Ajker Patrika

বাঘায় কর্মীকে বিএনপির এক গ্রুপ আটকাল, ছাড়াল আরেক গ্রুপ

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি             
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২২: ৩১
বাঘায় কর্মীকে বিএনপির এক গ্রুপ আটকাল, ছাড়াল আরেক গ্রুপ

রাজশাহীর বাঘায় ইউনিয়ন বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরও প্রকাশ্যে এসেছে। এক গ্রুপ ডিবি পুলিশের মাধ্যমে দলের সাবেক নেতাকে আটকের ব্যবস্থা করার পরদিন আরেক গ্রুপ থানায় গিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, গ্রুপিং ও বিভক্তি দলে আরও গভীর হচ্ছে।

জানা গেছে, গত বুধবার রাতে বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মুনজুরুল হাসান ওরফে মুনজু সরকারকে বাউসা বাজার থেকে আটক করে রাজশাহী ডিবি পুলিশ। পরে তাঁকে বাঘা থানায় হস্তান্তর করা হয়। রাতভর দলের নেতাদের তদবিরেও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।

এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মুনজু সরকারের পক্ষের নেতা-কর্মীরা থানায় গিয়ে তদবির করে তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।

মুনজু সরকার জেলা বিএনপির সাবেক নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলের অনুসারী বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি রেজাউল করিমকে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

মুনজু সরকারের পক্ষের নেতাদের অভিযোগ, রেজাউল করিম দলের নাম ভাঙিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। তাঁদের দাবি, রেজাউল করিমই মুনজু সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত লোকজনকে ব্যবহার করে বিএনপি কর্মীদের হয়রানি করছেন।

রেজাউল করিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মুনজু সরকার ও তাঁর প্রয়াত বাবা বিএনপির সক্রিয় কর্মী হলেও তাঁরা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা এবং বর্তমান প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মীয়তার সুবাদে ভোট করেছেন এবং বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানি করেছেন।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক জানান, মুনজু সরকারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

দলের একাংশ বলছে, এই ঘটনাগুলোতে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরও প্রকট হচ্ছে। গ্রুপিংয়ের কারণে তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এ ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। দলীয় বিভক্তি দ্রুত নিরসনের দাবি উঠেছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরে বিএনপি অফিসে হামলা: আ.লীগ নেতা কারাগারে

­যশোর প্রতিনিধি
লুৎফর কবীর বিজু। ছবি: সংগৃহীত
লুৎফর কবীর বিজু। ছবি: সংগৃহীত

যশোরে বিএনপি অফিসে হামলা মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা লুৎফর কবীর বিজুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শহরের আরএন রোড এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়, পরে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার লুৎফর কবীর বিজু যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা-বিষয়ক সম্পাদক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে তিনি বাসায় অবস্থান করছেন। পুলিশের একটি অভিযানে তাঁকে আটক করা হয়।

বিজুর বিরুদ্ধে শহরের লালদীঘির বিএনপির দলীয় কার্যালয় পোড়ানো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে আসায় তাঁকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট রাজনীতিক পটপরিবর্তনের আগে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত ছিল। একটি পক্ষের নিয়ন্ত্রণ করতেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, অন্যটি স্থানীয় যশোর-৩ (সদর) সাবেক সংসদ কাজী নাবিল আহমেদ। বিজু কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারী ছিলেন। রাজনীতিক পটপরিবর্তনের পর বিজু আত্মগোপনে ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এভারকেয়ারে নেওয়া হচ্ছে হাদিকে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৫৩
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক সার্জারির পর এভারকেয়ারে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘উনার (হাদির) মাথায় বুলেটের আঘাত আছে। বুকে এবং পায়েও আঘাত আছে। ধারণা করা হচ্ছে, পায়ের আঘাতটা রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে হতে পারে।’

রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় আজ দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা হাদিকে গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শরিফ ওসমান হাদিকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শরিফ ওসমান হাদিকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিকেল ৫টার পর ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁর (হাদির) মাথার ভেতরে গুলি আছে। বর্তমানে অপারেশন থিয়েটারে তাঁর সার্জারি চলছে।’

পরে সন্ধ্যার দিকে হাদির শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‎আমরা ঢাকা মেডিকেলে তাঁর একটা প্রাথমিক সার্জারি করেছি। এখন তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠাচ্ছি। পরিবারের সম্মতিতেই তাঁকে এভারকেয়ারে নেওয়া হচ্ছে। পরিবার প্রথম দিকে সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এভারকেয়ারে নেওয়ার কথা বলেছে। আমরা তাঁদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা প্রস্তুত রয়েছে। এখনই তাঁকে সেখানে নেওয়ার ব্যবস্থা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক ব্লকেড

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক ব্লকেড। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক ব্লকেড। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক ব্লকেড করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মীরা।

আজ শুক্রবার বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কলেজ মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে ও ব্যারিকেড দিয়ে এ অবরোধ সৃষ্টি করেন তাঁরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় এবং ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীরা।

হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক ব্লকেড। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক ব্লকেড। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম সাগর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তাঁরা বলেন, শরীফ ওসমান বিন হাদীর ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারের আওতায় আনতে হবে। না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, শরীফ ওসমান বিন হাদী ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকার বাসিন্দা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ হবে কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে: বদিউল আলম মজুমদার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘বাংলাদেশ আসন্ন নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রসঙ্গে’ আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘বাংলাদেশ আসন্ন নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রসঙ্গে’ আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচন হবে কি না সেই আশঙ্কা বহুলাংশে দূরীভূত হলেও সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘বাংলাদেশ আসন্ন নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রসঙ্গে’ আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এ সভার আয়োজন করে।

সভায় আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমার মনে হয়, নির্বাচন হবে না—এই আশঙ্কাটা বহুলাংশে দূরীভূত হয়েছে। পুরোপুরি দূরীভূত হয় নাই। কিন্তু আমার এবং অনেকের মনে দুটো প্রশ্ন। একটা হলো—নির্বাচনটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে কি না। আরেকটা প্রশ্ন হলো—গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটবে কি না।’

নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিষয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচন একটি প্রক্রিয়া এবং এর অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। ভোটার তালিকা থেকে ফলাফল ঘোষণা এবং নির্বাচনী বিরোধ মীমাংসা পর্যন্ত, এই পুরো প্রক্রিয়া কারসাজিমুক্ত, স্বচ্ছ, পক্ষপাতিত্বমুক্ত হবে কি না—এর ওপর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নির্ভর করবে।’

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গভীর সংস্কার দরকার বলে জানান নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে সহিংসতায় লিপ্ত হলে নির্বাচন নিয়ে আবার অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। তাই নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য গভীর সংস্কার দরকার।’

গণভোটের ওপর গণতান্ত্রিক উত্তরণ নির্ভর করবে বলে মনে করেন ঐকমত্য কমিশনের এই সদস্য। তিনি বলেন, ‘গণভোট পাশের ওপর নির্ভর করবে আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণ, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে কি না। গণতন্ত্রের যে সকল ঘাটতি এবং শাসন প্রক্রিয়ার যে সকল দুর্বলতা সেগুলো দূরীভূত হবে কি না তা বহুলাংশে নির্ভর করবে আমাদের এই গণভোটের ওপর।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন লেখক-গবেষক আলতাফ পারভেজ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত