Ajker Patrika

বিতর্ক সৃষ্টির কাজে হাত দেবে না সরকার, জাতীয় সংগীত পরিবর্তন প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬: ৪০
বিতর্ক সৃষ্টির কাজে হাত দেবে না সরকার, জাতীয় সংগীত পরিবর্তন প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কোনো জায়গায় হাত দেবে না সরকার। আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহী ইসলামিক ফাউন্ডেশন চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। 

উপদেষ্টা বলেন, ‘এগুলো বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস। আমাদের প্রধান উপদেষ্টাও বারবার বলেছেন, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কোনো জায়গায় আমরা হাত দেব না। আমরা হলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশনকে রিস্টোর করা। পলিটিক্যাল স্ট্যাবিলিটি এনসিওর করা।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের ইকোনমিতে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ফরেন এক্সচেঞ্জ এসেছে। আরও আসছে। এটাকে যদি আমরা আরও বেশি বাড়াতে পারি, একটা কনজিনিয়াল অ্যাটমোস্ফিয়ার যদি তৈরি হয়, যখনই তৈরি হয়—আমরা নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত দলকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা বিদায় নেব।’ 

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে যে বিজয় এসেছে, এরপরে বিদেশি মিডিয়াতে বলা হচ্ছে এখানে সনাতন ধর্ম, বৌদ্ধধর্ম—এসব ধর্মের মানুষের ঘরবাড়ি-উপাসনালয়ে হামলা হচ্ছে। হামলা যে একেবারে হয়নি, সেটা বলব না। তবে সেটা একেবারে বিক্ষিপ্ত। এটা খুব বেশি গুরুত্ব রাখে না।’ 

তিনি বলেন, ‘মসজিদ, মন্দির, মাজার ভাঙা গর্হিত কাজ। যারা এ সমস্ত কাজ করে, তারা মানবতার শত্রু। তারা ক্রিমিনাল। এদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের জানালে মুহূর্তের মধ্যে ব্যবস্থা নেব। আমরা মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মাদ্রাসার ছাত্রদের পূজার সময় সম্পৃক্ত করা হলে তারা মন্দির পাহারা দেবে। দুর্গাপূজা আমরা প্রতিটি জায়গায় স্ট্রাইকিং ফোর্স দেব। পাশাপাশি স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করব। তাহলে আমার মনে হয় কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না।’ 

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমার চিফ অ্যাডভাইজারসহ আমরা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়েছি। একবার না, আমি দুবার গিয়েছি। মতিঝিলে সেনা কল্যাণ সংস্থার পাশে শ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ জিও মন্দির একটা দেবোত্তর সম্পত্তি ছিল। আমরা সেটা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উদ্ধার করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইদের দিয়েছি। স্পষ্ট বলছি, কোনো দেবোত্তর সম্পত্তি যদি কেউ দখল করে, সে যত শক্তিশালীই হোক, আমরা সেটা উদ্ধার করব। অতএব, হামলার ঘটনা সত্য নয়। বিক্ষিপ্ত ঘটনা হতে পারে।’ 

তিনি বলেন, ‘দিনাজপুরের কান্তজি মন্দির, ওখানে কিছু লোক মসজিদ করবে। আমি সকাল ১০টায় জানলাম ডিসির মাধ্যমে যে কিছু লোক ওখানে এসেছে মসজিদ করবে। আমি এক মিনিটের ভেতরে আমাদের অ্যাডভাইজার গ্রুপ আছে, আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। মুহূর্তের মধ্যে র‍্যাব গিয়ে ঘিরে ফেলেছে। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যুগ যুগ ধরে ধারণ করে আসছি, এটা অটুট থাকবে। আমি শুধু মুসলমানদের উপদেষ্টা নয়।’ 

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা হজের প্যাকেজ মূল্য কমানোর পরিকল্পনা আছে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘হজের সময় হাজিরা যে টাকা দেন, তার একটি পয়সাও আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে রাখি না। তাঁদের সঙ্গে আমরা ৮০ জন ডাক্তার, আরও ২০-৩০ জন নার্স সঙ্গে রাখি। ফাস্ট এইড চিকিৎসা দিই। সৌদিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। এই খরচগুলো আমরা হাজিদের কাছ থেকে নিই না। হজের মূল যেটা খরচ বিমান ভাড়া, সৌদি আরবে থাকা-খাওয়া এবং নিরাপত্তার জন্য সৌদি আরবকে একটা টাকা দিতে হয়। এ মাসেই সৌদি হজমন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হবে। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি, তখন টাকা কমিয়ে জনগণের কাছে একটা গ্রহণযোগ্য প্যাকেজ ঘোষণা করতে চাই।’ 

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ-ভারতের সুসম্পর্ক বহাল রাখতে চাই। রাজনাথ মন্ত্রীর বক্তব্য আমরা শুনেছি। কিন্তু বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি আছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট দল ভারতে গেলে হামলা করবে, এ রকম খবরও মিডিয়াতে আসছে। এটা নিয়ে আমাদের আলাদা ক্রিকেট বোর্ড আছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে—ওনারা এটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।’ 

পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় কার্যালয় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন ধর্ম উপদেষ্টা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এই সভার আয়োজন করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় কার্যালয়ের মিলনায়তনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আলমগীর রহমান, স্থানীয় সরকারের বিভাগের পরিচালক পারভেজ রায়হান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর মাওলানা জামাল উদ্দিন সন্দীপী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থানচির বলিবাজারে পুড়ল ১৩ দোকান

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
আগুনে পুড়ছে দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে পুড়ছে দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলার বলিপাড়া ইউনিয়নের বলিবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দিবাগত গভীর রাতে হঠাৎ লাগা আগুনে বাজারের অন্তত ১৩টি দোকানঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দেড় বছরের ব্যবধানে এটি এলাকায় তৃতীয়বারের মতো বড় অগ্নিকাণ্ড।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বাজারের একটি খাবারের হোটেল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের দোকানগুলোতে।

বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি অংসিংম্যা মারমা বলেন, ‘তখন রাত গভীর হওয়ায় সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ বাজারে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত থেকে হইচই শুনে দোকান থেকে বের হয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। টিটু দাশের রেস্টুরেন্ট ও জাফর আহম্মদের সারের দোকানের মাঝখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।’

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হ্লায়ইচিং মারমা নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, ‘খুব দুর্ভাগ্য আমার। মালপত্র সরানোর কোনো সুযোগ পেলাম না।’

বলিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াঅং মারমা বলেন, ‘আগুনের ঘটনা জানার পরপরই বাজারে এসেছি। এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। আগুনে ১৩টি দোকান পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’

থানছি থানার ফায়ার স্টেশনের লিডার পিয়ার মোহাম্মদ বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে বলিপাড়া বাজারে আগুনের খবর পাই। দ্রুত দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভায়। তৎক্ষণিকভাবে মনে হচ্ছে, শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদুল্লাহ আল-ফয়সাল বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ট্রেনিংয়ের কাজে ঢাকায় আছি। বলিপাড়া বাজারে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুকনা খাবার, কম্বল দেওয়া হবে। এ ছাড়াও বান্দরবান জেলা প্রশাসককে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেরপুরে গণসংযোগে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের ঘোষণা জামায়াতের

শেরপুর প্রতিনিধি
শনিবার বিকেলে ও শুক্রবার রাতে জামায়াত ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
শনিবার বিকেলে ও শুক্রবার রাতে জামায়াত ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলামের গণসংযোগে হামলার অভিযোগ এবং তা নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় রাজনীতি। অন্যদিকে এই অবস্থায় পাল্টাপাল্টি হামলার আশঙ্কায় স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। গতকাল শনিবার বিকেলে শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণসংযোগে হামলার প্রতিবাদে আজ রোববার বিকেল ৪টায় শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর মোড় থেকে থানা মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, ২৪ অক্টোবর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর শেরপুর-১ (সদর) আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের ডাকপাড়া গ্রামে গণসংযোগে বের হলে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাধা দেন। ওই সময় দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে বিএনপির সমর্থকেরা জামায়াত নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন। সংঘর্ষে শেরপুর জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম স্বপন ও রাকিবুল হাসানসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনকে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে ওই ঘটনার পর শুক্রবার রাতে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীরা এলাকায় মুখোমুখি অবস্থান নেন। সন্ধ্যার পর থেকে শহরে পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ মিছিল হয়। হামলার অভিযোগে রাতে জামায়াত নেতা রাকিবুল হাসান বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় চারজনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভোটের গণসংযোগে এমন ন্যক্কারজনক হামলায় শেরপুরবাসী উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। এতে আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।’ তিনি ওই হামলার ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকলকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তির আওতায় আনার জন্য ও নিবার্চনী কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

সেই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ ও সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। গণসচেতনতার অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে রোববার বিকেল ৪টায় শহরের খোয়ারপাড় মোড় থেকে থানা মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ঘোষণা করেন তিনি। ওই সময় গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন শেরপুর-১ (সদর) আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও শেরপুর-২ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের এমপি প্রার্থী নুরুজ্জামান বাদল, জেলা প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি ও শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মু. গোলাম কিবরিয়া ভিপিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে এর আগে হামলার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে শুক্রবার রাতে শেরপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘জামায়াতের লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডাকপাড়া গ্রামে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে গিয়েছিল। সেখানে কয়েকটি মসজিদে মিটিং-মিছিল করে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে এলাকাবাসী এর তীব্র প্রতিবাদ করলে তারা এলাকা ছেড়ে চলে আসে। এরপর থানায় গিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। তারা মিথ্যা কথা বলছে এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে।’ তিনি ‘মিথ্যা মামলা’র তীব্র নিন্দা জানিয়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন, আক্রামুজ্জামান রাহাতসহ বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শৈলকুপায় শ্বশুরের বঁটির কোপে গৃহবধূর মৃত্যু

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে শ্বশুরের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে লিমা বেগম (২৮) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। নিহত লিমা ওই গ্রামের আব্দুর রবের স্ত্রী। রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, রোববার ভোরে গৃহবধূ লিমা বেগম নিজের ঘর থেকে বাড়ির উঠানে যান। তখন উঠানে দাঁড়িয়ে থাকা শ্বশুর মুকুল শেখ (৫০) হঠাৎ তাঁর হাতে থাকা বঁটি (ধারালো অস্ত্র) দিয়ে পুত্রবধূকে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। লিমার চিৎকারে পরিবারের অন্য সদস্যরা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।

শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আরিফুর রহমান বলেন, ‘ওই গৃহবধূকে আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তাঁর বুকের ওপরের অংশে ধারালো অস্ত্রের গুরুতর ক্ষত ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও অন্যান্য অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’

স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি, অভিযুক্ত শ্বশুর মুকুল শেখ মানসিক ভারসাম্যহীন।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুম খান এই ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযুক্ত মুকুল শেখকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মুকুল শেখ মানসিক ভারসাম্যহীন। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কার্তিকের কুয়াশায় কুড়িগ্রামে শীতের আগমনী বার্তা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
গতকাল সকালে কুড়িগ্রাম শহরের রেলস্টেশন এলাকায় কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল সকালে কুড়িগ্রাম শহরের রেলস্টেশন এলাকায় কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কার্তিকের শুরুতেই কুড়িগ্রামে শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। পৌষ আসতে এখনো প্রায় দুই মাস বাকি থাকলেও প্রতি রাতে জেলাজুড়ে কুয়াশার স্পষ্ট উপস্থিতি শীতের আগমনকে ত্বরান্বিত করছে। দিনে সূর্যের দাপুটে উপস্থিতি থাকলেও রাতের আবহাওয়া কুয়াশার চাদরের দখলে যেতে শুরু করেছে। জানান দিচ্ছে শীত এল বলে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, জেলায় মধ্য অক্টোবর থেকে শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। দিন-রাতের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে এসেছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহে জেলায় সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর একটু আগেই শীতের আগমন হচ্ছে। সন্ধ্যার পর কুয়াশা পড়ছে। গাছের পাতা, ফসল ও ঘাস কিংবা খোলা আকাশের নিচে থাকা মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো বস্তুতে পড়ে থাকা কুয়াশার ফোঁটা জানান দিচ্ছে শীতের আগমন। রাতের বেলা গাছের পাতা গড়িয়ে কুয়াশা ঘরের টিনের চালে পড়ছে টিপটিপ শব্দে। ভোরবেলা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে চারপাশ। তবে সে তুলনায় শীতানুভূতি নেই। এখনো বৈদ্যুতিক পাখা ছাড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। যদিও ইতিমধ্যে বাজারে ও সড়কের পাশের দোকানগুলোতে শীতের কাপড়ের পসরা সাজানো শুরু হয়েছে। যেন শীতকে বরণের প্রস্তুতি।

বিকেল হতেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে নানা রকম শীতের পিঠা তৈরি শুরু করেছেন। ভাপা পিঠার সঙ্গে চলছে চিতই পিঠা বিক্রি।

কুড়িগ্রাম শহরের বাসিন্দা মুকুল বলেন, এ বছর একটু আগাম কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। রাতে ঘরের বাইরে শীত অনুভূত হচ্ছে। সড়কে গাড়ি চালালে কুয়াশার কুণ্ডলীর কারণে পথ চলতে সমস্যা হচ্ছে। জেলায় ইতিমধ্যে শীত শুরু হয়েছে। তবে ঠান্ডা তুলনামূলক কম।

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে সকালের কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে সকালের কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর বলেন, ‘রাতে ভালোই কুয়াশা পড়া শুরু হইছে। এখনো সেই অর্থে ঠান্ডা লাগে না। তবে বোঝা যাচ্ছে যে ঠান্ডা শুরু হচ্ছে।’

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ আল-আমিন মাসুদ বলেন, ‘আজ (শনিবার) সকালে সড়কপথে চলার সময় কুড়িগ্রামের রাজারহাটে কুয়াশার মাত্রা দেখে মনে হয়েছে যেন পৌষ মাস শুরু হয়েছে। তবে দিনে গরম, কিন্তু রাতের তাপমাত্রা কমছে। এ সময় শিশুদের সুরক্ষায় বাড়তি যত্ন নেওয়া উচিত। রাতে বৈদ্যুতিক পাখার গতি কমিয়ে রাখাসহ শিশুদের বাইরে নিয়ে গেলে ধুলাবালু ও ঠান্ডা এড়িয়ে চলতে হবে।’

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমছে। ইতিমধ্যে শীত শুরু হয়েছে। মধ্য নভেম্বর থেকে তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত