Ajker Patrika

‘প্রেমের অপরাধে’ কিশোরকে ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে সুই ফুটিয়ে নির্যাতন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কিশোরকে ঘরে আটকে রেখে বর্বর ও পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কিশোরী বান্ধবীর পরিবারের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় ভুক্তভোগী কিশোরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে নির্যাতনের শিকার কিশোরের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এজাহার দিলেও তিন দিনেও মামলা নথিভুক্ত করেনি পুলিশ।

নির্যাতনের শিকার কিশোর (১৭) উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের শাখাহাতি ঢুষমারা এলাকার বাসিন্দা। তার সঙ্গে একই ইউনিয়নের এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে জানা গেছে।

কিশোরের পরিবারের অভিযোগ, ‘প্রেমের অপরাধে’ কিশোরীর পরিবারের পক্ষের ১২-১৩ জন সদস্য ভুক্তভোগীকে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন করে। এ নিয়ে ১৫ জুন ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনকে আসামি করে চিলমারী মডেল থানায় এজাহার দেন। তবে নানা ‘অজুহাতে’ মামলা নথিভুক্ত করেনি পুলিশ।

তাঁরা জানান, ৯ জুন সন্ধ্যায় ওই কিশোরী মোবাইল ফোনে কল দেয়। কিশোরীর বাড়ির সামনে দেখা শেষে তারা দুজনে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যায়। কিশোরীর পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে পরদিন তাদের খুঁজে বের করে। এরপর কিশোরকে স্থানীয় একটি বাড়ির ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে কিশোরের বাবা বলেন, ‘কিশোরীর চাচার নেতৃত্বে আমার ছেলের হাত-পা বেঁধে মুখে গামছা ঢুকিয়ে ঘরের ভেতর খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। তার শরীরে চেতনানাশক ইনজেকশন দেওয়া হয়। অভিযুক্তরা তার পিঠে, বুকে, হাতে ও পায়ে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে। এমনকি তার পুরুষাঙ্গে ও হাত-পায়ের নখে সুই ঢুকিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।’

কিশোরের বাবা আরও বলেন, ‘ওই কিশোরীর চাচা সাবেক সেনা সদস্য। এ জন্য সে জানে কীভাবে নির্যাতন করা লাগে। ছেলের অবস্থা খুব খারাপ। ছেলের লিঙ্গে সুই ফোঁড়াইছে। তাকে আলাদা নল লাগিয়ে প্রস্রাব করানো হচ্ছে। এলাকাবাসীর কাছে চাঁদা তুলে চিকিৎসা করাচ্ছি।’

মামলা না হওয়ায় আক্ষেপ করে ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, ‘১৫ জুন থানায় লিখিত অভিযোগ দেই। ওসি সাহেব বলছেন, রংপুর মেডিকেলে ভর্তির সার্টিফিকেট এবং ছেলের ভিডিও দিতে হবে। প্রিন্ট করে জমা দিতে হবে। এভাবে কাগজ দেওয়ার পর আমার স্বাক্ষর নিয়েছে। এখন তারা (পুলিশ) বলতেছে, থানায় না দিয়ে কোর্টে দেন, ভালো হবে। এভাবে বলে মামলা এখনো রেকর্ড করেনি।’

কিশোরকে নির্যাতনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে কিশোরীর চাচা বলেন, ‘স্থানীয়রা আমাদের নিয়ে গেছে। উনি (কিশোর) যে একটা মেয়েকে নিয়ে পালাই গেছে, ধরে নিয়ে আসা হয়, বা রাখা হয়। এটা স্থানীয়রা বৈঠক দিয়ে তাদের শাসন করে পাঠাই দেয়, তারা মারধর করে।’

কারা মারধর করছে এই প্রশ্নে কিশোরীর চাচা বলেন, ‘ছেলের গার্জিয়ানরা মারধর করছে। মারধরের ঘটনায় যদি মেডিকেল টেস্টে প্রমাণিত হয়, আর এটার যদি সঠিক অভিযুক্ত আমি হই এ জন্য আইনগতভাবে যেটা হবে, সেটা মানতে আমি রাজি।’

চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘তিন দিন আগে অভিযোগ দিয়েছিল। পরে আসামিদের নাম সংশোধনের জন্য বাদী এজাহার ধরে রাখেন। সংশোধন করে গতকাল (বুধবার) জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা এসপি স্যারের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষায় আছি। স্যার অনুমোদন দিলে মামলা নথিভুক্ত করা হবে।’ এসপির অনুমোদন ছাড়া মামলা নথিভুক্ত করা সম্ভব নয় বলে দাবি করেন ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রে আছেন রুশ বিশেষজ্ঞরা, ইসরায়েলকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

ইরানকে ঘিরে ফেলছে একের পর এক মার্কিন রণতরি ও যুদ্ধবিমান

পর্যটনে সেরা ১০ মুসলিমবান্ধব অমুসলিম দেশ

ছেলের কাটা পা হাতে নিয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা

পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে কেন যুক্তরাষ্ট্রে ডেকেছিলেন ট্রাম্প, ইরান-ইসরায়েল নিয়ে কী আলোচনা হলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত