Ajker Patrika

অবশেষে পিছু হটল ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থীদের হলে তুলছেন প্রাধ্যক্ষ

রাবি প্রতিনিধি
অবশেষে পিছু হটল ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থীদের হলে তুলছেন প্রাধ্যক্ষ

অবশেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে অবৈধভাবে অবস্থানরত অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নামিয়ে বরাদ্দপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ কক্ষে তোলা শুরু করেছে প্রশাসন। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে এ কার্যক্রম শুরু করেছেন হল প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর সঙ্গে আছেন দুজন আবাসিক শিক্ষকও। এরই মধ্যে অন্তত নয়জন শিক্ষার্থীকে তাঁদের আসনে তোলা হয়েছে। বাকি নয়জনকেও রাতের মধ্যেই তোলা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ।

এদিকে এর আগে অবৈধভাবে আসন দখল করে থাকা শিক্ষার্থীদের সরিয়ে সেখানে বৈধ শিক্ষার্থীদের তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিলেও ছাত্রলীগের বাধায় তা পারছিল না হল প্রশাসন। আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে হলটিতে অভিযান চালিয়ে অবৈধদের নামিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রাধ্যক্ষ।

হল সূত্র ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ৯৪টি আসন খালি হয়। এরপর হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে ভাইভা নিয়ে একাডেমিক ফলাফল ও অন্যান্য বিবেচনায় ৬৬ জন শিক্ষার্থীকে হলে আসন বরাদ্দ দেয়। তবে এই ৬৬ জনের মধ্যে মাত্র ২২ জনকে আসনে তুলতে পেরেছে প্রশাসন। এখন পর্যন্ত ৯৪টি আসনের বিপরীতে ৭২টি আসন দখল হয়ে আছে। বৈধভাবে যাদের আসন দেওয়া হয়েছে, তাঁরাও অনাবাসিক দখলদারদের হুমকি পাচ্ছেন। এমনকি হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

এর পরিপ্রক্ষিতে গত ২৩ জুন হল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর করা একটি নোটিশের মাধ্যমে হলে অবস্থান করা অনাবাসিক, বহিরাগত ও অন্য হলের শিক্ষার্থীদের ২৯ জুনের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কোনো শিক্ষার্থী তাঁর সমস্যার বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ২৮ জুনের মধ্যে অভিভাবকসহ হল প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশও দেওয়া হয়। তবে শর্ত অনুযায়ী কেউ দেখা করেননি। এমনকি অনাবাসিক কোনো শিক্ষার্থী আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত নেমেও যাননি। ওই নোটিশে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে বাধা দেওয়া হলে তাৎক্ষণিক আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল।

বিছানাপত্র নিয়ে হলের বারান্দায় শিক্ষার্থীরা
আবাসিকতা পেয়েও  দীর্ঘদিন হলে উঠতে না পারা শিক্ষার্থীরা বিছানাপত্র নিয়ে আজ বিকেল থেকে হলের বারান্দায় অবস্থান নেন। বিকেল ৩টা থেকে হল গেটে অবস্থান নেন তাঁরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ সিটে তুলে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। 

নাম প্রকাশ করা না শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনেক দিন হলো আবাসিকতা পেয়েছি। সিটে উঠতে পারছিলাম না। তবে প্রাধ্যক্ষ স্যার আমাদের বলেছেন, আজ তিনি সিটে তুলে দেবেন। তাই বিছানাপত্র নিয়ে চলে এসেছি।’ 

অনড় অবস্থানে ছাত্রলীগ
আজ বিকেলের দিকে সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ বলেছিলেন, ‘বর্তমান প্রভোস্ট স্যার সাবেক ছাত্রদল নেতা। তিনি এই হলে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধাচরণ করছে। তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হলের আবাসিকতা দেন না। অন্য শিক্ষার্থীদের আবাসিকতা দিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের এক কর্মীর জন্য আমি সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু প্রভোস্ট স্যার বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কর্মী শুনে তাঁকে আবাসিকতা দেননি।’

ছাত্রলীগের সভাপতি আরও বলেন, ‘বর্তমান প্রভোস্ট স্যার হলে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগ নিধনের মিশনে নেমেছে। আমি ছাত্রলীগের সভাপতি থাকা অবস্থায় কোনো কর্মীকে নামতে দেওয়া হবে না। যদি কোনো কর্মীকে নামাতে হয় তবে আমাকে বহিষ্কার করেই নামাতে হবে!’ 

তবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অভিযান শুরু করলে হলে কোনো ছাত্রলীগ নেতাকে দেখা যায়নি।

প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে সংহতি জানাতে সোহরাওয়ার্দী হলে দুই শিক্ষক
এদিকে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিয়ে বৈধ শিক্ষার্থীদের সিটে তুলে দেওয়ার অভিযানের কথা শুনে প্রাধ্যক্ষের প্রতি সংহতি জানাতে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলে আসেন দুই শিক্ষক। তাঁরা হলেন—আরবি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসউদ ও অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান। প্রায় ঘণ্টাখানেক হলে অবস্থান করে তাঁরা চলে যান।

এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান বলেছিলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ যে উদ্যোগ নিয়েছে এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। গণমাধ্যমের সূত্রে জানতে পেরেছি। তাঁকে অভিযান বন্ধের জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা এসেছি তাঁকে সংহতি জানাতে। আমরা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে আছি। তবে প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক বলেছেন, তাঁরা নিজেদের মতো কাজ করছেন। তাই আমরা চলে যাচ্ছি।’ 

হল প্রশাসনের বক্তব্য
বিকেলের দিকে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক এলেই অভিযান শুরু হবে। তিনি আহ্বায়ক মিটিংয়ে আছেন। এ দিকে অনড় অবস্থানে রয়েছে ছাত্রলীগ। তারা বলছে, প্রভোস্ট সাবেক ছাত্রদল নেতা। তিনি আবাসিকতার আবেদন করা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের রাজনীতি করায় তাদের আবাসিকতা দেওয়া হয়নি। তাই তারা সিট থেকে নামবে না।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার পর সোহরাওয়ার্দী হলে আসেন প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফেরদোসী মহল। পরবর্তীতে তিনি হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষে মিটিংয়ে বসেন। ঘণ্টাখানেক পরে মিটিংয়ে যোগ দেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূর। অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে ফেরদৌসী মহল তখন বলেন, ‘সময় হলে অভিযান শুরু করব।’ কখন অভিযান শুরু হবে এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রাধ্যক্ষের কক্ষের সামনে থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করতেই আইন উপদেষ্টা বললেন, ‘ওই ব্যাপারে কথা বলতে আসিনি’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আজ শনিবার রাজশাহী মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আজ শনিবার রাজশাহী মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল রাজশাহী মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে উপদেষ্টা তা এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, ‘ওই ব্যাপার নিয়ে কথা বলতে আমি এখানে আসিনি।’

আজ শনিবার সকালে আসিফ নজরুল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন এবং প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘টিটিসিতে এত নিষ্ঠার সঙ্গে সবাই কাজ করছেন, দেখে খুবই ভালো লাগল। এমনি রাজশাহীতে এলেই মনটা ভালো লাগে। এত সুন্দর একটা শহর, এত পরিচ্ছন্ন! আর আপনাদের, মানে রাজশাহীর মানুষদের আমি খুবই পছন্দ করি।’

আসিফ নজরুলের কথা বলার একপর্যায়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সামনে নির্বাচন...। তখনই তা এড়িয়ে গিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘ওই ব্যাপার নিয়ে কথা বলতে আমি এখানে আসিনি। আমি এখানে আসছি টিটিসি দেখতে। এসব ব্যাপারে আমার...। আগামীকাল লিগ্যাল অফিসে যাব, কোর্টে। এই দুইটা কাজে আসছি। পরে কথা হবে।’

উপদেষ্টার সঙ্গে জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারসহ টিটিসি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাণীনগরে খুঁটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ১

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর রাণীনগরে রিপন হোসেন সরদার (৩৪) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাতে তিনি নিহত হন।

রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার রাণীনগর-আবাদপুকুর সড়কের খানপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ হাসপাতাল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রিপন সরদার উপজেলার দামুয়া গ্রামের দুলু সরদারের ছেলে।

নিহত রিপনের চাচা সাইদুর রহমান জানান, শুক্রবার রাতে পারিবারিক কাজে রিপন তাঁর মামিকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে রাণীনগর যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে করজগ্রাম হাসপাতাল গেটের সামনে পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হাসপাতালের বেড়ার খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই রিপন নিহত হন।

এ ছাড়া রিপনের মামি গুরুতর আহত হলে তাঁকে উদ্ধার করে রাণীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে রিপনের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাচা সাইদুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পবিপ্রবিতে কর্মকর্তাকে চড়-থাপ্পড়, দুজনকে পদাবনতি

পবিপ্রবি সংবাদদাতা
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) এক কর্মকর্তাকে চড়-থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগে দুই কর্মকর্তাকে পদাবনতি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে জারি করা পৃথক অফিস আদেশে বলা হয়, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার (খণ্ডকালীন) মো. লোকমান হোসেন (মিঠু) এবং পরিবহন শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার (খণ্ডকালীন) মো. মাহমুদ-আল-জামানকে নিজ নিজ বিভাগে সেকশন অফিসার পদে পদাবনতি করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের রেজিস্ট্রার শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার মাহমুদ-আল-জামান রেজিস্ট্রার শাখার সেকশন অফিসার সাকিন রহমানের কক্ষে প্রবেশ করে তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারেন। ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরবর্তী সময় তদন্ত কমিটির জমাকৃত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রশাসন জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধিমালা অনুযায়ী কার্যকর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে পদাবনতির শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শাহবাগে শিক্ষকদের ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, আহত ও আটকের অভিযোগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৪
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। আজ শনিবার বিকেলে শিক্ষকরা এ কর্মসূচি পালনে পদযাত্রা নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে শাহবাগ থানার সামনে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামানে কয়েকজন শিক্ষক আহত হন বলে দাবি করেছেন শিক্ষক নেতারা।

আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাছুদ অভিযোগ করে বলেন, ‘শাহবাগে পুলিশের হামলায় অনেক শিক্ষক আহত হয়েছেন। কলম সমপর্ণ কর্মসূচি শেষে আমাদের শহীদ মিনারে ফিরে আসার কথা ছিল।’

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন এ শিক্ষক নেতা।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, ‘শিক্ষকেরা যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আহত হওয়ার বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য এখনো আমরা পাইনি।’

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে আজ শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে চারটি শিক্ষক সংগঠনের মোর্চার ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে।

শিক্ষকদের বাকি দুটি দাবি হলো—চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।

শহীদ মিনারে শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, ‘২০ হাজারের বেশি শিক্ষক এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষকেরা আসছেন, অনেকে এখন পথে। আমি সরকারি প্রাথমিকের সব শিক্ষককে এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।’

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় আহত শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাকি সংগঠনগুলো হলো, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি ও সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষকেরাও।

গত ২৪ এপ্রিল ১১ তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩ তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২ তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ উদ্যোগে সন্তুষ্ট নন সহকারী শিক্ষকেরা।

এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আরেকাংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেড নিয়ে জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই তিন দাবি মানা না হলে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে দাবি আদায়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি বা ঘোষণা না আসলে পরীক্ষা বর্জন এবং ১১ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দিয়েছেন তাঁরা।

দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭ টি। এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন।

বিষয়:

ঢাকা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত