Ajker Patrika

গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ী ইউনিয়নে ব্যালটে গঠন বিএনপির কমিটি

 গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের জন্য ভোট দিচ্ছেন এক কর্মী। ছবি: আজকের পত্রিকা
গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের জন্য ভোট দিচ্ছেন এক কর্মী। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ ১৬ বছর পর রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ব্যালট পেপারে ভোটের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেতগাড়ী বাজারে ব্র্যাক শিশু নিকেতন স্কুলে তিনটি পদে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই ভোট শুধু ওই ইউনিয়নের বিএনপির নেতা–কর্মীরাই দিতে পেরেছেন।

এর আগে আজ সকালে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ইউনিয়ন আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। আজ বেলা ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন।

ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা জাতীয় নির্বাচনের মতো তফসিল ছিল এই কমিটি নির্বাচনে। তফসিল মোতাবেক মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই হয়েছে। প্রার্থীরা প্রচারের সময় পেয়েছেন তিন দিন। প্রতীক পেয়ে পোস্টার লাগিয়ে ও মাইকিং করে প্রচার এবং গণসংযোগ করেন প্রার্থীরা। নির্বাচনের জন্য ছিলেন প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার, ছিল ভোটের বাক্স। গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের জন্য ৪৫৯ জন ভোটার ছিলেন। এবারের নেতা নির্বাচনে সভাপতি পদে ৪ জন। সবাই ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী দুজন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ২ জন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

রাতে সাড়ে ৮টার দিকে ভোটগগনা শেষে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওয়াহেদুজ্জামান মাবু ফলাফল প্রকাশ করেন।

সভাপতি পদে বিজয়ী মাওলানা সহিদুল ইসলাম চেয়ার মার্কায় পেয়েছেন ৩৩২ ভোট ও নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী নজরুল ইসলাম আনারস মার্কায় পেয়েছেন ১১৪ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হাবিবুর রহমান মই মার্কায় পেয়েছেন ৩৬৩ ভোট ও নিকটতম শরিফুল ইসলাম ফুটবল মার্কায় ৮৫ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে বিজয়ী নুরুল আমিন নাদিম মাছ মার্কায় পেয়েছেন ২৯০ ভোট। নিকটতম আহসান হাবীব তালা মার্কায় পেয়েছেন ১৫৬ ভোট। মোট ভোট পড়েছে ৪৫২টি।

ভোটার আয়েশা আক্তার (৩৫) বলেন, আগে নেতারাই নেতা নির্বাচন করে দিতেন। কিন্তু এবার আমাদের নেতা আমরাই ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করব। এজন্য আমরা খুব খুশি।

গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের জন্য ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন নেতা-কর্মী। ছবি: আজকের পত্রিকা
গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের জন্য ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন নেতা-কর্মী। ছবি: আজকের পত্রিকা

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওয়াহেদুজ্জামান মাবু। এ সময় তিনি বলেন, অন্য নির্বাচনের মতো এখানেও সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। দেশ নায়ক তারেক রহমান বলেছেন স্বজনপ্রীতি করে কোনো কমিটি হবে না। তৃণমূলের নেতা-কর্মী যাদের ভোট দেবেন তারাই নেতা হবেন। বিএনপি যে একটি গণতান্ত্রিক দল এটাই তার বড় প্রমাণ। এভাবেই গণতন্ত্র চর্চা করতে হবে।

নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত গোলাম রব্বানী রঞ্জু।

ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধক ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আইয়ুব আলী, প্রধান বক্তা ছিলেন রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ার শাহাদাৎ, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আখেরুজ্জামান মিলন, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিমুদ্দিন লিজু, চাঁদ সরকার, মীর কাশেম মিঠু, নাজমুল ইসলাম হুদা, আতাউল মওলা, উপজেলা যুব দলের সদস্যসচিব শাহিন আলম সোনা, উপজেলা ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুজ্জামান প্রমুখসহ উপজেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট চেম্বারের নির্বাচন স্থগিত করল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

সিলেট প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন স্থগিত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আজ রোববার মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন-১ শাখার উপসচিব চৌধুরী সামিয়া ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে নির্বাচন স্থগিতের বিষয়টি জানানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রশাসক সাঈদা পারভীন জানান, কয়েকজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য এটি স্থগিত করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও পুনঃতফসিলের মাধ্যমে দুই বছর মেয়াদি (২০২৫-২৬) পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এর আগে আগামী ১ নভেম্বর সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে প্রার্থী বাছাইসহ নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বরিশালে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ১৩
বরিশাল নগরীতে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল নগরীতে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল নগরীতে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ৪ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রাকিবুল ইসলাম আজ রোববার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাসেল গাজী (৪৫), মো. রোকন খান (৩৩), রাজিব জমাদ্দার (৩৫) ও জাহিদ হাওলাদার (৩৬)।

ট্রাইব্যুনালের পেশকার অজিবর রহমান জানান, রায় ঘোষণার সময় রাসেল, রাজিব ও জাহিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি রোকন খান মামলার বিচার চলাকালে জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক রয়েছেন।

অজিবর রহমান আরও জানান, ধর্ষণের ঘটনার পর গ্রেপ্তার এই চার আসামি অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছিল। তবে পুলিশ তদন্ত শেষে এজাহারভুক্ত ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

মামলার অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে নগরের একটি এলাকায় এই দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তখন গৃহবধূর বয়স ছিল ১৮ বছর। প্রথমে ৯ নভেম্বর ঘরে ঢুকে রাসেল গাজী তাঁকে ধর্ষণচেষ্টা করেন। এর পরদিন ওই নারী বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় ওঠেন। চালক তাঁকে নিয়ে ভুল পথে রওনা দেন। একপর্যায়ে আসামিরা মোটরসাইকেলে তাঁর পিছু নেন এবং নির্জন স্থানে পৌঁছে গৃহবধূকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফের গহিন পাহাড় থেকে উদ্ধার ৫ নারী ও শিশু, মানব পাচারকারী আটক

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
অভিযানে আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের টেকনাফের হাবিরছড়াসংলগ্ন গহিন পাহাড়ি এলাকা থেকে চার নারী ও এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ সময় মানব পাচারকারী অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে কোস্ট গার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাউদ্দিন রশিদ তানভীর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আটক পাচারকারী টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিবছড়া ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে মোহাম্মদ হাসান (৫৫)।

কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা সালাউদ্দিন রশিদ বলেন, আটক পাচারকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর উদ্দেশ্যে নারী-শিশুসহ কয়েকজনকে হাবিরছড়ার পাহাড়ি এলাকায় বন্দী করে রাখা হয়েছিল। গতকাল দিবাগত রাত ২টার দিকে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর একটি বিশেষ দল যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে পাচারকারীদের গোপন আস্তানা থেকে চার নারী, এক শিশুসহ পাঁচজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র উন্নত জীবনের স্বপ্ন, উচ্চ বেতনের চাকরি ও অল্প খরচে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়া পাচারের ফাঁদে ফেলে। পাচারের আগে তাদের পাহাড়ি এলাকায় বন্দী রেখে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করা হতো।

উদ্ধার ব্যক্তিদের ও আটক মানব পাচারকারীর বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি-যুবদলের তিন নেতার বিরুদ্ধে সাংবাদিক লাঞ্ছনার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ভুক্তভোগী সাংবাদিক লুৎফর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
ভুক্তভোগী সাংবাদিক লুৎফর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় বিএনপির বহিষ্কৃত এক নেতাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শনিবার দিবাগত রাতে ভুক্তভোগী সাংবাদিক লুৎফর রহমান তানোর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি দৈনিক কালবেলা ও স্থানীয় দৈনিক সোনার দেশে পত্রিকার তানোর উপজেলা প্রতিনিধি। পুলিশ তাঁর অভিযোগ তদন্ত করছে।

লুৎফর রহমান যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাঁরা হলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির বহিষ্কৃত সদস্য ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান (৫০), জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম কুসুম (৪০) ও তানোর পৌর বিএনপির নেতা মো. ইয়াসিন (৫২)।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা অভিযোগটা পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরা আছে। ফুটেজ সংগ্রহ করে আমরা দেখব। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে লুৎফর রহমান উল্লেখ করেন, ২৩ অক্টোবর তানোরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মনিরুজ্জামান ভুঁইয়া এসেছিলেন। তিনি একজন সাংবাদিক হিসেবে সেখানে যান। এ সময় পূর্বশত্রুতার জেরে মিজানুর রহমান তাঁকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগাল শুরু করেন। পরে অন্য আসামিদের হুকুম দিয়ে বলেন, ‘...জনমের মতো সাংবাদিকতা শিখিয়ে দে।’ হুকুম পেয়ে রবিউল ইসলাম কুসুম তাঁর গালে সজোরে থাপ্পড় মারেন।’

অভিযোগে সাংবাদিক লুৎফর লেখেন, ‘আমি অতর্কিত হামলায় হতভম্ব হয়ে পড়ি এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইয়াসিন আমাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছিলা, ফোলা ও কালশিরা জখম করেন। একপর্যায়ে কুসুম হুমকি দিয়ে বলেন, গাড়ি থেকে অস্ত্র নিয়ে এসে চিরদিনের মতো শেষ করে দে। যা হয় পরে দেখা যাবে।’ ইয়াসিন গলা চেয়ে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন। তখন মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখানে সিসি ক্যামেরা আছে, ধরা পড়ে যাবি।’ প্রায় ১০ মিনিট ধরে আসামিরা আমাকে কিল, ঘুষি ও থাপ্পড় মারার পর মিজানুর রহমান আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং বলেন, ‘এ মুহূর্তে এলাকা ছেড়ে যাবি, নতুবা এখানেই তোর লাশ পড়ে যাবে।’ পরে অনেকে ছুটে এসে আমাকে আসামিদের হাত থেকে রক্ষা করেন।’

অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘চড়-থাপ্পড়ের কারণে আমি বাম কানের শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলি।’ পরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেছেন সাংবাদিক লুৎফর রহমান।

অভিযোগের বিষয়ে জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম কুসুমের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জেলা যুবদলের সদস্যসচিব রেজাউল করিম টুটুল বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমিও অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিও বিষয়টি জেনে আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা তদন্ত করে দেখব।’

অভিযোগের বিষয়ে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান বলেন, ‘সেদিন কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার কার্ড দেওয়া হচ্ছিল। লুৎফর রহমান বিএনপির লোক পরিচয়ে কার্ড নিতে এসেছিলেন। তখন আমাদের লোকজন জিজ্ঞেস করেন, তিনি কীসের বিএনপি। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। দলের লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আমি সেখানে ছিলাম বলে তাঁকে বাঁচিয়েছি। তা না হলে তো তাঁকে মেরেই ফেলত।’

উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিল ছিল। সেদিন প্রধান অতিথি হিসেবে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিনকে বরণ করা নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত হন। এ ঘটনায় সাবেক পৌর মেয়র মিজানুর রহমানসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করা হয়। পরে মিজানুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত