Ajker Patrika

মৎস্যজীবী লীগ নেতাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিলেন বিএনপি-জামায়াতের নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
ইকবাল হোসেন রিজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইকবাল হোসেন রিজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মৎস্যজীবী লীগ নেতা ইকবাল হোসেন রিজনকে পুলিশ আটক করার পর থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছেন উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের দুই নেতা। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে নানা আলোচনা।

পুলিশ বলছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দুই মাস আগে মৎস্যজীবী লীগের ওই নেতা জামায়াতে যোগদানের একটি ফরম দেখানো হয়েছে। যদিও তিনি ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে কুলাউড়া উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া তিনি স্থানীয় আমতলা বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে ফরমও কিনেছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাতে ইকবাল হোসেন রিজনকে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের আমতলা বাজার থেকে আটক করে কুলাউড়া থানার পুলিশ। আটকের খবর পেয়ে তাঁকে ছাড়াতে কুলাউড়া থানায় যান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল জলিল জামাল ও রাউৎগাঁও ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা ইকবাল সালাম।

মৎস্যজীবী লীগের উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন রিজন গত বছরের ১৪ জুন জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন বলে পুলিশে জানান জামায়াত নেতা ইকবাল সালাম। স্থানীয় লোকজনও এ সময় তাঁকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে পুলিশ রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেয়।

ইকবাল হোসেন রিজন ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল জলিল জামালের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অভিনাষ চন্দ্র দেব বলেন, ‘কয়েকজন এসে আমাদের থেকে কুলাউড়ার কমিটি নিয়েছিল। পরে কেউ আর কোনো যোগাযোগ করেনি। উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন রিজন পরে পদত্যাগ করেছেন কি না, আমার জানা নেই। তিনি জামায়াতে যোগ দিয়েছেন এমন খবরও জানি না। আমাদের জেলা কমিটি বিলুপ্ত করার পর রাজনীতিতে আর আমি সক্রিয় হইনি।’

কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুল মুনতাজিম বলেন, ইকবাল হোসেন রিজন প্রায় এক বছর ধরে জামায়াতের সমর্থক হিসেবে রয়েছেন। তিনি মৎস্যজীবী লীগের কমিটিতে থাকলেও সক্রিয় ছিলেন না। মূলত আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতেন। তিনি মৎস্যজীবী লীগ থেকে পদত্যাগ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে এ ব্যাপারে কোনো উত্তর দেননি।

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শওকতুল ইসলাম শকু বলেন, ‘আমিও ফেসবুকে দেখেছি। অনেকে আব্দুল জলিল জামাল ও জামায়াত নেতা ইকবাল সালামকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। জামাল সাহেবের সঙ্গে কথা হয়নি। তাঁর ফোন বন্ধ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাব। তবে ইকবাল হোসেন রিজন আমার জানামতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁকে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম শফি আহমদ সলমানের অনুসারী হিসেবে জানি।’

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আপছার বলেন, ‘রিজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। পরে আমরা জানতে পারি, তিনি আগে শিবির করতেন। মৎস্যজীবী লীগের কমিটিতে থাকলেও কোনো অপকর্ম বা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কারও ক্ষতি করেননি বলে স্থানীয়রা জানান। তিনি গত বছরের ১৪ জুন জামায়াতে যোগ দিয়েছেন বলে ফরমও আমাদের দেখানো হয়েছে। বিএনপি নেতা আব্দুল জলিল জামাল, জামায়াত নেতা ইকবাল সালামসহ বাজারের ব্যবসায়ীরাও তাঁকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত