Ajker Patrika

যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদ, দিন কাটছে পঙ্গুত্বের শঙ্কায়

সাদ্দাম হো‌সেন, ঠাকুরগাঁও
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩: ৫৩
যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদ, দিন কাটছে পঙ্গুত্বের শঙ্কায়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৫)। তার ডান পা থেকে দুই দফা অস্ত্রোপচারে বের করা হয় ১২টি গুলি। ত‌বে এখনো রয়ে গেছে আরও ৩৮‌টি গুলি। এতে পা‌য়ের রক্ত চলাচল ব‌্যহত হ‌চ্ছে। ফু‌লে উঠেছে পা। বন্ধ হ‌য়ে যায় স্বাভাবিক চলা‌ফেরা। পায়ের তীব্র ব্যথা সহ্য করতে না ‌পে‌রে হাসপাতা‌লে যন্ত্রণায় কাতরা‌চ্ছেন গুলিবিদ্ধ এই শিক্ষার্থী। ডান পা কোনোদিন স্বাভাবিক হবে কিনা সেটা নিয়েও শঙ্কায় আবু সাঈদ ও তার পরিবারের সদস্যরা।

চিকিৎসকেরা বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে পা‌য়ের হা‌ড়ের কাছাকা‌ছি গু‌লি চ‌লে যাওয়ায় দেশে এ গুলি বের করার সুযোগ নেই। গুলি ‌বের কর‌তে গে‌লে পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হ‌য়ে যে‌তে পারে। তবে বিদেশে উন্নত চিকিৎসায় বের করা যেতে পারে এ সব গু‌লি।

আবু সাঈদের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদ‌রের জামালপুর ইউ‌নিয়‌নের রামপুর গ্রা‌মে। বাবার নাম জুল‌ফিকার আলী। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাঈদ বড়। তিনি সদ‌রের শীবগঞ্জ ডিগ্রী ক‌লেজ থে‌কে ২০২৩ সা‌লে ডিগ্রী পাশ ক‌রেন। বাবা জুল‌ফিকার আলী হো‌মিও চি‌কিৎসক। বাবার কোনো রকম রোজগা‌রে চলে তা‌দের পরিবার।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে আবু সাঈদ বলেন, গত ৪ আগস্ট ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। এ দিন দুপু‌রে বি‌ক্ষোভ মি‌ছিল নি‌য়ে শহ‌রের কোর্টচত্ব‌রে দি‌কে গে‌লে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সে সময় পু‌লি‌শের গু‌লি‌তে ডান পা‌য়ে ৫০‌টি ছররা বুলেট লাগে। মুহূর্তেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পায়ে ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে ওই দিনই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ক্ষতস্থান শুকানোর পর অস্ত্রোপচার করার কথা জানান চিকিৎসক। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেননি।

সাঈদের বাবা জুল‌ফিকার আলী ব‌লেন, গত ৬ আগস্ট এক‌টি প্রাই‌ভেট ক্লি‌নি‌কে ভ‌র্তি ক‌রে ছে‌লের চি‌কিৎসা করান। প‌রে সেখান থে‌কে দিনাজপুর এম আব্দুর র‌হিম মে‌ডি‌কেলে নি‌য়ে যাই। সেখা‌নে অস্ত্রপচা‌রে দুই দফা ১২‌টি গু‌লি বের ক‌রেন চিকিৎসকেরা। এরপর ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্বিদ্যালয় হাসপাতালে নি‌য়ে গে‌লে চি‌কিৎসকরা জানান, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আর একটি গুলিও বের করা সম্ভব না। কিছু‌দিন থাকার প‌রে হাসপাতাল থে‌কে ছাড়পত্র দেয়। ছেলের চিকিৎসার জন্য তারা দেশে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। পরিপূর্ণ চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। আমাদের এত টাকা নেই।

এখনো স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারছেন না জা‌নি‌য়ে আবু সাঈদ ব‌লেন, হাট‌তে গে‌লে প্রচণ্ড ব‌্যাথা ক‌রে। পা ফু‌লে যাওয়ায় নড়াচড়াও করা যায় না। যন্ত্রণায় রাতে ঘুমাতে পারি না। এ অবস্থায় গত রোববার আবারও দিনাজপুর মে‌ডি‌কে‌লে ভ‌র্তি হই। চি‌কিৎসকরা জা‌নি‌য়েছেন, দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা করা গেলে হয়তো বের করা যেতে পারে গু‌লি।

চো‌খের পা‌নি ছে‌ড়ে দি‌য়ে সাঈদের মা বিল‌কিস বানু বলেন, এখন চিকিৎসার সব খরচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করছে। বর্তমান সরকারের কাছে আমার একটাই চাওয়া প্রয়োজনে দেশের বাইরে নিয়ে হলেও যেন তার এক মাত্র সন্তা‌নের গুলি গু‌লো বের করে দেওয়া হয়।

প্রতিবেশী স্কুল শিক্ষক জয়নাল আ‌বেদীন বলেন, সাঈদের পরিবার খুবই দরিদ্র। তাঁর চিকিৎসা নিয়ে পরিবার খুবই চিন্তিত। তাদের পক্ষে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। সমাজে যারা বিত্তবান আছেন, তাঁদের এগিয়ে আসা দরকার। যাতে এ তরুণ ছে‌লে‌টি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়া বাদী হয়ে রোববার রাতে তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন। তিনি বলেন, এটি একটি অপমৃত্যু মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

এর আগে রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশনের পশ্চিম পাশে ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারী আবুল কালাম আজাদের (৩৫) মাথায় লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

ওসি মোবারক হোসেন জানান, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ ওপর থেকে ভারী বিয়ারিং প্যাডটি পড়ে যায়। এতে মাথায় আঘাত পেয়ে আবুল কালাম ঘটনাস্থলেই মারা যান।

দুর্ঘটনার পর প্রায় আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকে মেট্রোরেলের চলাচল। পরে বিকেল ৩টার দিকে উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত, আর সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল শুরু হয়। তবে বিয়ারিং প্যাড মেরামতের জন্য আগারগাঁও থেকে শাহবাগ অংশে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। সোমবার সকাল ১১টা থেকে পুরো লাইনে চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রউফকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দেবে।

ফাওজুল কবির খান আরও জানান, নিহত ব্যক্তির পরিবারকে প্রাথমিকভাবে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি পরিবারের কোনো কর্মক্ষম সদস্য থাকলে তাকে মেট্রোরেলে চাকরির সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অপহরণের পর নির্যাতন, সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর কলেজছাত্রের মৃত্যু

কুমিল্লা প্রতিনিধি
নিহত কলেজছাত্র তুহিন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত কলেজছাত্র তুহিন। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় অপহরণের পর নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্র তুহিন (১৯) সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর মারা গেছেন। আজ সোমবার দুপুরে ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত তুহিন উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে এবং বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।

তুহিনের মা ফেরদৌসী আক্তার জানান, পূর্ববিরোধের জেরে স্থানীয় কয়েকজন তাঁর ছেলেকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। ঘটনার দিন ২০ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের কামাল মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে একটি প্রাইভেট কারে করে তুহিনকে তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম বাবুর গোবিন্দপুর এলাকার একটি ভবনে আটকে লোহার রড ও এসএস পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা পরে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং সেখান থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই তুহিনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সাত দিন ধরে তিনি সেখানে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

এ ঘটনায় তুহিনের মা ফেরদৌসী আক্তার বাদী হয়ে ২০ অক্টোবর বুড়িচং থানায় চারজনের নাম উল্লেখসহ আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন গোবিন্দপুর গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম বাবু (৪৫), মো. নাফিজ উদ্দিন (১৯), শ্রীপুর গ্রামের মো. জহির (৪২) এবং আবদুল আলিম (৪৫)।

এ বিষয়ে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোটরসাইকেল মহড়া থেকে যুবককে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় মোটরসাইকেল মহড়া থেকে তুলে নিয়ে হাবিবুর রহমান খোকন (৩৭) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় আরও এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে শহরের সেউজগাড়ী ইসকন মন্দির এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হাবিবুর রহমান খোকন শহরের মালতিনগর দক্ষিণপাড়া এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে। আর আহত বাঁধন (২৬) বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গতকাল রোববার রাতে সেউজগাড়ী এলাকায় একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার জেরে খুনের এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান বাসির এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাত ৯টার দিকে ইসকন মন্দিরের সামনে হঠাৎ চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে যান। তাঁরা দেখেন, অন্ধকারে কয়েকজন অজ্ঞাতনামা যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে দুই যুবককে কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা দুজনকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) নিয়ে গেলে চিকিৎসক খোকনকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একটি মোটরসাইকেলের সামনে আইনজীবী স্টিকার লাগানো।

জানা গেছে, হতাহত দুই যুবক ছাড়াও আরও ১০ থেকে ১২ জন যুবক কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে খান্দার এলাকা থেকে সেউজগাড়ী হয়ে শহরে ফিরছিলেন। আগে থেকে ওত পেতে থাকা কিছু যুবক মোটরসাইকেল মহড়া থেকে দুই যুবককে তুলে নিয়ে ইসকন মন্দিরের দিকে অন্ধকারে কুপিয়ে ফেলে রেখে যান।

এ ঘটনায় শহর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে শজিমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম মহানগর ও দায়রা জজ আদালত। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মহানগর ও দায়রা জজ আদালত। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক নারী। এতে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর ছেলেকে হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু আইনে এবং অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ করেন।

আজ সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করেন সাজু বেগম নামের ওই নারী। তিনি আকবর শাহ থানার বিশ্ব কলোনির বাসিন্দা এবং মারা যাওয়া ওই যুবকের মা বলে জানিয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্ত চার পুলিশ সদস্য হলেন চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাইফ উল্লাহ, কনস্টেবল নুর মোহাম্মদ শাহাদাত ও সোহেল চাকমা। এজাহারে উল্লিখিত অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন আকবর শাহ থানা এলাকার জহুরুল ইসলাম লিটন, মো. রিপন, রুবেল, সুমন পারভেজ ও বিপ্লব। তাঁরা আকবর শাহ থানা যুবদলের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আসাদুল আলম সালেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় এবং হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত শুনানি শেষে মামলাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন।’

মামলার আরজিতে বলা হয়, বাদী পরিবারসহ বিশ্ব কলোনি এম-ব্লকে ভাড়া বাসায় থাকেন। তাঁর স্বামী পেশায় রিকশাচালক। তাঁদের একমাত্র সন্তান রাকিব হোসেনকে (২১) ২ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিলেন আসামিরা। ১৬ অক্টোবর আসামি স্থানীয় পাঁচজন যুবক পুনরায় বাদীর ছেলে রাকিবের কাছে চাঁদা দাবি করেন। এ সময় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা তাঁকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই এলাকার একটি মার্কেটের অফিসে নিয়ে যান। অফিসটি আসামি জহুরুল ইসলাম লিটনের।

বাদী উল্লেখ করেন, রাকিবকে সেখানে দড়ি দিয়ে বেঁধে হকিস্টিক, হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। খবর পেয়ে রাকিবের বাবা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাঁকেও মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। পরে জহিরুল ইসলাম লিটন থানায় ফোন কল করে ঘটনাস্থলে পুলিশ এনে রাকিবকে তাঁদের হাতে তুলে দেন।

আরজিতে আরও বলা হয়, রাকিবকে আকবর শাহ থানায় নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ সেখানে আরেক দফায় শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে থানা-পুলিশ তাঁকে নন-এফআইআর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে। ওই দিন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের একটি আদালত রাকিবকে দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে পাঁচ দিনের কারাদণ্ড দেন। কিন্তু রাকিবের পক্ষে জরিমানার টাকা না দিতে পারায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বাদীর অভিযোগ, কারাগারে থাকা অবস্থায় রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁর মা-বাবাকে খবর দেয়। পরে ১৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম কারাগার থেকে তাঁকে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ২১ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাকিব মারা যান। তাঁকে আটকের আগে নির্যাতন ও আহত হওয়ার কোনো তথ্য আদালতে উত্থাপন করেনি পুলিশ।

আকবর শাহ থানার ওসির মোবাইল ফোনে কল করা হলে অন্য প্রান্ত থেকে থানার ডিউটি অফিসার পরিচয়ে আরেকজন ধরেন। মামলার বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘মামলার বিষয়টি জানা আছে। এখন ওসি মহোদয় মিটিংয়ে আছেন, কথা বলা যাবে না।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) পশ্চিম জোনের উপকমিশনার (ডিসি) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আপনার কাছ থেকে শুনেছি। তবে ওই যুবক কারাগারে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে সেখানে তিনি কোনো কারণে মারা যান।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর কাস্টডি বা হেফাজতে থাকা অবস্থায় কিন্তু ওই যুবকের মৃত্যু ঘটেনি। তাই মামলায় হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু আইনে পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এরপরও ঘটনার বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত