Ajker Patrika

পানি কমলেও দুর্ভোগে তিস্তাপারের মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ৪৪
কাউনিয়ায় তিস্তার তীরবর্তী পানিবন্দী পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাউনিয়ায় তিস্তার তীরবর্তী পানিবন্দী পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারীর তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সবশেষ আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রংপুরের কাউনিয়ায় বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল, যা বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

অপর দিকে একই সময়ে নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে ৫১ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে; যা গতকাল রোববার রাতে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

রংপুর

রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে কমছে। নদীর পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা তিস্তার তীরবর্তী উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টায় কাউনিয়া উপজেলার রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে ২৯ দশমিক ৪৪ সেন্টিমিটার পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানে বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।

একই সময়ে নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি কমে ভাটির দিকে নেমে যাওয়া কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।

কাউনিয়া উপজেলা টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভোরের পর থেকে পানি বাড়ছে নদীতে। ইতিমধ্যে তাঁর ইউনিয়নের হরিচরণশর্মা, চরগনাই, হয়বৎখাঁ গ্রামের নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়ির বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। ক্রমে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। অনেকে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। দুপুরের দিকে তীরবর্তী তিনটি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

চরগনাই গ্রামের আব্দুল বাতেন বলেন, ‘নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। অনেকের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, ডুবে গেছে আমন ধানের খেত। পানিবন্দী হওয়ার আতঙ্কে রয়েছি।’ তিনিসহ অনেকেই উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

চর হয়বৎখাঁ গ্রামের সোবহান আলী বলেন, ‘গভীর রাত থেকে পানি যে হারে বাড়তেছে, তাতে পানি বাড়ি ঘরে ঢুকে গেলে গবাদিপশু আর বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বিপদে পড়ে যাব। তাই সকালের দিকে গবাদিপশু আর বাচ্চাদের উঁচু স্থানে আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে দিয়েছি।’

জানতে চাইলে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মহিদুল হক বলেন, ‘আজ তিস্তা নদীর পানি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। আমরা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে নদীর তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তালিকা করে প্লাবিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

লালমনিরহাট

কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে টানা ১২ ঘণ্টা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে তিস্তাপাড়ের লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়েছে পড়ে। যার মুক্তি মেলে টানা ২৪ ঘণ্টা পরে। পানি কমে গেলেও বেড়ে যায় দুর্ভোগ।

বন্যার পানির চাপে বেশ কয়েকটি সড়ক ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। হাতীবান্ধার দোয়ানী গড্ডিমারী ও পাটগ্রামের দহগ্রাম সড়ক ভেঙে যায়। স্থানীয় জনতা ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন বালুর বস্তা ফেলে সড়কগুলো রক্ষার প্রাণপণ চেষ্টা করেন।

গেল ২৪ ঘণ্টায় পানিবন্দী পরিবারগুলো সীমাহীন কষ্টে পড়ে। নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের লাখো মানুষের। বিশেষ করে, শিশু, বৃদ্ধ আর প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বড্ড বিপাকে পড়েন বন্যাকবলিতরা। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। গবাদিপশু-পাখি নিয়ে বেশ বিপদে পড়েছেন খামারিরা। কেউ কেউ এসব পশুকে পাশে সড়কে বা উঁচু এলাকায় তাঁবুর নিচে রেখেছেন। উঁচু স্থানে মাচা বানিয়ে কেউ কেউ সারা দিনের রান্না একবারে সেরে নিয়েছেন। টিউবয়েল ও টয়লেট ডুবে যাওয়ায় শৌচকাজে বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছেন এসব এলাকার নারীরা। ডুবে গেছে মৎস্য খামার, মধ্যবয়সী আমন ধানসহ নানান জাতের সবজির খেত।

উজানের ঢল কমে যাওয়ায় আজ পানি বিপৎসীমার নিচে নামলে মুক্তি পেতে থাকে পানিবন্দী পরিবারগুলো। বন্যাদুর্গত এলাকার প্রতিটি বাড়িঘরে ডুকে পড়েছে আবর্জনা, কচরিপানা আর পোকামাকড়। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেক পরিবারের আসবাবপত্র ভিজে গেছে বন্যার পানিতে।

গৃহবধূ সাহানা বেগম বলেন, ‘ঘরের পানি নামতে শুরু করেছে। কিন্তু মেরামত না করে ঘরের ভেতরে থাকা দুষ্কর। আবর্জনা, কচুরিপানা ও কাদায় একাকার। পোকামাকড়ের আতঙ্কে রয়েছি। আজ পানি না থাকলেও নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে। সন্তানদের নিয়ে গতকাল রাত বসে থেকে কাটিয়েছি। আমাদের কষ্টের শেষ নেই। আমরা তিস্তা নদীর স্থায়ী বাঁধ চাই।’

কৃষক খলিল মিয়া বলেন, ‘মধ্যবয়সী আমন ধানের খেতে টানা প্রায় ৩০ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে ডুবে আছে। জানি না খেতের কী হলো। আবাদ নষ্ট হলে তো না খেয়ে মরতে হবে।’

মৎস্যচাষি ডলার বলেন, ‘পুকুরের চারদিকে নেট জাল দিয়েও মাছ রক্ষা করতে পারিনি। বন্যার স্রোতে সব ভেসে গেছে। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. শাইখুল আরেফিন বলেন, মধ্যবয়সী আমন খেতে দুই-তিন দিন ডুবে থাকলেও তেমন ক্ষতি হবে না। অস্থায়ী বন্যা আমনে ক্ষতি নয়, বরং উপকার। তবে পানি দ্রুত নেমে না গেলে ক্ষতি হতে পারে। পানি কমে গেছে, এখন আমনে তেমন ক্ষতি হবে না। পানি কমে গেলে খেতে জমে থাকা কচুরিপানাসহ আবর্জনা সরিয়ে দিতে কৃষকদের প্রতি পরামর্শ দেন তিনি।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, রাতে বিপৎসীমা অতিক্রম করায় বন্যার সৃষ্টি হলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্য কমে গেছে। ফলে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘বন্যাকবলিত ব্যক্তিদের জন্য জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ঢেউটিন মজুত রয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করে তা বিতরণ করব।’

পাটগ্রামের নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর সেতু ভেঙে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাটগ্রামের নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর সেতু ভেঙে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাটগ্রাম

উজানে ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের অন্তত ১০টি এলাকা প্লাবিত হয়। গতকাল রোববার বেলা ২টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিস্তার পানি বৃদ্ধি পায় এবং তিস্তা নদীরক্ষা বাঁধ না থাকায় পানি হু হু করে দহগ্রামে ঢুকে বন্যা দেখা দেয়। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।

এ সময় পানির তোড়ে আঞ্চলিক পাকা রাস্তা প্রায় ৭ কিলোমিটার, একটি সেতু ও দুটি কালভার্ট ভেঙে যায়। প্রায় ১০ হেক্টর আমন ধান, বাদামসহ অন্যান্য সবজি খেত পানিতে তলিয়ে যায় এবং চাষাবাদের জমি ভেঙে আবাদ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

আজ বিকেলে দহগ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তিস্তার পানিতে এই ইউনিয়নের ১, ৪, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিস্তা চরাঞ্চলসহ কলোনিপাড়া, মুন্সিপাড়া, ক্লিনিকপাড়া, কাদেরের চর, মহিমপাড়া, চরপাড়া, কাতিপাড়া, সৈয়দপাড়া, গুচ্ছগ্রাম, বড়বাড়ি, নতুনহাট, হাঁড়িপাড়া এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। পানির তীব্র স্রোতে কলোনিপাড়া, মহিমপাড়া ও স্বাধীন বাংলা চত্বর এলাকার পাকা সড়ক ভেঙে যায়।

দহগ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৃষ্টিয়ারপাড় এলাকার সাকোয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুর দুই দিকের সংযোগ সড়ক, কলোনিপাড়ার দুটি কালভার্ট এবং ৪ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্গেরবাড়ী হতে নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতু ভেঙে গেছে। সড়ক ও সেতু ভেঙে একাকার হওয়ায় এসব এলাকার প্রায় ১০ হাজার সাধারণ মানুষের চলাফেরায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব এলাকার পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

দহগ্রাম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কলোনিপাড়া এলাকার আমিনুল ইসলাম (৫৫) বলেন, ‘প্রতিবছর ভারত পানি ছেড়ে দেয়, এতে আমাদের এই রাস্তা ভেঙে যায়। জমি-জায়গা, রাস্তাঘাট নষ্ট হয়। তিস্তা মহাপরিকল্পনা চালু করলে আমাদের উপকার হবে, না হলে আমাদের ক্ষতি হতেই থাকবে।’

এ বিষয়ে ইউএনও উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সেতু দেখেছি। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সংস্কার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, জনদুর্ভোগ কমে যাবে।’

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারী

নীলফামারীতে তিস্তার রুদ্রমূর্তি ৯ ঘণ্টা পর শান্ত হয়েছে। আজ বেলা ৩টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ ও সন্ধ্যা ৬টায় ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এর আগে গতকাল রাত ১১টায় ওই পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রাত ১২টার পর কমতে শুরু করলে আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে নামে।

তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম ও চরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে এসব গ্রামের অন্তত ১০ সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। আজ পানি কমায় স্বস্তি ফেরে এসব মানুষের মধ্যে।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘ওই রাতে এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আজ পানি নেমে গেলেও ইউনিয়নের ১ হাজার ৫০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া চরের খেতে থাকা আধা পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইউনিয়নের খোকার চরে তিন স্থানে এবং যৌথ বাঁধের কাছে তিন স্থানে সড়ক ভেঙে গেছে।’

টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে প্রবল বেগে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। এতে ইউনিয়নের সাড়ে আট শ পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। সকালে পানি নেমে গেলেও পরিবারগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে। পানির সঙ্গে আসা বালু ও পলি পড়ে এলাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

একই উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর গ্রামের স্কুলশিক্ষক বিপুল চন্দ্র রায় বলেন, রাতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের মানুষের। এ সময় তলিয়ে যায় এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকার আমন খেত। আজ পানি কমায় এসব খেত জেগে উঠলেও বানের পানিতে ভেসে আসা বালি ও পলি পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জানতে চাইলে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, তিস্তার ক্ষণিকের ওই বন্যায় উপজেলার ৬০ হেক্টর আমন খেত পানিতে নিমজ্জিত হয়। দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় কোনো ক্ষতি হয়নি।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গতকাল রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর পর থেকে পানি কমতে শুরু করলে আজ সকাল ৬টায় ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৯টায় আরও কমে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ১০ সেন্টিমিটার, বেলা ৩টায় ২০ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ২৫ সেন্টিমিটার নিচে নামে।

তিস্তায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলা কালিগঞ্জ নামের স্থানে জিরো পয়েন্টে নদীর ডান তীর বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। সেখানে বাঁশের পাইলিং ও বালির বস্তা ফেলে রাতেই বাঁধটি রক্ষা করতে সক্ষম হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কমতে শুরু করে। আজ সকাল থেকে পানি কমে সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবকটি জলকপাট (৪৪) খুলে রাখা হয়েছে।

অমিতাভ চৌধুরী আরও বলেন, তিস্তার জিরো পয়েন্টের কাছে কালিগঞ্জ নামের স্থানে তিস্তার ডান তীর প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিলে বাঁশের পাইলিং ও বালুর বস্তা দিয়ে সেটি ঠেকানো গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ধানুড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়: চার বছরে ১০৬ শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ

গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নাটোরের গুরুদাসপুরে ধানুড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে বাল্যবিবাহের কারণে ছাত্রী ঝরে পড়ার প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। বিদ্যালয়ের তথ্যমতে, গত চার বছরে এই বিদ্যালয়ের ১০৬ ছাত্রী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। সর্বশেষ এসএসসি পরীক্ষায়ও অনুপস্থিত ২৬ শিক্ষার্থীর বেশির ভাগের ক্ষেত্রে বাল্যবিবাহের তথ্য পাওয়া গেছে। এতে শিক্ষার্থী-সংকটে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

চাপিলা ইউনিয়নের এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর বলেন, গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ। অভাব-অজ্ঞতার কারণে অভিভাবকেরা কম বয়সী মেয়েদের গোপনে বিয়ে দিচ্ছেন। নানা উদ্যোগ নিয়েও বাল্যবিবাহ রোধ সম্ভব হচ্ছে না।

বিদ্যালয় সূত্র জানায়, শিক্ষার্থী ধরে রাখতে ২০১৭ সাল থেকে নিজস্ব পরিবহন সেবা চালু করা হয়। এর আগে ২০০০ সালে চালু করা হয় ‘মিড ডে মিল’ কার্যক্রম। তবে আর্থিক সংকটের কারণে গত জানুয়ারি থেকে দুপুরের খাবার কার্যক্রমটি বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় ২০৩ ছাত্রী। এর মধ্যে অষ্টম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের পরই বাল্যবিবাহের কারণে ৮০ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষার ১৬ জন পরীক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়। চলতি বছর ২৫ জন ছাত্রী ফরম পূরণ করলেও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১০ জন; তারাও বাল্যবিবাহের শিকার বলে নিশ্চিত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

প্রধান শিক্ষক জানান, চাপিলা ইউনিয়নের ধানুড়া ছাড়াও শ্যামপুর, চন্দ্রপুর, পুঠিমারী ও ওয়াপদা বাজার এলাকার শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়টিতে পড়ে। শিক্ষার্থীর উপস্থিতি বাড়াতে সপ্তাহে ১ কেজি চাল ও ২০ টাকা করে নিয়ে ‘মিড ডে মিল’ চালানো হতো। বাকি খরচ শিক্ষকেরা বহন করতেন।

মো. আলমগীর বলেন, ‘অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতা সভা করেছি, এলাকাভিত্তিক শিক্ষকও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে কিংবা দূরের আত্মীয়দের বাসায় নিয়ে গিয়ে মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকেরা। এতে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থী-সংকটে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।’

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিড ডে মিল চালু রাখার বিষয়টিও বিবেচনায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগারগাঁওয়ে সরকারি কোয়ার্টারে গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৭ জন দগ্ধ

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সরকারি কোয়ার্টারে গ্যাসলাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের সাতজন দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আগারগাঁও পাকা মার্কেট সড়ক এলাকার সরকারি কোয়ার্টারে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মো. আব্দুল জলিল মিয়া (৫০), তাঁর স্ত্রী আরনেজা বেগম (৪০), ছেলে আসিফ (১৯), সাকিব (১৬), আসিফের স্ত্রী মনিরা (১৭) ও নাতনি ইভা (৬) ও ইশা (৬)।

এই ঘটনায় প্রতিবেশী ফিরোজুল আলম (৩৫) ২১ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন। তাঁকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসা দগ্ধ জলিল মিয়ার মেয়ের স্বামী মো. আরফান মিয়া জানান, রাতে টিনশেড বাসায় পাশাপাশি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন পরিবারটির সাত সদস্য। ভোরের দিকে তাঁর শাশুড়ি আরনেজা বেগম রান্না করতে যান। দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালাতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এতে সাতজনই পুড়ে যান। আরফান ও তাঁর স্ত্রী জনিভা আক্তার পাশের কক্ষে ছিলেন। তাঁর দুই মেয়ে ইভা ও ইশা নানার কক্ষে ছিল। আসিফের স্ত্রী মনিরা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

তিনি জানান, তাঁদের চিৎকারে প্রতিবেশীরাও ছুটে আসেন। দগ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে এই আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে দগ্ধ আসিফ জানান, আগারগাঁও সরকারি কোয়ার্টারের বাসায় তাঁরা ভাড়া থাকেন। দেড় মাস ধরে ঘরে গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছিলেন। বাড়িওয়ালাকে বারবার বললেও কোনো প্রতিকার পাননি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন হারুনুর রশীদ জানান, জলিলের ১২ শতাংশ, আরনেজার ১০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। অন্যদের হাত-পা দগ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর হাত-পা দগ্ধ হয়েছে। তাঁকে চিকিৎসা দিয়ে গাইনি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। জলিল ও আরনেজা বেগমকে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অবজারভেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৪
আহাজারি করছেন নিখোঁজ নিশাতের স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহাজারি করছেন নিখোঁজ নিশাতের স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বপ্নের দেশ ইতালির উদ্দেশে লিবিয়া থেকে রওনা দেওয়ার পর নিখোঁজ হন মাদারীপুর জেলার শিবচরের বেশ কয়েকজন যুবক। এক মাস নিখোঁজ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) খবর এসেছে, নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তাঁরা। এই যুবকদের একজন নিশাত মাতুব্বর।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে খবর এল নিশাতসহ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী ট্রলারটি ডুবে গেছে ভূমধ্যসাগরে। বেশির ভাগই সমুদ্রে ডুবে নিখোঁজ। এমন খবর বাড়িতে পৌঁছানোর পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাড়িতে। শুধু নিশাতই নন, মাদারীপুর জেলার শিবচরের বিভিন্ন এলাকার আরও তিন যুবকের খোঁজ নেই অনেক দিন ধরে। একই দালালের মাধ্যমে লিবিয়া থেকে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে রওনা হয়েছিলেন তাঁরা।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের সিঙ্গাপুর বাজার-সংলগ্ন নিখোঁজ নিশাতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে স্বজনদের আহাজারি। চলছে মায়ের বিলাপ। বাড়িভর্তি আশপাশের লোকজন, আত্মীয়স্বজন। ছয় মাসের সন্তান কোলে নিয়ে নির্বাক স্ত্রী মেহেনাজ। নিখোঁজ নিশাত বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাবিনা বেগম ও আব্দুল লতিফ মাতুব্বর দম্পতির একমাত্র সন্তান।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কুদ্দুস দালালের মাধ্যমে গত ৩ অক্টোবর ঘর ছাড়েন নিশাত। প্রথমে সৌদি আরব যান। সেখানে ওমরাহ করেন। পরে সৌদি থেকে কুয়েত হয়ে মিসর পৌঁছান নিশাত। মিসর থেকে লিবিয়া। পুরো প্রক্রিয়ায় ইতালি যেতে ২২ লাখ টাকার চুক্তি হয় কুদ্দুসের সঙ্গে। এই কুদ্দুসের মাধ্যমে শিবচরের বিভিন্ন এলাকার আরও অর্ধডজন যুবক ইতালি যাওয়ার জন্য লিবিয়া গিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন।

নিখোঁজ নিশাতের শ্বশুর মিজান মোল্লা বলেন, ‘২২ লাখ টাকায় লিবিয়া দিয়ে ইতালি পাঠাবে বলে কুদ্দুস টাকা নেয়। আমরা সব টাকা অগ্রিম দিয়েছি। প্রথমে সৌদি নেয়। সেখান থেকে কয়েক দেশ ঘুরিয়ে লিবিয়া নেয়। নভেম্বর মাসের ১০ তারিখে গেম (সাগর পাড়ি দিতে ট্রলারে ওঠে) দেয়। এরপর আর যোগাযোগ নাই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দালাল কুদ্দুস জানায়, ট্রলার ডুবে গেছে। বেশির ভাগের কোনো খোঁজ নাই!’

নিখোঁজ নিশাত মাতুব্বর। ছবি: সংগৃহীত
নিখোঁজ নিশাত মাতুব্বর। ছবি: সংগৃহীত

নিশাতের মা আহাজারি করতে করতে বলেন, ‘কুদ্দুস দালাল আরও ১০ লাখ টাকা চাইছে। আমরা বলেছি, আমার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করাই দেও। ওরা দেয়নি। এক মাস যোগাযোগ নাই। এখন জানাইছে, গেমের ট্রলার ডুবে গেছে সাগরে। বেশির ভাগই নিখোঁজ। জানি না আমার নিশাতের কী হইছে! আমার ছেলেরে ফেরত চাই!’

নিখোঁজ নিশাতের স্ত্রী মেহেনাজ বলেন, ‘লিবিয়া যাওয়ার পর নিশাতের মোবাইল নিয়ে যায় দালালের লোকজন। পরে অন্যের মোবাইল দিয়ে যোগাযোগ করত। ১০ নভেম্বর দুপুরে গেম দেয়। গেম দেওয়ার আগে আরেকজনের মোবাইল থেকে ভয়েস পাঠায়, ‘ঠিকমতো পৌঁছানোর পর জানাব’। এর পর থেকে আর যোগাযোগ নাই! বৃহস্পতিবার খবর আসে, গেমের ট্রলার ডুবে গেছে। বেশির ভাগই নিখোঁজ। আমরা জানি না, নিশাত বেঁচে আছে কি না। কোনো খোঁজ নাই।’

নিশাত ছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ফারহান খান রোমান (২৪), শেখপুরের মুন্সীকান্দি এলাকার মুন্না। এ ছাড়াও শিবচর পৌর এলাকার আরও দুই যুবক নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে লিবিয়ায় আটকে রেখে তিন যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিও গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে এই নিখোঁজের বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাটহাজারীতে বৈঠকে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
নিহত রবিউল ইসলাম ওরফে বাবু। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রবিউল ইসলাম ওরফে বাবু। ছবি: সংগৃহীত

হাটহাজারীতে বিয়ের সামাজিক বৈঠকে (পানসল্লা) ছুরিকাঘাতে মো. রবিউল ইসলাম ওরফে বাবু (৪০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৮টার দিকে উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়ন এলাকার মুছা সওদাগরের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত রবিউল ইসলাম মুছা সওদাগর বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক কোম্পানির বড় ছেলে। তিনি নাজিরহাট ঘাট স্টেশন এলাকার ব্যবসায়ী ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে মুছা সওদাগরের বাড়িতে একটি বিয়ের প্রস্তুতিমূলক সামাজিক বৈঠক (পানসল্লা) চলছিল। এ সময় বৈঠকে রবিউল ইসলামের সঙ্গে একই বাড়ির জসিমের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে জসিম ঘর থেকে চাকু এনে বাবুর গলায় আঘাত করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই রবিউল ইসলামের মৃত্যু হয়।

ছুরিকাঘাতের সময় উপস্থিত রবিউল ইসলাম বাবুর ভাই ইমরুল হোসেন বাচ্চু (৩৫) ও চাচাতো ভাই ইমন (২১) বাবুকে উদ্ধার করতে গেলে জসিম তাঁদেরকেও চাকু দিয়ে আঘাত করেন। আহত দুজনকে নাজিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জসিমকে আটক করে হাটহাজারী মডেল থানা-পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি এখন ঘটনাস্থলে আছি। স্থানীয় উত্তেজিত জনতার কারণে এখন পর্যন্ত জসিমকে হেফাজতে নেওয়া সম্ভব হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত