Ajker Patrika

টিআর দিয়ে কমিশন বাণিজ্য বাদশার

রিমন রহমান, রাজশাহী
টিআর দিয়ে কমিশন বাণিজ্য বাদশার

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গাড়ি-বাড়ি-সম্পদ ফেলে গা ঢাকা দিয়েছেন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ফজলে হোসেন বাদশা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে সম্প্রতি নগরের বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। তাঁকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বাদশার বিরুদ্ধে এর আগেও নানা অভিযোগ উঠেছে। এমপি থাকার সময় কমিশন না পেলে তিনি গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় কোনো প্রকল্পই দিতেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হাসান সুমনের মাধ্যমে তিনি কমিশন আদায় করে নিতেন। এ ছাড়া টাকার বিনিময়ে স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নের ঠিকাদারদের কাছ থেকেও কমিশন নেওয়ার অভিযোগ আছে।

ফজলে হোসেন বাদশা ২০০৮ সালে প্রথমবার আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে রাজশাহী সদরের এমপি হন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি নৌকার প্রার্থী হন। ২০১৪ সালে এমপি হন বিনা ভোটে। এরপর ২০১৮ সালে এমপি হলেও ২০২৪ সালের নির্বাচনে নৌকা ধার করেও পার পাননি তিনি। হেরে যান স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমপি হওয়ার পর থেকে ফজলে হোসেন বাদশা ঘুরেফিরে কিছু ভুঁইফোড় সংস্থাকে তাঁর টিআর বরাদ্দ দিতেন। বিনিময়ে সেসব সংস্থার কাছ থেকে কমিশন নিতেন। আর কমিশন দিয়ে প্রকল্প নেওয়া সংস্থাগুলো বাস্তবে কোনো কাজই করেনি। ফজলে হোসেন বাদশা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদেরও ভুয়া প্রকল্প দিয়ে খুশি রাখেন। ফলে তাঁরাও সরেজমিনে প্রকল্প পরিদর্শন করেননি।

বিষয়টি নিয়ে ২০২৩ সালের নভেম্বরেই অনুসন্ধান করে আজকের পত্রিকা। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে টিআরের আওতায় ২০১৯-২০, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে তৎকালীন এমপি বাদশার দেওয়া প্রকল্পগুলোর তালিকা নিয়ে যাচাই করা হয়। এতে দেখা যায়, ওই তিন অর্থবছরে মোট ৪ কোটি ৭৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৯৯ টাকার প্রকল্প দিয়েছেন বাদশা। কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ছাড়া ১২৬টি নামসর্বস্ব মহিলা সংস্থা এসব প্রকল্প পায়। সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয় সংস্থাগুলোকে। সংস্থাগুলো তিন বছরে সর্বনিম্ন একবার থেকে ছয়বার পর্যন্ত টাকা পেয়েছে। এক অর্থবছরে একাধিকবার বরাদ্দ দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও অনেক সংস্থাকেই একাধিক বরাদ্দ দেন বাদশা।

নথি ঘেঁটে দেখা যায়, রঙের মেলা মহিলা সংস্থা নামের একটি নামসর্বস্ব সংস্থা তিন অর্থবছরে ৩ লাখ ১৭ হাজার টাকা বরাদ্দ পায়। প্রতি অর্থবছরেই সংস্থাটিকে দুবার করে অর্থ বরাদ্দ দেন বাদশা। এর মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথম দফায় ৪৪ হাজার টাকা দেওয়া হয়। একই অর্থবছরের দ্বিতীয় দফায় একটি মাদ্রাসা ও একটি মসজিদের বরাদ্দ বাদ দিয়ে সংস্থাটিকে ৮৮ হাজার টাকা দিতে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেন বাদশা।

এ ছাড়া তিন অর্থবছরে পাঁচবার করে অর্থ বরাদ্দ পায় দুস্থ মহিলা সমাজকল্যাণ সমিতি, পথশিশুদের শিক্ষা নিকেতন, ইচ্ছামতি, উৎসব, গোধুলি, জোনাকী, মেঘালয়, সন্ধ্যাতারা ও সবুজ মহিলা কল্যাণ সমিতি। চারবার করে অর্থ পেয়েছে দুস্থ ও বেকার মহিলা কল্যাণ সমিতি, আলোকিত নারী, করতোয়া, গন্ধরাজ, ডালিয়া, মধুমতি, শতদল ও সোনামনি মহিলা কল্যাণ সংস্থা এবং ষষ্ঠীতলা মহিলা উন্নয়ন সংস্থা। নিয়ম ভেঙে ষষ্ঠীতলা মহিলা উন্নয়ন সংস্থাটিকে দুই অর্থবছরেই চার দফায় ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এমপি বাদশার দেওয়া তালিকায় এই সংস্থার নাম বাদ পড়েছিল। পরে রাজশাহী পুলিশ লাইনসের শহীদ মিনার সংস্কারে দেওয়া এক লাখ টাকার আগের প্রকল্প বাতিল করে সেই টাকা এই সংস্থাকে দিতে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেন বাদশা।

প্রকল্প বরাদ্দ পাওয়া এক নারী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে জানান, ফজলে হোসেন বাদশা যে প্রকল্প তালিকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিতেন, সেখানে স্থান পেতে হলে গুনতে হতো টাকা। বাদশার ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হাসান সুমন এই টাকা নিতেন।

রাজশাহীর অপর একটি সংস্থার সভানেত্রী বলেন, ‘যা টাকা পেতাম, তার অর্ধেকই চলে যেত। যাঁরা বরাদ্দ দিতেন, তাঁদেরই অর্ধেক টাকা দিয়ে দিতে হতো। সেটাও আগাম।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি অর্থবছরে প্রতিটি বরাদ্দের তালিকাতেই বোয়ালিয়া থানা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ে কোনো না কোনো কাজ দেখিয়ে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, প্রতিটি তালিকাতেই দেখা গেছে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইডিইবি) নাম। অবসরে যাওয়া রাজশাহী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল হক সংগঠনের জেলার সভাপতি। তিন অর্থবছরে সাত দফায় আইডিইবি ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৬৬ টাকা, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় পাঁচ দফায় ৪ লাখ ৪০ হাজার এবং বোয়ালিয়া থানা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ পায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহানগরীর প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ হয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীরা ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন আদায় করতেন তৎকালীন এমপি বাদশার নামে।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, বাদশার স্ত্রী তসলিমা খাতুন শিক্ষক নিয়োগের বিষয়গুলো দেখাশোনা করতেন। তিনিই নিতেন টাকা। এ ছাড়া বাদশা দলীয় নেতা-কর্মীদের ওএমএসের ডিলার নিয়োগ দিয়ে কমিশন বাগিয়ে নিয়েছেন।

বাদশার ২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, সে সময় তাঁর সব মিলিয়ে ১ কোটি ১২ লাখ ৭ হাজার ৬৪০ টাকার সম্পদ ছিল। বাদশার স্ত্রীর নামে ছিল ৫ কাঠা জমি। পরের নির্বাচনের হলফনামায় তাঁর সম্পদ ও অর্থ অনেকটাই বেড়ে যায়। নগদ অর্থ দাঁড়ায় ১০ লাখ ২০ হাজার ৫৯১ টাকা। এ ছাড়া ব্যাংক এবং নগদ অর্থ মিলে দাঁড়ায় ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫১৫ টাকা। ২০১৮ সালে বাদশার নগদ ও ব্যাংক মিলে অর্থ দাঁড়ায় ৪১ লাখ ১৬ হাজার ৪৮৬ টাকা। দুটি গাড়ির দাম দেখানো হয় ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০২৪ সালে এসে বাদশার সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। এবার হলফনামায় দেখা যায়, তাঁর মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৫ টাকা। নগদ টাকা ছিল ২৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এর বাইরে একটি ৭০ লাখ টাকার জিপ দেখা যায়।

কথা বলার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাবনায় ট্রাকচাপায় দুই শিক্ষার্থীসহ নিহত ৩

পাবনা প্রতিনিধি
পাবনায় ট্রাকচাপায় তিনজন নিহত হয়। রোববার সকালে পাবনা সদরের ডাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনায় ট্রাকচাপায় তিনজন নিহত হয়। রোববার সকালে পাবনা সদরের ডাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎পাবনায় বাঁশবোঝাই ট্রাকের চাপায় দুই স্কুলশিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছে। ‎রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ‎নিহত ব্যক্তিরা হলো পাবনা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া আক্তার, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু তোহা ও ভ্যানের চালক আকরাম হোসেন।

‎মাধপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ‎

‎‎জানা গেছে, সকাল ৭টার দিকে ৮-১০ জন শিক্ষার্থী ভ্যানগাড়িতে করে পাবনার জালালপুর এলাকার ক্যাডেট কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজে যাওয়ার পথে ঢাকা থেকে পাবনাগামী একটি বাঁশবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই ছাত্র-ছাত্রী ও ভ্যানচালক নিহত হয়। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে আরও দুজন পথচারী। স্থানীয় বাসিন্দারা মাধপুর হাইওয়ে থানা-পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। মহাসড়কে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে।

ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভ্যানের ড্রাইভারসহ তিনজন নিহত ও চায়ের দোকানে থাকা দুই ব্যক্তি আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজদিখানে ১৪৩ দিনে কোরআন মুখস্থ করল ৯ বছরের শিশু আরফান

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মোহাম্মদ আরফান হোসাইন। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদ আরফান হোসাইন। ছবি: সংগৃহীত

অভূতপূর্ব এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া গ্রামের ৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ আরফান হোসাইন। মাত্র ১৪৩ দিনে পুরো পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে সে। আরফানের এই অসাধারণ সাফল্যে পরিবার, শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দ ও গর্বের আবহ বিরাজ করছে।

আরফান বর্তমানে ইসলামপুর কামিল কওমি মাদ্রাসার ছাত্র। এর আগে সে কুচিয়ামোড়া দারুন্নাজাত মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করেছে। অল্প বয়সে এমন সাফল্য অর্জন করে স্থানীয়ভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

আরফান কেয়াইন ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া গ্রামের বিশিষ্ট আলেম ও শিক্ষক হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মাসরুরের (লাভু হুজুর) ছেলে। লাভু হুজুর বর্তমানে কুচিয়ামোড়া দারুন্নাজাত মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ এবং কুচিয়ামোড়া মিত্রপাড়া বাইতুন নূর জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিন ভাইবোনের মধ্যে আরফান সবার ছোট। মাত্র ১৪৩ দিনে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে সে তার পরিবারসহ পুরো এলাকাকে গর্বিত করেছে।

ইসলামপুর কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক ফখরুদ্দীন রাজি বলেন, ‘আরফান আমাদের মাদ্রাসার গর্ব। ১৪৩ দিনে কোরআন মুখস্থ করা আমাদের মাদ্রাসার ইতিহাসে এই প্রথম। এটি এক বিরল দৃষ্টান্ত। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাবিতে ঘাস কাটার মেশিন ভেঙে যুবকের মাথায় ঢুকল ব্লেড

জাবি প্রতিনিধি 
হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আহত যুবককে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আহত যুবককে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ঘাস কাটার যন্ত্র (মেশিন) ভেঙে ব্লেড ছিটকে মাথায় ঢুকে সুমন মিয়া (২৬) নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা এবং জাবি স্পোর্টস ক্লাব আয়োজিত তিন দিনব্যাপী নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট উপলক্ষে বরাদ্দ স্টলে কাঁকড়া ফ্রাই বিক্রি করতেন।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ঘটনার পরপরই তাঁকে প্রথমে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট একাধিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৩ অক্টোবর থেকে জাবি স্পোর্টস ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় তিন দিনব্যাপী নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়। শনিবার ছিল খেলার শেষ দিন। টুর্নামেন্টে ক্লাবের সভাপতি আরশাদ হাবিব বিশালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক বন্ধু একটি স্টল বরাদ্দ নেন, যেখানে সুমন মিয়া ও জাবির এক হোটেল কর্মচারী কাজ করতেন।

এদিকে বিশালের অনুরোধে অনানুষ্ঠানিকভাবে মাঠ প্রস্তুতের কাজ করতেন শারীরিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী আবুল হোসেন। গতকাল শেষ দিন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে এসে মাঠ প্রস্তুতের কাজ শেষে হাতে সময় থাকায় মেশিন দিয়ে ঘাস কাটা শুরু করেন তিনি। ঘাস কাটার সময় মেশিনের ব্লেড মাটিতে থাকা একটি ইটে লেগে ভেঙে যায়। ব্লেডের সেই অংশ ছিটকে গিয়ে পাশের স্টলে দাঁড়িয়ে থাকা সুমন মিয়ার মাথায় ঢোকে।

সুমন মিয়ার পাশের স্টলে পিঠার দোকান ছিল নাদিয়া মীম নামের সিটি ইউনিভার্সিটির সাবেক এক শিক্ষার্থীর। নাদিয়া বলেন, সুমন স্টলে দাঁড়ানো অবস্থায় ব্লেড ছিটকে এসে লাগার সঙ্গে সঙ্গে ঢলে পড়ে যান। প্রথমে ভয়ে কেউ তাকে উঠায়নি। পরে বিশাল এসে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য মোটরসাইকেলে উঠিয়ে দেন।

কর্মচারী আবুল হোসেন বলেন, ‘হাতে একটু সময় থাকায় ঘাস কাটছিলাম। মেশিনে ইট লেগে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটবে, এটা ভাবতে পারছি না।’

শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নাসরিন বেগম বলেন, ‘আজ ছুটির দিন থাকায় আমি অফিসে ছিলাম না। আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীরাও ছুটিতে ছিল। তবে জাবি স্পোর্টস ক্লাবের নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট চলমান থাকায় তিনি সেখানে ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত আহত ব্যক্তিকে এনাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। রাত ১টার দিকে তার অপারেশন শুরু হয়।’

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহত সুমনের মাথায় অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত নন। ৭২ ঘণ্টা অবজারভেশনে থাকবেন তিনি। নিবিড় পরিচর্যার পরামর্শ থাকলেও এখন পর্যন্ত তার ব্যবস্থা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি টেকনাফের বসতবাড়ি ও দোকানে, নারী আহত

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি ও ছিদ্র হয়ে যাওয়া টেকনাফের একটি ঘরের বেড়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি ও ছিদ্র হয়ে যাওয়া টেকনাফের একটি ঘরের বেড়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের জেরে ছোড়া গুলি বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় এসে পড়েছে। এই ঘটনায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের তেচ্ছি ব্রিজ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। এ ছাড়া গুলিতে একটি বসতবাড়ি ও একটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আহত নারীর নাম ছেনুয়ারা (২৭)। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলের দিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভয়াবহ গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। কিছু সময় পর ওপার থেকে ছোড়া দুটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তেচ্ছি ব্রিজ এলাকার একটি বসতবাড়ি ও কম্পিউটারের দোকানে এসে লাগে। এতে ঘরের টিন ও দেয়াল ছিদ্র হয়ে যায়।

ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় অনেক পরিবার শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘মিয়ানমারের দিক থেকে ছোড়া গুলি এপারে এসে পড়ায় একজন নারী আহত হয়েছেন। সীমান্তের মানুষ এখন চরম আতঙ্কে রয়েছে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

নুর আহমেদ আনোয়ারী আরও বলেন, যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে সীমান্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত