Ajker Patrika

পদ্মার পানি ৯৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত, আতঙ্কে কয়েক হাজার মানুষ

প্রতিনিধি, চারঘাট (রাজশাহী)
পদ্মার পানি ৯৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত, আতঙ্কে কয়েক হাজার মানুষ

চারঘাটে চলতি আগস্ট মাসের শুরু থেকেই পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙছে পদ্মার তীরবর্তী পাড়। এতে হুমকির মুখে রয়েছে রাওথা এলাকার প্রায় ৪০ বছর আগের পুরোনো মসজিদসহ বেশ কয়েকটি পাড়া-মহল্লা। আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন পদ্মা পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ। 

জানা গেছে, রাজশাহীর চারঘাট সীমানায় পদ্মার প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ তীরবর্তী এলাকা রয়েছে। যার অধিকাংশ তীরবর্তী জায়গায় লোকজন বসবাস করেন। এই তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৮ কিলোমিটার নদী তীরবর্তী এলাকা ব্লক দিয়ে পাকা বাঁধ দেওয়া আছে। বাকি তীরবর্তী এলাকা অরক্ষিত ও কাঁচা বাঁধ রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও প্রতিরোধে নেওয়া হয়নি কার্যকর ব্যবস্থা। ভাঙনের শিকার হয়ে কয়েক হাজার পরিবার অন্যত্র চলে গেছেন। কেউ আবার জায়গা-জমি সব হারিয়ে পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

সরেজমিনে আজ মঙ্গলবার সকালে রাওথা এলাকায় গেলে স্থানীয় গ্রামবাসী বলেন, একসময় যে মাঠে ফসল চাষ করা হতো আজ সেই মাঠ জুড়ে অথই পানি। সব ভেঙে আজ নদীর বুকে চলে গেছে। এক ছটাক আবাদি জমিও নেই। ঘরবাড়ি ভাঙতে ভাঙতে আজ নিঃস্ব হয়ে গেছে রাওথা এলাকার পদ্মা পাড়ের মানুষজন। নদীতে চলে গেছে ফসলি জমি। এখন হুমকির মুখে রয়েছে গ্রামটি। যে কোনো সময় তলিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকেই মুছে যেতে পারে কয়েকটি গ্রামের নাম। 

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙন শুরু হলে এলাকায় দেখা মেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনদের। এর আগে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে তাঁরা কোনোদিনই আসেন না। কয়েক দিন ধরে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙতে শুরু করেছে পদ্মার পাড়। এভাবে আরও কয়েকটি দিন ভাঙন অব্যাহত থাকলে বিলীন হতে পারে মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অপরদিকে, নদী বাঁধের কার্যক্রম শুরু হলেও কাজে গতি নেই। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানান, উজান থেকে আসা ঢলের কারণে পদ্মায় পানি বেড়েছে। গত দুই দিন পানি কিছুটা কমলেও আবারও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

এ বিষয়ে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মোর্তুজা বলেন, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার নদীর বাঁধ নির্মাণে ৭২২ কোটি ২৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় বাঘা উপজেলার ১২ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং এবং চারঘাট ও বাঘা উপজেলার ৫ হাজার ১০০ মিটার ব্লক দিয়ে পাকা বাঁধ তৈরি হবে। এর মধ্যে চারঘাট উপজেলার রাওথা ও টাঙ্গনে ১ হাজার ৫০০ মিটার পাকা বাঁধ দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে ব্লক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষে বাঁধের কাজ শুরু হবে।

নদীর বাঁধ নির্মাণ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, উপজেলার টাঙ্গন ও রাওথা এলাকায় পাকা বাঁধ তৈরির প্রকল্প শুরু হয়েছে। পাকা বাঁধ তৈরি সম্পন্ন হলে এ সকল নদী তীরবতী এলাকাগুলো নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। তবে সাময়িকভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ফাটল বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত