Ajker Patrika

প্রচণ্ড গরমে বাড়ছে রোগী, শয্যাসংকট ও ভোগান্তি

মান্দা প্রতিনিধিদুর্গাপুর (রাজশাহী) রাজশাহীফুলবাড়ী (প্রতিনিধি) কুড়িগ্রাম
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ০৪: ০৯
শয্যাসংকটে হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। গতকাল রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শয্যাসংকটে হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। গতকাল রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গত কয়েক দিনের একটানা তাপপ্রবাহের কারণে বিভিন্ন স্থানে ডায়রিয়া ও গরমজনিত নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েকগুন বেড়েছে। রোগীর চাপ বেশি থাকায় হাসপাতালে দেখা দিয়েছে শয্যাসংকট। ফলে সিট না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দাতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে রোগীদের।

মান্দা: নওগাঁর মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া ও গরমজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে গত পাঁচ দিনে অন্তত ২৩৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৮৫ জন। আর প্রচণ্ড গরমের কারণে পানিশূন্যতা, পেটব্যথা, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে চিকিৎসা নিয়েছে আরও ১৫০ জন। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে আজ বৃহস্পতিবার ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৭ জন। ফলে বেডের অভাবে অনেক রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এসব স্থানে বিদ্যুতের সুবিধা না থাকায় গরমে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনেরা।

গত বুধবার সন্ধ্যায় পিরপালি বাজার থেকে পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন কুরসিয়া বিবি (৬০)। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকে বারান্দায় রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ নেই, ফ্যানও নেই। গরমে আর পেটব্যথায় একেবারে নাকাল অবস্থা। একটু ভালো জায়গা আর চিকিৎসার ঠিকঠাক ব্যবস্থা চাই।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজনের দাবি, দ্রুত হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা বাড়ানো, বিদ্যুতের ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

জানতে চাইলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তাসনিম হুসাইন আরিফ বলেন, ‘কোরবানির দিন থেকে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে হঠাৎ করেই রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। জনবল সংকটে আমরা চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘মাত্র চারজন চিকিৎসক নিয়ে ৫০ শয্যার হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও আবাসিক চিকিৎসাসেবা চালিয়ে নিতে হচ্ছে। হঠাৎ রোগীর চাপ অনেক বেড়ে যাওয়ায় বেড সংকুলান সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অনেক রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। রোগীর চাপ এ রকম থাকলে আমাদের আরও সমস্যায় পড়তে হতে পারে।’

দুর্গাপুর: রাজশাহীর দুর্গাপুরে ঈদের পর হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি রোগী ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত সমস্যার। এদিকে রোগীর চাপ থাকলেও উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতালের বহির্বিভাগে মাত্র দুজন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। ঈদের পর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ৭০ জন ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ার রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি ও বহির্বিভাগে ১৫-২০ জন ডায়রিয়ায় ও পেটের পীড়াজনিত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গত চার দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে ৭০ জন ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ১০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও মধ্যে বয়সী লোক বেশি রয়েছে।

গতকাল বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, রোগীর চাপ থাকলেও চিকিৎসক কম। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে বহির্বিভাগে মাত্র দুজন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। চক্ষু, মেডিসিন, শিশু, হাড়জোড় এমনকি টিএইচওর কক্ষ বন্ধ পাওয়া গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শিশুসহ ১০ জন ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত রোগে ভর্তি হয়েছে। এর আগে ঈদের পর থেকে প্রায় ৭০ জন শিশু, নারী-পুরুষ ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছে।

এদিকে হঠাৎ ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। তাঁরা জানান, ঈদের পর ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত রোগী বেশি আসছে।

জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঈদের পর প্রচণ্ড গরম ও খাদ্য অভ্যাসের কারণে ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। অনেকে ভর্তি হয়ে সুস্থ বাড়ি ফিরছে এবং কিছু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।

রুহুল আমিন বলেন, একটু সচেতন হলেই ডায়রিয়া ও পেটের পীড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এ জন্য এ সময় বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও চর্বি যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।

ফুলবাড়ী: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অনেকে আখের রস, লেবুর পানি ও শরবত খেয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করছেন। দুপুর ১২টার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত ফাঁকা থাকছে ফুলবাড়ী পৌর শহরের রাস্তাঘাট। দাবদাহ আর গরমে চাহিদা বেড়েছে দই, ঘোল, শরবত ও তালের শাঁসের।

উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের কৃষিশ্রমিক ইলিয়াস হেম্ব্রম ও বেতদীঘি ইউনিয়নের সূর্যপাড়া গ্রামের কৃষিশ্রমিক শ্যামল হাঁসদা বলেন, ‘দাবদাহের কারণে মাঠে কাজ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছি। তীব্র দাবদাহে জন্য খেতখামারে বেশিক্ষণ টিকে থাকা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন নারী কৃষিশ্রমিক রাস্তার কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দাবদাহের জন্য।’

পৌর এলাকার রিকশাচালক হাসান আলী বলেন, কয়েক দিন ধরে ভ্যাপসা গরমে রাস্তায় লোকজন পাওয়া যাচ্ছে না। সকালে রিকশা নিয়ে বের হলেও যাত্রীর অভাবে তেমন আয়-রোজগার হয়নি। রাস্তা থাকছে ফাঁকা। আয় না হওয়ায় অনেকে বিকেলে রিকশা বের করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, বর্তমানে মাঝারি তাপপ্রবাহের জন্য মানুষ সর্দি-জ্বর, গলাব্যথা, ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানাসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এ সময় রোদ ও গরম এড়িয়ে চলতে হবে, বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে নিখোঁজ যুবকের হাত-পা ও মুখ বাঁধা লাশ উদ্ধার

সিলেট প্রতিনিধি
ইমন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
ইমন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের বিয়ানীবাজারে ইমন আহমদ (২২) নামের এক যুবকের হাত-পা ও মুখ বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের কোনা শালেস্বর গ্রামের একটি মৎস্য আড়তের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত ইমন আহমদ কুড়ারবাজার ইউনিয়নের খশির নামনগর গ্রামের মুতলিব মিয়ার ছেলে।

এর আগে গত রোববার ইমন আহমদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ আশরাফুল (২৩) নামের এক যুবককে আটক করে।

পুলিশ জানায়, গত রোববার ওই যুবক নিখোঁজ হন। পরদিন পরিবার থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। আর গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ আশরাফুলকে সন্দেহজনক হিসেবে আটক করে।

তাঁর দেওয়া তথ্যমতে আজ বুধবার দুপুরে ওই আড়তের পাশ থেকে ইমনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ইমন আহমদ একটি আইফোন ব্যবহার করতেন। ওই ফোনের প্রতি দুর্বলতা ছিল আশরাফুলের। মূলত ফোন ছিনতাই নিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, আশরাফুলের দেওয়া তথ্যমতে ইমনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।

তবে ওই আইফোন উদ্ধার করা যায়নি এখনো। ময়নাতদন্তের জন্য ইমনের লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ইমনের পরিবারের লোকজন থানায় এসেছেন। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুষ্ঠু নির্বাচন করার সক্ষমতার শঙ্কা দূর হচ্ছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগে আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগে আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, সুষ্ঠু একটি নির্বাচন করার জন্য সক্ষমতার ব্যাপারে যে শঙ্কা, সেই শঙ্কা দূর হচ্ছে না। সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে এই শঙ্কা দূর করে মানুষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অবশ্যই আয়োজন করতে হবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন তিনি করে দেখাবেন। আমরা তার অপেক্ষায় আছি।’

আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে এক হোটেলে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগ ‘আঞ্চলিক পরামর্শ সভা’ শেষে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় বলেন, ‘আমার কাছে এমন কোনো সার্ভে (জরিপ) নেই, যার ভিত্তিতে আমি বলতে পারব—মানুষ মনে করে নির্বাচন হবে। আমি এর আগেও বলেছি, নির্বাচনটি ক্রমান্বয়ে একটা অবধারিত বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। নির্বাচনের পক্ষের শক্তি অনেক বেশি। কারণ, দেশের নাগরিক, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্তর্বর্তী সরকারও নির্বাচন চায়।’

দেবপ্রিয় বলেন, ‘একদিকে অসম্ভব একটা পরিবর্তন সম্ভাবনার চিন্তা, অন্যদিকে একটা আস্থার সংকটও একই সঙ্গে আছে। এই দুটোর মধ্যেই আমরা বসবাস করছি। জনগণের ভূমিকা নিয়ে এই ফাঁকা আমাদের মেলাতে হবে। রাজনীতিবিদদের আয়-ব্যয়ের হিসাবগুলো আরও স্বচ্ছতার সঙ্গে কীভাবে সামনে আনা যায়, পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের, আত্মীয়স্বজনদেরও সহায়-সম্পত্তির বিষয়টিও সামনে আসছে।’

দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে কী প্রত্যাশা, তা জানতে আমরা সপ্তমবারের মতো স্থানীয় পর্যায়ে নাগরিকদের কাছে এসেছি। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রদের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা হয়েছে। যে বিষয়টি লক্ষণীয়, তা হলো—এখন আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আলোচনা করে কতগুলো সাধারণ একই রকম অভিন্ন সুর খুঁজে পাচ্ছি। সবাই সুশাসনের জন্য, জবাবদিহির জন্য, আইনের শাসনের জন্য, নিরাপত্তার জন্য, অধিকারের জন্য ইত্যাদি বিষয়গুলোকে সাধারণভাবে সামনে নিয়ে আসছেন। সবার প্রত্যাশা একটি দক্ষ প্রশাসন, একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, একটি নিরপেক্ষ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইত্যাদির বিষয়ে সাধারণ ধারণা সকলের মধ্যে আছে। এই বিষয়গুলো রাজনীতিবিদেরা তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারের ভেতরে কীভাবে স্থান করে দেবেন, এটি জানার অপেক্ষায় আছেন সবাই।’

গণতন্ত্র বিশ্লেষক দেবপ্রিয় বলেন, বিগত সরকারের মতো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও ঘোষণা দিয়েছিল, তারা তাদের মন্ত্রিপরিষদের বা সরকারপ্রধানের সম্পত্তির হিসাব দেবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মানুষের অনেক বড় হতাশা রয়েছে যে, আগের মতোই এবারও সরকার সেটা পালন করল না। ফলে আগামী সরকারকে একই কাজ না করার ক্ষেত্রে একটা উৎসাহ দিয়ে গেল কি না, তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।

দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে, নাগরিক প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে এ লক্ষ্যে আমরা দুটো কাজ করছি। এক, যেসব প্রতিশ্রুতি ও সংস্কারের কথা হচ্ছে, তা একটা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে গিয়ে আমরা রিফর্ম ওয়াচ তৈরি করেছি। সেটা ১৪ ডিসেম্বর আমরা উদ্বোধন করব। একইভাবে দেশব্যাপী যে আলোচনাগুলো হলো, এটার নাগরিক প্রত্যাশাগুলোকে একত্র করে একটি নির্বাচনী নাগরিক ইশতেহার তৈরি করে ২০ ডিসেম্বর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হাতে আমরা তুলে দেব। এটাকে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী অবস্থায় আমরা যাতে মনোযোগে রাখি, সেটার চেষ্টাও আমরা করব।’

এর আগে, পরামর্শ সভায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নবীগঞ্জে ইটভাটার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
ইটভাটায় অভিযান।  ছবি: আজকের পত্রিকা
ইটভাটায় অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় কৃষিজমি নষ্ট ও পরিবেশ আইন লঙ্ঘনের দায়ে শিরিন ব্রিকস নামের একটি ইটভাটার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাশেম ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই জরিমানা করেন।

জানা গেছে, বিকেলে আউশকান্দি ইউনিয়নের জালালপুর এলাকায় অবস্থিত শিরিন ব্রিকসে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাশেম।

অভিযানকালে ইটভাটাটিতে কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার, ইট পোড়ানোর কাজে কাঠ ব্যবহার, কৃষিজমির ভেতরে ইটভাটা স্থাপন এবং ইট পোড়ানোর লাইসেন্স নবায়ন না করার মতো বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া যায়।

এসব অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ইটভাটার মালিক সানুর মিয়াকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জ কার্যালয়ের প্রসিকিউটর ইন্সপেক্টর হরিপদ দাস সহযোগিতা করেন।

নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাশেম মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে বহিরাগতকে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা, রামদা নিয়ে কলেজশিক্ষকদের হুমকি

ফরিদপুর প্রতিনিধি
অস্ত্র হাতে যুবক।  ছবি: সংগৃহীত
অস্ত্র হাতে যুবক। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আল সাদ নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। কলেজটিতে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালে জোরপূর্বক কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ওই যুবক এমন কাণ্ড ঘটায় বলে কলেজ সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া কলেজটির সিসি ক্যামেরায় সম্পূর্ণ দৃশ্য ধরা পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মোটরসাইকেলে দুই যুবক কলেজে প্রবেশ করে। পেছনে বসা আল সাদের হাতে বড় আকৃতির দেশীয় অস্ত্র, রামদা। এ সময় অনেকে দৌড়ে সরে যায়। এরপর কলেজের মূল ভবনে প্রবেশ করে তারা। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যায়।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার আলফডাঙ্গা পৌরসভার কামারগ্রামে অবস্থিত আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় বিএনপির নেতারা কলেজে এসে অধ্যক্ষের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই যুবক পৌরসভার কুসুমদি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। পূর্বে ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। বর্তমানে ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক এবং তাঁর মামা মো. আমিরুল ইসলাম পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর সঙ্গে থাকা অপর যুবকের নাম সাদি (২৫)। সে পৌরসভার শ্রীরামপুর এলাকার গফুর খাঁর ছেলে।

বিষয়টি নিয়ে আজ বুধবার রাত ৮টার দিকে কথা হয় কলেজের অধ্যক্ষ এম এম মজিবুর রহমান মুজিবের সঙ্গে। তিনি জানান, ওই যুবকের স্ত্রী ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে পরীক্ষা চলাকালে গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তখন কলেজের পিয়ন নাজমুল বাধা দিলেও তা না মেনে কেন্দ্রের ভেতরে আসার চেষ্টা করেন।

অধ্যক্ষ মজিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন্দ্রে প্রবেশের সময় আমি তাকে বের হওয়ার অনুরোধ করি। তখন সে বলে, আমার স্ত্রী কোথায় বসেছে দেখব এবং উত্তেজিত হয়ে ওঠে। আমাকে হাত উঁচু করে বলতে থাকে, আমাকে চেনেন, আমি দেখে নেব, থানা পুলিশ দেখতেছি। তখন পরিসংখ্যানের শিক্ষক সমীর কুমার বিশ্বাস তার হাত ধরে বাধা দিলে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তখন সেখান থেকে বের হয়ে গিয়ে ২০ মিনিট পর একটি মোটরসাইকেলে রামদা নিয়ে কলেজের ভেতরে ঢুকে ত্রাস সৃষ্টি করে। তখন আমিসহ অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে ইউএনও, ওসিকে ফোন করে বিষয়টি জানালে পুলিশ আসে। এর আগেই সে চলে যায়।’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নেতারা এসে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন। তাঁদের মাধ্যমে ওই যুবক মুচলেকা দিয়েছেন।’

জানা গেছে, এ ঘটনায় আল সাদের পক্ষে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে মৌখিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খসরু। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।’

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসনাত বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে কলেজটিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। ওই যুবককে গিয়ে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

বুমরার বিতর্কিত উইকেটে ‘জড়িত’ এক ভারতীয় আম্পায়ার

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত