Ajker Patrika

রাজশাহী ল্যাবে নমুনাজট, ফল পেতে বিলম্ব

রিমন রহমান
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২১, ২২: ১৬
রাজশাহী ল্যাবে নমুনাজট, ফল পেতে বিলম্ব

রাজশাহী: সানাউল্লাহ সরকার রেন্টু (৪২), থাকেন রাজশাহী নগরীতে। শরীরে উপসর্গ দেখেই গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজে (রামেক) গিয়ে নমুনা দেন। কিন্তু সেদিন তাঁর নমুনা পরীক্ষা হয়নি। পরদিন শুক্রবার পরীক্ষার পর জানতে পেরেছেন তিনি করোনায় আক্রান্ত।

সানাউল্লাহ সরকারের ভাগ্য কিছুটা ভালোই। তিনি এক দিন পরই নমুনা পরীক্ষার ফল জানতে পেরেছেন। কিন্তু অনেকেরই ভাগ্য সুপ্রসন্ন নয়। নমুনার ফল জানতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে অন্তত তিন দিন। রাজশাহী অঞ্চলে যখন করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ, তখন নমুনাজটের কারণে করোনা পরীক্ষার ফল পেতে দেরি হচ্ছে।

ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়েছেন–এমন একাধিক ব্যক্তি জানান, ফল পেতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিন-চার দিন সময় লাগছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি জমা হচ্ছে। যার কারণে ফল পেতে দেরি হচ্ছে। ল্যাবটিতে রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁর নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

ল্যাবের প্রধান ডা. সাবেরা গুলনাহার জানান, গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে পিসিআর মেশিন বসিয়ে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কয়েক মাস নমুনা পরীক্ষার চাপ কম ছিল। কিন্তু এখন করোনার ভারতীয় ধরন ঢুকে পড়ার পর ল্যাবে প্রতিদিনের যে সক্ষমতা, তার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি নমুনা জমা পড়ছে। তাই নমুনা পরীক্ষা শেষে ফলাফল দিতে দেরি হচ্ছে।

ল্যাবপ্রধান বলছেন, রাজশাহীর চার জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে উপসর্গ থাকা রোগীর সংখ্যা। ফলে নমুনা পরীক্ষায় চাপও বেড়েছে। গত শুক্রবার সারা দিন পরীক্ষা পরও ৭৫১টি নমুনা উদ্বৃত্ত ছিল। এগুলো ধারাবাহিকভাবে শেষ করতে হবে। যেসব নমুনা সবচেয়ে পুরোনো, সেগুলো আগে আগে পরীক্ষা করা হবে। নইলে নমুনা পরীক্ষা করে আর লাভ হবে না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ২৭ মে নওগাঁ ও নাটোরের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। ফলে সেদিন পরীক্ষার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের নমুনা নেওয়া সম্ভব হয়নি। সেদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাত্র একটি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। আবার শুক্রবার রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে নওগাঁর নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এ দিন মোট ৩৬৬টি নমুনার পরীক্ষা হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুটি পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবে, এক সপ্তাহ ধরে ল্যাব দুটিতে গড়ে ৪৬০টি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এর মধ্যে কলেজে প্রতিদিন চার শিফটে ৩৬০ থেকে ৩৮০টি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। আর হাসপাতালে এক শিফটে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০টি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। হাসপাতালে শুধু ভর্তি থাকা রোগী, চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নমুনা পরীক্ষা হয়।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) রাজশাহী জেলার সভাপতি অধ্যাপক ডা. চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, যত বেশি সংক্রমণ, তত বেশি নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। আক্রান্তদের চিহ্নিত করে আলাদা করতে হবে। নমুনার জট মানেই মহাবিপদ। এমন পরিস্থিতিতে আরটিপিসিআর টেস্টের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টও বাড়ানো যেতে পারে। জিন এক্সপার্ট পদ্ধতিও বেশি করে কাজে লাগানো যেতে পারে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘মুসলিম ফ্রন্টগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ইন্টেরিম ভেঙে দিন’

‘বউ আমাকে মিথ্যা ভালোবাসত, টাকা না থাকলে ছেড়ে যাবে, তাই মরে গেলাম’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত