Ajker Patrika

নিমাই বিলে আবার চলছে অবৈধভাবে পুকুর খনন, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ১৮: ৪৩
সংবাদ সম্মেলনে পুকুর খননের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে পুকুর খননের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবার রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নিমাই বিলের কৃষিজমিতে জোরজবরদস্তি করে পুকুর খনন শুরু হয়েছে। এই অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেছে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম, সবুজ সংহতি ও রাজশাহী মহানগর। এদিন বেলা ১১টায় নগরের গণকপাড়ার একটি ক্যাফেতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের বাগমারা উপজেলার আহ্বায়ক প্রভাষক আমজাদ হোসেন। এ সময় নদী ও পরিবেশ গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী, আইনজীবী হোসেন আলী পিয়ারা, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, ভুক্তভোগী ঈশিতা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নিমাই বিলের কৃষিজমিতে জোরজবরদস্তি করে অবৈধ পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। কৃষিজমি রক্ষার বিষয়টি নিয়ে চার-পাঁচ মাস ধরে প্রশাসনের দৃষ্টিতে আনার জন্য মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এর পরও প্রতিকার না পেয়ে গত ১৯ মার্চ আদালতে একটি মামলা হয়। বাগমারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামলাটির তদন্ত করছেন। এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হলে গত ৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট করা হয়। উচ্চ আদালত বাগমারা উপজেলায় পুকুর খননে স্থগিতাদেশসহ জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও এসি ল্যান্ডকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নির্দেশনা দিয়েছেন। এরই মধ্যে পুকুর খনন নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে কিছুদিনের জন্য কাজ বন্ধ হয়। কিন্তু এখন আবার পুকুর খনন শুরু হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আসামিরা আইন, উচ্চ আদালতের রিট পিটিশনসহ সবকিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় নিমাই বিলের প্রায় ৬০ বিঘা কৃষিজমিতে ঈদের ছুটিতে আবারও জোরেশোরে খনন শুরু করেছে। কতিপয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও ভূমিদস্যুরা এ কাজে জড়িত।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাত ১১টার পর থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ৭টি খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে খননকাজ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুকুরখেকোরা। বাগমারা থানা, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, বরং নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে তারা। অবৈধ খননের কারণে কৃষকদের আবাদ নষ্ট হয়েছে এবং জমি আবাদের অনুপযোগী হওয়ায় কৃষকেরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে পড়েছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে। এগুলো হলো অবিলম্বে কৃষিজমিতে পুকুর খনন বন্ধে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, পুকুর খননে সহায়তাকারী পুলিশ কর্মকর্তা, এসি ল্যান্ড, ইউএনওকে অপসারণসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করা; জোর করে পুকুর খনন করতে গিয়ে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা এবং সমগ্র ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় কৃষিজমিতে পুকুর খননের যে মহোৎসব চলছে, তা অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্ধ করা।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘নিমাই বিলে পুকুর খনন বন্ধ করতে ঈদের আগে আমি অন্তত সাতবার গিয়েছি। এসি ল্যান্ড তিন-চারবার গেছেন। তখন পুকুর খনন বন্ধ হয়েছিল। তারপর ঈদের ছুটিতে দুই দিন কাজ চলেছে। আমি খবর পেয়ে পরে গিয়ে আর পাইনি। এখন রাতে যদি রাতে পুকুর কাটে, তাহলে তখন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে ফাঁস দিলেন স্ত্রী

ইরানে ভূমিকম্প নিয়ে পারমাণবিক পরীক্ষার জল্পনা, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

‘আমেরিকা যুদ্ধে জড়ালে ইরানের হাতে অনেক বিকল্প আছে’

‘ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যায় নয়, গুণে বিশ্বাসী ইরান, ইসরায়েল এবার আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখবে’

এবার আক্রমণের অগ্রভাগে ড্রোন, ইরানের ‘হাইব্রিড’ হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ ইসরায়েল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত