Ajker Patrika

‘মেয়েকে খুন করছি, আমার ফাঁসি হোক’

সিলেট সংবাদদাতা
‘মেয়েকে খুন করছি, আমার ফাঁসি হোক’

সিলেটে নিজের এক বছর পাঁচ মাস বয়সী মেয়েকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন নাজমিন আক্তার নামের এক নারী। পারিবারিক কলহের জেরে সাবিহাকে বালিশ চাপা দিয়ে ও শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন বলে থানায় উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের জানান তিনি। আজ বুধবার দুপুরে সিলেট নগরের শাহপরান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত শিশুর নাম সাবিহা আক্তার। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোলাপগঞ্জ এলাকার নাজমিনের সঙ্গে দক্ষিণ সুরমার বদলি এলাকার সাব্বির আহমদের বিয়ে হয় ২০১৫ সালে। বিয়ের পর থেকে তারা শাহপরান এলাকায় থাকতেন। নাজমিন একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও তাঁর স্বামী কাতার প্রবাসী। এর আগেও একটি বিয়ে হয়েছিল নাজমিনের। সেই সংসারে তাঁর একটি সন্তান রয়েছে। 

থানায় উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে নাজমিন বলেন, বিয়ের পর আমার স্বামী বিদেশ চলে যায়। এরপর চার বছর পর দেশে ফিরে। কিন্তু বিদেশ থাকা অবস্থায় তিনি আমার ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেননি। দেশে ফিরলে আমরা আবার সংসার শুরু করি। তখন আমি গর্ভবতী হই। আমাকে গর্ভবতী রেখেই তিনি আবার কাতার চলে যান। বিদেশে গিয়ে সাব্বির অভিযোগ করেন আমার গর্ভের সন্তান তাঁর নয়। আমি তখন ডিএনএ টেস্ট করার কথা বলি। কিন্তু সাব্বির ও তাঁর পরিবার আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে থাকে। 

মেয়ের চেহারা অবিকল তার বাবার মতো হয়েছে জানিয়ে নাজমিন বলেন, ‘সাব্বির ১৫ দিন আগে দেশে এসেছেন। কিন্তু একবারও মেয়েকে দেখতে আসেননি। বরং আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছেন। এই দুঃখে আমি আমার মেয়েকে হত্যা করেছি।’ 

নিজের মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে নাজমিন বলেন, ‘আমি কাউকে ফাঁসাব না, সাব্বিরকেও না। তাকে ফাঁসালেও সে কম শাস্তিতে পার পেয়ে যাবে। তাঁর বিচার আল্লাহ করবেন। আমি আমার মেয়েকে খুন করছি। আমার ফাঁসি হোক।’ 

নাজমিন আরও বলেন, ‘হাসপাতালে সাব্বিরের ভাইকে পাইছিলাম। তাঁকে জুতা দিয়ে মারতে চাইছিলাম। মারতে পারলে শান্তি হতো। কিন্তু পারিনি।’ 

পারিবারিক কলহের জেরে সাবিহাকে গলা টিপে তার মা নাজমিন হত্যা করেন জানিয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, বিকেলে হাসপাতাল থেকে নাজমিনকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। নাজমিনের স্বামী সাব্বির আহমদকেও আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি যেহেতু শাহপরান থানা এলাকার তাই শাহপরান থানা-পুলিশকে খবর দিয়েছি। তারাই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শিশুটির মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত