Ajker Patrika

শিক্ষাসফরের বাস ছাড়তেই শিক্ষকের মৃত্যু, আনন্দযাত্রা হলো বিষাদ-সিন্ধু

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১: ০৩
শিক্ষাসফরের বাস ছাড়তেই শিক্ষকের মৃত্যু, আনন্দযাত্রা হলো বিষাদ-সিন্ধু

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর ডিগ্রি কলেজের সব শিক্ষক-কর্মচারীকে নিয়ে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক স্থান মুজিবনগরে ছিল শিক্ষাসফর। মনোবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক (প্রদর্শক) শামীম কবির সুইটও ছিলেন তাঁদের একজন। 

আজ শুক্রবার কলেজ চত্বরে রান্নাবান্না শেষে খাবার গাড়িতে তোলেন। ঠিক সকাল ১০টায় কলেজ চত্বর থেকে দুটি বাস রওনা হয় মুজিবনগরের উদ্দেশে। মাত্র এক কিলোমিটার যাওয়ার পরেই অসুস্থতা বোধ করেন সুইট। সহকর্মীদের গাড়ি থামাতে বলেন। মুলাডুলি রেলগেটে ওঠার আগেই গাড়ি থেমে যায়। 

ততক্ষণে তিনি সহকর্মী মণির কোলে অচেতন হয়ে পড়েন। সকলে ধরে গাড়ি থেকে দ্রুত নামিয়ে রাজাপুর বাজারে শশী ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে সব শেষ। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শিক্ষক সুইটের হৃৎক্রিয়া চিরতরে থেমে গেছে। মুহূর্তে সফরের আনন্দ বিষাদ-সিন্ধুতে ভেসে যায়। সহকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে অধ্যক্ষ সফর বাতিল করে কলেজে ফিরে আসেন। আর কলেজ অধ্যক্ষের মাইক্রোবাসে তুলে সুইটের মরদেহ নেওয়া হয় তাঁর গ্রামের বাড়ি উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মসলেম উদ্দিনের ছেলে। খবর পেয়ে সুইটের মরদেহ দেখতে তাঁর বাড়িতে হাজারো মানুষের ভিড় জমে। 

সুইট এক মেয়ে ও এক ছেলের জনক। মেয়ে হুমায়রা জাহান পাঁচবাড়িয়া বালিকা বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী আর ছেলে ফাহিম কবীর রাজাপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে সপ্তম শেষ করে অষ্টম শ্রেণিতে উঠবে। তাঁর স্ত্রী গৃহিণী। 
 
সুইটের একমাত্র ছোট ভাই খলিশাডাঙ্গা কলেজের প্রভাষক মাসুম বলেন, ‘বাবা-মায়ের আমরা মাত্র দুটি সন্তান ছিলাম। এখন মাকে কেমন করে বোঝাব। ভাই সকালে সফরে গিয়ে এভাবে লাশ হয়ে ফিরবে বিশ্বাস হচ্ছে না।’ 
 
রাজাপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ তুগলক বলেন, ‘শিক্ষক শামীম কবির প্রতিষ্ঠালগ্নেই এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। তিনি সকলের প্রিয়জন ছিলেন। সবার সঙ্গেই ছিল সদ্ভাব। তাঁর মৃত্যুতে আমরা একজন দক্ষ সহকর্মীকে হারালাম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত