রিমন রহমান
রাজশাহী: রাজশাহীতে আত্মীয়-স্বজন থাকলে দেশের অন্য স্থানের বাসিন্দারা আম পাঠানোর বায়না ধরেন। আবার না চাইলেও বাগান থেকে আম নামানোর পর রাজশাহীর বাসিন্দারা আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আম পাঠান। কিন্তু রাজশাহীতে যাঁদের আত্মীয়-স্বজন নেই, তাঁদের জন্য অনলাইনই হয়ে উঠেছে ভরসা। অনলাইনে অর্ডার দিলেই কুরিয়ারের মাধ্যমে পৌঁছে যায় রাজশাহীর আম।
কৃষি বিভাগ বলছে, ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার পর থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে রাজশাহীর আম বিক্রি শুরু হয়েছে। পাঁচ বছর ধরে অনলাইনে আম বিক্রি বেড়েছে। শিক্ষিত তরুণেরাই এ পেশায় বেশি ঝুঁকছেন। কেউ কেউ ওয়েবসাইট খুলে আবার কেউ ফেসবুকে প্রচার চালিয়ে আমের রমরমা ভার্চ্যুয়াল বাজার তৈরি করেছেন। চলতি মৌসুমে অন্তত ৫০০ জন অনলাইনে আমের অর্ডার নিচ্ছেন। সময়মতো তাঁরা আমও পাঠাচ্ছেন। আমের মান কিংবা অন্য কোনোভাবে ক্রেতারা প্রতারিত হয়েছেন বলে কোনো অভিযোগ পায়নি কৃষি বিভাগ।
‘রাজশাহী এক্সপ্রেস’ নামের একটি ওয়েবসাইটে ঢুকতেই আম বিক্রির বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। গোপালভোগ, হিমসাগর আর লক্ষণভোগ আমে ঠাসা ওয়েবসাইটটি। ফেসবুকেও দেখা যাচ্ছে অসংখ্য আম বিক্রির পেজ। রাজশাহী মহানগরীর তেরোখাদিয়া এলাকার বাসিন্দা সারোয়ার হোসেনও একটি পেজ পরিচালনা করেন। তিনি জানালেন, দুই বছর ধরে আমের মৌসুমে অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে আম পাঠাচ্ছেন। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ মণ আম পাঠিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি পাঠিয়েছেন গোপালভোগ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের নানা প্রান্তে গেছে তাঁর আম।
রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারী এলাকার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম ‘অনলাইন ম্যাঙ্গো শপ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ চালান। পেজটি নিয়ে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। প্রতিনিয়ত আমের অর্ডার আসছে। বাগান থেকে আম সংগ্রহ, ক্যারেটে ভরা, কুরিয়ার সার্ভিসে পৌঁছে দেওয়াসহ সব কাজই করছেন নিজে উপস্থিত থেকে। একের পর এক অর্ডার নিতে সব সময় কাছেই থাকছে ল্যাপটপ। বাগানমালিক আম নামান, রাশেদুল বাগানে বসেই ক্রেতাদের আম পাড়ার ছবি দেখান। ল্যাপটপে চোখ রেখে অর্ডার নেন। ২০১২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করা রাশেদুলের কাছে ক্রেতার সন্তুষ্টির মাধ্যমে নিজের সুনাম অর্জনটাই বড় কথা।
রাশেদুল জানালেন, এবার জেলা প্রশাসন গোপালভোগ আম নামানোর তারিখ নির্ধারণ করে দেয় ২০ মে। কিন্তু তার পর্যবেক্ষণে তখনো গোপালভোগ গাছে পরিপক্ব হয়নি। তাই তিনি অর্ডার নিলেও একটি আমও পাঠাননি। যাঁরা আম নেওয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠান, সবাইকেই ফেসবুক মেসেঞ্জারের একটি গ্রুপে যুক্ত করেন। গাছের পরিপক্ব আম পেতে অপেক্ষা করতে বলেন। রাশেদুল গত মঙ্গলবার (১ জুন) প্রথম ক্রেতাদের কাছে গোপালভোগ আম পাঠিয়েছেন।
রাশেদুল বলেন, ‘যাঁরা নতুন নতুন এ ব্যবসায় আসছেন, তাঁরা কোনো কিছু না বুঝেই আম পাঠাচ্ছেন। অনেক সময় অপরিপক্ব আম পাঠাচ্ছেন। ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর পরই আমে পচন ধরছে। এতে দুর্নাম হচ্ছে। তাই আমি গাছের পাকা আমই পাঠাচ্ছি। এ জন্য অপেক্ষা করেছি। কিন্তু ক্রেতারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। তাঁরা ভালো আম পেয়েছেন। তাঁরা আগামী বছরও আমার কাছ থেকে আম নেবেন। এটাই আমার প্রাপ্তি।’ তিনি বলেন, ‘দেরি হলেও পরিপক্ব হওয়ার পরই আমি গাছ থেকে আম পাড়ি। প্রয়োজনে বাগানমালিকদের বাজারের চলতি দাম থেকে মণপ্রতি ২০০ টাকা বেশি দিই। এতে বাগানমালিকেরাও আপত্তি করেননি। ফলে আমি গ্রাহকদের ভালো আম পাঠাতে পারছি।’
সাংবাদিকতায় পড়াশোনা শেষ করে রাশেদুল গত সাত বছর বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। কিন্তু চাকরির পাশাপাশি প্রতিবছর আমের মৌসুমে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে আম পাঠাতেন। গত বছর এক চালানেই তিনি ৩ হাজার ৬০০ কেজি আম পাঠান। কিন্তু শ্রমিকেরা ভুলভাবে প্যাকেট করেছিলেন বলে ১ হাজার ৩৬০ কেজি আম নষ্ট হয়ে যায়। এবার আমের ব্যবসা ভালোভাবে করতে গত এপ্রিলে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। সর্বশেষ একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। রাশেদুল বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি আমাকে বলল যে, কোনো একটি কাজ করতে হবে। তাই আমি ব্যবসাটাকেই বেছে নিলাম। কারণ, আমি উদ্যোক্তা হতে চাই। খুব ভালো সাড়াও পেয়েছি। আর কয়দিন পর প্রতিদিন আমি অন্তত দুই টন করে আম পাঠাব। এখন সব আম পাঠাচ্ছি ইউএসবি এক্সপ্রেস কুরিয়ার ও পার্সেল সার্ভিসের মাধ্যমে। ইউএসবি কম খরচে এক দিনেই ঢাকায় আম পৌঁছে দিচ্ছে।’
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বলিহার গ্রামের সৌমেন মণ্ডল অনলাইনের বড় একটি বাজার তৈরি করেছেন টানা ১০ বছরের পরিশ্রমে। অনলাইনে তাঁর ফেসবুক পেজের নাম ‘অনিমা আম বাজার’। সৌমেনের ক্রেতাদের অধিকাংশই বিভিন্ন ব্যাংকে কর্মরত। প্রতিবছরই তাঁর ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। সৌমেন জানান, প্রথম কয়েক বছর তিনি গাছে আম আসার পরই ঢাকায় গিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়গুলোতে গিয়ে জানিয়ে এসেছেন, অর্ডার দিলেই তিনি নিজের বাগানের আম পাঠাবেন। পাশাপাশি দিয়ে আসেন তাঁর ভিজিটিং কার্ড। এর পর থেকেই তাঁর আমের অর্ডার আসতে থাকে।
সৌমেন জানান, তাঁদের আট বিঘার আমবাগান আছে। ক্রেতাদের কাছে মোবাইল নম্বর আছে বলে গাছে গুটি ধরা থেকে শুরু করে আম বড় হওয়া পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রায়ই তাঁরা হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিওকল দেন। গাছে কেমন আম এসেছে তা দেখেন। আমে কোনো কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে কি না অথবা আমগুলো কোন পর্যায়ে রয়েছে, তার খোঁজ নেন। তাঁরা নিশ্চিত হন, এই আম নিরাপদ কি না। তারপর আম নামানোর যখন সময় হয় সৌমেন এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেন। এরপরই অর্ডার আসতে থাকে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে চলে আসে আগাম টাকাও।
সৌমেন বলেন, অনলাইনে আমের ব্যবসার জন্য প্রয়োজন সততার মাধ্যমে ক্রেতার আস্থা অর্জন। টানা ১০ বছরের পরিশ্রমে তিনি সেটি অর্জন করেছেন। এখন ব্যবসা ভালো চলছে। চলতি মৌসুমে তিনি ১২০ ক্যারেট আম পাঠিয়েছেন। প্রতি ক্যারেটে ছিল ২০ কেজি আম। গোপালভোগ আমের দাম মণ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা। তিনি ইউএসবি এক্সপ্রেস পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিস এবং জননী কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম পাঠান। এক মণ আম পাঠানোর খরচ ৪০০ টাকা। এই খরচও ক্রেতাদের। অনলাইনে আম পাঠালে মণপ্রতি তাঁর ২০০ টাকার বেশি লাভ থাকে।
রাজশাহী জেলা কৃষি কর্মকর্তা কে জে এম আবদুল আউয়াল বলেন, জেলায় এ বছর ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। এ বছর হেক্টরপ্রতি ১১ দশমিক ৯ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে। আমের উৎপাদনও ভালো হয়েছে। এ পর্যন্ত নানা জাতের গুটি ছাড়াও খিরসাপাত বা হিমসাগর, গোপালভোগ ও লক্ষণভোগ বা লখনা আম উঠেছে। আরও কিছু আম উঠতে বাকি রয়েছে।
করোনাকালেও দূরদূরান্তে আম পাঠানোর জন্য গাড়ি চলছে। কিন্তু খুচরা বাজারে করোনার প্রভাব আছে। অনেকে হাট-বাজারে এখন যেতে চাইছেন না। সে ক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে রাজশাহী থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে আম পাঠানোটা একটা ভালো দিক হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই মনে করছেন এ কৃষি কর্মকর্তা।
রাজশাহী: রাজশাহীতে আত্মীয়-স্বজন থাকলে দেশের অন্য স্থানের বাসিন্দারা আম পাঠানোর বায়না ধরেন। আবার না চাইলেও বাগান থেকে আম নামানোর পর রাজশাহীর বাসিন্দারা আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আম পাঠান। কিন্তু রাজশাহীতে যাঁদের আত্মীয়-স্বজন নেই, তাঁদের জন্য অনলাইনই হয়ে উঠেছে ভরসা। অনলাইনে অর্ডার দিলেই কুরিয়ারের মাধ্যমে পৌঁছে যায় রাজশাহীর আম।
কৃষি বিভাগ বলছে, ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার পর থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে রাজশাহীর আম বিক্রি শুরু হয়েছে। পাঁচ বছর ধরে অনলাইনে আম বিক্রি বেড়েছে। শিক্ষিত তরুণেরাই এ পেশায় বেশি ঝুঁকছেন। কেউ কেউ ওয়েবসাইট খুলে আবার কেউ ফেসবুকে প্রচার চালিয়ে আমের রমরমা ভার্চ্যুয়াল বাজার তৈরি করেছেন। চলতি মৌসুমে অন্তত ৫০০ জন অনলাইনে আমের অর্ডার নিচ্ছেন। সময়মতো তাঁরা আমও পাঠাচ্ছেন। আমের মান কিংবা অন্য কোনোভাবে ক্রেতারা প্রতারিত হয়েছেন বলে কোনো অভিযোগ পায়নি কৃষি বিভাগ।
‘রাজশাহী এক্সপ্রেস’ নামের একটি ওয়েবসাইটে ঢুকতেই আম বিক্রির বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। গোপালভোগ, হিমসাগর আর লক্ষণভোগ আমে ঠাসা ওয়েবসাইটটি। ফেসবুকেও দেখা যাচ্ছে অসংখ্য আম বিক্রির পেজ। রাজশাহী মহানগরীর তেরোখাদিয়া এলাকার বাসিন্দা সারোয়ার হোসেনও একটি পেজ পরিচালনা করেন। তিনি জানালেন, দুই বছর ধরে আমের মৌসুমে অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে আম পাঠাচ্ছেন। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ মণ আম পাঠিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি পাঠিয়েছেন গোপালভোগ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের নানা প্রান্তে গেছে তাঁর আম।
রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারী এলাকার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম ‘অনলাইন ম্যাঙ্গো শপ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ চালান। পেজটি নিয়ে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। প্রতিনিয়ত আমের অর্ডার আসছে। বাগান থেকে আম সংগ্রহ, ক্যারেটে ভরা, কুরিয়ার সার্ভিসে পৌঁছে দেওয়াসহ সব কাজই করছেন নিজে উপস্থিত থেকে। একের পর এক অর্ডার নিতে সব সময় কাছেই থাকছে ল্যাপটপ। বাগানমালিক আম নামান, রাশেদুল বাগানে বসেই ক্রেতাদের আম পাড়ার ছবি দেখান। ল্যাপটপে চোখ রেখে অর্ডার নেন। ২০১২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করা রাশেদুলের কাছে ক্রেতার সন্তুষ্টির মাধ্যমে নিজের সুনাম অর্জনটাই বড় কথা।
রাশেদুল জানালেন, এবার জেলা প্রশাসন গোপালভোগ আম নামানোর তারিখ নির্ধারণ করে দেয় ২০ মে। কিন্তু তার পর্যবেক্ষণে তখনো গোপালভোগ গাছে পরিপক্ব হয়নি। তাই তিনি অর্ডার নিলেও একটি আমও পাঠাননি। যাঁরা আম নেওয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠান, সবাইকেই ফেসবুক মেসেঞ্জারের একটি গ্রুপে যুক্ত করেন। গাছের পরিপক্ব আম পেতে অপেক্ষা করতে বলেন। রাশেদুল গত মঙ্গলবার (১ জুন) প্রথম ক্রেতাদের কাছে গোপালভোগ আম পাঠিয়েছেন।
রাশেদুল বলেন, ‘যাঁরা নতুন নতুন এ ব্যবসায় আসছেন, তাঁরা কোনো কিছু না বুঝেই আম পাঠাচ্ছেন। অনেক সময় অপরিপক্ব আম পাঠাচ্ছেন। ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর পরই আমে পচন ধরছে। এতে দুর্নাম হচ্ছে। তাই আমি গাছের পাকা আমই পাঠাচ্ছি। এ জন্য অপেক্ষা করেছি। কিন্তু ক্রেতারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। তাঁরা ভালো আম পেয়েছেন। তাঁরা আগামী বছরও আমার কাছ থেকে আম নেবেন। এটাই আমার প্রাপ্তি।’ তিনি বলেন, ‘দেরি হলেও পরিপক্ব হওয়ার পরই আমি গাছ থেকে আম পাড়ি। প্রয়োজনে বাগানমালিকদের বাজারের চলতি দাম থেকে মণপ্রতি ২০০ টাকা বেশি দিই। এতে বাগানমালিকেরাও আপত্তি করেননি। ফলে আমি গ্রাহকদের ভালো আম পাঠাতে পারছি।’
সাংবাদিকতায় পড়াশোনা শেষ করে রাশেদুল গত সাত বছর বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। কিন্তু চাকরির পাশাপাশি প্রতিবছর আমের মৌসুমে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে আম পাঠাতেন। গত বছর এক চালানেই তিনি ৩ হাজার ৬০০ কেজি আম পাঠান। কিন্তু শ্রমিকেরা ভুলভাবে প্যাকেট করেছিলেন বলে ১ হাজার ৩৬০ কেজি আম নষ্ট হয়ে যায়। এবার আমের ব্যবসা ভালোভাবে করতে গত এপ্রিলে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। সর্বশেষ একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। রাশেদুল বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি আমাকে বলল যে, কোনো একটি কাজ করতে হবে। তাই আমি ব্যবসাটাকেই বেছে নিলাম। কারণ, আমি উদ্যোক্তা হতে চাই। খুব ভালো সাড়াও পেয়েছি। আর কয়দিন পর প্রতিদিন আমি অন্তত দুই টন করে আম পাঠাব। এখন সব আম পাঠাচ্ছি ইউএসবি এক্সপ্রেস কুরিয়ার ও পার্সেল সার্ভিসের মাধ্যমে। ইউএসবি কম খরচে এক দিনেই ঢাকায় আম পৌঁছে দিচ্ছে।’
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বলিহার গ্রামের সৌমেন মণ্ডল অনলাইনের বড় একটি বাজার তৈরি করেছেন টানা ১০ বছরের পরিশ্রমে। অনলাইনে তাঁর ফেসবুক পেজের নাম ‘অনিমা আম বাজার’। সৌমেনের ক্রেতাদের অধিকাংশই বিভিন্ন ব্যাংকে কর্মরত। প্রতিবছরই তাঁর ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। সৌমেন জানান, প্রথম কয়েক বছর তিনি গাছে আম আসার পরই ঢাকায় গিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়গুলোতে গিয়ে জানিয়ে এসেছেন, অর্ডার দিলেই তিনি নিজের বাগানের আম পাঠাবেন। পাশাপাশি দিয়ে আসেন তাঁর ভিজিটিং কার্ড। এর পর থেকেই তাঁর আমের অর্ডার আসতে থাকে।
সৌমেন জানান, তাঁদের আট বিঘার আমবাগান আছে। ক্রেতাদের কাছে মোবাইল নম্বর আছে বলে গাছে গুটি ধরা থেকে শুরু করে আম বড় হওয়া পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রায়ই তাঁরা হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিওকল দেন। গাছে কেমন আম এসেছে তা দেখেন। আমে কোনো কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে কি না অথবা আমগুলো কোন পর্যায়ে রয়েছে, তার খোঁজ নেন। তাঁরা নিশ্চিত হন, এই আম নিরাপদ কি না। তারপর আম নামানোর যখন সময় হয় সৌমেন এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেন। এরপরই অর্ডার আসতে থাকে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে চলে আসে আগাম টাকাও।
সৌমেন বলেন, অনলাইনে আমের ব্যবসার জন্য প্রয়োজন সততার মাধ্যমে ক্রেতার আস্থা অর্জন। টানা ১০ বছরের পরিশ্রমে তিনি সেটি অর্জন করেছেন। এখন ব্যবসা ভালো চলছে। চলতি মৌসুমে তিনি ১২০ ক্যারেট আম পাঠিয়েছেন। প্রতি ক্যারেটে ছিল ২০ কেজি আম। গোপালভোগ আমের দাম মণ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা। তিনি ইউএসবি এক্সপ্রেস পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিস এবং জননী কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম পাঠান। এক মণ আম পাঠানোর খরচ ৪০০ টাকা। এই খরচও ক্রেতাদের। অনলাইনে আম পাঠালে মণপ্রতি তাঁর ২০০ টাকার বেশি লাভ থাকে।
রাজশাহী জেলা কৃষি কর্মকর্তা কে জে এম আবদুল আউয়াল বলেন, জেলায় এ বছর ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। এ বছর হেক্টরপ্রতি ১১ দশমিক ৯ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে। আমের উৎপাদনও ভালো হয়েছে। এ পর্যন্ত নানা জাতের গুটি ছাড়াও খিরসাপাত বা হিমসাগর, গোপালভোগ ও লক্ষণভোগ বা লখনা আম উঠেছে। আরও কিছু আম উঠতে বাকি রয়েছে।
করোনাকালেও দূরদূরান্তে আম পাঠানোর জন্য গাড়ি চলছে। কিন্তু খুচরা বাজারে করোনার প্রভাব আছে। অনেকে হাট-বাজারে এখন যেতে চাইছেন না। সে ক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে রাজশাহী থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে আম পাঠানোটা একটা ভালো দিক হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই মনে করছেন এ কৃষি কর্মকর্তা।
জোরেশোরে ঘোষণার পরেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন করতে পারেনি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক)। এতে বিভিন্ন এলাকার মানুষকে দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঈদের দিন রাত ৮টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের কথা থাকলেও পরদিন রোববার দুপুর পর্যন্ত বর্জ্য অপসারণে কাজ করতে দেখা যায় সিটি
১৪ মিনিট আগেএক মাস আগে পরকীয়া প্রেমিক আলমগীর মিয়ার সঙ্গে পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকার লক্ষ্মীপুর মধ্যপাড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় উঠেন আয়েশা খাতুন।
২৬ মিনিট আগেযশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা থেকে সোহানা আক্তার (১১) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার (৮ জুন) সকাল আটটার দিকে উপজেলার নাভারণ ইউনিয়নের মানিকালী গ্রামের একটি পুকুরে লাশটি পাওয়া যায়।
২৯ মিনিট আগেমৌলভীবাজারের বড়লেখা ও সদর উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। গতকাল শনিবার (৭ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার শ্যামের কোনা এলকায় মৌলভীবাজার-শমশেরনগর সড়কে দুটি মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে জুবেদ মিয়া (২৮) ও কমরুল মিয়া (৩০) নামে দুজন নিহত হন।
২ ঘণ্টা আগে