Ajker Patrika

দাফনের ৪৪ দিন পর সাজ্জাদের লাশ উত্তোলন, মামলা তুলে নিতে হুমকি

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬: ৫৬
দাফনের ৪৪ দিন পর সাজ্জাদের লাশ উত্তোলন, মামলা তুলে নিতে হুমকি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেনের লাশ দাফনের ৪৪ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আজ সোমবার দুপুরে কবর থেকে তাঁর লাশ তোলা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সাজ্জাদ নিহতের ঘটনায় করা মামলা তুলে নিতে আসামিপক্ষ থেকে তাঁর পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

লাশ উত্তোলনে নেতৃত্ব দেন রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এ টি এম আরিফ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মাদ তালেব উদ্দিন।

পুলিশ, পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজার এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন। ২০ জুলাই সকালে শালবন মিস্ত্রিপাড়া কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। শেখ হাসিনা সরকার পতন হলে এক মাস পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য, পৌর মেয়র ও নেতা–কর্মীসহ ৫৭ জনের নামে ও অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী জিতু বেগম বাদী হয়ে গত ২০ আগস্ট রংপুরের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক রাজু আহমেদ মামলাটি গ্রহণ করে কোতোয়ালি থানাকে তদন্ত কার্যক্রম শুরুর আদেশ দেন। এরপর আজ সোমবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রংপুর রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনারে নেতৃত্ব লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য রমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেনের পরিবারে দাবি, ২০ আগস্ট হত্যা মামলা দায়ের করার পর থেকে আসামিরা বিভিন্নভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এতে পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ নিয়ে আরও একটি মামলা থানায় করবে বলে জানিয়েছে ওই পরিবার।

মামলা তুলে নিতে হুমকির অভিযোগ উল্লেখ করে সাজ্জাদের মা ময়না বেগম বলেন, ‘ছেলের বউ মামলা করার পর বিভিন্ন মহল থেকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাজহাট এলাকার লোকজন বেশি করে হুমকি দিচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ কারণে আমি বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করব। আমি চাই আমার সন্তানকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার হোক।’

সাজ্জাদ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন বলে জানিয়ে ময়না বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আন্দোলনে আমার ছেলে নিহত হয়েছে। ছেলের লাশটাও আমি দেখতে পারিনি। ঢাকায় ছিলাম। আমার ছেলেই সংসার চালাইত। শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে গুলি করে মারছে। এই সরকারের কাছে দাবি—আমি, আমার ছেলের বউ ও নাতিকে নিয়ে যেন ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারি। সে ব্যবস্থা যেন করা হয়।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার এসআই মো. তালেব উদ্দিন বলেন, ‘মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের আদেশক্রমে সাজ্জাদ হোসেনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ পাঠানো হবে।’

রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এ টি এম আরিফ বলেন, ‘কবর থেকে সাজ্জাদ হোসেনের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ফের তাঁর লাশ দাফন করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ৪ বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার পর যা বলল ইইউ

আপনাদের সঙ্গে হাত মেলাব না, বিস্ফোরক তামিম

কাগজে-কলমে মেয়র হওয়ায় দায়িত্ব পালন করলাম: জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে ইশরাক

এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণায় বিএনপি ও জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত