Ajker Patrika

রাজশাহীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩: ১৭
রাজশাহীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) রাজশাহী সার্কেল কার্যালয়ে সেবাপ্রত্যাশীদের হয়রানি চরমে পৌঁছেছে। এখানে কর্মকর্তাদের ঘুষ না দিলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ পেয়ে এই কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

অভিযানে বিআরটিএ কার্যালয় থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র জব্দ করা হয়। এছাড়া দুদক কর্মকর্তারা বিআরটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলেন।

আজ রোববার বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসাইন।

ভুক্তভোগীরা দুদক কর্মকর্তাদের জানান, বিআরটিএর দুজন কর্মচারীই অফিসের হর্তাকর্তা। তাদের ঘুষ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স করাতে হয়। ঘুষ না দিলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হয়। তখন আবার ঘুষ দিয়ে নতুন করে আবেদন করতে হয়। বিআরটিএ অফিস ঘিরে গড়ে ওঠা ফটোকপির দোকানগুলো থেকেও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করে দেওয়া হয় টাকার বিনিময়ে। বিআরটিএ অফিসের অসাধু কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটের বাইরে গিয়ে আবেদন করলে হয়রানির শেষ থাকে না।

দুদকের অভিযান চলাকালে কথা হয় রাজশাহীর বাগমারা থেকে আসা পিকআপ চালক নাদিম হোসেনের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তার গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা থেকে করা হয়েছিল। এখন বছর বছর রুট পারমিট নিতে এলে তাকে রাজশাহী বিআরটিএ অফিসে পাঁচ হাজার টাকা করে ঘুষ দিতে হয়।’

শহরের নগরপাড়া এলাকার ট্রাকচালক মো. বাবু বলেন, ‘একবছর আগে তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে দিয়েছেন। এখনো পর্যন্ত লাইসেন্স হাতে পাননি। এর ফলে তিনি রাস্তায় গাড়ি চালাতে সমস্যায় পড়েছেন।’ তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স দেওয়ার দাবি জানান।

দুই-তিন বছর আগেও ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষায় পাস করেও এখনো লাইসেন্স না পাওয়া কয়েকজন দুদক কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেন। তারা অভিযোগ করেন, কয়েকমাস পর পর বিআরটিএ কার্যালয়ে এসে তারা কাগজের ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়ে যান। কিন্তু স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড পান না। দুদক কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বিআরটিএ কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান। কর্মকর্তারা বলেন, ‘আগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি এসব লাইসেন্স করার দায়িত্বে ছিল। তারা পরে আর কাজ পায়নি। তাই এসব লাইসেন্স তারা সরবরাহ করেনি। আবার এসব লাইসেন্সপ্রত্যাশীদের কাগজপত্রও তাদের কাছে নেই। তাই তাদের এখনো লাইসেন্স সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

রাজশাহীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান। অভিযানের বিষয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, ‘দুদক কমিশনে অভিযোগ গেছে যে এখানে ঘুষ না দিলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হয়। কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক এই অভিযান চালানো হলো। বেশকিছু ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের নথিপত্রও জব্দ করা হয়েছে। এই লাইসেন্স প্রত্যাশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হবে তারা ঘুষ দিয়েছেন কি না। সত্যতা পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কমিশনে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম দিনের অভিযানেই তারা যে সমস্ত অভিযোগ পেয়েছেন তা দিয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দিতে পারবেন। কর্মকর্তাদের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ উঠতেই পারে। এর সত্যতা খুঁজে দেখবে দুদক। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে বিআরটিএর রাজশাহী সার্কেলের সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘুষ না দিলে ফেল করিয়ে দেওয়া হয় এটা সত্য নয়। কারণ, পরীক্ষা নেওয়ার সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি থাকেন। আমরা সহযোগিতা করি। যেটা হয় তা হলো প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য বের হলেই তাকে মধ্যস্বত্বভোগী কেউ ধরে ফেলে। তারা আমাদের নাম ভাঙায়। আর আমাদের অফিসেও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। আমরা বুঝতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ঢাকায় সভা ছিল। তিনি সেই সভায় যোগ দিয়েছিলেন। তাই দুদকের অভিযানের সময় অফিসে ছিলেন না। তারা কোনো অভিযোগে এসেছিলেন, কী নথি নিয়েছেন তা অফিসে যাওয়ার পরে বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাংনীতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষকের সর্বনাশ: ভেজাল কীটনাশকের অভিযোগ

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর মাঠের কৃষক মিরাজুল ইসলামের ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর মাঠের কৃষক মিরাজুল ইসলামের ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কার্তিকের এই সময়ে যখন কৃষকের মাঠভরা ধান দেখে আনন্দের নিশ্বাস ফেলার কথা, তখন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর-তেরাইল মাঠের রোপা আমনচাষি মিরাজুল ইসলামকে হতাশা নিয়েই ছুটতে হচ্ছে মাঠে। কারেন্ট পোকার (ঘাসফড়িং) আক্রমণে তাঁর দেড় বিঘা জমির ধান একেবারে শেষ হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এত কষ্টের সব ধান আমার নষ্ট হয়ে গেল। মাঠে আমার ধান ছিল সেরা, এখন একেবারে জিরো। কীটনাশক প্রয়োগ করে অনেকের সেরে গেছে, কিন্তু আমি সব ধরনের বিষ ব্যবহার করেও কোনো সুফল পাইনি। আমার এতটাই ক্ষতি হয়েছে, যা কল্পনা করা যায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি অফিস থেকে তেমন সঠিক কোনো দিকনির্দেশনাও পাইনি। কৃষি অফিস থেকে যদি সঠিক নির্দেশনা পাওয়া যেত কোন কীটনাশক ব্যবহার করলে ভালো হবে, তাহলে আমাদের অনেক উপকার হতো।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মজুরি খরচ, সার ও কীটনাশকের বাড়তি দামে কৃষকের নাভিশ্বাস উঠেছে। এর মধ্যেই আমনে কারেন্ট পোকার আক্রমণ মারাত্মক রূপ নিয়েছে। পোকার আক্রমণে কৃষক মিরাজুল ইসলামের ধানের গাছ শুকিয়ে সাদা হয়ে শুধু খড় দেখা যাচ্ছে। যেটুকু আছে, তা-ও দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় চাষি আব্দুল মজিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আগে থাইডন, বাসোডিনের মতো বিষ ছিল, যা প্রয়োগ করলে সঙ্গে সঙ্গে কাজ হতো। কিন্তু এখনকার বিষে কোনো কাজ হয় না, এগুলো ভেজালে পরিপূর্ণ। বিষ কোম্পানিগুলো আসলে কী বিষ দেয়? এভাবে চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোথায় যাবে?’

আরেক ধানচাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মিরাজ নামের এই চাষির ধান কারেন্ট পোকার আক্রমণে এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে বিচালি (খড়) করাও সম্ভব না। ধানের জমি খড়ের মতো হয়ে গেছে। এই মাঠে তার ধান অত্যন্ত সুন্দর হয়েছিল এবং সে তার ধানের প্রতি খুবই যত্নবান ছিল। সে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

গাংনী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরাফাত মিয়া বলেন, ‘রোপা আমন মৌসুমে স্বাভাবিকভাবে এই ধরনের রোগ দেখা দেয়। আমরা অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে এনেছি পুরোপুরি। বাজারে বিভিন্ন ভেজাল কীটনাশক রয়েছে। এর মধ্য থেকে আসলটা বাছাই করে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে যেসব উপসহকারী রয়েছে, তাদের বলা আছে কৃষকদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম আসলাম হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার কোলা ইউনিয়নের পারিচা গ্রামের মোলায়েমের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরের দিকে বদলগাছী উপজেলার আক্কেলপুর মধ্যপাড়া (মণ্ডলপাড়া) গ্রামে মুসা নামের এক ব্যক্তির নারকেলগাছে উঠেছিলেন আসলাম। ধারণা করা হচ্ছে, ডাব চুরি করার সময় তিনি গাছ থেকে নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা গাছের নিচে ডাবসহ লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে বদলগাছী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাব পাড়তে গিয়ে পা ফসকে পড়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ, অবস্থা গুরুতর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৯
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পনগরীতে এমএস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং নামে একটি কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় তাঁদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন— কারখানাটির শ্রমিক আল আমিন (৩০), আজিজুল্লাহ (৩২), মো. সেলিম (৩৫), মো. জালাল মোল্লা (৪০), মো. নাজমুল হুদা (৩৫) এবং সিকিউরিটি গার্ড সুপারভাইজার নুর মোহাম্মদ (৩৫)।

দগ্ধরা জানান, সকালে কারখানার নিচতলায় বয়লার রুমে কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তেই সেই কক্ষে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। এতে ৬ জনের শরীর ঝলসে যায়। সহকর্মীরা দগ্ধদের উদ্ধার করে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, দগ্ধদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের সবার অবস্থাই গুরুতর। কার শরীরে কত শতাংশ পুড়েছে তা পরবর্তীতে বলা যাবে।

ফতুল্লা ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার খায়রুল ইসলাম আজকের পত্রিকা বলেন, সকালে এসএম ডাইং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে কারাখানা থেকে কোনো তাদের (ফায়ার সার্ভিস) বিস্ফোরণের সংবাদ জানানো হয়নি। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করছেন। বিস্ফোরণের কারণ তদন্তের পর জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় কারখানাটির বেশ কয়েক শ্রমিক-কর্মচারী আহত হয়েছেন।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগুনে দগ্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। অফিশিয়ালি আমাদের এই বিষয়ে কেউ তথ্য দেয়নি। গণমাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেশবপুরে হাডুডু খেলায় অতর্কিত হামলা: ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ আহত ১০

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি 
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলার অনুষ্ঠানে অতর্কিত হামলায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের সাগরদত্তকাটি গ্রামের মধ্যপাড়ায় হাডুডু খেলার পুরস্কার বিতরণের সময় এই ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান, বিদ্যানন্দকাটির কামরুজ্জামান (২৮), মির্জাপুর গ্রামের আবু মুসা (২০), পাত্রপাড়া গ্রামের নয়ন (২১), সাগরদত্তকাটি গ্রামের সুমন হোসেন (২৫), মইনুল ইসলাম (২৫), মনোহরনগর গ্রামের আলী হাসান, মজিদপুর গ্রামের রিয়াদ হোসেন (২২) ও মাদারডাঙ্গা গ্রামের মাসুদ হোসেন (২৩)। রাতে আহত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খেলা দেখতে আসা একাধিক দর্শক জানান, আটদলীয় হাডুডু টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ও অতিথি নির্বাচন নিয়ে আয়োজক কমিটির দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।

শনিবার দুপুরে পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মুকুল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করার পরই আয়োজক কমিটির একটি অংশ এতে আপত্তি জানিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানের মঞ্চে থাকা মকবুল হোসেন মুকুলকে উদ্দেশ করে অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকলে তিনি মঞ্চ থেকে চলে যান।

সন্ধ্যায় ওই হাডুডু খেলার ফাইনাল দেখার জন্য মঞ্চে আসেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান। ফাইনালে উপজেলার বুড়ুলি দল খুলনার চুকনগর দলকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলের কাছে পুরস্কার হিসেবে ফ্রিজ হস্তান্তর করার সময় একদল যুবক মঞ্চে এসে অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় মঞ্চে থাকা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন আহত হন। হামলার কারণে দর্শকেরা ভয়ে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

খেলার রেফারি শওকত হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে হাডুডু খেলা সম্পন্ন হলেও পুরস্কার বিতরণের সময় ওই ঘটনা ঘটে। টুর্নামেন্টের সভাপতি রেজাউল করিম সরদার বলেন, ‘হামলা শুরু হলে আমি দ্রুত এলাকা ত্যাগ করি।’

পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, ‘কিছু যুবক পুরস্কার বিতরণের সময় হামলা চালিয়েছে। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না এবং এটি কোনো রাজনৈতিক বিষয়ও নয়।’

এ ব্যাপারে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের বিট পুলিশিংয়ের সহকারী কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুন বলেন, খেলার অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত