়া দেয় না। ২ সাপ্তা রইছে। রেশন যা দেয়, সেটায় হয় না।’
চা-শিল্প এমন হয়েছে যে, আগের মতো আর অতিরিক্ত কাজ করতে পারেন না শ্রমিকেরা। এতে করে সংসারে জনসংখ্যা ও জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও বেতন আর বাড়ে না। এ বিষয়ে প্রতিমা ভূমিদ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন চা-পাতা তুলি ২২ কেজি। ২২ কেজি নিরিক দিলে আমাদের দেয় ১৬৮ টাকা রোজ। যদি ভালো চা-পাতা হয় বাগানে, তাহলে আমরা প্রতিদিন জনে ৫০ থেকে ৬০ কেজি করে তুলতে পারি। আগে এক্সট্রা তুললে ৫ টাকা করে কেজি পাওয়া যেত। এখন এটাও পাইতেছি না। এখন আমাদের দুই সপ্তাহ বকেয়া রইছে। আমরা ঠিকমতো বেতন পাইতাছি না। আমাদের এই অল্প আয়ে চলতে পারি না, সংসার চালাতে পারি না। আমাদের বাচ্চাকাচ্চাকে ঠিকমতো খাবার দিতে পারি না, পড়ালেখা করাইতে পারি না। আমাদের নানারকম সমস্যা আছে। আমাদের পরিশ্রম প্রচুর হয়, কিন্তু রুজিটা সেরকম হয় না।’

চা-শ্রমিকেরা বছরে দুর্গাপূজাতেই বোনাস পেয়ে থাকেন। তাতে তাদের ঘরে উৎসবের আমেজ আসে বছরে একবারই। এবারের দুর্গাপূজা করতে পারেননি বলেই কান্নাভেজা কণ্ঠে ওই বাগানের সুবর্ণা ভূমিদ বলেন, ‘এই যে দুর্গাপূজা গেছে, আমরা বাচ্চাকাচ্চারে ভালোটিকে পোশাক পরাইতে পারছি না, ভালো টিকে খাওয়াইতে পারছি না, বাচ্চাগুলো আনন্দ করতে পারছে না, পূজা করতে পারছে না, আমাদের ভেতর এটাই কষ্ট। আমাদের কোনোদিকে সাহায্যেও আসে না। আমরা কোনোদিকে সাহায্যও পাই না।’
সাধারণ মানুষদের মতো চা-শ্রমিকদের শরীরেও রোগ বাসা বাঁধে, তারা অসুস্থ হন। তাদের যে আয়, সেটা দিয়ে পরিবারই চলে না আর কীভাবে চিকিৎসা করাবে। অসুস্থ হলে নাপা ট্যাবলেট ছাড়া আর কিছু মেলে না জানিয়ে অন্তরা ভূমিদ বলেন, ‘আমরা অসুস্থ হলে বাগানের অফিসে যাই। ওইখানে গেলেও অনেক অসুবিধা। আমরা প্রয়োজনমতো ওষুধ পাইতাছি না। অসুস্থ হলে পার্মেন্টদের ছুটি দেয় তিন দিন চার দিন। আর দেয় না। সেবার জন্যেও কোনো কিছু দেয় না। অসুস্থ হইলে ছোট বাচ্চাদেরকেও নাপা দেয়, বড় বাচ্চাদেরকেও নাপা দেয়, বড় মানুষদেরও। আর প্রেশারি যারা, উনাদের তো প্রেশারের ওষুধ দেয়। আর তেমন কিছু না। এছাড়া তো আমাদের আর কোনো পথ নাই। আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধাই পাই না। অসুস্থ হলে ক্যাপসুল দিয়াই সুস্থ হই, আর কিছু না।’
চা-শ্রমিকদের যে মজুরি, সেটা দিয়ে যেখানে একজন মানুষের চলাই দায়, সেখানে এই মজুরি দিয়ে একটি পরিবার চলে। অন্তরা ভূমিদ বলেন, ‘আমার পাঁচ সদস্যের পরিবার চলে। বাবা অনেক আগেই মারা গেছে। মা আর আমি কাজ করি। বাগানের বেতন দিয়ে চলে না। অনেক সময় কষ্ট হয়। বাগানের বেতন দিয়া তো অতটা করা সম্ভব নায়। অনেক কষ্ট হয় আরকি। যে সময় বেতন দেয় না, এক সপ্তাহ আটকাইয়া বাদের সপ্তাহে দেয়, ওই সময় বেশি কষ্ট হয়। আর এখন তো অনেক সমস্যা, অভাব। অভাব তো লেগেই থাকে। বাগানে কাজ করে তো সব অভাব মেটানো সম্ভব না। ১৭০ টাকা দিয়া হয় না। অনেক সময় কষ্টে পার করা লাগে। এখন তো আরও বেতন বন্ধ। আরও অনেক সমস্যা।’
লবীব আহমদ, সিলেট

‘যদি না পারে বেতন কড়ি দিতে, তে আমরারে কইয়ে দেউক যে আমরা দিতে পারতাম না। তোমরার বাগান যে বন্ধ আছে, বাগান তোমরার বন্ধই থাকুক। তোমরা যাও গিয়া। নাইলে আমরারে গুন্ডি দিয়া মারিয়া শেষ করিদেও। তেও আমরা শান্তিতে থাকমু। যদি মারিদেয় আমরারে, তেও শান্তি এনে থাকব সরকারে। আর আমরাও শান্তিয়ে মরিজাইমু। এ রকম দুখিয়া দুখিয়া আমরা মরতে চাই না।’
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির সিলেটের লাক্কাতুড়া চা-বাগানের চা-শ্রমিক কুলবতী লোহাল বেতন না পেয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাগানে কাজ করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু তিন মাস ধরে বেতন-রেশন পাচ্ছেন না। যে কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে তাঁর।
কুলবতী লোহাল বলেন, ‘আমরা তো আমাদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়া শান্তি-শৃঙ্খলায় থাকতে চাই, শান্তি-শৃঙ্খলায় খাইতে চাই, বাচ্চাকাচ্চারে লেখাপড়া শিখাইতে পারি, একমুঠা ভাত দিতে পারি এগুলোই চাই। তারা পেটের ক্ষুধায় ছটফট করে, চারটা লাকড়ি নিয়া, আমরা কচুশাক নিয়া এই বাচ্চাগুলোরে খাওয়াই। এই অবস্থা কেনে আমাদের?’
এই চা শ্রমিক আরও বলেন, ‘আগে যেগুলো ঘটেনি, এখন এইগুলা ঘটিয়া যায়। কেনে যায় ঘটিয়া যায়?’

কুলবতীর লোহালের মতোই দিন কাটছে ওই বাগানসহ সিলেটের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তিনটি বাগানের চা-শ্রমিকদের। বেতন-ভাতা ও রেশন না পেয়ে অনেকটা দিশেহারা হয়ে আছেন তাঁরা। ওই বাগানের আরেক শ্রমিক কৃষ্ণ গোয়ালা বলেন, ‘সাত সপ্তাহ ধরে আমরা বেতনভাতা পাচ্ছি না। যার কারণে আমাদের কাজকর্ম বন্ধ করে এখন আন্দোলন করতে হচ্ছে। আমরা কীভাবে চলছি, এটা ওপরওয়ালা ছাড়া আর কেউ জানে না। আমাদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের জন্য এখন আন্দোলন করছি। এই ন্যায্য পারিশ্রমিকের জন্য যদি আমাদের জীবনও দিতে হয়, তাহলে আমরা সেটা দিতেও রাজি।’
শুধু এই তিনটি বাগানের চা-শ্রমিকেরা নয়, সিলেটের অন্যান্য বাগানের শ্রমিকরাও এ রকমভাবে দিনাতিপাত করছেন। ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না, পাচ্ছেন না রেশনও। বাগানে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুবই করুণ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন চা-শ্রমিকেরা।
সিলেটের ব্যক্তি মালিকানাধীন তারাপুর চা-বাগানে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন চা-শ্রমিকের সঙ্গে। তিন ছেলের মা কল্পনা ভূমিদ জানান, টাকাপয়সার অভাবে তিন ছেলের কাউকে লেখাপড়া করাতে পারেননি। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই তিনি বেতন পান না। এমনিতেই যে বেতন পান, সেই বেতনে পরিবার চলে না। তিনি বলেন, ‘সারা দিনে ২২ কেজি তুললে হয় হাজিরা। তাতে পাই ১৭০ টাকা। সংসার চলে কোনোমতে। এই কষ্ট করে চলতে হয়। কী করমু, আমরার তো অভাব। আমার ছেলে তিনটা। বড়টা সর্দারি করে আর বাকিগুলো বাড়িতে থাকে। বেতন নাই, বাচ্চাদের পড়াইতে পারি না। চলতে পারমু কেম্নে? নিজেই খাইতে পারি না। চালের দাম বেশি। সবজির দাম বেশি। বাগানে ঘরবাড়ি নাই। ঘর দিছে না, একেবারে ভাঙা ঘর। বেতন নিয়মিত দেয় না। ৩-৪ সাপ্তা বাদে একটা বেতন দেয়। সারা বকেয়া রইছে ৷ বকেয়া দেয় না। ২ সাপ্তা রইছে। রেশন যা দেয়, সেটায় হয় না।’
চা-শিল্প এমন হয়েছে যে, আগের মতো আর অতিরিক্ত কাজ করতে পারেন না শ্রমিকেরা। এতে করে সংসারে জনসংখ্যা ও জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও বেতন আর বাড়ে না। এ বিষয়ে প্রতিমা ভূমিদ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন চা-পাতা তুলি ২২ কেজি। ২২ কেজি নিরিক দিলে আমাদের দেয় ১৬৮ টাকা রোজ। যদি ভালো চা-পাতা হয় বাগানে, তাহলে আমরা প্রতিদিন জনে ৫০ থেকে ৬০ কেজি করে তুলতে পারি। আগে এক্সট্রা তুললে ৫ টাকা করে কেজি পাওয়া যেত। এখন এটাও পাইতেছি না। এখন আমাদের দুই সপ্তাহ বকেয়া রইছে। আমরা ঠিকমতো বেতন পাইতাছি না। আমাদের এই অল্প আয়ে চলতে পারি না, সংসার চালাতে পারি না। আমাদের বাচ্চাকাচ্চাকে ঠিকমতো খাবার দিতে পারি না, পড়ালেখা করাইতে পারি না। আমাদের নানারকম সমস্যা আছে। আমাদের পরিশ্রম প্রচুর হয়, কিন্তু রুজিটা সেরকম হয় না।’

চা-শ্রমিকেরা বছরে দুর্গাপূজাতেই বোনাস পেয়ে থাকেন। তাতে তাদের ঘরে উৎসবের আমেজ আসে বছরে একবারই। এবারের দুর্গাপূজা করতে পারেননি বলেই কান্নাভেজা কণ্ঠে ওই বাগানের সুবর্ণা ভূমিদ বলেন, ‘এই যে দুর্গাপূজা গেছে, আমরা বাচ্চাকাচ্চারে ভালোটিকে পোশাক পরাইতে পারছি না, ভালো টিকে খাওয়াইতে পারছি না, বাচ্চাগুলো আনন্দ করতে পারছে না, পূজা করতে পারছে না, আমাদের ভেতর এটাই কষ্ট। আমাদের কোনোদিকে সাহায্যেও আসে না। আমরা কোনোদিকে সাহায্যও পাই না।’
সাধারণ মানুষদের মতো চা-শ্রমিকদের শরীরেও রোগ বাসা বাঁধে, তারা অসুস্থ হন। তাদের যে আয়, সেটা দিয়ে পরিবারই চলে না আর কীভাবে চিকিৎসা করাবে। অসুস্থ হলে নাপা ট্যাবলেট ছাড়া আর কিছু মেলে না জানিয়ে অন্তরা ভূমিদ বলেন, ‘আমরা অসুস্থ হলে বাগানের অফিসে যাই। ওইখানে গেলেও অনেক অসুবিধা। আমরা প্রয়োজনমতো ওষুধ পাইতাছি না। অসুস্থ হলে পার্মেন্টদের ছুটি দেয় তিন দিন চার দিন। আর দেয় না। সেবার জন্যেও কোনো কিছু দেয় না। অসুস্থ হইলে ছোট বাচ্চাদেরকেও নাপা দেয়, বড় বাচ্চাদেরকেও নাপা দেয়, বড় মানুষদেরও। আর প্রেশারি যারা, উনাদের তো প্রেশারের ওষুধ দেয়। আর তেমন কিছু না। এছাড়া তো আমাদের আর কোনো পথ নাই। আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধাই পাই না। অসুস্থ হলে ক্যাপসুল দিয়াই সুস্থ হই, আর কিছু না।’
চা-শ্রমিকদের যে মজুরি, সেটা দিয়ে যেখানে একজন মানুষের চলাই দায়, সেখানে এই মজুরি দিয়ে একটি পরিবার চলে। অন্তরা ভূমিদ বলেন, ‘আমার পাঁচ সদস্যের পরিবার চলে। বাবা অনেক আগেই মারা গেছে। মা আর আমি কাজ করি। বাগানের বেতন দিয়ে চলে না। অনেক সময় কষ্ট হয়। বাগানের বেতন দিয়া তো অতটা করা সম্ভব নায়। অনেক কষ্ট হয় আরকি। যে সময় বেতন দেয় না, এক সপ্তাহ আটকাইয়া বাদের সপ্তাহে দেয়, ওই সময় বেশি কষ্ট হয়। আর এখন তো অনেক সমস্যা, অভাব। অভাব তো লেগেই থাকে। বাগানে কাজ করে তো সব অভাব মেটানো সম্ভব না। ১৭০ টাকা দিয়া হয় না। অনেক সময় কষ্টে পার করা লাগে। এখন তো আরও বেতন বন্ধ। আরও অনেক সমস্যা।’

‘যদি না পারে বেতন কড়ি দিতে, তে আমরারে কইয়ে দেউক যে আমরা দিতে পারতাম না। তোমরার বাগান যে বন্ধ আছে, বাগান তোমরার বন্ধই থাকুক। তোমরা যাও গিয়া। নাইলে আমরারে গুন্ডি দিয়া মারিয়া শেষ করিদেও। তেও আমরা শান্তিতে থাকমু। যদি মারিদেয় আমরারে, তেও শান্তি এনে থাকব সরকারে। আর আমরাও শান্তিয়ে মরিজাইমু। এ রকম দুখিয়া দুখিয়া আমরা মরতে চাই না।’
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির সিলেটের লাক্কাতুড়া চা-বাগানের চা-শ্রমিক কুলবতী লোহাল বেতন না পেয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাগানে কাজ করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু তিন মাস ধরে বেতন-রেশন পাচ্ছেন না। যে কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে তাঁর।
কুলবতী লোহাল বলেন, ‘আমরা তো আমাদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়া শান্তি-শৃঙ্খলায় থাকতে চাই, শান্তি-শৃঙ্খলায় খাইতে চাই, বাচ্চাকাচ্চারে লেখাপড়া শিখাইতে পারি, একমুঠা ভাত দিতে পারি এগুলোই চাই। তারা পেটের ক্ষুধায় ছটফট করে, চারটা লাকড়ি নিয়া, আমরা কচুশাক নিয়া এই বাচ্চাগুলোরে খাওয়াই। এই অবস্থা কেনে আমাদের?’
এই চা শ্রমিক আরও বলেন, ‘আগে যেগুলো ঘটেনি, এখন এইগুলা ঘটিয়া যায়। কেনে যায় ঘটিয়া যায়?’

কুলবতীর লোহালের মতোই দিন কাটছে ওই বাগানসহ সিলেটের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তিনটি বাগানের চা-শ্রমিকদের। বেতন-ভাতা ও রেশন না পেয়ে অনেকটা দিশেহারা হয়ে আছেন তাঁরা। ওই বাগানের আরেক শ্রমিক কৃষ্ণ গোয়ালা বলেন, ‘সাত সপ্তাহ ধরে আমরা বেতনভাতা পাচ্ছি না। যার কারণে আমাদের কাজকর্ম বন্ধ করে এখন আন্দোলন করতে হচ্ছে। আমরা কীভাবে চলছি, এটা ওপরওয়ালা ছাড়া আর কেউ জানে না। আমাদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের জন্য এখন আন্দোলন করছি। এই ন্যায্য পারিশ্রমিকের জন্য যদি আমাদের জীবনও দিতে হয়, তাহলে আমরা সেটা দিতেও রাজি।’
শুধু এই তিনটি বাগানের চা-শ্রমিকেরা নয়, সিলেটের অন্যান্য বাগানের শ্রমিকরাও এ রকমভাবে দিনাতিপাত করছেন। ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না, পাচ্ছেন না রেশনও। বাগানে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুবই করুণ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন চা-শ্রমিকেরা।
সিলেটের ব্যক্তি মালিকানাধীন তারাপুর চা-বাগানে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন চা-শ্রমিকের সঙ্গে। তিন ছেলের মা কল্পনা ভূমিদ জানান, টাকাপয়সার অভাবে তিন ছেলের কাউকে লেখাপড়া করাতে পারেননি। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই তিনি বেতন পান না। এমনিতেই যে বেতন পান, সেই বেতনে পরিবার চলে না। তিনি বলেন, ‘সারা দিনে ২২ কেজি তুললে হয় হাজিরা। তাতে পাই ১৭০ টাকা। সংসার চলে কোনোমতে। এই কষ্ট করে চলতে হয়। কী করমু, আমরার তো অভাব। আমার ছেলে তিনটা। বড়টা সর্দারি করে আর বাকিগুলো বাড়িতে থাকে। বেতন নাই, বাচ্চাদের পড়াইতে পারি না। চলতে পারমু কেম্নে? নিজেই খাইতে পারি না। চালের দাম বেশি। সবজির দাম বেশি। বাগানে ঘরবাড়ি নাই। ঘর দিছে না, একেবারে ভাঙা ঘর। বেতন নিয়মিত দেয় না। ৩-৪ সাপ্তা বাদে একটা বেতন দেয়। সারা বকেয়া রইছে ৷ বকেয়া দেয় না। ২ সাপ্তা রইছে। রেশন যা দেয়, সেটায় হয় না।’
চা-শিল্প এমন হয়েছে যে, আগের মতো আর অতিরিক্ত কাজ করতে পারেন না শ্রমিকেরা। এতে করে সংসারে জনসংখ্যা ও জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও বেতন আর বাড়ে না। এ বিষয়ে প্রতিমা ভূমিদ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন চা-পাতা তুলি ২২ কেজি। ২২ কেজি নিরিক দিলে আমাদের দেয় ১৬৮ টাকা রোজ। যদি ভালো চা-পাতা হয় বাগানে, তাহলে আমরা প্রতিদিন জনে ৫০ থেকে ৬০ কেজি করে তুলতে পারি। আগে এক্সট্রা তুললে ৫ টাকা করে কেজি পাওয়া যেত। এখন এটাও পাইতেছি না। এখন আমাদের দুই সপ্তাহ বকেয়া রইছে। আমরা ঠিকমতো বেতন পাইতাছি না। আমাদের এই অল্প আয়ে চলতে পারি না, সংসার চালাতে পারি না। আমাদের বাচ্চাকাচ্চাকে ঠিকমতো খাবার দিতে পারি না, পড়ালেখা করাইতে পারি না। আমাদের নানারকম সমস্যা আছে। আমাদের পরিশ্রম প্রচুর হয়, কিন্তু রুজিটা সেরকম হয় না।’

চা-শ্রমিকেরা বছরে দুর্গাপূজাতেই বোনাস পেয়ে থাকেন। তাতে তাদের ঘরে উৎসবের আমেজ আসে বছরে একবারই। এবারের দুর্গাপূজা করতে পারেননি বলেই কান্নাভেজা কণ্ঠে ওই বাগানের সুবর্ণা ভূমিদ বলেন, ‘এই যে দুর্গাপূজা গেছে, আমরা বাচ্চাকাচ্চারে ভালোটিকে পোশাক পরাইতে পারছি না, ভালো টিকে খাওয়াইতে পারছি না, বাচ্চাগুলো আনন্দ করতে পারছে না, পূজা করতে পারছে না, আমাদের ভেতর এটাই কষ্ট। আমাদের কোনোদিকে সাহায্যেও আসে না। আমরা কোনোদিকে সাহায্যও পাই না।’
সাধারণ মানুষদের মতো চা-শ্রমিকদের শরীরেও রোগ বাসা বাঁধে, তারা অসুস্থ হন। তাদের যে আয়, সেটা দিয়ে পরিবারই চলে না আর কীভাবে চিকিৎসা করাবে। অসুস্থ হলে নাপা ট্যাবলেট ছাড়া আর কিছু মেলে না জানিয়ে অন্তরা ভূমিদ বলেন, ‘আমরা অসুস্থ হলে বাগানের অফিসে যাই। ওইখানে গেলেও অনেক অসুবিধা। আমরা প্রয়োজনমতো ওষুধ পাইতাছি না। অসুস্থ হলে পার্মেন্টদের ছুটি দেয় তিন দিন চার দিন। আর দেয় না। সেবার জন্যেও কোনো কিছু দেয় না। অসুস্থ হইলে ছোট বাচ্চাদেরকেও নাপা দেয়, বড় বাচ্চাদেরকেও নাপা দেয়, বড় মানুষদেরও। আর প্রেশারি যারা, উনাদের তো প্রেশারের ওষুধ দেয়। আর তেমন কিছু না। এছাড়া তো আমাদের আর কোনো পথ নাই। আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধাই পাই না। অসুস্থ হলে ক্যাপসুল দিয়াই সুস্থ হই, আর কিছু না।’
চা-শ্রমিকদের যে মজুরি, সেটা দিয়ে যেখানে একজন মানুষের চলাই দায়, সেখানে এই মজুরি দিয়ে একটি পরিবার চলে। অন্তরা ভূমিদ বলেন, ‘আমার পাঁচ সদস্যের পরিবার চলে। বাবা অনেক আগেই মারা গেছে। মা আর আমি কাজ করি। বাগানের বেতন দিয়ে চলে না। অনেক সময় কষ্ট হয়। বাগানের বেতন দিয়া তো অতটা করা সম্ভব নায়। অনেক কষ্ট হয় আরকি। যে সময় বেতন দেয় না, এক সপ্তাহ আটকাইয়া বাদের সপ্তাহে দেয়, ওই সময় বেশি কষ্ট হয়। আর এখন তো অনেক সমস্যা, অভাব। অভাব তো লেগেই থাকে। বাগানে কাজ করে তো সব অভাব মেটানো সম্ভব না। ১৭০ টাকা দিয়া হয় না। অনেক সময় কষ্টে পার করা লাগে। এখন তো আরও বেতন বন্ধ। আরও অনেক সমস্যা।’

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট আঞ্চলিক সড়কে ট্রলি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কের বাজুনিয়াপাড়ার ব্রিজের ওপর এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের বড় বাজুনিয়াপাড়া...
৩ মিনিট আগে
বাজারে এক কয়েল (এক আরএম) তারের দাম ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভা এই তার কিনেছে ১৬ হাজার ২০০ টাকায়। শুধু তা-ই নয়, বৈদ্যুতিক বাল্ব, ফ্লাডলাইট, হোল্ডার ও সার্কিট ব্রেকারের মতো ইলেকট্রিক পণ্য কেনাকাটায় বাড়তি মূল্য পরিশোধ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ানের সৌরচালিত ভাসমান স্কুল উদ্যোগ ইউনেসকোর মর্যাদাপূর্ণ কনফুসিয়াস সাক্ষরতা পুরস্কার ২০২৫ পেয়েছে। শিক্ষায় নতুন উদ্ভাবন ও জীবনব্যাপী শিক্ষার প্রসারে এটি বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান, যা চীনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেওয়া হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনায় বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথম ধাপে হাসপাতাল ভবনের পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১১৪ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুনে প্রথম ধাপের কাজও শেষ হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের মধ্যে সম
৬ ঘণ্টা আগেগাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট আঞ্চলিক সড়কে ট্রলি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কের বাজুনিয়াপাড়ার ব্রিজের ওপর এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের বড় বাজুনিয়াপাড়া গ্রামের আতিকুর রহমানের স্ত্রী লিমা বেগম (৪০) ও জয়পুরহাট সদরের বাসিন্দা সবদের আলী (৫০)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল বিকেলের দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাট বাজার থেকে যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার উপজেলা শহরের দিকে যাচ্ছিল আর গোবিন্দগঞ্জের দিক থেকে নাকাইহাট বাজারের দিকে আসছিল শ্যালো মেশিন দ্বারা চালিত ট্রলি। গাড়ি দুটি নাকাইহাট-গোবিন্দগঞ্জ সড়কের বাজুনিয়াপাড়া ব্রিজের কাছে পৌঁছালে হঠাৎ মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশায় থাকা দুই যাত্রী গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট আঞ্চলিক সড়কে ট্রলি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কের বাজুনিয়াপাড়ার ব্রিজের ওপর এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের বড় বাজুনিয়াপাড়া গ্রামের আতিকুর রহমানের স্ত্রী লিমা বেগম (৪০) ও জয়পুরহাট সদরের বাসিন্দা সবদের আলী (৫০)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল বিকেলের দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাট বাজার থেকে যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার উপজেলা শহরের দিকে যাচ্ছিল আর গোবিন্দগঞ্জের দিক থেকে নাকাইহাট বাজারের দিকে আসছিল শ্যালো মেশিন দ্বারা চালিত ট্রলি। গাড়ি দুটি নাকাইহাট-গোবিন্দগঞ্জ সড়কের বাজুনিয়াপাড়া ব্রিজের কাছে পৌঁছালে হঠাৎ মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশায় থাকা দুই যাত্রী গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির সিলেটের লাক্কাতুড়া চা-বাগানের চা-শ্রমিক কুলবতী লোহাল বেতন না পেয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাগানে কাজ করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু তিন মাস ধরে বেতন-রেশন পাচ্ছেন না। যে কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে
২৯ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে এক কয়েল (এক আরএম) তারের দাম ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভা এই তার কিনেছে ১৬ হাজার ২০০ টাকায়। শুধু তা-ই নয়, বৈদ্যুতিক বাল্ব, ফ্লাডলাইট, হোল্ডার ও সার্কিট ব্রেকারের মতো ইলেকট্রিক পণ্য কেনাকাটায় বাড়তি মূল্য পরিশোধ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ানের সৌরচালিত ভাসমান স্কুল উদ্যোগ ইউনেসকোর মর্যাদাপূর্ণ কনফুসিয়াস সাক্ষরতা পুরস্কার ২০২৫ পেয়েছে। শিক্ষায় নতুন উদ্ভাবন ও জীবনব্যাপী শিক্ষার প্রসারে এটি বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান, যা চীনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেওয়া হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনায় বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথম ধাপে হাসপাতাল ভবনের পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১১৪ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুনে প্রথম ধাপের কাজও শেষ হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের মধ্যে সম
৬ ঘণ্টা আগেরিমন রহমান, রাজশাহী

বাজারে এক কয়েল (এক আরএম) তারের দাম ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভা এই তার কিনেছে ১৬ হাজার ২০০ টাকায়। শুধু তা-ই নয়, বৈদ্যুতিক বাল্ব, ফ্লাডলাইট, হোল্ডার ও সার্কিট ব্রেকারের মতো ইলেকট্রিক পণ্য কেনাকাটায় বাড়তি মূল্য পরিশোধ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় ১০ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ আয়কর ধরা হয়। তাই দাম কিছুটা বেশি হয়। বাজারমূল্যের সঙ্গে বিলের পার্থক্য থাকা অস্বাভাবিক নয়।
জানা গেছে, গত জুলাই-আগস্টে মেসার্স রুমেল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটেশনে এসব মালামাল ক্রয় দেখানো হয়। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা রাজশাহীর রাজপাড়া এলাকায়। তবে অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে দেখিয়ে মালামাল সরবরাহ করেছেন পৌরসভার দুই কর্মকর্তা। তাঁরা বাড়তি বিল পরিশোধ দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। গত জুলাইয়ে মালামাল সরবরাহ দেখিয়ে আগস্টে পৌরসভায় বিল দাখিল করা হয়।
বিলের কাগজে দেখা গেছে, ৫০০ পিছ ১৫ ওয়াটের এলইডি বাল্ব কেনা হয়েছে ৩১৮ টাকা দরে, এই বাল্ব বাজারে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যায়। তিন কয়েল (১ আরএম) তার কেনা হয়েছে ৪৮ হাজার ৬০০ টাকায়। প্রতি কয়েল তারের দাম পড়ে ১৬ হাজার ২০০ টাকা। অথচ বাজারে এই তার ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় পাওয়া যায়।
বিলে দেখা যায়, ১০০টি লাইট হোল্ডার কেনা হয়েছে প্রতিটি ২১০ টাকা দরে। স্থানীয় বাজারে এই হোল্ডার বিক্রি হয় ৭০ টাকায়। ১০০ ওয়াটের ১৩টি ফ্লাডলাইট কেনা হয়েছে ৩ হাজার ৬৪০ টাকা দরে। বাজারে এর দাম ৩ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। অভিযোগ রয়েছে, সরবরাহ করা হয়েছে ৫০ ওয়াটের ফ্লাডলাইট, কিন্তু বিল দেখানো হয়েছে ১০০ ওয়াটের হিসেবে।
স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, এভাবে বছরের পর বছর পৌরসভায় কেনাকাটার নামে লুটপাট চলছে। এই ইলেকট্রিক পণ্য কেনাকাটা করেছেন দুই কর্মকর্তা। তাঁরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দেখালেও বাস্তবে নিজেরাই মালামাল কিনে সরবরাহ করেছেন। এ কারণে দামও বেশি দেখিয়েছেন।
অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার একজন পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম। জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মালামাল সরবরাহ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। নিয়ম মেনেই দর দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসক ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, কাজটি কোটেশনের মাধ্যমে হয়েছে, এটি দ্রুত ভিত্তিতে ক্রয়ের একটি সরকারি প্রক্রিয়া। বাড়তি মূল্য পরিশোধ করার সুযোগ নেই। এটি হয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হবে।

বাজারে এক কয়েল (এক আরএম) তারের দাম ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভা এই তার কিনেছে ১৬ হাজার ২০০ টাকায়। শুধু তা-ই নয়, বৈদ্যুতিক বাল্ব, ফ্লাডলাইট, হোল্ডার ও সার্কিট ব্রেকারের মতো ইলেকট্রিক পণ্য কেনাকাটায় বাড়তি মূল্য পরিশোধ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় ১০ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ আয়কর ধরা হয়। তাই দাম কিছুটা বেশি হয়। বাজারমূল্যের সঙ্গে বিলের পার্থক্য থাকা অস্বাভাবিক নয়।
জানা গেছে, গত জুলাই-আগস্টে মেসার্স রুমেল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটেশনে এসব মালামাল ক্রয় দেখানো হয়। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা রাজশাহীর রাজপাড়া এলাকায়। তবে অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে দেখিয়ে মালামাল সরবরাহ করেছেন পৌরসভার দুই কর্মকর্তা। তাঁরা বাড়তি বিল পরিশোধ দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। গত জুলাইয়ে মালামাল সরবরাহ দেখিয়ে আগস্টে পৌরসভায় বিল দাখিল করা হয়।
বিলের কাগজে দেখা গেছে, ৫০০ পিছ ১৫ ওয়াটের এলইডি বাল্ব কেনা হয়েছে ৩১৮ টাকা দরে, এই বাল্ব বাজারে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যায়। তিন কয়েল (১ আরএম) তার কেনা হয়েছে ৪৮ হাজার ৬০০ টাকায়। প্রতি কয়েল তারের দাম পড়ে ১৬ হাজার ২০০ টাকা। অথচ বাজারে এই তার ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় পাওয়া যায়।
বিলে দেখা যায়, ১০০টি লাইট হোল্ডার কেনা হয়েছে প্রতিটি ২১০ টাকা দরে। স্থানীয় বাজারে এই হোল্ডার বিক্রি হয় ৭০ টাকায়। ১০০ ওয়াটের ১৩টি ফ্লাডলাইট কেনা হয়েছে ৩ হাজার ৬৪০ টাকা দরে। বাজারে এর দাম ৩ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। অভিযোগ রয়েছে, সরবরাহ করা হয়েছে ৫০ ওয়াটের ফ্লাডলাইট, কিন্তু বিল দেখানো হয়েছে ১০০ ওয়াটের হিসেবে।
স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, এভাবে বছরের পর বছর পৌরসভায় কেনাকাটার নামে লুটপাট চলছে। এই ইলেকট্রিক পণ্য কেনাকাটা করেছেন দুই কর্মকর্তা। তাঁরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দেখালেও বাস্তবে নিজেরাই মালামাল কিনে সরবরাহ করেছেন। এ কারণে দামও বেশি দেখিয়েছেন।
অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার একজন পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম। জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মালামাল সরবরাহ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। নিয়ম মেনেই দর দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসক ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, কাজটি কোটেশনের মাধ্যমে হয়েছে, এটি দ্রুত ভিত্তিতে ক্রয়ের একটি সরকারি প্রক্রিয়া। বাড়তি মূল্য পরিশোধ করার সুযোগ নেই। এটি হয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হবে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির সিলেটের লাক্কাতুড়া চা-বাগানের চা-শ্রমিক কুলবতী লোহাল বেতন না পেয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাগানে কাজ করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু তিন মাস ধরে বেতন-রেশন পাচ্ছেন না। যে কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে
২৯ নভেম্বর ২০২৪
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট আঞ্চলিক সড়কে ট্রলি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কের বাজুনিয়াপাড়ার ব্রিজের ওপর এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের বড় বাজুনিয়াপাড়া...
৩ মিনিট আগে
বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ানের সৌরচালিত ভাসমান স্কুল উদ্যোগ ইউনেসকোর মর্যাদাপূর্ণ কনফুসিয়াস সাক্ষরতা পুরস্কার ২০২৫ পেয়েছে। শিক্ষায় নতুন উদ্ভাবন ও জীবনব্যাপী শিক্ষার প্রসারে এটি বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান, যা চীনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেওয়া হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনায় বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথম ধাপে হাসপাতাল ভবনের পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১১৪ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুনে প্রথম ধাপের কাজও শেষ হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের মধ্যে সম
৬ ঘণ্টা আগেশাহীন রহমান, পাবনা

বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ানের সৌরচালিত ভাসমান স্কুল উদ্যোগ ইউনেসকোর মর্যাদাপূর্ণ কনফুসিয়াস সাক্ষরতা পুরস্কার ২০২৫ পেয়েছে। শিক্ষায় নতুন উদ্ভাবন ও জীবনব্যাপী শিক্ষার প্রসারে এটি বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান, যা চীনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেওয়া হয়। গতকাল ‘সিধুলাই স্বনির্ভর সংস্থা’ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে শত শত মনোনয়নের মধ্যে ইউনেসকো তিনটি উদ্যোগকে বিজয়ী হিসেবে নির্বাচন করেছে। সেগুলো হলো বাংলাদেশের সিধুলাই ভাসমান স্কুল, আয়ারল্যান্ডের লার্ন উইথ নালা ই-লার্নিং এবং মরক্কোর সেকেন্ড চান্স স্কুল অ্যান্ড ইনক্লুসিভ এডুকেশন প্রোগ্রাম। ২০তম পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানটি গত ২৭ সেপ্টেম্বর চীনের শানডং প্রদেশে কনফুসিয়াসের জন্মস্থান চুফু শহরে অনুষ্ঠিত হয়।

রেজোয়ান তাঁর প্রতিষ্ঠান সিধুলাই স্বনির্ভর সংস্থার পক্ষে ট্রফি ও সনদ গ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি চলনবিল এলাকায় বড় হয়েছেন, যেখানে প্রতিবছর বন্যায় স্কুল বন্ধ হয়ে যেত। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ২০০২ সালে তিনি উদ্ভাবন করেন এক অনন্য সমাধান। স্থানীয় নৌকাকে স্কুলে রূপান্তর, যা বিশ্বের সর্বপ্রথম ভাসমান স্কুল হিসেবে পরিচিত। আজও এসব সৌরচালিত নৌকা স্কুল, লাইব্রেরি ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে, যা বর্ষায় পানিবেষ্টিত গ্রামগুলোতেও বছরজুড়ে শিক্ষা চালিয়ে যেতে সাহায্য করছে।
ইউনেসকো এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছে, ‘বন্যাপ্রবণ অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্থানীয়ভাবে তৈরি উদ্ভাবনী উপায়ে সাক্ষরতা শিক্ষা পৌঁছে দেওয়াই এ ভাসমান স্কুলের সাফল্য।’

বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ানের সৌরচালিত ভাসমান স্কুল উদ্যোগ ইউনেসকোর মর্যাদাপূর্ণ কনফুসিয়াস সাক্ষরতা পুরস্কার ২০২৫ পেয়েছে। শিক্ষায় নতুন উদ্ভাবন ও জীবনব্যাপী শিক্ষার প্রসারে এটি বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান, যা চীনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেওয়া হয়। গতকাল ‘সিধুলাই স্বনির্ভর সংস্থা’ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে শত শত মনোনয়নের মধ্যে ইউনেসকো তিনটি উদ্যোগকে বিজয়ী হিসেবে নির্বাচন করেছে। সেগুলো হলো বাংলাদেশের সিধুলাই ভাসমান স্কুল, আয়ারল্যান্ডের লার্ন উইথ নালা ই-লার্নিং এবং মরক্কোর সেকেন্ড চান্স স্কুল অ্যান্ড ইনক্লুসিভ এডুকেশন প্রোগ্রাম। ২০তম পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানটি গত ২৭ সেপ্টেম্বর চীনের শানডং প্রদেশে কনফুসিয়াসের জন্মস্থান চুফু শহরে অনুষ্ঠিত হয়।

রেজোয়ান তাঁর প্রতিষ্ঠান সিধুলাই স্বনির্ভর সংস্থার পক্ষে ট্রফি ও সনদ গ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি চলনবিল এলাকায় বড় হয়েছেন, যেখানে প্রতিবছর বন্যায় স্কুল বন্ধ হয়ে যেত। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ২০০২ সালে তিনি উদ্ভাবন করেন এক অনন্য সমাধান। স্থানীয় নৌকাকে স্কুলে রূপান্তর, যা বিশ্বের সর্বপ্রথম ভাসমান স্কুল হিসেবে পরিচিত। আজও এসব সৌরচালিত নৌকা স্কুল, লাইব্রেরি ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে, যা বর্ষায় পানিবেষ্টিত গ্রামগুলোতেও বছরজুড়ে শিক্ষা চালিয়ে যেতে সাহায্য করছে।
ইউনেসকো এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছে, ‘বন্যাপ্রবণ অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্থানীয়ভাবে তৈরি উদ্ভাবনী উপায়ে সাক্ষরতা শিক্ষা পৌঁছে দেওয়াই এ ভাসমান স্কুলের সাফল্য।’

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির সিলেটের লাক্কাতুড়া চা-বাগানের চা-শ্রমিক কুলবতী লোহাল বেতন না পেয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাগানে কাজ করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু তিন মাস ধরে বেতন-রেশন পাচ্ছেন না। যে কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে
২৯ নভেম্বর ২০২৪
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট আঞ্চলিক সড়কে ট্রলি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কের বাজুনিয়াপাড়ার ব্রিজের ওপর এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের বড় বাজুনিয়াপাড়া...
৩ মিনিট আগে
বাজারে এক কয়েল (এক আরএম) তারের দাম ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভা এই তার কিনেছে ১৬ হাজার ২০০ টাকায়। শুধু তা-ই নয়, বৈদ্যুতিক বাল্ব, ফ্লাডলাইট, হোল্ডার ও সার্কিট ব্রেকারের মতো ইলেকট্রিক পণ্য কেনাকাটায় বাড়তি মূল্য পরিশোধ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
৬ ঘণ্টা আগে
বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনায় বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথম ধাপে হাসপাতাল ভবনের পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১১৪ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুনে প্রথম ধাপের কাজও শেষ হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের মধ্যে সম
৬ ঘণ্টা আগেকাজী শামিম আহমেদ, খুলনা

বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনায় বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথম ধাপে হাসপাতাল ভবনের পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১১৪ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুনে প্রথম ধাপের কাজও শেষ হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এক বছরের বেশি সময় পার হলেও হাসপাতালটি চালু করা যায়নি। এতে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার শিশুরা।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম ধাপের কাজ শেষ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ভবন হস্তান্তরের জন্য তিন দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে সাড়া দেয়নি তারা। ফলে ভবন নির্মাণ হলেও হস্তান্তর করা যাচ্ছে না। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, কাগজ-কলমে প্রকল্প শেষ দেখানো হলেও হাসপাতাল এলাকার এক পাশে প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ করা হয়নি। এ কারণে হাসপাতাল ভবন ও স্থাপনা এলাকা অরক্ষিত থাকছে। আর হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর জন্য আসবাবপত্র ও জনবলের ব্যবস্থাও এখনো করা যায়নি।
খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ-জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার শিশুদের জন্য হাসপাতালটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণপূর্ত বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের যদি কোনো সমন্বয়হীনতা থাকে, তাহলে তার সমাধান করে দ্রুত হাসপাতালটি চালু করা দরকার।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা প্রসারের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন মেলে। হাসপাতালটি নির্মাণে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) ময়ূরী আবাসিক এলাকার বিপরীতে সিটি বাইপাস সড়কের পাশে জমি চূড়ান্ত করা হয়। ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন ৫২ কোটি ২ লাখ টাকায় ৪ দশমিক ৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করে গণপূর্ত বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে।
গণপূর্ত বিভাগ ২০২০ সালে প্রথম পর্যায়ে হাসপাতালের বেসমেন্ট ও একতলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্রে নির্বাচিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রৈতি এন্টারপ্রাইজ ২০২০ সালের ১৪ মে কার্যাদেশ পায়। ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ের এ কাজের মেয়াদ ছিল ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ে সংশোধিত প্রস্তাবে ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতাল ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের অনুমোদন মেলে। এতে রান্নাঘর, সাবস্টেশন, পাম্পহাউস, সীমানাপ্রাচীর, রাস্তা, নালা ও গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ কাজের মেয়াদ শেষ হয় ২০২৩ সালের জুনে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কোনো কাজই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। বারবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে কাগজ-কলমে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত দেখানো হয়। অন্যদিকে নতুন করে হাসপাতালটির ষষ্ঠ থেকে দশম তলার কাজ শুরু করার জন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, ‘হাসপাতালটি নির্মাণে জমি অধিগ্রহণে দেরি হয়েছে। এ কারণে দরপত্র আহ্বানও বিলম্বিত হয়। কাজ শুরুর পর জমির প্রবেশপথ নিয়ে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জটিলতা দেখা দেওয়ায় বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। প্রথম ধাপের পঞ্চম তলা পর্যন্ত কাজ শেষ করে জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ভবন হস্তান্তরের জন্য তিন দফা চিঠি দেওয়া হয়েছে; কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। ফলে ভবন নির্মাণ হলেও হস্তান্তর করা যাচ্ছে না।’
খুলনা সিভিল সার্জন মাহফুজা খাতুন চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘কাগজ-কলমে প্রকল্প শেষ দেখানো হলেও হাসপাতাল এলাকার এক পাশে প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে হাসপাতাল ভবন ও স্থাপনা এলাকা অরক্ষিতই থাকছে। হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর জন্য আসবাবপত্র ও জনবলের ব্যবস্থাও নেই। গণপূর্তসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সীমানাপ্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ প্রসঙ্গে গণপূর্ত বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রকল্পে পুরো বাউন্ডারি ওয়াল ও প্রধান ফটকের কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তবে ভবনটি ছয়তলা থেকে দশতলা পর্যন্ত সম্প্রসারণসহ বাকি রাস্তা, বাউন্ডারি ওয়াল, নালা, প্রধান ফটক, নার্স ও স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণে ৯৮ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত এসব কাজ শেষ করা হবে।’
এ বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মুজিবুর রহমান বলেন, সরকারি এ হাসপাতাল নির্মিত হলে শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়বে। হাসপাতালকে আরও আধুনিক চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। তাহলে অন্য হাসপাতালগুলোরও চাপ কমবে।

বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনায় বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথম ধাপে হাসপাতাল ভবনের পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১১৪ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুনে প্রথম ধাপের কাজও শেষ হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এক বছরের বেশি সময় পার হলেও হাসপাতালটি চালু করা যায়নি। এতে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার শিশুরা।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম ধাপের কাজ শেষ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ভবন হস্তান্তরের জন্য তিন দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে সাড়া দেয়নি তারা। ফলে ভবন নির্মাণ হলেও হস্তান্তর করা যাচ্ছে না। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, কাগজ-কলমে প্রকল্প শেষ দেখানো হলেও হাসপাতাল এলাকার এক পাশে প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ করা হয়নি। এ কারণে হাসপাতাল ভবন ও স্থাপনা এলাকা অরক্ষিত থাকছে। আর হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর জন্য আসবাবপত্র ও জনবলের ব্যবস্থাও এখনো করা যায়নি।
খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ-জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার শিশুদের জন্য হাসপাতালটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণপূর্ত বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের যদি কোনো সমন্বয়হীনতা থাকে, তাহলে তার সমাধান করে দ্রুত হাসপাতালটি চালু করা দরকার।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা প্রসারের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন মেলে। হাসপাতালটি নির্মাণে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) ময়ূরী আবাসিক এলাকার বিপরীতে সিটি বাইপাস সড়কের পাশে জমি চূড়ান্ত করা হয়। ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন ৫২ কোটি ২ লাখ টাকায় ৪ দশমিক ৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করে গণপূর্ত বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে।
গণপূর্ত বিভাগ ২০২০ সালে প্রথম পর্যায়ে হাসপাতালের বেসমেন্ট ও একতলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্রে নির্বাচিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রৈতি এন্টারপ্রাইজ ২০২০ সালের ১৪ মে কার্যাদেশ পায়। ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ের এ কাজের মেয়াদ ছিল ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ে সংশোধিত প্রস্তাবে ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতাল ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের অনুমোদন মেলে। এতে রান্নাঘর, সাবস্টেশন, পাম্পহাউস, সীমানাপ্রাচীর, রাস্তা, নালা ও গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ কাজের মেয়াদ শেষ হয় ২০২৩ সালের জুনে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কোনো কাজই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। বারবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে কাগজ-কলমে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত দেখানো হয়। অন্যদিকে নতুন করে হাসপাতালটির ষষ্ঠ থেকে দশম তলার কাজ শুরু করার জন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, ‘হাসপাতালটি নির্মাণে জমি অধিগ্রহণে দেরি হয়েছে। এ কারণে দরপত্র আহ্বানও বিলম্বিত হয়। কাজ শুরুর পর জমির প্রবেশপথ নিয়ে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জটিলতা দেখা দেওয়ায় বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। প্রথম ধাপের পঞ্চম তলা পর্যন্ত কাজ শেষ করে জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ভবন হস্তান্তরের জন্য তিন দফা চিঠি দেওয়া হয়েছে; কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। ফলে ভবন নির্মাণ হলেও হস্তান্তর করা যাচ্ছে না।’
খুলনা সিভিল সার্জন মাহফুজা খাতুন চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘কাগজ-কলমে প্রকল্প শেষ দেখানো হলেও হাসপাতাল এলাকার এক পাশে প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে হাসপাতাল ভবন ও স্থাপনা এলাকা অরক্ষিতই থাকছে। হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর জন্য আসবাবপত্র ও জনবলের ব্যবস্থাও নেই। গণপূর্তসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সীমানাপ্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ প্রসঙ্গে গণপূর্ত বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রকল্পে পুরো বাউন্ডারি ওয়াল ও প্রধান ফটকের কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তবে ভবনটি ছয়তলা থেকে দশতলা পর্যন্ত সম্প্রসারণসহ বাকি রাস্তা, বাউন্ডারি ওয়াল, নালা, প্রধান ফটক, নার্স ও স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণে ৯৮ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত এসব কাজ শেষ করা হবে।’
এ বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মুজিবুর রহমান বলেন, সরকারি এ হাসপাতাল নির্মিত হলে শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়বে। হাসপাতালকে আরও আধুনিক চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। তাহলে অন্য হাসপাতালগুলোরও চাপ কমবে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির সিলেটের লাক্কাতুড়া চা-বাগানের চা-শ্রমিক কুলবতী লোহাল বেতন না পেয়ে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাগানে কাজ করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু তিন মাস ধরে বেতন-রেশন পাচ্ছেন না। যে কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে
২৯ নভেম্বর ২০২৪
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট আঞ্চলিক সড়কে ট্রলি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কের বাজুনিয়াপাড়ার ব্রিজের ওপর এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের বড় বাজুনিয়াপাড়া...
৩ মিনিট আগে
বাজারে এক কয়েল (এক আরএম) তারের দাম ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভা এই তার কিনেছে ১৬ হাজার ২০০ টাকায়। শুধু তা-ই নয়, বৈদ্যুতিক বাল্ব, ফ্লাডলাইট, হোল্ডার ও সার্কিট ব্রেকারের মতো ইলেকট্রিক পণ্য কেনাকাটায় বাড়তি মূল্য পরিশোধ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ানের সৌরচালিত ভাসমান স্কুল উদ্যোগ ইউনেসকোর মর্যাদাপূর্ণ কনফুসিয়াস সাক্ষরতা পুরস্কার ২০২৫ পেয়েছে। শিক্ষায় নতুন উদ্ভাবন ও জীবনব্যাপী শিক্ষার প্রসারে এটি বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান, যা চীনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেওয়া হয়।
৬ ঘণ্টা আগে