Ajker Patrika

ঢাবি-রুয়েটসহ ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত জুবায়েরের

 লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
জুবায়ের ইবনে আল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
জুবায়ের ইবনে আল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

দেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও আর্থিক অনটনে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জুবায়ের ইবনে আল মাহমুদ নামের এক শিক্ষার্থীর। তিনি নাটোরের লালপুরের ঈশ্বরদী ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের দরিদ্র রিকশাচালক কামরুজ্জামান ইমন ও মোছা. সাবিনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে।

আজ মঙ্গলবার জুবায়েরের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, তিনি ঢাবি, রুয়েট, রাবি, বুটেক্স, পবিপ্রবি ও শাবিপ্রবিতে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। তাঁর এমন সাফল্যে এলাকাবাসী আনন্দিত হলেও দারিদ্র্যের কারণে আনন্দ নেই মা-বাবার মনে।

জুবায়েরের বাবা কামরুজ্জামান ইমন বলেন, তাঁর তিন ছেলেমেয়ে। ছোট মেয়ে মরিয়মের বয়স ৪ বছর। মেজ মেয়েটি সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বড় ছেলের এমন সাফল্যে অনেক খুশি হয়েছেন; কিন্তু তাঁর পড়াশোনার খরচ চালানোর সামর্থ্য নেই। তিনি রাজশাহী শহরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে এক বছর ধরে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে পড়ে রয়েছেন। এখন নিজের চিকিৎসা ও পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বাড়ি ছাড়া আর কোনো জমি নেই তাঁর। এ অবস্থায় কীভাবে ছেলের পড়াশোনার খরচ চালাবেন, বুঝতে পারছেন না।

জুবায়ের লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও লালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। অনলাইনে প্রস্তুতিমূলক ক্লাস করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আর্থিক সংকটের কারণে আমাকে সংগ্রাম ও কাজ করে পড়াশোনা করতে হয়েছে। শিক্ষকেরা সব সময় সাহায্য করেছেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

জুবায়ের জানান, তাঁর স্বপ্ন পাইলট হওয়া। তাঁর এই স্বপ্ন পূরণ করতে সবাইকে পাশে চান।

শিবনগর গ্রামের মো. রনি ফরাজী বলেন, ‘জুবায়েরের বাবা দরিদ্র ও অসুস্থ। তার পড়াশোনার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণের আবেদন জানাই।’

এ বিষয়ে লালপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘জুবায়ের অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী। এইচএসসি পরীক্ষায় সে উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে। কলেজে পড়ার সময় তাঁকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছি। তার বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়ায় উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।’ এমন প্রতিভাবান ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় সাহায্য করার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান প্রশিক্ষণে থাকায় বর্তমানে দায়িত্বে রয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজিজুল কবির। তিনি বলেন, ‘ইউএনও মহোদয় প্রশিক্ষণ থেকে এলে তাঁর সঙ্গে আলাপ করে মেধাবী শিক্ষার্থী জুবায়েরের পড়াশোনার জন্য সরকারিভাবে সহায়তা প্রদানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত