Ajker Patrika

হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ, হাসপাতালে শয্যাসংকট

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি  
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা কমপ্লেক্সে বেড়েছে ডায়রিয়ার রোগী। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা কমপ্লেক্সে বেড়েছে ডায়রিয়ার রোগী। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর দুর্গাপুরে ঈদের পর হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোগীর চাপ বেশি থাকায় হাসপাতালে দেখা দিয়েছে শয্যাসংকট। ফলে সিট না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দায়ও থাকতে হচ্ছে রোগীদের।

জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি রোগী ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত সমস্যার। এদিকে রোগীর চাপ থাকলেও উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতালের বহির্বিভাগে মাত্র দুজন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। ঈদের পর থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ৭০ জন ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ার রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি ও বহির্বিভাগে ১৫-২০ জন ডায়রিয়ায় ও পেটের পীড়াজনিত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গত চার দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে ৭০ জন ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ১০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও মধ্যে বয়সী লোক বেশি রয়েছে।

আজ বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, রোগীর চাপ থাকলেও চিকিৎসক কম। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে বহির্বিভাগে মাত্র দুজন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। চক্ষু, মেডিসিন, শিশু, হাড়জোড় এমনকি টিএইচওর কক্ষ বন্ধ পাওয়া গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রাত থেকে আজ সকাল ৮টা থেকে শিশুসহ ১০ জন ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত রোগে ভর্তি হয়েছে। এর আগে ঈদের পর থেকে প্রায় ৭০ জন শিশু, নারী-পুরুষ ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছে।

হাসপাতালে গতকাল রাত থেকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি আছে সাড়ে তিন বছর বয়সী সামিউল ইসলাম। কথা হয় তার মা মৌসুমী আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে ছেলেটি হাঁসফাঁস করছিল। তারপর শুরু হয় বমি। এখন পাতলা পায়খানা। রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করেছি। চিকিৎসা চলছে।’

পৌর এলাকার শালঘরিয়া গ্রামের ভ্যানচালক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ পাতলা পায়খানা শুরু হয়। তিন দিন আগ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন সুস্থ। রিলিজ দিয়েছে। বাড়ি চলে যাব।’

পৌর এলাকার শাকির উদ্দিন বলেন, ‘প্রচণ্ড পেট ব্যথা নিয়ে বুধবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হই। এরপর পাতলা পায়খানা শুরু হয়। শয্যায় জায়গা না হওয়া বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি।’

উজানখলসী গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, ‘মাংস খাওয়া ও প্রচণ্ড গরমে পেটের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ঈদের পর দিন থেকে ভর্তি আছি। এখনো পুরোপুরি সুস্থ হইনি। চিকিৎসক বলছে আরও সময় লাগবে।’

এদিকে হঠাৎ ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। তাঁরা জানান, ঈদের পর ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত রোগী বেশি আসছে।

জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঈদের পর প্রচণ্ড গরম ও খাদ্য অভ্যাসের কারণে ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। অনেকে ভর্তি হয়ে সুস্থ বাড়ি ফিরছে এবং কিছু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।

রুহুল আমিন বলেন, একটু সচেতন হলেই ডায়রিয়া ও পেটের পীড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এ জন্য এ সময় বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও চর্বি যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুই ঘণ্টা আগে একই বিমানে ভ্রমণের দাবি এক ব্যক্তির, জানালেন ভয়াবহ তথ্য

ইরানের বিপ্লবী গার্ডের নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা

সাতক্ষীরায় পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, সেনা জালে ৩ সমন্বয়ক

‘উড়োজাহাজটি আছড়ে পড়ার সময় আমার ছেলে হোস্টেলের দোতলা থেকে ঝাঁপ দেয়’

১০ মিনিটের দেরি বাঁচিয়ে দিল ভূমিকে, অল্পের জন্য ধরতে পারেননি বিধ্বস্ত বিমানটি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত