Ajker Patrika

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তা নেই, দুর্ভোগে শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪, ০১: ০৩
Thumbnail image

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো, শিক্ষার্থী–শিক্ষক ও খেলার মাঠ সবই আছে। কিন্তু সেই বিদ্যালয়ে যাওয়ার নেই কোনো রাস্তা। এই বিদ্যালয়ের নাম ৬৪ নং ফরিদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি ১ নং আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ফরিদাবাদ গ্রামে অবস্থিত। 

এই বিদ্যালয়ের চারপাশে ফসলি জমি। জমির আইল ও বাড়ির উঠান দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছে। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকারীকরণ হয় ২০১৩ সালে। এখানে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ৯৬ জন। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক রয়েছেন ছয়জন। 

এই বিদ্যালয়ের রাস্তার জন্য ওই এলাকার হরিপদ অধিকারী, সোলেমান আলী ও রবি সেনের দেওয়া জমি দিয়ে ১৯৯০ সালের দিকে চলাচলের রাস্তা নির্মাণ করা হয়। 

দীর্ঘ ১৫ বছর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন হরিপদ অধিকারী। ২০১৭ সালের দিকে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর জমির সীমানা জটিলতায় স্কুল যাওয়ার জন্য নির্ধারিত রাস্তা কেটে আবাদি জমিতে রূপান্তর করেন হরিপদ। ফলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আবার আইল দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। 

এ ব্যাপারে হরিপদ অধিকারী ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি আমার পৈতৃক সম্পত্তি, আমি ছেড়ে দেব না।’ 

বুধবার (১৩ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পার্শ্ববর্তী বীরগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন মূল সড়ক থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে আঁকাবাঁকা পথ আর আবাদি জমি পেরিয়ে ৬৪ নং ফরিদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের চারদিকে আবাদি জমি। 

দুপুর ১২টার সময় বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ভুট্টা খেতের আইল ও বাঁশ ঝাড়ের ভেতর দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোখলেছুর রহমান বলে, খেতের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে খুব অসুবিধা হয়। বর্ষাকালে আরও সমস্যা হয়। কাদা পানি পার হয়ে আসতে হয়। একই শ্রেণির জ্যোতি সরকার বলে, ভুট্টা খেত ও বাঁশঝাড় দিয়ে আসতে ভয় লাগে। তখন শিক্ষকেরা দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের স্কুলে যেতে সহায়তা করে। 

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে চলাচলের জন্য রাস্তা ছিল। পরে কেন জানি সেই রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছে। এ জন্য স্কুলে যেতে বাচ্চাদের কষ্ট হয়। 

প্রধান শিক্ষক আনছার আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ সবারই বিদ্যালয়ে আসতে খুব ভোগান্তি পোহাতে হয়। এতে অভিভাবকেরা স্কুলে শিক্ষার্থী পাঠাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এর আগে একাধিকবার রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু জমি মালিকের অনিচ্ছায় সেটি সম্ভব হয়নি। রাস্তা নির্মাণের জন্য ইউএনও ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দুর্ভোগের বিষয়টি জেনেছি। শিক্ষার পরিবেশ যাতে ব্যাহত না হয় ও দুর্ভোগ লাঘবে শিক্ষা বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত