Ajker Patrika

বেতন নেই আট মাস, ঈদের আগে মানবেতর জীবন রেশমশ্রমিকদের

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৯: ৩৯
বেতন নেই আট মাস, ঈদের আগে মানবেতর জীবন রেশমশ্রমিকদের

আট মাস ধরে মজুরি পান না রাজশাহী রেশম কারখানার শ্রমিকেরা। ঈদের আগে মজুরির টাকা পাবেন কি না তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। এই রোজায় তাহলে সংসার চলছে কীভাবে, এমন প্রশ্নে কারখানার প্রিন্টিং শাখার কর্মচারী জয়নাল আবেদীন লালন বলেন, ‘ইফতার কিংবা সাহ্‌রিতে কোনো দিন শাক, আলু ভর্তা, ডিম ভাজিই ভরসা। ইফতারে হয়তো মুড়ি মাখিয়ে খেয়ে নিই। কখনোবা ভাত থাকলেই সেটাই খেয়ে নিই।’ 

জয়নাল বলেন, ‘কোনো দিন খাই, কোনো দিন খেতে পারি না। এই অবস্থায় সংসার চলছে। ধারদেনা অনেক হয়ে গেছে। দোকানদারও আর বাকি দিতে চান না। আমাদের দৈনিক বেতন ৩০০ টাকা। এতে কি হয়? এক কেজি আটা এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। এক কেজি চাল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। তাহলে কীভাবে আমাদের সংসার চলে?’ 

 ‘ঈদের আগে বেতন পাব বলেও তো মনে হচ্ছে না। তিন রোজাতে টাকা দেওয়ার কথা ছিল, আজ ১৪ রোজা। আর কয়েক দিন বাদে ঈদ। সন্তানদের জামা-কাপড়ও বা কিনব কীভাবে জানা নেই।’ বলেন জয়নাল। 

রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল এলাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত এই রেশম কারখানাটি ২০০২ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। রাজশাহীর রেশমের ঐতিহ্য ফেরাতে এটি আবার চালু হয় ২০১৮ সালে। এরপর পুরোনো দক্ষ শ্রমিকদের অনেকেই কাজে ফিরেছেন। এখন কারখানার ৯টি লুমে কাপড় উৎপাদন চলছে। মাসে প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ মিটার রেশম কাপড় উৎপাদন হচ্ছে। কারখানার কয়েকটি শাখায় এখন কাজ করছেন ৩৭ জন শ্রমিক। তাঁরা ঠিকমতো মজুরি পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটছে তাঁদের। 

কারখানার শ্রমিক মোসা. মুন্নির ২৫ বছরের ছেলে জিম দুই মাস আগে মারা গেছেন বিনা চিকিৎসায়। জন্ডিসে আক্রান্ত ছেলের চিকিৎসার জন্য কারখানায় পাওনা টাকার মধ্যে অন্তত দুই হাজার চেয়েও পাননি মুন্নি। 

মুন্নির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আট মাস থেকে বেতন নাই। সংসার খুব কষ্ট করে চলে। আমার বাচ্চা মরে গেল, ওরা টাকা দিল না। এরা মায়া-দয়া কিছু বুঝে না। এখানকার মাথাও ভালো না। যে কারখানা চালায় সেও ভালো না। আমরা কী করে চলছি এই রোজা-রমজানের দিনে কারও কি কোনো চিন্তা আছে? ওরা তো বেতন পাচ্ছে, ওদের তো চিন্তা নাই। চিন্তা তো আমাদের। আজ দিব, কাল দিব, পরশু দিব বলেও বেতন দেয় না।’ 

ছেলের কথা মনে করে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুন্নি। চোখের পানি মুছতে মুছতে মুন্নি বলতে থাকলেন, ‘আমার যে ছেলে মরে গেল, আমার পাওনা টাকা চাইতে গেলাম তা-ও দিল না। বিনা চিকিৎসায় আমার ছেলে মারা গেল। এই দুঃখ কোথায় থুবো? এরা কোনো চিন্তাভাবনায় করে না।’ 

প্রিন্টিং শাখার শ্রমিক পারুল বেগম বলেন, ‘আটটা মাস চলছে, একটা টাকা পাইনি আমরা। বেতনের কথা বলতে গেলে চলে যেতে বলে। আমাদের দিন চলছে খুব কষ্টে। কোনো দিন খাই, কোনো দিন খাই না। যেদিন জুটাতে পারছি সেদিন খাচ্ছি, না পারলে খাচ্ছি না। ছোট বাচ্চাদের যেমন ঘোরায়, সে রকম আমাদের দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছে।’ 

এই কারখানার শ্রমিকদের কিছু দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। আর যাঁরা লুম মেশিনে কাপড় বোনান, তাঁরা প্রতি গজের জন্য পান ৫০ টাকা। তাঁরা মাসে সর্বোচ্চ সাত হাজার টাকার কাজ করতে পারেন। উৎপাদিত কাপড় কারখানার প্রধান ফটকের পাশে শো-রুম থেকে বিক্রি করে টাকা জমা করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। কিন্তু শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছেন না। 

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শ্রমিক শামসুল আলম বললেন, ‘কাপড় বুনে আমরা মাসে সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকা তুলতে পারি। এই বেতনও এত দিন বন্ধ। খুবই কষ্টকর অবস্থা আমাদের। বাড়ির জিনিসপত্রও বিক্রি করতে হয়েছে। এখন মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সামনে ঈদ, ঈদ তো আমাদের হবে না। কঠিন অবস্থা। আন্দোলন করলাম। তা-ও লাভ হলো না।’ 

বন্ধ হওয়ার আগে এই কারখানায় ৩১ বছর কাজ করেছেন আশরাফ আলী। নতুন করে চালুর পর আবার কাজ করছেন তিনি। আশরাফ বলেন, ‘কারখানা চালাবে এ রকম কোনো পরিকল্পনা নেই। ঈদের মার্কেট ধরতে হবে, সে চিন্তাও নাই। সামনে ঈদ, কী অবস্থা আমাদের? কর্মকর্তারা পোলাও-বিরিয়ানি খাবে, ওরাই খাক। ঈদের আগেও আমাদের বেতন দেয়নি। আটটা মাস চিন্তা করেন, আমরা বেতনই বা পাই কয় টাকা? আটটা মাস চলছে কীভাবে?’ 

সানোয়ার হোসেন আগে এখানে কাজ করেছেন ২৫ বছর। কারখানা চালুর পর ২০১৮ সালে আবার এসেছেন। তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে বেতন পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি। যদি হয় জুন-জুলাইয়ের পর, নতুন বাজেট পাস হলে। তার আগে কোনো নিশ্চয়তা নাই। এখানকার এমপি ফজলে হোসেন বাদশাও কিছু করছেন না। বলছেন, দেন-দরবার করছি, কোনো রেজাল্ট নাই। আসছেন, ঘুরছেন-ফিরছেন চলে যাচ্ছেন।’ 

সানোয়ার বলেন, ঈদ নিয়ে রেশম কারখানায় বাড়তি কাপড় উৎপাদনেরও কোনো পরিকল্পনা নেই কর্তৃপক্ষের। 

সানোয়ার আরও বলেন, ‘ঈদের আগে মানুষের একটা পরিকল্পনা থাকে। এখানে কিচ্ছু নাই। আমি নিজে বলেছি যে স্যার ঈদের মার্কেটটা ধরেন। ধরল না। এখন বন্ধ করে দিলেই বাঁচে।’ 

আঞ্চলিক রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপপরিচালক এবং রেশম কারখানার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক কাজী মাসুদ রেজা বলেন, বাংলাদেশে শুধু এখানেই খাঁটি রেশম কাপড় উৎপাদন হয়। তাই এর চাহিদা অনেক বেশি। এবার ঈদের আগেও অন্য বছরের তুলনায় বেশি কাপড় বিক্রি হচ্ছে। ভবিষ্যতে ভালোভাবেই কারখানা সচল রাখার পরিকল্পনা আছে।

শ্রমিকদের মজুরি না দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কারখানা চালু করা হয়েছে ১৭-১৮ বছর পরে বন্ধ থাকার পরে। কিন্তু সরকারিভাবে কীভাবে চালানো হবে, সে রকম কোনো সিস্টেমে আনা হয়নি। ভবিষ্যতে কোনো পরিকল্পনায় এনে ভালো করে চালানো হবে। আমাদের বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের মহাপরিচালক বলেছেন যেহেতু ঈদ আসন্ন, অন্তত তিন মাসের বেতনের যেন ব্যবস্থা করা হয়। আমরা ঈদের আগে এ টাকাটা দেওয়ার আশা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিশু সাজিদের মৃত্যু: মামলা করবে না পরিবার, ডিসি বললেন মামলা হবে

 রিমন রহমান, রাজশাহী
কছির উদ্দিন ও শিশু সাজিদ। ছবি: সংগৃহীত
কছির উদ্দিন ও শিশু সাজিদ। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে শিশু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। সাজিদের বাবা রাকিবুল ইসলাম বলেছেন, ‘এটি অবহেলা। আমি এর বিচার চাই। কিন্তু কোনো মামলা করব না।’ তবে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আফিয়া আখতার বলেছেন, এ ঘটনায় একটা ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা হতে হবে।

ঘটনার পর এখন পর্যন্ত শিশু সাজিদের পরিবারের খোঁজ নেননি জমির মালিক কছির উদ্দিন। আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি এলাকায়ও ফেরেননি।

আজ বিকেলে শিশু সাজিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়িতে সাজিদের তিন মাস বয়সী ছোট ভাই সাদমানের জন্য আকিকা দেওয়া হয়েছে। আকিকার মাংস কেটে বিলি করা হচ্ছে।

কথা হয় সাজিদের বাবা রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, জমির মালিক কছির উদ্দিন এখনো তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। সমবেদনাও জানাননি। এত বড় একটি ঘটনার পর তাঁর অন্তত সমবেদনা জানানো উচিত ছিল।

রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এটি অবহেলা। আমি এর বিচার চাই।’

মামলা করতে চাচ্ছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে রাকিবুল বলেন, ‘আল্লাহর মাল আল্লাহই নিয়েছে। আমরা মামলা করব না।’

মামলা না করতে কোনো চাপ আছে কি না—এমন প্রশ্নে রাকিবুল বলেন, ‘আমার ওপর কোনো চাপ নাই। কারণ, গোটা দেশ আমাদের পক্ষে আছে। ইনশা আল্লাহ পুলিশ-প্রশাসন সবাই আমাদের পক্ষে আছে। কোনো চাপ নাই ভাই।’

এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র চাইলে মামলা করতে পারে, তবে সেটিও এখনো হয়নি। জানতে চাইলে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন চাইলে বাদী হয়ে মামলা করতে পারে। আমরা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করব না।’

কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আফিয়া আখতার আজ রাতে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা একটা মামলা করতে গেলেও কিছু প্রসিডিউর আছে। সেগুলো দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় একটা ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা হতে হবে। সেটা হয়েছে বা হবে।’

সন্ধ্যায় কছির উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি এখনো বাড়ি ফেরেননি। গণমাধ্যমের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন কছিরের ভাইয়ের স্ত্রী তৌহিদা খাতুন। বলেন, মিডিয়া মিথ্যা লিখে বিষয়টি এত বড় করেছে। তাঁরা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চান না। তিনি জানান, ঘটনার পর থেকে তাঁর ভাশুর কছির উদ্দিন বাড়িতে নেই। মোবাইল ফোন নম্বর চাইলে জানান, মোবাইল নম্বর নেই। থাকলেও দেবেন না।

উল্লেখ্য, গত বুধবার বাড়ির পাশে আট ইঞ্চি ব্যাসার্ধের একটি গর্তে পড়ে যায় শিশু সাজিদ। ৩২ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে মাটির প্রায় ৫০ ফুট গভীর থেকে সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গভীর নলকূপ বসাতে এই গর্ত করে এক বছর ধরে ফেলে রেখেছিলেন কছির উদ্দিন। ঘটনার পর থেকে কছির উদ্দিন পলাতক। এ নিয়ে অবশ্য সাজিদের পরিবার কোনো মামলা করেনি। অবৈধভাবে বোরহোল করার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসনও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেকুর সামনে শুয়ে পড়লেন ইটভাটার শ্রমিকেরা, বাধার মুখে ফিরে গেলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ভেকুর সামনে শুয়ে পড়েন ইটভাটার শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভেকুর সামনে শুয়ে পড়েন ইটভাটার শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইটভাটা উচ্ছেদ করতে এসে শ্রমিকদের বাধার মুখে কাজ না করেই ফিরে গেলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। আজ সোমবার বেলা ৩টার দিকে কালীগঞ্জ পৌরসভার শিবনগর এলাকার ইটভাটা মকছেদ আলী ব্রিকসে এ ঘটনা ঘটে।

ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ নিয়ে ইটভাটাটি উচ্ছেদে অভিযানে গেলে শ্রমিকেরা তাতে বাধা দেন। শ্রমিকেরা এক্সকাভেটরের (ভেকু মেশিন) সামনে শুয়ে পড়েন। তাঁরা জানান, ভাটা ভাঙতে হলে তাঁদের লাশের ওপর দিয়ে গিয়ে ভাঙতে হবে। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মুন্তাছির রহমান ও কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহিন আলম।

ইটভাটার শ্রমিক চান্দু মিয়া বলেন, ‘এখানে আমরা ২০০ জনের মতো শ্রমিক আছি। এখন ভাটা উচ্ছেদ করলে আমরা সবাই বেকার হয়ে যাব। আমাদের পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।’

কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহিন আলম বলেন, ‘ইটভাটা ভাঙার বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন। আজ দুপুরে মকছেদ আলী ব্রিকসে যাওয়ার পর শ্রমিকেরা মাটিতে শুয়ে পড়ে ভাটা না ভাঙার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন, ফলে পরিবেশ অনুকূলে ছিল না। এ সময় পরিবেশ অধিপ্তরের কর্মকর্তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের পরামর্শে ফিরে আসি।’

ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মুন্তাছির রহমান বলেন, ‘কালীগঞ্জ পৌরসভার মকছেদ আলী ব্রিকসে অভিযান চালাতে গিয়ে ইটভাটার শ্রমিকদের বাধার সম্মুখীন হই। ভাটার শ্রমিকেরা এক্সকাভেটর ঘিরে মাটিতে শুয়ে পড়েন। বাধ্য হয়ে সেখান থেকে ফিরে আসি। তবে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য ওই ভাটার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভোলায় বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১০

ভোলা প্রতিনিধি
চরফ্যাশনে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চরফ্যাশনে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোলার চরফ্যাশনে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার উপজেলার চকবাজার ও চরফ্যাশন হাসপাতাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন মো. রুবেল, মো. নাছিম, বেল্লাল, মো নাসির, ভুট্টো, বাবুল, রাফসান, মোশারেফ হোসেন, সালেহ উদ্দিন ও জমশেদ। তাঁদের ভোলা ও চরফ্যাশনের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হামলার জন্য উভয় দলের নেতারা একে অপরকে দায়ী করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

জানা গেছে, আজ সকালে উপজেলার চকবাজার ও চরফ্যাশন হাসপাতাল এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের গণসংযোগ চলাকালে দুপক্ষের কর্মীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন আহত হন।

খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এমাদুল হোসেন ও চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর বাদশা হাসপাতালে যান। পরে নৌবাহিনীর সদস্যরাও হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তাঁরা দুপক্ষের কর্মীদের হাসপাতাল থেকে সরিয়ে দেন।

এ বিষয়ে ভোলা-৪ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা মোস্তফা কামাল বলেন, উপজেলার জিন্নাগর ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আজ সকালে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা গ্রুপভিত্তিক ক্যাম্পেইন করছিলেন।

এ সময় বিএনপির ৮-১০ জন লোক এসে ওই ওয়ার্ডের জামায়াতের সেক্রেটারি জামালের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে আহত করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে জামায়াতে ইসলামীর অন্তত চারজন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অপর দিকে উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব জাহিদুল ইসলাম রাসেল জানান, চকবাজার এলাকায় বিএনপির গণসংযোগ চলাকালে যুবলীগ নেতা জামালসহ জামায়াতের কিছু লোক ঢুকে পড়েন। এতে তাঁদের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের কথা-কাটাকাটি হয়।

পরে বিষয়টি নিয়ে ফয়সালায় বসার কথা থাকলেও ছাত্রশিবির ৩০টি মোটরসাইকেলে গিয়ে সেখানে বিএনপির কর্মীদের ওপর হামলা চালান। এতে বিএনপির ১০-১২ জন কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে ওসি জাহাঙ্গীর বাদশা আজকের পত্রিকাকে বলেন, চরফ্যাশনে বিএনপি ও জামায়াতের সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেরানীগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন শাক্তা ইউনিয়নের পুরাতন ভারালিয়া গ্রামে সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা দেড়টার দিকে খোলামোড়া-আটিবাজার সড়কের ওপর আসলাম মিয়ার বাড়ির সামনে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা ৯৯৯ নম্বরে খবর দেন। পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, চোর সন্দেহে তাঁকে মারধর করে এখানে ফেলে গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড ) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত