Ajker Patrika

বিশ্বের সেরা নতুন ভবনের তালিকায় শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
বিশ্বের সেরা নতুন ভবনের তালিকায় শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল

বিশ্বের সেরা নতুন ভবনের তালিকায় জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশের ভাঙন কবলিত দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলবর্তী এলাকায় নির্মিত ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল। গতকাল মঙ্গলবার ‘রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস’ (রিবা) -এর পক্ষ থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপজেলার সোয়ালিয়া গ্রামে নির্মিত ওই প্রতিষ্ঠানকে ২০২১ সালের সেরা নতুন ভবনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।   

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুর্যোগ প্রবণ এলাকা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সদর থেকে ২ কিলোমিটার দূরবর্তী সোয়ালিয়া গ্রামে ২০১৪ সালে ওই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রায় আড়াই একর জমির ওপর গড়ে তোলা ২০টি ভবনের সমন্বয়ে নির্মিত ফ্রেন্ডশিপ হসপিটালকে মূলত তার মানবিক সেবা দান কার্যক্রম ছাড়াও অনন্য নির্মাণশৈলীর জন্য বিশেষ এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়।

স্থাপনাটি নির্মাণে স্থানীয়ভাবে নির্মিত ইট ছাড়াও স্থানীয় শ্রমিক, নির্মাণশৈলী ব্যবহার, সীমানা প্রাচীরের পরিবর্তে ছোট জলাধার দিয়ে সমগ্র স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতির বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে নির্মিত ৮০ শয্যার এ হসপিটালে প্রাকৃতিক আলো বাতাসের পর্যাপ্ত সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শ্যামনগর ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল দেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি প্রায় প্রতি মাসে বিদেশি চিকিৎসকের দিয়ে রোগীর সেবা দানেরও ব্যবস্থা করেছে। 

জানা যায়, স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী ৮০ শয্যার এ হাসপাতালের নকশা তৈরি করেছেন। নকশা প্রস্তুতকালে বাতাসের গতিপথ বিবেচনায় হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো অবস্থান নির্ধারণ করেন তিনি।  

শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশিপ হসপিটালসরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, হাসপাতালের ওয়ার্ডসমূহের সম্মুখভাগে রাখা হয়েছে উন্মুক্ত বিস্তর খালি জায়গা। তীব্র লবণাক্ততার বিষয় বিবেচনায় পলেস্তারা ছাড়া দেয়াল ও ছাদে শুধুমাত্র ইটের গাঁথুনি আর ঢালাইয়ের উপস্থিতি গোটা সৃষ্টিকে পরিপূর্ণতা এনে দিয়েছে। সমগ্র স্থাপনাজুড়ে বিভিন্ন পয়েন্টে সামঞ্জস্যমত নানান প্রজাতির গাছ লাগিয়ে মূল নকশার আক্ষরিক বাস্তবায়ন ঘটানো হয়েছে। তিন পাশে ঘিরে থাকা লবণ পানির উপস্থিতির জন্য স্থাপনার মধ্যে লবণাক্ত পানি শোধনে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

স্থাপনার চতুর্পাশ ঘুরে দেখা যায় মনোরম স্থাপত্য শৈলীর মাধ্যমে হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরের ক্ষেত্রে দুই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জায়গা স্বল্পতার কথা বিবেচনায় নিয়ে সীমানা প্রাচীরের পরিবর্তে বিভিন্ন অংশে ১০ ফুট প্রশস্ত জলাধারের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে এখানে। হাসপাতালটিতে আউটডোর ও ইনডোর চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি সুপরিসর করিডরসহ অডিটোরিয়াম, কনভেনশন সেন্টার, ক্যানটিন আর প্রার্থনা কক্ষেরও উপস্থিতি বিদ্যমান। 

সমগ্র স্থাপনার একাধিক অংশে ইট ও কাচের সমন্বয়ে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থাসহ প্রশস্ত দরজা-জানালার উপস্থিতি- গোটা স্থাপত্যে দৃষ্টি কেড়েছে। বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে সুপরিসর করিডর আর বিস্তর প্রাকৃতিক আলো বাতাসের উপস্থিতি স্থাপত্য শৈলীকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। ভবনসমূহের তলদেশ দিয়ে আধুনিক পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার মাধ্যমে অতিরিক্ত পানি পাশের কল্যাণপুর খালের মাধ্যমে মাদার নদীতে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে। 

শ্যামনগর ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এহসানুল হক রোকন জানান, , ২০১৮ সালে কাজ সম্পন্নের পর একই বছরে সেখানে উপকূলীয় জনপদের সেবা প্রত্যাশীদের চিকিৎসা সেবা শুরু হয়। মূল স্থাপনার মধ্যে ৫টি ভবন আবাসিক ও ১৫টি স্বাস্থ্য সেবার কাজে ব্যবহৃত হয়।

তত্ত্বাবধায়ক শাহিনুর রহমান বলেন ৬ জন চিকিৎসক ও ১২ জন সেবিকাসহ সাহায্যকারী জনবলের মাধ্যমে সেখানে ২৪ ঘণ্টা জরুরি বিভাগে সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। স্বল্প খরচে সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষারও ব্যবস্থা রয়েছে। 

শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশিপ হসপিটালস্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অন্যতম শ্যামনগর। সেখানে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা রেখে একটি হাসপাতালের নকশা তৈরির সময় স্বল্প বাজেটের কথা বিবেচনায় নিতে বলা হয়। পারিপার্শ্বিক  অবস্থার পাশাপাশি সর্বোচ্চ আধুনিকতার ছোঁয়া এবং প্রাণ ও প্রকৃতির সঙ্গে জীব বৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখে এ স্থাপনার নকশা তৈরি করা হয়।

হাসপাতলটির সহকারী ব্যবস্থাপক অসীম  ত্রিস্টোফার রোজারিও বলেন, একাধিক অপারেশন থিয়েটার, নিউনেটাল কেয়ার ইউনিটে ইনকিউবেটর সুবিধাসহ সব ধরনের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা সেখানে রয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত ১৬ নভেম্বর জার্মানের জেমস-সায়মন গ্যালারি ও ডেনমার্কের কোপেনহেগেনের লিলে ল্যাঞ্জেব্রো সেতুর সঙ্গে সেরা তিন স্থাপত্যের তালিকায় জায়গা করে নেয় সুন্দরবনঘেঁষা উপকূল পাড়ের এ স্থাপনা। এর আগে বিশ্বের মোট ১১ দেশের ১৬টি ব্যতিক্রমী নকশার স্থাপত্যের মধ্য থেকে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার জন্য মনোনীত হয়েছিল পরিবর্তিত জয়বায়ু পরিস্থিতির বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে গড়ে তোলা শ্যামনগর ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে পিস্তল ঠেকিয়ে ডাকাতি, ৪৮ লাখ টাকার মালামাল লুট

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এক দিনের ব্যবধানে আবারও সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের সাতকাহনিয়া গ্রামে বৃদ্ধ দম্পতির বাসায় প্রবেশ করে ডাকাতেরা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৪৮ লাখ টাকার মালামাল লুট করে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আলম মিয়া বলেন, ‘আমরা দুই ভাই পরিবার নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করি। বিকেলে ঢাকায় চলে আসার পর রাতে আমার বাবা-মা বাসায় ছিলেন। ডাকাতেরা জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করে এবং অস্ত্রের মুখে বাবা-মাকে জিম্মি করে নগদ তিন লাখ টাকা ও ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে।’

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ব্যবসায়ী আলম মিয়ার বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে সাতজন ডাকাত প্রবেশ করে। পরে আরও ১৪-১৫ জন যোগ হয়। তারা কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে বিভিন্ন রুমে অবস্থান নেয় এবং আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আলমারি ও শোকেসের তালা ভেঙে সব লুট করে নেয়।’

উল্লেখ্য, এর আগে গত রোববার রাতে উপজেলার বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ ৫৪ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবসরের এক যুগ পর কাস্টমস কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
অবসরের এক যুগ পর কাস্টমস কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা

চট্টগ্রামে অবসরে যাওয়ার প্রায় এক যুগ পর কাস্টমসের সাবেক এক সহকারী কমিশনার ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) চট্টগ্রামের দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলা দুটি দায়ের করা হয়। দুটি মামলারই বাদী হলেন কার্যালয়টির সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম।

দুর্নীতিতে অভিযুক্তরা হলেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনার আহসান হাবিব ও তাঁর স্ত্রী আসমা সুলতানা।

আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৪১১ টাকার সম্পদ অর্জন এবং তা ভোগদখলের অভিযোগ আনে দুদক। অন্যদিকে আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৬৬ লাখ ২৪ হাজার ২৫০ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বাসিন্দা আহসান হাবিব ১৯৮০ সালে কাস্টমসের একজন পরিদর্শক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০১২ সালে তিনি সহকারী কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৪ সালে তিনি ঢাকা দক্ষিণের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার হিসেবে অবসরে যান। তিনি চট্টগ্রামেও কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামের দুদক কার্যালয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বিবরণী দাখিল করা হয়।

দুদক চট্টগ্রামের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, একটি মামলায় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনারকে আসামি করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক আইনের একই ধারায় আরেকটি মামলা হয়েছে সাবেক ওই কর্মকর্তার স্ত্রী আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে। ওই মামলায় সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অর্থাৎ অভিযুক্ত কাস্টমস কর্মকর্তা চাকরিরত অবস্থায় অসাধু উপায়ে অর্জিত টাকায় তাঁর স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জন ও তা ভোগদখলে রাখতে সহযোগিতা করেছেন।

সম্পদ বিবরণীতে আহসান হাবিব নিজ নামে মাত্র ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬১২ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৫০ হাজার টাকা অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। আর আসমা সুলতানা তাঁর নিজের নামে ২০ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পদ থাকার কথা উল্লেখ করলেও কোনো অস্থাবর সম্পদ নেই বলে সম্পদ বিবরণীতে ঘোষণা দেন। তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী উল্লেখ করলেও দুদকের অনুসন্ধানে তাঁর ব্যবসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মা-বাবার বিরোধ, ১০ বছরের শিশুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
নিবির মণ্ডল। ছবি: সংগৃহীত
নিবির মণ্ডল। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর সদর উপজেলার নিবির মণ্ডলের বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। এ বয়সে খেলাধুলা, মা-বাবার আদরে বড় হওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু গত রোববার তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। শিশুটির স্বজনদের দাবি, মা-বাবার বিরোধের জেরে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে নিবির।

মৃত নিবির উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মোস্তফাডাঙ্গি গ্রামের মুরাদ মণ্ডলের (৪০) ছেলে। সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গত রোববার বসতঘরের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ।

শিশুটির চাচা আজম মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে জানান, আট বছর আগে প্রবাসে পাড়ি জমান তার বাবা মুরাদ মণ্ডল। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে মালদ্বীপ থেকে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে দেখেন, তার টাকাপয়সা কিছুই নেই। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহ বাধে মুরাদের। পরে নিবিরসহ তিন সন্তানকে নিয়ে পাশের আদমপুর এলাকায় বাপের বাড়ি চলে যান তাঁর স্ত্রী।

আজম মণ্ডল জানান, দুই মাস আগে নিবির আবার তার বাবার কাছে চলে আসে। এরপর থেকে সে বাড়িতে বাবার সঙ্গেই থাকত। গত রোববার দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে এসে নিবির দেখে, ঘরে খাবার নেই, ওর বাবাও মাঠে ছিল। পরে আরেক চাচাতো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে নানাবাড়িতে যায়। সেই ভাতিজার বরাতে আজম মণ্ডল জানান, শিশুটি তার নানাবাড়িতে গিয়ে মায়ের কাছে খাবার চেয়েছিল। সেখানে তার মা তাকে বকাবকি করে। পরে বিকেলে ঘরে ফিরে নিবিরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তার বাবা। ছেলের মৃত্যুতে অচেতন হয়ে পড়া বাবা মুরাদ মণ্ডলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান আজম মণ্ডল।

শিশুটির পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার দুপুরে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। বিকেলে দাফনের জন্য বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ছনেরটেক গোরস্তানে কবর খুঁড়তে যান প্রতিবেশীরা। এ কবরস্থানেই মোস্তফাডাঙ্গির মৃত বাসিন্দাদের দাফন করা হয়ে থাকে। তবে সেখানে গেলে কবর খুঁড়তে বাধা দেন ওই ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।

প্রতিবেশী বাবুল মণ্ডল বলেন, ‘আমরা যখন খুঁড়তে যাই, তখন রফিক এসে বলে, এই কবরস্থানে গলায় দড়ি দেওয়া কোনো লাশ দাফন করা যাবে না, যার যার বাড়িতে গিয়ে কবর দাও। এসব বলে আমাদের অপমান করে পাঠায় দেয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির নেতা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই কবরস্থানে আজ পর্যন্ত কোনো গলায় দড়ি দেওয়া লাশ কবর দেওয়া হয়নি। এজন্য তাঁদের আমি বলছিলাম, কবরস্থানের সভাপতির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাচ্ছি, কবর দিতে নিষেধ করি নাই। কিন্তু উনারা রাগ করে চলে গিয়ে অন্য জায়গা কবর দিছে।’

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, ‘শিশুটির মা-বাবার বিভাজনের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। মা-বাবা একসঙ্গে থাকলে এমনটি নাও হতে পারত। তবে লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার বিষয়টি আমাদের কাছে কেউ জানায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

নীলফামারী প্রতিনিধি
চীনা হাসপাতালের নকশা। ছবি: সংগৃহীত
চীনা হাসপাতালের নকশা। ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে নীলফামারীতেই হচ্ছে চীন সরকারের উপহারের ১ হাজার শয্যার হাসপাতাল। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা নোটিশে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব ফাতিমা তুজ জোহরা ঠাকুর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ ‘অতীব জরুরি’ হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নোটিশের সূত্রমতে, নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের দারোয়ানী টেক্সটাইল মাঠে সাড়ে ২৫ একর জায়গার ওপর নির্মিত হবে চীনা হাসপাতাল। হাসপাতাল স্থাপনে ইতিমধ্যে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও বিভিন্ন স্থাপনার ব্যয় প্রাক্কলন তৈরি করতে বলা হয়েছে।

চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপনে নীলফামারী জেলাকে নির্বাচিত করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল ও জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার। তাঁদের মতে, হাসপাতালটির ফলে এলাকার স্বাস্থ্যসেবার মান যেমন বাড়বে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানে দাঁড়াবে এই জেলা। উন্নত চিকিৎসা নিতে এখন আর দেশের বাইরে যেতে হবে না।

নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সোহেল পারভেজ বলেন, ‘চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপন নিয়ে সরকারের সিলেকশন যথাযথ। দারোয়ানী মাঠ সব দিক থেকে এগিয়ে অন্যান্য জায়গাগুলোর চেয়ে। সব সুযোগ-সুবিধা পাবে হাসপাতালটি স্থাপনের ক্ষেত্রে। ব্যবসায়িকভাবে আরও সমৃদ্ধ হলো আমাদের জেলা।’

এ ব্যাপারে নীলফামারীর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিউজ্জামান বলেন, ‘চিঠিটি আমরা পেয়েছি। ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন বিষয়ে আমরা ডিজিটাল সার্ভে শুরু করেছি। গণপূর্ত বিভাগ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।’

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান জানান, দারোয়ানী টেক্সটাইল এলাকায় ৬০ একরের বেশি সরকারি জায়গা রয়েছে। চীন সরকারের এক হাজার শয্যার হাসপাতাল স্থাপনে ২৫ একর জায়গা প্রয়োজন। ২৫ একর জায়গা হাসপাতালের জন্য দিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে হাসপাতাল স্থাপনে ব্যয় এবং ডিজাইনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, নীলফামারীতে হচ্ছে হাসপাতালটি।

প্রসঙ্গত, নিজ এলাকায় এই হাসপাতাল চেয়ে আন্দোলন হয়েছে রংপুরসহ কয়েকটি জেলায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত