Ajker Patrika

হাত দিয়ে টানতেই উঠে আসছে রাস্তার কার্পেটিং, এলাকাবাসীর বাধার মুখে কাজ বন্ধ

দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি 
হাত দিয়ে টানতেই কার্পেটিং উঠে আসছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাত দিয়ে টানতেই কার্পেটিং উঠে আসছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটায় বিনোদনস্পট রূপসী ম্যানগ্রোভে (মিনি সুন্দরবন) যাওয়ার সড়কটি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সংস্কারকাজ করছিলেন ঠিকাদার। আর সেখানে উপস্থিত থাকা এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বসে বসে কাজ তদারকি করছিলেন। অনিয়ম দেখে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তা সংস্কারে বাধা দিলে সটকে পড়েন ঠিকারদার ও এলজিইডির কর্মকর্তা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও। অনিয়ম দেখে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন তিনি। আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, দেবহাটা উপজেলার সুশীলগাতী থেকে শীবনগরগামী রাস্তার কার্পেটিং কাজের টেন্ডার পায় ফয়সাল হোসেনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১৫০০ মিটার রাস্তার কাজের শুরু থেকে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। গত ঈদুল আজহার আগে ঠিকাদার রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করলে একপর্যায়ে স্থানীয়দের অভিযোগের মুখে তৎকালীন ইউএনও কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এরপর বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আবার রাস্তায় কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করে।

আজ শনিবার কাপেটিংয়ের কাজ শুরু করে ঠিকাদারের লোকজন। একপর্যায়ে এলাকাবাসী রাস্তায় নিম্নমানের পিচ উচ্চ তাপমাত্রায় গলিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন। এলাকাবাসীর দাবি, রাস্তার কার্পেটিং ঠিকমতো রুলার না করায় পায়ের জুতা ও গাড়ির চাকার সঙ্গে পিচ উঠে আসছে। এ ছাড়া ওই রাস্তার বেডে ব্যবহৃত এজিং নিজে নিজে ধসে পড়ছে। রাস্তার ওপরে ময়লা-আবর্জনা রেখে নামমাত্র ট্যাগকোড দিয়ে কার্পেটিংৎয়ের কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে স্থানীয়রা জানতে চাইলে এলজিইডির কর্মকর্তা ও ঠিকাদার ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে বিষয়টি ইউএনও মিলন সাহাকে অবহিত করা হলে সেখানে হাজির হন তিনি। রাস্তা নির্মাণকাজে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা আয়ুব হোসেন, আব্দুল মজিদ, শফিকুল ইসলাম, হাবিবুর রহমানসহ অনেকে বলেন, ঠিকাদারের লোকজন রাতের আঁধারে নষ্ট ও নিম্নমানের পিচ তরল করে ভালো পিচের ড্রামে ভর্তি করে। রাস্তায় ব্যবহৃত পাথরগুলোর নির্দিষ্ট কোনো সাইজ নেই। উচ্চতাপে ময়লা, মাটি, বালু মিশিয়ে পাথর ও পিচ কম দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করছে, যা বেশি দিন স্থায়ী হবে না। তাঁরা আরও দাবি করেন, ওই ঠিকাদার এত নিম্নমানের কাজে করছে যে, ১৫ দিন আগে দেওয়া কার্পেটিং হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে।

অভিযোগের ব্যাপারে সহকারী ঠিকাদার আলমগীর হোসেন আলম বলেন, ‘ভুল হয়েছে। যেভাবে কাজ করা যায় তার একটা ব্যবস্থা করেন, আপনাদের সঙ্গে আলাদা দেখা করে নেব।’ অন্যদিকে কাজের তদারকিতে থাকা উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর সংযোগ পাওয়া যায়নি।

দেবহাটা উপজেলার ইউএনও বলেন, ‘মৌখিক অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বেশ কিছু সমস্যা লক্ষ করা গেছে। যেহেতু এটি অত্যন্ত জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বিশেষ করে এই উপজেলার অন্যতম বিনোদনকেন্দ্রে যাওয়ার একমাত্র কার্পেটিংয়ের রাস্তা—তাই কার্যপত্রের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করার জন্য প্রকৌশলী ও ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো রকম অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...