Ajker Patrika

গারো পাহাড়

একের পর এক আগুন, উজাড় বন

  • শুষ্ক মৌসুম শুরু হতেই প্রায় প্রতিদিন ঘটছে অগ্নিকাণ্ড।
  • মারা যাচ্ছে বিভিন্ন গাছ, বনের কীটপতঙ্গ এবং পশুপাখি।
  • আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন বনপ্রহরীরা।
জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর 
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৫, ০৮: ৩৩
শেরপুরে গারো পাহাড়ি এলাকার বনাঞ্চলে শুষ্ক মৌসুম শুরু হতেই প্রায় প্রতিদিন ঘটে অগ্নিকাণ্ড। জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া এলাকায় গত শনিবার বিকেলেও এভাবে বন পুড়তে দেখা গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শেরপুরে গারো পাহাড়ি এলাকার বনাঞ্চলে শুষ্ক মৌসুম শুরু হতেই প্রায় প্রতিদিন ঘটে অগ্নিকাণ্ড। জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া এলাকায় গত শনিবার বিকেলেও এভাবে বন পুড়তে দেখা গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ি এলাকার বনাঞ্চলে শুষ্ক মৌসুম শুরু হতেই প্রায় প্রতিদিন ঘটছে অগ্নিকাণ্ড। মরে যাচ্ছে শাল-গজারি গাছের চারা। বনের কীটপতঙ্গ ও পশুপাখিও মারা যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গুল্মজাতীয় ঔষধি লতাপাতা ও বনের গাছ। এতে হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। তবে কে বা কারা আগুন দিচ্ছে বনে, জানে না কেউই। বন বিভাগ বলছে, প্রতিবছরই দিনে ও রাতের বিভিন্ন সময় এই আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। স্বল্প লোকবল নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন বনপ্রহরীরাও।

বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার গারো পাহাড়ের মধুটিলা, রাংটিয়া ও বালিজুড়ি রেঞ্জসহ জেলায় প্রায় ২০ হাজার একর বনভূমি রয়েছে। শুষ্ক মৌসুম শুরুতেই প্রতিদিনই বনের বিভিন্ন জায়গায় আগুন দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। গত তিন দিনে উপজেলার কাংশা, রাংটিয়া, হালচাটি, গান্ধীগাঁও, গজনী বিট, দরবেশটিলা এলাকার বিস্তৃত শালবনের কমপক্ষে ২০টি জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

শেরপুরের গারো পাহাড়ের শাল-গজারির বনটি মূলত পত্রঝরা বন। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে এই বনের গাছ থেকে প্রচুর শুষ্ক পাতা ঝরে পড়ে। এই পাতাতেই আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। গুল্মজাতীয় লতাপাতা এবং ঔষধিগাছ পুড়ে যাওয়ায় খাদ্যের অভাব দেখা দিচ্ছে বন্য প্রাণীদের। এভাবে আগুন দেওয়া চলতে থাকলে বনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকিতে পড়ার পাশাপাশি বনের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়া আশঙ্কা রয়েছে।

গত শনিবার রাংটিয়া রেঞ্জের গজনী বিট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের দুই পাশের বনের বিশাল এলাকাজুড়ে ঝরা পাতা ও ছোট ছোট চারা গাছগুলো আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পুড়ে গেছে পাহাড়ি মাটিও।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বনের ভেতর একটি অসাধু চক্র নিজেদের সুবিধার্থে এ কাজ করে। আগুন দিয়ে বন পরিষ্কার করে সেখানে চাষাবাদ করে। এমনকি আগুনে পুড়ে গাছ মরে গেলে রাতের আঁধারে তা চুরি করে।

রাংটিয়া এলাকার যুবক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘কিছু দুষ্কৃতকারী আছে, যারা পাহাড়দ্রোহী, রাষ্ট্রদ্রোহী—তারাই পাহাড়ে আগুন দেয়। তারা এই বনকে, প্রকৃতিকে ধ্বংস করতে চায়। তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা বন বিভাগসহ সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

ছোট গজনী এলাকার সামাজিক বনায়নের অংশীদার মো. হুরমুজ আলী বলেন, ‘বনে বেশি পরিমাণ পাতা জমা হওয়ায় বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেও আগুন লেগে যাচ্ছে। বাইরে থেকে আসা পর্যটকেরাও না বুঝে বিড়ি-সিগারেটের আগুন ফেলছেন। আমরা আগুন নেভাতে বন বিভাগের লোকজনের সঙ্গে কাজ করি। তবে কে বা কারা আগুন দিচ্ছে, তাদের ধরা যাচ্ছে না।’

শুকনো পাতার কারণে আগুন অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে বন বিভাগের লোকজনকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখছি না—বলেন, রাংটিয়া এলাকার কৃষক হামিদুল্লাহ।

গজনী এলাকায় বেড়াতে আসা পর্যটক শোয়াইব হাসান বলেন, আগুনে বন ধ্বংস এবং বনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধ্বংস হয়ে গেলে গারো পাহাড়ে পর্যটকও আসবেন না। তাই কঠোর নজরদারির মাধ্যমে দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হোক।

পরিবেশবাদী সংগঠন শাইনের নির্বাহী পরিচালক ও ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার মো. মুগনিউর রহমান মনি বলেন, ‘গারো পাহাড়ে আগুন দিয়ে গাছপালা ধ্বংসসহ প্রাণী ও কীটপতঙ্গ হত্যা করছে একদল দুর্বৃত্ত। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আমাদের অনুরোধ, বন বাঁচাতে দ্রুত বনে নজরদারি বাড়িয়ে এসব দুর্বৃত্তকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’

ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার মো. আব্দুল করিম বলেন, ‘এই আগুন নতুন কিছু নয়। প্রতিবছরই এমনভাবে বনের ঝরে পড়া পাতায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তবে এবার এই রেঞ্জে আগুন দেওয়ার ঘটনাটা বেশি। আগুনের কারণে কীটপতঙ্গ ও বনের ছোট ছোট গাছপালা, ঝোপঝাড় পুড়ে যাচ্ছে। এতে বনের ইকোসিস্টেম নষ্ট হচ্ছে। আমরা স্বল্প লোকবল নিয়ে আগুন মোকাবিলায় চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এস বি তানভীর আহমেদ ইমন বলেন, ‘এখন শুকনো মৌসুম। শালপাতা খুবই শুষ্ক অবস্থায় বনে পড়ে স্তূপ হয়ে থাকে। এক জায়গায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না আনতে আরেক জায়গায় আগুন জ্বলছে। আমাদের স্বল্প জনবল দিয়ে এত বড় পাহাড়ের আগুন নিয়ন্ত্রণ বেশ কঠিন। এরপরও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

সহকারী বন সংরক্ষক আরও বলেন, আগুনের ঘটনায় গত শনিবার রাতে ঝিনাইগাতী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এসব আগুনের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৪
প্রধান-শিক্ষিকা ।  ছবি: সংগৃহীত
প্রধান-শিক্ষিকা । ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের পুবাইল থানার মাজুখান এলাকায় একটি বাসা থেকে শাহানা বেগম (৫৭) নামের এক প্রধান শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে মাজুখান পশ্চিমপাড়া এলাকার ফাগুনী নামের ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত শাহানা বেগম কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহানা বেগম ঢাকার রামপুরা থানার বনশ্রী এলাকার আবদুল আজিজ খানের স্ত্রী। চাকরির সুবাদে তিনি চার বছর ধরে পুবাইলের মাজুখান এলাকার ওই ভবনে একাই ভাড়া থাকতেন এবং সেখান থেকেই নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত করতেন।

মৃতের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শাহানা বেগম অসুস্থ ছিলেন। তাঁর ছেলে তাওসির আহমেদ খান অনিক পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর মা দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন এবং তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে রিং (স্টেন্ট) বসানো হয়েছিল। যেহেতু তিনি বাসায় একা থাকতেন, তাই ধারণা করা হচ্ছে, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে বা শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি মারা গেছেন এবং সাহায্য চাওয়ার সুযোগ পাননি।

ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বা হৃদ্‌রোগে মৃত্যু বলে মনে হচ্ছে। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এ ঘটনায় পুবাইল থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা করা হয়েছে।

পুবাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে ওই শিক্ষিকাকে বাসা থেকে বের হতে দেখা যাচ্ছিল না। এমনকি ঘরের ভেতর থেকেও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আজ সকালে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ঢুকে শিক্ষিকার নিথর দেহ উদ্ধার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুড়িগ্রামে ছাত্রাবাস থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট । ছবি: সংগৃহীত
কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট । ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রাম সদরের ভকেশনাল মোড় এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ভকেশনাল মোড়সংলগ্ন অর্ণব ছাত্রাবাস থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম মৃত্যুঞ্জয় রায় (২১)। তিনি কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্র বলে জানা গেছে। তাঁর বাড়ি লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানা এলাকায়। তাঁর বাবার নাম সংকর চন্দ্র রায়। পুলিশের ধারণা মৃত্যুঞ্জয় আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।

তবে ঠিক কী কারণে তিনি ‘আত্মহত্যার’ পথ বেচে নিয়েছেন, সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অর্ণব ছাত্রাবাসের মালিক আবু সাঈদ জানান, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছুটি থাকায় ছাত্রাবাসের বেশির ভাগ ছাত্র বাড়িতে গেছেন। মৃত্যুঞ্জয়সহ চার-পাঁচজন ছাত্র ছিলেন। শনিবার বিকেলে ছাত্রাবাসের এক ছাত্র এসে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর খবর দেন। ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছিলেন। তাঁর এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানা যায়নি। পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ডিউটি অফিসার ও সহকারী উপপরিদর্শক মোস্তফা জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২-৪টি আসনের জন্য নয়, জোট হবে ন্যায্যতার বিচারে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে: নুরুল হক নুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত
নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে শেখ হাসিনা আমাদের আসন অফার করেছিলেন, টাকা অফার করেছিলেন। কিন্তু আমরা ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আপস করিনি। আমরা ২-৪টি আসনের জন্য কারও সঙ্গে জোট করব না। যদি দেশের প্রয়োজনে জোট করি, তা ন্যায্যতার বিচারে সম্মানজনক আসন সমঝোতার ভিত্তিতে হবে।’ /

আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নবীনগর পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হক নুর এসব কথা বলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে দলীয় প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিতে স্থানীয় গণঅধিকার পরিষদ এই জনসভার আয়োজন করে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম দলের প্রার্থী হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে আগাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন তার কার্যক্রম সম্পন্ন করছে। ১১ তারিখ তফসিল ঘোষণা করার কথা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের লড়াকু ও আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ থাকায় যদি কোনো প্রেক্ষাপট তৈরি হয় নির্বাচন পেছানোর, সেটি হয়তো নির্বাচন কমিশন এবং সরকার বিবেচনা করবে। অন্যথায় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হোক আর এপ্রিলে হোক, নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদ এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। আর দেশের প্রয়োজনে যদি কোনো জোট করে, তাহলে যেসব জায়গায় জনসমর্থন আছে, সেসব আসনকে নিশ্চিত করেই আমাদের জোট হবে।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের নেতারা পুরোনো ফ্যাসিস্টদের মতোই হুমকি-ধমকি ও আধিপত্য বিস্তারের অপরাজনীতি দেশব্যাপী কায়েম করতে চান। তাঁদেরকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ১৬ বছরের অপশাসন মুহূর্তের মধ্যেই চুরমার হয়ে গেছে। জনগণের প্রতিবাদে নেতারা সীমান্ত দিয়ে, হেলিকপ্টার দিয়ে, নদী-নালা ও খাল-বিল দিয়ে যে যেভাবে পেরেছেন পালিয়ে গেছেন। কেউ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তাঁদের পরিণতিও তা-ই হবে। গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজন সব রাজনৈতিক দলকে সংযত এবং সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানাই।’

নবীনগর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক সানাউল্লাহ হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আশরাফুল হাসান তপু, নবীনগর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কাইয়ূম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৫৭
সন্তান কোলে সাদিয়া আক্তার। ছবি: সংগৃহীত
সন্তান কোলে সাদিয়া আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে যৌতুকের দাবিতে সাদিয়া আক্তার নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনায় দেবর রাব্বিকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রধান আসামি রাব্বি। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান আসামি রাব্বি। ছবি: সংগৃহীত

পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ৫ ডিসেম্বর দাদার কুলখানি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সাদিয়া তাঁর বাবার বাড়ি বুড়িচংয়ের বাকশিমুল ইউনিয়নের উত্তর কোদালিয়া গ্রামে আসেন। বেলা ৩টার দিকে খাবারের টেবিলে বসার সময় হঠাৎ তাঁর দেবর রাব্বি অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। সবার সামনে তিনি সাদিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘দাদা মরার খানা খাইতে আইছোস কেন? ঠিকমতো দাওয়াত দিস নাই। খাইতে আসছোস কেন? বিষ খাইলি না কেন?’

অভিযোগ রয়েছে, এ সময় রাব্বি কিল-ঘুষি মেরে জোর করে সাদিয়াকে (২২) সিএনজিতে তুলে নিয়ে যান। পরে বিকেল ৫টার দিকে সাদিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন সাদিয়ার মাকে ফোন দিয়ে জানান, সাদিয়া নাকি বিষপান করেছেন এবং তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

নিহতের মা রুবি আক্তার অভিযোগ করেন, ‘বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী হাবিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের জন্য সাদিয়াকে নির্যাতন করত। হাবিব প্রবাসে থাকলেও নিয়মিত ফোনে যৌতুকের টাকা দাবি করত এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করত।’

তিনি বলেন, ‘শারীরিক নির্যাতন করে আমার মেয়েকে জোর করে বিষ খাইয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার নামে নাটক করেছে। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে চান্দিনায় অ্যাম্বুলেন্সে একা রেখে পালিয়ে যায় তারা। আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার চাই।’

ঘটনার পর রাতে নিহতের মা বুড়িচং থানায় মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে দেবর রাব্বিকে (২৪)। অন্য আসামিরা হলেন শ্বশুর মোস্তফা (৬০), শাশুড়ি রহিমা খাতুন (৫০), ননদ আমেনা খাতুন (২৬), ননদ সোনালী আক্তার (২০) এবং স্বামী হাবিবুর রহমান (২৮)। নিহত সাদিয়ার আট মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

এ বিষয়ে বুড়িচং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জিয়া বলেন, ‘ছয়জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত